#ভালোবাসার_ফোড়ন
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )
#পর্ব_৩১
১১ দিন পর আজ ভার্সিটিতে যাচ্ছি। আমি আর উনি আজ একসাথে যাচ্ছি উনার গাড়ি করেই। ভাবছি সেই বিয়ের দিন পর আজ নিতি’র সাথে দেখা হবে। কি হবে জানি না, তবে কিছু একটা হবে বলে মনে হচ্ছে। যাই হোক সেটার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখা ভালো। ভার্সিটিতে পৌঁছালাম, উনি গাড়ি থেকে নামলেন কিন্তু আমার কেন জানি খুব অস্বস্তি লাগছে। হঠাৎ করেই উনি আমাকে হাত ধরে নামালেন। আমি নেমে আশপাশ তাকাচ্ছি সবাই কেমন ভাবে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। কেউ কেউ বলাবলিও করছে, কে জানে কিসের এতো কৌতুহল ওদের। বিয়েটা কি কারনে হয়েছে এটা নিয়ে? তবে এটা নিয়ে সবচেয়ে বেশি কৌতুহল তো আমার’ই।
ইতি দৌড়ে আমার কাছে আসল। উনি আমার হাত ছেড়ে দিয়ে বললেন…
– ক্লাসে যাও!.
বলেই চলে গেলেন উনি। ইতি আমাকে খোঁচা মেরে বলল…
– ব্যাপার টা কি?
– তোর মাথামাথা আর আমার মন্ডু।
– হি হি হি। আচ্ছা এতো দিন আসি নি কেন?
– আরে যা কান্ড হয়েছে, এর পরে আবার আমার ভার্সিটিতে আসা।
– কেন কি হয়েছে?
– শোন তাহলে……
আমার কথা শুনে ইতি হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি খাবার অবস্থা। আমি রেগে ওর দিকে তাকিয়ে আছি।
ইতি হাসতে হাসতে বলল…
– লাইক সিরিয়াসলি নিহা! ওরা ভেবেছিলো তুই আসলেই প্রেগন্যান্ট!
– কথা বলিস তো আর! আমার অবস্থা কি হয়েছিল এটা তো আমি’ই জানি।
– যাই’ই বলিস না কেন? ভাইয়া কিন্তু খুব ভালো মজা নিয়েছে তোর সাথে!
– মজা আমার আত্না শুকিয়ে যাচ্ছিল। জানিস তুই!
– আরে তোর বর তো তোর মতোই হবে তা নয় কি?
– হয়েছে তোর! এখন চুপ কর।
– ইশ্ কি লজ্জা।
– লজ্জা হবে কেন?
– কারন ভাইয়া তোর বর!
– বর তো কি?
– কিছু না বোন! তুই জীবনেও বুঝবি না বাদ দে।
– হুম সেটাই ভালো।
ইতি আর আমি কথা বলতে বলতে আসছিলাম দেখলাম নিতি আর টিনা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের সাথে আমার চোখাচোখি হয়ে গেল। ইতি আমাকে ধরে সেখান থেকে নিয়ে আসলো। ওদের সাথে আর কথা হলো না।
ক্লাস শেষে ভার্সিটির পিছনের বাগানে আসলাম। এখানে উনার সাথে আমার প্রথম দেখা। ইতি অনেক সাধলাম আসলো না তাই একা’ই আসলাম। আজও বাদাম কুঁড়ানোর ইচ্ছা আছে। আজও ভূতের ভয় লাগছে কিন্তু আজ তো আমি যাবোই।
বাদাম সব কুঁড়িয়ে যেতে হঠাৎ করেই কেউ আমার কানে ফুঁ দিলো। আমি লাফিয়ে উঠে পিছনে ফিরলাম। দেখি উনি দাঁড়িয়ে দাঁত বের করে হাসছে।
– আপনি!
– কেন ভূত ভেবেছিলে সেদিনের মতো!
– আসলেই, আপনি সত্যি একটা ভূত।
– আর তুমি ভূতনি! তো এখানে কি করছিলে ভূতনি।
– বাদাম নিতে এসেছি।
– সেদিনের মতো।
– হুম।
– কোনো কাজ না থাকলে যা হয় আর কি। তা কুড়াঁনো শেষ হলে চলো এখন।
– হুম চলুন।
দুজনেই হাঁটতে হাঁটতে বাগানের বাইরে আসলাম। বাগানের বাইরে বিরাট একটা বটগাছ। উনি গিয়ে সেই বটগাছের তলায় বসলেন। আমিও উনার সাথে গিয়ে ওখানে বসলাম। দু’জনের মাঝে খানিকক্ষণ নিরবতার পর উনি বলে উঠেন…
– ভূতনি তোমার কোন ফুল পছন্দ!
