#প্রেম_পায়রা 🕊️🕊️
#লেখনীতে: ইনায়াত আহসান ( ছদ্মনাম)
#অষ্টবিংশ_পর্ব ( অন্তিম পর্ব)
” সবটাই ঠিক হবে! ভুল বোঝাবুঝি দূর হবে! কিন্তু সেদিন আর চাইলেও তোমার কাছে আমার ফেরা হবে না!
দেখো ঠিক সেটাই হচ্ছে।
মৃত্যু তোমার আর আমার মাঝে এমন এক অদৃশ্য প্রাচীর গড়ে দিয়েছে যেটিকে চাইলেও কোনোদিন ভাঙা সম্ভব না।
আমি চাই নি এমনটা হোক! এতোটা কাছাকাছি এসেও আবার দূরে চলে যেতে চাই নি আমি!
তবে সব গল্প পূর্ণতা পায় না। কিছু গল্প অপূর্ণই রয়ে যায়।
ভা,ভালো,ভালোবাসি স্নিগ্ধ!!”
হুমায়ূন ফরীদি স্যারের কথাটা মনে আছে?
– ” মৃত্যুর চেয়ে এত স্নিগ্ধ, সুন্দর উপলব্ধি আর কোনো কিছুতেই নেই!”
“আমি প্রতিনিয়ত আপনার কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। মনে হচ্ছে আমি এই দুনিয়ার মোহ থেকে ঠিক ততটাই দূরে সরে যাচ্ছি যে চাইলেও আপনার নাগাল পাবো না স্নিগ্ধ!”
লিখা টুকু পড়েই ঠাস করে ডায়েরিটা বন্ধ করে দিলো আমিশা। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে গিয়েছে। দম বন্ধ হয়ে আসছে। এমন দুর্বিষহ, মর্মান্তিক লিখা টুকু পড়েই হৃদয় কেঁপে উঠছে বারংবার।
মাগরিবের আজানের ধ্বনি কর্ণকুহরে পৌঁছাতেই পাশ ফিরে তাকালো সে।
সূর্য অস্তমিত হয়েছে অনেকক্ষণ আগেই। ব্যস্ত ঢাকা নগরীর রাস্তাও সোডিয়াম লাইটের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছে। ভাবতেই অবাক লাগছে একটা মানুষের জীবনে এত কিছুও ঘটতে পারে। একটা মানুষকে ঠিক কতোটা প্রবলভাবে চাইলে, তাকে ঠিক কতোটা ভালোবাসলে মানুষ এমনটা করতে পারে।
চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়াতেই পেছন থেকে কারো মৃদু গলার কন্ঠস্বর ভেসে আসে তার কানে।
– ” আপু, আপু,,!”
পেছন ফিরতেই সাত আট বছর বয়সী একটা ছোট্ট ছেলেকে নজরে পড়লো আমিশার।
– ” কি ব্যাপার সাদাফ, তুই এখন এসময় কি করছিস! তোর না পড়তে বসার কথা। আর এভাবে ফিসফিস করে কথা বলছিস কেন?”
ভ্রু কুঁচকে ছোট্ট সাদাফকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো আমিশা।
– ” উফফ্ আপু! সবসময় এত সিরিয়াস মুডে থাকো কি করে বলোতো?
আরে আমি তো একটা ইম্পর্ট্যান্ট কথা বলতে এসেছি!
শোনো শোনো!”
ছোট ভাই সাদাফের মুখে এমন পাকা পাকা কথা শুনে আমিশা আলতো হেসে কান পেতে দিলো।
– ” আজকে কি তুমি কি ভুলে গিয়েছো? আরে আমাদের তো এখনো অনেক খানি কাজ বাকি! কাল তো মা-বাবার,,…….!”
বলেই হাতটাকে দু পাশে ছড়িয়ে দিলো সাদাফ।
সাদাফের বলা কথা শুনতেই আমিশার টনক নড়ে উঠলো। সারাটা দিন ডায়েরির পাতা গুলো উল্টাতে উল্টাতে মাথা থেকে বেরিয়েই গিয়েছিল সাদাফের বলা কথাটা!
