প্রেমাধিকার💝[ The_Egoistic_Love ]
[ 2nd capter ]
#Written By: Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr[ Mêhèr ]
Part: 21………….
ওদিকে আরিয়া পাগলের মত ছুটে যায় গাড়ির পিছনে কিন্তু পায় না ওদের ঠিক তখনি একটা গাড়ি আরিয়াকে ধাক্কা মারে। আর আরিয়া ওখানেই পরে যায়…….
,
,
,
,
,
,
,
,
,,আরিয়ার মাথায় ব্যান্ডেজ করা। বার বার মাথাটা এদিক ওদিক করছে। বন্ধ চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরছে। বড্ড কষ্ট হচ্ছে ঠিক তখনি আরিয়া নিজের মাথায় কারো হাত অনুভব করে। কেউ ওর মাথায় বিলি কেটে দিচ্ছে। আরিয়া তার হাতটা মাথায় পেয়ে কিছুটা শান্ত হয়ে যায়। তারপর নিজের হাত দিয়ে কিছু খোজার চেষ্টা করলে চিরচেনা একটা হাতের ছোয়া আরিয়ার হাত টা নিজের হাতে আবদ্ধ করে। আরিয়াও হাতটা আকড়ে ধরে.
আরিয়া: ইশাদ..ইশাদ তুই এসেছিস। [ কান্না করে দেয় ]
[হমম…. ইশাদের গাড়ির সাথেই আরিয়ার ধাক্কা লাগে। ইশাদ রাজের পিছনেই আসছিল। আর ইশাদ ওকে নিয়ে আসে ]
ইশাদ আরিয়ার এই অবস্থা দেখে মুচকি হাসে।
ইশাদ: আমাকে এত বড় ধোকা দিতে কি তোর একবারো বুক কাপলো না। একবার তো বলে দেখতি সবটা। তারপর না হয় বাকিটা..
আরিয়া ঘোরের মধ্যেই হুহু করে কেদে দেয়। তারপর উঠে ইশাদকে জড়িয়ে ধরে।
আরিয়া: নিজের বোঝা তোর উপর চাপাতে চায়নিরে। আর রাজ যা করেছে তারপর কোন মুখে দাড়াতাম।
ইশাদ: তুই ভাবলি কি করে ইশাদের কাছে তার আরি কখনো বোঝা হবে। তুই এটা একদম ঠিক করিসনি। [ আরিয়ার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে ]
আরিয়া: কি করব রাজের জন্য এতটা তিক্ততা মনে সৃষ্টি হয়েছিল যাতে আর কিছু বোঝার ক্ষমতা আমার ছিল না।
ইশাদ: ঠিক আছে এখন আর রাজ তোকে কিছু বলবে না। একটা বার ইশাদের উপর ভরসা করেই দেখ।
আরিয়া: রাজ আমার মেয়েকে নিয়ে গেছে ইশাদ…. প্লিজ ওকে আমার কাছে এনে দে। আমি আইরাকে ছাড়া বাচব না। আমার আর কিচ্ছু চাইনা। তুই শুধু আমার আইরাকে এনে দে….. [ কাদতে কাদতে ]
ইশাদ: হুমম দেব। তুই যা যা চাইবি তাই দেব। কেউ আর তোকে কোনোকিছুর জন্য বাধ্য করবে না। তুই যাবি তোর মেয়ের কাছে….
আরিয়া: হুমম….
ইশাদ: চল….
এবার আরিয়া চোখ মেলে তাকায়। আজ ৫ বছর পর দেখছে ইশাদকে। সামান্য চেহারার কোনো পরিবর্তন হয়নি। বরং আরো বেশি উজ্জ্বলতা ফুটে উঠেছে ইশাদের চেহারায়। অন্যরকম এক স্নিগ্ধতা ইশাদের মুখে। ওকে দেখে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ও। আরিয়া নিজের হাতটা ইশাদের মুখে দেয় ওকে স্পর্শ করে। তখনি ইশাদের পাশে একটা মেয়েকে দেখতে পায়। আরিয়া জিজ্ঞাসুর দৃষ্টিতে তাকায়..
