#তোমাতেই পূর্ণ আমি
#পর্ব -১৫
#লেখিকাঃআসরিফা সুলতানা জেবা
“~তোমার চক্ষুতে ধরা দেওয়ার সময় এখনো হয়নি শুভ্রময়ী কন্যা। জানি আমাকে দেখার আকাঙ্খা তোমার আকাশ সমান কিন্তু এতো জলদি যে আমি বন্দি হতে চাই না তোমার আঁখিদ্বয়ে। আমি তোমার প্রেমে মত্ত হতে চাই ঠিক এমন ভাবেই যেন না ছুঁয়ে ও আগলে রাখতে পারি তোমায় হৃদয়ের গহীনতায়। ছিলে তো আট মাস না দেখে আমায়। তবে এতো বিচলিত হচ্ছো কেন এখন? ঠিক সময়ে আমি ধরা দিব তোমার সামনে। হাত বাড়িয়ে জড়িয়ে নিব আমার এই শূন্য বুকে। ততক্ষণ পর্যন্ত আমি তোমার মনে চিরকুট লেখক হয়ে বিচরণ করতে চাই প্রতিটি মুহুর্ত জুড়ে।
চিরকুট টা পড়ে ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠল। যতই দূরত্ব থাকুক অতীতের এই স্মৃতি গুলো ভীষণ প্রিয় আমার। চিরকুট গুলো পড়লে শত কষ্টের মাঝে ও শান্তি খুঁজে পায় আমি। রাতের আঁধারে মোমবাতির হালকা আলোয় চিকুটের লিখাগুলোর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম আমি। আজ কতো বড় মিথ্যা টা বললাম আমি। যার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনেছি তাকেই আজ ফিরিয়ে দিয়েছি কষ্ট দিয়ে।
অতীত~
সাদা শুভ্র ওড়না দিয়ে মাথায় ঘোমটা টেনে বেড়িয়ে পড়লাম কলেজের উদ্দেশ্যে। লজ্জা ঘিরে ধরছে আমায় চারদিক থেকে। নিশ্চয়ই মানুষ টা আজও আসবেন। আড়াল থেকে আমায় দেখে রঙিন এক চিরকুট দারোয়ান চাচার হাতে ধরিয়ে দিয়ে যাবেন। আচ্ছা আজ চিরকুটে কি লিখবেন ওনি? আমায় ঘোমটা তে কেমন লাগছে সেটা জানাবেন? অচেনা সেই মানুষটার জন্য মনের মাঝে তীব্রভাবে বেড়ে উঠা অনুভূতি গুলো কিভাবে লুকিয়ে রাখব আমি? ধীরে ধীরে হাঁটতে লাগলাম। আড়চোখে চারদিকে তাকিয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে ঢুকে পড়লাম কলেজে। ক্লাসে ঢুকতেই প্রিয়ু দুষ্ট হেসে বলে উঠল,,,
—বাহ্! শুভ্রপরী কে তো নজর কাড়া সুন্দরী লাগছে। মন চাইছে একদম লুকিয়ে ফেলি শুভ্রপরী টা কে। শুভ্রপরীর চিরকুট লেখক কি তার শুভ্রপরী কে দেখেছে? যদি দেখে থাকে তাহলে হয়তো বেচারা হার্ট এট্যাক করেছে।তার শুভ্রপরী যে এখন ছেলেদের হৃদপিণ্ডে ছুড়ি বসানোর রূপ ধারণ করেছে।
—হুঁশশ প্রিয়ু। কেউ শুনলে শরমে মাথা কাটা যাবে আমার। এতো সুন্দর লাগছে না আমাকে। নিজেকে তো বিধবা বিধবা লাগছে সাদা রঙে।—রসাত্মক কন্ঠে বললাম।
হাস্যকর মুখটা মলিন হয়ে এল প্রিয়ুর। রাগ দেখিয়ে বলে উঠল,,,
—–এসব কেমন কথা শ্রেয়া? সাদা পড়লেই কি মানুষ কে বিধবা লাগে নাকি? এসব অলক্ষুণে কথা কিভাবে বলিস তুই? তোর মতো একটা বুঝের মেয়ের মুখে এটা খুবই বেমানান। মজার ছলে ও কখনও এমন কিছু বলবি না।
—ওকে প্রিয়ু বেবি। আমি তো মজাই করছিলাম। শুভ্রতাই আমায় এতোই সুন্দর লাগে বল?আমার কাছে নিজেকে আশি বছরের ভুড়ি মনে হচ্ছে।
