#প্রেমের_মরা_জলে_ডুবে
#তানিয়া
পর্ব:১৯
তিমিরকে যতই দেখছে ততই অবাক হচ্ছে শুভ্র। সহজ সাবলীল ব্যবহারের মেয়েটা হঠাৎ এমন ত্যাঁদড় আর জেদী কি করে হলো শুভ্র সেটা বুঝলো না।ক্লাসে আসলে সারাক্ষণ নজর নিচে রাখে, প্রশ্ন করলে নিচু হয়ে উত্তর দেয়।বাসায় থাকলেও খুব একটা সামনে যায় না শুভ্রর।শুভ্র বিভিন্ন ভাবে তিমিরের সাথে কথা বলার চেষ্টা করে বা আকারে ইঙ্গিত দেয় কিন্তু তিমির যেন দেখেও সেটা দেখে না।আগে শুভ্র কোনো কাজ করলে তিমির সেটা ফানি হিসেবে নিত বা নিজেও ফান করতো কিন্তু এখন সবটা উল্টো।
জিন্নাহ সাহেব অফিস কাজে বিজি থাকায় নিপা সবাইকে খেতে দিলো।শুভ্র বসার পর পাশের সিটটা সে তিমিরের জন্য রাখলো।শুভা আর তিমির হেসে হেসে টেবিলের কাছে আসলো।শুভা ভাই য়ের পাশে বসতে যেতে শুভ্র চোখ বড় করে তাকাল শুভা তাড়াতাড়ি সরে অন্য সিটে বসলো।তিমির শুভ্রর ইঙ্গিত বুঝতে পারলো সেও চালাকি করে শুভার পাশে গিয়ে বসলো।শুভ্র হাত ভাজ করে চাইলো তিমিরের পানে।ইচ্ছে করছে উঠে গিয়ে ঠাস করে লাগিয়ে দিতে কিন্তু কি বলবে প্রতিউত্তরে।তাই নিশ্চুপ হয়ে চাইলো তিমিরের দিকে তিমির শুভ্রকে তোয়াক্কা না করে খাওয়ায় মন দিলো।নিপা সব ঠিক করে দিয়ে বসার রুমে গিয়ে টিভি দেখা শুরু করলো।শুভা আর তিমির এটা ওটা নিয়ে কথা বলছে।শুভ্র মন দিয়ে কথা শুনছে আর খাচ্ছে। তিমির কোণা চোখে শুভ্রকে দেখে শুভার সাথে সোবহানের আলাপ নিয়ে পড়লো।শুভ্র বুঝলো না সোবহান ছেলেটা কে তবে তাদের কথোপকথনে বুঝলো সেদিন তিমির যে ছেলের সাথে কথা বলছিল তাকে নিয়ে দুজনে আলাপ করছে।শুভ্র ভাতের পাতে হাত শক্ত করে দুজনের কথা শুনছে।হুট করে শুভ্র হুংকার ছাড়লো।
খাওয়ার সময় এত কথা কীসের, শুভা তুই তো আগে কম কথা বলতি।খাওয়ার সময় চুপ থাকতে হয় জানিস না।এত কথা কীসের? তাছাড়া কোথাকার কোন ছেলে নিয়ে এত গল্প কীসের, নীলকে কি জানিয়ে দিব সোবহান নাকি সাবধান কাকে নিয়ে তোর কৌতুহলের কথাটা?
