আপনি যদি এই মুহুর্তে আমাকে বিয়ে না করেন তাহলে আপনার বোনের ও আমার ছোট ভাইয়ের সাথে বিয়ে হবে না। কথাটা বলতে ই অঞ্জলির হাত ধরে টেনে নিয়ে গাড়িতে বসায় অভ্র। অঞ্জলি শুধু ছলছল নয়নে অভ্রর দিকে তাকিয়ে আছে। অঞ্জলি তো অভিকে বড্ড বেশি ভালোবাসে তাহলে কী করে পারবে অভ্রকে বিয়ে করতে।।।
–আমি পাড়বো না আপনাকে বিয়ে করতে।
–আপনার বোনের বিয়ে হতে চাইলে আর একটা কথা ও বলবেন না আপনি। ভালো করে ই জানেন আহাত আমার কথায় সব করে। আমি চাইলে এখন ই বিয়ে ভেঙ্গে দিবো।
বিয়ে ভেঙ্গে দিলে যে আমার বাবা মেনে নিতে পারবে না, সাথে সাথে গলায় দড়ি দিবে। খুব শখ করে বাবা আপুর বিয়ে দিচ্ছে। এতো বড় বাড়িতে আপুকে বিয়ে করিয়ে নিতে রাজি হয়েছে শুনে বাবা মা খুশিতে কান্না করে দিয়েছে। আমি কী করে পারি তাদের খুশি ভেঙ্গে দিতে।। অভিকে ও তো কষ্ট দিতে পারি না। বড্ড দোটানাতে আছি। গড়ির থামাতে ই দেখলাম সাইনবোর্ড এর বড় করে লিখা কাজি অফিস। অশ্রু শিক্ত নয়নে তাকিয়ে আছি লিখাটার দিকে। অভ্র এসে আমাকে একপ্রকার টেনে হিছড়ে গাড়ি থেকে নামালো।
আমার হাতটা শক্ত করে ধরে কাজি অফিসের ভেতরে নিয়ে গেলো।
–কীরে তোরা এসেছিস।
একটা মেয়ে আর একটা ছেলে বসে আছে একটা বেঞ্চিতে। দেখে মনে হচ্ছে অভ্রের বন্ধু।
–মেয়েটা কে।
আর তোকে এতো দিন বলে ও বিয়ে করাতে রাজি করতে পারিনি কেউ আর আজ তুই নিজে ইচ্ছেতে একটা মেয়েকে একপ্রকার জোর করে তুলে নিয়ে আসলি।
–তুই চুপ করবি এতো বেশি কথা বললে চলে যা আমার বিয়ে আমি নিজে ই করবো।
এটা বলার সাথে সাথে ছেলেটা চুপ করে যায়।। আর কথা বাড়ালো না।
বেশ কিছুক্ষণ পর,
বিয়ে শেষ করে এসে গাড়িতে বসলাম। আল্লাহ আমাকে এমন অগ্নিপরীক্ষাতে কেনো পাঠালো। এখন তো উনি আমাকে বাড়িতে নিয়ে যাবে দুইপরিবার কী মেনে নিবে এই বিয়ে।
–এই যে শুনুন।
উনার ঝাঁঝালো কণ্ঠে শুনে উনার দিকে তাকালাম।
–এতো ন্যাকামো করার দরকার নেই। বিয়ে টা শুধু ছয় মাসের জন্য। ছয়মাস পরে আপনাকে আমি নিজে ই মুক্ত করে দিবো।
আমি কিছু বললাম না। কিন্তু কেনো ছয়মাসের জন্য আমাকে বিয়ে করার কী দরকার ছিলো। আমি নিচের দিকে মাথা দিয়ে বসে আছি।।
_________________
বাসায় পৌছানোর পর,
গাড়ি একটা মস্ত বড় অট্টালিকার সামনে দাড় করালো। অভ্র গাড়ি থেকে নেমে কিছু বুঝে উঠার আগে ই আমাকে কোলে তুলে নিলো আমাকে কোলে তুলে নিলো।
–এই কী করছেন, আমি হেটে যেতে পারবো।
–বেশি কথা বললে কোল থেকে ফেলে দিবো কিন্তু।
ভয় পেয়ে আমি শুভ্র শর্ট খামচে ধরলাম। সামনের দিকে তাকাতে ই দেখলাম।
আমার সদ্য বিবাহিত বোন আর বোন জামাই দাড়িয়ে আছে। সামনে বরণ ডালা।
আগে বড় বউকে বরণ করে ঘরে তুলবে তারপর ছোট বউকে।
অভ্র বেশ জোরে এ কথাগুলো বললো। সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে।
–এতো দিন বিয়ে করে না এখন একে বারে কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করে নিয়েছে।
