#তোমাকে_চাই
#পর্বঃ০২
#মারিয়া_আক্তার
দশ মিনিট হল এক পায়ে ভর দিয়ে কান ধরে দাঁড়িয়ে আছি। ইচ্ছা থাকলেও পা নামাতে পারছিনা। আমার সামনে বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসে রয়েছে পুষ্পি। মুখে তার বিশ্ব জয় করা হাসি। আমায় এভাবে দেখে যেন সে খুব খুশি। ও এবার ক্লাস নাইনে পড়ে। আমার চার বছরের ছোট হলেও আমার চাইতে দ্বিগুন চালাক। আমার পিছনে চব্বিশঘন্টার সিসিটিভি ক্যামেরা সে। কখন কি হয় সব দীপ্ত ভাইয়ার কানে দিবে এই মেয়ে। মাঝেমাঝে আমি ভাবি ও কি আমার বোন নাকি ওই খাঁটাশ দীপ্তটার বোন। দীপ্ত ভাইয়া এখন ওকে আমার পাহারাদার করে রেখে গেছে। যদি আমি কান থেকে হাত ছাড়ি বা পা নামাই তাহলে যেন ও দীপ্ত ভাইয়াকে খবর দেয়। এই মেয়েও হয়েছে তাই। তার কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে। কত করে বললাম বোন দেখ দীপ্ত ভাইয়া এখন এখানে নাই। তাই আমি পা নামালে বা হাত ছাড়লে তিনি দেখবেন না। তোকে এসে যদি জিজ্ঞেস করে তখন বলে দিস আমি কান থেকে হাত ছাড়িনি। বিনিময়ে আমি তোকে অনেকগুলো চকলেট দিবো। কিন্তু এই অসভ্য মেয়েটা আমার প্রস্তাবে রাজিই হলো না। উল্টে আমায় ভাব দেখিয়ে বলে,
– দুনিয়া এপিঠ ওপিঠ হয়ে গেলেও আমি দীপ্ত ভাইয়াকে মিথ্যে কথা বলতে পারবোনা। আর তোর আমায় এত চকলেটের লোভ দেখাতে হবে না। দীপ্ত ভাইয়া এমনিতেই আমায় প্রত্যেকদিন চকলেট দেয়। নিজে আমার চকলেটের ওপর নজর দেয় আবার আমায় চকলেটের লোভ দেখায়।
পুষ্পির কথা শুনে আমার মুখটা ফাঁটা বেলুনের চুপসে গেল। এটা ঠিক ওর চকলেটগুলো আমি মাঝেমাঝে চুরি করে খেয়ে ফেলি। দীপ্ত ভাইয়া প্রতিদিন ভার্সিটি থেকে আসার সময় ওর জন্য চকলেট নিয়ে আসবেই। কিন্তু আমাকেতো তার চোখেই পড়ে না। তাই পুষ্পির গুলো আমি চুরি করে খেয়ে ফেলি।
– আচ্ছা আপু এটা বলতো দীপ্ত ভাইয়া তোকে কানে ধরতে কেন বললো? কি করেছিলি তুই?
পুষ্পির কথা শুনে আমি কিছুক্ষণ আগের ঘটনায় ডুব দেই। তখন দীপ্ত ভাইয়া আমায় বললেন,
– তোকে ভার্সিটিতে ছেলেদের সাথে ফ্লার্ট করার জন্য পাঠানো হয়। নাকি পড়াশোনার জন্য? কোনটা? বল।
দীপ্ত ভাইয়ার কথা শুনে আমার কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেছে। এই খবর দীপ্ত ভাইয়ার কানে কে দিল। পুষ্পিতো আর সেখানে ছিল না। তাহলে আমার পিছনে নতুন গোয়েন্দা সেট করেনিতো আবার। আমি জেনেও না জানার ভান করে দীপ্ত ভাইয়ার দিকে কাঁদোকাঁদো মুখ করে বললাম,
– মানে? আমি কি করেছি ভাইয়া?