শুভা ভাই য়ের ধমক খেয়ে চুপ হলো ঠিকই তবে নীলের কথা শুনে অসহায় হয়ে তাকালো ভাই য়ের দিকে।কথার প্যাচে ফেলে যে শুভ্র তাদের আলাপ বন্ধ করতে চাইছে এটা যে কেউ বুঝবেই, তিমির তো আরো একধাপ এগিয়ে। মনে মনে হাসলোসে,এ পুরুষ বলেছিল তাকে নিয়ে মনে নাকি ফিলিংস নাই তবে জেলাস আছে বেশ বোঝায় যাচ্ছে। এটাও কম কীসে?ধীরে ধীরে ফিল থেকে প্রেম তারপর ভালোবাসা।
ক্যাম্পাসের মাঠে তিমির আর সোবহান কথা বলছে।সোবহান তার টেস্ট পেপারগুলো তিমিরকে দিতে এসেছে। তিমিরের যা টাকা আসে সেটা দিয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ আর এটা ওটা কিনতে কিনতে চলে যায় তাই পুরোনো টেস্ট বুক পেলে সেগুলো দিয়ে পড়াগুলো রিভিশন করতে পারবে।শুভা তিমিরকে বলেছে নিজের বইগুলো ভাগ করে পড়বে কিন্তু তিমির নারাজ হলো।তাছাড়া দুজনে পরীক্ষার্থী হওয়ায় এক বই দিয়ে পড়া যাবে না তাই তিমির সোবহানকে কথায় কথায় বইয়ের কথা বলতে সোবহান দেরী না করে পরদিনই কলেজে বইগুলো নিয়ে গেলো।তিমির সোবহানকে দেখে বিস্ময় হলো।এ ছেলেকে দেখি কিছুতেই বিশ্বাস করা যায় না কখন না জানি ঘরে যায়।তিমির ভয়ে আছে যদি কোনোভাবে শুভ্রর নজরে পড়ে তবে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।
আপনি কলেজে চলে এলেন কেনো,আমি টিউশনে গেলে না হয় দিতেন?
অবশ্যই দিতে পারতাম তবে সেখানে গেলে হয়তো দেখা যেতো তুমি তাড়াহুড়ো করে চলে আসবে কথা বলতে পারবে না তাই আমি নিজেই তোমার জন্য নিয়ে এলাম।তাছাড়া এখন তো অফ পিরিয়ড তাই কথা বলা যাবে।তুমি এমন করে অস্থির হচ্ছো কেনো,মনে হচ্ছে কাউকে খুজছো?
আসলে আশপাশে আমার বান্ধবীরা রয়েছে তারা কি না কি ভাববে তাই।আপনি আসুন?
আরে এমন করছো কেনো, এখনো তো সময় আছে?
তিমির পারছেনা এ ছেলেকে উষ্ঠা মেরে বিদায় করতে।কিন্তু বইগুলো দরকার তাই মুখ খাতিরে কিছু বলতেও পারলো না।শুভা আসছে। শুভাকে দেখে তিমিরের ধড়ে পানি আসলো।
শুভা তুই না বলছিলি কোন একটা পড়া স্যার থেকে বুঝে নিবি।চল তাড়াতাড়ি পিরিয়ড শেষ হলে তো স্যার ক্লাসে চলে যাবে।আচ্ছা আমি আসি ঠিক আছে?
শুভা কিছু বুঝলো না।আসার সাথে সাথে তিমির যেভাবে কথা বললো সব মাথার ওপরে গেলো।শুভাকে তিমির সোবহানের বিষয়টা বললো। শুভা তো হাসতে ব্যস্ত।তিমির ভাবছে টিউশনে গেলে না জানি সেখানে আবার কি করে?
টিউশন শেষ করেই তিমির গেইটের কাছে আসতে সোবহান পেছন থেকে ডাক দিলো।তিমির চোখ বন্ধ করে নিঃশ্বাস নিলো।নাহ এ ছেলে তাকে শান্তিতে থাকতে দিবে না।আজ ওকে কিছু একটা বলতেই হবে।
কি তিমির আমার সাথে দেখা না করে চলে যাচ্ছো যে?
সোবহান আপনাকে আগেও বলেছি আমার বাসায় অনেক কাজ থাকে।সময় নষ্ট করার মতো সময় হাতে থাকে না।সামনে পরীক্ষা, বিভিন্ন পড়া নোট করা, সেগুলো রিভিশন করা কাজ তো কম না।
হুমম বুঝলাম তবে একটু সময় আপনজনের কাজে ব্যয় করলে খারাপ হয় না?