কিছু একটা ভাবতেই মুখের কোণে সুক্ষ্ম হাসির রেখা ফুটে উঠল আমিশার!
বাহির থেকে এসে ঘরে প্রবেশ করতেই আতকে উঠলো মিশরাত। পুরো বাড়িটাই ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে রয়েছে। অনেকদিন পর মেহেরের সাথে আর মায়রার ( মেহের আর ইরফানের মেয়ে) সাথে দেখা করতে গিয়েছিল সে। মায়রার আর ইরফানের জোরাজুরিতে অনেকটা সময় কেটে যায়। বাড়ি ফিরতে ফিরতে প্রায় রাত পৌনে বারোটা বেজে গিয়েছে। অন্ধকার রুমে হাতড়ে হাতড়ে সুইচ অন করতেই চোখ দুটো বিস্ময়ে বড় বড় হয়ে যায়। পুরো রুম ছোট বড় বেলুন, ছোট ছোট মরীচবাতি আর স্বচ্ছ শুভ্র রঙের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। বড় বড় অক্ষরে দেয়ালে সুন্দর করে টাঙানো,
‘HAPPY 17th MARRIAGE ANNIVERSARY’
ঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই খেয়াল করলো আর মাত্র এক মিনিট বাকি বারোটা বাজতে। পেছন থেকে হঠাৎ কারো চেনা পরিচিত কন্ঠস্বর কানে আসতেই পেছন ফিরে তাকালো মিশরাত।
মিসেস ইয়ামিন চৌধুরী, মিস্টার ইফতেখার চৌধুরী, স্নিগ্ধ সবাই একত্রে চিল্লিয়ে বলে উঠে, ‘হ্যাপি অ্যানিভার্সারি’! পেছন পেছন আমিশা আর সাদাফ ও বেরিয়ে আসে সবার সামনে।
সবাই মিলে মিশরাতকে এমন বড় সারপ্রাইজ দিবে তা কল্পনাও করতে পারে নি সে।
– ” মাম্মাম সারপ্রাইজ টা কেমন লেগেছে তোমার? বলো না!!”
গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গিয়ে মিশরাতের সামনে এসে বলে উঠলো সাদাফ।
– ” খুব ভালো লেগেছে বাবা! খুব ভালো লেগেছে!”
মিশরাত হাঁটু গেড়ে বসে বলে উঠলো সাদাফকে উদ্দেশ্য করে।
– ” কেন ভালো লাগবে না! অবশ্যই ভালো লাগবে। আফটার অল তোমার দুজন গুনধর ছেলেমেয়ে যখন মিলেমিশে এসব প্ল্যানিং আর এরেন্জমেন্টস্ করেছে!”
স্নিগ্ধর কথায় মাথা তুলে তাকালো মিশরাত। অবিশ্বাস্য চোখে আমিশা আর সাদাফের দিকে তাকাতেই আমিশা বিনিময়ে একটা মুচকি হাসি দিলো। ষোলো বছর বয়সী আমিশা পৃথিবীর বাদবাকি অন্য কিছুও তেমন একটা না বুঝলেও নিজের মা বাবার প্রতি ভালোবাসা ঠিকই বুঝতে পারে। মায়ের স্যাক্রিফাইসের বর্ণনাতীত সম্পর্কে পুরোটুকু জানতে পেরে অজান্তেই একটা গর্ববোধ আর ভালো লাগা কাজ করে তার মাঝে।
” অল দ্যা ক্রেডিট গোস টু আমিশা এন্ড সাদাফ!”
বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো মিশরাত। খানিকটা এগিয়ে গিয়ে আমিশার সামনে গিয়ে কয়েক পলক পরখ করে নিলো আমিশাকে। মেয়েটা সত্যিই অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। কিছু না বলেই আচমকা আমিশাকে জড়িয়ে ধরলো মিশরাত। তবে এতে করে বেশি একটা অবাক হলো না আমিশা। কেননা সে তার মাকে খুব ভালো করেই চিনে।
– ” হয়েছে হয়েছে মাম্মাম! আমি আর আপু মিলে সবটা করলাম আর তুমি শুধু আপুকেই আদর দিচ্ছো!