– কেন?
– আমি প্রশ্ন করছি উওর দাও, প্লাটা প্রশ্ন কে করো?
– হুহ শিউলি ফুল!
– শিউলি! কাঠগোলাপ পছন্দ করো না।
– নাহ্ কাঠগোলাপ ও ভালো লাগে তবে শিউলি ফুল বেশি প্রিয়, শিউলির ঘ্রাণ,স্নিগ্ধতা, সৌন্দর্য খুব ভালো লাগে। এই ছোট ফুলের পরশ মনকে সতেজ করে।
– বাবা তুমি তো মনে হচ্ছে ফুলের প্রেমে পড়ে গেলে
– পড়লে বা কি? এটা কি মন্দ!
– না মন্দ কে বললো, যারা ফুলকে ভালোবাসে তাদের মন টাও ফুলের মতোই স্নিগ্ধতায় মুখর হয়।
– আমার প্রশংসা করছেন না নিজের!
– মানে?
– আপনি কি ফুল কে কম ভালোবাসেন নাকি!
– ভালো তো বাসি কিন্তু তোমার মতো সৌন্দর্য বর্ণনা করতে পারি না।
– সৌন্দর্য বর্ণনা করতে পারেন মানেই কি আপনি তাকে অনেক ভালোবাসেন।
– ভালোবাসলেই তো মানুষ সৌন্দর্য বর্ণনা করে তাই নয় কি!
– তার মানে কি? আপনি বলতে চান আপনি ভালোবাসেন না,তাই সৌন্দর্য বর্ণনা করতে পারেন না!
উনি বিচলিত হয়ে বলেন..
– না মানে!
আমি কিঞ্চিত হেসে বলি…
– নাহ আপনার কথা ঠিক আছে, ভালোবাসলেই তার সৌন্দর্য বর্ণনা করা যায় তবে কি জানেন একদল মানুষ আছে যারা স্বার্থের কারনেও শুধু শুধু সৌন্দর্য বর্ণনা করে। আবার এটাও সত্যি ভালোবাসলে তার সৌন্দর্য বর্ণনা না করে নিজের মনকে তার সৌন্দর্য বোঝানো এটা খুব কম লোক পারে।
– আমি কোনটা বলে তুমি মনে করো!
– আপনার প্রশংসা আমি করবো না।
– ভূতনি রা কি ভালো মানুষের প্রশংসা করে নাকি।
– হুম বুঝতে পেরেছেন। তবে আপনি ভালো মানুষ না।
বলেই ওপাশে তাকালাম। অতঃপর তার দিকে তাকাতেই তাকে আর দেখতে পেলাম না। খানিকক্ষণ এর জন্য ভড়কে গেলাম। আমি দাঁড়িয়ে আশপাশ ভালো মতো দেখছি। না তার কোনো চিহ্ন নেই। ভয় পেতে শুরু করি, আসলে কি সেটা উনি ছিলেন নাকি ভূত ছিলো। সত্যি সত্যি যদি ভূত হয় তাহলে এতোক্ষণ আমি একজন ভূতের সাথে বক বক করছিলাম। কিভাবে?
হুট করেই আমার এক পাশে দু’হাত ভর্তি শিউলি ফুল নিয়ে আসল। আমি জলদি ঘুরে দেখি উনি। একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছি। উনি চোখ দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন “কি হয়েছে”?
আমি মাথা নেড়ে না বলি। উনি ফুল গুলোর দিকে ইশারা করেন।আমি মুচকি হেসে ফুল গুলো’র দিকে তাকাই। উনি একটা ফুল নিয়ে আমার কানে গুঁজে দিয়ে বলে…
– ফুল গুলো খুব ছোট কানে গোঁজার জন্য নাহ!
– তবে ভালোবাসা ভরপুর!
উনি হেসে বাকি ফুল গুলো আমার হাতে দেন। আমি বাদাম গুলো উনার জ্যাকেটের পকেটে রেখে ফুল গুলো নিই আর বলি…
– কোথায় পেলেন এগুলো!
– এখানে ছিল একটা গাছ।
– গ্রীষ্ম চলে এসেছে নাহ!
– হুম এসেছে বটে।
– যাওয়া যাক।
– হুম!
.
