#ভালোবাসতে_চাই_প্রিয়_তোমাকে
#পর্ব_পঞ্চম
#লেখিকা_দিয়া
হসপিটালে বসে আছে শুভ্র। কিছুক্ষণ আগের ঘটনা,
হ্যালো ঝিলিক কি হয়েছে বলো এই ওসময়ে কল কেন দিলে ? কোনো সমস্যা? – শুভ্র
হ্যালো এই মোবাইল যার সে একটু আগে মেইন রোডের সামনে জ্ঞান হারিয়ে পরে যান।আমি কিছু লোকের সাহায্য নিয়ে উনাকে ধরে ******* এই হসপিটালে নিয়ে আসি।আপনি জলদি হসপিটালে চলে আসুন – বলে মহিলাটি ফোন রেখে দেয়।
শুভ্র জলদি হসপিটাল থেকে বেরিয়ে ওই মহিলার দেওয়া হসপিটালের ঠিকানায় চলে আসে। তারপর শুভ্রের কাছে মহিলাটি ঝিলিকের ব্যাগটা দিয়ে চলে যায়। ঝিলিকের কেবিনে থেকে ডাক্তার বেরিয়ে আসতেই শুভ্র তার দিকে এগিয়ে যায়। তারপর শুভ্র তাকে বলতে লাগে,
হ্যালো ডাক্তার আমি পেশেন্টের হাসবেন্ড আহসান রহমান শুভ্র । পেশেন্ট এখন কেমন আছে? – শুভ্র
আপনি ডাক্তার শুভ্র না ? – ডাক্তার
জি হ্যা – শুভ্র
ও মাই গড এটা আমার ভাগ্য যে আমি ডাক্তার আহসান রহমান শুভ্রের সঙ্গে দেখা করতে পারলাম তাও আবার এমন পরিস্থিতিতে। আমি কিন্তু আপনার অনেক প্রশংসা শুনেছি। আপনার জন্য আমার কাছে বিরাট এক খুশির খবর আছে শুভ্র সাহেব – ডাক্তার
জি বলেন কি খুশির খবর ? – শুভ্র
আপনি বাবা হতে চলেছেন শুভ্র সাহেব। আপনার স্ত্রী দুই মাসের প্রেগন্যান্ট । – ডাক্তার
থ্যাংকস ডাক্তার এটা আমার জন্য বিরাট এক গুড নিউজ ছিল। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আমি কি আমার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারি এখন ? – শুভ্র।
হ্যা অবশ্যই – ডাক্তার
ঠিক আছে ডাক্তার তাহলে ওর জ্ঞান ফিরলে তো ওকে আপনারা রিলিজ দিয়ে দিবেন তাই না ? – শুভ্র
হ্যা অবশ্যই – বলে ডাক্তার চলে যায়।
ডাক্তার যাওয়ার পরই শুভ্র কেবিনে ঢুকে পরে।তারপর শুভ্র ঝিলিকের পাশে গিয়ে একটি সিটে বসে পরে।একটু পরই ঝিলিকের জ্ঞান ফিরে।নিজেকে হসপিটালে বেডে শুয়ে থাকতে দেখে আর শুভ্রকে নিজের সামনে বসে থাকতে দেখে ঝিলিক আরো চমকে উঠে।তাড়াহুড়ো করে উঠে বসতে যেতেই শুভ্র ঝিলিককে ধরে আস্তে আস্তে উঠিয়ে বসিয়ে দেয়।ঝিলিক শুভ্রকে বলতে লাগে,
তুমি এখানে আর আমিই বা হসপিটালের বেডে কি করছি ? কি হয়েছে আমার ? – ঝিলিক
আগে তুমি আমাকে বলো আমাকে না বলে বাসা থেকে বেরোতে গিয়েছো কেনো তুমি তাও আবার একা একা।আমাকে বললেই তো আমি নিয়ে যেতাম তোমাকে – শুভ্র
আসলে অনেক দিন ধরে রিনি মিনিকে দেখতে যাওয়া হয় না।আজকে একটু সময় পেয়েছি বিধায় আজকে বের হই। আমি ভেবেছিলাম তোমাকে কল দিব কিন্তু পরে আর মনে ছিল না – ঝিলিক
ঝিলিক এখন থেকে কিন্তু আর এমন হেয়ালি করা চলবে না।তোমাকে অনেক সচেতন হতে হবে। এখন থেকে তোমাকে সবসময় নিজের যত্ন নিতে হবে। এখন কিন্তু তোমার মাঝে আরো একটি প্রাণ বেড়ে উঠছে। তুমি ঠিক না থাকলে কিন্তু ও ঠিক থাকতে পারবেনা – শুভ্র
মানে কি ? আমার ভিতরে আবার আমি ছাড়া কার প্রাণ থাকবে ? এক মিনিট এক মিনিট শুভ্র বাই এনি চান্স তুমি কি বলতে চাচ্ছো আমি প্রেগন্যান্ট – অবাক কন্ঠে বলে উঠলো ঝিলিক।তারপর আগ্রহী দৃষ্টিতে শুভ্রের দিকে তাকিয়ে রইলো উত্তরের অপেক্ষায়।
হ্যা ঝিলিক তুমি প্রেগন্যান্ট। তোমার গর্ভে আমাদের সন্তান রয়েছে। জানো ওর বয়স দুই মাস হয়ে গিয়েছে । আর মাত্র কয়টা মাস তারপর আমাদের সন্তান আমাদের কাছে থাকবে ঝিলিক – ঝিলিকের পেটে হাত বুলাতে বুলাতে বললো শুভ্র