আমি দীপ্ত ভাইয়ার দিকে তাকাতেই দেখলাম উনি চোখ বন্ধ করে রয়েছেন। হঠাৎ দাঁড়িয়ে গিয়ে বললেন,
– আমার সাথে মশকরা করছিস? জানিস না তুই কি করেছিস? আমি তোকে আগেই বলেছি প্রয়োজন ছাড়া কোনো ছেলেদের সাথে কথা বলবি না। কিন্তু তুই আমার কথা অমান্য করে ছেলেদের সাথে ফ্লার্ট করছিস। কি ভেবেছিলি আমার কানে কিছুই আসবে না?কি হল বল।
দীপ্ত ভাইয়ার ধমক শুনে আমি আবার শব্দ করে কেঁদে দিলাম। এতে দীপ্ত ভাইয়া আরো ক্ষেপে গেলেন। আবারো ধমকে বলে উঠলেন,
– এখনি কান্না থামাবি তুই। ক্যান্টিনের থাপ্পড়ের কথা মনে নেই তোর। কান্না না থামালে থাপ্পড় মেরে দাঁত ফেলে দেবো এবার।আজকে রাগ উঠে গেছিল আমার তাইতো রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে সবার সামনে থাপ্পড় মেরে দিয়েছিলাম। তুই জানিস তুই চলে আসার পর ছেলেটা তোকে নিয়ে কেমন খারাপ খারাপ কথা বলেছিল। এই ধরনের ছেলেরা কেমন হতে পারে তোর কোন আইডিয়া আছে তাতে?
যত চেষ্টা করলাম কান্না বন্ধ করার কিন্তু সক্ষম হলাম না। তাই হিচকি তুলতে তুলতে বললাম,
– আপনি আমার সাথে সবসময় এভাবে কথা বলেন কেন ভাইয়া?
– তুই যে সবসময় ধমক খাওয়ার মত কাজ করিস সেজন্য। এনিওয়ে, তুই এবার বল ভার্সিটি গিয়ে ছেলেদের সাথে ফ্লার্ট করছিলিস কেন?
আমায় চুপ থাকতে দেখে দীপ্ত ভাইয়া আমায় আবারো ধমকে উঠলেন। তার ধমকে আমি একনাগাড়ে বলেই দিলাম,
– সেকেন্ড ইয়ারের একটা ছেলে গত কয়েকদিন ধরে শিমুকে ডিস্টার্ব করছিল।
দীপ্ত ভাইয়া আমায় থামিয়ে দিয়ে বললেন,
– শিমু কে?
– আমার ফ্রেন্ড। ওকে সবসময় ফলো করতো। যেখানেই শিমু যেত সেখানেই ছেলেটা গিয়ে ওর পথ আটকাতো। শিমু এসবে বিরক্ত হয়ে আমাদের কাছে হেল্প চাইলো। তাই আমরা সবাই মিলে প্ল্যান করলাম ছেলেটাকে টাইট দিবো।
– ওহ। এই বুঝি তোর টাইট দেওয়ার নিয়ম। ছেলেটাকে বাবুসোনা বলে ডাকা। তারপর অসভ্য মেয়েদের মত ছিঃ। তুই টাইট দিতে গিয়েছিলি কেন? আমি কি মরে গিয়েছিলাম?আমাকে বলা যেত না?ছেলেটা ভালো না খারাপ সে ব্যাপারে তুই কিছু জানিস। যদি তোকে কিছু করে বসতো তখন। স্টুপিড মেয়ে একটা।
ভাইয়ার কথা শুনে আমি ভাবলাম সত্যিইতো এমন ছেলেরাতো ভালো নাও হতে পারে। যদি আমার সাথে উল্টা পাল্টা কিছু করতো তখন। কিন্তু কিছুতো করেনি। থাক বাবা কিছু করেনি এই ভালো। নাহলে আজ আমি যা পার্ট দেখিয়েছিলাম ছেলেটাকে। আমি প্রথমে ছেলেটার কাছে গিয়ে ন্যাকা মেয়েদের মত একটু ন্যাকামি করেছিলাম। ছেলেটা এতেই গলে জল হয়ে গেল। কিছুক্ষণ ছেলেটাকে নিয়ে মজা করলাম আমরা। শেষে শাসিয়ে এসেছি। বলেছি যদি আর কোনোদিনও শিমুকে ডিস্টার্ব করে তাহলে আমার একদিন কি তার একদিন। তারপর চার বান্ধবী মিলে ক্যান্টিনে বসে আড্ডা দিতে বসেছিলাম। তখনই দীপ্ত ভাইয়া এসে আমায় থাপ্পড় মেরেছেন।
– এক পায়ে ভর দিয়ে কান ধরে দাঁড়া।
দীপ্ত ভাইয়ার কথা শুনে আমি বিষম খেলাম। আমি তার দিকে সচেতন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম,
– কেনো?আমি এখন আবার কি করলাম?
