#তুমি_শুধু_আমারই_হও
লেখনীতে- অরনিশা সাথী
|২৫|
রুশান অর্নি নূর তিনজনে ক্যাম্পাসের বটগাছ তলায় বসে আছে। রুশান অর্নির কাঁধে মাথা রেখে বসে আছে। ওর চোখমুখে অসহায়ত্ব এর ছাপ। আর এদিকে অর্নি ডান হাতের আঙুল কামড়াচ্ছে আর কিছু ভেবে চলছে। অন্যদিকে নূরও একধ্যানে বসে কিছু একটা ভাবছে। হঠাৎ অর্নি জোরে চিৎকার দিয়ে বললো,
–“পাইছি___”
নূর আর রুশান উৎসুক দৃষ্টিতে তাকালো অর্নির দিকে। নূর অর্নির দিকে ঘুরে বললো,
–“কি আইডিয়া পেয়েছিস? দ্রুত বল, আমাদের হাতে আজকের দিনটায় আছে সময়।”
রুশান কাঁদোকাঁদো চোখে তাকিয়ে বললো,
–“দোস্ত আমি তরীকে সত্যিই হারিয়ে ফেলবো তাই না?”
নূর রুশানের মাথায় গাট্টা মেরে বললো,
–“একদম নেগেটিভ ভাববি না বলে দিলাম। তোর তরী তোরই থাকবে।”
–“হ্যাঁ আমরা আছি কি করতে? তরী তোরই হবে, আর সেটা যে করেই হোক আমরা সম্ভব করবো।”
অর্নি খুব সিরিয়াস ভঙ্গিতে বললো কথাটা। রুশান একটু হলেও আশার আলো পেলো। ও জানে ওর এই দুই বন্ধু থাকতে আর কোনো চিন্তা নেই। ওরা ওদের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করবে তরীকে ওর লাইফে এনে দেওয়ার জন্য৷ অর্নি বললো,
–“বিয়ের আসর থেকে কনে ভাগিয়ে নিয়ে আসবো আমরা।”
অর্নির কথায় নূর হাসলো এবং বললো,
–“জোস আইডিয়া দোস্ত। বিয়ের আসর থেকে কনে ভাগানোর এক্সপিরিয়েন্সটা হয়ে যাবে রুশান আর তরীকে মিল করার সুবাদে।”
অর্নি চিন্তিত গলায় বললো,
–“তরী কি রাজি হবে?”
এই কথাটা ভেবে নূরও ক্ষানিকটা চিন্তিত হলো। রুশানকে বললো,
–“তরীকে ফোন কর এক্ষুনি। আর আমাদের প্ল্যানের কথাটা জানা ওকে।”
রুশান তৎক্ষনাৎ ফোন করে তরীকে জানালো সব। তরী রাজি আছে বিয়ের আসর ছেড়ে চলে আসতে। তরীর বাবা বেঁচে নেই, মায়ের অন্য জায়গায় বিয়ে হয়েছে, সেই থেকে মামা-মামীর সংসারেই বড় তরী। নানা অবহেলা, কটাক্ষ কথা, অত্যাচার সহ্য করেও পরে ছিলো এতদিন মামার বাড়িতে। কারন তরীর যে আর যাওয়ার মতো কোনো জায়গা ছিলো না৷ নিজের টিউশনের টাকায় নিজের খরচ বহন করেছে। এখন ওর থেকে বয়সে অনেক বড় এক পাত্র জোগাড় করে তার সাথেই তরীর বিয়ের বন্দবস্ত করছে ওর মামা-মামী। তরী এই বিয়েতে রাজি না৷ তাই ওর মামি বেশ মারধরও করেছে ওকে৷ বাসায় থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছে৷ আজ সন্ধ্যায় তরীর হলুদ। ঘরোয়া ভাবেই কোনোভাবে বিয়েটা সারতে চায় তরীর মামা-মামী। এসবকিছু ভেবে তপ্ত শ্বাস ফেললো রুশান৷ অর্নি রুশানের কাঁধে হাত রেখে বললো,
–“চিন্তা করিস না, এখন যা হবে সব ঠিকঠাকই হবে৷”
অর্নির কথায় নূর সায় দিয়ে বললো,
–“আমরা থাকতে তোদের আলাদা হতে দিবো না দোস্ত।”
রুশান জাপ্টে ধরলো দুই বন্ধুকে৷ বললো,
–“এজন্যই তো তোদের এত ভালোবাসি৷ তোরা এভাবেই সবসময় আমার সাথে থাকিস দোস্ত।”
রুশানের কথায় অর্নি আর নূর মুচকি হেসে ওর পিঠে হাত রাখলো। তারপর দুজনে একসাথেই বললো,
–“অবশ্যই থাকবো৷ দুনিয়া এফোঁ’ড়-ওফোঁ’ড় হয়ে গেলেও আমাদের বন্ধুত্বে চুল পরিমান দূরত্ব আসবে না। আমরা অলওয়েজ একসাথে থাকবো।”
–
অর্নি আর নূর রেডি হয়েছে তরীদের বাসায় যাওয়ার জন্য। এমন সময় শায়লা বেগম আসলেন সেখানে। দুজনকে রেডি হতে দেখে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
–“তোরা কোথাও বেরোচ্ছিস নাকি?”
