বিবাহ বন্ধন পর্ব -২০+২১+২২

#বিবাহ_বন্ধন
#পর্ব_২০
#লেখক_দিগন্ত
বৃষ্টি কারো সাথে ফোনে কথা বলছিল।সূর্য খেয়াল করছে বৃষ্টি দু একদিন সাথে কারো সাথে চুপি চুপি কি যেন বলে।সূর্য খুবই জেলাস ফিল করে।তার মনে হয় বৃষ্টি কোন ছেলের সাথে কথা বলছে নাতো?

সূর্য বৃষ্টির কাছে এসে জিজ্ঞাসা করে,
-“তুমি এভাবে কার সাথে কথা বলো বৃষ্টি?”

বৃষ্টি তড়িঘড়ি ফোনটা কে*টে দিয়ে বলে,
-“কই নাতো।কারো সাথে কথা বলছিলাম না।”

-“মিথ্যা বলবেনা।আমি বেশ অনেকদিন থেকে ব্যাপারটা খেয়াল করছি।সত্য করে বলো তো বৃষ্টি তোমার কি কারো সাথে রিলেশন চলছে?”

-“এসব কি বাজে কথা বলছেন আপনি? রিলেশন তাও আবার আমার! আমি সিদরাতুল মুনতাহা বৃষ্টি জীবনে প্রেম ভালোবাসার আশপাশ দিয়ে যাইনি।তার নামে এত বড় অপবাদ!”

-“আমার কেন জানিনা তোমাকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।”

বৃষ্টি মন খারাপ করে বলে,
-“বিশ্বাস করতে না চাইলে করবেন না।আমার তাতে কি।”

সূর্য খুব রেগে যায় এবং রাগ দেখিয়ে রুম থেকে চলে যায়।বৃষ্টি মনে মনে বলে,
-“খুব শীঘ্রই সবাই সবটা জানতে পারবে।”
_________
স্বর্ণাকে সকাল সকাল ঘুম থেকে ডেকে তুলে দিয়ে তাকে সুন্দর করে সাজিয়ে দেয় বৃষ্টি।স্বর্ণা বারংবার তাকে জিজ্ঞাসা করে কি কারণে স্বর্ণাকে এভাবে সাজানো হচ্ছে কিন্তু বৃষ্টি কিছুই বলে না।স্বর্ণাকে যখনই শাড়ি পড়াতে চায় বৃষ্টি তখনই স্বর্ণার মনে সন্দেহ তৈরি হয়।সে বৃষ্টিকে বলে,
-“সত্যি করে বলো বৃষ্টি ভাবি আমাকে কেন সাজানো হচ্ছে।”

বৃষ্টি মুচকি হেসে বলে,
-“একটু ওয়েট কর মাই ডিয়ার স্বর্ণা সব জানতে পারবে।”

-“তুমি এমন ভাবে আমাকে সাজাচ্ছো যেন দেখে মনে হচ্ছে আমাকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসছে… এক মিনিট এক মিনিট…সত্যিই আমাকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসছে নাতো?”

-“তুমি তো অনেক চালাক স্বর্ণা।এত তাড়াতাড়ি বুঝে গেলে।”

-“এটা কিন্তু ঠিক না।আমি তোমাকে আগেও বলেছি যে আমি বিয়ে করতে চাইনা।”

-“আগে পাত্রকে দেখো তারপর কথা বলবে।বুঝেছ?”

-“পাত্র এমন কে যাকে দেখে আমার সিদ্ধান্ত বদলে যেতে পারে?”

-“সেটা তো পাত্রকে দেখলেই বুঝতে পারবে।”

বৃষ্টি স্বর্ণাকে আর কোনকিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তাকে শাড়ি পড়িয়ে দেয়।নীল শাড়িতে স্বর্ণাকে খুব সুন্দর লাগছিল।বৃষ্টি স্বর্ণাকে বলে,
-“শাড়ি পড়লে তোমায় কত ভালো লাগে।আর তুমি শাড়ি পড়তেই চাওনা। তোমাকে আজ যেই দেখবে সেই ক্রাশ খাবে।”

স্বর্ণা বৃষ্টিকে কিছু বলবে তার আগেই বৃষ্টি নিচে চলে যায় কাজের বাহানায়।অগত্যা স্বর্ণা অপেক্ষা করতে থাকে।
__________
স্বর্ণা নিজের রুমের মধ্যেই বসে ছিল।তার মনে বিভিন্ন ভাবনা উঁকি দিচ্ছিল।কে তাকে দেখতে আচ্ছে কেনই বা দেখতে আচ্ছে স্বর্ণার কাছে সেটা অনেক বড় প্রশ্ন।বৃষ্টি কিছুক্ষণের মধ্যেই ছুটে এসে বলে,
-“চলো স্বর্ণা নিচে চলো।ওনারা তোমাকে দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন।”

-“কারা আমার জন্য অপেক্ষা করছে বৃষ্টি ভাবি? প্লিজ তুমি আমায় বলো।”

