তোমাকে ঠিক চেয়ে নিবো পর্ব ৬

#তোমাকে ঠিক চেয়ে নিবো
লেখা আশিকা
পার্ট ০৬

” পিউ আমি চলে যাচ্ছি তুমি কি আসবে?”

প্রতিক্ষা প্রহরের এই শেষোক্ত কথাটা শুনেই বালিশে মুখ লুকোতে লাগলো। প্রহর ডেকেছে আর ও কি সাড়া না দিয়ে পারে?
কালকে সারারাত যে ও নির্ঘুম কাটিয়েছে এটা ওর মুখ দেখে যে কেউ বুঝে নিবে।
ওই চিঠিটা দেয়ার পর থেকেই ওর বুকের ভিতর যে দ্রিম দ্রিম শব্দ শুরু হয়েছিলো সেটা এখন কিছুটা কমে এসেছে। ও যেন হাফ ছেড়ে বাচলো।
কোনরকমে রেডি হয়ে পাগলের মতো ছুটতে লাগলো। বড় রাস্তার মোড়ে মসজিদটার সামনে আসতেই ও ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে গেলো। উপরে চোখ তুলে তাকাতেই দেখে রিজভী ওর দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিক্ষা হাতটা ধরছেনা দেখে রিজভী নিজেই ওর হাতটা ধরে উপরে টেনে তুলতো।
” এইভাবে হন্তদন্ত হয়ে কোথায় ছুটছো।”

প্রতিক্ষা কিছুক্ষণ আমতা আমতা করে তারপর বললো,
” কিছু বই কিনতে হবে তাই..।”
” আচ্ছা বেশ। রাস্তাঘাট দেখেতো চল। এইভাবে কেউ রাস্তা দিয়ে হাটে।
চলো…।”
রিজভী প্রতিক্ষার আগে আগে হাটা শুরু করে। ও বাধ্য মেয়ের মত পেছন পেছন যেতে থাকে।
কথায় আছে না যেখানে” বাঘের ভয় সেখানেই রাত হয়।”
আল্লাহ এখন এই মূহূর্তে রিজভী স্যারকে না পাঠালে কি খুব ক্ষতি হতো।

” প্রতিক্ষা রিক্সায় উঠো।”
উৎসুক হয়ে কথাটা বলেই প্রতিক্ষার দিকে পিছন ফিরে তাকায় রিজভী।

বাধ্য মেয়ের মত নিঃশ্বব্দে রিক্সায় উঠে বসে প্রতিক্ষা।
রিক্সাওয়ালা রিক্সা ঘুরাতে লাগলো।
প্রতিক্ষা সামনের দিকে দৃষ্টিনিক্ষেপ করে আনমনে কিছু একটা ভাবতে লাগলো।
হঠাৎ রিক্সাটা হালকাটা নড়ে উঠলো। প্রতিক্ষা চমকে উঠে রিজভীর দিক তাকায়। ওর পাশে বসে দাত বের করে হাসতে লাগলো রিজভী । কি সাংঘাতিক! এই পর আর কি কি হতে পারে এইগুলা ভেবেই ও শিউরে উঠলো।

” কি ব্যাপার তুমি এরকম ভুত দেখার মত চমকে উঠলে কেন?
আমি বাঘও নই আর ভাল্লুকও নই।” প্রতিক্ষার গা ঘেঁষতে ঘেঁষতেই কথাগুলো বললো রিজভী।

” আমার কি আপনার সাথে আজকে কোথাও যাওয়ার কথা ছিলো। না ঠিক মনে পড়ছেনা।”
দাতে দাত চেপে কথাগুলো বললো প্রতিক্ষা।

” না তুমি ব্যাপারটাকে সহজভাবে নাও। ধর তোমার আমার গন্তব্যস্থল একি তাহলেতো আমরা একসাথে যেতেই পারি। কি বলো? ”
আবার হাসতে লাগলো রিজভী।