– কালকের শাস্তিতো ক্যান্টিনেই দিলাম। কিন্তু তুই যে আমার সাথে বেয়াদবি করেছিলিস তার শাস্তিতো তোর এখনো প্রাপ্য। আবার আমার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলিস না। তাহলে শুনে রাখ তোর ওপর তোর চেয়ে বেশি আমার অধিকার। তাই ফার্দার আমার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলবি না। এখন কান ধরে দাঁড়া তুই। ওয়েট।
এরপর তিনি পুষ্পিকে ডাকলেন। ওকে বুঝিয়ে বললেন আমাকে যাতে ও পাহারা দেয়। উনি একটু বাহিরে থেকে আসছেন। আর অ্যালার্ট করে গেছেন, আমি যদি না শুনি তাহলে যেন তাকে খবর দেয় তৎক্ষণাৎ। পুষ্পি অসভ্যটা ওনার কথায় তাল মিলিয়ে বলেন,
– তুমি চিন্তা করো না ভাইয়া। ম্যায় হু না তোমার বিশ্বস্ত সহকারী পুষ্পিতা। তুমি নিশ্চিন্তে যেতে পারো।
পুষ্পির কথার বিপরীতে দীপ্ত ভাইয়া মিষ্টি করে হাসলেন। ওর গালটা টেনে দিয়ে একবার আমার দিকে বাঁকা হেসে রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন। এসব দেখে আমি একটা ভেংচি কাটলাম। যত ঢং এদের। হুহ্।
-কিরে পুষ্পি পনেরো মিনিট শেষ হয়নি এখনো?
দীপ্ত ভাইয়ার কথায় আমি ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসি। ওনার দিকে তাকাতেই আমার দৃষ্টি ওনার মুখের মধ্যেই আটকিয়ে যায়। মাত্র শাওয়ার নিয়ে এসেছেন তিনি। ওনাকে এখন অনেক স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে। উনি আমার দিকে তাকাতেই আমি দৃষ্টি সরিয়ে ফেলি। উনি মৃদু হেসে পুষ্পির উদ্দেশ্যে বলেন,
– আর কতক্ষণ আছে?
পুষ্পি একবার ঘড়িটা দেখে বলে,
– এই তিন দুই এক। শেষ। আপু তোর এবার ছুটি।
আমি পা নামিয়ে দীপ্ত ভাইয়া আর পুষ্পির দিকে একবার তাকিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম। আমার রুমে এখন এদের রাজত্ব চলবে। আমি এখানে এখন থাকলেই এরা আমায় এটা সেটা বলে ক্ষ্যাপাবে। আপনারা ভাবছেনতো আমি কেন দীপ্ত ভাইয়ার একবার বলাতেই কান ধরেছি। তাহলে বলি শুনুন। আমি যদি দীপ্ত ভাইয়ার কথা না শুনতাম তাহলে উনি আজকে ভার্সিটির সম্পূর্ণ ঘটনাটা আম্মুর কানে দিতেন। আম্মু যদি একবার শুনতো তাহলে আমার কপালে দুঃখ ছিল। আমার ভার্সিটি যাওয়া হুমকির মুখে পড়তো। তাই আর সেই রিস্ক নিলাম না। পা টা একদম ব্যথা হয়ে গেছে। এক পা উঁচু করে কান ধরাটা আমার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। তাই এতে আমার এখন তেমন একটা কষ্ট হয়না। সয়ে গেছেতো তাই। উনিশ থেকে বিশ হলেই দীপ্ত ভাইয়া আমায় এভাবে শাস্তি দিবেন।
আমি চা বানাতে রান্নাঘরে গেলাম। গলার ভেতর কেমন জানি করছে। রং চা খেলে হয়তো ঠিক হবে সেই ভেবে চা বানালাম। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে ড্রয়িংরুমের সোফায় গিয়ে আরাম করে বসলাম। টিভিটা স্টার্ট দিতে গিয়েও থেমে গেলাম। মনে হলো আমার সামনের সোফায় কেউ আছে। হ্যাঁ সত্যিই আছে। দীপ্ত ভাইয়া সামনের সোফায় বসে আমার দিকেই তাকিয়ে আছেন। আমি দেখেও না দেখার ভান করে টিভিটা ছাড়তে নেই।
– মৌ।
রিমোটটা হাতে নিয়ে আমি দীপ্ত ভাইয়ার দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকাই।
– আসলে আআ’ম সরি।
আমার চোখ বড় বড় হয়ে যায়। উনি আমায় সরি বলছেন?