আমাকে কেউ ভালোবাসে না, হুহ!”
বলেই সাদাফ মুখটাকে ফুলিয়ে নিলো ।
সাদাফের এমন বাচ্চামোতে ফিক করে হেসে দিল মিশরাত। কিছুক্ষণ পর আমিশা গিয়ে একটা কেক নিয়ে আসলো যেটার উপর সুন্দর করে লাভ শেপের মাঝে ” স্নিগ্ধ+মিশরাত” লিখা। কেক কেটে সর্বপ্রথম মিস্টার ইফতেখার চৌধুরী আর মিসেস ইয়ামিন কে খাইয়ে দিতে দুজনেই চোখের ইশারায় স্নিগ্ধকে খাইয়ে দিতে বলে। মিশরাত ও বাধ্য মেয়ের মত স্নিগ্ধকে কেকের প্রথম বাইট খাইয়ে দিল। স্নিগ্ধও মিশরাতকে পাল্টাক্রমে খাইয়ে দিল।
মধ্যরাতের প্রহর নিস্তব্ধ নিঝুম। আকাশটাও বেশ পরিস্কার। তবে মাঝে মধ্যে দু এক ফালি মেঘ এসে চাঁদকে ছুঁয়ে দিয়ে যাচ্ছে। ব্যালকনির গ্রিলের সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে মিশরাত। দৃষ্টি বাইরের খোলা আকাশের বিশালতায় আবদ্ধ।
কারো মৃদু পদধ্বনি কানে পৌঁছালেও মিশরাতের মাঝে তেমন কোনো ভাবান্তর ঘটলো না। সে পূর্বের মতোই ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো।
ঘাড়ে উত্তপ্ত কারো নিঃশ্বাস আছড়ে পড়তেই নড়েচড়ে উঠে মিশরাত। শরীর জুড়ে হালকা কাঁপুনি দিয়ে যায়।
মিশরাতের কাঁধে নিজের থুতনি লাগিয়ে নিচু হয়ে দাঁড়ালো স্নিগ্ধ। হাত দুটো মিশরাতের কোমড় জড়িয়ে আছে।
দুজনের মাঝেই পিনপতন নীরবতা। কারো মুখেই টু শব্দ পর্যন্ত নেই। তবে খানিকটা সময় বাদে নীরবতার সমাপ্তি টেনে দিয়ে মিশরাত মৃদু কন্ঠে বলে উঠল,
– ” ভাবতেই অবাক লাগে তাই না স্নিগ্ধ? একসাথে সতেরোটা বছর পার হয়ে গেল চোখের নিমিষেই। কিন্তু একসাথে থাকার যে এই বিতৃষ্ণা তা কখনোই শেষ হওয়ার নয়।
সেদিন যদি আমি না ফিরতাম, আমার নিঃশ্বাস যদি আমাকে তোমার কাছ থেকে আলাদা করে দিতো তাহলে?”
– ” হুসস! আর একটা কথাও নয়। কি করে যেতে আমার কাছ থেকে দূরে? আমার কাছ থেকে যদি দূরে যেতেই হতো তাহলে একসাথে এতগুলো বছর কে কাটাতো!
তবে হ্যাঁ সেদিনের কথা চাইলেও আমি কোনোদিন স্মৃতি থেকে মুছে ফেলতে পারবো না!!”
অতীত,,
মিশরাতের চোখ বন্ধ হয়ে আসতেই স্নিগ্ধর মাথা কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
– ” মিশরাত, এই মিশরাত! চোখ খুলো! নো নো এভাবে আমাকে ছেড়ে যেতে পারো না! দেখো আমি সরি বলছি! আর কোনোদিন এমনটা হবে না, তবুও প্লিজ চোখ খুলো!”
মিশরাতকে জড়িয়ে ধরে উল্টোপাল্টা প্রলাপ বকতে থাকে স্নিগ্ধ।
– ” স্নিগ্ধ, কাম অন ফাস্ট! এভাবে মিশরাতকে নিয়ে বসে থেকো না! কুইকলি ওকে নিয়ে হসপিটালে যেতে হবে! অনেকটা ব্লিডিং হচ্ছে। এভাবে হতে থাকলে অনেক বড় প্রবলেম হতে পারে।”
ইশরাকের কথায় তড়িৎ গতিতে মিশরাতকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিল স্নিগ্ধ। পেছন পেছন ইরফান আর ইশরাক ও বেরিয়ে পড়লো গোডাউন থেকে।
গাড়ির ব্যাক সিটে মিশরাতকে নিয়ে বসে পড়লো স্নিগ্ধ। গুলিবিদ্ধ জায়গা থেকে রক্ত চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে আর সেগুলোতে স্নিগ্ধর হাত ও লালচে হয়ে গিয়েছে।
কিছুক্ষণ পর হসপিটালে পৌঁছাতেই স্ট্রেচারে মিশরাতকে শুইয়ে দিয়ে ডক্টর ডক্টর বলে আশপাশ চিল্লাতে লাগলো স্নিগ্ধ।
ডক্টর ও নার্স মিশরাতকে তৎক্ষণাৎ ইমার্জেন্সি অপারেশন রুমে নিয়ে চলে যায়।
অপারেশন থিয়েটারের সামনে অস্থির ভাবে পায়চারি করে যাচ্ছে স্নিগ্ধ। পাশে ইরফান ও দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
প্রায় অনেকক্ষণ পর ডক্টর বেরিয়ে আসেন।
– ” ডক্টর মিশরাত কেমন আছে? ইজ এভরিথিং ফাইন?”
– ” নট এট অল! পেশেন্টের অবস্থা ক্রিটিক্যাল! ৭২ ঘন্টা না যাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না!
আর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অনেকটা সমস্যা হতে পারে। তার উপর মেইবি উনি মানসিকভাবে অনেক স্ট্রেসে ছিলেন!
এক্সকিউজ মি!”
বলেই স্নিগ্ধর পাশ কাটিয়ে চলে গেলেন। আর স্নিগ্ধ এখনো ঠায় অনুভূতি হীন ভাবে দাড়িয়ে আছে।
সেই তিনদিন ঠিক কতোটা কষ্টে পার করেছে সে নিজেই জানে। ৭২ ঘন্টা পর ভাগ্যক্রমে জ্ঞান ফিরে আসে মিশরাতের।
চোখ পিটপিট করে খোলার পর সামনে স্নিগ্ধকে বিধ্বস্ত অবস্থায় দেখে বুকটা ধক করে উঠে মিশরাতের।
– ” থ্যাঙ্ক গড, তোমার জ্ঞান ফিরেছে মিশরাত! নাহলে তোমার শোকে বেচারা দেবদাস হয়ে এই হসপিটালেই আজীবন পড়ে থাকতো!”
ইশরাকের কথা শুনে হালকা হেসে উঠলো মিশরাত।
মিশরাতের জ্ঞান ফিরার কথা শুনে একে একে দু পরিবারের সবাই উপস্থিত হয় হসপিটালে। প্রথম প্রথম মিসেস ইয়ামিন চৌধুরী আর মিস্টার ইফতেখার চৌধুরী উভয়েই স্নিগ্ধকে এভোয়েড করলেও আস্তে আস্তে সেটা প্রশমিত হয়। ইশরাকের আন্ডারে শুভ্রতা আর রবিন দুজনকে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
মাসখানেক বাদে মেহেরের কোল আলো করে জন্ম নেয় ছোট্ট মায়রা!
