#মেঘের_ভেলায়_চড়ে
#Extra_Part
#Ariyana_Nur
—আমরা কোন ভূল করলাম না তো তিহান?
ফাইজার কথা শুনে তিহান চোখের উপর থেকে হাত সরিয়ে পাশে শুয়ে থাকা ফাইজার দিকে তাকিয়ে বলল……
—তোমার কেন মনে হচ্ছে আমরা ভূল করেছি?
ফাইজা চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে মিনমিনে গলায় বলল…….
—আমার নিজের কাছে নিজেকে অনেক ছোট মনে হচ্ছে তিহান।আমি রাইজুর সাথে চোখ মিলাতে পারছি না।ওর দিকে তাকালেই মনে হয় ওর ঐ মায়াবী চোখজোড়া আমায় বলছে তুই ও আমার সাথে বেইমানী করলি ফাইজু?আমার বিশ্বাসের অমর্যাদা করলি।আমি কাজটা ঠিক করিনি তিহান।মোটেও ঠিক করেনি।রাইজু বিশ্বাস করে আমার কাছে এসেছিলো আর আমি?আমি কি করলাম?নিজের ফ্যামিলি নিজের ঘর বাচানোর নানান মিথ্যে অজুহাত দিয়ে ওকে বিয়ে করার জন্য বাধ্য করলাম।রাইজু মুখে না বললেও আমি জানি, একমাত্র আমার ঘর বাচানোর কথা শুনে ও বিয়েতে মত দিয়েছে।তা না হলে ও এই বিয়ে কিছুতেই করতো না।আমার কাজে ও খুব কষ্ট পেয়েছে তিহান।নিজের কাজে নিজেকে খুব ছোট মনে হচ্ছে।
তিহান ফাইজার মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।ড্রিম লাইটের আলোতে ফাইজার অস্রুভেজা চেহারা দেখে তিহানের মুখটা মলিন হয়ে গেলো।ফাইজার কথাই বুঝা যাচ্ছে ফাইজা অনেক কষ্ট পাচ্ছে।তিহান উঠে বসে ফাইজাকে টেনে তুলে ফাইজার চোখের জল মুছে দিয়ে ফাইজাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল…….
—তুমি যা করেছো সব তো ভাবির ভালোর জন্য করেছো।তাহলে কেন নিজেকে ছোট মনে করছো তুমি?
ফাইজা ফুপিয়ে বলে উঠল…….
—ভালোর জন্য করি আর যাই করি।যা করেছি সেটা তো অন্যায় তিহান?একটা মেয়ে অসহায় অবস্থায় আমার কাছে আশ্রয় নিলো।আর আমি কি করলাম?মেয়েটার অমতে মেয়েটাকে অন্য এক সম্পর্কে জড়িয়ে দিলাম।সবাই না জানলেও আমি তো জানি মেয়েটা কোন অবস্থা থেকে এখানে এসেছে।কি করে আমি এমন জঘন্য একটা কাজ করতে পারলাম।
তিহান ফাইজার মাথায় হাত বুনিয়ে দিতে দিতে বলল…….
—তুমি একা কেন নিজেকে দোষারোপ করছো ফাইজা।ভূল তো আমিও কিছু কম করিনি।একমাত্র আমার জন্য আজ ভাবির এই অবস্থা।সেদিন যদি আমি ভার্সিটিতে এমন মজা না করতাম তাহলে মনে হয় না এমন কিছু একটা হত।তাছাড়া তোমার সকল কাজে আমিই তো তোমায় সাহায্য করেছি।ভাবিকে তুমি বাধ্য করেছো বিয়ে করতে আর ভাইয়াকে আমি।
কথাগুলো বলেই তিহান একটা চাপা নিশ্বাস ছাড়লো।তিহান কথার প্রতিউওরে ফাইজা কিছু না বলে নিজের মত কেদে বুক ভাসাতে লাগলো।তিহান কিছুক্ষন চুপ করে থেকে কোমল গলায় বলল…….