– দেখ সবার সামনে তোকে এভাবে থাপ্পড় মারা আমার উচিৎ হয়নি। মামি আমায় তোর যাবতীয় দায়িত্ব দিলেও তোকে থাপ্পড় মারার কোনো অধিকার আমার নেই। আসলে তুই যখন ছেলেটার গায়ে পরে এসব করছিলি সেসব দেখেই আমার মাথা গরম হয়ে যায়। কথা দিচ্ছি আমি কখনো তোকে আর মারবো না।আর হ্যাঁ মারবো না তা ঠিক তবে অন্যায় করলেও ছাড়বো না।
এটা আবার সরি বলার কেমন সিস্টেম ভাই?সরি শেষে আবার হুমকিও দেয়।যাক বাবা সরি বলেছে এই অনেক।
________________________
কালকে দীপ্ত ভাইয়ার জন্মদিন। সেজন্য বড়ফুফু সব আয়োজনের জন্য তোড়জোড় লাগিয়ে রেখেছেন। সবাইকে দাওয়াতও দিয়ে দেওয়া হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। ধীরেধীরে সবাই আসছে। আমি এখন দীপ্ত ভাইয়াদের বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে আছি। এখানেই সব আয়োজন করা হবে। অন্যপাশে লোকেরা কাজ করছে আর ছাদের এদিকটায় আমরা সব কাজিনরা মিলে আড্ডায় মেতেছি। আমি ভীষণ চটপটে একটা মানুষ। হৈহুল্লোড় করতে পারলেই আমার শান্তি। আমার কাজিনদের মধ্যে এখানে আছে আমার ছোটফুফুর জমজ দুই ছেলে শুভ,শান্ত। ওরা দুজনেই ক্লাস টেইনে পড়ে। আর আছে আমার একমাত্র জেঠুর মানে দীপ্ত ভাইয়ার বড় মামার ছেলে আদিদ ভাইয়া। উনি আমাদের ভার্সিটিতেই দীপ্ত ভাইয়ার সাথে মাস্টার্সে পড়ছেন। আদিদ ভাইয়া আর দীপ্ত ভাইয়া জিগারী দোস্ত। আর আছে আদিদ ভাইয়ার দুইবোন। শাহানা আপু আর আহানা আপু। শাহানা আপুর বিয়ে হয়ে গেছে। আর আহানা আপু আমার একবছরের সিনিয়র। উনি অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়েন। আরো আছে দীপ্ত ভাইয়ার ফুফুর দুই মেয়ে। একজন নিহা উনি দীপ্ত ভাইয়ার ক্লাসমেট। আর আরেকজন ফিহা। ও এবার ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে।দীপ্ত ভাইয়ার ছোটভাই রিক্তও আছে। রিক্ত আর পুষ্পি একসাথে পড়ে। আর আরেকজন আছে সে হল আমার পিছনে দীপ্ত ভাইয়ার সেট করা গোয়েন্দা। মানে পুষ্পি পাঁজিটা। আমাদের সবার আড্ডার মূল টপিক হল বার্থডে বয় মানে দীপ্ত ভাইয়া। ওনাকে নিয়েই আলোচনা করছে সবাই। একজন একেকভাবে তার বর্ণনা দিচ্ছে। এমন এমন প্রশংসা করছে তার যা শুনে আমার মাথা ঘুরছে। দীপ্ত ভাইয়ার মত এমন ছেলে নাকি আর কোথায় নেই। এমন হ্যান্ডসাম একটা ছেলের নাকি বিন্দুমাত্র অহংকার