-“নিচে ড্রয়িংরুমে চলো সেখনে গেলেই সব জানতে পারবে।”

স্বর্ণার যদিও কোন ইচ্ছে ছিলনা এখন ড্রয়িংরুমে যাওয়ার তবুও নিজের মনে জন্ম নেওয়া কৌতুহলকে দমন করার জন্য তাকে বাধ্য হয়ে ড্রয়িংরুমে যেতেই হয়।

ড্রয়িংরুমে গিয়ে স্বর্ণা দেখে একজন মধ্যবয়সী পুরুষ, দুজন মহিলা আর সাথে তারই বয়সী একটি মেয়ে বসে আছে।

স্বর্ণা তাদের সামনে এসে বসে।বৃষ্টি চিত্রাকে বলে,
-“কেমন লাগলো আমার ননদকে? এই কিন্তু তোর ভাবি হতে চলেছে।”

-“হুম বেশ ভালো বৃষ্টি।ভাইয়ার পাশে খুব ভালো মানাবে।আমি চলে গেলে বাড়িতে যে অভাব তৈরি হবে সেটা তো আমার ভাবি পূরণ করবে।”

বৃষ্টি সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলে,
-“ও হলো আমার ফ্রেন্ড চিত্রা।ওর সাথে ওর আব্বু,আম্মু আর ফুফু এসেছে।চিত্রার চাচাতো ভাইয়ের জন্যই স্বর্ণাকে দেখতে এসেছেন এনারা।”

আলামিন ইসলাম আর সালমা আক্তারও সাথে বসে ছিলেন।সূর্য,সোহেল কাজের জন্য বাড়িতে ছিলনা।প্রিয়া এত সকালে ঘুম থেকেই ওঠেনি।আলামিন ইসলাম বলেন,
-“আপনাদের কাছে কিছু লুকাবো না আমার মেয়ের ব্যাপারে আসলে কিছু বদনাম আছে।মাঝখানে ও বিগড়ে গিয়েছিল আমরা ভাবিও নি ওকে আবার ফিরে পাবো।আপনারা যদি সব জেনেও ওকে বাড়ির বউ করতে চান তাহলে আমাদের কোন অসুবিধা নেই।”

চিত্রার বাবা বলে,
-“আমার ভাইয়ের ছেলেই তো স্বর্ণাকে পছন্দ করেছে।আমাদের আর অমত থাকবে কেন? ও আমেরিকায় ছিল এতদিন বেশ আধুনিকমনস্ক তাই এসব নিয়ে ওর কোন মাথাব্যাথা নেই।আমরাও এসব ব্যাপার নিয়ে কিছু ভাবি না।”

আলামিন ইসলাম স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।সালমা আক্তারকে দেখে মনে হচ্ছিল তিনি বিষয়টা নিয়ে ততটাও খুশি নন।অবশ্য তার খুশি না হওয়াই স্বাভাবিক।এতদিন পর নিজের মেয়েটাকে ফেরত পেল।এখন যদি আবার এসব কারণে তার মেয়েটা রাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলে যায় তাহলে কি হবে? কত দিন পর মেয়েটাকে ফেরত পেয়েছেন তিনি।এখন আর কোনভাবেই মেয়েকে হারাতে চান না।

স্বর্ণা কোন কথা বলছিল না তবে তার দুঃশ্চিন্তা শেষ হচ্ছিল না।সালমা আক্তার স্বর্ণার পাশে এসে বসেন।তারপর স্বর্ণাকে জিজ্ঞাসা করেন,
-“তুই এই বিয়েতে খুশি তো স্বর্ণা? তুই না চাইলে আমরা আর কথা বাড়াবো না।তোর বাবা যাই বলুক আমি জোর করে কোন সিদ্ধান্ত তোর উপর চাপিয়ে দিতে চাইনা।”

স্বর্ণা চুপ থাকাই শ্রেয় মনে করে।কারণ বৃষ্টির কথাই তাকে ভাবাচ্ছিল।হঠাৎ করে রাজ সেখানে চলে আসে এবং বলে,
-“আমার আসতে একটু দেরি হয়ে গেল সরি।”

স্বর্ণার চোখ যায় রাজের দিকে।রাজ আজ হলুদ পাঞ্জাবী পড়েছে।পাঞ্জাবীতে রাজকে কি সুন্দর টাই না লাগছে।স্বর্ণা অপলক চোখে তাকিয়ে থাকে রাজের দিকে।রাজও স্বর্ণাকে দেখে বিমোহিত হয়।

বৃষ্টি স্বর্ণার কানে কানে বলে,
-“এই ছেলেটা বর হলেও কি তুমি বিয়ে করবে না?”