—ফাইজা!তুমি জানো ভাইয়া আমার জন্য কি?আমার নিজের কষ্ট আমি সহ্য করতে পারলেও ভাইয়ার একটু কষ্টও আমার সহ্য হয় না।সেখানে তুমিই বল আমি কি ভাইয়ার খারাপ চাইতে পারি?তুমি চাও ভাবি যেন ভালো থাকে।তার কালো অতীত ভূলে সুন্দর একটা জীবন গড়তে পারে আর আমি চাই আমার ভাইটা যেন সব সময় হাসিখুশি থাকে।তার ঐ মুখে যেন কখনো আধার এসে ভিড় না জমায়।আমরা যা করেছি ভাইয়া আর ভাবির কথা ভেবেই সব করেছি।তাদের ভালো চেয়েই করেছি।কিন্তু আমাদের কাজের ধরন ভূল ছিলো।কারো ভালো করতে গিয়ে একটু আকটু ভূল করা তো দোষের নয়?
—যদি তারা আমাদের ভূল বুঝে?ভূল বুঝে আমাদের দূরে ঠেলে দেয়?
—সেসব নিয়ে এখন এতো ভেবো না তো।পরের টা পরে দেখা যাবে।তখন না হয় কিছু একটা করে তাদের বানিয়ে নিব।
ফাইজা তিহানের মুখের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে বলল…….
—ভাইয়া রাইজুকে মেনে নিবে তো তিহান?সব ঠিক হবে তো?
তিহান ফাইজাকে একটা মুচকি হাসি উপহার দিয়ে বলল……
—দোয়া কর সব যেন ঠিক হয়ে যায়।আমরা যেনমটা চেয়েছি তেমনটাই যেন হয়।
ফাইজা দু’হাত মোনাজাতে মত করে তুলে বলল…….
—আমিন।
________
তীব্র রাই এর ভীত মুখ এর দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসতে লাগলো।রাইকে আরেকটুকু বিব্রত করতে রাই এর সাথে লেগে সটান হয়ে শুয়ে পরল।সাথে সাথেই রাই ছিটকে সরে লাফ দিয়ে বেড থেকে নিমে পরল।রাই এর কাজে তীব্র শব্দ করে হেসে উঠল।তীব্র কাজে রাই বোকার মত তীব্রর মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।তীব্র হাসতে হাসতে উঠে বেডের সাথে হেলান দিয়ে বসে বলল……
—সরি, সরি মজা করছিলাম।তুমি যে এমন ভয় পাবে তা ভাবতে পারিনি।মজা করার জন্য সরি বিয়াইন সাহেবা।
তীব্রর কথা শুনে রাই এর চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।মনে মনে বলতে লাগলো……
—একটু আগে বললো বউ এখন বলছে বিয়াইন সাহেবা।লোকটি কি পাগল নাকি?সাইকোর হাত থেকে পালিয়ে মেন্টেল এর হাতে এসে পরলাম নাতো?
তীব্র রাই এর মুখের সামনে চুটকি বাজিয়ে বলল…….
—ও হ্যালো! আমার দিকে এমন টুকুর টুকুর করে তাকিয়ে আছো কেন?নজর লেগে যাবে তো।
তীব্রর কথা শুনে রাই সাথে সাথে মাথা নিচু করে ফেলল।রাই নিজের কাজে নিজেই বিব্রত বোধ করছে।রাই কি বলবে কি করবে সে সব ভাবতে ভাবতে দাড়িয়ে কাচুমাচু করতে লাগলো।
তীব্র সোজা হয়ে বসে রাইকে বসতে ইশারা করে সিরিয়াস হয়ে বলল…….
—তোমার সাথে কিছু কথা আছে?এখন বললে তোমার কোন অসুবিধা হবে না তো?
তীব্রর কথা শুনে রাই মাথা নাড়িয়ে না করল।যার মানে তার কোন অসুবিধে হবে না।
তীব্র কিছুটা সরে বসে পূনরায় রাইকে বেডে বসতে ইশারা করে বলল…..
—বসো।
তীব্রর কথা শুনে রাই গুটিগুটি মেরে বেডের এক কোনে গিয়ে বসল।তীব্র বড় করে একটা নিশ্বাস নিয়ে নিজেকে কিছুটা প্রস্তুত করে বলল…….
