#তোর_মায়ায়_আবদ্ধ
#অন্তিম_পর্ব
#আঁধারিনী(ছদ্মনাম)
শুভ্রের হাত ধরে শশুর বাড়ি নামক বাড়িতে আরো একবার পা দিলাম।যে-ই অনুভূতি টা আমি প্রথম দিন এই বাড়িতে এসে পাইনি আজ পাচ্ছি সেই অনুভূতি।শুভ্রের হাত ধরে যখন সবার সামনে দাঁড়ালাম অজান্তেই জেনো লজ্জায় রাঙা হয়ে উঠলাম।কিন্তু কে জানতো এটাই ছিলো এই শশুর বাড়ি নামক বাড়িটাতে আমার শেষ পদার্পণ হবে।শুভ্র আমাকে নিয়ে ঠিক আমার বাবার সামনে দাঁড়িয়ে আমার হাতটা বাবার হাতে ধরিয়ে দিয়ে হাসোজ্জল মুখে বললো,
” আংকেল আপনার মেয়েকে সুস্থসবল ভাবে আবার আপনার কাছে ফিরিয়ে দিলাম।”
বাবাও হাসিমুখে জবাব দিলো ” হ্যাঁ বাবা তুমি আমাদের জন্য যা করেছো তা কখনো ভুলতে পারবো না।চিরঋণী হয়ে থাকলাম তোমার কাছে।যদি কখনো সুযোগ পাই তোমার ঋণ শোধ করার তাহলে আমি সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবো।”
বাবার কথার উত্তরে শুভ্র শুধু একটু মুচকি হাসলো।বাবার পাশের ফারহান আংকেলও দাঁড়িয়ে আছেন।তবে তাঁর মুখে হাসি বিদ্যমান থাকলেও তা মলিন হাসি।আমি কারোরই কোন কথার মানে বুঝতে পারছি না কি বলছে ওরা!
” বাবা কি বলছো কিসের ঋণ আর কিসের কি আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না?” কিছুই বুঝতে না পেরে অবাক নয়নে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
বাবা কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে নিলেই পাশ থেকে শুভ্র বলে উঠে ” আ-আংকেল আমি বলছি সবটা।”
এবার ঘাড় ঘুরিয়ে শুভ্রের দিকে তাকালাম শুভ্র ইশারায় বসতে বললো কিন্তু আমি বসলাম না।শুভ্র আমার আকুলতা বুঝতে পেরে আর বসতে না বলে কথা শুরু করলো।
” তোমার বিয়ের কয়েকদিন আগে অভ্র ওর বাবার পরিচয় দেওয়ার জন্য বাবার ছবি দেখায়।আংকেল তুর্জয় চৌধুরীর ছবি দেখেই তাকে চিনে ফেলেন।কারণ তোমার মা তুর্জয় চৌধুরী কথা আর ছবি আংকেলকে অনেক আগেই দেখিয়েছিলেন।আর তোমার মায়ের উধাও হওয়ার পিছনে তুর্জয় চৌধুরীর হাত আছে এটা অনেক আগে থেকেই মনে হয়েছিলো।কিন্তু তুর্জয় চৌধুরীকে আগে খুঁজে পাননি তাই কিছু করতে পারেনি।এবার যেহেতু তাকে খুঁজে পেয়েছেন তাই আংকেল আমার বাবার কাছে ফোন করে বলেন তুর্জয় চৌধুরী সম্পর্কে একটু খোঁজ নিতে। কারণ এই ব্যপারে আংকেল কাউকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। আর তখন তোমায় বিয়ের কাজ চলছিলো তাই চাইলেও নিজে থেকে কিছু করতে পারছিলেন না।বাবা কয়েকজনকে দিয়ে খোঁজ নিতেই অভ্রের বাবার এই কালো জগতের কথা জানতে পারে।পুরোটা জানতে না পারলেও কিছুটা তো জানতে পেরেছে।যেহেতু অভ্রের বাবা নারী পাচারকারীর সাথে জড়িত তাই আর যাইহোক নিজের মেয়ের বিয়ে তো আর ওইরকম একটা পরিবারে দেওয়া যায় না। তাই বাবা আর আংকেল মিলে একটা প্ল্যান করলেন।