বাসায় এসে সব গুলো ফুল টেবিলে রাখলাম। ভালোই লাগছে ছোট ছোট এসব ফুল গুলো। এগুলোর ঘ্রাণ দারুন। দেখতেও খুব সুন্দর। আসার সময় উনি একটা শিউলি ফুলের চারা নিয়ে এসেছিলেন। সেটা বেলকনিতে রেখেছেন। আমি সেটাতে একটু পানি দিয়ে আসলাম। ব্যাগ থেকে একটা ডায়রি করলাম। সেটাতে ফুল গুলো রাখলাম। কিন্তু মানুষ এটা কেন করে। স্মৃতি রাখার জন্য! হয়তো কিন্তু আমি কেন রাখছি। উনার আর আমার স্মৃতি গুলো সাজিয়ে রাখার জন্য। কিন্তু কেন?
এই কথাটা ইতি কে জিজ্ঞেস করলাম। কারন এটা সারাদিন আমার মাথায় ঘুরছিলো। তাই পরদিন ভার্সিটিতে এসে ইতি কে জিজ্ঞেস করলাম মানুষ স্মৃতি গুলো কেন সাজিয়ে রাখে। ইতি’র উওরটা এমন ছিলো…
– স্মৃতি অনেক রকমের হয়, কিছু দুঃখের কিছু ভালোবাসার। তবে মানুষ ভালোবাসার স্মৃতি রাখতে বেশি ভালোবাসে। কারন সেগুলোতে কিছু সূক্ষ্ম সুখ থাকে। আর এই সূক্ষ্ম সুখ গুলো বরাবরই ক্ষণস্থায়ী। যার কারনে এই সুখ গুলোকে স্মৃতি হিসেবে রাখতে খুব ভালো লাগে।
ওর কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছি আর ভাবছি, তখনকার উনার আর আমার স্মৃতি গুলো তো দুঃখের ছিল না তবে কি….
ইতি বলে উঠে…
– কি রে কি ভাবছিস?
– কিছু না।
– আমি জানি!
– কি?
– তুই এটাই ভাবছিস নাহ তোর আর ভাইয়ার স্মৃতি গুলো কিসের ভালোবাসার না দুঃখের।
– তোর কি মনে হয়?
– দুঃখের তো হতেই পারে না। সেগুলো ভালোবাসার ছিল।
– ভালোবাসার স্মৃতিতে কি ভালোবাসা’র প্রয়োজন নেই।
– অবশ্যই আছে, ভালোবাসা না থাকলে সেগুলো কি ভালোবাসার স্মৃতি হয়।
– তাহলে তোর ধারনা ভুল। কারন আমাদের মাঝে ভালোবাসা নেই।
– না আছে।
– ইতি আমি বলছি তো নেই।
– আচ্ছা তাহলে কেন আছিস ভাইয়ার কাছে, বিয়েটা তো জোর করে হয়েছে তবে কেন যাস নি তার কাছ থেকে। এখন বল…
– যায় নি কারন… ওয়েট তুই কি বললি! জোর করে বিয়ে, তোকে এটা কে বললো উনি আমাকে জোর করে বিয়ে করেছে। আমি তো তোকে বলেনি আর উনি ও না তাহলে…
ইতি বিচলিত হয়ে গেল। সে আমতা আমতা করে বললো…
– আমি মানে আমাকে বলেছে মানে।
– কি লুকাচ্ছিস আমার কাছ থেকে।
ইতি ভড়কে গিয়ে বলো..
– কি লুকাবো, আর লুকানোর’ই বা কি আছে? বল!
– আমি জানি তুই, ভাইয়া, আর উনি আমার কাছ থেকে কিছু লুকাতে চাইছিস। কিন্তু সেটা কি? আমাকে বললেই বা কি হবে?
– নিহা এমন কিছু না।
– তাহলে আমার থেকে মুখ লুকিয়ে কেন কথা বলছিস? আচ্ছা বাদ দে সেদিন যেমন তুই আমাকে জোর করিস নি আমি ও করবো না। বিয়েটা উনি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য করেছে আমি জানি। তবে এখনো তেমন কিছু করেনি কিন্তু করবে।
– তুই ভুল ভাবছিস ভাইয়া এমন কিছু করবে না।
– করবে?
– করবে না
– তুই চিনিস না ওকে তাই এভাবে বলছিস। উনি যে কি আর উনার মনে কি সেটা উনাকে দেখে বোঝা যায় না বুঝলি।
– না নিহা তুই ভুল। তুই কখনো তাকে বোঝার চেষ্টা করিস নি তাই এটা বলছিস। সেদিন উনি তোকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বিয়ে করেনি বিয়ে করেছে যেন তোর সাথে ওই বুড়ো লোকটার বিয়ে আটকাতে পারে তাই।
– তুই এতো নিশ্চিত ভাবে কি করে বলছিস? আর যদি বিয়ে টা ভাঙতেই চাইতো তাহলে অনেক ধরনের পথ ছিলো বিয়েটা ভাঙার কিন্তু উনি তা না করে আমাকে বিয়ে করেছেন। তাহলে…
– হ্যাঁ তোর কথার যুক্তি আছে। তবে সবসময় পরিস্থিতি’র সাথে যুক্তি খাটে না নিহা।
– তুই কি বলতে চাস?
