#ভালোবাসার_অনূভুতি
#লেখিকাঃতানিশা_তিশা_মনি
#পর্ব_13
মেঘ রেগে গিয়ে বললো
“বাই এনি চান্স,, তুই কি আমার ফোনটা কে অপমান করার চেষ্টা করছিস?”
মিহির বললো
“তোর ফোনকে অপমান করার চেষ্টা করছি না ??ডিরেক্ট অপমানই করছি! আর ওই ঝুনঝুনি মার্কা ফোনের আবার মান সম্মান আছে? যে ওটাকে অপমান করবো। ওটাকে যদি অপমান করি তাহলে অপমানেরাও লজ্জা পাবে।”
“দেখ ভাইয়া এবার কিন্তু তুই বেশি বাড়াবাড়ি করছিস। তুই জানিসনা,, এই ফোনটা কিনতে আমি কতো কাঠ-খড় পোড়িয়েছি। মা-বাবাকে কতো কষ্টে ফোনটা কেনার জন্য রাজি করিয়েছি। দিন রাত এক করে এস.এস.সি. পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার পর বাবা আমাকে এই ফোনটা কিনে দিয়েছে।”
“ওমা তুই একটা ফোনের জন্য কতো কষ্ট করেছিস। তা আমি এখন তোর এই ফোনের জন্য একটা জাদুঘর বানিয়ে দেই। সেখানে এই ফোনটা সুন্দর করে সাজিয়ে রেখে উপরে লিখে দিবি পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হওয়া আমার অ্যান্টিক মুঠোফোন।”
কথাটা বলেই মিহির হা হা করে হেসে দিলো। মিহিরের এমন বিদ্রুপের স্বরের কথা শুনে মেঘ ভীষন রেখে গেলো। ও বেড থেকে একটা বালিশ উঠিয়ে মিহিরের গায়ে ছুড়ে মেরে দাত কিড়মিড় করে বললো
“ওই তুই এক্ষুনি আমার রুম থেকে বের হয়,,, নাহলে তোকে আমি কাচা চিবিয়ে খাবো। আর যাওয়ার আগে তোর ওই কাজখোড় ভাইয়ের দেওয়া ফোনটা নিয়ে যা । আমি তো আমার ওই পুরোনো ফোনটাই চালাবো,,দেখি কে আমাকে আটকায় !”
মেঘের কথায় মিহির কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে কিছু একটা ভাবলো। তারপর বালিশের পাশে রাখা মেঘের পুরোনো ফোনটা ছো মেরে হাতে নিয়ে জানালা দিয়ে নিচে ফেলে দিয়ে মেঘকে উদ্যেশ্য করে বললো
“এইবার দেখি তুই ওই ঠেলাগাড়িটা কিভাবে চালাস!”
ঘটনাটা এতো তাড়াতাড়ি ঘটে গেলো যে,মেঘ হা করে হতবম্ভ হয়ে ফোনটার পরে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।আর মিহির ফোনটা ফেলে দিয়ে দৌড়ে মেঘের রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। মেঘ রেগে জোড়ে চিল্লিয়ে মিহির কে উদ্যেশ্য করে বললো
“মিহিরের বাচ্চা,হাড়ামি ,কুওা, গন্ডার,ছাগলের তিন নাম্বার ছানা তোকে আমি ছাড়বো না। তোকে আমি কচু কাটা করবো, সাপের ডিমের ভর্তা বানিয়ে খাওয়াবো, গোবরের পানিতে চুবানি দিবো, সাদা বিল্লি কোথাকার।”
_________________________
ঘড়ির কাটা জানান দিচ্ছে এখন ঠিক দুপুর বারোটা ।সূর্যি মামা মাথার উপরে বসে তার জলন্ত অগ্নিকুন্ড দ্বারা পথিবীর মানুষের উপরে নিজের রাগ বর্ষন করছে । কিন্তু বারবার তার কাজে বাধা হয়ে দাড়াচ্ছে আকাশে খেলা করতে থাকা ফালি ফালি মেঘেরা।যখনি সূর্যি মামা নিজের তেজ দিয়ে মানুষদের ঝলসে দেওয়ার চেষ্টা করছে,, তখনি এক ফালি মেঘ এসে তাকে ঢেকে দিয়ে চারপাশে মৃদু বাতাস বইয়ে দিয়ে যায় । সাড়া আকাশ জুরে চলছে মেঘের আর সুর্যের এই অদ্ভুত লুকোচুরি খেলা ।
ভার্ষিটির গেটের সামনে নাক মুখ কুচকে দাড়িয়ে আছে মেঘ ওর পাশেই দাড়িয়ে আছে ওর দুই বেষ্টু রিজা আর দিশা ।
রিজা হলো রিয়ানের ছোট বোন । ওর সাথে মেঘের পরিচয় হয় কলেজে উঠে । ওরা দুজন ইন্টার ফাষ্ট ইয়ার থেকেই একসাথে পড়শোনা করছে।
আর দিশা হলো মেঘের ছোট বেলার বন্ধু।ওরা ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস এইট পর্যন্ত একসাথেই পড়াশোনা করেছে । দিশা যখন ক্লাশ এইটে পড়ে তখন ওর মা মারা যায় ।তার ছয় মাস পড়ই ওর বাবা আরেকটা বিয়ে করে নিয়ে আসেন।দিশার সৎ মা ওর উপর প্রচন্ড অত্যাচার করতো। মারতো ,অনেক কাজ করাতো, ঠিকঠাক মতো খেতেও দিতো না । মেঘ মাঝে মাঝে দিশাকে ওদের বাসায় নিয়ে গিয়ে রাখতো,, অসুস্থ থাকলে ডাক্তার দেখাতো, ঔষধ কিনে দিতো। কিন্তু দিশা মেঘদের বাসায় গেলেও ওকে ওর সৎ মায়ের কাছে মার খেতে হতো । ছয় মাস এভাবে কেটে যাওয়ার পর একদিন দিশার খালামনি সবটা জানতে পেরে দিশাকে ওনার সাথে সিলেট থেকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। তারপর থেকে আর মেঘের সাথে দিশার কোনো যোগাযোগ হয়নি । যখন মেঘ আর রিজা একসাথে এই ভার্ষিটি তে ভর্তি হয় তখনই মিহিরের থেকে জানতে পারে দিশাও এই ভার্ষিটিতেই ভর্তি হয়েছে । দিশার খালাতো ভাই হচ্ছে আহির আর মিহিরের ফ্রেন্ড এবং এই ভার্ষিটির ভিপি। তখন থেকেই মেঘ, দিশা, রিজা, একসাথে আছে।
রিজা বিরক্তি নিয়ে বললো
“এই সাড়িকা সাঈফা জিবনেও সোধরাবে না। সব কিছুতেই দেরি করা ওদের সভাব হয়ে গেছে । রোদের মধ্যে কতক্ষন ধরে দাড়িয়ে আছি । আর এই দুইজনের এখনো আসার কোনো নাম নেই।”
মেঘ কাদো কাদো গলায় বললো
“আমার অনেক খিদে পেয়েছে ওরা এখনো আসছে না কেনো। এখান থেকে রেষ্টুরেন্টে যেতে যেতে তো আমি খিদেতে মরেই যাবো। আম্মু গোওওওও”
দিশা ধমক দিয়ে বললো
“একদম ছাগলের মতো ভ্যা ভ্যা করবি না। সকালে না খেয়ে আসার সময় মনে ছিলো না ইডিয়েট।”
“আরে আমি কি ইচ্ছে করে খেয়ে আসিনি নাকি? সকালে ব্রেকফাস্ট করতে নেমে দেখি ওই ইদুরটা পুরো ফরমাল ড্রেস পড়ে পটের বাবু সেজে মনের সুখে ব্রেকফাস্ট করছে। ওকে দেখেই আমার মেজাজ টা খারাপ হয়ে গেলো। শয়তানের হাড্ডিটা কালকে রাতে আমার ফোনটা নিচে ফেলে দিয়েছে । ছয়তলা থেকে আমার ফোনটা নিচে পড়ে টুকরা টুকরা হয়ে গেছে । কালকে রাত বারোটা পর্যন্ত খুজেও ফোনটার সবগুলো টুকরো খুজে পাই নাই। তাইতো ওকে শান্তিতে ব্রেকফাস্ট করতে দেখে মনে পড়ে গেলো ও আমার ফোনের খুনি। কুওাটা কে মারার জন্য তাড়া করতে গেলাম,, সেটা ও বুঝতে পেরে অফিসের ফাইলগুলো হাতে নিয়ে সোজা দৌড়ে বাসা থেকে বের হয়ে লিফটে চরে নিচে নেমে,, গাড়িতে উঠলো আর ড্রাইবার আঙ্কেল গাড়ি নিয়ে চলে গেলো। আমিও অন্য লিফট দিয়ে নিচে নেমে দৌড়ে ওর গাড়ির পিছনে যাচ্ছিলাম তখনি পা শ্লিপ খেয়ে মুখ থুবরে রাস্তায় পড়ে গেছি। তাকিয়ে দেখি আব্দুল চাচা পাইপ দিয়ে গাছে পানি দিচ্ছিলো আর সেই পানিতে রাস্তাটা পুরো ভিজে গেছে।তোরা জানিস আমাদের বাসার কিছু ভাড়াটেরা আমাকে এভাবে পড়ে যেতে দেখে মুখ টিপে হাসছিলো । আমি সবার সামনে ভীষন লজ্জায় পড়ে গেছিলাম। তারপর আবার সাওয়ার নিয়ে রেডি হতে হতে অনেক সময় হয়ে গেছিলো তাই আর খাইনি।”
“ওহ মাই গড আপ্পি তোমার জন্য আমার ক্রাশ ব্রেকফাস্ট না করেই অফিসে চলে গেছে,,, আহারে বেচারা ,, এখন নিশ্চয়ই ওর অনেক খিদে পেয়েছে।”
সাঈফার আওয়াজ শুনে মেঘ, রিজা, দিশা, পিছনে তাকায় দেখে সাড়িকা আর ছাঈফা কাধে ব্যাগ নিয়ে ওদের থেকে কিছুটা দূরে দাড়িয়ে আছে। সাঈফার কথায় রিজা ,দিশা, সাড়িকা হাহা করে হেসে দেয় । কিন্তু মেঘ ওর কথায় ভীষন রেগে গিয়ে ,, ওর পিছনে তাড়া করতে করতে দাতে দাত চেপে বলে
” আহারে আমার বেচারার বেচারি,,, একে তো এতো দেরি করে এসেছিস তার উপর আবার ওই গাধাটার পক্ষ নিচ্ছিস! তুই আমার বোন নাকি ওর বোন??”
সাঈফা দৌড়াতে দৌড়াতে হাপানো কন্ঠে বললো
“ছিঃ আপি আমি মিহিরের বোন হতে যাবো কোন দুঃখে। ও তো আমার একমাএ ক্রাশ, আমার লাইফ , আমার জান, আমার কলিজা।”
“তোর ওই ক্রাশ, লাইফ,জান, কলিজা আমি ব্যালেন্ডারে দিয়ে জুস বানিয়ে তোকে গেলাবো বজ্জাত মেয়ে।”
সাড়িকা হাসতে হাসতে দিশা আর রিজাকে উদ্দ্যশে করে বললো
“আজকে সাঈফা গেলো,,,ওর ক্রাশের উপর বরাদ্দ করা মাইর সব ওর পিঠে পড়বে।”
_________________________
মেঘরা একটা রেষ্টুরেন্টের সামনে এসে রিকশা থেকে নামলো।তারপর দুটো রিকশারই ভাড়া মিটিয়ে ভিতরে যাওয়ার উদ্দ্যেশে পা বাড়ালো। তখনই ওদের ক্রস করে বেশ এক্সপেনসিভ তিনটা কার এসে রেষ্টুরেন্টের পার্কিং লডে কার পার্ক করলো,, গাড়ি গুলো চিনতে মেঘ, সাড়িকা, সাঈফার একটুও অসুবিধা হলো না। প্রথম গাড়িটার ড্রাইভিং সিট থেকে হিয়ান আর তার পাশের সিট থেকে আলিশা নামলো। দ্বীতিয় গাড়ির সামনে থেকে দুইজন গার্ড নেমে এসে একসাথে পিছনের দুই সিটের দরজা খুলে দেয়,, সেখান থেকে আহীর আর মিহির নেমে আসে। দুজনের গায়েই পুড়ো ফরমার্ল গেটাপ,, বোঝাই যাচ্ছে অফিস থেকে সরাসরি এখানে এসেছে। তীত্বিয় গাড়িটা থেকেও দুইজন গার্ড নেমে এসে গাড়ির পিছনের দরজা খুলে দেয় ,, সেখান থেকে আহান আর অভি বেড়িয়ে আসে। আহান ইশারা করে গার্ড চারজনকে রেষ্টুরেন্টের ভিতরে গিয়ে বসতে বলে। ওরাও মাথা নেড়ে সম্মতি জানিয়ে ভিতরে চলে যায়। আহান মেঘদের কাছে এসে গম্ভীর স্বরে জিঙ্গেস করে
“তোমরা সবাই এখানে কি করছো?? তোমাদের তো এখন ভার্ষিটিতে থাকার কথা!”
সাড়িকা হাসি মুখে জবাব দিলো
“আসলে ভাইয়া আপ্পি সকালে বাসা থেকে ব্রেকফাস্ট করে আসেনি,, আর সারাদিনেও কিছু খাওয়ার সময় পায়নি,, অনেক দিন আমাদেরও বাইরে কোথাও খাওয়া হয়না।তাই ক্যান্টিনে না গিয়ে সবাই এখানে খেতে চলে আসলাম।”
মেঘ খেয়ে আসেনি শুনে আহান রাগি চোখে মেঘের দিকে তাকালো।আহান কে এভাবে তাকাতে দেকে মেঘ ভয়ে কয়েকটা শুখনো ঢোক গিলে মাথাটা নিচু করে ফেললো। সাঈফা সাড়িকার হাতে একটা চিমটি কেটে ফিসফিসিয়ে বলল
“গাধা কোথাকার,, কোথায় কি বলতে হয় সেটাও জানিস না?”
সাঈফার কথায় সাড়িকা ছোটে করে জিভ কাটলো।ও বুঝলো মেঘ খেয়ে আসেনি সেটা আহানদের বলা ঠিক হয়নি।আহান এখনো মেঘের রাগি চোখেই তাকিয়ে আছে। মেঘ মাথা তুলে আহানের দিকে তাকানোর সাহস পাচ্ছে না,, ভয়ে ওর হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে। আহীর মেঘের সামনে এসে ওর বাহু ধরে ঝাকিয়ে ঝাঝালো গলায় বললো
“সকালে খেয়ে আসিস নি কেনো? না খাওয়ার জন্য পরশু দিন রাতেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিস মনে নেই? এতো অনিয়ম কেনো করিস তুই?”
মেঘ কিছু বলছে না মাথাটা নিচু করে আছে। এই মূহুর্তে ও আহীরকেও ভীষন ভয় পাচ্ছে। মিহির আর আহিরের সাথে মেঘ সব সময় ঝগড়া ঝাটি মারামারি করলেও ওদের রাগটাকে ও ভীষন ভয় পায়। মেঘ ভালো করেই জানে এরা দুজন রেগে গেলে ঠিক কি কি করতে পারে। মেঘ কিছু বলছেনা দেখে, আহীর মেঘের বাহু ছেড়ে পিছনে ঘুড়ে মিহিরকে উদ্দ্যেশ্য করে রাগি গলায় বলে
“তুই বাসা থেকে বের হওয়ার আগে ওকে খাইয়ে বের হতে পারলি না? জানিস না ও একটু সুজোগ পেলেই কিভাবে অনিয়ম করা যায় সেই বাহানা খোজে!”
মিহির এতোক্ষন রেগে বোম হয়ে মেঘের দিকেই তাকিয়ে ছিলো,,আহীরের কথা শুনে কর্কশ গলায় বললো
“ওকে আমি কিভাবে খাওয়াবো? ও কখনো কারো কথা শোনে? সবসময় নিজে যেটা ভাববে সেটাই ঠিক,,আর বাদ বাকি সবাই ভূল”
মেঘের এবার ভীষন কান্না পেলো। নাহয় একটু সকালে আসেনি,, তাই বলে ওরা ওকে এভাবে সবার সামনে বকাবকি করবে,,, আর ইচ্ছে করে খেয়ে আসেনি নাকি,,, মিহিরের পিছনে দৌড়াতে গিয়েই তো পড়ে গিয়ে এতো দেরি হয়ে গেলো,,,, নিজে ভুল করে আমার মাথায় দোষ চাপিয়ে দিয়ে বলছে,,আমি নাকি কারো কথা শুনি না। একে তো পেটের ভেতর ইদুর লাফালাফি করছে,,,তার উপর আবার পায়েও প্রচণ্ড ব্যাথ্যা করছে। সকালে যখন পড়ে গিয়েছিল তখন খালি পায়ে থাকার কারনে ডান পায়ের গোড়ালির নিচ থেকে অনেক খানি কেটে গেছে।
সকালে সময় ছিলো না তাই কাটা জায়গায় কোনো অ্যান্টি স্যাপটিক বা ওয়েনমেন্ট লাগায় নি,, কোনো রকম করে একটা ব্যান্ডেজ পেচিয়ে রেখেছে শুধু। কোনো পেইন কিলারও খায়নি। সকাল বেলা ব্যাথ্যাটা তেমন একটা ছিলো না কিন্তু এখন যতো সময় যাচ্ছে ব্যাথ্যাটা ততোই বেড়ে যাচ্ছে। মেঘ আর চোখে একবার আহানের দিকে তাকায় দেখে আহান এখনো ওর দিকে তীক্ষ্ম চোখে তাকিয়ে আছে। ও এক পলক তাকিয়েই নিজের চোখ তাড়াতাড়ি নামিয়ে ফেলে মাটির দিকে স্থির করলো। আহানের ওই রাগি তীক্ষ্ণ চোখে বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকার সাহস মেঘের নেই।
দিশা, রিজা এক পাশে চুপচাপ দাড়িয়ে আছে। অভি, হিয়ান,আলিশা, অসহায় দৃষ্টিতে একবার আহানের দিকে তো একবার মেঘের দিকে তাকাচ্ছে,, এখন মেঘের পক্ষ নিয়ে আহানকে কিছু বলা মানে সিংহের গুহায় ঢুকে সিংহের লেজ ধরে টান দেওয়া। মিহির আর আহীর এখনো রেগে মেঘের দিকেই তাকিয়ে আছে। সাড়িকা সাঈফা ভাবছে কিভাবে ব্যাপারটা স্বাভাবিক করা যায়। হটাৎ সাড়িকা কিছু একটা ভেবে নিজেকে সামলে নিয়ে শুকনো গলায় হিয়ান কে উদ্দ্যেশ্য করে জিঙ্গেস করলো
“ভাইয়া তোমরা সবাই এখানে কিভাবে আসলে?”
সাড়িকার এমন বোকা বোকা প্রশ্ন শুনে সাঈফার ইচ্ছে করছে ওকে একটা লাথি মাড়তে। সাঈফা মনে মনে বললো মাথামোটা একটা যেখানে দেখলো ওরা গাড়িতে করে এসেছে তারপরেও জিঙ্গেস করছে কিভাবে আসলে!আহীর সাড়িকার দিকে রক্তিম চোখে তাকিয়ে বিদ্রূপের স্বরে বললো
“তোর বাপ যৌতুকে আমাকে যে উড়ন্ত রথটা দিয়েছিলো সেটাতে উড়তে উড়তে এসেছি। কেনো চোখে দেখতে পাসনি?”
সাড়িকা একটা শুকনো ঢোক গিলে কাপা কাপা গলায় বললো
“না মানে,,, আমি বলতে চাইছিলাম যে তুমি আর মিহির ভাই তো অফিসে ছিলে। আর হিয়ান ভাইয়া কে সকালে বাড়িতে দেখে আসছি,, অভি ভাইয়ার তো এই টাইমে অফিসে থাকার কথা। তাহলে সবাই একসাথে আসলে কিভাবে?”