—দেখো রাই!আজ আমাদের জীবনে যেটা ঘটছে না সেটার জন্য তুমি দায়ী আর না আমি।আমরা দুজনই পরিস্থিতির স্বীকার ছিলাম।হয়তো আমাদের ভাগ্যে এমন ছিলো।তাই আমাদের এমন এক পরিস্থিতিতে এনে দাড় করিয়েছে।যেখানে আমাদের মত দুজন অচেনা অজানা মানুষকে পবিত্র কালামের সাক্ষীতে পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ করেছে।আমি জানি তোমার পক্ষে এতো তাড়িতাড়ি সব মেনে নেওয়া সম্ভব।সত্যি বলতে আমার পক্ষেও এতো তাড়াতাড়ি সব মেনে নেওয়া সম্ভব না।তাই বলে কি আমরা আমাদের এই পবিত্র বন্ধনের সম্পর্ক শুরু হতেই শেষ করে দিব?আমি জানি না তোমার মনে কি আছে?আমি শুধু আমার মনের কথা বলছি।আমার মতে যেভাবে চলছে সব সেভাবেই চলতে দাও।যে যেটা ভাবছে তাকে সেটা ভাবতে দাও।বাকিটা না হয় পরে দেখা যাবে ভাগ্য আমাদের কোন মোড়ে নিয়ে দাড় করায়।একটা কথা কি জানো,অনেক সময় চেনা মানুষটাও অচেনা হয়ে যায়।আবার অচেনা মানুষটাও অনেক কাছের হয়ে যায়।মনের খবর কেই বা বলতে পারে বল?কে তোমায় কতটা ভালোবাসে?
কথাগুলো বলে তীব্র কিছুক্ষন চুপ করে বসে থেকে বেড থেকে নামতে নামতে বলল…….
—অনেক রাত হয়েছে শুয়ে পর।
কথাটা বলে এক মুহূর্ত দেড়ি না করে রুম থেকে বের হয়ে দরজা নক করে চলে গেলো।রাই বোকার মত দরজার দিকে তাকিয়ে রইল।মাথায় শুধু তীব্রর একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে…….
—মনের খবর কেই বা বলতে পারে কে তোমায় কতটা ভালোবাসে?
_______
হাত পা বাধা অবস্থায় চেয়ারের সাথে বসে রয়েছে দিপা বেগম।ভয়ে তার চেহারা একটুখানি হয়ে রয়েছে।ফাহাদ হাতে ধাড়ালো এক ছুড়ি নিয়ে তাকে ঘিড়ে চক্রর কাটতে কাটতে বলল……
—ফুপি!তুমি কি আমার রাই পাখিকে পালাতে সাহায্য করেছো?
দিপা বেগম ফাহাদ এর কথা শুনে শুকনো ঢোক গিলে তোতলাতে তোতলাতে বলল……
—এসব তুই কি বলছিস ফাহাদ বাবা?আমি কেন রাই কে পালাতে সাহায্য করবো?
ফাহাদ দিপা বেগম এর দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে বলল……
—তুমি তাহলে আমার পাখিকে পালাতে সাহায্য করোনি?
দিপা বেগম মাথা নাড়িয়ে না বলল।
ফাহাদ ইনোসেন্ট ফেস করে বলল…….
—তাহলে আমি তোমায় বেধে রেখেছি কেন?সরি ফুপি।ভেরি ভেরি সরি।আমি বুঝতে পারিনি।না বুঝেই তোমার কষ্ট দিয়ে ফেললাম।
কথাটা শেষ করতে না করতেই ফাহাদ দিপা বেগম এর হাতের উপর ছুড়ি চালিয়ে দিল।সাথে সাথেই দিপা বেগম গগন ফাটানো চিৎকার দিয়ে বলে উঠল…….
—ফাহাদ বাবা!আমি কিছু করিনি।মনজুর মা (কাজের মহিলা) রাইকে পালাতে সাহায্য করেছে।
দিপা বেগম এর কথা শুনে ফাহাদ হাতে থাকা ছুড়িটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে দিপা বেগম এর সামনে ঝুকে দাড়ালো।দিপা বেগম এর কাটা হাত শক্ত করে চেপে ধরে ফিসফিস করে বলল…….
—এইটুকু কথা বলতে এতো দেড়ি লাগে?আগে বলে দিলেই তো তোমায় আঘাত করতাম না।তুমি জানো না মিথ্যে আমার পছন্দ না তাহলে কেন বললে ফুপি?