বৃষ্টির কথায় স্বর্ণার ঘোর কা*টে।স্বর্ণা আর কোন কথার উত্তর না দিয়ে দৌড়ে নিজের রুমে চলে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়।

বৃষ্টিও ছুটে যায় স্বর্ণার পেছনে।স্বর্ণা দরজা লাগিয়ে কাঁদতে থাকে।তার মন আর মস্তিকের ল*ড়াই আবার শুরু হয়।স্বর্ণার মন চাইছে রাজের কাছে যেতে কিন্তু তার মস্তিষ্ক তাকে নিষেধ করছে।

বৃষ্টি স্বর্ণার দরজায় নক করতে থাকে।স্বর্ণা দরজাটা কিছুতেই খুলতেই চায়না।বৃষ্টি এবার খুব রেগে যায়।রাগ দেখিয়ে বলে,
-“আর কতদিন এভাবে পালিয়ে বেড়াবে তুমি স্বর্ণা? এবার অন্তত নিজের মনের সব দেয়াল ভেঙে ফেলার চেষ্টা করো।মনের মধ্যে কষ্টের দেয়াল তৈরি করে রেখেছ তুমি।সেই দেয়ালটা তো তোমাকেই ভাঙ্গতে হবে।রাজ ছেলেটা কতবছর তোমার জন্য অপেক্ষা করেছে।এরকম ছেলে লাখে একটা মেলে।আর তুমি কিনা তাকেই এভাবে ফিরিয়ে দিচ্ছ? দরজাটা খোলো বলছি।”

স্বর্ণা এবার নিজের মস্তিকের না মনের কথা শুনে।দরজাটা খুলে দেয় সে।বৃষ্টি ভেতরে আসে।স্বর্ণা বৃষ্টিকে প্রশ্ন করে,
-“তুমি রাজের খোঁজ কিভাবে পেলে বৃষ্টি ভাবি?”

বৃষ্টি মুচকি হেসে বলে,
-“তুমি কি মনে করো আমি এতটাই বোকা? আমি সেদিন তোমাকে রাজের সাথে কথা বলতে দেখে নিয়েছিলাম।পরে যখন তুমি চলে আসো তারপর আমি রাজের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে বুঝতে পারি উনি রাজ।আমি রাজের থেকে ওনার ফোন নম্বরটা নেই।তারপর চলে আসি।উদ্দ্যেশ্য ছিল যোগাযোগ করা।বাড়িতে ফিরে আমি রাজের সাথে কথা বলে বুঝতে পারি সে এখনও তোকে ভালোবাসে।পরে কাল যখন আমি চিত্রার সাথে রেস্টুরেন্টে দেখা করে চিত্রার জোরাজুরিতে ওর বাড়িতে যাই তখন রাজকে আবার দেখি।তখনই জানতে পারি রাজ চিত্রার চাচাতো ভাই।সেদিন আমি সবাইকে তোমার আর রাজের ব্যাপারটা বলি।আমি এটাও বলি তুমি এখনো মনে মনে রাজকে ভালোবাসো কিন্তু প্রকাশ করোনা।তখন ওনারাই বললেন তোমাকে দেখতে আসতে চান।কাল আমি তোমার বাবা মা মানে আমার শ্বশুর শাশুড়ীর সাথে কথা বলে তাদেরকে জানাই সবটা।তারা রাজি হলে আমি রাজকে ফোন করে জানাই সবটা।তখন রাজ বলল চলে আসতে।”

স্বর্ণা বলে,
-“সব ঠিক আছে কিন্তু আমাকেও তো জানালে পারতে।আমার মতামতের কি কোন প্রয়োজন নেই?”

-“তা নয় কিন্তু…”

-“কোন কিন্তু নয় আমি এই বিয়েটা করতে পারব না।ব্যাস আর কোন কথা না।”
(চলবে)
[স্বর্ণা আর রাজের মিল হবে কি না সেটা জানার জন্য আগামী পর্ব অবশ্যই পড়তে হবে।]#বিবাহ_বন্ধন
#পর্ব_২১(ধামাকাদার পর্ব)
#লেখক_দিগন্ত
বৃষ্টি স্বর্ণাকে অনেক বোঝায় রাজের ব্যাপারটা নিয়ে।কিন্তু স্বর্ণা কিছু বুঝতেই চায়না তার একটাই কথা সে রাজকে বিয়ে করবেনা।একসময় বৃষ্টি বিরক্ত হয়ে বলে,
-“আমি খুব ভালো করেই জানি কোন অসুখ হলে কোন ওষুধ দিতে হয়।তোমাকে এতক্ষণ অনেক বোঝালাম কিন্তু তুমি তো দেখছি নাছোড়বান্দা।ভাঙবে তবু ম*চ*কাবে না।এবার তাই আমাকে দাবার গুটির সেরা চালটাই চালতে হবে।”

বৃষ্টির এরকম কথা স্বর্ণা বুঝতে পারে না।বৃষ্টি স্বর্ণাকে চোখ পাকিয়ে বলে,
-“দেখো কে এসেছে।ইনিই এখন তোমায় সাইজ করতে পারবে।”

