#মুগ্ধতায়_তুমি🦋
#পর্ব_০২(অন্তিম পর্ব)
#লেখক_ঈশান_আহমেদ
কুহেলি রাতের বেলা একটা রুমে শুয়ে আছে।রুমটা অন্ধকার।খালি রাস্তা থেকে হালকা আলো এসে রুমে পড়ছে।পেটের উপরে কারো ঠোঁটের স্পর্শ পেতে কুহেলির ঘুম ভেঙে গেলো।শোয়া থেকে উঠে বসলো।অন্ধকার রুমে একজন অবয়ব কে দেখতে পারছে।তবে অন্ধকারের কারণে মুখ দেখা যাচ্ছে না।কুহেলি কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো।
কে আপনি?(কুহেলি)
নাওয়াফ রুমের সামনে মোবাইলের লাইট ধরলো।নাওয়াফ কুহেলির সামনে দাঁড়িয়ে আছে মুচকি হেসে।
আপনি এই রুমে কেনো এসেছেন?(কুহেলি)
আমার বাড়ি।আমি রুমে ইচ্ছা সেই রুমে যাবো।(নাওয়াফ)
নাওয়াফ কথাটা বলে কুহেলির পাশে বসলো।কুহেলি কিছুটা সরে গেলো।নাওয়াফ মুচকি হেসে কুহেলির দিকে তাকিয়ে আছে।
ভয় পেলে কিন্তু তোমার জাস্ট অসাধারণ লাগে।(নাওয়াফ)
নাওয়াফ কিছুটা এগিয়ে গিয়ে গিয়ে কুহেলির কপালে একটা চুমু দিলো।
বাসর করতে এসেছিলাম।বাট এখন করাতে বোধহয় ঠিক হবে না।(নাওয়াফ)
নাওয়াফ হাত ঘুরিয়ে টাটা দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে চলে গেলো।কুহেলি জেনো হাপ ছেড়ে বাঁচলো।কুহেলি বিছানা থেকে উঠে রুমের লাইট জ্বালালো।তারপরে দরজার লক লাগিয়ে দিলো।কারণ নাহলে নাওয়াফ আবার চলে আসতে পারে।এক গ্লাস পানি খেয়ে বিছানায় বসে তার বাবাকে কল করলো।
বাবা সবকিছু ঠিক আছে।তোমরা কালকে এসো।আর হ্যাঁ টেনশন করো না কোনো।কালকে এসে বলে যাবে আমাদের বিয়েটা মেনে নিয়েছো বাকিটা আমি দেখবো।(কুহেলি)
কুহেলি কলটা কেটে মুচকি হাসলো।
তুমি তো আমার ফাঁদেই পা দিয়ে দিয়েছো মি.নাওয়াফ চৌধুরী।জাস্ট ওয়েট এন্ড সি।(কুহেলি)
–🦋–
সকালে ঘুম থেকে উঠে কুহেলি নিচে নাওয়াফের মায়ের সাথে রান্নাঘরে কাজ করছে।তবে নাওয়াফের মা বারবার কুহেলিকে কিছুই করতে দিচ্ছে না।তাও কুহেলি জোর করেই করছে।হঠাৎ দরজায় কলিংবেল বেজে উঠলো।নীতি গিয়ে দরজা খুলে দেখলো কুহুর মা-বাবা দাঁড়িয়ে আছেন।
দেখুন আপনার ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে আমি কখনোই দিতে চাইতাম না।কারণ আপনি ভালো করেই জানেন আপনার ছেলে একজন অপরাধী।একজনের থেকে টাকা নিয়ে ও আরেকজনে খুন করে।ও কুহেলি বিয়ে করেছে শুধুমাত্র আমি জেনো ও-কে অ্যারেস্ট করতে না পারি।কুহুমা তুই আমাদের সাথে চল।(রায়হান সাহেব)
বাবা তোমার পায়ের অবস্থা ভালো না।এতো কষ্ট করে আসা ঠিক হয়নি।আর তোমাদের সাথে যেতে পারবো নাহ্।তোমরা চলে যাও।(কুহেলি)
তাহলে আমরা ভুলে যাবো আমাদের কখনো একটা মেয়ে ছিলো।(রায়হান সাহেব)
কুহেলির বাবা-মা বাড়ি থেকে হয়ে চলে গেলো।কুহু ঠায় দাঁড়িয়ে আছে।তার মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।
/🍁/
নাওয়াফ বাড়িতে এসে দেখে কুহু,নীতি আর তার মা বসে আছে।সবার মুখ মলিন।নাওয়াফ তাদের দিকে এগিয়ে গেলো।