বলেই হেসে দিলাম আমি। প্রিয়ু ফিক করে হেসে দিল আমার সাথে। স্যার আসতেই ক্লাসে মনোযোগ দিলাম দুজন।কলেজ ছুটি শেষে মনে একরাশ লজ্জা নিয়ে দারোয়ান চাচার সামনে দাড়াতেই তিনি বললেন,,,
—-আজ চিরকুট আহে নাই। সাহেব রে ও দেহি নাই আজ।
চাচার কথা শুনে মনটা হু হু করে কেদে উঠল আমার। তার মানে কি আজ ওনি আসেন নি? নাকি আমায় ঘোমটাতে ভালো লাগছিল না বলে কোনো চিরকুট লিখেন নি? এক ফালি কষ্ট এসে ভর করল আমার ছোট্ট মনে। নীরবতা বজায় রেখে চলে এলাম বাসায়। একটু ও শান্তি লাগছে না কেন আজ চিরকুট দেন নি ওনি? আমার যে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। সারারাত এক হয় নি দুচোখের পাতা। মনের ভিতর সবকিছু কেমন শূন্য শূন্য লাগছে। ফজরের নামাজ পড়ে বের হয়ে এলাম রুম থেকে। তুমুল বেগে বর্ষণ হয়েছে সারা রাত ধরে। বর্ষণ হয়েছে আমার মনের মাঝে ও। হিম বাতাস বয়ে বেড়াচ্ছে চারদিকে। চার রুম বিশিষ্ট ছোট একটা বাড়ি আমাদের। এই ছোট বাড়িটা কেই আম্মু সাজিয়েছিল তার মন মতো। কিন্তু ক্যান্সার নামক ব্যাধি কেঁড়ে নিয়েছিল আমার মায়ের জীবনটা সেই সাথে আমার জীবনের সুখ গুলো। বৃষ্টি হয়েছে বিধায় ফুল গাছ গুলোতে আজ আর পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কয়েকটা মাত্র ফুলের চারা। বাগান করতে ভালোবাসলে ও সাধ্য নেই আমার । কিছু টাকা জমিয়ে মায়ের কাছ থেকে লুকিয়ে এই ফুলের চারাগুলো কিনেছি আমি। জানতে পেরেই খুব মেরেছিলেন আমায়। পুরো চারদিন জ্বরে ভুগেছি আমি। কিন্তু এক নলা ভাত মুখে তুলে দেওয়ার মতো কেউই ছিল না। ফুল গাছগুলোর দিকে তাকিয়ে একটা সুদীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম । মনটা কেমন অশান্ত হয়ে আছে। সারারাত ঘুমায় নি অথচ ঘুমের ছিটেফোঁটা ও নেই দু’চোখে। নিদ্রা যে আজ আমায় কোনোভাবেই ধরা দিবে না তা বুঝে গেছি। আমি যে এক ভয়ংকর রোগে আক্রান্ত হয়েছি। যা আমার মনে বিস্তার করে চলেছে গভীরভাবে। অচেনা লোকটার প্রতি আমি ভয়ংকরভাবে প্রণয়ে আবদ্ধ হয়েছি। ভালোবেসে ফেলেছি তাকে। অথচ আমায় প্রণয়ে ফেলে অবলীলায় গায়েব হয়ে গিয়েছেন তিনি।
তিনদিন ধরে কোনো চিরকুট আসে না আমার নামে। হতাশ হয়েই ফিরতে হয় প্রতিটা দিন। ঘন্টাখানেক দাঁড়িয়ে থেকে ও দেখা পায় না মানুষটার। আর দেখলেও তাকে চিনার উপায় নেই আমার। হঠাৎ করেই হারিয়ে গেলেন মানুষটা। সাথে হারিয়ে গেল তার চিরকুটে নিবদ্ধ ভালোবাসা টা। আচ্ছা ওনি কি আর কখনও আমায় ভালোবাসা নিবেদন করবেন না ওনার চিরকুটের মধুময় বাক্যে? ভেবেই গেইটের কাছে আসতেই এক প্রকার দৌড়ে এসে আমার হাতে একটা চিরকুট ধরিয়ে দিলেন দারোয়ান চাচা। খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়লাম আমি। কোনো দিকে না তাকিয়ে ছুটে এলাম স্কুলের পিছন দিকটায়। দেয়ালে হেলান দিয়ে চোখ বুঁজে রইলাম কিছু সময়।
