নুর পর্ব ২৪

#নূর💔
Writer-Moon Hossain
[Shabnaj Hossain Moon]
Part-24
বিশিষ্ট সাহাবি হজরত জায়েদ (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি এ দোয়াটি পাঠ করবে, তার (জীবনের) সব গোনাহ মাফ হয়ে যাবে। -আবু দাউদ: ১৫১৯, তিরমিজি: ৩৫৭৭

أسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذي لا إلهَ إِلاَّ هُوَ الحَيَّ القَيُّومَ وأتُوبُ إلَيْهِ

উচ্চারণ : আসতাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়ুম ওয়া আতুবু ইলাইহি।

অর্থ : আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীব। তিনি নিখিল সৃষ্টির পরিচালক। আমি তার কাছেই ফিরে যাব।
মেহেরাব পূর্বের সকল গুনাহ এবং বর্তমানে নিজের অজান্তে গুনাহ সমূহের জন্য অনুতপ্ত হয়। সব সময়ে সে ইস্তেগফার, গুনাহ মাফের দোয়া সমূহ পাঠ করে।
মহান আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয়ই তাকে মাফ করবেন। সঠিক রাস্তা দেখাবেন।

মেহেরাব হোস্টেল রিসিপশনের রুমের টেবিলে কি যে লিখছে।
মোম মেহেরাবের সামনে দাঁড়ালো।
মেহেরাব মোম কে দেখতে পেয়ে ইশারা করলো বসতে।
মোম না বসে বোঝার চেষ্টা করলো পরিস্থিতি।
মেহেরাব মোম কে ধরে বসালো।
-সুইটহার্ট। আর ইউ অলরাই?
-ইয়েস। আই এম অলরাইট।
-তুমি তো আমাকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিলে।
সেন্সলেস হওয়ার পর বড় একটা ভীড় জমা হয় তোমাকে ঘিরে।
আমি কি করব ভেবে পাচ্ছিলাম না৷
কেউ একজন বলল- ভীড় কমাতে। হোস্টেলে নিয়ে যেতে। বিশ্রামও নিলেই সরে উঠবে।
আমি তো ছন্নছাড়ার মতো। নিজেও জানিনা কি করব।
কাশফিয়া ব্যবস্থা করে তোমাকে নিয়ে আসে।
মোম স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো।
-হোয়াট আর ইউ ডুয়িং?
মেহেরাব পেপারগুলো তুলে ধরলো।
মোমের প্রেক্টিক্যাল পেপার।
-কাল জমা দিতে হবে।
তুমি তো অসুস্থ।
তোমার বিশ্রাম প্রয়োজন।
-আপনাকে করতে হবেনা।
এটা ঠিক না। আমার প্রেক্টিক্যাল গুলো আমি নিজে করব।
-তো তুমি নিজেই তো করছো। ঠিক না বলেই অন্য কাউকে দিয়ে করাইনি। আমি নিজে করছি। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী দুজনই তো এক।
স্বামীর কাজ স্ত্রী করবে। স্ত্রীর কাজ স্বামী করবে।
-আপনি একটা পাগল।
আপনার সাথে পেড়ে উঠা জাস্ট অসম্ভব।
-যাও যাও বিশ্রাম নাও।
তোমার স্বামীর আদেশ।
.
.
মোম এখন 3 ফ্লোরে আছে হোস্টেলের।
মেহেরাব ব্যাবস্থা করেছে।
মোমের অসুবিধে যেন না হয়, এতো উপরে যেন না উঠতে কষ্ট হয় এজন্য এই ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে।
নতুন হোস্টেল রুমটা খুব সুন্দর। বেলকনিটা বিশাল বড়। জানালাটাও বিকট।
ঝোড়ো হাওয়া জানালা ও বেলকনির পর্দা ভেদ করে রুমটা কে শীতল করে তুলেছে।
রুমটা গোছাচ্ছে মেহেরাবের লোকেরা৷
মোম বেলকনিতে দাড়িয়ে রয়েছে।
মাথাটা একটু ধরেছে। টেনশন সে নিতে পাচ্ছেনা।
কি হবে এরপর? ভেবে কিনারা পাচ্ছে না।
মোমের এখন কি করা উচিৎ?