নেই কেমন মিষ্টি করে সবার সাথে কথা বলে হেন তেন। এসব আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনছি। দীপ্ত অসভ্যটার সুনাম আমার সহ্য হচ্ছে না। বলতে ইচ্ছে করলো আমার সাথে ওই অসভ্যটা যেমন করে তোমরা যদি দেখতে তখন তোমাদের মুখ দিয়ে আর প্রশংসা করা বেরোতো না। কিন্তু কিছুই বলতে পারলাম না। বলে দিলে একবার যদি দীপ্ত ভাইয়ার কানে যায় তাহলে উনি আমার শনি করে ছাড়বেন। আমি একটা জিনিস খেয়াল করলাম, দীপ্ত ভাইয়ার বেশি প্রশংসা ফিহাই করছে। মেয়ের মনে লাড্ডু ফুঁটলো নাকি। কিন্তু এই ঢঙ্গি মেয়েটাকেতো আমার পছন্দ না। নিহা আপু খুব ভালো। ফিহা নিহা আপুর বোন হলেও ওনার মত না। একটু অহংকারী ও। আমার আবার অহংকারী মানুষ দেখলে গা পিত্তি জ্বলে ওঠে। কিন্তু আমার জ্বললেই বা কি? দীপ্ত ভাইয়া যদি ওকে বিয়ে করেন তখন?
– সবাই দীপ্তকে নিয়ে কিছুনা কিছু বলছে তুই কিছু বলছিস না যে?
আমার ভাবনার মাঝেই আদিদ ভাইয়া বলে ওঠেন। উনি কি বললেন মাত্র আমি দীপ্ত ভাইয়াকে নিয়ে কিছু বলবো? এইতো সুযোগ পেয়েছি। ওই অসভ্যটাকে নিয়ে কিছু বলার।
– কি আর বলবো ভাইয়া? তোমরা যদি ওনার প্রশংসা এভাবেই কন্টিনিউ করতে তাহলে আমার একটু পর হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেত।
কথা শেষ না করেই সবার দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে সবাই বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে আছে। আমি তা দেখে ভ্রুঁ কুঁচকে বলি,
– কি হয়েছে? তোমরা এভাবে তাকিয়ে আছো কেন আমার দিকে?
আদিদ ভাইয়া ওভাবেই থেকে বলেন,
– মাত্র কি বললি তুই? দীপ্তর প্রশংসা শুনে তোর হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেত। সিরিয়াসলি?
আমি ভাবলেশহীনভাবে বললাম,
– তাহলে আর কি বলবো বলো?তোমরা দীপ্ত ভাইয়ার এত এত প্রশংসা করছো কি বলবো?দীপ্ত ভাইয়ার?তোমরাতো আর ওনার আসল চেহারাটা দেখোনি। অসভ্য একটা। সবার সামনে সাধু ভোলাবালা। আর আমার সাথেই যত অসভ্যতামি করবে।
– আমি তোর সাথে কি অসভ্যতামি করেছি?
পিছন থেকে দীপ্ত ভাইয়ার কথা শুনে আমার গলা শুকিয়ে গেল। এবার আমার কপালে কি আছে আল্লাহই ভালো জানে? কেন যে এসব বলতে গেলাম। আর ওনার টাইমিংও আছে ভাই। এতক্ষণ আসার সময় পেলো না। আমি যখন কিছু বললাম তখনই তিনি চলে আসলেন। আমার ফাঁটা কপাল।
চলবে…