–ছোট বোনের মনে হয় বড় বোনের বিয়ে দেখে লোভ সামলাতে পারেনি। একেবারে বড় ভাইকে ফাসিয়ে বিয়ে করে নিয়েছে।।
–এক্কেবারে লাজলজ্জা মাথা খেয়েছে এখনকার ছেলে মেয়েরা এতোগুলো গুরুজন এর সামনে বউকে কোলে নিয়ে দাড়িয়ে আছে বলি কী মেয়ে কী হাটতে পারে না।
সবার কথাগুলো আমার শরীরে তীরের মতো আঘাত করছে। আমার আপু দিব্বার দিকে তাকাতে ই দেখি চোখের পানি সমানতালে গড়িয়ে পড়ছে ।
আমি অভ্রকে বললাম নামানোর জন্য কিন্তু চোখ রাঙ্গিয়ে তাকাতে ই চুপ হয়ে গেলাম।
‘আর কারো মুখে কোনো বাজে কথা শুনতে চাইনা। অভ্র অপু আমার কলিজা। আমার নাতিরা যা ই করুক আমি মেনে নিবো। বউমা আমার বড় নতবউকে বরণ করো আগে।’
অভ্রের দাদিমা। যার কথায় এবাড়ির প্রত্যেকটা মানুষ উঠে আর বসে।
দাদিমা এসে দিব্বা আর অপুকে সাইডে দাড় করিয়ে অভ্রকে সামনে নিয়ে আসেন। হাসি মুখে বরণ করে বাসায় ডুকান আমাকে। অভ্র কোল থেকে নামিয়ে সোজা উপরে চলে যায়। আমি শুধু অবাক হয়ে দেখছি এতো সহজে উনি সব মেনে নিলো।
আমাদের বরণ শেষ হলে দিব্বা আর অপুকে বরণ করার জন্য সামনে ডাকে।
–অপু তুই জানিস না বউকে কোলে করে বাসায় ডুকতে হয়। যা এ বাড়ির নিয়মের মধ্যে পড়ে।
–স্যরি দাদিমা আমার ভুল হয়ে গেছে।
–হয়েছে হয়েছে এখন কোলে তুলে ভেতরে প্রবেশ কর।
সকল নিয়ম শেষ হবার পর দিব্বাকে আমার অপুকে বসায় একসাথে। কিন্তু অভ্র না থাকায় দাদিমা অভ্রকে আসতে খবর পাঠায়।
কে জানি আমার নাতি আর নতবউ নিয়ে কী বলছিলে। আর কখনো যদি এসব কোনো ধরনের কথা শুনি তাহলে তোমরা কে আমি ভুলে যাবো। বজ্রকন্ঠ কথাগুলো বলে উনি জোরে জোরে অভ্রে ডাকা শুরু করলো।
আমি চোখ তুলে উপরে তাকাচ্ছি না আপু আমার উপর খুব রেগে আছে তা আমি ভালো ই বুঝতে পারতেছি।। কী করবো আমি কিছু ই তো করার ছিলো না। বাবা মা তো আমাকে মেরে ই ফেলবে এ কথা শুনতে পারলে।
অভ্র এসে আমার পাশে বসলো। সবাই ছবি নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। আমার পড়নে শাড়ি ছিলো। বোনের বিয়ে উপলক্ষে শাড়ি পড়েছিলাম। কতো সাজুগুজু করে ছিলাম। কাল এমন সময় ও জিজুর সাথে কতো মজা করবো ভাবতেছিলা। আর আজ আমি কারো বউ হয়ে বসে আছি।।
–তোমরা সবাই দিব্বাকে নিয়ে শাড়ি চেঞ্জ করিয়ে অপুর রুমে দিয়ে আসো।
অভ্রের সব কজিনরা দিব্বাকে নিয়ে চলে গেলো। অভ্রের দাদিমা অভ্রের মা রেনু বেগমের দিকে তাকিয়ে বললেন।
–বউমা তুমি খাবার পাঠাও আমার রুমে। অঞ্জলিকে নিয়ে আমার রুমে চলে আয় অভ্র।।।
আমার শরীরে হাটার মতো শক্তি পাচ্ছি না তাও আস্তে আস্তে হেটে যাচ্ছি। আর অভ্র বানরের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে উপড়ে উঠছে। উনি সিঁড়ির অনেকটা উপরে চলে গিয়েছেন।।। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন
–আবার কোলে নিতে হবে নাকি।
আমি মাথা নাড়িয়ে নিষেধ করলাম। এবার শরীর সব শক্তি দিয়ে দ্রুত উঠতে লাগলাম।
_________________
আমি বেডের উপর বসে আছি। অভ্র বার বার চলে যেতে চাইলে ও দাদিমা আটকে রাখছে।
