প্রথম_প্রতিশ্রুতি পর্ব শেষ

#প্রথম_প্রতিশ্রুতি
পর্ব—-১০(গ্রান্ড ফিনালে)
মূল ভাবনা।কাহিনী।নির্মাণ : প্রদীপ চন্দ্র তিয়াশ।

নির্জনকে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো!!এদিকে প্রতিশ্রুতির মাথায় একটা বিষয় ঘুরপাক খাচ্ছে শুধু…আর সেটা হলো সেই দাগটার কথা।

দাগটা এইভাবে নির্জনের মাথা থেকে উধাও হয়ে গেলো কিকরে এটাই বুঝতে পারছে না সে!!

একটু পরে প্রতিশ্রুতি আর প্রথম ওদের বাসায় চলে গেলো।তখন প্রায় ভোররাত।এখনো সকাল হতে অনেকটা বাকি।বাড়িতে এসেই শুয়ে পড়লো সবাই….এমনিতেই সারারাত ধকল গিয়েছে সবার ওপর দিয়ে।

সকালবেলা বাসায় প্রেসের লোক আসবে… প্রতিশ্রুতিকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে!সেই কারণে প্রস্তুতি হতেও বলা হয়েছে তাকে!

প্রথম খেয়াল করলো তার স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়েছে।নিজের ফোনটা হাতে নিয়ে ধীরে ধীরে বিছানা থেকে নেমে পড়লো সে!তারপর পা টিপে টিপে ছাদের দিকে চলে যায়।

ছাদে এসে চারটাশটা তাকালো সে…নাহ! কেউ নেই চারপাশে।ফোন থেকে একটা নম্বর ডায়াল করে কল দিলো সে।একটু পরে তার কলটা রিসিভ হলো!

—কি,হলো।ফোন ধরতে এতো সময় লাগে…??কি করছিলে এতোক্ষন।

—কিছু করি নি,একটু বাইরে ছিলাম।

—ভালো,আচ্ছা যে কথাটা বলার জন্য ফোন করেছি…কেউ কিছু বুঝতে পারবে না তো আবার। আমরা ধরা পড়ে যাবো না তো??

—আরে কি যে বলছো তুমি!ধরা পড়ার কোনো চান্স নেই।আমরা তোমার স্ত্রীর এক্সের ওপরে নজর রাখছিলাম সারাক্ষণ।তারপর সুযোগ বুঝেই ওকে তুলে এনে অজ্ঞান করে বিছানার ওপরে শুইয়ে দিই।এখন পুলিশ কিকরে জানবে এগুলো বলো… আর ও বললেই বা কি…কে বিশ্বাস করবে ওর কথা!

—সে বুঝলাম…কিন্তু ঐ ছেলেটা কোথায়…যাকে শ্রুতির কাছে রেপিস্ট সাজিয়ে পাঠানো হয়েছিলো।ওর মাথা ঠিক আছে তো??

—রডের আঘাতে কেঁটে গিয়েছে খানিকটা!তবে একটু আগে দেখলাম জ্ঞান ফিরেছে।

—বাহহ!খুব ভালো।শোনো ওকে বাইরে বের হতে দিও না।যেনো কোনো ঝামেলা না হয়।

—বুঝতে পেরেছি,,আমি দেখেই রাখবো ওকে!তুমি চিন্তা করো না!

—হুমম!আর শোনো যখন তখন ফোন দিও না আমায়।আমি প্রয়োজন পড়লে ফোন করে নেবো!

—পাক্কা!সেদিন রাতে তো তোমায় ফোন করতে গিয়ে বিপদেই পড়ে গিয়েছিলাম আমি!

—বিপদ…কিসের বিপদ…???

—আরে বলতে ভুলে গিয়েছিলাম।সেদিন রাতে ফোন দিলাম। কিছুতেই ফোন রিসিভ করছিলে না তুমি। হঠাৎ ফোন রিসিভ হলো,সেটা তুমি ছিলে না।কোনো মহিলা কন্ঠ ছিলো।তোমার ওয়াইফ হবে নিশ্চয়!

–তারপর… তারপর কি হলো???

—তারপর আর কি হবে…আমি ভয় পেয়ে ফোন কেটে দিলাম।আমার মনে হয় আমার কন্ঠ শুনে উনি অন্য কাউকে ভেবেছিলেন।তাই চুপ ছিলেন কিছুক্ষণ।

—ভালো করেছো,এমন উল্টোপাল্টা কাজ করো না আর কখনো!যা করার ভেবেচিন্তে করবে।

—ঠিক আছে।

—ওকে বাই,,টেক কেয়ার!