কথাটা বলে বৃষ্টি দৌড়ে পালিয়ে যায়।স্বর্ণা ভীষণ অবাক হয় বৃষ্টির এমন ব্যবহারে।বৃষ্টি চলে যাওয়ার পর কেউ স্বর্ণার রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দেয়।স্বর্ণা খুব ঘাবড়ে যায় ব্যাপারটায়।পেছনে ফিরে রাজকে দেখে তার অবাকের সীমা ছাড়িয়ে যায়।

রাজ স্বর্ণার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে।স্বর্ণা পিছনের দিকে পিছাতে থাকে আর বলে,
-“একদম আমার কাছে আসবেন না আমি কিন্তু চিৎকার করবো।”

রাজ স্বর্ণার কাছে চলে এসে তার মুখ চে*পে ধরে বলে,
-“করো চিৎকার দেখি কার কান অব্দি তোমার চিৎকারের শব্দ যায় ”

স্বর্ণা রাজের থেকে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ছ*ট*ফ*ট করতে থাকে।রাজ স্বর্ণাকে ধমক দিয়ে চুপ হতে বলে।স্বর্ণা তখন নিজের শক্তি ব্যবহার করে রাজকে একটা ঘু*ষি মে*রে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।

স্বর্ণা ঘু*ষিতে রাজের নাক দিয়ে রক্ত বের হয়ে যায়।স্বর্ণা রাজের এরকম অবস্থা দেখে বিচলিত হয়ে যায় এবং তাড়াতাড়ি ফাস্ট এইড বস নিয়ে আসে।

স্বর্ণা যখন রাজকে ফাস্ট এইড করে দিচ্ছিল তখন রাজ স্বর্ণার দিকে অপলক তাকিয়ে ছিল।স্বর্ণার অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছিল রাজকে নিজের এত কাছে দেখে।রাজের অবস্থাও একইরকম।

রাজ তার প্রতি স্বর্ণার এমন কেয়ার দেখে মিটিমিটি হাসে।স্বর্ণা চোখ পাকিয়ে রাজের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে,
-“এভাবে হাসছেন কেন? হাসার মতো হয়েছা টা কি।”

-“তুমি জানো তোমার এই সামান্য কেয়ারগুলো আমার কত ভালো লাগছে স্বর্ণা?”

স্বর্ণা চুপচাপ উঠে যেতে নেয় তখন রাজ তার হাত শক্ত করে ধরে বলে,
-“এভাবে আর কতদিন পালাবে আমার থেকে? আমি খুব ক্লান্ত জানো।আমি জানিনা তুমি আমায় ভালোবাসো নাকি ঐ সিরাজকে কিন্তু আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি।বিদেশে অনেক সুন্দরী মেয়েকে দেখেছি তবে কারো প্রতি আমার সেরকম অনুভূতি জন্মায় নি যেমনটা তোমার প্রতি আছে।তুমি কেন আমাকে বুঝতে চাওনা স্বর্ণা? তুমি নিশ্চয়ই আমার ভালোবাসাকে কখনো উপলব্ধি করোনি আমাকে নিজের ভুল ভেবেছ।আমি তোমাকে এতটাই ভালোবাসি যে তোমাকে পাওয়ার জন্য এতগুলো বছর যাবৎ অপেক্ষা করেছি।আমার খুব কষ্ট হয়েছিল সেদিন জানো যেদিন আমি জানতে পেরেছিলাম তুমি আমায় ভালোবাসো না।সেদিন আমার মনে হচ্ছিল পৃথিবীটা বুঝি শুধু আমায় কষ্টই দেবে।নিজের মা-বাবাকে হারানোর পর তোমাকে নিয়ে সুন্দর করে বাঁচব ভেবেছিলাম।তোমাকে অবশ্য এসব বলে কোন লাভ নেই।কারণ তুমি স্বার্থপর।নিজের স্বার্থ ছাড়া তুমি কিছুই বোঝো না।তুমি সিরাজকে যে ভালোবাসো না এটা অস্বীকার করতে পারবে? না পারলেও এটাই সত্যি। সিরাজকে তুমি শুধু নিজের অনুশোচনার জন্য ভুলতে পারোনি।”

-“আপনি খুব জানেন আমার মনের কথা?”

-“তোমার মনের কথা আমি জানিনা।জানতে পারলে তো হয়েই যেত।যাক সেসব কথা।তুমি যদি আমাকে বিয়ে করতে না চাও তাহলে…আমিও আর তোমাকে জোর করবো না।ভালো থেকো আর সারাজীবন সিরাজের মায়াতেই থেকো।আমি তো কষ্টে ছিলাম কষ্টেই থাকব।”

রাজ চলে যেতে ধরবে তখন স্বর্ণা তাকে আটকিয়ে বলে,
-“কোথায় যাচ্ছ তুমি? আমি শুনেছিলাম মেয়েরা একটি বেশি ওভার থিংকিং করে বাট এখন মনে হচ্ছে ছেলেরা দুই লাইন বেশি বোঝে। অন্য ছেলেদের কথা বলতে পারব না কিন্তু তুমি বেশিই বোঝো।এর আগে আমার ভালোবাসি না শুনে আমেরিকা চলে গেলে, এখন আবার বিয়ে করব না শুনে সু*ই*সা*ই*ড করতে যাচ্ছ।”

রাজ চমকায়।চকিত হয়ে স্বর্ণাকে জিজ্ঞাসা করে,
-“তুমি কিভাবে বুঝলে?”