–আমার প্রশ্নের উওর না দিয়ে কোথাও যেতে পারবি না অভ্র।
–দাদিমা কাজ আছে আমার অনেক।
–বিয়ে করলি কেনো অঞ্জলিকে।
–প্রয়োজন ছিলো তাই।
এটা বলে ই বেরিয়ে গেলো। আবার ফিরে এসে বললো,
–অঞ্জলিকে আমার রুমে দ্রুত পাঠিয়ে দেও দাদিমা।
–অঞ্জলি আমার সাথে থাকবে।
–তাহলে আমি ও থাকবো তোমার সাথে।
বলে ই চলে যায়, আমি চমকে গেলাম। উনি এমন গা-ছাড়া ভাব কেনো করছেন যেনো কিছু ই হয়নি।।।
–অঞ্জলি
দাদিমার ডাকে চোখ তুলে তাকালাম।
–শাড়ি পড়তে পারো।
–না দাদিমা।
–যাও ফ্রেশ হয়ে শাড়ির বাকি জিনিসগুলো পড়ে নেও। আমি শাড়ি পড়িয়ে দিবো।
আমি মাথা নাড়িয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম। শাওয়ার ছেড়ে দিয়ে ইচ্ছে মতো কান্না করলাম অনেক্ক্ষণ।
বেশ কিছুক্ষন পর দরজায় নক করাতে উঠে দ্রুত কাপড় চেঞ্জ করে নিলাম।
বাহিরে বের হতে ই দাদিমা একটা রেড কালারের শাড়ি পড়িয়ে দিলো। খাবারের প্লেটটা সামনে ধরে খাইয়ে দিতে চাইলো।
কিন্তু এ অবস্থায় আমার ভেতরে খাবার ডুকছে না। অনেক কষ্টে অল্প খেয়ে আর খাবো না বলে দিলাম।
–অঞ্জলি তুই চিন্তা করিস না। সব ঠিক হয়ে যাবে।
এ কথা শুনে যেনো আমার কান্নার মাত্রা আরো বেড়ে গেলো। উনি আমাকে কিছুটা শান্ত করে অভ্রের রুমে রেখে দিয়ে আসলো।
–বিনা ফুলে ই বাসর কর। কারণ বিনা অনুমতিতে বিয়েটা করলি।
দাদিমা চলে গেলো। আমি বেড এর উপর দুই পা গুটিয়ে বসে আছি।
আমার নাম অঞ্জলি আজাদ। বাবা কৃষি কাজ করে। মা গৃহিণী। আমরা দুই বোন। আমি এইচএসসি পাশ করলাম৷ দিব্বা আপু অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ে।
অভ্র চৌধুরী। বাবা মারা গেছে। উনারা দুই ভাই, এক বোন। অভ্র, অপু, অনি। অনি আপুর বিয়ে হয়ে গেছে। অভ্র অপু দুজনের ই পড়াশোনা শেষ করে নিজেদের বিজনেস দেখা শুনা করে।
হঠাৎ কারো দরজা বন্ধ করার শব্দ আমার কল্পনার জগৎ থেকে বের হলাম। এখন অভ্র ছাড়া কেউ এ রুমে প্রবেশ করবে না।
উনি তো ধর্মের সব নিয়ম মেনে আমাকে বিয়ে করেছেন তাহলে এখন আমার উপর তার অধিকার খাটাতে আসবে।#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ২
অভ্র রুমে ডুকে ই আস্তে আস্তে আমার দিকে এগিয়ে আসছে আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে বললাম,
–আপনি আমার কাছে আসবেন না। আমি আপনাকে অনেক ভয় পাই।।।
অনেক্ষন হয়ে গেছে উনি কোনো কথা ও বলছে না আমাকে ও স্পর্শ করছে না,তাই একটু একটু চোখ খুললাম। অভ্রের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে রক্ত বর্ণ চোখ দিয়ে তাকিয়ে আছে। আমি কিছু না বুঝার আগে ই আমার হাত ধরে টেনে বিছানা থেকে নামিয়ে অন্য একটা রুমে নিয়ে যায়।ঐ রুমের লাইটা অন করে আমাকে রেখে দরজা বন্ধ করে চলে আসে।
দরজা বন্ধ করে বাহির থেকে বলে গেলো।
–চিৎকার করবে না। আজ থেকে আপনার জায়গা এইখানে ই। আপনি ভাবলেন কী করে আপনার মতো মেয়েকে আমি স্পর্শ করবো। অভ্র চৌধুরীর রুচি এতো খারাপ না।