ইশাদ: ও মায়রা..এই নানা না আমার গার্লফ্রেন্ড না আমার বউ ওনলি আমার কলিগ। আমাকে রিসিভ করার জন্য এসেছে।
আয়রা: হুমম.
ইশাদ: চল তোর মেয়ের কাছে।
আরিয়া: কিন্তু ও কোথায় আছে….???
ইশাদ: আমি জানি চল…
তারপর আরিয়াকে নিয়ে রাজের বাড়িতে যায় যেখানে আইরাকে নিয়ে গেছে রাজ। আর সেটা কোথায় এটা সাদই ইশাদকে জানিয়েছে.
,
,
,
,
,
,
,,
,
রাজের কোনো খুশির সীমা ছিল না নিজের মেয়েকে পেয়ে। কিন্তু ইশাদ আর আরিয়াকে দেখে ওর মুখের খুশিটা নিমিষেই বিষাধে পরিনত হয়। রাজ ওদের দেখে আইরাকে স্টাফের কাছে দিয়ে ভিতরে ডোকার আগেই আইরাকে ওর এক স্টাফের সাথে বাইরে পাঠায়।
রাজ: তোমরা এখানে…… 😡😡😡
ইশাদ: আরিয়া নিজের মেয়ের কাছে এসেছে। যাকে ও জন্ম দিয়েছে। এতদিন যাকে লালন পালন করেছে তাকে নিয়ে যেতে এসেছে।
রাজ: আমি ওকে দেব না। ও আমার মেয়ে।
ইশাদ: কেন রেখে দেবে। অনেক তো জালিয়েছ আর কত জালাবে। সো আইরাকে দিয়ে দেও। আর যাই হোক আইরার উপর তোমার চেয়ে অনেক বেশি অধিকার আরিয়ার।
রাজ: আমি কিছু শুনতে চাইনা আমি আইরাকে দেব না। তাছাড়া আমি ওর বাবা তাই আইরার উপর আমার অধিকার কম নেই।
ইশাদ: ভুলে যাবেন না….. আপনি কি কি করেছেন। আমাকে মারার চেষ্টা করেছেন। আরিয়াকে জোর করে বিয়ে করেছেন। এত সব কিছু করার পরও লজ্জা করেনা আপনার।
রাজ: তাই তো সেদিন যেতে দিয়েছিলাম কেন যায়নি তোমার কাছে…..
এবার আরিয়া মুখ খুলল…..
আরিয়া: কারন আমি চাইনি আপনার দেওয়া বোঝাটা আমি ইশাদের ঘাড়ে চাপাই।
রাজ: মানে তুমি যাওয়ার সময় জানতে তুমি প্রেগন্যান্ট।
আরিয়া: হুমম জানতাম। সেদিন আপনি চলে যাওয়ার পর ডক্টর ফোন করে আমাকে জানায়। আর আমি সেটা আপনাকে জানাতে চায়নি তাই ওনাকে বলতে নিষেধ করি।
রাজ: তাহলে আমাকে জানালে না কেন???আর ইশাদের কাছেই বা ফিরলে না কেন???
আরিয়া: ওইযে বললাম আপনার বোঝা ইশাদের উপর চাপাতে চাইনি। আর তাছাড়া কোনো প্রতারকের চিহ্ন রাখতে চায়নি নিজের শরীরে……
রাজ: মানে……
আরিয়া: সেদিন আমি ইশাদের কাছে যায়নি ঠীকি। অন্য কোথাও গিয়েছিলাম। কারন আমি নিজের প্রেগ্ন্যাসির জন্য দোটানায় ছিলাম কি করব। কারন আপনার মত মানুষের সাথে থাকা সম্ভব না। আর না ইশাদের লাইফ নষ্ট করার। তাই…..
রাজ: তাই…..তাই কি???