ওমা আপনি আমার আপনজন কখন হলেন শুনি?তাছাড়া এতদিন আপানকে একটা সত্যি বলিনি শুধু আপনাকে কেনো কাউকে বলিনি।আমি বিবাহিত।আমার হাসবেন্ড কলেজের একজন ইংরেজি প্রফেসর।বুঝলেন আমার আপনজন শুধু আমার জামাই আর আমার পরিবার।তারা ছাড়া আর কাউকে আপাতত খুব বেশি আপন ভাবতে পারছিনা।আশা করি আমাকে এরপর আর বিরক্ত না করলেও চলবে।
তিমির দ্রুত পা ফেলে চলে গেলো।সোবহান তিমিরের বিয়ের কথা শুনে মুখটা কালো করে ফেললো।আর তিমির সোবহানকে নজর রাখলো একজোড়া চোখ, সেই চোখে অগ্নি ধপধপ করছিলো।
তিমিরর সোবহানের বিষয়টা শুভ্রকে বেশ রাগান্বিত করলো।তাছাড়া তিমিরের আশেপাশে সোবহানের উপস্থিতি শুভ্রকে অনেকটা জ্বলাতে শুরু করলো।বলতে গেলে তিমির অন্য কোনো ছেলের সাথে হেসে কথা বললেই শুভ্র জেলাস ফিল করছে।তাছাড়া তিমিরও ঐ ছেলেকে কেনো এত প্রায়োরিটি দিচ্ছে শুভ্র বুঝলো না।সেদিন রাস্তায় দেখার পর থেকে শুভ্র আড়াল থেকে তিমিরকে ফলো করে।যতক্ষণ তিমির বাইরে থাকে ততক্ষণ সে গাড়ি নিয়ে লুকিয়ে থাকে।কলেজে সোবহানের উপস্থিতি,মাঝরাস্তায় সোবহানের সাথে কথা বলা সবকিছু দেখে শুভ্রর রাগ সপ্তম আকাশে বিচরণ করছে।এ মুহুর্তে নিজেকে সংযত রাখা বেশ কঠিন।গাড়ি নিয়ে সে তিমিরের পেছনে এগিয়ে গেলো।কিছুটা এগোতে তিমিরের পাশ ঘেঁষে দাঁড়ালো।তিমির আচানক নিজের পাশে গাড়ির হর্ণ শুনে পাশ ফিরে তাকাতে দেখলো শুভ্র অগ্নি দৃষ্টি নিয়ে তাকে চেয়ে আছে। তিমির শুভ্রর দৃষ্টি দেখে ভয় পেলো কিন্তু উপরে ভাব নিলো যাতে তার কিছুই যায় আসে না।শুভ্র গম্ভীর স্বরে বললো,
উঠে বসো তিমির?
তিমির না বলতে চাইলো কিন্তু শুভ্রর এ দৃষ্টি দেখে সেটা আটকে নিলো । তিমির এও বুঝলো না হঠাৎ শুভ্র এখানে কি করছে?
বিকেল বেলা লেকের পাড়টা নির্জন নির্জীব থাকে।তাছাড়া গ্রাম কাছাকাছি এলাকা হওয়াতে তেমন মানুষ থাকে না।তিমির বুঝলো না শুভ্র তাকে এখানে কেনো নিয়ে এসেছে?সন্ধ্যা প্রায়ই হতে চললো,শুভ্র না কথা বলছে আর না ফেরার জন্য উঠছে।এদিকে তিমির বেশ বিরক্ত হচ্ছে। সন্ধ্যায় চা খাওয়া তার অভ্যাস অথচ শুভ্রর জন্য সে চাও খেতে পারছেনা।শুভ্র আসলে কি চাইছে তিমির আন্দাজও করতে পারছেনা।
কি হলো আপনি আমাকে হঠাৎ এখানে আনলেন কেনো?তাছাড়া এমন নিরব এলাকায় আমার ভয়ও লাগছে।কিছু বলার থাকলে বলুন নাহলে বাসায় চলুন আমার ভালো লাগছে না?
তিমির শুভ্রর দিকে চেয়ে কথা বললো।শুভ্র লেকর পানির দিকে তাকিয়ে আছে। তিমিরের মেজাজ খারাপ হলো।সে বসা থেকে উঠতেই শুভ্র তিমিরের হাত টান দিয়ে তিমিরকে বসিয়ে দিলো।হাতটা শক্ত করে ধরে তিমিরের দিকে তাকালো।চোখ গুলো থেকে যেন আগুন ঠিকরে পড়ছে।তিমির হাত ছাড়ার চেষ্টা করছে।
খুব তো বাড় বেড়েছে দেখছি তোমার? এখন আর আমাকে ভালো লাগে না তাই না?ঐ ছেলের সাথে তো দেখছি ভালোই খাপ খাওয়াতে শিখেছো,তা পছন্দ হয়েছে নাকি ওকে?