ফোনের রিংটোন বেজে উঠলো।
মোম কল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে জোরালো গলা শোনা গেলো।
-আসসালামু আলাইকুম।
তুমি কেমন আছো?
শরীর স্বাস্থ্য ভালো?
মোম ফোন কেটে দিলো।
আবারও রিংটোন বাজছে।
মোম বারবার লাইন কেটে যাচ্ছে।
তবুও রিংটোন বাজছে।
মোম কল রিসিভ করে বাংলায় বলল-
-কি সমস্যা আপনার?
বোঝেন না কেন আপনি?
আমাকে আমার মতো থাকতে দিন।
-কি বলছো?
আমি কিছু বুঝিনা। ইংলিশেে বলো প্লিজ।
মোম চোখ বন্ধ করে নিজেকে শান্ত করলো।
ইংলিশে বলল- জানিনা। কি হয়েছে বলতে পাচ্ছিনা।
শরীর খারাপ লাগছে। খুব খারাপ।
-তুমি বিশ্রাম নাও৷
মোম ঘুমোচ্ছে। মেহেরাব হোস্টেলের বেলকনি ঘেঁষা রাস্তায় দাড়িয়ে আছে মোমের জন্য। এখন ফোন করা ঠিক হবে না। মোমের শরীর খারাপ। ঘুুম ভাঙানো উচিৎ হবেনা। তারচেয়ে গাড়িতে বসে অপেক্ষা করাই ভালো।
প্রিয় মানুষের জন্য অপেক্ষা করতেও ভালোলাগা কাজ করে।
মেহেরাব একটা জিনিস লক্ষ্য করেছে। আজকাল এই সাইডে বেশ কটা গাড়ি দাঁড়ানো থাকে।
মেহেরাব খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছে। কোন লাভ হয়নি। গাড়ি গুলোর মালিক যেন ভিনগ্রহের প্রাণী।। কিছুই বের করা যায়নি।
হয়ত তার মতোই কেউ হবে। যে তার প্রিয় মানুষের জন্য দাড়িয়ে থাকে বেলকনির তাকিয়ে।
-হা করো।
-না।
-প্লিজ হা।
-খাব না।
-তোমাকে খেতে হবে।
-আপনি খান।
-তোমাকে না খাইয়ে?
মোম বিরক্ত দৃষ্টিতে মেহেরাবের দিকে তাকালো।
-হা করো।
-আমি খাব না।
আপনি কি জোর করে খাওয়াবেন।
-হ্যাঁ। তুমি খাবেনা তোমার ঘাড় খাবে।
-ফাইন। ঘাড় কেই খাওয়ান।
-স্বামীর আদেশ পালন করো। সওয়াব পাবে। নইলে পরকালে জবাবদিহি করতে হবে।
-আপনাকেও জবাবদিহি দিতে হবে। একজন নিরীহ মেয়ে কে টর্চার করার জন্য।
-কে নিরীহ?
মোম অবাক হয়ে বলল-অবশ্যই আমি।
মেহেরাব যেন আকাশ থেকে পড়লো।অবাক হওয়ার ভাব করে বলল- তাহলে আমি কে?
.