আহীর কিছু বলতে যাবে তার আগেই হিয়ান জোড় পূর্বক একটা মেকি হাসি দিয়ে বললো
“আমি আর আলিশা লং ড্রাইভে বেড়িয়েছিলাম। তখনই আহান ফোন করে বলে আমরা বিডিতে ব্যাক করেছি,, সেই উপলক্ষে নাকি আমাদের রিলেটিভ এবং ফ্যামেলি ফ্রেন্ডদের বাড়িতে গিফটস পাঠাতে হবে,, তাই আমরা যেনো তাড়াতাড়ি শপিংমলে চলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি ‘আহান’ আহির আর মিহিরকেও ফোন করে অফিস থেকে ডেকে নিয়েছে। তার কিছুক্ষন পর দেখি অভিও চলে আসলো ,, অভিকে অফিস টাইমে অফিসে না গিয়ে শপিংমলে আসার কারন জিঙ্গেস করতেই,,, অভি জানায় ও ওর জবটা ছেড়ে দিয়েছে। তারপর আর কি,, সবাই মিলে কিছুক্ষন কেনাকাটা করে সেগুলো বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে এখান চলে এলাম।”
হিয়ানের কথা শেষ হতেই সাঈফা অভির দিকে তাকিয়ে অবাক কন্ঠে জিঙ্গেস করলো
“অভি ভাইয়া তুমি জবটা ছেড়ে দিয়েছো? কিন্তু কেনো? এতো ভালো একটা জব ,,, শুরুতেই আশি হাজার টাকা স্যালারি দিয়েছে । আর তোমার যা কলিফিকেশন তাতে দুই এক বছরের মধ্যেই তোমার র্যাঙ্ক আরো বাড়ানো হতো।তাহলে এতো ভালো জবটা ছাড়লে কেনো?”
আলিশা অনেক কষ্টে নিজের হাসি চেপে রেখে বললো
“কালকে রাতে নাকি বাপি ওকে নিজের চেম্বারে ডেকে বলেছে ,, যদি এই জবটা ছেড়ে আমাদের অফিসে জয়েন না করে তাহলে বাপি ওকে কান ধড়িয়ে রাস্তায় দাড় করিয়ে রাখবে। নাহলে একজন ষাট বছরের বুড়ির সাথে বিয়ে দিয়ে দেবে।”
আলিশার কথা শুনে সাড়িকা, সাঈফা হা হা করে হেসে দিলো,,, ওদের হাসি দেখে দিশা, রিজা , আর আলিশাও ফিক করে হেসে দিলো। হিয়ান ঠৌট চেপে হাসছে। আহীর আর মিহির এতক্ষন রেগে থাকলেও এবার না হেসে পারলো না। শপিং মলে বসেও এই বিষয়টা নিয়ে সবাই অনেক হাসাহাসি করেছে। মেঘ সবাইকে হাসতে দেখে ওর এতোক্ষনের সব ভয় জানালা দিয়ে উড়ে পালিয়ে গেলো। ও খিলখিল করে হেসে দিলো । আহানের তীক্ষ্ণ চোখ দুটো হটাৎ করেই শীতল হয়ে আসলো। ও একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে মেঘের হাসির দিকে তাকিয়ে আছে।
সবাইকে এভাবে হাসতে দেখে অভি কিছুটা লজ্জা পেলো। ও লজ্জাটা ঢাকতে রাগ করার করার ভান করে বললো
“আপনাদের সবার রাগ আর হাসাহাসির পর্ব শেষ হলে আমরা এবার রেষ্টুরেন্টের ভিতরে যেতে পাড়ি? নাকি সাড়াদিন সবাই এখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে হাওয়া খেয়েই পেট ভড়বেন।”
আলিশা হাসি থামিয়ে বললো
“রিয়েলি গাইস আমার অনেক খিদে পেয়েছে সবাই ভিতরে চলো প্লিজ।”
আলিশার কথায় সম্মতি জানিয়ে সবাই হাসি মুখেই রেষ্টুরেন্টের ভিতরে চলে গেলো। আহান গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকতে যাবে তখনই খেয়াল করলো মেঘ বাকিদের সাথে ভিতরে ঢোকেনি। ও আসে পাশে তাকিয়ে মেঘকে খুজতে লাগলো,,কিছু একটা মনে করে ঘাড় ঘুড়িয়ে পেছনে তাকাতেই দেখলো মেঘ আস্তে করে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটছে।আহান দ্রুত হেটে মেঘের সামনে গিয়ে দাড়ালো। মেঘের পায়ের দিকে ভালো করে তাকাতেই দেখতে পেলো ওর পায়ে ব্যান্ডেজ করা। আহান চিন্তত ভঙ্গিতে মেঘের দিকে তাকিয়ে জিঙ্গেস করলো
“তোমার পায়ে কি হয়েছে? ব্যান্ডেজ করা কেনো?”
আহান এভাবে হটাৎ করে প্রশ্ন করায় মেঘ কিছুটা থতমত খেয়ে গেলো। কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না,,,সত্যিটা বললে নিশ্চিত আবার বকাবকি করবে,, তাই ও মাথাটা নিচু করে হাত কচলাতে লাগলো।আহান ধমক দিয়ে বললো
“কিছু জিঙ্গেস করেছি তো।”
আহানের ধমকে মেঘ কেপে উঠলো। কাপা কাপা গলায় বললো
“ক্ কেটে গ্ গেছে…….”
“কীভাবে কাটলো?……”
“প্ পড়ে গ্ গিয়ে কেটে গেছে,,,”
আহান শক্ত কন্ঠে বললো
“কীভাবে পড়ে গেলে,,,”
মেঘ ভয়ে আহানকে গড়গড় করে কালকে রাতে মিহিরের ফোন ফেলে দেওয়া থেকে শুরু করে সকালে আছাড় খেয়ে পড়ে যাওয়া পর্যন্ত সবটা বলে দিলো। মেঘের কথা শুনে আহানের মেজাজ টা পচন্ড পরিমান বিগড়ে গেলো। কিন্তু মুখে কিছুই বললো না,, রাগি চোখে মেঘের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ওকে কোলে তুলে সামনের দিকে হাটা দিলো। হটাৎ এভাবে কোলে তুলে নেওয়ায় মেঘ চমকে উঠে চোখ বড় বড় করে আহানের দিকে তাকালো।তারপর হাত পা ছুড়তে ছুড়তে বললো
“ভাইয়া প্লিজ আমাকে কোল থেকে নামান আমি হেটে যেতে পড়বো। ”
আহান কিছু না বলে ওর মতো হাটতে লাগলো,, মেঘ অসহায় গলায় বললো
“প্লিজ আমাকে নামিয়ে দিন,, অনেকেই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। সবাই কি ভাববে।”
আহান বললো
“আই ডোন্ট কেয়ার,, কে কি দেখলো বা বললো তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না।”
“বাট,,আই ডু,,, এইভাবে আমাকে দেখলে, যে কেউ আমার নামে বাজে কথা বলতে পারে ।যেটা আমি একদমই সহ্য করতে পারবো না। একবার এই স্বার্থপর পৃথিবীর মানুষ গুলোর মুখোস ছাড়া চেহারাটা দেখেছি। প্রতিনিয়তো তাদের ধারালো কথার ছুড়ির আঘাত দিয়ে নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করেছি। আরেক বার এদের কুৎসিত কথা গুলো শোনার বা সহ্য করার ইচ্ছে শক্তি কোনোটাই আমার নেই। ”
শেষের কথা গুলো বলার সময় মেঘের গলাটা ধরে এলো।ওর যন্ত্রণা মিশ্রিতো কথা গুলো শুনে আহানের পা টা থমকে গেলো। আহান অবাক হয়ে মেঘের অশ্রুসিক্ত চোখের দিকে তাকালো। কতোটা কষ্ট পেলে একটা বাচ্চা মেয়ে এই কথা গুলো বলতে পারে,,,সেটা আহান ভালো করেই জানে। কিছু মানুষের স্বার্থপরতার জন্য মেয়েটা বিনা দোষে কতো অপমান সহ্য করেছে। ভেবেই আহান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো,, তারপর মেঘের দিকে তাকিয়ে বললো
“চার বছর আগে তোমার জন্য আমি কিচ্ছু করতে পারিনি। বাট আই প্রমিস,, তোমাকে বাজে কথা তো দূরের কথা, এখন যদি কেউ তোমার দিকে চোখ তুলেও তাকায়,, ,, তার এমন অবস্থা করবো শেয়াল কুকুরও তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।”
আহানের কথাগুলো শুনে মেঘের হাত পা ছোড়াছুড়ি বন্ধ হয়ে গেলো।ও অবাক হয়ে আহানের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো।মেঘকে এভাবে তাকাতে দেখে আহান দুষ্ট হেসে বললো
“দ্যাটস লাইক এ গুড গার্ল।এভাবেই নড়াচড়া না করে চুপচাপ শান্ত মেয়ের মতো থাকো নাহলে একদম কোল থেকে ফেলে দেবো। তারপর কোমর টা ভেঙে গেলে আর তোমাকে কেউ বিয়ে করবে না। বাধ্য হয়ে আমাকেই হয়তো এই কোমর ভাঙা মেয়েটাকে বিয়ে করতে হবে। ”
বলেই আহান আবার সামনের দিকে হাটা দিলো।আহানের কথায় মেঘ লজ্জায় মাথাটা নিচু করে রাখলো। আহান রেষ্টুরেন্টের মধ্যে ঢুকে কয়েক পা এগোতেই হটাৎ কিছু একটা দেখে দাড়িয়ে গেলো। ওর ফেইস রাগে লাল হয়ে গেলো। ও রক্তিম চোখে সামনে থাকা মানুষ গুলোর দিকে তাকিয়ে আছে।দেখে মনে হচ্ছে এই চোখ দিয়ে ওই মানুষ গুলোকে পুড়িয়ে ভষ্ম করে দেবে।আহানের এমন হটাৎ রেগে যাওয়ার কারন বুঝতে পারলো না মেঘ তাই আহানের দৃষ্টি অনুসরন করে সামনের দিকে তাকালো।তাকিয়েই ও চমকে উঠলো,,,অবাক হয়ে সামনের মানুষ গুলোর দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো
‘এরা এখানে কি করছে??’
#ভালোবাসার_অনুভূতি
#লেখিকাঃতানিশা_তিশা_মনি
#পর্ব_14
আহান রেষ্টুরেন্টের মধ্যে ঢুকে কয়েক পা এগোতেই হটাৎ কিছু একটা দেখে দাড়িয়ে গেলো। ওর ফেইস রাগে লাল হয়ে গেলো। ও রক্তিম চোখে সামনে থাকা মানুষ গুলোর দিকে তাকিয়ে আছে।দেখে মনে হচ্ছে এই চোখ দিয়ে ওই মানুষ গুলোকে পুড়িয়ে ভষ্ম করে দেবে।আহানের এমন হটাৎ রেগে যাওয়ার কারন বুঝতে পারলো না মেঘ ।তাই আহানের দৃষ্টি অনুসরন করে সামনের দিকে তাকালো।তাকিয়েই ও চমকে উঠলো,,,অবাক হয়ে সামনের মানুষ গুলোর দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো ‘এরা এখানে কি করছে??’
ওদের থেকে কিছুটা দূরে রেষ্টুরেন্টের একপাশে বসে আছে আবির আর জেরিন। শুধু আবির আর জেরিন না,, সাথে মেঘের দুই ফুপি আর ফুপা,,,চাচা-চাচীরা আর ওর সব কাজিনেরাও আছে। ওরাও সবাই অবাক চোখে মেঘদের দিকেই তাকিয়ে আছে। মেঘ ঘাড় ঘুড়িয়ে ভয়ে ভয়ে আহানের দিকে তাকালো দেখলো রাগের কারনে আহানের নাকের ডগা লাল হয়ে গেছে। আহান কিছুক্ষন ওদের দিকে তাকিয়ে থেকে সামনে এগিয়ে গিয়ে মেঘকে একটা চেয়ারে বসিয়ে দিলো। তারপর হাটু গেড়ে মেঘের সামনে বসে ওর কাটা পা টা নিজের হাটুর উপড়ে রাখলো। মেঘকে এভাবে কোলে করে আনতে দেখে হিয়ানরা সবাই অবাক হলো।একটু আগে তো মেঘ ঠিকই ছিলো হটাৎ এমন কি হলো যে আহান ওকে কোলে করে ভিতরে নিয়ে এসেছে। ওরা ভ্রু কুচকে আহান কি করে সেটা দেখতে লাগলো।
ওরা সবাই রেষ্টুরেন্টে ঢুকেই আবিরদের দেখেছিলো কিন্তু কোনো রিয়্যাক্ট করেনি এমন একটা ভাব করেছে যেনো ওদের কাউকে চিনেই না। আর আবিররাও ওদের খেয়াল করেনি কারন ওরা সবাই নিজেদের মতো কথা বলায় ব্যাস্ত ছিলো।খেয়াল করলেও দিশা আর মিহিরকে ছাড়া ওরা কাউকেই চিনতে পারতো না। হিয়ান, অভি, আলিশা, সাড়িকা, সাঈফা,রিজা ওরা সবাইকে না চিনলেও আবির, জেরিন আর মেঘের মেজ চাচা-চাচীকে চেনে । মিহির অনেক আগেই আবির আর জেরিনের পিক ওদের দেখিয়েছে। আর মেঘের মেজ চাচা – চাচীর সাথে হিয়ানদের চার বছর আগে হসপিটালেই আলাপ হয়েছিলো। আর এই চার বছরে মেঘের দাদু বাড়ির অন্য কেউ মেঘদের সাথে যোগাযোগ না রাখলেও মেঘের মেজ চাচা-চাচী মাঝে মাঝে মেঘদের বাড়িতে বেড়াতে আসতো,, কয়েক বার হিয়ান আর আহানদের বাড়িতেও গিয়েছিলো।
এখন দুপুর সাড়ে বারোটা বাজে তাই রেষ্টুরেন্টে তেমন একটা লোক নেই। এই সময়ে কেউ নিজ নিজ কর্ম স্থানে থাকে। আবার কেউ কেউ স্কুলে, কলেজে বা ভার্সিটিতে আছে।এই মধ্যপ্রহরের সময়টা প্রায় সবাইয়ি বিজি থাকে।আহীর, মিহির, অভি ,হিয়ান,একটা টেবিলে বসেছে। আর ওদের পাশের টেবিলৈ বসেছে আলিশা, সাঈফা, সাড়িকা, দিশা আর রিজা। ওদের সবার থেকে খানিকটা দূরে আবির জেরিন সহ মেঘের অন্যান্য কাজিনরা আর বড়রা বসে আছে। ওনারা একএক টেবিলে ছয়জন করে বসে নিজেদের পছন্দ মতো স্নাক্স খাচ্ছে ।আহান যখন মেঘকে কোলে নিয়ে আসছিলো তখন রেষ্টুরেন্টের অনেকেই উৎসুক দৃষ্টিতে ওদের দিকে তাকিয়ে ছিলো সেই দৃষ্টি অনুসরণ করে আবিরাও তাকিয়ে ছিলো। কিন্তু একে তো মেঘকে এতো বছর পর এখানে দেখলো ,তাও আবার এভাবে একটা ছেলের কোলে দেখে ওরা শকড হয়ে মুখ হা করে আহান আর মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে। আহীর ওয়েটারকে খাবারের ওডার্র দিচ্ছিলো আহানকে ওভাবে হাটু গেড়ে বসতে দেখে অবাক হয়ে আহান কে উদ্দেশ্য জিঙ্গেস করলো
“what is this bro? একে তো ওকে ভেতরে কোলে করে নিয়ে আসলে তার উপর হাটু গেড়ে ওর সামনে বসে পড়েছো। এখন কি খাওয়া রেখে বিয়ের জন্যে প্রপোজ করবে?”