আমি এতো ই খারাপ তাহলে আমাকে জোর করে বিয়ে করলেন কেনো। আমার ভালোবাসা স্বপ্ন আশা সব ভেঙ্গে দিলেন কেনো। আমার অভিকে আমি কী উওর দিবো। ছেলেটা বড্ড বেশি ভালোবাসে আমায়।
বিছানায় শুয়ে ভাবতেছি কালকে আমার জীবনে হ কী কী হতে পারে। সবাই যখন জানতে পারবে মেনে নেবে কী আমায়। একা তো কখনো ঘুমায়নি ভয় করতেছে তাই লাইট অন করে শুয়ে পড়তে ই ঘুম দুচোখে চলে আসে।
___________________
সকাল বেলা, দিব্বাকে নিয়ে সবাই অনেক মজা করছে। যা ই হক কালকে রাত দিব্বার কাছে অনেক স্পেশাল ছিলো। কিন্তু অঞ্জলি যা করলো তার জন্য মনে মধ্যে বড্ড রাগ পুষে রেখেছে। এবাড়ির মানুষগুলো অনেক ভালো নয়তো ছোট বোনের এমন কাজের জন্য দিব্বাকে ও কথা শুনতে হতো।
দিব্বা একটা মেয়েকে ডেকে জিজ্ঞেস করলো,
–অভ্র ভাইয়ার রুমে আমাকে নিয়ে যেতে পারবে।
–হে চলো, কিন্তু অভ্র ভাইয়া অনেক রাগি যদি আমাকে বকা দেয়।
–কিছু হবে না। আমাকে নিয়ে যাও।
মেয়েটা আমার হাত ধরে উপরে নিয়ে যাচ্ছে এটা দেখে কয়েকজন জিজ্ঞেস করলো,
–ভাবি আপনি উপরে যাচ্ছেন কেনো।
আমি আস্তে করে উওর দিলাম।
–অঞ্জলি কাছে।
–ওহ্ অভ্রের বউ এর নাম কী অঞ্জলি নাকি। তা তারা রাতে হয়তো ঘুমায়নি এখন ঘুমাচ্ছে এখন গিয়ে ডিস্টার্ব করবেন কেনো।
এটা বলে ই সবাই হাসা শুরু করলো আমি কারো কথা না শুনে উপরে যেতে লাগলাম।
অভ্র ভাইয়ার রুমের সামনে যেতে ই দেখলাম রুমের দরজা লক করা ভেতর থেকে। তার মানে সত্যি ই ওরা ঘুম থেকে উঠে নাই। উদের কী কোনো কান্ড জ্ঞান নেই কয়টা বাজে এখন ও ঘুম থেকে উঠে নাই। তার উপর বাসা বর্তী মেহমান। আজকে তার উপর আজকে রিসিপশন।
এতো বড় একটা কান্ড ঘটিয়ে মেয়েটা কীভাবে দুপুর অব্দি ঘুমাচ্ছে। সামনে পাই একবার থাপ্পড় দিয়ে দাত ফেলে দিবো।
মনে মনে অঞ্জলিকে বকতে বকতে নিচে নেমে আসছে দিব্বা।
ঘুমের মধ্যে ই মনে হচ্ছে পাখির মতো উড়তেছে। অঞ্জলির খুব ভালোই লাগছে। ছোট বেলা থেকে কতো ইচ্ছে পাখির মতো ডানা মেলে উড়বে। মানুষের নাকি যে ইচ্ছে বাস্তবে পূরন না হয় তা স্বপ্নে পূরন হয়। অঞ্জলি ও স্বপ্নে সেই ইচ্ছে আজকে পূরণ হচ্ছে। সারাজীবন যদি শুধু এই স্বপ্ন ই দেখতে পারতাম। হঠাৎ শরীরে পানি পড়তে ই অঞ্জলি চোখ খুলে দেখে অভ্র দাড়িয়ে আছে। অঞ্জলি শাওয়ারের নিচে।তারমানে অভ্র কোলে থাকা অবস্থায় ই পাখির মতো উড়ার স্বপ্ন দেখেছে।
অভ্রকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে অঞ্জলি ভেজা শরীরে উঠে অভ্রকে জড়িয়ে ধরে।
অঞ্জলির এমন কাজে বেশ অবাক হয় অভ্র। মুহূর্তের মধ্যে ই অঞ্জলি অভ্রকে ছেড়ে আবার শাওয়ারের নিচে চলে আসে।
–এই মেয়ে আপনার সাহস তো কম না
–এই থামেন থামেন, আমাকে কোলে করে এনে ভিজিয়ে দিলেন কেনো। আমি একা ভিজবো নাকি তাই আপনাকে নিয়ে ই ভিজলাম।
— দশটার উপরে বাজে আপনি এখনো ঘুমাচ্ছে তো আর কী করার ছিলো,রাবিস
–বের হন আপনি।
–আমার ওয়াশরুম আমাকে বের হতে বলছে
–এই যে শুনেন আমি হেটে আপনার ওয়াশরুমে আসি নাই, সম্মান দিয়ে কোলে করে নিয়ে এসেছি।
দাঁতে দাঁত চেপে বললো
–তো..