বিয়ের দিন তোমার মায়ের একটা ছবি তোমাদের ড্রয়িং রুমে টানিয়ে দেয়।যাতে খুব সহজেই অভ্রের বাবা জানতে পারে সে কার বাড়িতে এসেছে।আর প্লান মতোই অভ্রের বাবা তোমার মায়ে ছবি দেখেই রেগে যান। তাই অভ্রকে বাধ্য করেন বিয়ে ভাঙ্গার জন্য। তবে সেদিনের আমার সাথে ঘটা ঘটনাটা পুরোই কাকতালীয় ছিলো।বাবাদের প্লান ছিলো অভ্র কোনো ভাবে বিয়েটা ভেঙ্গে দেওয়ার পর তোমার সাথে আমার বিয়ে দিবে।কারণ ওদেরকে ধরার জন্য বিয়েটা খুব প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু অভ্রের ওই কান্ডের ফলে সব কিছুই আরো সহজ হয়ে যায়।তবে আমি এসবের কিছুই প্রথম থেকে জানতাম না।”
এতোটুকু বলে থামলো শুভ্র ঠোঁট দিয়ে জিভ ভিজিয়ে নিয়ে আবার বলা শুরু করলো ” আমি যেহেতু এসবের কিছুই জানতাম না তাই না জেনেই তোমার সাথে অনেক বাজে ব্যবহার করেছিলাম।আমার পরিচয় টা হয়তো তুমি এখনো ঠিকভাবে জানো না আমি একজন সিক্রেট পুলিশ অফিসার। আংকেল আর বাবা এই কাজের জন্য আমাকে বেছে নেওয়ার এটাই কারণ ছিলো।তোমাকে ভার্সিটি ভর্তি করানোর পরেরদিন আমি এসব জানতে পারি।আর ভার্সিটিতে দ্বিতীয় দিনের তোমার আর অভ্রের সব কথাই আমি শুনে ফেলি যদিও তোমাকে বুঝতে দেয়নি তার কারণ ছিলো অভ্র।পরের সব কিছুই আমাদের প্লানের অংশ ছিলো।আমাদের এই বিয়েটা ছিলো শুধু মাত্র তোমার মায়ের কেস টা সলভ করার জন্য।তোমার কাছে সবটা না লুকিয়ে রাখলে এতো সহজে সবটা হতো না তাই বাধ্য হয়েই আমাদের সব কিছু লুকিয়ে রাখতে হয়েছে।আর হ্যাঁ আমাদের ডিভোর্স পেপারটাও রেডি করে রেখেছি।”
শুভ্র একটা কাগজ বের করে আমার সামনে ধরলেন।আমি শুধু বাক রুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি।এতো সহজে এভাবে কথাটা বলতেব পারলেন।এতোগুলা দিন আমরা একসাথে ছিলাম।আর যেভাবেই হোক বিয়েটা তো হয়েছে।আমার জন্য একটুও অনুভূতি কি জন্মায়নি!
” তুমি চিন্তা করো না এবাড়িতে থেকেই তুমি ভার্সিটি কন্টিনিউ করতে পারো।” আশ্বাস দিয়ে বললো শুভ্র।
” তার প্রয়োজন নেই।” কাঠ কাঠ গলায় এইটুকু বলেই ডিভোর্স পেপার টা শুভ্রের হাত থেকে নিয়ে নিলাম।সেখানে গোটা গোটা অক্ষরে নিজের নামটা লেখেই পুনরায় শুভ্রের হাতে কাগজ টা ধরিয়ে দিলাম।উনি এখনো সাবলীলভাবে দাঁড়িয়ে আছেন জেনো এতে উনার কিছুই যায় আসেনা।আমি সেদিন এক পলক তাকিয়েই বাবার হাত ধরে বেরিয়ে আসলাম।ফারহান আংকেল কিছু বলতে নিয়েও বললেন না।বাড়িটার প্রতি আর বাড়ির মানুষ গুলোর প্রতি আজ কোনো মায়াই আমাকে আবদ্ধ করে রাখতে পারলো না।আজ মায়ার কাছে চাপা সেই অভিমান টুকুই জিতে গেলো।
চার মাস পর…….