আহীরের কথায় মেঘ চোখ বড় বড় করে আহানের দিকে তাকালো। আহান দাতে দাত চেপে বললো
“Shut up আহীর,, মেজাজ খাড়াপ আছে উল্টোপাল্টা কথা বলিস না। আর ওকে আমি এখন প্রপোজ করবো না,, খুন করে ফেলবো!”
আহানকে এভাবে রাগি স্বরে কথা বলতে দেখে আহীর ভ্রু কুচকে চিন্তিত ভঙ্গিতে জিঙ্গেস করলো
“what happen bro? Anything serious? আর ওরই বা কি হয়েছে?”
“কি আর হবে,,,, পা কেটে গেছে।”
মিহির বসা থেকে দাড়িয়ে বললো
“হোয়াট? কেটে গেছে মানে কি? কীভাবে কাটলো?”
আহান শক্ত কন্ঠে বললো
“সেটা তোর বোনকেই জিঙ্গেস কর? মহা রানির তো প্রতিদিন একটা অঘটন না ঘটালে পেটের ভাত হজমই হয় না! রোজ কিছু না কিছু উল্টোপাল্টা কাজ করে ওর নিজেকে হার্ট করতেই হবে।”
ওদের কথার মাঝেই মেঘের মেজ চাচা এসে আহানকে উদ্দ্যেশ্য করে বললেন
“হেই ইয়াং ম্যান,, হাউ আর ইউ?”
আহান দাড়িয়ে ওনাকে হাগ করে মুচকি হেসে বললো
“আ’ম ফিট এ্যান্ড ফাইন আঙ্কেল। আপনি কেমন আছেন?”
“আমিও ভালো আছি বেটা। তোমাদের কি অবস্থা? দেশে কবে আসলে?”
“পরশু দিন সকালে বিডি তে ব্যাক করছি আঙ্কেল। কিন্তু আপনারা সবাই এখানে কেনো? কোনো অকেশন আছে নাকি?”
“সামনের সপ্তাহে আমার ছেলের বিয়ে।তাই আজকে ওরা সবাই বিয়ের শপিং করতে বেড়িয়েছে। কেনো তোমরা জানো না? চারদিন আগেতো আমি নিজে তোমাদের বাড়িতে গিয়ে ইনভিটেশন কার্ড দিয়ে আসছি। তোমার মামা বাড়িতেও গিয়ে ছিলাম। ওনারা বলেছেন ওনারা সবাই বিয়েতে আসবেন।”
তারপর ওনি মেঘের দিকে তাকিয়ে চিন্তিত ভঙ্গিতে বললেন
“একি মামনি তোমার পায়ে কি হয়েছে? ব্যান্ডেজ করা কেনো?”
মেঘ মৃদু স্বরে বললো
“কেটে গেছে কাকাই।”
“কীভাবে কাটলো মা? একটু সাবধানে চলাফেরা করতে পারিস না? অনেক খানি কেটে গেছে নাকি?”
আহান কটাক্ষ করে বললো
“ইনি যদি সাবধানে চলাফেরা করেন তাহলে নিজের হাত-পা কাটবে কে? তাই ইনি ভুলেও কখনো সাবধানে চলাফেরা করেন না।এ্যান্ড ডোন্ট ওয়ারি আঙ্কেল, পা বেশি কেটে গেলেও কোনো প্রভলেম নেই ছোট্ট একটা ইনজেকশন দিলেই পায়ের ব্যাথ্যা একদম চলে যাবে।”
ইনজেকশনের কথা শুনে মেঘের চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেলো। ও কাপা কাপা কন্ঠে বললো
“ই্-ইনজেকশন?”
আহান বাকা একটা হাসি দিয়ে বললো
“হ্যা ইনজেকশন’,,, একটা ইনজেকশন দিলেই দেখবে তুমি হয়ে হাটতে পারছো। ”
“আমি কিছুতেই ইনজেকশন দেবো না।”
আহান সিরিআস হওয়ার ভান করে বললো
“ইনজেকশন তো তোমাকে দিতেই হবে।”
বলেই আহান গার্ডরা যে টেবিলে বসেছে সেই টেবিলের দিকে তাকিয়ে একজন গার্ডকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“শাওন গাড়ি থেকে ফাষ্টএইড বক্সটা নিয়ে আসো।”
আহানের কথায় শাওন নামের ছেলেটা মাথা নেড়ে সম্মতি জানিয়ে বাইরে চলে গেলো। ইনজেকশন দেওয়ার ভয়ে মেঘের হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেছে। আহান বাকা হেসে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে। মেঘের কাকাই সহ বাকিরা সবাই মুখ টিপে হাসছে। ওরা সবাই জানে মেঘ ইনজেকশন ভীষন ভয় পায়।
__________________
অনেকক্ষন থেকে আবির অবাক চোখে শুধু মেঘের দিকেই তাকিয়ে আছে । একটুর জন্যও ওর দিক থেকে চোখ সরাতেই পারছে না। আবীরের চোখে মুখে স্পষ্ট মুগ্ধতার ছাপ। মেঘ এ্যাস কালারের একটা টপস পড়েছে সাথে হোয়াইট লেডিস জিন্স। মাথায় এ্যাস কলারের হিজাব পড়া হোয়াইট কালারের জরজেট ওরনাটা কাধের এক সাইডে ফেলে রেখেছে। চোখের নিচে চিকন করে হালকা কাজল দিয়েছে,,, তাছাড়া আর কোনো সাজ নেই।আবীর খেয়াল করলো মেঘের চেহারায় আর সেই বাচ্চা বাচ্চা ভাবটা নেই,, এখন ওকে একদম এড্যাল্ট এবং ম্যিচিউড লাগছে। আর সব চেয়ে সুন্দর হলো মেঘের ওই ঘন পাপড়ি ওয়ালা সাদা মনির চোখ দুটো। আবীরকে এভাবে মেঘের দিকে তাকাতে দেখে আবিরের বাবা ধীর গলায় বললো
“ওর দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকার অধিকার তোমার নেই। নিজের চোখকে সংযত করো।”
আবীর চমকে উঠে ওর বাবার দিকে তাকালো। ওর বাবা তাছিল্য হেসে চেয়ার থেকে উঠে মেঘদের কাছে চলে গেলো।
_____________
কিছুক্ষন পরই শাওন নামের ছেলেটা ফাষ্টএইড বক্স নিয়ে এসে আহানকে দিলো। আহান বক্সটা হাতে নিয়ে আবার হাটু গেড়ে মেঘের সামনে বসে, ওর কাটা পা টা ধরে পুরনো ব্যান্ডেজটা খুলে ফেললো। দেখলো মেঘের পা অনেকটাই কেটে গেছে। তবে ঘা ওতোটা গভীরও না কয়েকদিন ঠিকমতো ঔষধ খেলেই সেড়ে যাবে। আহান খুব সাবধানে এ্যান্টি স্যাপটিক দিয়ে ড্রেসিং করে ওয়েনমেন্ট লাগিয়ে, আবার নতুন করে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিলো। তারপর একটা সিড়িন্স ভেঙে তারমধ্যে মেডিসিন ঢুকিয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে বললো
“আর ইউ রেডি…..?”