আরিয়া: তাই চলে গিয়েছিলাম। অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম বাচ্চাটা রাখব না। সমস্ত ব্যাবস্থাও করেছিলাম।
রাজ: তুমি আইরাকে এবোট……
আরিয়া: হুমম…….
তখনি রাজ আরিয়াকে থাপ্পড় মারতে ধরে। কিন্তু ইশাদ রাজের হাত ধরে ফেলে……
ইশাদ: ভুলে যাবেন না মি. রাজ আরিয়া আজ একা নেই ইশাদ আছে ওর সাথে। অনেক কিছু সহ্য করেছে ও। অনেক মেরেছেন আর না। এই হাত যদি আরিয়ার গায়ে উঠে সেটা ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা ইশাদ রাখে….. আর এমনিতে ও এবোট করতে গিয়েছিল কিন্তু করেনি।
আরিয়া: গিয়েছিলাম ঠিকি। কিন্তু যখন হাসপাতালে গেলাম তখন দেখলাম একজন মেয়ে প্রচুর কাদছে কারন তার সন্তান নেই। তখন আমার মনে হলো আল্লাহ না চাইতেই আমাকে দিয়েছেন। ওনারা ত চেয়েও পাচ্ছে না। সেটা যতই রাজের রক্ত হোক না কেন আমি তো ওর মা। কিভাবে মারব ওকে। ঠিক তখনি নিজের মাতৃত্ব কাজ করেছিল। পারিনি নিজের সন্তানকে মারতে। এই প্রথম হার মেনেছিলাম আমি নিজের সন্তাননের জন্য। কিন্তু তার মানে এটা নয় আমি আপনার মত একজন লোকের সাথে থাকব। আমি শুধু এটাই দেখাতে চেয়েছি একটা মেয়ে চাইলে নিজের সন্তানকে মানুষ করতে পারে। তার জন্য কোনো পুরুষের দরকার হয় না।
ইশাদ: আর আরিয়া তা করেও দেখিয়েছে। আরিয়া একা একটা মেয়ে হয়ে নিজের সন্তানকে লালন পালন করেছে। ওকে বড় করেছে। কিন্ত আইরার অসুখ হয়ে আপনার কাছে আসতে বাধ্য হয়েছে। যদি না ওর বাবা মার খবর দিতেন। এখানেও একটা জঘন্য কাজ করেছেন আপনি।
রাজ:………
ইশাদ: আচ্ছা আপনি নিজেই বলুন। এমন কি একটা কাজ করেছেন যাতে আপনি নিজেকে সঠিক প্রমান করতে পারেন। সব সময় অন্যায় করেছেন। যে মেয়েটা নিজের সন্তানের জন্য পাগল হয়ে গেছে আপনি তার থেকে সেই বাচ্চাটাকে আলাদা করেছেন কি বলে কেন সে তার মেয়ের কথা আপনাকে বলেনি তাইত। কেন বলবে বলুনতো??? আপনার এমন কি গ্যারান্টি ছিল মি. রাজ যে আপনি আরিয়ার থেকে ওকে কেড়ে নিতেন না। দেখুন না সেই সেটাই হলো আপনি আরিয়ার থেকে ওর বেবিকেতো কেড়েই নিয়ে এসেছেন।
রাজ:………
ইশাদ: You know what mr. Raj…. আপনি নিতান্তই সেলফিস একজন মানুষ যে নিজের কথা ছাড়া কারো কথা চিন্তা করে না। আর তারচেয়েও বড় ক্থা আপনার এসব জঘন্য কাজে আপনার মনে কোনো অনুতাপ নেই। বরং আপনি নিজেকে সঠিক প্রমান করতে পুরো দোষটা অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন। আরিয়া ওর বেবির কথা আপনাকে বলেনি আপনি তাই ওর থেকে ওর বেবি কেড়ে নিয়েছেন অথচ একটা বার নিজের অন্যায়টা দেখেন নি যে আপনার ভয়ে বাধ্য হয়ে ও এইটা করেছে।
রাজ:………