এই অভ্র নিচে আস দাদিমা ডাকছে।
অনি আপুর ডাকে অভ্র ওয়াশরুম থেকে চলে যায়।
আমি দরজা লক করে। গোসল শেষ করে। ডাকতে লাগলাম।
–এই যে শুনছেন।
–নাহ আমার কান নাই।
–আমি জানি আপনি বয়রা।
–আপনি বয়রা। বেয়াদব মেয়ে।
–হে আদব ছেলে। ভেজা কাপড়ে আর কতক্ষণ দাড় করিয়ে রাখবেন ঠান্ডা লাগবে তো।
–আপনার কাপড় কী আমি পরে বসে আছি নাকি।
–বিয়ে করেছেন কিন্তু দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। আমার কোনো কাপড় তো আনিনি। দাদিমা পড়নের শাড়িটা দিয়েছিলো সাথে বাকি প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ও।
উনি আর কোনো কথা না বলে চলে গেলেন। আমার কান্না পাচ্ছে আজকে মনে হয় ভিজা কাপরে ই দাড়িয়ে থাকতে হবে। হে আল্লাহ নিয়ে যাও আমাকে।
কিছুক্ষনের মধ্যে ই দাদিমা রুমে আসে। দাদিমেকে দেখে আমার কান্না থেমে যায়।
–এই তুই কী বোকা এভাবে কান্না করসিছ কেন। কান্না করিস না আমি শাড়ি নিয়ে এসেছি পড়িয়ে দিবো।
মহিলার বয়স হলে কী হবো বেশ শক্তিশালী আলহামদুলিল্লাহ। কী সুন্দর করে শাড়ি পড়িয়ে দেয়। নিজের কাজগুলো ও নিজে ই করতে পারে কারো করে দিতে হয় না। উনি শাড়ি পড়িয়ে আমাকে নিয়ে নিচে নামলেন।
দিব্বার মুখের দিকে তাকতে ই ভয় পেয়ে গেলাম। বেশ রেগে আছে। আমাকে তো না পারে চোখ দিয়ে ই গিলে খেয়ে ফেলবে।। দিব্বার এমন রুপ দেখে আমি অন্য দিকে ফিরে যাই।।।
সবাই সবার কাজে ব্যস্ত তাই আমি রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালাম। কিন্তু কিছু দূর যেতে ই মনে পড়লো আমি কোন রুমে যাবো। অভ্রের রুমে নাকি আমাকে যে রুমে ঘুমাতে দিয়েছে ঐ রুমে…
হঠাৎ কেউ আমাকে তার দিকে ঘুরি সজোরে থাপ্পড় মারলো। তাকিয়ে দেখলাম দিব্বা
–আমার সুখ দেখে তোর সহ্য হয়নি অঞ্জলি। একেবারে আমার ই বড় জ্যা হয়ে চলে আসলি।আমি হলে না এই মুখ কাউকে দেখাতাম না। তোর মতো হিংসুটে মেয়ে আমি আর জীবনে ও দেখিনি। নিজের বোনের সুখ সহ্য হয় না।
আমার চোখ দুটো কোনো বাধা ই মানছে না। অশ্রু মুছে সামনের দিকে তাকাতে ই দেখি অভ্র দাড়িয়ে আছে। আমাকে আপু ভুল বুঝলো উনি খুশি তো এবার।
কিন্তু না আমার ভাবনাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে উনি…..
চলবে।
[ভুলগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ]
#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
পর্ব ১
[ভুলগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ]