#প্রিয়ংবদা
#সপ্তম_পর্ব
#লেখনীতেঃমৌশ্রী_রায়
সেই ব্রীরাময় রাতটা এক অস্পৃশ্য লজ্জাবোধেই পেরিয়ে গেল। খেতে বসে, বাবার সাথে গল্প করতে বসে সব জায়গাতেই বিনা করণেই লাজে রাঙা হলো কিশোরী মন।
রাত গাঢ় হলে যখন আপনকক্ষে কড়া সাদাটে আলোটা নিভে গিয়ে ম্লান হরিৎ আলো জ্বললো, তখন সেই আবছা সবুজ আভায় ছেয়ে যাওয়া নীলচে দেয়ালে চোখ পড়তেই হৃদিতার ক্ষীণ লজ্জা গাঢ় হলো।মনে পড়লো, লোকটাও আজ হালকা সবুজ রঙের শার্ট পড়ে এসেছিল।
ফরসা সুঠাম দেহে সেই সি গ্রীন কালার শার্টটা কত সুন্দরই না মানিয়েছিল।
ভাবা মাত্রই হৃদিতা আবারো লজ্জায় গুটিয়ে গেল কেমন।জীবনে প্রথমবার বাবা-মায়ের আদুরে দু অক্ষরের নামটাই তার কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয়, সবচেয়ে মিষ্টি, আর সর্বাপেক্ষা শ্রুতিমধুর ঠেকল। বারবার কানে ভেসে এসে গোটা মস্তিষ্কময় প্রতিধ্বনিত হয়ে গেল সেই একটি কথাই,
“আপনার করা চাটাও ভালো ছিল হৃদ। একটু ইউনিক। আপনাকেও ধন্যবাদ।”
হৃদিতা আবারও লজ্জা পেল,অযথাই,অকারণেই।আদৃতের মুখে সেই একবার শোনা “হৃদ” এটুকুই যেন তাকে লজ্জার মাঝ সমুদ্রে ফেলে দিয়ে চলে গেল।কবি যন্ত্রণা। হৃদিতা বিছানায় গা এলালো।লাজুক মুখটা লুকোতেই কপালের ওপরে হাত রেখে কাত হয়ে শুলো।
তবে ঘুম কি অতই সোজা?লাজুক রমনীর অক্ষীপটে তাই নিদ্রাপরশ হলো না। অনিদ্রায় এপাশ ওপাশ ঘুরে ফিরে, একপ্রকার ছটফট করেইকেটে গেল গোটা রাত।
রাতের প্রহর যখন ভোরের কোঠায় নামলো, দেয়াল ঘড়ির ছোট্ট কাটাটা যখন ৪ এর ঘরে থমকালো, তখন হৃদিতা তার এই অহেতুক লজ্জা,আর অপরিচিত অনুভুতির সাথে যুদ্ধে পরাস্ত যোদ্ধাটির ন্যায় পাংশুমুখে উঠে বসলো। ক্লান্ত শরীরে কেমন যেন একটা শুণ্য অনুভুতি এসে গ্রাস করলো তাকে। হৃদিতার মধ্যে থেকে এবার সেসব দমবন্ধ করা অনুভুতিরা বিদায় নিল।
আচমকাই ক্ষণপূর্বেই লাজে রক্তিম মুখখানি কেমন বেদনায় নীল হয়ে গেল যেন। হৃদিতার চোখের কোণ উপচে গেল, গাল ভিজলো, ঠোঁট কাঁপলো। সে দুয়েকবার আটকাবার চেষ্টা করেও যখন আসন্ন কান্নাটুকু আটকাতে পারলো না তখন আর বৃথা চেষ্টা করলো না। কাঁদলো। কান্নারত মনটাই হঠাৎ ভীষণ অভিমানী হয়ে উঠল, অভিমানে চোখ ডলে জলটুকু মুছে ঠোঁট উল্টে,নাক টেনে সে ভর্ৎসনার স্বরে বললো,
“এই যে নিষ্ঠুর পুরুষ!আপনি কেন আমাকে হৃদ ডাকলেন?কেন?আমার এই ছোট্ট পৃথিবীটা যে আপনাদের ভাবনার চেয়েও ক্ষুদ্র। এই স্বল্প পরিধির পৃথিবীতে আমার কাছের মানুষ, গল্প করার সাথী বলতে তো মোটেই তিনজন। মা-বাবা আর এখন দিদা!তাছাড়া তো ১৭ বছরের জীবনটা নিছকই একাকীত্বের রাজত্ব! কেউ তো কখনো ভালোবেসে ডাকেনি আমাকে। সবসময় সবখানে শুনতে হয়েছে, তুই কালো, আমাদের সাথে বসবি না, তুমি তো কালো যাও দুরে যাও!এমনকি স্কুল,কলেজের স্যার-ম্যামরাও আমাকে কাছে টানতে পারেননি। দুরে সরিয়ে দিয়েছেন।
আমি যে এতেই অভ্যস্থ, আমার অভ্যাসের ব্যাতিক্রম হল কেন তবে আজ?কেন এই আমিটাকেই অমন আদুরে স্বরে ডাকলেন?কেন?
আপনি খুব পাষাণ আদৃতবাবু। আমাকে নিদারুণ এক অনিদ্রাময় রাত্রি উপহার দিয়ে আপনি নিশ্চয় খুব সুন্দর শান্তিতে ঘুমিয়ে আছেন এখন তাই না?
শুধু শুধুই আমার চোখের ঘুম, মনের শান্তি কেড়ে নিতে গেলেন!”
হৃদিতা যখন আদৃতের বিরুদ্ধে আপনমনে এমন অভিযোগের পসরা সাজাতে ব্যস্ত, তখন সে জানতেও পারলো না, বিপরীত দিকের মানুষটা, তার থেকে কয়েক কিলোমিটার দুরে নিজের ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে সমানতালেই সেই কৃষ্ণকিশোরীকে দোষারোপ করে যাচ্ছে।
.
আদৃত যখন চোখ বুজতেই সেই কৃষ্ণনারীমূর্তির মুখখানি অবলোকন করে আর ঘুমোতে পারেনি,তখন সেও খোলা বাতাসে একটু শ্বাস নিতে ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ায়। মস্তিষ্ককে একটু সতেজ করার প্রয়াস আর কি!
তবে তা বৃথা। কালো আকাশের দিকে তাকাতেই আদৃতের চোখ কপালে ওঠে। কালো আকাশের কোণে সবর্ত্র তার চোখে ভাসে সেই ষড়যন্ত্রকারীনী “হৃদ” এর মুখশ্রী। আদৃত চোখ বুজে নেয়।
শত চেষ্টাও সে তার মস্তিষ্ককে বোঝাতেই পারেনা, একদিনের পরিচিত একটা পুচকে মেয়ে কিভাবে তাকে এত জ্বালাচ্ছে?
আদৃত যখন নিজের ভাবনাতে বিভোর, তখন পিঠে কোন চেনা হাতের স্পর্শ পেয়ে সে চোখ মেলে। হালকা হেসে বলে,
“দাদু, ঘুমোও নি? ”
আশুতোষবাবু আদৃতের পাশে এসে দাঁড়ায়। তারপর প্রত্ত্যুত্তর করেন,
“তুইও তো ঘুমোনি।”
আদৃত একটা তপ্তশ্বাস ফেলে বলে,
“ঘুম আসে না দাদু!কেন বুঝতে পারছিনা! ”
আশুতোষ বাবু এবারে ফিচেল হেসে বলেন,
“আচ্ছা? বুঝতে পারছিস না?আমি কিন্তু বুঝেছি!”