ইশাদ: আরিয়া আপনি জোর করে বিয়ে করে নিজের অধিকার ফলিয়েছেন। আর এখন বাবা হওয়ার দাবী নিয়ে এসেছেন। আসলে আপনি না কারো স্বামী হওয়ার যোগ্য আর না বাবা।
আরিয়া: ইশাদ এই লোকের সাথে কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। আমার আইরাকে এখান থেকে নিয়ে চল। [ ইশাদকে ঝাকিয়ে ]
ইশাদ: হুমম তুই শান্ত হো। আমরা আইরাকে নিয়েই যাব। তুই তোর মেয়েকে ফিরে পাবি। কিন্তু এই লোকটা যাতে কোনোদিন ওর মুখ দেখতে না পারে তার ব্যবস্থা করব আমি।
রাজ: নাহহহ….. আমি আমার মেয়েকে দেব না।
ইশাদ: তা বললে ত হবে না।
রাজ: দেখ ইশাদ আমি জানি আমি অন্যায় তোমার আর আরিয়ার উপর অনেক অন্যায় করেছি। যার সত্যি কোনো মাফ হয় না। আর এবার যখন আরিয়াকে ফিরে পেয়েছি তখন সত্যি নিজের রাগটা কন্ট্রোল করতে পারিনি। তাই ওরকম একটা জঘন্য কাজ করেছিলাম ভেবেছিলাম ও আমাকে ছেড়ে যাওয়ায় যতটা যন্ত্রণা পেয়েছি তার শোধ নিব। কিন্তু বিশ্বাস করো আইরাকে দেখার পর আমার আর কিছু মনে হয়নি। আমি তো জানতামি না যে আইরা আমার মেয়ে ভেবেছিলাম ও হয়ত তোমার মেয়ে। কিন্তু তারপরেও আইরার উপর রাগতে পারিনি…….
ইশাদ: কি বলতে চাচ্ছেন আইরাকে আরিয়ার চেয়ে বেশি আপনি ভালোবাসেন??
রাজ এবার ইশাদের পায়ের কাছে বসে হাত জোর করে মিনতি করতে লাগল।
রাজ: আমি জানি আমি এখন জোর করেও আইরাকে পাব না। আর বিশ্বাস করো আমি বলছি না আমি আইরাকে আরিয়ার চেয়ে বেশি ভালবাসি। কিন্তু বিশ্বাস করো আমি আইরাকে ভালোবাসি ইশাদ। খুব ভালোবাসি ওকে। প্লিজ ওকে কেড়ে নিও না। [ কাদতে কাদতে ]
ঠিক তখনি আইরা আসে। ও রাজের কাছে যায়। ওকে কাদতে দেখে ও নিজেও ঠোঁট উল্টে কেদে দেয়।
আইরা: তুমি কাদছো কেন সিংচেনের আব্বু। [ রাজের চোখ মুছে ]
রাজ ওকে দেখে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে নেয়।
রাজ: তুই আমার মেয়ে। আমি তোকে কোথাও যেতে দেব না। [ কাদতে কাদতে ]
ফখনি ইশাদ অনেকটা জোর করেই আইরাকে রাজের থেকে সরিয়ে নিয়ে আসে। রাজের বর্তমানে কোনো সেন্স নেই বড্ড পাগলের মত করছে। সাথে আইরাও কাদছে। ওকে আরিয়ার কোলে দেয়। আরিয়া ওকে পেয়ে প্রান ফিরে পায়। অজস্র চমো দেয় ওর মুখে।
রাজ: তোমরা যা শাস্তি দিবে তাই মেনে নিব কিন্তু আইরাকে নিয়ে যেও না। [ আইরার কাছে গেলে ইশাদ ওকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় ]
ইশাদ: একদিন আমিও বলেছিলাম। কিন্তু আপনি শুনেনি। জানোয়ারের মত মেরেছিলেন আমাকে। আজ সময়ের ফেরে আজ আপনি ওই জায়গায়। এবার বুঝেছেন প্রিয় মানুষ হারালে কতটা যন্ত্রণা পাওয়া যায়।