–“হ্যাঁ আম্মু, একটু দরকার ছিলো।”
নূরের কথায় শায়লা বেগম অর্নির দিকে তাকালো। জিজ্ঞেস করলো,
–“উৎসব জানে? ওকে বলে বের হচ্ছিস তো?”
অর্নি অসহায় চোখে তাকালো। শায়লা বেগম বললেন,
–“তারমানে জানে না? যেখানেই যাচ্ছিস উৎসবের থেকে পারমিশন নিয়ে যা। নয়তো পড়ে জানতে পারলে প্রচন্ড ক্ষেপে যাবে।”
অর্নি শায়লা বেগমকে জড়িয়ে ধরে বললো,
–“শাশুমা__”
–“একটা থাপ্পড় মারবো ফাজিল মেয়ে, শাশুমা কি?”
অর্নি হাসলো। হেসে বললো,
–“আচ্ছা মা, তুমি তোমার ছেলেকে একটু ম্যানেজ করে নিও প্লিজ?”
শায়লা বেগম অর্নির থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললেন,
–“না বাপু, আমি ওসবে নেই৷ আমার কথায় সে মানবে না৷ এখন তুই যদি না জানিয়ে যেতে চাস তো যাবি। পরে বাড়ি ফিরে তোর বরকে তুই সামলাবি, তখন তোদের মাঝে একদম ডাকবি না আমাকে।”
অর্নি কাঁদোকাঁদো চোখে তাকালো শায়লা বেগমের দিকে। নূর বললো,
–“ভাইয়াকে ফোন দিয়ে বল।”
–“তোর ভাইয়া যদি আসল কারন জানে জীবনেও বের হতে দিবে না বাসা থেকে।”
অর্নির কথায় শায়লা বেগম ভ্রু কুঁচকে তাকালো ওদের দিকে। সন্দিহান গলায় প্রশ্ন করলো,
–“এই সত্যি করে বল তো কোথায় যাচ্ছিস? নিশ্চয়ই কোনো উল্টাপাল্টা কাজে যাচ্ছিস৷ নয়তো উৎসবকে জানালে ও যেতে দিবে না কেন?”
–“কাজটা ভালোভাবে মিটে গেলে বাসায় এসে বলবো।”
কথাটা শায়লা বেগমকে বললো নূর৷ তারপর অর্নির দিকে তাকিয়ে বললো,
–“ভাইয়াকে ফোন কর।”
অর্নি ফোন করলো উৎসবকে। কয়েকবার রিং হতেই ফোন রিসিভ করলো উৎসব। বাঁকা হেসে বললো,
–“আজ আকাশে সূর্য কোনদিকে উঠেছে? আমার বউ নিজ থেকে ফোন করেছে যে আমায়?”
–“একটা দরকার ছিলো__”
–“হুম বলো।”
–“আমি আর নূর একটু বের হচ্ছি।”
ভ্রু কুঁচকে ফেললো উৎসব। গম্ভীর কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
–“কোথায় যাবে?”
–“আস্ আসলে একটু দর্ দরকার ছি__”
–“তোতলাচ্ছো কেন? যা জিজ্ঞেস করেছি স্পষ্ট ভাবে বলো।”
অর্নি কিছু বললো না। নূর ফোন নিয়ে লাউডে দিলো৷ তারপর বললো,
–“ভাইয়া আমরা একটু শপিংয়ে যাবো।”
–“তো এই কথাটা বলতে তোর বান্ধবী এত তোতলাচ্ছে কেন? কাল ফ্রি আছি, আমি নিয়ে যাবো।”
নূর মৃদু চিৎকার করে বললো,
–“নাহ, আমাদের আজই দরকার।”
ভ্রু কুঁচকালো উৎসব৷ হাত ঘড়িতে সময় দেখে বললো,
–“সন্ধ্যার পর আমি বাসায় আসছি, তারপর নিয়ে যাবো।”
নূর ভাবলো কিছু সেকেন্ড, তারপর চট করেই বললো,
–“রুশান যাবে আমাদের সাথে। ও-ই শপিং করবে তা্ তাই আমাদের নিয়ে যাবে সাথে চুজ করার জন্য।”
–“সত্যি বলছিস তো?”