রিজভীর মতো গায়েপড়া স্বভাবের লোককে যে কোনকিছু বলেও কিছু বোঝানো যাবেনা এতোদিনে প্রতিক্ষার বুঝা হয়ে গেছে।
ওর সমস্ত প্ল্যান মাঠে মারা যাওয়ার দুঃখে ও এমনিতেই আধমরা হয়ে গেল। হয়তোবা ওর কপালটাই খারাপ। চুপচাপ তাই রিজভীকে এখন সহ্য করতে হবে।

রিজভীর বারবার আড়চোখে প্রতিক্ষার দিকে তাকাতে লাগলো।

এই মেয়ে যে কি আল্লাহ মালুম!
পাশে আমার মত এইরকম একটা হ্যান্ডসাম ছেলেকে বসে থাকতে দেখেও রাস্তার মানুষজনের দিকে হা করে তাকিয়ে আছি। আমি কি দেখতে এতোটাই খারাপ? না মানুষ হিসেবে খুবই নগন্য।

রিজভীর কেন জানিএই মূহূর্তে প্রতিক্ষার হাতটা ধরতে খুব ইচ্ছে হচ্ছে। আনমনে বারবার হাতের আংগুল দিয়ে প্রতিক্ষার হাত স্পর্শ করতে লাগলো।
প্রতিক্ষা হাত সরিয়ে নিচ্ছিলো। রিজভী না পেরে খপ করে বেশ জোড়েসোড়েই প্রতিক্ষার হাত ধরে ফেললো।

প্রতিক্ষা থরথর করে কাপতে লাগলো।
” আপনার সমস্যা কি?”
কাঁদোকাঁদো হয়ে কথাটা বলেই থেমে গেলো প্রতিক্ষা।

রিজভী ঘাবড়ে গিয়ে হাতটা ছেড়ে দিলো। কিছু একটা বলতে চাইলো কিন্তু গলা দিয়ে কোন আওয়াজ বেরোল না।
কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে তারপর নিজ থেকেই বললো,
” বাসা থেকে বিয়ের জন্য খুব প্রেসার দিচ্ছে কি করবো?”

” কি করবেন আবার? বিয়ে করে নিবেন সিম্পল হিসেব।

রিজভী কিছুটে রেগেই প্রতিক্ষার হাত খুব জোরে চেপে ধরলো।
” আমি তোমাকে ভালোবাসি বিয়ে করতে চাই বুঝো তুমি?
বুঝো? ”

” আপনি আমার হাত ছাড়ুন বলছি ভালো হবেনা কিন্তু।”

” কি ভালো হবেনা শুনি? শুধু আজকের জন্য আমি চরম খারাপ হবো যদি আমার প্রশ্নের উত্তর না দাও?”
চিবিয়ে চিবিয়ে কথাগুলো বলে প্রতিক্ষার দিকে তাকালো।

” কি উত্তর দিবো আমি?
দেখুন আপনি টিচার আমি স্টুডেন্ট এরথেকে বেশি কিছু আপনি আমার থেকে আশা করবেন না। আমি আপনাকে সেই চোখে দেখিনি। তাছাড়া আমার পক্ষে এখন বিয়ে করা সম্ভব নয়। আর হ্যা আমার গার্ডিয়ান আমাকে যেইখানে বিয়ে দিবে আমি সেইখানেই বিয়ে করবো। এম আই ক্লিয়ার।”
প্রতিক্ষা রিজভীর থেকে হাতটা ছাড়িয়ে নিতে নিতে কথাগুলো বললো।

” রিক্সা থামান।”
রিক্সাওয়ালা রিক্সা থামিয়ে ঘাড়ঘুরিয়ে ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করলো। ততক্ষণে প্রতিক্ষা দ্রুত রিক্সা থেকে নেমে রিজভীর সামনে দিয়ে হনহন করে হেটে চলে গেল।
রিজভী একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে প্রতিক্ষার পথের দিকে তাকিয়ে থাকলো।