মিশরাত আর স্নিগ্ধের সম্পর্কটাও প্রথম প্রথম একটু অগোছালো হলেও সময়ের বিবর্তনে সবকিছুই আবার ঠিক হয়ে যায়। মিশরাত আর স্নিগ্ধের ভালোবাসার চিহ্ন স্বরুপ জন্ম নেয় আমিশা আর সাদাফ।
বর্তমানে,,
ঘরে কারো উপস্থিতি না পেয়ে আমিশা গুটি গুটি পায়ে রুমে প্রবেশ করলো। আশেপাশে ভালো করে পরখ করে দেখে নিলো মা বাবার মধ্যে কেউ আছে কিনা! না কেউ নেই। হাতে থাকা ডায়েরিটা খুব সাবধানে সন্তর্পণে পূর্বের জায়গায় ড্রয়ার খুলে রেখে দিলো সে। বেশ কিছুদিন আগে বাবার হাতে ডায়েরিটা দেখে বেশ অবাক হয়েছিল সে। কেননা বাবা তো বেশ একটা ডায়েরি ঘাঁটে না। কৌতুহলবশত সেটা লুকিয়ে লুকিয়ে নিয়ে পড়ে ফেলে আমিশা! তবে ডায়েরিটা পড়ার জন্য খুব একটা ক্ষতি হয় নি তার। বরং ভালবাসার প্রতি বিশ্বাস, শ্রদ্ধা আরো একধাপ এগিয়ে গেল।
বিকেলের আকাশে রক্তিম আভা স্পষ্ট। চারপাশ হালকা লালচে হয়ে রয়েছে। ছাদের চিলেকোঠার ঘরের পাশেই রাখা দোলনাটায় গুটিসুটি মেরে বসে আছে মিশরাত। স্নিগ্ধর বুকের মধ্যে মাথা গুঁজে দিয়ে চুপটি করে বসে আছে নিচের দিকে তাকিয়ে।
স্নিগ্ধ ও চোখ বন্ধ করে মিশরাতের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে ব্যস্ত।
সামনেই মেঝেতে সাদা পায়রা গুলো গুটি গুটি পায়ে হেঁটে যাচ্ছে।
মিশরাত কিছুক্ষণ আগেই পায়রার দানা গুলো ছিটিয়ে দিয়েছে ছাদের মেঝেতে।
-” মিশরাত!”
– ” হুম!”
-” ধন্যবাদ আমার জীবনটাকে নতুন করে সাজিয়ে দেয়ার জন্য। নতুন করে আমাকে ভালোবাসার জন্য।”
স্নিগ্ধর কথায় মাথা তুলে তাকায় মিশরাত।
– ” ভালোবাসি প্রিয়! আজীবন ভালোবাসব।”
– ” আমিও ভালোবাসি প্রিয়তমা!”
কানে হেডফোন গুঁজে দিয়ে গুনগুন করতে করতে ছাদের দরজা দিয়ে প্রবেশ করতেই আমিশার চোখ পড়ে দোলনার দিকে।
মিশরাত আর স্নিগ্ধকে একত্রে দেখে আর ভেতরে প্রবেশ করে না আমিশা।
পাখা ঝাপটানোর আওয়াজ পেতেই খেয়াল করে রেলিং এর উপর শুভ্র রঙের পায়রা দুটো একত্রে ডাকাডাকি আর খুনসুটিতে মেতে উঠেছে। সেগুলোর দিকে চোখ পড়তেই আনমনেই হেসে দিল সে।
মানুষ থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি প্রাণীই একে অপরের প্রেমে পড়ে। সেটা হোক কোনো মানুষ না হোক কোনো পাখি! ভালোবাসা নামক বস্তুটা সর্বত্র বিরাজমান।
আনমনে তাকিয়েই মৃদু গলায় আমিশা বলে উঠলো , #প্রেম_পায়রা ।
মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে নানা ধরনের ঘটে থাকে। তবে দুজন ভালোবাসার মানুষের মাঝেও ভুল বোঝাবুঝি, রাগারাগী হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এসবের উর্ধ্বে গিয়ে দিনশেষে সেই ভালোবাসার মানুষটাকে বিশ্বাস করে তাকে আকড়ে ধরে রাখা উচিত। এভাবেই বেঁচে থাকুক সব ভালোবাসা।
সমাপ্ত।
(