রাজ: আইরাকে প্লিজ নিও না। [ রাজ চিতকার করে কাদছে। এমন অবস্থায় আইরা ভয় পেয়ে কান্না করে মাকে জড়িয়ে ধরে ]
ইশাদ: এবার বুঝবেন হারানোর যন্ত্রনা কি? আপনি না আরিয়ার ভালোবাসা পেয়েছেন আর না পাবেন আপনার মেয়েকে…..চল আরিয়া। [ আরিয়ার হাত ধরে বেড়িয়ে আসে। কিন্তু রাজ বাধা দিলে এবার আর ইশাদ চুপ থাকে না। ও প্রচুর মারে রাজকে। কিন্তু রাজের কিছু বলার অবস্থা নেই। আর সাদ ও কিছু বলতে পারছে না। এটাই যে নিয়তি। কিন্তু সাদ বেশিক্ষন দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। রাজ ক্লান্ত হয়ে পরে সাদ ইশাদকে থামায় ]
সাদ: অনেক হয়েছে মেরে ফেলতে চান।
ইশাদ: রাজকে বলে দিও ও যেন আরিয়ার আর আইরার থেকে দুরে থাকে নাহলে এবার খুব খারাপ হবে।
ওরা চলে যেতে চায়। কিন্তু রাজ তখনো পাগল হয়ে যায় আইরার জন্য। কিন্তু ওরা থামে না। আইরার নাম করতে করতে রাজ জ্ঞান হারায়…… সাদ ওকে নিয়ে দ্রুত ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করে। আরিয়া আর ইশাদ বাড়ি ফিরে যায়। আইরা কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে গেছে।
ইশাদ: চিন্তা করিস না বাচ্চা মেয়ে তাই। কিছুদিন গেলে ভুলে যাবে। ওকে নিয়ে শুইয়ে দে। রাজ আর আসবে না।
আরিয়া মাথা নাড়ে। তারপর মেয়েকে নিয়ে শুয়ে পরে ইশাদের রুমে। ইশাদ রুমে গিয়ে দেখে দুজনেই ঘুমিয়ে আছে। ও দরজা টেনে ওপাশের ঘরে চলে যায়।
,মাঝরাতে রাজের জ্ঞান ফিরলে ও আবার আইরার নাম করে চিতকার করে উঠে। সাদ দৌড়ে ওর কাছে যায়। একমাত্র সাদই আছে এখন ওর লাইফে যে আর যাই হোক ওকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবে না।
সাদ: স্যার শান্ত হোন। এখন আপনি চাইলেও এখন আইরার সাথে দেখা করতে পারবেন না।
রাজ: সাদ আমি অনেক পাপ করেছি। কিন্তু বিশ্বাস করো আমি আমার মেয়েকে সত্যি খুব ভালোবাসি ওকে প্লিজ আমার কাছে নিয়ে এসো।
সাদ: আচ্ছা আচ্ছা স্যার প্লিজ আপনি শান্ত হোন। আমি এনে দিব। তাও শান্ত হোন। তখনি ডাক্তার এসে ওকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেয়।
রাজ: আইরা আমার মেয়ে…. আমার মেয়েকে এনে দেও ইশাদ…. [ রাজ ঘুমিয়ে শান্ত হয়ে পরে। ]
সাদ: কি অদ্ভুত নিয়ম স্যার। একসময় ইশাদ যেখানে ছিলো আজ আপনি সেখানে। শুধু পার্থক্য একটাই সেদিন আপনি ভুল ছিলেন আর আজ ইশাদ সঠিক।
,
,
,
,
,
,
,
কিছুদিন পর……. আরিয়া বাগানে বসে আপনমনে বসে আছে। আইরা ওর নানা নানুর কাছে। ইশাদ ওনাদের নিয়ে এসেছে। আর মেয়ের কথা শুনে ওনারাও রাজের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে……। ইশাদ এসে ওর পাশে বসে। তখনি ইশাদ বলে উঠে…….