হঠাৎ প্রথমের মনে হলো কেউ নিচে নেমে সিড়ির দিয়ে!সর্বনাশ আড়ি পেতে ওর কথাগুলো শুনে নিলো নাতো কেউ…একটু পরে আবার কিছু একটা পড়ার শব্দ হয়।

প্রথমের সন্দেহ আরো দৃঢ় হয়।তার মানে কেউ নিশ্চই ছিলো এখানে। আর সে হয়তো সমস্ত কথা শুনে নিয়েছে।তাড়াহুড়োতে ছাদের গেটটা অফ করা হয়নি!ধূর,,কি যে একটা বোকামি হয়ে গেলো!

প্রথম ছুটে গেলো নিচের দিকে।কারো পায়ের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে সে…আর সে দৌঁড়াচ্ছে….

প্রথমের কাছে এবার সবটা পরিস্কার হয়ে গেলো!সে স্পষ্ট দেখতে পেলো প্রতিশ্রুতি ছুটে নিজের রুমের দিকে চলে গেলো।তার আর বুঝতে বাকি রইলো না,, ওটা প্রতিশ্রুতিই ছিলো। তারমানে ও লুকিয়ে সবটা শুনে নিয়েছে!দৌড়ে বেডরুমের দিকে ছুটে চললো প্রথম….

ও পৌঁছতে পৌঁছতে প্রতিশ্রুতি ঘরের দরজাটা বন্ধ করে দিলো!প্রথম ভীষণ রেগে যায় এটা দেখে!

—শ্রুতি,, দরজা খোলা,, দরজা খোলা বলছি!

—নাহহ!খুলবো না আমি দরজা!আমি দরজা খুলবো না!

প্রতিশ্রুতির কন্ঠে আতংক বিদ্যমান।তারমানে ও সত্যিই নিজের স্বামীর আসল রুপটা জেনে নিয়েছে!

—-তুমি দরজা খুলবে,নাকি আমি দরজা ভাঙবো!

—তুমি যা খুশি করে নাও,আমি দরজা খুলবো না!

—তুমি আমার কথা শুনবে না তাই তো….???

—-না শুনবো না,,একটা কথা বলো তো,, তুমি নির্জনকে কেন ফাঁসালে,,ও কি এমন অন্যায় করেছিলো!?

—তার মানে সবটা শুনে গেছো তুমি….???

—হ্যাঁ, আমি তোমার সব কথা শুনেছি।আর আমি এটাও জেনে গেছি সিরিয়াল রেপিস্ট আর কেউ নয়।সেটা হলে তুমি!এই ভালোমানুষি,ভদ্রতা,কিছু না জানা…এটা একটা মুখোশ তোমার।এই মুখোশের আড়ালে একটা ভয়ানক পশু লুকিয়ে আছে…..

—-কি….তুই আমাকে পশু বললি…. এতো বড়ো সাহস তোর!আজ তোকে শেষ করে দেবো আমি।পারলে দরজাটা খোল।আর কি ভেবেছিস এইভাবে বেঁচে যাবি।তোকে যে আমার হাতে মরতেই হবে। সব জেনে গেছিস তুই…তোকে বাঁচিয়ে রাখা মানে জেনেশুনে সুইসাইড করা!

—তুমি…কেন করলে এটা…. কি এমন ক্ষতি করেছিলাম আমি তোমার বলো!আর তুমি…. তুমি নির্জনকে চিনলে কিকরে????

—কেন,,নির্জনের জন্য খুব মায়া হচ্ছে বুঝি।ওর কাজ রাতেই তো খালাশ করে দিয়েছি আমি। নিজের সমস্ত অন্যায়ের দায়ভার বেচারার ওপরে চাপিয়ে এবার বাড়িতে বসে নিশ্চিন্তে ঘুমাবো আমি…কেউ আমার আসল রুপটা কোনোদিন জানতেই পারবে না।(হাহাহাহাহা)
ও হ্যাঁ, আর চিনলাম কিকরে ওকে!?
মনে আছে…তুমি আমায় ফলো করতে করতে একদিন একটা বিল্ডিং পর্যন্ত চলে গিয়েছিলে.. ঐদিন তোমার মাথায় আর কেউ না আমিই আঘাত করেছিলাম।কিন্তু মাঝপথে ওর দূভার্গ্যই টেনে এনেছিলো ওকে।আমার লোক ওর ওপর নজর রাখে তারপর থেকে।আমি জানতে পারলাম ওর সাথে তোমার কোনো একটা সম্পর্ক নিশ্চই আছে।