আদৃত ভ্রু কুচকে তাকায়।দৃষ্টিতে প্রশ্ন,কৌতুহল। আশুতোষবাবু বুঝতে পারেন। পূর্ববৎ হেসে জবাব দেন,
“ঋতমবাবুর বাড়ি থেকে ফেরার পর থেকেই তো এমন ছটফট করছিস,ঠিকমতো তো খেলিও না।। আমি খেয়াল করিনি ভাবছিস?তোর বাবা মায়ের নজর এড়াতে পারবি দাদুভাই, আমার নজরে ফাঁকি দিতে পারবিনা। জহুরির চোখ বুঝলে!”
আদৃত অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো। এদিক সেদিকে চোখের মণি ঘুরিয়ে দাদুর অভিজ্ঞ দৃষ্টি এড়ানোর অহেতুক প্রচেষ্টা করলো। তবে লাভ হলো না। আশুতোষবাবু বললেন,
“লাভ নেই।আমার থেকে চোখ সরিয়ে লাভ নেই। যা বোঝার বুঝেছি।”
আদৃত হালকা তোঁতলানো স্বরে জিজ্ঞেস করলো,
“মানে?কককি বুঝলে?”
আশুতোষ বাবু এবারে বিস্তর হাসলেন। তারপর নাতির দুকাঁধে হাত রেখে বললেন,
“ঋতমবাবুর একটা মেয়ে আছেনা?এবারে উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে উঠল। উনি তো সেদিন বললেন আমায়। নামটা যেন কি?উউউউ, হ্যাঁ, হৃদিতা।
ওর সাথে দেখা হয়েছে তাই না?সেই জন্যই এই আকুলতা!ঠিক ধরেছি না?”
আদৃত লজ্জা পেয়ে মুখ নামালো। জীবনে প্রথমবারের মতো সে কোন কথার উত্তর খুঁজে পেল না। আচমকা চোর ধরা পড়ে গেলে যেমন অনুভুতি হয় আদৃতও তেমনটাই বোধ করতে লাগলো। দাদু যে সবটা ধরে ফেলেছে, ভাবতেই লজ্জায় আনত মস্তক আরো নত হলো।
আশুতোষবাবু আদৃতের কাঁধে একটা চড় মেরে বললেন,
“আমার কাছে লজ্জা পেতে হবেনা দাদু। বুঝি আমি। বিয়ের পরেরদিন তোর ঠাম্মিকে দেখেও আমার এমনটাই অনুভুত হয়েছিল। দীর্ঘ চারবছর হাজার চেয়েও প্রথমদেখায় মুগ্ধতা ছড়ানো ঐ মুখটা এক মুহুর্তের জন্য ভুলতে পারিনি। চোখের ঘুম উড়ে গিয়ে চোখ বুজলেই সেই মুখই ভাসতো কেবল। কি যে যন্ত্রণা!তবে এমন যন্ত্রণা পেয়েও সুখ ছিল জানিস। অদ্ভুত তৃপ্তি ছিল। আমি তাই এর নাম দিয়েছিলাম সুখ সুখ যন্ত্রণা। তোরও কি এমন সুখের যন্ত্রণা হচ্ছে দাদু?”
আদৃত হতাশ চোখে চেয়ে বললো,
“জানিনা দাদু। এক দুদিনের পরিচয়ে এই মেয়ে কি জাদু করে দিল আমার ওপরে যে ঘুম টুম সব উড়ে গেল। কিছুই বুঝতে পারছিনা আমি। অথচ এসব লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইডে তো আমি বিশ্বাস করিনা। তবে?কিছু মাথায় ঢুকছে না দাদু!”
আশুতোষবাবু ভাবুক চোখে একবার নাতিকে দেখে নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
“মেয়েটার নাম কিরে দাদু?”
আদৃত ক্ষকালের তরেও ভাবার সময় নিলনা। চটপট জবাব দিল,
“হৃদ!”
আশুতোষবাবুর ঠোঁটের কোণ প্রশস্ত হল। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন,
“মেয়েটা দেখতে কেমন?”
আদৃত এবারেও ভাবলো না। বিনা চিন্তাতেই উত্তর দিল,
“ও একটু কালো দাদু!”