শুভ্র? ফালতু কথা বলবেন না।ওর সাথে অযথা বাজে ইঙ্গিত দিচ্ছেন কেনো?ওনি মানুষ হিসেবে ভালো, তাছাড়া আমাকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করছেন।ব্যস এতটুকুই।
তাই নাকি। তাহলে টিউশন শেষে ওর সাথে রাস্তায় দাড়িয়ে হেসে হেসে কথা বলা,কলেজে ডেকে নিয়ে গল্প করা এসব কি?
দেখুন আপনাকে সব বিষয়ে কৈফিয়ত দিতে আমি বাধ্য নই। বড় কথা আপনি নিজেই বলেছেন আমাকে নিয়ে আপনার কোনো অনুভূতি নেই, আমার প্রতি ভালোবাসা নেই শুধু আমি জোর করে বিয়ে করেছি বলে আমাকে মানতে হচ্ছে, আমার সাথে মানিয়ে নিতে হচ্ছে। করুনাবশত আমার প্রতি দয়া বেড়েছে জাস্ট এগুলো। সারাজীবন আপনার কাছ থেকে দয়া দিয়ে থাকলেও সেটা আমার পক্ষে নেওয়া সম্ভব নাও হতে পারে।আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবার আপানকে মুক্ত করবো।অযথা এ টানাপোড়েন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা দরকার কি?আপনি বরং আমাকে ছেড়ে দিন।আগের মতো লাইফ লিড করুন।দেখবেন সময়ের সাথে কেউ না কেউ একজন আবারও আপনার জীবনে আসবে যে কিনা আপনার মনমতো হবে।আমাকে ছাড়ুন এভাবে দয়া দাক্ষিন্য নিয়ে আর থাকতে ভালো লাগছে না।ছোট থেকে অনেক দয়া নিয়ে বেঁচেছি আর না এবার অন্তত একটু সত্যি ্কারের ভালোবাসা চাই যেখানে থাকবে না করুনা থাকবে না অপমান।
তিমির প্রথম ্দিকে শক্ত গলায় কথা বললেও শেষের কথাগুলোতে তার গলা ধরে এসেছে।চোখে পানি আসছে কিন্তু সেটাকে আটকে রাখলো তীব্র মনের জোর নিয়ে।
বাহ্ এতদিন যে মেয়ে আমার পাশে থাকার জন্য এতবড় রিস্ক নিয়ে কাজ করলো,আামকে নিয়ে সোৎসাহে দিন পার করতো,আমার অনুমতি ছাড়াই আমাকে স্পর্শ করতো সে কিনা আজ আমাকে বলছে ছেড়ে দিতে?কেনো ছেড়ে দিলে তোমার ঐ সোবহান নাকি কি বলে ওর কাছে যাবে? ও এখনো অবুঝ ছেলে, জানে না জীবন কেমন, আবেগে পড়ে তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছে কিন্তু তুমি তো তা নও তাহলে তোমার ভেতর এত প্রেম এলো কোথা থেকে শুনি?