ঠিক তখন একটা ছক কষলাম কিকরে নিজের সমস্ত কুকর্ম ওর ঘাড়ে চাপিয়ে আমি হাফ ছেড়ে বাঁচতে পারি।সত্যি কথা বলতে মেয়েদের দেহ ভোগ করতে করতে অরুচি ধরে গিয়েছিলো আমার।এসবের প্রতি আর কোনো নেশা কাজ করছিলো না আমার।তাই চেয়েছি এবার এসব থেকে বেরিয়ে আসবো। কিন্তু আমি বেরিয়ে আসলেই তো আর পুলিশ হাত পা গুটিয়ে থাকবে না।

পুলিশের মুখ বন্ধ করবার জন্য একটা মোক্ষম চাল দিলাম আমি!প্রথমে একটা চিঠি পাঠাই তোমাকে।তারপরে তোমায় কিডন্যাপ করে আমার লোক ঐ বাড়িটায় নিয়ে যাই যেখানে প্রথমবারের মতো ধর্ষন করেছিলাম তোমাকে।বিশ্বাস করো ওটা ছিলো আমার জীবনের প্রথম ধর্ষণ। যেটা শুরু তোমার মাধ্যমেই হয়েছিলো।ভাগ্যের পরিহাস দেখো সেই তুমি আমার ঘরে আমার বৌ হয়ে এলে!!

আমার লোক তোমার প্রাক্তনকে অজ্ঞান করে তুলে এনে ধর্ষকের ভূমিকায় বসিয়ে দিলো! আর তুমি সেটাই বিশ্বাস করলে তুমি। শুধু তুমি কেন… সারাদেশের লোক এখন এটাই জানবে নির্জন একজন সিরিয়াল ধর্ষক এবং খুনি।প্রথম প্রথম শুধু ধর্ষন করে মেয়েদের ছেড়ে দিতাম আমি।কিন্তু পরে দেখলাম কাজটা খুব রিস্কি হয়ে যায়।তাই ধর্ষণের সাথে খুনের প্লানটাও জুড়ে দেই!যাতে আমার বিপক্ষে সাক্ষী দেবার জন্য কেউ জীবত না থাকে….

আর তুমি চিন্তা করো না,,যার মাথায় রড দিয়ে আঘাত করেছো তুমি সে আমারই লোক…এখন পুরোপুরি সুস্থ সে।

—ছি!তুমি এতো বড়ো নিচ…. এতো জঘন্য…. ছি ছি ছি!!আমার ভাবতেও ঘৃনা হচ্ছে তুমি আমার স্বামী।আচ্ছা তোমার তো মেয়েদের দেহের ওপর লোভ ছিলো… সেটা তো অন্যভাবেও পূরন করতে পারতে তুমি…তার জন্য ধর্ষনের মতো জঘন্য পথ কেন বেছে নিলে…???

—তুমি বুঝবে না এসব….বুঝবে না আমি।একটা মেয়েকে ভোগ করে করে তিলে তিলে শেষ করার মধ্যে আলাদা আনন্দ খুঁজে পাই আমি। এই আনন্দ পৃথিবীর আর কোনো কিছুতে নেই,,!!
যখন দেখি সে আমার আঘাত সহ্য করতে না পেরে কোরবানির কোনো পশুর মতো ছটফট করছে তার মতো সুন্দর দৃশ্য আর দুটো হতে পারে না….আমি জানি আমি যা করছি একদম ঠিক নয়,অন্যায় এগুলো….কিন্তু আমি এই অন্যায় করেই পৈচাশিক আনন্দ পেতে চাই….
যা এখন তোমার সাথে করবো আমি!আজকেই এই বাড়িতে শেষ দিন তোমার শ্রুতি।দরজা খোলো বলছি।

—না,আমি দরজা খুলবো না….সব বলে দেবো,সবাইকে সবটা বলে দেবো আমি।তোমার সব খেলা শেষ প্রথম!

প্রথম দরজা ভেঙ্গে ঢুকে পড়লো একটু পরে… তারপর প্রতিশ্রুতির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সে!

—আজ শেষ করে দেবো তোকে…আমার খেলা শেষ করবি তুই…দেখ তোর সাথে কি করি আমি।ভুলটা আমারি,,তোকে সেদিন শেষ করে দেয়া উচিত ছিলো যেদিন বাড়ি ফেরার পথে আমায় আমার লোকজনের সাথে দেখে ফেলেছিলি।ভাগ্যিস আমি বুঝতে পেরেই আগেই বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলাম।তবুও তোকে একটা শেষ সুযোগ দিয়েছিলাম।কিন্তু আজ…আজ আর রক্ষা নেই তোর।আজ তোকে ছিড়ে ছিড়ে খাবো আমি….