কি হয়েছে তোমাদের?(নাওয়াফ)
নাওয়াফকে দেখে মোহিতা বেগম এসে নাওয়াফের গালে ঠাস করে একটা চড় মারলো।
তুই এতো বড় পাপী!তুই মানুষ খুন করিস?(মোহিতা বেগম)
কে বলেছে তোমাদের?(নাওয়াফ)
রায়হান সাহেব।(মোহিতা বেগম)
ওই লোকটা একটা না একটা ঝামেলা বাধাইবেই।মেয়েটাকে বিয়ে করে এনেছি জানি ঝামেলা না করে কিন্তু সেই পিছে লেগে আছে।(নাওয়াফ দাঁতে দাঁত চেপে বললো)
তুই না কুহুকে ভালোবাসিস?(মোহিতা বেগম)
নাওয়াফ জোরে হেসে দিলো।
এই নাওয়াফ চৌধুরী কাউকে ভালোবাসে না।আর তোমরা দুজনেও তো আমার কেউ না।জাস্ট থাকার একটা জায়গা দরকার ছিলো তাই এসে আশ্রয় নিয়েছি।ভুলে যেও না আমি কিন্তু তোমার নিজের ছেলে না।রাস্তা দিয়ে তুলে এনেছিলে।(নাওয়াফ)
মোহিতা বেগম চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।তার মুখ্ দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে নাওয়াফ যা বলেছে তা একদম সত্য।এদিকে কুহেলি তো অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।কত কিছু সে জানতে পারতেছে।এগুলো জানার দরকার ছিলো তার!
/🦋\
একটা ব্রিজের উপরে দাঁড়িয়ে আছে নাওয়াফ আর কুহু।নাওয়াফ কুহুকে জোর করে এখানে নিয়ে এসেছে।
কুহুপাখি তোমার কি আমাকে বোকা মনে হয়?(নাওয়াফ)
ম মা মানে?(কুহেলি তুতলিয়ে বললো)
তুমি যে আমাকে গ্রেফতার করার জন্য আমাদের বাড়িতে আছো তা আমি ভালো করে জানি।(নাওয়াফ)
কুহেলি নাওয়াফের কথা শুনে চমকে গেলো।
এতো চমকে যেও না।আমি এটাও ভালো করে জানি তুমি একজন পুলিশ অফিসার।নিজের পরিচয় গোপন রেখে খুন করতে এসেছো।তবে কি জানো মরলে দুজনে একসাথেই মরবো।কারণ তোমায় বড্ড ভালোবাসি।(নাওয়াফ)
আপনি না বললেন আপনি আমাকে ভালোবাসেন না।(কুহেলি)
ওটা জাস্ট কথার কথা।আমি তো তোমাকে সেই কলেজ লাইফ থেকেই ভালোবাসি।তুমি আমাকে চিনবে না।কারণ হলো আমার চেহারা কসমেটিক সার্জারী করে পাল্টে ফেলেছি।আমি তোমার অনেক সিনিয়র।(নাওয়াফ)
কে আপনি?(কুহেলি)
নাওয়াফ চৌধুরী নীল।(নাওয়াফ)
নীল ভাইয়া।(কুহেলি)
হ্যাঁ।এই পৃথিবীতে আমি না থাকলে তুই-ও থাকতে পারবি না কুহুপাখি।(নাওয়াফ)
নাওয়াফ বন্দুক বের করে যেই গুলি করতে যাবে তার আগেই কুহেলি নাওয়াফের বুক বরাবর গুলি করে।নাওয়াফ বুকে হাত দিয়ে কুহেলির দিকে তাকিয়ে আছে।
তোর মতো অপরাধীর বেঁচে থাকার প্রয়োজন নাই।(কুহেলি)
নাওয়াফ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলো।
আমি নীল ভাইয়াকে ভালোবাসতাম।কিন্তু এই নাওয়াফকে আমি ভালোবাসি না।এতোটা বিগড়ে না গেলেও পারতে নীল ভাইয়া।আমিও তোমার কাছে আসছি।এমনি ক্যান্সারের রুগী।দুইমাস পরে মারা যাবো।দুই মাস অপেক্ষা করে আর কি হবে!এখনি মরে যেতে ক্ষতি কি!(কুহেলি)
কুহেলি নিজের মাথায় গুলি করলো।তারপরে মাটিতে পড়ে গেলো।
——————-#সমাপ্ত———————
(