————————————

একটু বাদেই ট্রেইন ছেড়ে দিবে। উফ আর অপেক্ষা করতে পারছে না। বারবার বাইরে আর ভিতরে যাওয়া আসা করতে দেখে লোকজন ওর দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। এই মূহূর্তে নিজেকে এলিয়েন ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারছেনা।
রাগে দুঃখে নিজের চুল নিজে ছিড়তে ইচ্ছে হচ্ছে।
প্রহরের মেজাজ চুড়ান্ত পর্যায়ের খারাপ হয়ে গেছে। প্রথমে মনে হয়েছিলো পিউ আসবে। কিন্তু এখনো আসছেনা। ও ধরেই নিয়েছে পিউ আর আসবেনা। নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারছেনা। হাতের কাছে কিছু
না পেয়ে সেল্ফোনটা ছুড়ে মারে।
মুখভার করে মাথার চুল চুলকোতে লাগলো কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে

” ইয়াংম্যান এটা নিশ্চয় তোমার ফোন?”
এক মাঝবয়েসী ভদ্রলোক মুখে একগাল হাসি ঝুলিয়ে প্রহরের দিকে ফোনটা এগিয়ে দিলো।

” ফেলে দিন দরকার নাই?”
গম্ভীরভাবে কথাটা বললো প্রহর।

” কি প্রেমিকার সাথে অভিমান হয়েছে বুঝি। একটুপর যখন মান অভিমানের পালা শেষ হবে তখন ফোনটার জন্য আফসোস করবে। নাও ধরো।”

ভদ্রলোক প্রহরের পাশের সিটে বসে পড়লেন। প্রহর হাত বাড়িয়ে ফোনটা নিলো।
ওর চোখদুটো ছলছল করতে থাকে। বাহিরে আকাশের বুক জুড়ে কৃষ্ণাঙ্গ মেঘের ঘনঘটা। যেকোন সময় ঝুম বৃষ্টি নামার পায়তারা চলছে।

প্রহর লোকটির দিকে কৌতুহোলভরে তাকায়।
” আপনি কি করে জানলেন যে একটুপর অভিমানের পালা শেষ হবে?

” ও মা মেঘের পরেই যে বৃষ্টি নামে এতো কানার ভাই অন্ধও জানে।” বলেই ফিচেল হাসলো ভদ্রলোক।

প্রহর আর কিছু না বলে জানালার দিকে দৃষ্টিনিক্ষেপ করলো। ঝিরঝির বৃষ্টিতে সাদায় মুড়িয়ে এলোচুলে কেউ ছুটে আসছে। পিউ!

প্রহরের হয়তোবা আর এক মুহূর্ত বেকার নষ্ট করার ইচ্ছে নেই। ব্যাগটা কাধে ঝুলিয়ে ভো দৌড়।
ট্রেনছেড়ে দিচ্ছে। উফ আল্লাহ আরেকটুর জন্য দেখাটা হলোনা। প্রতিক্ষা ছলছল চোখে ট্রেনের পিছনে ছুটতে লাগলো। ও জানে প্রহর ওর ধরাছোঁয়ার বাইরে তবুও কেন কিসের আশায় প্রাণপনে ছুটতেছে ও জানে না।
হাপাতে হাপাতে কিছুদূর যাবার পর ও বসে পড়তে লাগলো। তখনি পিছন থেকে কেউ এসে ওকে হ্যাচকা টান দেয়। ঘাড় ঘুরিয়ে প্রহরকে দেখে ওর চোখের কোনে জল চিকচিক করতে লাগলো।

বৃষ্টি আর বাতাসের তাড়নায় জলের ছিটায় ছিটায় প্রতিক্ষার চুল ভিজে জুবজুব অবস্থা। সারা শরীরে এক অজানা শিহরণ খেলে যাচ্ছে। সামনে দাঁড়ানো স্বপ্নপুরুষ টা যে ওর দুই বাহু শক্ত করে জাপটে ধরে একরাশ মাদকতা নিয়ে ঘোর লাগা চোখে কেবল ওকেই দেখছে।

একজনের মাথা আরেকজনের মাথার সাথে ঠেকানো। উন্মাদের মত বৃষ্টির ফোটায় ফোটায় দুজনে একি সাথে সিক্ত হতে লাগলো।শত সহস্র জলের ফোটার মাঝেও প্রতিক্ষা প্রহরের চুল থেকে গড়িয়ে পড়া পানি আলাদা করে উপলব্ধি করতে পারছে। প্রহরের চুলের পানি ওর কপাল বেয়ে নাকে, ঠোটে, চিবুক বেয়ে বেয়ে সমস্ত শরীরে কাপন ধরাতে লাগলো। শীতার্তের মত উষ্ণতার জন্য ছটফট করতে লাগলো।