আসলাম নিজের ফ্ল্যাটে বসে আছে।অক্সফোর্ড শহড়ে ৪১ তলা ফ্লোরে নিজের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে তার। যেখানে সে গোপনীয় কাজ গুলো সম্পাদনা করে।
ক্লাইন্টের সাথে মিটিংয়ের জন্য তাকে সোনালী চুলের মেয়ে সেক্রেটারি স্যুট পড়িয়ে দিলো।
সেক্রেটারি ভাঙা ভাঙা বাংলায় বলল-আপনার ওয়াইফ কে কখন নিয়ে আসছেন এখানে? তারিখ জানা থাকালে ম্যামের জন্য স্পেশাল রিসিপশনের এরেন্জড করব।
-এই শিগগিরই। প্রাচ্যের
বাঙালি তো তাই একটু ঘাড় বাঁকা।রেগে আছে। অবশ্য আমার কিছু দোষ ছিলো।
-ম্যাম কে সকল কিছু খুলে বলুন।
-বলব। বাঙালি নারীদের সম্পর্কে ধারণা নেই তোমাদের। তারা কিছু শুনতে চায়না, বুঝতে চায়না।
শুধু রেগে থাকে।
-তো এরকম বাঙালি মেয়ে কে বিয়ে করেছিলেন কেন?
আপনি তো বাঙালি নন।
-ঐ যে হৃদয়ের স্পন্দন। সেটা শুধু ঐ বাঙালি নারীটির জন্য স্পন্দিত হয়।
-আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারিনা আপনাদের প্রাচ্যের লোকেদের।
-আর বুঝতে যেওনা। প্লিজ। আশাকরি সব শোনার পর আমাকে মাফ করে দেবে।
ফিরে আসবে আমার কাছে।
-শুভ কামনা।
.
-আসসালামু আলাইকুম।
হাউ আর ইউ মোম?
মোম উঠে দাঁড়ালো।
-আরে আরে বসো।
আসলাম চারপাশে চোখ বুলিয়ে বলল- তুমি এখানে একা একা কি করছো?
কেউ কি আসার কথা?
মোম রেস্টুরেন্টের দরজার দিকে তাকিয়ে আছে।
মেহেরাবের আসার কথা। সে রেস্টুরেন্টে বুকিং দিয়ে রেখেছিলো। ম্যাসেজে রেস্টুরেন্টের এড্রেস, টেবিল নং, টাইম জানিয়ে দিয়েছিল।
মেহেরাব অক্সফোর্ড শহরের বাহিরে গিয়েছিল। ফিরে এসে সোজা মোমের সাথে এই রেস্টুরেন্টে মিট করার কথা।
-কি হলো কি ভাবছো?
বসো?
-আপনি কেন এখানে?
-তোমাকে ফলো করতে করতে এসেছি।
কিছু কথা ছিলো।
-কোনো কথা নেই আমার সাথে। যা কিছু ছিলো তা অতীত। আমি বর্তমানে আছি।
আপনি চলে যান।
-লিসেন,আমি কথা না বলে যাব না। বসো তুমি লক্ষি মেয়ের মতো।
বসো বলছি।
মোম বসে পড়লো।
অজানা আতঙ্কে তার মন আতঙ্কিত।
তার চোখ দুটো দরজার দিকে।
-নামাজ পড়েছো?
-হ্যাঁ। এবার যান।
-কথা তো শুরু করিনি।
-আপনি বিষয়টি বুঝতে পাচ্ছেন না।
আপনি যান। প্লিজ যান।
-রিলাক্স। তুমি এমন করছো কেন? অস্থির দেখাচ্ছে তোমাকে। বারবার দরজার দিকে তাকাচ্ছো কেন?
-তাতে আপনার কি?
আসলাম চোখ গরম করে তাকাতেই মোম শান্ত হলো।
-আমি চাইনা আসল রুপ টা তুমি দেখ। ভালো ভাবে বোঝাচ্ছি তুমি আমার কথা গুলো শোন।
-আমাদের…।
মোম একটু থেমে বলল- আমাদের ডিভোর্স হয়েছে। কোন সম্পর্ক নেই কয়েক বছর যাবৎ। আমি সত্যিটা মেনে নিয়েছি।
আমাদের আর কোন কথা কি থাকতে পারে?
