পূর্ণশশী পর্ব -০৩

#পূর্ণশশী (রিপোস্ট)
পর্ব-৩
ফারহানা আক্তার রুপকথা
_____________________

একটা দিন পার হয়ে গেলো চোখের পলকেই। আমার জীবনও পাল্টে গেল এক দিনেই৷ কাল সকালেও আমি ঘুম থেকে উঠেছি নিজ মর্জিতে কিন্তু আজ? পূর্ণের দেওয়া জামা দু’টো থেকে একটা পড়ে মুখ হাত ধুয়ে রুমেই বসে রইলাম। বাইরে কি হচ্ছে তা জানি না জানতেও চাই না। কিন্তু কথা হলো হাবা হাশমতটা রাতভর কোথায় ছিলো? বিয়ের পর তো বর কনে একসাথেই ঘুমায় জানতাম কিন্তু এই ছেলে কোথায় ঘুমিয়েছে! এরই মধ্যে রানু আন্টির গলা শুনলাম, “শশী মুখ হাত ধোয়া হয়ে গেলে বাইরে এসো তো।”

আমি ভাবছি, যাবো কি যাবো না? পূর্ণ কোথায় আছে কে জানে মোবাইলটা একটু দরকার ছিলো। বাবাকে কল করে বলতে হবে সম্পত্তির কাগজ তৈরি করতে এখন তো আমি বিয়ে করেই নিয়েছি৷ আমি মনে মনে ভাবছিলাম কথা গুলো তখনই খট করে আওয়াজ শুনতে পেলাম। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলাম পূর্ণ এসেছে। মাথা ভর্তি কোঁকড়া চুল তার এলোমেলো পাখির বাসা মনে হচ্ছে । না চাইতেও আমার হাসি পেয়ে গেল।

“শশী আপনি একটু কিচেনের দিকে যান৷ ফুপু আপনাকে খুঁজছে।”

পূর্ণ ঘুমন্ত ভার গলায় বলল কথাটা৷ আমার মাথায় যেন বাজ পড়লো৷ তার ফুপু কিচেনে কেন ডাকছে আমায়! হুট করেই মনে পড়লো এই ফুপু আবার বলবে না তো, বাড়ির বউ যাও রান্না করো। ওহ নো! বলেই আর্তনাদ করে উঠলাম আমি।

-কি হলো? পূর্ণের প্রশ্ন।

“আমাকে কেন ডাকছে কিচেনে?”

কাঠ কাঠ গলায় আমিও প্রশ্ন করলাম।

“তা জানি না৷ আর মাথায় কাপড় দিয়ে যাবেন দয়া করে। আর আপনার বাবা কল করেছিলো উনি আসবেন দুপুরে আপনার আত্মীয়দের নিয়ে।”

কথাটা শেষ করেই পূর্ণ বাথরুমে ঢুকে গেল। আমি তো অবাক, বাবা কেন আসবেন আর আত্মীয়দের নিয়ে কেন! আমার মাথায় জটলা বেঁধে যাচ্ছে। কি হবে ভেবে ভেবে।

পূর্ণের ফুপু দাঁড়িয়ে আছে কিচেনের দরজা মুখে৷ আমি দাঁড়িয়ে আছি চুলার সামনে আর আমার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে অংশের বউ। বেচারি সবসময় কেমন যেন পাংশু মুখেই থাকে।মেয়েটার মুখ দেখলেই আমার মায়া হয় কিন্তু অংশের কথা মনে হতেই গা জ্বলে যায়। খুন করতে ইচ্ছে করে মেয়েটাকে। আমি নাকি নতুন বউ খাটাশ ফুপু শ্বাশুড়ি আমার নাজেহাল করে দিলো কিচেনে ঢুকিয়ে। একবার বলছে নতুন বউ পায়েশ রান্না করে খাওয়াবে এটাই নিয়ম আর অংশের বউ সকালের নাস্তা বানাবে। কি আজিব কারবার বলা নেই কওয়া নেই হুট করেই এসব! অংশের বউ আটা গুলে নিয়েছে। মেয়েটা কাজেকর্মে একেবারে আনাড়ি তা দেখেই বুঝতে পারলাম। আমার অবশ্য তেমন কোন সমস্যা নেই। রান্নায় আমি পারদর্শী তাই পায়েশ,পোলাও কোর্মা কিছুতেই ঠেকবো না। কিন্তু কথা হলে বিয়েটা তো আমার স্বাভাবিক নয় তবে তারা এত স্বাভাবিক কেন? তাদের তো উচিত পূর্ণকে কষে দুইটা থাপ্পড় মারা। তারপর কান ধরে জিজ্ঞেস করবে, “কোন সাহসে আমাদের না জানিয়ে বিয়ে করেছিস? আর বউ নিয়ে বাড়ি আসার সাহসইবা করলি কি করে? তা না এরা একদম সিরিয়াল ড্রামার মত কাজে লাগিয়ে দিয়েছে আমাকে। অসহ্য”

-“নাস্তা কি তৈরি হয়েছে?”