ফাহাদ এর ফিসফিস কথা শুনে দিপা বেগম এর হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসতে লাগলো।ফাহাদের থেকে এই কথা গোপন করার কারনে যে তার জন্য আরো বড় কিছু অপেক্ষা করছে সে কিছুটা হলেও সে আচ করতে পারলো।
#মেঘের_ভেলায়_চড়ে
#Part_08
#Ariyana_Nur
রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে রাই ঘুমানোর জন্য বিছানা ঠিক করছে।এমন সময় তীব্র বাহির থেকে এসে ঘামে ভেজা শরীর নিয়েই কোন কথা না বলে হাত পা ছড়িয়ে বিছানায় শুয়ে পরল।তীব্রর কাজে রাই এর চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।রাই এর বিছানা গুছানোতে এলার্জি।সব কাজ করলেও বিছানা গুছাতে তার ভালো লাগে না।তার মধ্যে এতো কষ্ট করে বিছানা গুছানোর পর ঘামাক্ত শরীর নিয়ে বিছানায় শোয়াতে রাই এর রাগ লাগছে। ইচ্ছে করছে তীব্রর মাথা ফাটাতে।রাই নিজের রাগটাতে প্রকাশ না করে হাতে থাকা বিছানার ঝাড়ুটা সাইডে রাখতে না রাখতেই তীব্র আদুরে গলায় বলে উঠল,
—বউ!শরীরটা খুব দূর্বল লাগছে।আমায় একটু ফ্রেস করিয়ে খাইয়ে দেও না গো।
তীব্রর আদুরে গলার কথা শুনে রাই তীব্রর দিকে রাগি চোখে তাকালো।তীব্র যে তার সাথে মজা করছে তা আর তার বুঝতে বাকি নেই।আজ সকালেও তীব্র আর তিহান মিলে রাইকে ইচ্ছে মত নানান কথা বলে কখনো বিব্রত করেছো তো কখনো রাগিয়ে তুলেছে।শেষে মুনিয়া বেগম এসে ওদের হাত থেকে রাইকে রক্ষা করে।রাই কথা না বাড়িয়ে তীব্রর দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে থেকে ওয়াসরুমের দিকে পা বাড়াতে নিলেই তীব্র বলল,
—রাগ মনে পুষে রাখতে নেই।সাথে সাথে ঝেড়ে ফেলতে হয়।তা না হলে তা আস্তে আস্তে বিশাল রুপ ধারন করে বোম এর মত ফাটবে।
তীব্রর কথা শুনে রাই এর নিভু নিভু রাগটা দাঊ দাঊ করে জ্বলে উঠল।রাই তীব্রর দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে ধুপধাপ পা ফেলে কাবার্ড থেকে একটা বেডশিট বের করে তীব্রর দিকে ছুড়ে মেরে গটগট করে ওয়াসরুমে ঢুকে শব্দ করে ওয়াসরুমের দরজা লাগিয়ে দিল।
রাই এর কাজে তীব্র শব্দ করে হেসে উঠল।সে তো রাইকে জ্বালানোর জন্যই এমন করেছে।নিজের কাজে সফল হয়ে তীব্রর মুখে বিশ্ব জয়ের হাসি ফুটে উঠল।
________
রাই ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে দেখে তীব্র
রুমে নেই।বিছানার চাদর অনেকটা এলেমেলো হয়ে রয়েছে।রাই মনে মনে তীব্রর গুষ্ঠি উদ্ধার করতে করতে পূনরায় বিছানা গুছানোর কাজে লেগে পরল।
তীব্র অন্য রুমের ওয়াসরুম থেকে ফ্রেস হয়ে এসে দেখে রাই শোয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।রাইকে আরেকটুকু জ্বালানোর জন্য রাই এর দিকে হাতে থাকা তোয়ালে টা ছুড়ে মারল।রাই তোয়ালে টা হাতে নিয়ে তীব্রর দিকে কপালে ভাজ ফেলে তাকিয়ে দাতে দাত চেপে বলল,
—কি করবো এটা দিয়ে?পাপোস বানাবো?