-পারে। ঠিক পয়েন্টে এসেছো।
আমি এই পয়েন্টের কথা-ই বলতে চাচ্ছি।
আমি কেন সবচেয়ে নিকৃষ্ট হালাল তালাকের কাজটা আমাদের মধ্যে ঘটালাম।
আমি তোমার কাছে কিছু সত্য গোপন করেছিলাম। প্রথমত আই এম নট বেঙ্গলি। আমি একজন পাকিস্তানি।
আমি একটা মিশনের জন্য বাঙালি বলে বাংলাদেশে পরিচিত হয়েছিলাম।
তোমাদের স্কুলে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ ছিলাম।
আমি একজন বিজনেস ম্যান। ছোট থেকে একটু একটু করে গড়ে তুলেছিলাম আমার বিজনেসে প্যালেস।
এজন্য আমাকে বহু ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। বহু অন্যায় করতে হয়েছে।
ছোটখাটো অন্যায় করতে করতে কখন যে আন্ডারওয়ার্ল্ডে জরিয়ে পরি তা বুঝিনি। যখন বুঝেছি তখন বের হয়ে আসতে পারিনি। এখানে ঢোকা সহজ বাট বের হওয়া অসম্ভব।
এই জীবনে একবার ঢুকলে মৃত্যু ছাড়া বের হওয়া যায়না। এই জীবন লিডের একটাই নীতি। হয় মারো নয় মরো।
মানুষ যখন উপরে উঠতে থাকে তখন আরও উপরে উঠতে চায়। ক্ষমতার চূড়ান্তে উঠতে চায়। এটাই নীতি।
আমিও তখন ক্ষমতার নেশায় নিজ দেশ ছাড়িয়ে সকল দেশে রাজত্ব করতে চেয়েছিলাম৷
বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পরিচয়ে আমাকে থাকতে হতো।
ঠিক সে-রকম তোমাদের দেশে তোমাদের গ্রামে, তোমাদের স্কুলে, তোমাদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম।
আল্লাহর রহমতে মিশন সাকসেস হয়।
-এবং আপনি ক্ষমতার চূড়ান্ত পথের দেখা পেয়ে যান।
আমাকে ফেলে দিয়ে নিজের ক্ষমতার রাস্তায় হাঁটতে থাকেন। কারণ আমি হলাম আপনার ক্ষমতার রাজত্ব পাওয়ার ছোট একটি টোপ। বড়শী তে মাছ ধরার জন্য যেমন টোপ ব্যবহার করা হয় তেমন টোপ। এখন তো আপনি নিশ্চয়ই ক্ষমতার চূড়ান্তে রয়েছেন।
আপনার সমকক্ষ কেউ নেই।
এতদিন পর আমাকে আপনার সাকসেসের গল্প শোনাতে বা দেখাতে এসেছেন?
– না।
আমি তোমাকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করেছি ঠিক তবে তবে সত্যি ভালোবেসেছি।
মানুষ আমি জঘন্য হতে পারি কিন্তু আমার ভালোবাসা পবিত্র। আমি তোমাকে কখনো স্পর্শ করিনি স্বামী হয়েও। আমাদের বিয়ে হয়েছিল ঠিক কিন্তু বৈবাহিক সম্পর্কেে জড়ায়নি।
আমি সত্যি তোমাকে ভালোবেসেছিলাম বাট তোমাকে ছেড়ে চলে আসতে হয়েছে বাধ্য হয়ে।
প্রথমত আমি তোমাদের দেশে থাকতে পাচ্ছিলাম না আর, বিশেষ কাজে আমেরিকা চলে আসতে হয়েছিল।
আমার সঙ্গে তোমাকে নিতে পারতাম বাট সমস্যা হলো তোমার ফ্যামিলি।
তোমাকে আমার সাথে চিরজীবনের জন্য কখনো যেতে দিতেন না। কারণ বাংলাদেশে আমার ভিসা বাতিল হয়ে গিয়েছিল। একবার বাংলাদেশ থেকে বের হলে ২য় বার ঢুকতে পারতাম না। দ্বিতীয়ত হলো,তোমার বাবা সবকিছু জানতে পেরেছিল।