পূর্ণ কিচেনের দোর গোড়ায় দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো । কিন্তু উপস্থিত আমাদের মধ্যে কেউ তার কথায় পাত্তা না দিয়ে যে যার কাজে ব্যস্ত। পূর্ণ আবারও একই কথা বলতেই ফুপু খেঁকিয়ে উঠলো,!”এ্যাই ছেমড়া কি শুরু করলি? খাওন রান্ধা হইলে টেবিলে তো ডাক পড়বোই।”

“ফুপু আমার অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে।” পূর্ণ নত সুরে বলতেই ফুপু আবার গর্জে উঠলো, “কিয়ের আপিসে যাওন তর, হ্যা! এহনও তো বিচার আচার হইলো না। কি মনে করছো এমনি এমনি পার পাইবা? এক ভাই লাখপতির মাইয়া ভাগাইছে আরেক ভাই উকিলের মাইয়া ভাগাইয়া আনছো।”

বিস্ফোরণ ঘটে গেল মুহুর্তে যেন ফুপুর কথায়। পূর্ণ হতভম্ব, অংশের বউ লজ্জায় আড়ষ্ট আর আমি! না আশ্চর্য না বিব্রত । কি বলল ফুপু অংশ ভাগিয়ে বিয়ে করেছে! তবে আমি তো জানতাম সে কোন বিপদে পরে আমায় ছেড়েছে। টপটপ করে চোখের পানি ঝরছে আমার পেছন ফিরে তাকালাম না৷ হয়তো পূর্ণও লজ্জা পেয়েছে আর আমার পাশে থাকা মেয়েটিও লজ্জা পাচ্ছে৷ পায়ের আওয়াজ শুনে বুঝলাম ফুপু কিংবা পূর্ণ চলে গেছে কিচেন থেকে৷

বাংলাদেশের মানচিত্রের রুপ তৈরি হয়ে গেছে একেকটা রুটিতে। মেয়েটা ভয়ে ভয়ে বেলছে রুটি গুলো৷ আমার পায়েশ হয়ে গেছে অথচ মেয়েটির রুটি এখনও ঠিকঠাক হয়নি৷ সবজি ভাজিটা অবশ্য ভালোই করেছে৷ আমি কয়েক সেকেন্ডে মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে ওর হাত থেকে বেলুন পিড়ি নিয়ে নিলাম।

“আমি করে নিতে পারবো আপনি…”

মেয়েটির কথা শেষ হওয়ার আগেই বললাম, “তুমি বাকি সব গুছিয়ে টেবিলে রেখে আসো। আমি রুটি বেলছি।”

মেয়েটি আর কথা বাড়ালো না। চুপচাপ বাকি কাজ করলো আমি রুটি বেলে নিলাম৷ এই মেয়েটির প্রতি আমার রাগ অতোটাও নয় যতোটা অংশের উপর। আমার ভালোবাসার মানুষটি ঠিক থাকলে এই মেয়ের কখনোই সাধ্য ছিল না ওকে আমার কাছ থেকে কেঁড়ে নেওয়ার। কিন্তু ভাগ্যই আমার দয়াশীল ছিলো না আমার প্রতি। থাক এখন সেসব কথা। নাস্তার টেবিল গোছানো হয়ে গেছে। আমি কিচেনেই দাঁড়িয়ে রইলাম। পূর্ণের ফুপুকে আমার একদম জল্লাদ জাহিল মনে হয় তাই সামনে যেতে ইচ্ছে করছে না। অংশের বউ আমাকে ডেকেছিলো আমি বলেছি তোমরা যাও আমি আসছি৷ এরপর আমার না যাওয়ার ভাবনায় আঘাত হানলো ফুপু শ্বাশুড়ি কর্কশ গলায় ডেকে উঠলো, “নয়া বউ এহনও বাইর হও নাই ক্যা তোমারে কি চিডিপত্তর দিয়া আনোন লাগবো?”