– ইতি এটাই বলতে চায় নিহা আহি তোমাকে বিয়ে করে দয়া করেছে। এতটুকু কথা বুঝতে পারছো না তুমি!
আমি আর ইতি সামনে তাকায় দেখি নিতি দাঁড়িয়ে আছে। নিতি কে আসতে দেখে আমরা দাঁড়িয়ে গেলাম। নিতি আমাদের কাছে এসে বলতে লাগলো…
– ভেবো না তোমাদের কথা আড়ি পেতে শুনছিলাম ব্যাপারটা তেমন না। আমি শুধু এখান দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন বিয়ের কথা টা কানে গেল তাই দাঁড়ালাম আর কি। আসলে বিয়েটা নিয়ে আমার কৌতুহল কম ছিল না নিহা। দিনরাত এটাই ভাবছিলাম তোমার মতো একটা মেয়েকে কি করে বিয়ে করলো আহি। যে তোমাকে দেখতে পারতো না, কথায় কথায় তোমাকে অপমান সে কি করে তোমাকে এতো কেয়ার করছে। কিন্তু এখন,এখন আমার মাথায় সব ঢুকল। আসলে কি বলোতো আহি যেমন’ই হোক না কেন? ওর দয়ার পরিমান টা অনেক বেশি আর সেই দয়ার কারনেই বিয়ে করেছে ও তোমায়।
ইতি বলে উঠে…
– নিতি মুখ সামলিয়ে কথা বলো। ভাইয়া জানলে কিন্তু..
– আহি জানলে… ( হেসে আবার বলতে লাগল ) আহি জানলে এখন আর কি হবে, কিছুক্ষণ আমায় বকবে তাই বলে কি সত্যি টা বদলে যাবে। আচ্ছা নিহা তোমার কি মনে হয়েছিল, ও তোমায় ভালোবেসে বিয়ে করেছে।
আমি নিতি’র দিকে তাকিয়ে আছি। নিতি আবার বলতে থাকে…
– একটু আগেই তো তুমিও বললে যে ও তোমাকে ভালোবাসে না। তাহলে তো এটা সত্যি যে ও তোমাকে শুধু দয়া করেছে আর কিছু না।
ইতি বলে উঠে…
– না ভাইয়া কোনো দয়া করেনি।
– ওহ্ আচ্ছা দয়া করেনি। তাহলে কি, ভালোবেসে বিয়ে করেনি,দয়া করেনি তাহলে কি? তাহলে তোমাকে কি কারনে বিয়ে করেছে। রক্ষিতা করে রাখার জন্য!
নিতি’র কথা শুনে আমি চমকে উঠি। ইতি নিতি বলে চেঁচিয়ে উঠে। আমার চোখের কোনে পানি জমে গেছে। নিতি আবার বলে উঠে…
– ইতি চেচিও না, এটাই সত্যি! আহি তোমাকে রক্ষিতা করে রাখার জন্য’ই বিয়ে করেছে। আর কিছু না। আমি চিনি আহি কে, ও তোমার মতো মেয়েকে কাখনো ভালোবাসতে পারে না। এখন বিয়ে করে ঠিক’ই ঘরে রেখেছে কিন্তু যখন ওর মন ভরে যাবে তখন ঠিক’ই তোমাকে ছুড়ে ফেলে দেবে, তোমার থেকে ততোটাই দূরে থাকবে যেভাবে আমরা ময়লা আবর্জনা থেকে দূরে থাকি।
নিতি কথা শুনে আমি নিঃশব্দে কাঁদছি। ইতি কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না। নিতি বলে উঠে…
– নিহা! তুমি যথেষ্ট বুদ্ধিমতি মেয়ে, এতো টুকু বোঝার ক্ষমতা তোমার নিশ্চিত আছে বলেই আমি মনে করি তাই নয় কি!