–“হ্যাঁ একদম।”
–“আচ্ছা তাহলে যা। সাবধানে চলাফেরা করিস৷ আর তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরবি।”
নূর সম্মতি জানাতেই উৎসব লাইন কেটে দিলো৷ এতক্ষণে দুই বান্ধবী হাঁফ ছাড়লো। শায়লা বেগম ওদের কথাটা বিশ্বাস করতে পারলেন না। বললেন,
–“যদি উল্টাপাল্টা কিছু করে ঝামেলায় পড়িস আর সেটা যদি উৎসব জানে তাহলে তোদেরকে বাঁচাতে একদমই তোদের হয়ে উৎসবের সাথে কথা বলবো না আমি।”
কথাটা বলে শায়লা বেগম চলে গেলেন। অর্নি আর নূরও বেরিয়ে পড়লো বাসা থেকে।
–
তরীদের বাসার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে অর্নি নূর আর রুশান। তিনতলা বাড়িটার দোতালায় ভাড়া থাকে তরীর মামা-মামী৷ রুশানকে বিল্ডিংয়ের পেছনের দিকে গিয়ে দাঁড়াতে বলে তরীদের বাসায় ঢুকে পড়লো অর্নি আর নূর৷ ওদের দুজনকে দেখে তরীর মামী ভ্রু কুঁচকে ফেললেন। এ দুজনকে তো ওনি চিনেন না। তাহলে এরা এখানে এসেছেন কেন? তরীর মামির এসব ভাবনার মাঝেই তরী ঘর থেকে বেরিয়ে বললো,
–“মামী ওরা দুজন আমার ফ্রেন্ড। আমিই ওদের ডেকেছিলাম। আজ তো আমার হলুদ আমার বন্ধুরা থাকবে না তা কি হয়?”
তরীর মামী বেশ কিছুক্ষণ সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বললেন,
–“আচ্ছা ঘরে নিয়ে যা। আর একটু পরই ছেলের বাসা থেকে ছেলের বোনেরা আসবে হলুদ দিতে রেডি থাকিস।”
তরী সম্মতি জানিয়ে ওদের দুজনকে নিয়ে নিজের রুমে গেলো। অর্নি তরীকে পরখ করে বললো,
–“বাহ! তোমাকে তো হলুদের শাড়িতে কোনোরমম সাজ ছাড়াই বেশ লাগছে। সাজলে তো আর কোনো কথাই ছিলো না।”
তরী হাসলো। তারপর জিজ্ঞেস করলো,
–“রুশান কোথায় আপু?”
–“তোমার ব্যালকোনি বরাবর নিচেই আছে ও। এখন দ্রুত চলো।”
এই বলে নূর ব্যাগ থেকে মোটা একটা দড়ি বের করে ব্যালকোনিতে গেলো। সাথে অর্নি আর তরীও গেলো। তরী নিচে তাকাতেই রুশানকে দেখতে পেলো। নূর আর অর্নি মিলে শক্তভাবে দড়িটা ব্যালকোনির রেলিঙে বেঁধে তরীকে ইশারা করলো নামার জন্য। তরীও দেরী না করে দড়ি বেয়ে নিচে নামতে শুরু করলো৷ অর্নি রুশানকে টেক্সট করলো,
–“মেইন রোডের কাছে গিয়ে ওয়েট কর, আমরা আসছি।”
রুশান ছোট্ট একটা টেক্সট করে দিলো। তরী নামতেই ওকে নিয়ে সরে গেলো এখান থেকে৷ এবার নূর আর অর্নির যাওয়ার পালা। সবার সামনে দিয়ে গেলে তো হাজারটা প্রশ্ন করবে৷ মাত্রই আসলো আবার হলুদ না লাগিয়ে চলে গেলে সবাই নানা প্রশ্ন করবে। তাই দুজনে ভাবলো ওরা দড়ি বেয়েই নিচে নামবে। নূর দ্রুত ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে আগে নেমে পড়লো। লাস্টে গিয়ে হাতের বাঁধন আলগা হয়ে পড়ে গেলো নূর। পায়ে হালকা ব্যাথা পেলো। সেটা আমলে না নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে জামা ঝাড়া দিলো। এবার অর্নির পালা। অর্নি গিয়ে আগে রুমের লক খুলে দরজাটা হালকা ভিরিয়ে আসলো। তারপর আল্লাহর নাম মুখে নিয়ে দড়ি বেয়ে নামতে শুরু করলো। রেলিঙে বেজে অর্নির ডান হাতের কুনইতে ক্ষানিকটা ছিলে যায়৷ হালকা রক্ত বেরিয়েছে। নিচে নেমে অর্নি আর নূর দুজনে একসাথে মেইন রোডের দিকে এগোলো। হঠাৎ অর্নি মৃদু চিৎকার করলো। নূর ভ্রু কুঁচকে তাকালো অর্নির দিকে। অর্নি বসে পড়লো মাটিতে। বা পা উঁচু করে দেখলো তালুতে একটা ভাঙা কাঁচের টুকরো বিঁধে আছে। নূর দ্রুত ওর পাশে বসে বললো,