ব্যস, আর উপায় নেই বের হয়ে গেলাম ডাইনিং টেবিলের কাছে। ছোট্ট ড্রয়িংরুমে এক পাশে টেবিল আর তার সামনের দিকে কিচেন। আমি বের হয়ে এক পলক পুরো টেবিলে চোখ বুলালাম। সরু ছয় চেয়ারের টেবিলের প্রথমেই আছেন ফুপু তারপর আমার শ্বশুড় মানে পূর্ণের বাবা তারপর অংশ। এখানেই থেমে গেল আমার চোখ কি মারাত্মক লুক নিয়ে বসে আছে এই সকালেই৷ নাস্তা নয় যেন কোন বিশেষ সেলিব্রিটি শো করতে বসেছে তাই এত সাজগোজ করেছে। ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট চেক শার্ট, স্লিভ ফোল্ড করা । শার্টের বোতাম উপর থেকে দু’টো খোলা রেখেছে। বরাবরই তার এই স্বভাব অন্য ছেলেদের মত অর্ধেক বুক খোলা রাখে না তবুও খোলা এতটুকু রাখবে যতোটা রাখলে বুকের পশম হালকা চোখে লাগবে। প্রশস্ত ছাতি, ফিটিং শার্ট, লোমশ বুক সব মিলিয়ে মেয়েদের চোখে নিজেকে আকৃষ্ট করার পায়তারা তার নিত্যকর্ম। কিন্তু এই সকালেও এই সাজ কেন এখানে কাকে আকৃষ্ট করবে? ওহ বুঝেছি, সুন্দরী বউ কে দেখাতে এভাবেই থাকে হয়তো। আমি এবার আঁড়চোখে তাকালাম তার বউয়ের দিকে। বুকের ভেতর ধক করে উঠলো তাকাতেই। মেয়েটা মনোমুগ্ধকর চাহনিতে তাকিয়ে আছে অংশের দিকে। আমার মনের ভেতর বারবার এক অবাধ্য প্রলয়ঙ্কারী ঝড়ের সৃষ্টি হচ্ছে কাল থেকে যতবার এই মেয়েটিকে দেখছি। জেনে শুনে আমি নিজেই নিজেকে আগুনে ফেলে দিলাম। কি দরকার ছিলো প্রতিশোধের আগুন জ্বালানোর সেই আগুনে এখন আমি নিজেই পুড়ে ছাড়খার হয়ে যাচ্ছি। চোখের কোণে দুইফোটা জল হাতের উল্টো পিঠে মুছে এবার তাকালাম পূর্ণের দিকে। এই ছেলেটাকে বলির পাঠা না করলেও পারতাম৷ কতোটা সাধারণ আর সরল একটা মানুষ । আমায় ভালোবাসে অথচ মুখ ফুটে কখনো বলতে পারেনি৷ আমি এবার একটু ভালো করে খেয়াল করলাম পূর্ণ দেখতে একদম সরল সহজ পোশাক-পরিচ্ছেদও একেবারে সাধারণ। অফিসে যাবে বলে একটা সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট ইন করে পরেছে। গলায় টাই পরলে অফিসিয়াল লুকটা পারফেক্ট হতো। হাতে ঘড়ি পড়েছে কিন্তু ফুল স্লিভ শার্ট হাতা একটু গুটিয়ে রাখলেই চোখে পরতো ঠিকঠাক । কিন্তু নাহ, হাবা হাশমত তো ফুল হাতা লাগিয়েই পরবে স্কুল বয় সেজে অফিসে যাবে হুহ। কতোটা আনস্মার্ট ছেলে হলে এমনটা সাজে৷ এরপর চোখে পড়লো রানু আন্টিকে। তিনি একদম বোকা মহিলা সেজে বসে আছেন যেন এই মুহুর্তে তিনি একজন জড়বস্তু। আমি যখন সবাইকে পরখ করায় ব্যস্ত তখন আমার শ্বশুর বললেন, “কাল বিয়ে করেছো তাই না?”

কথাটা পূর্ণের উদ্দেশ্যে ছিলো। পূর্ণ খুবই ভদ্র ছেলের মত মাথা নিচু করে জবাব দিলো ‘জ্বি’।

“কার অনুমতি নিয়ে করেছো?”

গম্ভীর গলায় তার বাবা জিজ্ঞেস করলেন।

“বিয়েটা আমি করেছি অনুমতিটাও আমারই ছিলো।”

একদম শীতল গলায় জবাব পূর্ণের। আমার তখন মনে হচ্ছিলো পূর্ণের জায়গায় অংশ হলে কি জবাবটা এতোটা শান্ত সুরে হতো? এই মুহুর্তেও আমার মাথায় শুধু অংশের বিচরণ। কিন্তু হঠাৎ করেই তার বাবা টেবিলে থাবা বসিয়ে বললেন, “বেয়াদবি করছো তুমি পূর্ণ।”