স্বর্ণা রাজের পকেট থেকে ঘু*মের ওষুধ বের করে নিয়ে বলে, “এই ভাবে।”

রাজ বলে,
-“তুমি আমায় বিয়ে না করলে আমাকে অন্তত শান্তিতে ম*রতে দাও।”

-“শান্তিতে ম*রো পরে আগে আমায় বিয়েটা করে নাও।আর আমার সামনে কখনো এভাবে ম*রার কথা বলবে না।আমিই ম*রবো তোমার জা*লায়।”

-“তার মানে তুমি বিয়েতে রাজি?”

-“হুম।”

রাজ খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়।স্বর্ণাকে কোলে তুলে নিয়ে ঘুরাতে থাকে।স্বর্ণা নামাতে বললে নামিয়ে দেয়।তারপর ড্রয়িংরুমে গিয়ে সবাইকে খুশির খবরটা দেয় যে স্বর্ণা বিয়েতে রাজি হয়ে গেছে।সবাই খুশি হয়।বিশেষ করে সালমা আক্তার।খুশিতে তিনি সবাইকে মিষ্টিমুখ করান।আলামিন ইসলাম আর চিত্রার বাবা মিলে বিয়ের বিষয়ে কথাবার্তা বলেন।রাজ অনেকদিন অপেক্ষা করেছে এই দিনটার জন্য তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ে করতে চায়।সেইজন্য আপাতত নেক্সট সপ্তাহে তাদের আকদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

স্বর্ণার কানের কাছে এসে রাজ বলে,
-“আর মাত্র এক সপ্তাহ দেন আমি চিরকালের মতো তোমাকে নিজের করে নেবো।অনেক পালিয়েছ আর পারবে না।”

রাজ বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে।বৃষ্টিই তো তাকে আইডিয়াটা দিয়েছিল ঘুমের ওষুধ রাখতে এবং যেকোনভাবে স্বর্ণাকে দেখাতে।বৃষ্টি খুব ভালো করেই জানতো রাজকে স্বর্ণা কতটা ভালোবাসে।তাই এরকমটা হলে স্বর্ণা আর কিছুতেই না বলতে পারবে না।

সূর্যও ততক্ষণে অফিস থেকে ফিরে এসেছিল এবং সে পুরো ব্যাপারটা খেয়াল করে।সূর্য বুঝতে পেরে গেছে বৃষ্টি প্রতিদিন রাজের সাথেই কথা বলত।

সূর্য খুব অনুতপ্ত হয় গতরাতের খারাপ ব্যবহারের জন্য।বৃষ্টির কাছে এসে বলে,
-“সরি।”

বৃষ্টি বলে,
-“আমাকে এভাবে সরি বলার কারণ?”

-“কাল রাতে..”

-“পাস্ট ইজ পাস্ট।আপনার মতো বোকা মানুষের কথায় আমি মন খারাপ করবো কেন?”

-“আমি বোকা মানুষ?”

-“না ব্যাডা মানুষ।”

-“ঝগড়া না করলে ভালো লাগেনা তাইনা?”

বৃষ্টি মুখ বাঁকায়।সূর্য মনে মনে বলে,
-“অনেক হয়েছে বৃষ্টি এবার আমি আর তোমাকে ছাড়ছি না।আমাকে অপমানিত করার ফল তোমাকে পেতেই হবে।”

বিয়ের কথাবার্তা বলে চিত্রার পরিবারের সবাই চলে যায়।রাজের এখন আর ইচ্ছে ছিলনা এভাবে যাওয়ার।কতদিন পর চিত্রাকে কাছে পেলো।তাই যত তাড়াতাড়ি পারে তাকে নিজের করে নিতে ততই ভালো।
_________
এক সপ্তাহ অতিবাহিত হয়ে যায়।স্বর্ণা আর রাজের আকদের দিন চলে আসে।আপাতত পারিবারিক কিছু লোকের উপস্থিতিতেই আকদ হবে।

স্বর্ণা-রাজ দুজনেই খুব খুশি।তাদের ভালোবাসা এতদিনে পূর্ণতা পাবে।

বৃষ্টি বুদ্ধিমতী তাই এত স্বাভাবিকতা সে ঠিক মেনে নিতে পারছিল না।বিশেষ করে প্রিয়ার ব্যাপারটা।স্বর্ণা রাজের বিয়ের কথা শুনেও প্রিয়া কোন রিয়্যাক্ট করে নি।স্বাভাবিকভাবেই সবকিছু যেন মেনে নিয়েছে।স্বর্ণাকে অভিনন্দনও জানিয়েছে এখন বাড়ির বড় বউ হিসেবে অতিথিদের জন্য রান্নাবান্না করছে।বৃষ্টির মনে হয় প্রিয়া কোন ঝামেলা করতে পারে তাই স্বর্ণাকে সাবধান করে রাখে এই ব্যাপারে।