আশুতোষবাবুর হাসি মিলিয়ে গেল। তার ভাবনা কি তবে ভুল?মেয়েটার গায়ের রঙটাই শুধু চোখে পড়লো? তবে মিনিটের মাথায় আদৃত আবার বলে উঠল,
“তবে কালো হলেও ওর চোখে মুখে অদ্ভুত মায়া আছে দাদু। চোখের দিকে তাকালেই যেন ঠিকরে পড়া মায়া নজরে আসে। ও যখন হাসে তখন ওকে এত মিষ্টি দেখায় না, তখন সারা পৃথিবীর সব সৌন্দর্য কেমন যেন ম্লান লাগে আমার কাছে।”
তারপরে একটু থেমে বলে,
“আমি অদ্ভুত কথা বলছি দাদু। আমি বোধ হয় পাগল হয়ে যাচ্ছি। একেবারে পাগল। হঠাৎ চেনা একটা মেয়ের বিষয়ে এমন কথা বলাটা তো আমার স্বভাববিরুদ্ধ দাু। তবুও আমি বলছি। এসবের মানে কি দাদু?”
নাতির কথায় আশুতোষ বাবু চাপা হাসলেন। তারপর তার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
“এখন একটু ঘুমোও দাদুভাই। শরীর খারাপ করবে নয়তো। ”
আদৃত নাছোর কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
“বললেনা তো দাদু, আমার কি হচ্ছে?এমন অজানা অনুভুতির অর্থ কি দাদু?”
আশুতোষ বাবু মৃদু হেসে বললেন,
“সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় না দাদু। কিছু প্রশ্নের উত্তরের জন্য নিজেকে বুঝতে হয়, উত্তরের সন্ধান করতে হয়। এখন ঘুমোও, ঘুম ভাঙলে ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখো। ঠিক খুঁজে পাবে দেখবে।”
আদৃত আর দ্বিরুক্তি করেনা। চুপচাপ ঘরে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে। চোখ বুজতেই এবার দেখা মেলে নিদ্রাবতীর। আশুতোষবাবু ব্যালকনির দরজাটা চাপিয়ে দিয়ে পর্দা টেনে দেন। তারপর কিছু একটা ভেবে হাসিমুখেই বেরিয়ে যান ঘর থেকে।
.
সারারতের বিদঘুটে অনিদ্রার পরে ভোরের আলো ফুটতেই বিছানা থেকে নেমে পড়ে হৃদিতা। ফ্রেশ হয়ে এসে একপলক আয়নার দিকে তাকায়। নির্ঘুম সারারাতের চিহ্ন স্বরুপ চোখের নিচে কালসিটে বসে গেছে। হৃদিতা নিজের ওপরে বিরক্ত হয়। কপালের সামনে বেরিয়ে আসা চুলগুলোর দিকে একটিবার তাকিয়ে একটানে খুলে ফেলে বেঁধে রাখা বিনুনি। চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে নিয়ে আবার তিন ভাগে ভাগ করা চুলগুলোকে কায়দা করে আবার বেঁধে ফেলে শক্তপোক্ত বেনি।
স্টাডিটেবিলের ওপরে রাখা বিস্কিটের বোয়ামটা থেকে দুটো বিস্কিট মুখে পুরে নিয়ে জল গিলে নেয় সে। তারপরে পড়তে বসে যায়।
বই-খাতা মেলে ইংরেজি গ্রামারের ট্রান্সলেশনে চোখ বোলায়। তবে নিদ্রাহীন মস্তিষ্কে কিছুই বোধগম্য হয়না।
হতাশ হয়ে বই খাতা বন্ধ করে রেখে জানালার গ্রিল ধরে বাইরের দিকে তাকায় হৃদিতা।
রক্তিম ভানু তখন মাত্র মেঘ চিড়ে বেরোবার তোড়জোড় করছে। দেখতে দেখতেই পুব আকাশ ছেয়ে যায় সেই সদ্য জাগরিত প্রভাকরের লালাভ আভায়। হৃদিতার দেখতে ভালো লাগে। আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের মতোই মনে হতে থাকে এই প্রথম প্রভাতের সূর্যোদয়।
হৃদিতা যখন উদিত সূর্যের রুপ বিশ্লেষণে ব্যস্ত তখনই টাপুর দেবী এসে দাঁড়ান তার ঘরের দরজায়। ধীর পায়ে মেয়ের দিকে এগিয়ে এসে চুলের ভাজে হাত গলিয়ে জিজ্ঞেস করেন,
“সারারাত ঘুমোসনি হৃদ?আজ তো শুক্রবার!এত তাড়াতাড়ি উঠেছিস কেন তবে?”