প্রথম প্রতিশ্রুতির ওপরে উঠে গেলো।তারপর ওর বুকের ওপরে একটা কামড় বসিয়ে দেয়।মূহুর্তে ছটফট করে চিৎকার দিয়ে উঠলো প্রতিশ্রুতি।

ঠিক তখন ঘরের ভেতরে পুলিশ ঢুকে পড়লো।পুলিশের সাথে সার্থক।পুলিশ প্রথমকে হাতেনাতে ধরে ফেললো!

—আপনি আপনার দেবরকে থানায় পাঠিয়েছিলেন…তাই না???

—হ্যাঁ,আমি ছাদে দাঁড়িয়ে ওর সকল কথা শুনে নিয়েছিলাম।আমার সাথে আমার দেবরো ছিলো তখন।আর দেরী না করে আমি ওকে থানায় পাঠিয়ে দিলাম!অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাদের যে আপনারা যথাসময়ে চলে আসলেন!

এরপর পুলিশ প্রথমকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গেলো।প্রথমকে রিমান্ডে নেয়া হয়!তার ভেতরে প্রথমের সাঙ্গপাঙ্গদের পর্যন্ত পৌঁছে যায় পুলিশ।প্রথম সবটা স্বীকার করতে বাধ্য হয়।

তারো কিছুদিন পরে নির্জনকে সমস্ত অভিযোগ থেকে মুক্ত করে দিলো আদালত!আর অনবরত খুন আর ধর্ষনের অপরাধে প্রথমের ওপর মৃত্যুদণ্ডর কার্যকর করার আদেশ দেয়া হয়।আর ওর সাঙ্গপাঙ্গদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হলো…,,





এর একবছর পরে…

হাসপাতাল বেডে শুয়ে আছে প্রতিশ্রুতি।ওর পাশে এক সদ্য নবজাত….

একটু পরে নির্জন এসে কেবিনে ঢুকলো!ছেলেকে দেখেই মুখে হাসি ফুটে উঠলো তার!

—কি খবর,,little নির্জন…..

—আহহহ…কথা বলো না তো,,তোমার little ঘুমাচ্ছে।

—আচ্ছা,ওর তো একটা নাম রাখতে হবে এখন.. কিছু ভাবলে তুমি…

—না,এখনো ভাবিনি।আচ্ছা তুমি একটা নাম ঠিক করে দাও না…

—আমি কি নাম দেবো….!???

—যা খুশি দাও,,যেটা ভালো লাগে তোমার…

(কিছুক্ষণ ভাবতে থাকে নির্জন… কি নাম রাখা যায় ছেলের…🤔)

—হ্যাঁ,পেয়েছি।আচ্ছা ওর নাম তিয়াশ রাখলে কেমন হয়….???

—তিয়াশ… বাহহ,খুব সুন্দর নাম!আমার তো হেব্বি পছন্দ হয়েছে নামটা….

—তাহলে তো আর কথাই নেই,, এটাই লক করে দিলাম…

নির্জন তার ছেলের তিয়াশ নাম দিলো… একবছর আগে প্রতিশ্রুতিকে বিয়ে করেছে নির্জন।একজন বিবাহিতা এমনকি ধর্ষিতাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে এতোটুকু দ্বিধাবোধ হয় নি তার।কারণ নির্জন ভালো করেই জানে…যে অন্যায় কেউ নিজে থেকে করে না,,সেটা অন্যায় হতেই পারে না।প্রতিশ্রুতিকে কেউ জোর করে ধর্ষণ করেছে…এতে সে অপবিত্র বা নষ্ট হয়ে যায় নি,বা তার চরিত্র কলুষিত হয় নি।প্রতিশ্রুতির চরিত্র কলুষিত তখোনি হতো যখন সে জেনে বুঝে স্বেচ্ছায় অন্যের কাছে নিজেকে বিকিয়ে দিতো!কিন্তু সেরকম কিছু ঘটে নি…

প্রতিশ্রুতিকে নিয়েই বাকি জীবনটা সুখে কাটাতে চায় সে…জীবনে চলার পথে আজ থেকে বহুবছর আগে প্রতিশ্রুতিকে সবসময়ের জন্য ভালো রাখার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো নির্জন….ওর জীবনের সেই প্রথম প্রতিশ্রুতি প্রান দিয়ে হলেও রক্ষা করবে সে…এদিকে প্রতিশ্রুতিও তার স্বামীর ভালোবাসায় নিজের ভয়ানক অতীতের আস্তে আস্তে ভুলে যেতে শুরু করেছে!তবে সার্থকের সাথে মাঝে মাঝে দেখা হয় তার।সার্থক নিজেই আসে ওদের কাছে!!

(শুভ সমাপ্তি)

(সবার প্রতি অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা সাথে থাকার জন্য….আর পুরো গল্পটা কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না,,ধন্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here