আমি আর ওখানে দাঁড়ালাম না। দৌড়ে বাইরে এসে পরালাম। চোখ দিয়ে অঝরে পানি ঝড়ছে। থামার নাম’ই নিচ্ছে না। কাঁদতে কাঁদতে বাসায় চলে এলাম।
#ভালোবাসার_ফোড়ন
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )
#পর্ব_৩২
বাসায় এসে বেলকনিতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে বসে পড়লাম। কাঁদতে লাগলাম, নিতি’র প্রত্যেকটা কথা আমার কানে বাজছিলো। সত্যি কি হই আমি উনার, কেন বিয়ে করলেন উনি আমায়, কি দোষ ছিল আমার। এভাবে দয়া করলেন উনি আমায়, নাকি নিতি’র কথাই সত্যি! দু’হাটু ভাজ করে কেঁদেই যাচ্ছি। এখন আর কাঁদতেও ইচ্ছে করছে না। রাগ হচ্ছে খুব খুব রাগ হচ্ছে। দোলনার এক কোণায় পড়েছিল মদের বোতল। উনি কাল খেয়ে এখানে রেখেছেন। আমি রাগের চোটে সেখান থেকে মদের বোতল নিয়ে খেতে নিলাম। লোকে বলে এগুলো খেলে নাকি রাগ কমে। শুধু সেটাই কমানোর প্রচেষ্টা। কিন্তু এক বার খেয়েই আমার অবস্থা খারাপ। ছিঃ কি বিচ্ছিরি খেতে। এসব কিভাবে খান উনি। কাশতে কাশতে আমার অবস্থা খারাপ। কিন্তু তবুও খাওয়ার চেষ্টা করলাম। কিছুক্ষণ খাবার পর মাথা ঘুরতে লাগলো।
হুট করেই কেউ’ই এসে আমার হাত থেকে মদের বোতল টা কেড়ে নিলো।আমি তাকিয়ে দেখি আহিয়ান কিন্তু একটা না দু’দুটো। আমি আঙ্গুল দিয়ে গুনতে থাকি। চোখেও ঝাপসা দেখতে শুরু করেছি। উঠতে চেষ্টা করি, কিন্তু পড়ে যেতে নেই। আহিয়ান আমার দু’বাহু ধরে দাঁড় করায়। তবুও আমি ঢুলছি। উনি আমাকে এক ধমক দেন। এতে আমি লাফিয়ে উঠি। আমি উনাকে বলি…
– আপনি ডাবল হলেন কিভাবে? দুজন কেন আপনারা!
– চুপ!
– আপনি আমায় ধমকাচ্ছেন কেন?
উনি বলতে শুরু করেন…
– পাগল হয়ে গেছো তুমি, কি করেছিলে এখানে? আমাকে না বলে কেন চলে এলে। যদি ইতি না বলতো তাহলে তো আমি জানতেই পারতাম না তুমি চলে এসেছো। এতো জ্বালায় কেন আমাকে? সবসময় এতো টেনশন কেন দিচ্ছো আমায়? সমস্যা কি তোমার?
আমি ঢুলতে ঢুলতে বলি…
– সমস্যা? হ্যাঁ সমস্যা তো!
– এসব কেন খেয়েছো?
– আপনার কথা বলা এখনো শেষ হয়নি আমি কখন বলবো?
– চুপ একদম চুপ! একটা কথা বলবে না তুমি!
আমি মুখে আঙ্গুল দিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়াই।
উনি জিজ্ঞেস করেন…
– কি হয়েছে? কে কি বলেছে আবার তোমায় বলো?
আমি চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। উনি আমার দুই বাহু ধরে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি উনার দিকেই তাকিয়ে আছি। উনি জোরে বলে ওঠে…
– বলছো না কেন?
– আপনি না বললেন চুপ হয়ে থাকতে।
– যখন বলি চুপ থাকো তখন থাকো না আর যখন বলি কথা বলো তখন চুপ থাকো।
– আপনি ধমক দেন কেন আমায় কথায় কথায়। এ্যা এ্যা এ্যা..
– হ্যাঁ এটাই বাকি ছিলো এখন কাঁদো বসে বসে।
আমি উনার হাত ছেড়ে নিচে বসে হাত পা ছিটিয়ে কাঁদতে লাগলাম। উনি হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে কপাল খসতে লাগলেন। আমি নিচে বসে কেঁদে যাচ্ছি। হুট করে উনি আমাকে কোলে তুলে নিলেন। আমি উনার গলা জরিয়ে নাক টানছি উনি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। অতঃপর রুমে গিয়ে আমাকে বিছানায় ধপ করে ফেলে দেন। আমি “মা গো ” বলে উঠি। ঠোঁট উল্টে বলি…
– ফেলে দিলেন কেন আমায়?
– বেশ করেছি এটাই দরকার তোমার জন্য
বিছানা থেকে নেমে…
– আমি এখনি গিয়ে আম্মু কে বিচার দিবো। আমি আমাকে মেরেছেন।
– কিহহহ? মারলাম কখন?
– মেরেছেন মেরেছেন আমি ব্যাথা পেয়েছি।
বলেই বের হতে নিলাম। উনি আমাকে টেনে দু বাহু ধরে নিজের কাছে টেনে নিলেন। দাঁতে দাঁত চেপে বললেন..