–“দেখে হাঁটবি তো, ইশ্ কতটা ঢুকে গেছে।”
অর্নি মৃদু হেসে বললো,
–“ব্যাথা তুই-ও পেয়েছিস, পড়ে গেলি যে? বাসায় গিয়ে ব্যাথার মেডিসিন নিয়ে নিবি আগে।”
কথাটা বলতে বলতে অর্নি নিজেই চোখ বন্ধ করে একটানে কাঁচ বের করে ফেলে। গলগলিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে কাটা স্থান থেকে। নূর ব্যাগ থেকে রুমাল বের করে অর্নি পায়ে বেঁধে দিয়ে বললো,
–“হাঁটতে পারবি?”
–“পারবো।”
নূর ধরে দাঁড় করালো অর্নিকে। তারপর খুড়িয়ে খুড়িয়ে হেঁটে মেইন রোডে রুশানদের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। রুশান ভ্রু কুঁচকে নূরকে জিজ্ঞেস করলো,
–“তোর জামা-কাপড়ে মাটি লেগে আছে কেন?”
–“দড়ি বেয়ে নামতে গিয়ে পড়ে গেছিলাম।”
তরী উতলা হয়ে প্রশ্ন করলো,
–“সেকি আপু তুমি ঠিক আছো?”
–“ওই একটু ব্যাথা লেগেছে সেরে যাবে। অর্নি ঠিক নেই, পা কেটেছে অনেকটা।”
রুশান বিচলিত হয়ে গেলো কথাটা শুনে৷ অর্নির পায়ের দিকে তাকালো। রুমালটাও রক্তে ভিজে আছে৷ রুশান অর্নির হাত ধরে বললো,
–“চল এখনই কাছের একটা হসপিটালে গিয়ে ড্রেসিং করিয়ে নিয়ে আসবো।”
–“এত অস্থির হোস না তো, সামান্য লেগেছে। এখন আগে কাজী অফিসে চল, আগে বিয়ে হবে তোদের তারপর বাকীসব।”
–“তোর পা থেকে রক্ত বের হচ্ছে এখনো___”
রুশানের কথায় অর্নি চোখ রাঙিয়ে তাকালো। বাধ্য হয়ে রুশান একটা সিএনজি ডেকে লোকেশন বলে উঠে পড়লো তাতে।
তিনবার কবুল আর কাবিননামায় সাইন করে তরীকে সারাজীবনের জন্য নিজের করে নিলো রুশান। ভালোভাবেই ওদের বিয়েটা সম্পন্ন হয়েছে। রুশান বেশ কিছুক্ষণ তরীকে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলো। তরীও খুশিতে কাঁদছিলো রুশানকে নিজের করে পেয়ে। তরী অর্নি আর নূরকে জড়িয়ে ধরেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। রুশানও নিজের বেস্ট ফ্রেন্ডদের জড়িয়ে ধরে বললো,
–“তোর ছিলিস বলেই তরীকে পেয়েছি আমি। লাভ ইউ সো মাচ দোস্ত, তরীকে আমার হতে এত হেল্প করার জন্য।”
নূর ভ্রু কুঁচকে বললো,
–“এখন কি থ্যাংকিউ বলে আমাদের পর করে দিবি নাকি?”
অর্নি বললো,
–“তা কিন্তু হবে না। আমাদের দুজনকে বড় করে একটা ট্রিট দিতে হবে।”
–“সেটা অবশই পাবি।”
চারজনেই হাসলো৷ তারপর একসাথেই বেরিয়ে পড়লো কাজী অফিস থেকে। রুশান তরীকে নিয়ে নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলো আর নূর আর অর্নিও একটা রিকশা ডেকে উঠে পড়লো বাসায় ফেরার জন্য।
চলবে~
[ আজকে অনেক তাড়াতাড়ি দিছি গল্প আশা রাখছি, গঠনমূলক মন্তব্য করবেন। ]