প্রহর ধুম করে এসে প্রতিক্ষাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। মূহূর্তেই দুজনের শরীর উষ্ণতায় ভরে উঠলো।
প্রতিক্ষা দ্বিগুন শক্তিতে প্রহরের ভেজা টিশার্ট খামচে ধরলো। দুজনের হার্ট খুব ফ্রার্স্ট বিট করতে লাগলো।বেশ কিছুক্ষণ শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় থাকারপর প্রহর প্রতিক্ষাকে ছেড়ে দেয়।

প্রতিক্ষা লজ্জা পেয়ে সরে যেতে লাগলো। ইশ প্রহর এ কি করলো? ও কি করে প্রহরের চোখে চোখ রাখবে।
প্রহর এক ঝটকায়
ওর হাতটা ধরে ফেললো।
তিন আংগুল দিয়ে প্রতিক্ষার চিবুক ছুঁইয়ে দিতে লাগলো।
প্রতিক্ষা কেপে উঠে ওর দিকে তাকালো।

” ওইভাবে ট্রেনের পিছে ছুটছিলে কেন? আরেকটু হলেইতো পড়ে যেতে।”
ফিসফিসিয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে কথাটা বললো প্রহর।

” ট্রেনতো ছেড়ে দিচ্ছিলো…।”
হাপাতে হাপাতে কথাটা বললো প্রতিক্ষা।

“ট্রেন ছেড়ে দিলে দিবে। তাতে তোমার কি যায় আসে?”

যায় আসেনা মানে? আপনিতো চলেই যাচ্ছিলেন? ”
বড্ড অভিমানী সুরে কথাটা বললো প্রতিক্ষা।

” আমি চলে গেলে কি এমন ক্ষতি হতো।”

” অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেত আপনি বুঝবেন না।”

” সত্যিইকি বুঝবোনা। নাকি বুঝাতে চাওনা।”

” ভালোবাসিতো আর কি করে বুঝাবো।”
প্রতিক্ষা কথাটা বলেই আবার প্রহরকে জড়িয়ে ধরলো।

প্রতিক্ষাকে এতো কাছে পেয়ে প্রহর এক অন্যরকম ঘোরের মধ্যে চলে গেছে। ইতিপূর্বে এই অনুভুতির সাথে ওর পরিচয় ঘটেনি। প্রতিক্ষাকে বড্ড কাছ থেকে আদর করতে ইচ্ছে হচ্ছে। জানে এ অন্যায় কিন্তু আজকে এই অন্যায়টাই করতে ওর প্রবল ইচ্ছে হচ্ছে। সমস্ত ইন্দ্রিয় জুড়ে প্রতিক্ষাকে কাছে ডাকার ব্যাকুলতা বিরাজ করছে।

বৃষ্টি থেমে গেছে। ভিজে দুজনের শরীর একাকার অবস্থা। কাপড় থেকে চুইয়ে চুইয়ে পানি পড়তে লাগলো। প্রহর প্রতিক্ষার ঠোটের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
কারো ঠোট এতো সুন্দর হতে পারে আগে ওর জানা ছিলোনা।

” কি দেখছেন এভাবে?”
” তোমাকে।
আচ্ছা তোমার ঠোটগুলো এতো সুন্দর কেন?
ঠোটের কাছের তিলটা যেন এই সৌন্দর্য্য আরো দ্বিগুন বাড়িয়ে তুলেছে।”

প্রতিক্ষা লজ্জা পেয়ে দুচোখ বন্ধ করে নিচে তাকালো।
” লজ্জা পেলে তোমাকে আরো বেশী সুন্দরী লাগে।
মনে হয়…?”
বলতে চেয়েও থেমে যায় প্রহর।

” কি মনে হয়..? ”