দুপুরে প্রিয়া হঠাৎ স্বর্ণার রুমে চলে আসে।তারপর স্বর্ণাকে নিজের হাতে গহনা পরিয়ে দিতে দিতে বলে,
-“আমার ভাইটা বুঝি ওপারে খুব কষ্টে আছে তোমাকে ছাড়া।আমার ভাইয়ের এই কষ্ট আমি বোন হিসেবে কিভাবে মেনে নেব বলো?”

স্বর্ণা ভয় পেয়ে যায় প্রিয়ার কথায়।স্বর্ণা কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রিয়া স্বর্ণার মুখে কিছু স্প্রে করে তাকে অজ্ঞান করে দেয়।তারপর চুপিসারে কয়েকজন লোক ডেকে স্বর্ণাকে একটি বস্তায় ভড়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।বিয়ের বাড়িতে অনেক জিনিস আনা নেওয়া করা হচ্ছিল তাই কেউ সন্দেহ করেনা।

প্রিয়া বলতে থাকে,
-“তোমাকে আমি সুখী হতে দেবো না স্বর্ণা।তুমি যদি আমার ভাইয়ের না হও তাহলে অন্য কারো হবে না।”
(চলবে)#বিবাহ_বন্ধন
#পর্ব_২২
#লেখক_দিগন্ত
স্বর্ণাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় প্রিয়া।এদিকে কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি স্বর্ণার রুমে এসে তাকে দেখতে না পেয়ে বিচলিত হয়ে যায়।বৃষ্টির সন্দেহ হয় প্রিয়ার উপর কারণ সর্বশেষ প্রিয়াকেই সে স্বর্ণার রুমের দিকে আসতে এসেছিল।তখন ব্যস্ততার কারণে ব্যাপারটাকে গুরুত্ব দেয়নি বৃষ্টি।এখন তার খুব ভয় হতে থাকে যে প্রিয়া আবার স্বর্ণার কোন ক্ষতি না করে দেয়।
_________
স্বর্ণাকে নিয়ে নিজেদের পুরাতন বাসায় এসেছে প্রিয়া।স্বর্ণার জ্ঞান তখনো ফেরেনি।স্বর্ণার এই অবস্থা দেখে প্রিয়ার তো খুব আনন্দ হয়।প্রিয়া নিজের ভাই সিরাজের ছবির দিকে তাকিয়ে বলে,
-“দেখ ভাইয়া আমি তোর স্বর্ণাকে তোর কাছে এনেছি।তুই তো স্বর্ণাকে খুব ভালোবাসিস তাইনা? স্বর্ণাকে ছাড়া নিশ্চয়ই খুব কষ্টে আছিস।এখন আমি স্বর্ণাকে তোর কাছে পাঠিয়ে দেব।”

স্বর্ণার জ্ঞান ফিরে আসে।প্রিয়া তার হাত পা বেধে রেখেছিল বিধায় স্বর্ণা পালাতে চেয়েও পারছিল না।প্রিয়া স্বর্ণার দিকে তাকিয়ে বলে,
-“তোমার পালানোর আর কোন পথ নেই স্বর্ণা।তোমার জন্য আমি আমার ভাইকে হারিয়েছি, আমার ভাই এত কষ্ট পেয়েছে।সেখানে তুমি সুখে থাকবে সেটা তো হতে পারে না।”

স্বর্ণার খুব রাগ হয় প্রিয়ার উপর।এতদিন মেয়েটার জন্য দয়া হলেও এখন মনে হয় সে বেশি বেশি করছে।স্বর্ণা প্রিয়াকে বলে,
-“তুমি কিন্তু ভুল করছ প্রিয়া।আমাকে এভাবে আটকে রেখে কি লাভ পাচ্ছ বলো তুমি? আমি জানি তোমার ভাইয়ের সাথে যেটা হয়েছে ঠিক হয়নি। তাই বলে এসবের দায়ভার তুমি আমাকে তো দিতে পারোনা।আমিও আগে তোমার মতো ভাবতাম যে সিরাজের সাথে যা হয়েছে তার জন্য আমি দায়ী।কিন্তু এখন বুঝতে পেরেছি এসবে আমার তেমন কোন দোষ ছিলনা।মানুষ মাত্রই তো ভুল হয় আমিও তোমার ভাইকে চিনতে পারিনি।আমাকে বাঁচানোর জন্য তোমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে ঠিকই, আমি তো তাকে মা*রিনি।তাহলে আমাকে কেন শাস্তি পেতে হবে প্রিয়া?”