“নো, নেভার…”
বলেই মেঘ এক লাফে চেয়ারের উপর উঠে সেখান থেকে টেবিলের উপরে উঠে গেলো।
ওর এমন কান্ডে কেউই অবাক হলো না।কারন ওরা সবাই জানে মেঘ ইনজেকশনকে সাংঘাতিক ভয় পায়। রেষ্টুরেন্টে তেমন কেউই নেই,, দুই একজন যারা আছে তারা এতো বড় মেয়ের এমন বাচ্চামো দেখে হাসছেন। রেষ্টুরেন্ট কর্তিপক্ষের লোকেরা কিছু বলছে না,, কারন ওরা আহান কে ভালো করেই চেনে এবং ভয়ও পায়। আফটার অল একজন পলিটিশিয়ানের ছেলে তার উপর একজন নামকরা ইয়ংগেষ্ট বিজনেস ম্যান।
আহান ইনজেকশন টা হাতে নিয়ে দাড়িয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে স্বাভাবিক গলায় বললো
“একি তুমি ওখানে উঠেছো কেনো? নিচে নামো ইনজেকশনটা দিতে হবে ।”
“আমি কিছুতেই ইনজেকশন দেবো না।”
“ইনজেকশন তো তোমাকে দিতেই হবে। এবার তুমি নিচে নামবে নাকি আমি উপড়ে উঠবো?”
“খবরদার আপনি এখানে আসবেন না।আসলে আমি আপনাকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেবো।”
আহান মেঘকে আরেকটু ভয় দেখানোর জন্য চেয়ারের উপর উঠলো। আহানকে চেয়ারের উপর উঠতে দেখেই মেঘ ভয় পেয়ে লাফ দিয়ে টেবিল থেকে নেমে আহীরের পিছনে লুকিয়ে পড়ে। ও ভয়ের চোটে ভুলেই গেছে যে ওর পায়ে ব্যাথ্যা। আহীরকে পিছন থেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাদো কাদো গলায় বললো
“ভাই প্লিজ আমাকে বাচাও,, আমি ইনজেকশন দেবো না। ”
আহীর আহানের দিকে তাকিয়ে বললো
“ব্রো প্লিজ,,ওকে আর শুধু শুধু ভয় দেখিয়ো না।”
”শাট আপ’ আহীর,,, ওকে মোটেও ভয় দেখাচ্ছি না। এই ইনজেকশন আমি ওকে সত্যি সত্যি দিবো। এবার তুই সামনে থেকে সড়ে দাড়া ,,নাহলে এটা আমি তোর ব্যাক সাইডে দিয়ে দেবো।”
বলেই আহান মেঘের এক হাত ধরে টান দিয়ে আহীরের থেকে ছাড়িয়ে এনে ঝাড়ি দিয়ে বললো
“এখন ভয় পাচ্ছো কেনো? উল্টোপাল্টা কাজ করার সময় মনে থাকে না? কোন সাহসে তুমি মিহিরের গাড়ির পিছনে দৌড় দিয়েছো। যদি পড়ে গিয়ে আরও বড় কোনো অঘটন ঘটে যেতো তখন কি হতো? আর পড়ে গেছো কেটে গেছে ভালো কথা! সেখানে ভালো করে ড্রেসিং করে ঔষধ লাগাও নি কেনো? আর নিজে ঔষধ না লাগাও অন্তত মামনিকে তো ( মীরা রহমান ) বলতে পাড়তে মামনি তোমাকে ঔষধ লাগিয়ে দিতো?”
মেঘ মাথা নিচু করে ধীর কন্ঠে বললো
“সরি……..”
“ইটস ওকে,,,, ভবিষ্যতে যেনো এরকম ভুল কখনো না হয়।ব্যাথ্যা পেলে কখনো বড়দের থেকে লুকাবে না।”
মেঘ উপর নিচ করে হ্যা সূচক মাথা নাড়ালো ।
মেঘ ওর মাথার উপর কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে চোখ তুলে ব্যাক্তিটির দিকে তাকালো। তাকিয়েই ওর চাচ্চু (আবিরের বাবা) কে দেখতে পেলো। খুশিতে মেঘের চোখ দুটো চিকচিক করে উঠলো। মেঘ মুচকি হেসে বললো
“আসসালামু ওলাইকুম চাচ্চু,,, কেমন আছো?”
“ওলাইকুমুস সালাম,, আমি ভালো আছি মামনি । তুমি কেমন আছো? তোমার মা-বাবা,, খালা মনি, খালু,,মামা-মামিরা সবাই কেমন আছেন?”