– কি হয়েছে তোমার?
আমি উনার চোখের দিকে তাকিয়ে বলি..
– আমাকে বিয়ে করেছেন কেন?
কপাল কুঁচকে বলেন…
– মানে?
– আমাকে দয়া করছেন কেন?
– কি বলছো এইসব?
উনার থেকে নিজে সরে…
– আমাকে বিয়ে করে দয়া করছেন আপনি! কেন করলেন এরকম। আমার মাথায় কেন ঋণের বোঝা বাড়াচ্ছেন বলুন। আমি চেয়েছি আপনার কাছে কোনো দয়া।
বলতে বলতে পরে যেতে নিলাম। উনি এক হাত দিয়ে আমাকে ধরিয়ে রেখেছেন। উনি বলে উঠেন…
– কে বলেছে তোমাকে এইসব?
কাঁদতে কাঁদতে বলি…
– সবাই বলছে আপনি বিয়ে করে ফেলে আমাকে দয়া করেছেন। কেন করছেন এরকম আপনি। আপনার দয়া আমি চেয়েছি। কেন সবাই এভাবে আমাকে দয়া করে। আমি তো কখনো কারো দয়া চাইনি। ছোট থেকে সবার দয়া পেয়ে যাচ্ছি। আপনজনরা দয়া করেছে, তাদের দয়া নেওয়া যায়। আপনি কেন করলেন দয়া!
শান্ত গলায় বললেন….
– আমি তোমাকে দয়া করি নি নিহা!
মাথা ঘুরতে লাগল, আমি কাঁপা কাঁপা গলায় বলি…
– তাহলে বিয়ে করেছেন কেন? নিজের রক্ষিতা করে রাখার জন্য!
চিৎকার করে বলেন….
– নিহা!
আমার কথায় উনি মারাত্মক রেগে যান। রাগে উনার চোখ লাল হয়ে। আমাকে অনেক জোরে চেপে ধরেন। দাঁতে দাঁত চেপে বলেন…
– যা বলেছো এরপর যেনো তোমার মুখে আমি আর না শুনি!
– কিন্তু….
কিছু বলার আগেই উনি আমার হাত ধরে টেনে বাথরুমে নিয়ে গেলেন। অতঃপর ঝর্ণা ছেড়ে তার নিচে আমাকে দাঁড় করিয়ে দেন। উনি এক হাত দিয়ে আমার বাহু ধরে দাঁড়িয়ে আছে। পানিতে ভিজতে ভিজতে আমি উনার দিকে তাকিয়ে আছি। আর উনি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।
প্রায় এমন অনেকক্ষণ ধরে ভিজার পর আমার গায়ে তোয়ালে পেঁচিয়ে বাইরে আনলেন। অতঃপর আমাকে চেঞ্জ করতে বলে চলে গেলেন। উনি যাবার পর আমি বিছানায় বসলাম। অতঃপর আর কিছু মনে নেই আমার।
.
সন্ধ্যার দিকে জ্ঞান ফিরল আমার। নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করলাম। মাথায় প্রচন্ড যন্ত্রনা করছে। দুহাত দিয়ে মাথা চেপে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর উনি রুমে আসলেন। এসে আমাকে দেখে মুচকি হাসলেন। উনার হাসি দেখে আমি খানিকটা অবাক হলাম। হ্যাঁ আমি নেশা করেছি তবে বেশি না। মাতলামি করে যা করেছি তার বেশির ভাগ’ই মনে আছে আমার। কিন্তু যা করেছি তাতে উনার রেগে থাকার কথা। তাহলে উনি হাসছেন কেন? আমি একবার নিজের দিকে তাকালাম। না সব’ই ঠিক আছে। চুল গুলো এখনও ভিজা, আর শাড়ি… এই শাড়ি, আমার শাড়ি চেঞ্জ করলো কে? আমি তো চেঞ্জ করি নি। তার মানে…
আমি দৌড়ে তার কাছে গেলাম। উনি বিন ব্যাগে বসে ছিলেন। আমি উনাকে দ্রুত জিজ্ঞেস করলাম..
– আমার শাড়ি চেঞ্জ করেছে কে?
– তোমার কি মনে হয়!
– আপ…আপ… আপনি আপনি করেছেন।
আমার কথায় উনি হাসছেন। আমার রাগ বেড়ে যাচ্ছে। আমি উনাকে রেগে জিজ্ঞেস করি.
– কি হলো বলছেন না কেন? শুধু হাসছেন কারন টা কি?
– কিছু না!
– অবশেষে জ্ঞান ফিরল তোমার!