ইশাদ: কি ভাবছিস…??
আরিয়া: মানুষের জিবন কত অদ্ভুত। কিছুদিন আগেও আমার সাথে কারো সম্পর্ক ছিল না। নিজের মেয়েকে নিয়ে ভালো ছিলাম। আর কদিন আগেও ভাবতাম রাজ নামের জাহান্নাম থেকে হয়ত বের হতে পারব না। কিন্তু আজ দেখ সবটা অতীত হয়ে তোর পাশে বসে আছি। [ করুন চোখে ইশাদের দিকে তাকিয়ে ]
ইশাদ মুচকি হাসে….
ইশাদ: এর নাম জিবন। যা তোর মত মেয়েকেও বদলে দিল। এরকম রাগী ইগোষ্টিক মেয়েকে শান্ত করে দিল। আচ্ছা তোর কষ্ট হয়নি একাএকা থাকতে।
আরিয়া: হয়নি তা না কিন্তু আইরাকে ভেবে ভুলে গেছি।
ইশাদ: একটা কথা জানিস। তুই আগের মত নেই। কেমন একটা বুড়ি বুড়ি হয়ে গেছিস। [ মজা করে। ভেবেছে আরিয়া রাগ করবে কিন্তু না ইশাদকে অবাক করে আরিয়া হেশে দেয় ]
আরিয়া: আমার ৪ বছরের একটা মেয়ে আছে। তবে তুই অনেকবেশি হ্যান্ডসাম হয়ে গেছিস। আমি তো প্রথমে চিনতেই পারিনি।
ইশাদ: তুই ছিলি না কেউ বকে নি। তাই হয়ত। একটা কথা বলব।
আরিয়া: বল।
ইশাদ: কিছু চাইলে দিবি।
আরিয়া: দেওয়ার মত হলে দিব।
ইশাদ উঠে নিচে হাটু গেড়ে বসে আরিয়ার হাত ধরে। আরিয়া একটু অবাক হয়।
ইশাদ: আমাকে আমার আরি ফিরিয়ে দিবি।
আরিয়া অদ্ভুতভাবে ওর দিকে তাকায়।
আরিয়া: তুই জানিস ইশাদ আমার একটা মেয়ে আছে। কিভাবে বলিস।
ইশাদ: তাতে কি আরি। তোর যা কিছু তা কখনোই আমি আলাদা করে দেখনি। ৫ বছর আগে যদি তুই আমাকে এসে বলতি তখন কি তোকে ছেড়ে দিতাম আর না এখন দিব। তাছাড়া তোর মা বাবাও এটাই চায়। আর আইরাও আমাকে পছন্দ করে।
আরিয়া: এখনো কেন??
ইশাদ: জানিনা তবে চাই তোকে। দিবি আমাকে। তুই কি একটু ভাল থাকতে চাস না……
আরিয়া এবার ইশাদকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়…..
আরিয়া: চাই। ভালো থাকতে চাই। আমি আমার আগের লাইফটা ফিরে পেতে চাই ইশাদ। কিন্তু তার জন্য তোকে ঠকতে হবে।
ইশাদ: তুই আমার সবচেয়ে বড় জয় আরি।
আরিয়া: এত ভালো কেন তুই? কেন এত কিছুর পরও চাস। তুই আমার চেয়েও….. [ আর বলতে দেয় না ]
ইশাদ: তোর চেয়ে কাউকে না তোকে চাই।
আরিয়া: হুমম…….