“আলহামদুলিল্লাহ্,,, সবাই আছে চাচ্চু।”
মিহির এতোক্ষন দাড়িয়ে দাড়িয়ে মেঘের লাফালাফি দেখছিলো আর হাসছিলো। কিন্তু ওর চাচ্চুকে মেঘের সাথে কথা বলতে দেখে ওর মেজাজ টা চরম মাএায় খারাপ হয়ে গেলো। চার বছর আগে মিহিরের বার বার বারন করার পরেও এই লোকটা জোড় করে আবীরের সাথে মেঘের বিয়ে ঠিক করেছিলেন। আর এই লোকটার জন্যই ওর বোনকে সবার সামনে এতোটা অপমানিত হতে হয়েছে । কে বলেছিলো ওনার ওই স্কাউন্ডেল ছেলের সাথে ওর বোনের বিয়ে ঠিক করতে। নেহাত ওনি গুরুজন নাহলে ওনাকে একটা উচিত শিক্ষা দিয়ে দিতো।মিহির রাগে গজগজ করতে করতে সাঈফার পাশের চেয়ারটায় গিয়ে বসে পড়লো। তারপর টবিলের উপর নিজের হাতটা উঠিয়ে একটা পানির গ্লাস হাতে নিয়ে রাগে জোড়ে গ্লাসটা চেপে ধরলো।সাঈফা দেখলো রাগের চোটে মিহিরের চোখ লাল হয়ে গেছে। গ্লাসটা আর দুই তিন সেকেন্ড ওভাবে ধরে থাকলে ওটা ভেঙে মিহিরের হাতে ঢুকে যাবে। সাঈফা তারাতারি মিহিরের হাত থেকে টান দিয়ে গ্লাসটা নিয়ে নিলো। তারপর বিরক্তি কর কন্ঠে ফিসফিসিয়ে বললো
“কি সমস্যা আপনাদের ? কয় ভাইয়ের রাগ সব সময় নাকের ডগায় থাকে কেনো? যেখানে সেখানে রেগে ভাংচুর করা গুন্ডামি করা আপনাদের সভাব হয়ে গেছে। এই জন্য আমরা আপনাদের সাথে সহজে কোথাও যেতে চাই না,, কারন আপনাদের মধ্যে ম্যানারস নামের কোনো বস্তুই নেই । খিদে পেয়েছিলো তাই রেষ্টুরেন্টে খেতে আসছি,,, কিন্তু খাবার কখন খাবো আপনাদের রাগ দেখতে দেখতেই তো আমার পেট ভরে গেছে।”
মিহির দাতে দাত চেপে বললো
“আমি মেয়েদের গায়ে হাত তুলি না,,,নাহলে এই কথা গুলো বলার জন্য তোকে মেরে এখানে পুতে দিতাম।”
“হ্যা লাইফে তো ওই দুইটা জিনিসই খুব ভালো করে শিখেছেন ,,, একটা বাপের টাকায় ফুটানি করা আরেকটা কথায় কথায় গুন্ডামি করা।”
“শাট আপ ইডিয়েট,,, নিজের মুখটা বন্ধ রাখ নাহলে এই গ্লাসটা আমি তোর মাথায় ফাটাবো।”
সাঈফা বিরবির করে বললো
“হ্যা গন্ডার তুই তো এটাই পারবি। তোর মতো লেজ ছাড়া গরুরা ভালোবাসার মানে কি বুঝবে? আল্লাহ্ আমি কেনো এই আনরোমান্টিক ছাগলটা কেনো যে ভালোবাসতে গেলাম?”
মিহির বিরক্তি নিয়ে বললো
“বিরবির করে কি বলছিস?সাহস থাকে তো জোড়ে বল।”
সাঈফা “কিছু না” বলে মিহিরের দিকে একবার তাকিয়ে ঠোট উল্টিয়ে বসে রইলো। তা দেখে মিহির মুচকি হেসে একজন ওয়েটারকে ডাক দিলো। ওয়েটার এসে একে একে সবার থেকে খাবারের ওডার নিতে লাগলো।
_____________
আহান, মেঘ, আর আবিরের বাবা বসে কথা বলছিলো। তখনই একজন ওয়েটার এসে আহানের থেকে খাবারের ওর্ডার চাইলো। আহান নিজে কি খাবে সেটার ওর্ডার করে,, মেঘের জন্যও মেঘের ফেবারেট খাবার চিকেন ফ্রাইড রাইস ওর্ডার করে দিলো। এটা দেখে মেঘ ভ্রু কুচকে মনে মনে বললো ইনি কীভাবে জানলো আমার চিকেন ফ্রাইড রাইস খুব পছন্দের। আমি তো ওনাকে কখনো বলিনি,,, তাহলে কি ভাইয়ারা কেউ বলেছে? নাকি আমি একটু বেশি বেশি ভাবছি! ওনি হয়তো এমনিতেই ওর্ডার দিয়েছে আর সেটা কো-ইনসিডেন্সলি আমার পছন্দের সাথে মিলে গেছে। সে যাই হোক,, এতো ভেবে লাভ নেই। খিদে পেয়েছে যেকোনো একটা খাবার পেলেই হলো।……
আহান ঠোটের কোনে মুচকি হাসির রেখা টেনে আবিরের বাবাকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“আঙ্কেল আপনি কি খাবেন? ওনাকে ওর্ডার করে দিন,,,”
আবিরের বাবা উঠে দাড়িয়ে বললেন
“না বাবা আমি কিছুই খাবো না ,,,তোমরা খাও ”
“কেনো আঙ্কেল,,,,,”
আবীরের বাবা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন
“আমি এখানে বেশিক্ষন বসে তোমাদের সাথে গল্প করলে , তোমার আন্টি এখানে এসে সিন-ক্রিয়েট করবে। মেঘকে উল্টোপাল্টা কথা শোনাবে ওনার সাথে জেরিনও যোগ দিবে।”
ওনার কথার মাঝে আহান ওনাকে থামিয়ে দিয়ে বললো
“আরে কিচ্ছু হবে না আঙ্কেল,,,আপনি বসুন তো”
আবিরের বাবা ওনার একহাত আহানের কাধের উপর রেখে মুদ্যু হেসে বললেন
“তোমাকে দেখলেই যেকেউ চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারবে তুমি যথেষ্ট শান্ত-সিষ্ঠ ,ভদ্র একটা ছেলে বাবা। মিহির কে নিশ্চয়ই এতো দিনে খুব ভালো করে চিনেছো,, ও ছোটবেলা থেকে অনেক রাগি বদমেজাজি। বিষেশ করে মেঘকে কেউ কিছু বললে ও একদম সহ্য করতে পারে না। একে তো ওর কাকিমনি (আবিরের মা) কে আর জেরিনকে মিহির আগে থেকেই পছন্দ করে না তার উপর যদি ওরা এখানে এসে মেঘকে কিছু উল্টোপাল্টা বলে তাহলে আমি নিশ্চিত মিহির ওনাদের মুখের উপড়ে গ্লাস ছুড়ে মারবে।”
কথাটা বলেই ওনি মেঘের থেকে বিদায় নিয়ে ওনাদের টেবিলে চলে গেলেন। মেঘ আবিরের বাবার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো,,,
হায়রে চাচ্চু তোমার এতো বয়স হয়ে গেলো তাও তুমি এখনো ঠিকঠাক করে মানুষ চিনতে পারলে না! এই শয়তানের হাড্ডিটা কে কিনা তুমি বললে এটা শান্ত – শিষ্ট ভদ্র ছেলে? এই ভিলেনটার পাষ্ট রেকর্ড যদি শোনো তাহলে তোমাকে এখান থেকে সোজা হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে,,,বাসায় আর ফিরতে পারবে না। এনার ভিলেন গিড়ির গল্প শুনে আমিই প্রায় হার্ট অ্যাটাক করতে করতে বেচে গেছি।
#চলবে………
# চলবে……..