” কি মনে হয় বলবো? বলবো? না যা মনে হয় তা করে দেখাবো?”
প্রহর দুষ্টু হাসি দিয়ে এইকথা বলতে বলতেই প্রতিক্ষার ঠোটে বেশ গাঢ়োভাবে চুমো খেতে লাগলো বেশ খানিকক্ষণ সময় নিয়ে । প্রতিক্ষার ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে উথালপাতাল করে দিতে লাগলো প্রহরের একেকটা চুমোর আলতো স্পর্শ।
প্রহর হাপিয়ে উঠে ওকে ছেড়ে দিয়ে নাকে নাক ঘষে অস্ফুটস্বরে বললো,
” আদর করতে ইচ্ছে করে পুতুলটাকে। মনে হয় খেয়ে ফেলি।”
আবার চুমো খাওয়ার জন্য ঠোট এগিয়ে দিতেই প্রতিক্ষা প্রহরের বুকে আচমকা ধাক্কা দিয়া সরাই দেয়।

প্রহর ধাক্কা খেয়ে নিজেকে সামলিয়ে নেয়।
হুয়াট এতক্ষন ও কি করতেছিল এইসব। ও মাই গড। পিউ ওকে কি ভাবলো। ছিঃ ও এইটা কি করলো। প্রিয়ম ওর খুব ভালো বন্ধু ও কি করে বন্ধুর বোনের সাথে এইগুলা করতে পারে। প্রহর ঘামতে লাগলো এই ভেজা কাপড়েও। ছিঃ এই ঘৃন্য পুরুষত্ব হঠাৎ ওর মধ্যে কেন জেগে উঠলো। শুধু প্রতিক্ষাকে দেখেই কেন ও নিজেকে কনট্রোল করতে পারে না। কি আছে ওর মধ্যে ও ভাবতে পারছেনা। উফ ও খুলনা ব্যাক না করে এইভাবে নেমে পড়লো কেন?
কালকেতো ওর ছুটি নেই। আর আজকে আর ফিরবে কি করে?
উফ এইরকম একটা ব্লান্ডার ও করলো কি করে?
হ্যা প্রতিক্ষা যবে থেকে ওর লাইফে আসছে ও যেন নতুন করে নিজেকে চিনতে পারছে। এই প্রহরের সাথে পূর্বের প্রহরের কোন মিল নেই।

প্রতিক্ষা লজ্জা পেয়ে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে পায়ের নিচের নরম ঘাসগুলোর
দিকে তাকিয়ে আছে আনমনে। ওর প্রবল ইচ্ছে হচ্ছে প্রহর এসে আচমকা আবার ওকে জড়িয়ে ধরুক। ওর ভেতরটা ভেংগেচুড়ে দুমড়ে মুচড়ে দিক। কিন্তু না দুইজন দুইদিকে দুই বিপরীত মেরুতে।
একটু আগে ঠিক যতোটা কাছে ছিলো ঠিক ততোটাই দূরত্ব।

প্রতিক্ষার যে এই মূহূর্তে খুব শীত করছে সেটা ওর থরথরে কাঁপুনি দেখে যে কেউ বুঝে নিবে।
প্রহর ব্যাগ থেকে ওর একটা জ্যাকেট বের করে পিছন থেকে প্রতিক্ষার গায়ে জড়িয়ে
দিলো।

প্রতিক্ষা চমকে উঠে ওর দিকে তাকালো।
” আরে কি করছেন?”
” তোমার ঠান্ডা লাগছে আমি বুঝতে পারছিতো।আর….?”

” আর কি? আমার এটা লাগবে না ধরুন।”
প্রতিক্ষা গায়ে থেকে খুলে ফেলার জন্য উদগ্রীব হতেই প্রহর ওর হাত ধরে ফেলে।
” ভিজা কাপড়ে তোমার শরীর দেখা যাচ্ছেতো।”
কথাটা বলেই নিচের দিকে তাকালো প্রহর।

প্রতিক্ষা জ্যাকেট টা আরো ভালোভাবে গায়ে দিয়ে লজ্জায় কাচুমাচু হয়ে দূরে গিয়ে সরে দাড়ালো।

“চল তোমাকে হলে দিয়াসি। ঠান্ডা লেগে যাবে। চল? ”
প্রহর আগে আগে হাটা দিলো।পিছনে ভীরুপায়ে প্রতিক্ষা হাটতে লাগলো।

চলবে..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here