” ভীষণ ব্যস্ত ছিলাম শুভ্রপরী। এতোদিন আসার একটু ও সুযোগ হয় নি। তবে সেদিন তোমার শুভ্রতায় ঘেরা স্নিগ্ধময় চেহারা দেখেছিলাম আমি। পুরো আধাঘন্টা বুকের বা পাশে হাত দিয়ে তোমার পানে চেয়েছিলাম বিভোর হয়ে ।যখন তুমি আঁড়চোখে তাকিয়ে আমাকে খুঁজতে ব্যস্ত ছিলে তখন আমি মগ্ন ছিলাম তোমাতেই। ”
চিরকুটে ঠোঁটের ছোঁয়া দিয়ে ব্যাগে পুরে নিলাম আমি। শূন্য মনটা ভরে উঠল আনন্দতায়। ভালোবাসা এসে প্রবলভাবে কড়া নাড়তে লাগল মনের দুয়ারে।
।
।
কেটে গেছে পুরো বারো মাস। কয়জন পারে এ যুগে এসে না দেখেই চিরকুটের আদান-প্রদানে গভীর এক ভালোবাসার স্রোতে ভেসে যেতে! আমি পেরেছি। না দেখে ও এক অচেনা চিরকুট লেখক কে জায়গা দিয়েছি হৃদয়ের গহীনে। আমি জানি ওনি কখনও আমায় ঠকাবেন না। চিরকুটে লিখা তার প্রত্যেক টা বাক্য সত্য এবং তা আমার নামেই উৎসর্গ। এই এক বছরে আমিও অনেক চিরকুট লিখেছি ওনার জন্য। আট মাসের মাথায় দেখার আবদার করেছি চিরকুটের মাধ্যমে কিন্তু ধরা দিতে রাজি নয় সে। বলেছেন ঠিক একসময় এসে দাড়াবেন আমার আঙিনায়। আজ চারপাশ টা নতুন নতুন লাগছে আমার কাছে। শীতল বাতাস এসে বার বার দোলা দিয়ে যাচ্ছে সারা দেহে । মানুষ টা কে এখনো বলা হয় নি আমার মনের কথা। প্রকাশ করা হয় নি জমিয়ে রাখা ভালোবাসা। আজও ব্যাতিক্রম হয়নি নিয়মের। চিরকুট নিয়ে পা বাড়ালাম ক্লাসের দিকে।প্রিয়ু এসে পাশে বসল।
—দোস্ত আজ কিন্তু তোদের চিরকুট প্রেম বার্ষিকী। আজ চিরকুটে কি লিখা আছে আমাকে পড়ে শোনাতেই হবে।নইলে কিন্তু তোর পিছু ছাড়ছি না আমি।হুহ্!!
কি বলে এই মেয়ে! আমি তো লজ্জায় মরে যাবো এই মেয়েকে চিরকুট পড়ে শোনালে।
—তুই নিজে পড়ে নে।—চিরকুট টা ওর হাতে দিয়ে বললাম।
—না না। আমার শরম লাগে।পরের জিনিসে আমি হাত বাড়ায় না বাবু।
—আহারে সাধু মাইয়া একখান।
চিরকুটের ভাজ খুলতেই মনটা একদম জুড়িয়ে গেল আমার।
~ “বারো টা মাস।৩৬৫ দিন। ৩৬৫ দিন ধরে আমার মাঝে বিচরণ করছো তুমি। নিজেকে পাগল পাগল মনে হয় আমার কাছে। তোমায় এক নজর না দেখলে না পারি পড়ায় মন বসাতে না পারি স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে। তোমার জন্য দিনকে দিন ব্যাকুল হয়ে উঠছে আমার বেহায়া মনটা। যদি একবার দেখা দেয় তবে নিজেকে ধরে রাখা দায় হয়ে পড়বে আমার কাছে। কিন্তু আমি যে এখন একটু ও ছুঁয়ে দেখতে চায় না তোমাকে। তোমার ফাইনাল এক্সাম শেষ হলেই অবসান ঘটবে আমাদের চিরকুট প্রেমের। শুভ্রতায় মুড়িয়ে নিজের অর্ধাঙ্গিনী বানিয়ে বুকের পাঁজরে বন্দি করব তোমায়। ভালোবাসি শুভ্রপরী!”