শুভ্র মুখ সংযত করে কথা বলুন।আপনার মুখ থেকে এমন কুৎসিত কথা শুনতে ভালো লাগছে না।এটা আমার পার্সোনাল লাইফ আমি কি করব না করব আপনাকে বলবো না।তাছাড়া আপনি তো আর অন্য পুরুষদের মতো নন,আপনার মনে না আছে দয়া না আছে ভালোবাসা?আপনি একজন নিষ্ঠুর আট পাথরের মন নিয়ে গঠিত পুরুষ। আপনার কাছ থেকে যাই হোক অন্তত এসব আশা করা যায় না।বরাবরের মতো আপনি আমাকে শুধু আঘাতই করেছেন কখনো জানতে চাননি সে আঘাতে আমি কতটা আহত হয়েছি।
তিমির কান্না মাখা কণ্ঠে আরো কিছু বলতে চাইলো কিন্তু বলতে পারলো না।এতদিনে জমে থাকা সব রাগ চোখের পানি হয়ে বেরিয়ে এলো।তিমির মুখ ঢেকে কান্না করছে। শুভ্র তিমিরের অভিযোগ গুলো শুনলো এবং উপলব্ধি করলো তিমিরের কান্না তার বুকে বিঁধছে।কি জানি কষ্ট হলো শুভ্র তিমিরকে মুখটা কাছে নিয়ে গভীর চুম্বনে লিপ্ত হলো।খুব রোমাঞ্চ চুম্বনে ভরিয়ে দিলো তিমিরের ঠোঁট জোড়া, ভেঙে দিলো অভিমানের পাহাড়কে।তিমির কিছু বললো না, আটকালো না,নিজেকে ছাড়ালো না শুধু কান্নার ঝাপটাকে কমিয়ে এনে বিস্মিত হলো।
বেশ সময় পর শুভ্র তিমিরকে ছাড়লো।দুজনে অন্যদিকে মুখ ফেরালো।এ আবছায়া আলো আধারে দুজনের মাঝে কিছু সময়ে যা ঘটলো তাতে লজ্জা যেন দুজনকে আষ্টেপৃষ্ঠে ঘিরে ধরলো।শুভ্র তিমিরের হাত ধরে তাকে গাড়িতে নিয়ে গেলো।গাড়িতে থাকাকালীন দুজনে কোনো কথা বললো না।তিমির তো শুভ্রর দিকে তাকানোর মতো শক্তিটা হারিয়ে ফেললো।নিজে যখন শুভ্রকে চুমু খেয়েছিল তখনো এত লজ্জা তাকে পায় নি তাহলে আজ এত লজ্জা কোথা হতে আসলো।তিমির পারছেনা তাড়াতাড়ি শুভ্র থেকে লুকোতে কিন্তু এ মাঝপথে কোথায় যাবে?বাড়িতে এসে গাড়ি থেকে নামতেই শুভ্র তিমিরের নাম ধরে ডাক দিলো,
শোনো শুভা ঘুমিয়ে পড়লে আমার রুমে আসবে কথদ আছে?
তিমির কি শুনলো কে জানে দৌড়ে পালালো শুভ্রর কাছ থেকে।আপাতত শুভ্র থেকে নিজেকে আড়াল করতে হবে।শুভ্র তিমিরকে আড়চোখে দেখছিল আর যখন তিমির দৌড় দিলো শুভ্র হেসে গাড়ি পার্কিং করে নিজের রুমে দিকে গেলো।
রাতে বিছানায় বসে তিমির চোখ বন্ধ করে সন্ধ্যার ঘটে যাওয়া ঘটনাকে চোখের সামনে আনার চেষ্টা করছে।যতবার মনে পড়ছে লজ্জাবতী গাছের মতো নুইয়ে পড়ছে।
খাবার টেবিলে তিমির আগে এসে বসলো।শুভ্রকে আশেপাশে না দেখে চিন্তা করলো তাড়াতাড়ি খেয়ে পালাবে।শুভা পাশে বসেছিল।তিমির এদিক ওদিক তাকাতে আলাদিনের জ্বিনের মতো শুভ্র তিমিরের পেছনে এসে দাড়ালো।তিমিরের চেয়ারে হাত রেখে শুভার সাথে কথা বলছে।তিমির মূর্তির মতো বসে আছে।শুভ্রর গলার স্বর তার সর্বাঙ্গে কাটা ফুটাচ্ছে।
শুভা আজ বড় গরম লাগছে তুই ঐ সীটে গিয়ে বস আমি পাখার নিচে বসি।শুভা ভাই য়ের কথাকে অমান্য না করে তিমিরের পাশের সিটটা খালি করে দিলো।তিমিরের পাশে বসেই শুভ্র একবার তিমিরের দিকে তাকালো।তিমির চোখ বাকা করে তাকাতে চোখাচোখি হলো।দ্রুত চোখ সরিয়ে নিজেকে বকা দিলো কেনো নির্লজ্জের মতো তাকাতে গেলো ভেবে।
খাওয়ার মাঝে শুভ্র তরকারির বাটিতে হাত বাড়িয়ে তিমিরের পাশ থেকে নেওয়ার সময় তিমিরের কানে বললো,
মনে আছে তো সন্ধ্যার কথা।রাতে রুমে আসবে আমি অপেক্ষা করবো।
তিমির চোখ বড় করে শুভ্রর দিকে তাকালো।শুভ্র সেটাকে তোয়াক্কা না করে খাওয়ায় মন দিলো
,
,
,
চলবে…….
১৮.