আজ অনেকগুলো দিন পর আবার সে-ই অপ্রিয় শহরটাতে আসতে হলো পরীক্ষার জন্য।এই ঢাকা থেকে সেদিন চলে যাওয়া পর থেকে আর আসিনি একবারের জন্যও ভার্সিটির প্রয়োজনে সব সময় বাবাই আসতো আমি আসতাম না কখনো।ক্লাসও করিনি এতো মাস ধরে।কিন্তু আজ পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আসতেই হলো।একাই এসেছি বাবা সঙ্গে আসতে চেয়েছিলো খুব করে কিন্তু আমার জেদের কাছে শেষমেষ হারতে হয়েছে।নিজেকে একদম গুটিয়ে নিয়েছি।একাই চলি এখন সবসময়। কারো সঙ্গ আর এখন ভালো লাগে না। পরীক্ষা শেষ হতেই ভার্সিটি থেকে রাস্তা দিয়ে হা্টতে লাগলাম।মিনিট দুয়েক হাঁটলেই বাস স্টেশন তাই আর অযথা রিকশা নেইনি।হাঁটতে ভালোই লাগছে এই পথ দিয়ে শুভ্রের বাইকে করেই কতোবার আসা যাওয়া হতো।যাওয়া আসা ছাড়া আমাদের তেমন কোনো স্মৃতি নেই। তবুও ওইটুকু স্মৃতিই যেনো আমার চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে উঠছে।হারিয়ে যাচ্ছিলাম পুরোনো দিন গুলোতে কিন্তু নিজের অচেতন মনকে বেশিক্ষণ হারাতে দিলাম।যে আমার নয় তাকে নিয়ে ভাবতে চাই না।জানিনা সেই শুভ্রও ডিভোর্স পেপারটায় সাইন করেছিলো কিনা!তবে না করলেও অটো ডিভোর্স হয়ে গেছে।শুনেছিলাম একজন ডিভোর্স পেপারে সাইন করার পর অপরজন সাইন না করলেও তিনমাস পার হয়ে গেলে অটো ডিভোর্স হয়ে যায়।তাই শুভ্র আর আমার ডিভোর্স টাও হয়ে গেছে।আর ভাববো না!মনকে অন্যদিকে ঘুরানোর জন্য একটা টপিক লাগবে তো! কিন্তু কি ভাবা যায়? হঠাৎই নিজের অনেক বড় একটা বোকামির কথা মনে পড়তেই মুখে হাসি চলে এলো।আমি ছোটো থেকে জানতাম যে আমার মা-বাবার বিয়েটা ছিলো প্রেমের বিয়ে।কিন্তু আমি যে কতো বড় বোকা ছিলাম তা সেদিন বাবার কথা শুনে জানলাম।অভ্রের বাবার ওই কথা গুলো শোনার পর বাবাকে একদিন জিজ্ঞেস করেই ফেললাম। বাবা তো আমার কথা শুনে রীতিমতো অবাক।কোনো কথা না বলেই বাবা আমাকে আগে জিজ্ঞেস করলো কে বলেছে আমাকে এই কথা। এটা তো ছোটোবেলায় একদিন আমাকে গপ্পের বুড়ি মানে বাড়ির পাশের সেই কাকিমা যার কিনা গল্প বানানোই কাজ!আমি তো তখন ছোটোছিলাম আর এমন ভাবে আমাকে বলেছিলো যে আমি সেটা বিশ্বাস করে নিয়েছিলাম।