ঝিলিক নিজের হাতটা পেটের উপরে রেখে বলতে লাগলো,
আমাদের ও বাচ্চা হবে শুভ্র। এর থেকে আনন্দের আর কিছু হতেই পারে না।চল শীঘ্রই বাসায় যাই সবাইকে জানাতে হবে তো এই গুড নিউজ টা।সবাই জানলে বড্ড খুশি হবে – ঝিলিক
হুম দাঁড়াও আমি রিসিপশনের ফর্মালিটি গুলো শেষ করে বিলটা পে করে আসছি – বলে শুভ্র কেবিনে থেকে বেরিয়ে গেলো।
তারপর হসপিটালের সব ঝামেলা মিটিয়ে শুভ্র আর৷ ঝিলিক রওয়ানা দিলো বাসার উদ্দেশ্য। রাস্তায়ই ঝিলিক ফোন করে এই গুড নিউজটা রিনি মিনিকে দিয়ে দিলো।বাসায় এসে যখন শুভ্র আম্মাকে বলে উঠে,
আম্মু তুমি দাদি হতে চলেছো – শুভ্র
অবশেষে এতদিনে একটা খুশির খবর শোনাতে পারলো এই মেয়ে।আমার ছেলের ঘর আলো করেও আমাদের বংশধর আসছে। শুভ্র আমি সব ফ্ল্যাটে গিয়ে মিষ্টি দিয়ে আসবো এতো বড় একটা খুশির খবর – আম্মা
হুম আম্মা ঠিক আছে – শুভ্র
তারপর শুভ্র আব্বাকে কল দিয়ে ও জানায় এই খবরটা। আব্বা ও বড্ড খুশি হয় আর আব্বা জানায় তিনি খুব জলদিই চলে আসছেন বাংলাদেশে।আবারো একবার খুশির হাওয়া বয়ে যায় বাসায় আব্বার আসার কথা জেনে।
পরদিন সকালে,
বাসায় অনেক লোকের কথা বলার শব্দে ঘুম ভেঙে যায় নিচে গিয়ে দেখি আপুরা আর খালামনিরা এসেছে। ইশিতা আমাকে দেখেই এগিয়ে আসে।তারপর আমাকে জড়িয়ে ধরে বলতে থাকে,
আমার সেদিনের বিহেভিয়ারের জন্য আমি দুঃখিত ভাবি। ক্ষমা করে দিও আমাকে আমি তোমার ছোট বোনের মত।মনে আর কোনো রাগ রেখো না প্লিজ ভাবি।আর এমন ভুল হবেনা – ইশিতা
ইশিতার কথায় তো আমি ভুত দেখার মতো চমকে উঠি। এ তো ভুতের মুখে রাম রাম।যে মেয়ে আমার বিয়ের এত বছরে ও আমার সাথে ভালো ব্যবহার তো দূর ভালো ভাবে কথাই বলেনি ওই মেয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে।আবার আমার কাছে ক্ষমা ও চাচ্ছে। আমাকে আরো অবাক করে দিয়ে আমার খালা শাশুড়ী বলে উঠলো,
ঝিলিক মনে কিছু রেখো না।ইশিতা বাচ্চা মানুষ নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে তুমি ওকে ক্ষমা করে দাও – খালা শাশুড়ি
আমি কোনোমতে নিজেকে সামলে নিয়ে বলে উঠি,
ঠিক আছে ইশিতা কোনো ব্যাপার না বাদ দাও – আমি।
এভাবেই কেটে গেল কিছু দিন। ইশিতার সঙ্গে আমার অনেক ভাল একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে এই কিছু দিনে।খালা শাশুড়ী আর খালু চলে গেলে ও ইশিতা এখানেই রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে আমার সময়টা খুব একটা খারাপ যাচ্ছে না।কিছু সময় আগে শুভ্র অফিস থেকে ফিরেছে। আমি আবার বিকেলে ফোন করে বলেছিলাম আমার অনেক ফুচকা খেতে মন চাচ্ছে আমার জন্য যাতে ফুচকা নিয়ে আসে।তাই ও আসার সময় ফুচকা নিয়ে আসে।বসে বসে সেই ফুচকাই খাচ্ছিলাম।শুভ্র গিয়েছে ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে।তখনি শুভ্রের ফোন বেজে উঠে।স্কিনে ভেসে উঠে রিয়া নামটি।হসপিটালে থেকে আসা জরুরি কল ভেবে আমি কলটা রিসিভ করি।ওইপাশে থেকে রিয়া নামের মেয়েটি বলে উঠে,
শুভ্র বেবি কোথায় তুমি ? কতদিন ধরে আমাদের দেখা হয়না ভেবেছো। চলে আসো না বাসায় – রিয়া
ব্যস আমি আর কিছু শুনতে পারিনি।কলটা কেটে দেই।
~~~
রিয়া নামের মেয়েটার বলা কথাগুলো ভাবতে ভাবতে আনমনে হাঁটছিলাম। হঠাৎই আমি কিসে যেন পা পিছলে পরে যেতে নেই।আর তখনি,
চলবে🥰