-“চুপ আর একটা কথাও না।আমার ভাই তোকে বাঁচানোর জন্য নিজের জীবন দিয়েছে আর তুই সেই জীবন অন্য একজনের সাথে কা*টাবি এটা হতে পারে না।আমি সেটা হতে দেব না।”

-“তুমি ঠিক নেই প্রিয়া।তুমি পাগল হয়ে গেছ।তুমি একটা সা*ইকো।”

-“হ্যাঁ আমি তাই।আর মাত্র কিছুক্ষণ অপেক্ষা কর।তারপর তোকে আমার ভাইয়ের কাছে পাঠিয়ে দেব।কোন চিন্তা করিস না বেশি কষ্ট দেব না তোকে।শেষবারের মতো মন ভরে নিঃশ্বাস নিয়ে নে।”
_________
স্বর্ণাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা এই খবরটা চারিদিকে ছড়িয়ে পরে।পাত্রপক্ষের সবাই বিয়েতে এসে এসব কথা শুনে অবাক হয়।অনেকে বলতে শুরু করে বিয়ে করতে চায়নি জন্য স্বর্ণা পালিয়ে গেছে।

রাজকে এসব কথা প্রভাবিত করে না কারণ রাজ খুব ভালো করেই জানে স্বর্ণা তাকে ছেড়ে এভাবে চলে যেতে পারে না।বৃষ্টি সূর্যর সাথে কথা বলে এই বিষয় নিয়ে।

সূর্য বৃষ্টির কথা শুনে এবং সেও বৃষ্টির সাথে একমত হয় যে প্রিয়াই রয়েছে এসবের পেছনে।তারা দুজনে মিলে সিদ্ধান্ত নেয় স্বর্ণার কোন ক্ষতি হওয়ার আগেই তাকে বাঁচিয়ে নেবে।

বৃষ্টি সূর্যকে প্রশ্ন করে,
-“আপনি তো প্রিয়াকে অনেকদিন থেকে চেনেন।আপনার কি মনে হয় প্রিয়া স্বর্ণাকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে?”

সূর্য আন্দাজ করে বলে,
-“হয়তো প্রিয়াদের আগের বাড়িতে নিয়ে গেছে।প্রিয়া একবার আমায় বলেছিল তাদের পুরাতন বাড়ি নাকি পরিত্যক্ত হয়ে আছে।সেখানে সেরকম কেউ যাওয়া আসা করেনা আর বাড়িটা
নাকি ফাকা জায়গায়।”

-“আপনি কি প্রিয়ার ঐ বাড়ির ঠিকানা জানেন?”

-“শুনেছিলাম নাম।এলাকার নাম জানলেও বাড়ির এক্সাক ঠিকানাটা জানি না।এখান থেকে কিছুটা দূরে ছোট্ট একটা গলির ভেতরে কোথাও একটা প্রিয়াদের পুরাতন বাড়ি।”

-“আমাদের এখনই সেই গলিতে যেতে হবে চলুন।”

সূর্য আর বৃষ্টি একসাথে যেতে নেয় তখন রাজ তাদের সামনে চলে আসে।রাজ তাদেরকে জিজ্ঞাসা করে,
-“কোথায় যাচ্ছেন আপনারা?”

-“স্বর্ণাকে খুঁজতে।”(সূর্য)

-“আমিও যেতে চাই আপনাদের সাথে।চলুন।”

সূর্য,বৃষ্টি আর এবং রাজ একসাথে বেরিয়ে আসে স্বর্ণাকে খোঁজার জন্য।রাজের খুব টেনশন হয় স্বর্ণার জন্য।একবার হারিয়ে ফিরে পেয়েছে তাই আর হারাতে চায়না।
________
প্রিয়া একটা বালিশ হাতে নিয়ে হাসছিল।আজ এই বালিশ চা*পা দিয়েই স্বর্ণাকে মে*রে ফেলার পরিকল্পনা করছে প্রিয়া।

প্রিয়ার উদ্দ্যেশ্য বুঝতে পারে স্বর্ণা।সে বাঁচার জন্য নিজের সর্বশক্তি দিয়ে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে।কিন্তু কোনভাবেই বা*ধা অবস্থা থেকে মুক্তি পায়না।প্রিয়া স্বর্ণার এই অবস্থা দেখে অট্টহাসি হেসে বলে,
-“এত ভয় পাচ্ছো কেন স্বর্ণা? ম*রার ভয় পাচ্ছ।একদিন তো সবাইকে ম*রতে হবে।আজ নাহয় তুমি…হা হা হা”

-“প্লিজ প্রিয়া আমাকে যেতে দাও।আমি ম*রতে চাইনা প্লিজ।”

-“চুপ আর একটা কথাও না।তোমার শেষ সময় ঘনিয়ে আসছে।এখন বাজে বিকেল ৩ঃ৪৪ আজ বিকেল ঠিক ৪ টার সময় তোমাকে মে*রে ফেলব আমি।কেন জানো? কারণ আমার ভাইও বিকেল ৪ টার সময় মা*রা গেছিল।তাই আমি চাই তুমিও এই সময়ে ম*রে যাও।”