সময়ের সাথে সাথে তাতে মনের মধ্যে গেঁথে গিয়েছিলো।আসলে ওইটা সম্পূর্ণই মিথ্যে ছিলো।আমার যে তখন ওই মহিলাকে কি করতে ইচ্ছে করছিলো বলার বাহিরে। শুধু বয়সে বড় বলে মহিলাকে সামনাসামনি কিছু বলিনি।কিন্তু দিনেরাতে চব্বিশ ঘণ্টা মহিলার গুষ্টি উদ্ধার করতাম।এই যেমন এখন করছি।মহিলার কথা মনে পড়লেই রাগ চাঁড়া দিয়ে উঠে মাথায়।
হাঁটতে হাঁটতে বাসের কাছে চলেও এলাম।একটা টিকিট কিনে বাসে উঠে বসলাম।একটা ফাঁকা সিটে জানালার কাছে বসলাম।আমি বসতেই আমার পাশে একজন এসে ধড়াম করে বসে পরলো।আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে জানালা দিয়ে বাইরে দেখতে মনযোগ দিলাম।বাসও ছেড়ে দিয়েছে মিনিট পাঁচেক হলো।হঠাৎ করে আমার কাঁধে ভাড়ী কিছু অনুভব হতেই চমকে উঠলাম।ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলাম আমার পাশের লোকটা আমার কাঁধে মাথা দিয়ে ঘুমাচ্ছে।এতে যতো না চমকিয়েছি তার থেকে বেশি চমকিয়েছ মানুষ টাকে দেখে।কারণ মানুষ টা আর কেউ নয় শুভ্র!হ্যাঁ শুভ্রই কিন্তু উনি এখানে কি করছেন!মুহুর্তেই মুখে কঠিন্য ভাব এনে ঠেলে উঠিয়ে দিতে লাগলাম শুভ্রের মাথাটা আমার ঘাড় থেকে।
” আহ একদম বিরক্ত করবে না আমায়।ঘুমাচ্ছি দেখতে পাচ্ছো!” ঘুম ঘুম চোখেই বিরক্ত নিয়ে বললো শুভ্র।
মাথায় জেনো রাগটা আরো চাঁড়া দিয়ে উঠলো।একদম ঠেলে উঠিয়ে দিলাম।শুভ্র আড়মোড়া ভাঙ্গতে ভাঙ্গতেই আমার দিকে বিরক্ত চোখে তাকালো।ক্লাস দেখাচ্ছে খুব মানুষ টাকে আমি আর সেদিন না তাকিয়ে অন্য দিকে মুখ করে তাকালাম।
” এখানে কি করছেন আপনি?”
” বাসে উঠে লোকে কি করে!দেখো আমি এখন খুব ক্লান্ত ঘুমাবো।” দায়সারাভাবে জবাব দিলো।
” ঘুমান নাহয় নাচুন কিন্তু অন্য সিটে গিয়ে করেন।এখান থেকে উঠুন।মেয়ে দেখলেই খালি গায়ে পড়ার স্বভাব।আপনাকে তো ভালোই ভেবেছিলাম এতো বাজে কেনো চরিত্র!” বিরক্তির সুরে বললাম।
” বউয়ের কাঁধে মাথা রাখলে যে চরিত্র বাজে হয়ে যায় জানতাম না তো!” হাই তুলতে তুলতে বললো শুভ্র।
ভ্রু কুঁচকে তাকালাম এবার ” বউ কিসের বউ? আপনার সাথে আমার চারমাস আগেই তো ডিভোর্স হয়ে গেছে।আমি নিজে সাইন করে দিয়ে এলাম আপনাকে।
” আমি সাইন করেছি নাকি?”