উনার চোখে আমি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল ছিলাম। তৃতীয়ত আমার ভালোবাসায় একটু খাদ ছিলো মনে হয়, তোমার বাবা আমাকে একটি সুযোগ দিয়েছিল তেমাকে পাওয়ার, সবকিছু ছেড়ে সাধারণ মানুষ হিসেবে, তোমার স্বামী হিসেবে, গ্রামের শিক্ষক হিসেবে চিরকাল থাকার জন্য।
আমি অনেক ভেবে চিন্তে ডিসিশন নিয়েছি। এতো কালের তিলে তিলে গড়া প্যালেস আমি ছাড়তে পাচ্ছিলাম না। সাধারণ শিক্ষক হিসেবে জীবন ধারণ করছে একজন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ম্যান, এটা অসম্ভব।
তাই তোমাকে তালাক দিয়ে সরে আসি তোমার জীবন থেকে। তোমাকে সবকিছু বোঝানোর মতো বয়স তোমার ছিলো না।
-তাই আমাকে কিছু না বলেই ডিভোর্স দিয়ে নিজের ক্ষমতার রাজ্যে রাজত্ব করতে চলে গেলেন।
খুব ভালো করেছেন।
আপনার জায়গায় থাকলে আমিও হয়ত তাই করতাম। পৃথিবীর ক্ষমতার লোভে নিজের স্বামীকে ছেড়ে দিতাম। খুব ভালো। কংগ্রাচুলেশনস!
-মোম আই এম সরি।
প্রথমে ভেবেছি তোমাকে ভুলে যাব। কিন্তু বুঝিনি ক্ষমতার চেয়ে বড় তুমি। সবকিছুর উর্ধ্বে তুমি।
আমি খুব একা। বিশাল প্যালেসে আমি একা।
আমার বুক একেবারে শূন্য।
আমি চলে আসার পর থেকে শান্তিতে থাকতে পাচ্ছিলাম না। কি যে চলে গেছে আমার জীবন থেকে।
বছরখানেক পর আমি শিউর হই আমার বেঁচে থাকা মানে তুমি।
তুমি আমার শান্তি। আমার নিশ্বাস। আমার প্রাণ। ততক্ষণে লেট হয়ে গিয়েছিল। আমি কোন ভাবে তোমার সাু কন্ট্রাক্ট করতে পাচ্ছিলাম না। দিন গুনছিলাম তোমার সাথে কবে আমার দেখা হবে। আমি নিশ্চিত ছিলাম তোমার সাথে মহান আল্লাহ তায়ালা আমার আবার দেখা করাবেন।।
আল্লাহ তায়ালার মেহেরবানি। তোমার সাথে আমার অক্সফোর্ডে দেখা হলো।
এবং আমি লেকচারার হিসেবে তোমার কাছাকাছি থাকার জন্য, পুরোনো সৃতি তাজার করার জন্য জয়েন করি অক্সফোর্ডে।
আমার ভালোবাসা।
আমার হৃদয়ের রাণী তুমি।
আমি তোমাকে ভালোবাসি মোম। আমি ফিরেছি তোমার কাছে।
মোম দীর্ঘশ্বাস ফেললো। হঠাৎ
মোমের বড় বড় চোখ গুলো আরও বড় হয়ে গেলো।
চোখ যেন কোটর থেকে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে।
মেহেরাব হাসিমাখা মুখ নিয়ে মোমের সামনে উপস্থিত।
-সুইটহার্ট।
হোয়াটসঅ্যাপ?
তাজা গোলাপ গুলো মোমের হাতে দিয়ে বলল- টেক ইট।
তারপর শান্তভাবে মোমের পাশে বসলো অন্য টেবিল থেকে চেয়ার টেনে।
আসলাম দুজনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
মেহেরাবও হঠাৎ আসলাম কে খেয়াল করলো। এতোক্ষণ তার কিছুই খেয়াল ছিলো না। মোম কে দেখলে সমস্ত খেয়াল মোমের দিকে ট্রান্সফার হয় আপনাআপনি।
আসলাম এবং মেহেরাব দু-জন মোমের দিকে প্রশ্নসূচক দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছে।
দুজনের মনে একটাই প্রশ্ন-হু ইজ হি?