ভালোবাসি শব্দটা শুনে দুরু দুরু বুকটা ধুক করে উঠল খুব জোরে। প্রথমবার,,,প্রথমবার পুরো একবছর পর ওনি ভালোবাসি বলেছেন আমায়। মন হচ্ছে এই মুহূর্তেই জ্ঞান হারাব আমি।
ফোনের শব্দে সম্মিত ফিরে এলো আমার। এতো রাতে কার ফোন হতে পারে? ঘড়ির কাটায় ১ টা ছুঁই ছুঁই। স্মৃতির পাতায় এতোই মগ্ন ছিলাম যে সময়ের ও খেয়াল নেই। কল টা ধরার আগেই কেটে গেল। স্ক্রিনে তাকাতেই পরিচিত নাম্বার টা দেখে কলিজা মোচড় দিয়ে উঠল আমার। ওনার নাম্বার আমি জানলে ও ওনি কিভাবে পেলেন আমার নাম্বার? আগে তো মোবাইল ছিল না আমার। ফোনটা শাশুড়ী মা কিনে দিয়েছেন বিয়ের পর। হয়তো প্রিয়ু বা অন্য কারো কাছ থেকে নিয়েছেন। দ্বিতীয় বার কল বাজতেই তাড়াতাড়ি করে রিসিভ করে নিলাম আমি।কানে দিতেই বুকের বা পাশ টা কম্পিত হতে লাগল প্রচন্ড গতিতে। নেশাগ্রস্ত কন্ঠ ওনার।আচ্ছা ওনি কি ড্রিংক করেছেন!
—-শুভ্রপরী,,,,,,,,,,,,
কম্পনরত কন্ঠে জবাব দিলাম,,,
—-জ্বি।
—- আমি তোমায় ভীষণ ভালোবাসি শ্রেয়সী। দেখে যাও না তোমার সকালের কথাগুলো কেমন রক্ত ঝরাচ্ছে আমার বুকে। আমি জানি তুমি আমায় ভালোবাসো। খুব ভালোবাসো। ভালো না বাসলে ও বাসতে হবে। তুমি তো প্রথম থেকেই আমার ছিলে তাই না?এই শুভ্রময়ী কন্যা কথা বলবি না?বল তুই সবসময় আমারই ছিলি তাই না? তাহলে তুই কেন আভাসের হলি? কেন আমার অধিকার তুই অন্য কাউকে দিলি? কিভাবে হতে পারলি তুই এতো বড় বেইমান? তার জন্যই বুঝি এতো কষ্ট করে আগলে রেখেছিলাম তোকে? ধোকা দিলি আমাকে। ভালোই যদি না বাসিস তবে তোর পায়ে কেন আমার দেওয়া পায়েল টা? সময় আমার পক্ষে ছিল না নয়তো তোকে মেরে ফেলতাম তবুও অন্য কারো হতে দিতাম না। এখন তুই শুধু আমার। শুভ্রপরী শুধু তূর্যর। আমি তোকে ছুঁয়ে দেখব,,কিস করব,ভালোবাসবো,,বুকের মাঝে মিশিয়ে রাখব,,,,,,
শেষের বাক্যটা শুনে কান গরম হয়ে এলো আমার। ওনার নেশাগ্রস্ত কন্ঠ নেশা ধরিয়ে দিচ্ছে আমার মাঝে ও। সেই সাথে বুকের মাঝখানটায় এসে বিঁধছে ওনার বলা বেইমান শব্দটা। বেইমানি তো আমি করি নি। উনিই তো আসেন নি সেদিন। কিছু বলতে নিব তার আগেই কেউ বলে উঠল,,,