হৃদিতা মায়ের দিকে ফেরে। তারপর পিটপিট চোখে চেয়ে বলে,
“ঘুম ভেঙে গেল মা!আজ শুক্রবার তাইনা?মনেই ছিলনা।”
হৃদিতা না বললেও মাতৃহিয়া বুঝতে সময় নেয় না যে মেয়ের সারারাত নির্ঘুমই কেটেছে। চোখের তলার কালিই যে তার কথা টিৎকার করে জানান দিচ্ছে। তবে টাপুর দেবী ে নিয়ে কিছু বললেন না। মেয়েটা তার বরাবরই ভীষণ চাঁপা। বাবার কাছে যাও বা নিজেকে একটু মেলে ধরে, তবে আর কারো কাছে না। সবার থেকে নিজের দুঃখ-কষ্ট লুকোনোতেই যেন তার স্বস্তি। সেজন্য মেয়েকে স্বস্তিসীমার বাইরে আনতেও চান না তিনি।
টাপুর দেবী মেয়ের মাথায় বাৎসল্যের পরশ বুলিয়েই জিজ্ঞেস করেন,
“আজ তো তুই, তোর বাবা দুজনই বাড়িতে হৃদ। চল একটা ঘরোয়া পিকনিক করি। কি কি খাবি বলতো!”
হৃদিতার ক্লান্ত চোখজোড়াতে দীর্ঘ সময় বাদে মাত্র হালকা খুশির চমক খেলে যায়। সে লাফিয়ে উঠে বলে,
“পিকনিক!আচ্ছা, তাহলে তুমি রাধো, খিঁচুরি, ইলিশ মাছ ভাজা, বেগুনী, আর গোল গোল করে আলু ভাজা। খুব মজা হবে!দাঁড়াও আমি বাবাকে বলি!”
হৃদিতার চঞ্চল মন চাঞ্চল্যে ভরে যেতেই তার স্মৃতিভ্রম ঘটে, মনে হারায় কাল রাতের সব যাতনা। টাপুর দেবী হেসে সম্মতি জানান। হৃদিতা ছুটে বেরিয়ে আসে, তারপরে চলে যায় বাবার ঘরে।
টাপুর দেবী দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। হঠাৎই মাতৃসুলভ মনটা ডুকড়ে ওঠে, চোখে ভীড় করে অশ্রু। মনে মনে প্রার্থনা করেন,
“মেয়েটা যে বড্ড মুখচোরা ঈশ্বর!এমন কেউ কি নেই তোমার পৃথিবীতে, যে ওর না বলা সব কথা, অপ্রকাশিত সব দুঃখ নিজের চেষ্টায় বুঝে নেবে?সত্যি কি নেই? ”
সৃষ্টিকর্তা সরাসরি কখনো উত্তর দেন না বলেই হয়তো টাপুর দেবী তার প্রশ্নের জবাব পেলেন না। তবে মাতৃহৃদয়ে কোথাও মনে হলো, আছে, নিশ্চই আছে। তাদের হৃদের হৃদস্পন্দন অবলোকন করার জন্য অবশ্যই কেউ না কেউ আছে। হয়তো তার আগমণ কেবল সময়ের অপেক্ষা।
#চলবে!
[