কথাটা শেষ হতেই ঝনাৎ করে শব্দ হলো। টেবিলের সব খাবার ফ্লোরে পড়েছে৷ অংশ টেবিল ক্লোথ টেনে সব খাবারসহ টেবিল ক্লোথটা ফেলে দিয়েছে। পূর্ণও বসা থেকে ঝট করেই দাঁড়িয়ে গেছে। আমি আর অংশের বউ দু’জনেই নিজ নিজ জায়গা থেকে সরে গেছি ভয়ে। অংশের মুখের দিকে তাকাতেই আমি ভয়ে আৎকে উঠলাম৷ চেহারায় রক্তিমাভা, তার চোয়াল শক্ত হাত মুষ্টিবদ্ধ দেখেই বোঝা যাচ্ছে রাগ তার শিরায় শিরায় চড়ে গেছে। এই প্রথম নয় এর আগেও তাকে আমি এমন ভয়ংকর রুপে দেখেছি।

“বাড়িতে সকাল সকাল তামাশা না করলে চলে না?”
দাঁত কিড়মিড় করে বলে উঠলো অংশ।

“তামাশা আমরা করি না তরা দুই ভাই মিল্লা করছোস? দুই দিন পরে পরেই তরা একটা কইরা মাইয়া তুইলা আইন্না কইবি বিয়া কইরা আইছোস। ফাইজলামি পাইছোস?”

ফুপু রাগী গলায় বললেন। পূর্ণের বাবা চুপ করে আছেন হয়তো বোনের কথার উপর কিছু বলবেন না তাই। অংশ এবার আরও চেঁচিয়ে বলল, “আপনার ভাই বুড়ো বয়সে বিয়ে করে বউ এনে বলবে তোমাদের নতুন মা এনেছি সেসবে আপনার ফাইজলামি মনে হয় না? বিয়ের বয়সী ছেলেরা বিয়ে করে বউ আনলে ফাইজলামি হয়ে যায়? লজ্জা করে না আপনার ভাইয়ের?ছেলেদের কোন প্রয়োজনে যখন কেউ মাথা ঘামায়নি তবে আজ ছেলেরা মেয়ে ভাগিয়ে আনলো না বিয়ে করে আনলো সে বিষয়ে কথা বলার সাহস কি করে হয়?”

আমার আর ওই মেয়েটার সামনে অংশের এমন সব কথাবার্তায় লজ্জা আর অপমানে তার বাবার মুখটা থমথমে হয়ে গেল। বিব্রতকর অবস্থায় পড়লেন রানু আন্টি, আমি আর অংশের বউ। পূর্ণও লজ্জায় পড়েছে তা ওর চেহারায় স্পষ্ট কিন্তু তার ফুপু ঠিক আগের মতোই গর্জে উঠলেন, ‘বেদ্দপ পোলা বাপেরে লইয়া যা মুখে আহে তাই কস৷ নিজে তো বেদ্দপ আছিলি এহন এই বেগ গুলানের সামনে এইসব কইয়া এগোরেও খারাপ বানাইবার চাইছিস। মন কয় তরে এক্কেরে থাপড়াইয়া গাল লাল কইরা দেই।”

অংশ এবার আরো কিছু বলবে তার আগেই ফুপু টেবিল ছেড়ে চলে গেলেন। শ্বশুড় মশাই লজ্জায় পড়ে চুপচাপ চলে গেলেন। অংশের মুখের দিকে তাকালাম এখনও তার চেহারা লাল হয়ে আছে রাগে৷ পূর্ণ চুপচাপ চলে গেল রুমে৷ আমি এবার মেয়েটির দিকে তাকাতেই চমকে গেলাম৷ এ কি মেয়েটা তো ভয়ে কাঁপছে!”

আমি একটু এগিয়ে মেয়েটাকে ধরতে যাবো তখনি মেয়েটা ধীর পায়ে পিছিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল৷ রানু আন্টিও চলে গেছেন আগেই রয়ে গেছি শুধু আমি আর অংশ।মনের মধ্যে কিছু প্রশ্ন আর অপরিমিত রাগ। চোখ তুলে তাকাতেই রাগটা মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো। একটু এগিয়ে গিয়ে প্রশ্ন করবো ঠিক তখনি অংশ ঝড়ের বেগে আমার সামনে এসে গলা চেপে ধরে একদম পেছনের দেয়ালে নিয়ে ঠেকালো। এতোটাই চেপে ধরেছে যেন এই মুহুর্তে আমার দম আটকে যাবে। আমি প্রাণ হারাবো কয়েক সেকেন্ডেই নিঃশ্বাস গলায় আটকে আসছে আমার। মনে মনে আল্লাহ্ কে ডাকার চেষ্টা করলাম হয়তো এখনই আমার জীবনের বাতি নিভে যাবে৷ মৃত্যু সময় আমি কালেমাটা মুখে রেখে মরতে চাই সে আশায় মনে মনে একটাই চেষ্টা কালেমা পড়ার।

চলবে
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করবেন। কারও মনে হয় পছন্দ হচ্ছে না গল্পটা কোন কমেন্ট পাওয়া যায় না)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here