—হ্যালো জেরি আমি আয়ুশ। তূর্য এই প্রথম ড্রিংকস করেছে তো তাই একটু আবোল তাবোল বকছে। প্লিজ কিছু মনে করবে না তুমি।যেই ছেলেটা নিজের পঁচিশ বছরের জীবনে কখনও মদ ছুঁয়ে ও দেখে নি সে আজ এক ঘন্টা ধরে গিলেই যাচ্ছে। আমি জানিনা কি কারণে তূর্য আজ এমন করছে তবে এতটুকুই বলব আমি তোমায় না পেয়ে নিশ্বাস নিতে পারলে ও তূর্য এক মুহুর্ত ও বাঁচবে না তোমাকে ছাড়া।
আয়ুশ ভাইয়ার কথায় কি জবাব দিব জানা নেই আমার। মৃদু কন্ঠে বললাম,,-
—আপনি প্লিজ ওনার খেয়াল রাখবেন ভাইয়া।
বলেই কল কেটে দিয়ে শুয়ে পড়লাম বালিশে মুখ গুঁজে। আবারো একটা রাত কেটে যাবে নিদ্রাহীন, কান্নায়।
—————————————-
আজ ভার্সিটি যাবো না। সকালের দুটো টিউশনি শেষ করে সোজা বাসায় ফিরব। শুধু আজ না কয়েকদিনই যাবো না ভার্সিটিতে । প্রিয়ুর থেকে নোটস এনে পড়া কমপ্লিট করে ফেলব।যেভাবে হোক নিজেকে তূর্য ভাইয়ার কাছ থেকে দূরে রাখতে হবে। দুটো টিউশনি করে বের হতে হতে প্রায় নয়টা বেজে গেল।যাক সমস্যা নেই।আজ তো সারাদিন আমি একদম ফ্রী। আর সন্ধ্যার দিকে তিতিশা কে পড়াতে যাবো। বাসার কাছে আসতেই আমার চোখ চড়কগাছ। রাতের বেলা মাতলামো করে এই লোক সকাল সকাল আমার বাসার সামনে কি করছেন?আমি ভুল দেখছি নাতো?যার হাত থেকে বাঁচার জন্য ভার্সিটি যাবো না সিদ্ধান্ত নিলাম সেই হাজির আমার সামনে। সাদা টি শার্ট কালো জ্যাকেট পড়ে হিরো সেজে গাড়িতে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছেন তূর্য সাহেব। চাচার ভাষায় যাকে বলে –আহা কি সুন্দর একখান পোলা দেহার লাহান! তাড়াতাড়ি করে পাশের হিজল গাছটার পিছনে নিজেকে আড়াল করে নিলাম আমি। কাল কথাগুলো বলে যেভাবে পালিয়ে গেছি নাগাল পেলে আজ হয়তো কঠোর শাস্তি দিবেন। যা ভয়ংকর মানুষ ওনি। এসব ভাবতে ভাবতে সামনে তাকিয়ে অবাক আমি। কোথায় গেলেন ওনি? আরেকটু এগিয়ে দেখতে যাবো তখনি কেউ আচমকা কোলে তুলে নিল আমাকে। ভয়ে চিতকার দিতে নিলে আমার দিকে ঝুঁকে ঠোঁটে আলতো কামড় বসিয়ে দিলেন তূর্য ভাইয়া। ঠোঁটে হাত দিয়ে হতবাক হয়ে রইলাম আমি। গালে অধরের ছোঁয়া দিয়ে সরে গেলেন তূর্য । চারদিকে চোখ বুলিয়ে দেখলাম কেউ নেই রাস্তায়। কাঁপা কাঁপা হস্তে ওনার জ্যাকেটের অংশ খামচে ধরলাম খুব শক্ত করে। একটু উপরে তুলে নিজের সাথে আমায় মিশিয়ে নিলেন আরো গভীরভাবে।
চলবে,,,,
(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)