” আপনি না করলেও তিনমাস পর অটো ডিভোর্স হয়ে গেছে। ”
” আর যদি তিনমাস আগেই পেপার টা ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে আগুনে জ্বালিয়ে ফেলি তাহলেও কি ডিভোর্স টা হবে?” মুখে আঙ্গুল দিয়ে ভাবুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন শুভ্র।
শুভ্রের কথা শুনে আমি হা হয়ে তাকিয়ে আছি তারপর নিজেকে সামলে নিজেকে প্রস্তুত করলাম কড়া কিছু বলার জন্যই এরমধ্যেই আমার ঘাড়ে ঠান্ডা কিছু অনুভব হতেই শুভ্রের দিকে তাকালাম।উনার চোখে পানি যা টপটপ করে আমার ঘাড়ে এসে পরছে।ক্লান্ত চোখ জোড়া বন্ধ করে মৃদু সুরে বলতে লাগলেন,
” আমি যেই পেশায় নিয়জিত আছি তা অতন্ত্য শখের বসেই যোগ দিয়েছিলাম।মাঝে মাঝেই সিক্রেট মিশনে নামতে হয়।মাঝে মাঝে তো এমন সব মিশনে যেতে হয় যেখান থেকে বেঁচে ফেরাই সম্ভব না।মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে বাঁচতে হয় আমাদের।যদি চাকরির শুরুতেই নিজের জীবন দেশের জন্য সবে দিয়েছি বলেই শপথ নিয়ে জয়েন করেছি।তাই আমি আমার জীবনের সাথে কাউকেই কখনো জড়াতে চাইনি।আমার কখন কি হয়ে যায় আমি নিজেও জানিনা।তোমার সাথে বিয়ে হবার পর ইচ্ছে করে তোমাকে কষ্ট দিতে লেগেছি যাতে তুমি আমার এই অনিশ্চিত জীবন থেকে চলে যাও।তারপর যখন বাবাদের প্লানের কথা জানলাম তখন তোমার সাথে মিশতে শুরু করেছিলাম যদিও তা আমার কাজের জন্যই কিন্তু মিশতে মিশতে যে কখন তোমার মায়ায় বাঁধনে আবদ্ধ হয়ে গেছি তা নিজেও জানি না।বুঝতে পারার সাথে সাথেই নিজেকে শক্ত করতে লাগলাম।আমার এক বন্ধকে দিয়ে ডিভোর্স পেপার রেডি করিয়েছি।যাতে তোমাকে আমার এই অনিশ্চিত জীবন থেকে পুরোপুরি দূরে সরিয়ে দিতে পারি।তুমি সেদিন ডিভোর্স পেপারে সাইন করে চলে যাওয়ার পর আমি একমাস যাবত অনেক চেষ্টা করেছি সাইন করার কিন্তু পারিনি যতবারই করতে গিয়েছি তোমার মুখটা সামনে ভেসে উঠতো। তাই পারিনি ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলেছি।সেইদিনই রওনা দিয়েছিলাম তোমার বাড়ির উদ্দেশ্য কিন্তু তখনই কমিশনারের ফোন আসে একটা নতুন মিশনের জন্য। এই তিনমাস সেই মিশনেই ছিলাম।আজই ফিরলাম
একটু থেমে করুন চোখে আমার দিকে তাকি পুনরায় বললো ” আমার এই অগোছালো এলোমেলো জীবন টাকে পারবে কি গুছিয়ে নিতে?পারবে না আমার এই অনিশ্চিত জীবনের সঙ্গীনি হতে?”
” বউয়ের মান ভাঙ্গাতে পারেন কি?” আমার এমন জবাবে কিছুক্ষণ আমার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলো আমি ঠিক কি বলেছি।তারপর আমার কথার মানে বুঝতে পেরে আমার এলোমেলো কথার উত্তরে উনিও এলোমেলো হেঁসে বললেন,
” না পারিনা তবে চেষ্টা করতে পারি!”
” তাহলে এখন থেকেই লেগে পড়েন।”
” এখন না গো বউ এখন আমি খুব ক্লান্ত দৌড়ে এসে আপনার বাসে উঠে আপনার পাশের জায়গায় অন্য কেউ দখল করার আগে আমিই দখল করলাম।শশুর বাড়ি গিয়ে বউয়ের মান ভাঙ্গানোর মিশন আদা-জল খেয়ে শুরু করবো।”
বলতে বলতেই পুনরায় আমার কাঁধে মাথা ফেলে ঘুমাতে লাগলেন।এবার আর বাঁধা দিলাম না বরং সযত্নে আগলে নিলাম মাথাটা।মায়ার বাঁধনে যে আবদ্ধ আমরা দুটি মন!এভাবেই একে অন্যের মায়ায় আবদ্ধ হয়েই নাহয় দুটি অগোছালো এলোমেলো মনের এক হওয়ার গল্প লিপিবদ্ধ থাকুক এই ভড় দুপুরে মধ্যাহ্নে!আবার কোনো এক ভড় দুপুরের মধ্যাহ্নেই নাতিনাতনি কে নিয়ে বসবো লিপিবদ্ধ হয়ে থাকা এই গল্প নিয়ে।কথাগুলো ভাবছি আর নিজের মনে মনে হেঁসে কুটি কুটি হচ্ছি।
~সমাপ্ত
[