আমি দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি আপু আসছে। আমি তার কাছে গেলাম। তার হাতে লেবুর শরবত। আপু শরবত টা আমার হাতে দিয়ে বললেন…
– নাও গেয়ে নাও, মাথা ব্যাথা কমবে।
– হুম।
আমি শরবত খেয়ে নিলাম। আসলেই মাথা ব্যাথা কিছুটা কমেছে। আপু আমার মাথায় হাত রেখে বলল..
– ভুল করে এসব খায় কেউ?
আমি আপু’র দিকে তাকিয়ে আছি। আপু আবার বলে..
– সব দোষ আহি’র। এসব খেয়ে এখানে ওখানে রেখে দেবে।
উনি বলে উঠে,
– সরি ভুলে গেছিলাম বাসায় একটা বাচ্চা ভূতনি আছে।
– চুপ কর তুই? মেয়েটা ভিজা শরীর নিয়ে’ই জ্ঞান হারালো তোর জন্য । ভাগ্যিস আমি মা কে ডাক দেই নি। নাহলে তোর ভর্তা বানিয়ে দিতো। মেয়েটার কি হাল করেছে।
– ঢং!
আমি বলে উঠি,
– আপু…
– হ্যাঁ নিহা বলো! ঠিক লাগছে তো এখন।
– জ্বি আপু।
– তাড়াহুড়ো’র মধ্যে আমি এই শাড়ি টাই পড়ালাম তোমাকে , কি করবো বলো তোমার এমন অবস্থা দেখে কিছু’ই মাথা তে আসছিলো না আমার।
তার মানে উনি কিছুই করে নি। আমি শুধু শুধু উনাকে কথা শুনাচ্ছিলাম। কিন্তু উনি হাসছিলেন কেন?
আপু আর কিছুক্ষণ থেকেই চলে গেলেন। আমি আসন পেতে বিছানায় বসে উনার হাসির রহস্য খুঁজছি কিন্তু কিছুই পাচ্ছি না। ধুর! এভাবে বসে থাকলে কি জানবো। এর চেয়ে বরং উনার কাছে যাই তাহলে কিছু জানতে পারবো। আমি উঠে বেলকনিতে গেলাম। দেখি উনি গ্রিল এর সাথে ঠেসে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে। উনার মুখ মলিন হয়ে আছে। আমি উনার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। উনি সিগারেট এর ধোঁয়া টানতে আর সব ধোঁয়া আকাশে মিলিয়ে যাচ্ছে। আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি কি দিয়ে শুরু করবো বুঝতে পারছি না।
হঠাৎ উনি বলে উঠেন,
– নিহা!
আমি উনার দিকে তাকালাম। উনি সিগারেট খেতে খেতে আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন,
– বিয়ে করে আমি তোমাকে দয়া করেনি, আমি শুধু চেয়েছিলাম ওই লোকটার সাথে যেনো তোমার বিয়ে না হয়। ব্যস এতো টুকু।
আমি নিশ্চুপ হয়ে আছি। উনি আবার বলেন…
– জানো যেদিন প্রথম তুমি আমায় থাপ্পর মেরেছিলে সেদিন থেকে তোমার ওপর আমার অনেক রাগ ছিলো। দেখতে পারতাম না তোমায়, তোমায় দেখলেই আমার অনেক রাগ হতো। তাই সেদিন রৌদ্রের মাঝে তোমাকে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলাম। এর পর ও আমার কিছু রাগ ছিল কিন্তু সেটা আমি মনেই রেখেছিলাম। তবে আমি জানতাম না নিতি তোমাকে এই কারনে সবসময় অপমান করতো। তবে তুমি যখন সেদিন বললে তারপর আমি নিতি কে বারণ করে দেই তোমাকে কিছু না বলতে। কিন্তু কেন সেটা আমার কাছেও অজানা। আমার তো রাগ ছিল বলো তোমার ওপর, তাহলে আমি কেন তোমার জন্য এটা করালাম। তবে সেটা করে খুব ভালো লেগেছিল আমার।
আমি উনার কথা শুনছি মনোযোগ দিয়ে, উনি আবার বলতে শুরু করেন,