প্রিয়ার কথা শুনে স্বর্ণার বাঁচার ক্ষীণ আশাও চলে যায়।তার মনে হয় আজ আর কেউ তাকে বাঁচাতে পারবে না।আজই বোধহয় পৃথিবীতে তার শেষ দিন।স্বর্ণা রাজের কথাই ভাবে।রাজের উদ্দ্যেশ্যে বলে,
-“তুমি আমায় ক্ষমা করে দিও রাজ।আজ আবার আমার জন্য তোমাকে কষ্ট পেতে হবে।আমি তোমাকে কথা দিয়েছিলাম চিরকালের মতো তোমার হয়ে যাব কিন্তু আমি আমার কথা রাখতে পারলাম না।আর বোধহয় আমাদের দেখা হবে না।”

এদিকে রাজ দ্রুত স্পিডে গাড়ী চালাচ্ছিল।সূর্যর থেকে প্রিয়ার পুরাতন বাড়ির ঠিকানা সে পেয়েছে।রাজ স্বর্ণার উদ্দ্যেশ্যে বলে,
-“তুমি চিন্তা করোনা স্বর্ণা আমি এসে গেছি।তোমার কোন ক্ষতিই আমি হতে দেবো না।”

শেষ অব্দি প্রিয়ার বাড়ির গলিতে পৌঁছে যায় তারা।গাড়ি থেকে নেমে পাগলের মতো ছোটাছুটি করতে থাকে রাজ এবং সূর্য।সবার কাছে প্রিয়ার ঠিকানা জানতে চায় কিন্তু কেউ বলতে পারে না।কারণ প্রিয়ারা অনেক আগে এখান থেকে চলে গেছে।

এদিকে বৃষ্টি পুলিশকে অনেক আগেই ফোন করে এই ঠিকানাটা জানিয়েছে।তারাও আসছে এখন।

অবশেষে রাজ এখন বৃদ্ধা মহিলাকে প্রিয়ার কথা বললে তিনি চিনতে পারেন।বৃদ্ধা মহিলাটি প্রিয়াদের বাড়ি দেখিয়ে দেয়।তখন রাজ,সূর্য,বৃষ্টি সবাই সেদিকেই যায়।

প্রিয়া মুচকি হেসে বলে,
-“৪ টা বাজতে আর মাত্র ১০ সেকেন্ড বাকি।আমি এবার তোমাকে মে*রে ফেলব।পরপারে আমার ভাইয়ের সাথে ভালো থেকো।”

কথাটা বলে শেষ করেই প্রিয়া বালিশটা নিয়ে গিয়ে স্বর্ণার মুখে চেপে ধরে।স্বর্ণা নিঃশ্বাস নিতে না পেরে বাঁচার জন্য ছটফট করতে থাকে।একসময় ক্লান্ত হয়ে হাল ছেড়ে দেয় স্বর্ণা।রাজের কথাই ভাবতে থাকে সে।স্বর্ণা ভেবেই নেয় তার জীবন এখনই হয়তো থমকে যাবে।

ঠিক তখনই রাজ ছুটে এসে প্রিয়াকে স্বর্ণার থেকে আলাদা করে।স্বর্ণার মুখ থেকে বালিশ সরতেই সে স্বস্তিতে নিঃশ্বাস নিতে থাকে।রাজ বলে,
-“কোন চিন্তা করো না স্বর্ণা।আমি এসে গেছি।”

বৃষ্টি পুলিশদের নিয়ে ভেতরে চলে আসে।কয়েকজন মহিলা পুলিশ এসে প্রিয়াকে গ্রেফতার করে।বৃষ্টি প্রিয়ার উদ্দ্যেশ্যে বলে,
-“তুমি এতটা নিচে নামবে সেটা আমি ভাবতে পারিনি প্রিয়া।মিথ্যা প্রতিশোধের নেশায় কত নিচে নামলে।এখন যাও গিয়ে নিজের পাপের শাস্তি ভোগ করো।যেই ভাইয়ের জন্য এতকিছু করলে সে নিশ্চয়ই এসবের জন্য কখনো তোমায় ক্ষমা করবে না।যেই স্বর্ণাকে বাঁচানোর জন্য তোমার ভাই নিজের জীবন দিয়ে দিল তুমি কিনা তাকেই মা*রতে যাচ্ছিলে।”

পুলিশ প্রিয়াকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
_____
সবাই ফিরে আসে।এরপর বৃষ্টি স্বর্ণাকে আবার নিজের হাতে সাজিয়ে দেয় এবং বলে,
-“কোন চিন্তা করো না স্বর্ণা।সব বিপদ চলে গেছে।এখন সবকিছু ঠিকঠাক হবে।”

স্বর্ণাকে নিয়ে গিয়ে রাজের পাশে বসানি হয়।কাজী বিয়ে পড়ানো শুরু করে।”কবুল” বলার মাধ্যমে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় স্বর্ণা+রাজ 💖
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here