মোমের কলিজা শুকিয়ে গেলো। গলা দিয়ে স্বর বের হচ্ছে না।
মনে হচ্ছে ফ্লোরটা ফাঁক করে সেখানে ঢুকে যাবে। সে কি দৌড়ে পালাবে?
মোমের দিকে তাকিয়ে মেহেরাব বলল- হু ইজ হি? ইউর ব্রাদার?
দেখতে তো প্রাচ্যের লোক মনে হচ্ছে। তোমাদের জাতি ভাই।
আসলাম বাংলায় বলল- মোম তুমি কি এর জন্যে ওয়েট করেছিলে? তোমার ক্লাসমেট?
মোম মহান আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা রাখে সর্বদা। মহান আল্লাহ তায়ালা যা করেন তাতে ভালো কিছু অবশ্যই থাকে।
মোম শান্ত ভাবে দু’জন কে দু-জনের পরিচিয় দিলো। আসলাম কে লক্ষ্য করে
মেহেরাবের দিকে তাকিয়ে বলল- হি ইজ মাই হাসব্যান্ড।
আসলাম শান্তির নিশ্বাস ফেলে বলল- থ্যাংকস।
মেহেরাব মোমের দিকে জিজ্ঞাসা স্বরুপ দৃষ্টিতে ইশারা করলো।
– এক্স হাসব্যান্ড।
হি ইজ মাই এক্স হাসব্যান্ড।
আসলামের শান্তি দীর্ঘসময় রইলো না।
মোম মেহেরাব কে লক্ষ্য করে আসলামের দিকে তাকিয়ে বলল- হি ইজ মাই হাসব্যান্ড।
মোম মেহেরাবের হাত ধরলো। খুব শক্ত করে মেহেরাবও ধরলো। মোম জীবনের প্রথম বার স্বীকার করেছে মেহেরাব তার স্বামী।
মেহেরাবের চোখ টলমল করছে। এটা কি সপ্ন?
আসলাম কি ঠিক শুনছে? মনে হচ্ছে সমুদ্রের মধ্যে সে পড়েছে। অতল গভীরে সে তলিয়ে যাচ্ছে।
আসমান গর্জন করে উঠেছে।
তার বুকে কেউ ছূরি বসিয়েছে অনুভব করছে।
মোম শান্ত স্বরে হাত দিয়ে রেস্টুরেন্টের দরজা দেখিয়ে বলল- আমি স্বামী ছাড়া বেগানা কোন লোকের সাথে কথা বলিনা। আশা করি অন্যের স্ত্রীর সাথে নেক্সট কথা বলতে আসবেন না।
মিঃ আমাদের একা ছেড়ে দিন। আমরা স্বামী স্ত্রী তৃতীয় কাউকে চাচ্ছিনা।
সময়টুকু আমরা নবদম্পতি একান্তে কাটাতে চাচ্ছি।
লিভ আস প্লিজ। থ্যাংকস।
আসলাম স্তব্ধ হয়ে কয়েক পা পিছিয়ে সামনের দিকে তাকালো।
কয়েক সেকেন্ড পর সে পেছনে ফিরে তাকালো।
মোম মেহেরাবের কাঁধে মাথা রেখে মেহেরাবের হাত শক্ত করে ধরে সামনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
মেহেরাব এক হাত দিয়ে মোম কে জড়িয়ে ধরেছে, অন্য হাতে মোমের হাত আরও শক্ত করে ধরে চুমু খাচ্ছে।
আসলামের বুকে মনে হচ্ছে কেউ খঞ্জর চালাচ্ছে।

.
♥আল কুরআনের ৮১টি উপদেশবাণীর ১টি বাণীঃ
২৪। তোমরা পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ো না। [সূরা আল-ইমরান ৩:১০৩] 
.
চলবে…….💔💔💔

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here