,
,
,
,
,
,
,,
এ কয়দিনে রাজ এসেছে ঠিকি কিন্তু আইরার দেখা পায়নি। রাজ পাগল হয়ে আইরাকে খুজতে থাকে। কিন্তু কথায় আছে না একসময় রাজ যেটা অন্যদের দিয়েছে আজ সেটাই হচ্ছে ওর সাথে। আইরার দেখা না পেয়ে মানসিক চাপে ওর অবস্থা কাহিন হয়ে পরেছে। আইনি ব্যবস্থাও লাভ হবে না। কারন আরিয়া ওর মা। তাই অধিকার ওরি আগে।
বলতে গেলে ওর অবস্থা ততটা ভালো না। মাঝরাতের দিকে সাদ আসে রাজের কাছে।
সাদ: এভাবে আর কতদিন স্যার। আপনি কি নিজেকে এবার শেষ করে দিবেন।
রাজ ইজি চেয়ারে বসে ছিল।
রাজ: বেচে থেকে লাভ কি বলোতো সাদ। জোর করে চাওয়া ভালোবাসাটা হারিয়ে গেল। সেটা ভুলতে মায়ের কাছে গিয়েছি সেও ছেড়ে চলে গেল আমাকে এতিম করে। আরিয়াকে তো আমি ফিরে আসতে বলিনি কিন্তু যে কারনেই হোক ও ফিরেছে। ফিরেছে তো আবার চলে গেল। তাতেও আফসোস নেই কিন্তু আমার মেয়ে বাবা হয়ে কি একবার ও নিজের মেয়েকে পাব না। আমি যোগ্য স্বামী হতে পারিনি। একটা এতিম ছেলের জিবন প্রায় শেষ করে দিয়েছি তাই বলে হয়ত এত শাস্তি পাচ্ছি।
সাদ:……
রাজ: তবে জানো কি সাদ। আমি যদি মরেও যাই তবে তার আগে প্লিজ তুমি ওদের একবার রাজি করাও যাতে একবার আমার মেয়েকে দেখতে দেয়। আমি আর কিছু চাই না। তবে আমি জানি আরিয়াকে আমি সুখি করতে পারিনি কিন্তু ইশাদ পারবে। আমার মেয়েকেও ভালো রাখবে। তবুও আমি আমার মেয়েকে চাই। একবারের জন্য হলেও আমার বুকে ঘুম পাড়াতে চাই। আমি জঘন্য হলেও আমি ভালো বাবা হতে চাই। [ কথা গুলো বলছে আর ওর চোখ গড়িয়ে পানি পরছে ]
সাদ: আপনি ঘুমান স্যার…….
[ দরজা আটকে চলে আসে। ]
সাদ: আমি এখন কিভাবে বলব স্যার। ওনারা বিয়ে করছে আর তারপর আইরাকে নিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যাবে। জানিনা যখন জানবেন তখন কি হবে? যার জন্য সবাই কাদে তাকেও একদিন কাদতে হয়।
[ সাদ আজ নিজেও কাদছে ]
সাদ: আপনাকে দেখে কাজি নজরুলের একটা কথা মনে পরে গেল….
যুগের ধর্ম এই…
পীড়ন করিলে…
সে পীড়ন এসে…
পীড়া দেবে তোমাকেই।।।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
[ বাকিটা পরের পর্বে জানবেন ]
দেখুন অনেকেই রাজ, ইশাদ এই ক্যারেক্টর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আরে ওরা যেই চরিত্র করুক না কেন সেটা আমি লিখেছি। তাই আমি জানি কার অন্যায় কতটুকু। আমি যদি রাজের সাপোর্ট টানতে চাইতাম তাহলে ইশাদকে যেকোনো ভাবে নেগেটিভ চরিত্র দিয়ে রাজকে হিরো বানাতেই পারতাম। আমি গল্পের মাঝে গল্পের কাহিনী শেষ করব নাকি। রাজ যখন অন্যায় করেছে তার শাস্তি ত পাবেই।
তাই বলি গল্প শেষ করে গল্পের কাহিনী ব্যাখ্যা করবেন। অন্তত আমার গল্পে।
আর হা এখন আবার রাজের জন্য অনেক কথা হবে। আগেই বলছি গল্পের কাহিনী শেষ করবেন। কাল #প্রেমাধিকারের শেষ পর্ব& আমার নতুন গল্প #💙💙 গল্পটা শুরু করা হবে।
ছি।