– সেদিন যখন তোমার হাত পুড়ে যাওয়ার ব্যাপারে তুমি মিথ্যে বললে সেটা আমি বুঝেছিলাম। অতঃপর ইতি’র কাছ থেকে সব জেনেছিলাম তোমার ব্যাপারে। বুঝতে পারলাম তুমি অনাথ বলে তারা তোমাকে অত্যাচার করে। সেদিন খুব চিন্তা হচ্ছিল তোমার জন্য। কিন্তু এজন্য ইতি কে দোষারোপ করো না সে আমাকে কিছু বলতে চায় নি, আমি জোর করেই জেনেছিলাম। যখন প্রথম বার তুমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আমি তোমাকে ধরলাম, তোমার জন্য খুব চিন্তা হতে লাগল কিন্তু কেন সেটা আমার কাছে অজানা। তোমাকে নিয়ে ডাক্তার এর কাছে গেলাম, আমাকে দেখলে তুমি রেগে যাবে বলে ইতি কে সেখানে রেখে চলে এলাম। কেন করলাম তোমার জন্য এতো কিছু সেটা সত্যি আমি জানি না তবে ভালো লাগতো করতে তাই করতাম। কিন্তু এগুলো দয়া ছিল না নিহা! দয়া মানুষ বার বার করবে না। বেশি হলে কয়েকবার, বার বার মানুষ দয়া করতে জানে না। এটা খুব কম মানুষের স্বভাবের ভেতর আছে। কিন্তু একটা কথা বলতে পারি আমি তোমাকে দয়া করেনি।
সেদিন বৃষ্টির মাঝে তোমাকে কাঁদতে দেখে খুব খারাপ লেগেছিল, কেনো জানি তোমার চোখের পানির মূল্য আছে বলে মনে হয়েছিল। ইতি কে কারন জিজ্ঞেস করায় ও সব বললো। তাই কিছু না ভেবেই তোমাকে বিয়ে করলাম। জানতাম তুমি কখনো আমাকে বিয়ে করতে রাজী হবে না। তাই তোমাকে জোর করালাম কিন্তু নিহা তুমি বলতে পারো বিয়ের পর আজ পর্যন্ত কোনোদিন আমি তোমার সাথে কিছু করেছি, কোনো জোর করেছি তোমায়? করেনি তো তাহলে.. তোমার কেন মনে হয় আমি তোমাকে আমার রক্ষিতা বানাবো। আমি চেয়েছিলাম একটা পরিচয় পাও তুমি, আর সেটার কারণেই তোমাকে বিয়ে করা। নিজের একটা পরিচয় দেওয়া। তুমি এখন বলবে, বিয়ে টা ভেঙে দিলেই তো পারতাম, কিন্তু আমি বলবো এতে কি সত্যি কোনো কাজ হতো নিহা। তোমার মামী কি তোমার বিয়ে অন্যকোথায় দেবার চেষ্টা করতেন না। যদি সে খারাপ হতো। আমি তো পারতাম না বার বার তোমার বিয়ে ভাঙতে।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমার দিকে তাকিয়ে হেঁসে বললেন…
– ইতি আমাদের বিয়ের ব্যাপারে কখনো জানতো না, তুমি সেদিন বলার পর আমি ওকে বিয়ের ঘটনা বলেছি আর আগে বলি নি।
আমি এখনো চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি। উনি হাতের সিগারেট টা ফেলে দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমি উনার দিকে তাকিয়ে আছি। উনি বলেন…
– কিছু বলবে?
আমি উনার চোখের দিকে তাকিয়ে বলি..
– আমাকে ভালোবাসেন আপনি!
– জানি না!
উনার কথা শুনে আমি চুপ হয়ে যাই। সত্যি কিছু বলার ছিলো না, কি বলবো! উনি আমার কাছে এসে বলেন…
– ভালোবাসা কি আমি জানি না, তোমার প্রতি আমার অনুভূতি কি তাও জানি না।
বলেই রুমে চলে এলেন। আমি সেখানেই দেওয়ালে পিঠ ঠেকে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে রইলাম। আমি ভুল ছিলাম সেটা উনি প্রমান করে গেলেন তবে এইবার নিজেকে ভুল হতে দেখে খুশি লাগছে। হঠাৎ’ই মনে পড়ল, আমার এখানে আসবার আসল কারন। উনার হাসির রহস্য জানতে এসেছিলাম। আমি আবার দৌড়ে উনার কাছে গেলাম। উনি ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি বলে উঠি…
– সব তো বললেন কিন্তু একটা কথাই তো বললেন না!
– কিহ?
– আপনি তখন ওভাবে হাসলেন কেন?
– কখন?
– ওই যে যখন আমার জ্ঞান ফিরল তখন!
আবার রহস্য জনক হাসি দিয়ে..
– এমনেই…
– না কিছু একটা হয়েছে?
– আরে কিছু না।
– তাহলে এখন আবার হাসছেন কেন?
– বললাম তো কিছু না। সরে যেতে দাও আমায়।
বলেই বের হয়ে গেলেন। কিন্তু কিছু একটা তো হয়েছে যা উনি আমার থেকে লুকিয়েছেন। তবে কি সেটা!
#চলবে….
#চলবে….