তীব্র রাই এর রাগি ফেস এর দিকে তাকিয়ে দাত কেলিয়ে হাসি দিয়ে কাবার্ড থেকে কিছু একটা বের করে পকেটে নিয়ে রাই এর পাশে এসে বসে বলল,
—যা ইচ্ছে কর।আমার সবই তো তোমার।তোমার জিনিস তুমি যা ইচ্ছে করবে।জিগ্যেস করার কি আছে।
তীব্রর কথা শুনে রাই তীব্রর দিকে গোল গোল চোখ করে তাকিয়ে রইল।কথার মানে কিছু বোঝার আগেই তীব্র রাই এর হাত টেনে নিজের হাতের ভাজে নিয়ে নিল।তীব্রর কাজে রাই এর চোখ কোটার থেকে বের হবার উপক্রম।তীব্র,রাই এর হাত ধরে রাই এর হাতের দিকে তাকিয়ে বলল,
—বিয়েটা যেভাবেই হয়েছে না কেন বিয়ের পর তোমাকে আমার কিছু গিফট দেওয়া দরকার ছিলো।কিন্তু এই দু’দিন পরিস্থিতি, সময় কোনটাই ছিলো না যে তোমায় কিছু এনে গিফট করবো।তাই আজ একটু সময় করে মলে গিয়েছিলাম।
তীব্র পকেট থেকে আংটি টা বের করে রাই এর সামনে ধরে বলল,
—অনেক খুজে এটা পছন্দ করেছি।অনুমতি হবে কি নিজ হাতে আংটি টাকে তার নিজ স্থানে বসিয়ে তার সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি করে তোলার?
তীব্রর কথা ও কাজে রাই পুরোই শকড।কি উওর দিবে রাই?কিছুই মাথায় আসছে না তার।মাথা কেমন ফাকা ফাকা লাগছে।রাই এর ভাবনার মাঝেই তীব্র,রাই এর হাতে আংটিটা পরিয়ে দিল।তীব্রর কাজে তো এবার রাই অবাকের চরম পর্যায় পৌচ্ছে গেলো।তীব্র রাই এর বিস্ময়রত চেহারার দিকে তাকিয়ে রাই এর নাক টেনে দিয়ে মুচকি হেসে বলল,
—কাছের মানুষের কাছ থেকে অধিকার চেয়ে নিয়ে হয় না।অধিকার ফলাতে হয়।আংটিটা তোমার হাতে মানিয়েছে।দেখো তোমার হাতের ছোয়া পেতে কেমন আরো জ্বলজ্বল করছে।আংটির সৌন্দর্য নষ্ট করে তাকে মূল্যহীন না করলেই খুশি হব।
কথাটা বলে তীব্র কিছুক্ষন রাই এর হাতে থাকা জ্বলজ্বল করতে থাকা আংটিটার দিকে তাকিয়ে থেকে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।তীব্র চলে যাওয়ার পরেও রাই শকড হয়ে কিছুক্ষন বসে রইল।অবাক চোখে নিজের হাতে থাকা আংটির দিকে তাকিয়ে রইল।মুহূর্তেই চোখের সামনে ভেসে উঠল পুরোনো কিছু তিক্ত স্মৃতি।
ফ্লাসব্যাক…….
রাই কিচেনে কাজ করছে।এমন সময় কিচেনের মধ্যে ধরফর করে প্রবেশ করল ফাহাদ।ফাহাদের এমন আগমনে রাই ভয় পেয়ে গেলো।মিনমিনে গলায় বলল,
—ফাহাদ ভাইয়া আপনি এখানে?কিছু লাগবে?
ফাহাদ রাই এর দিকে রক্ত চক্ষু নিক্ষেপ করে রাগি গলায় বলল,
—তোমার হাতটা দাও।
রাই,ফাহাদ এর কথা শুনে ভয়ে দু’হাত ওড়না দিয়ে ঢেকে নিলো।ফাহাদ পূনরায় রাগি গলায় বলল,
—কি বলছি কথা কানে যায় না।হাত দাও।
রাই এবার ভয়ে ভয়ে হাত বাড়িয়ে দিতেই ফাহাদ রাই এর হাত ক্ষপ করে ধরে পকেট থেকে একটা হিরের আংটি বের করে পরিয়ে দিল।ফাহাদ,রাই এর হাতের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে রাই এর হাত নিজের ঠোটের সামনে নিতেই রাই ঝাটকা দিয়ে ফাহাদ এর হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিল।আংটিটা হাত থেকে খোলার চেষ্টা করতেই ফাহাদ রাই এর হাত খপ করে ধরে বসে।রাই এর দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে চেচিয়ে বলল,
—আমার কাজে বাধা দেওয়ার সাহস তুই কি করে পাস?এতো সাহস তোর?তুই আমার সামনে আমার দেওয়া আংটি হাত থেকে খোলার সাহস দেখাস?
রাই এর হাত জোড়ে চেপে ধরাতে রাই ব্যাথায় কুকড়ে উঠল।কাপাকাপা গলায় বলল,
—ভাইয়া এতো দামি আংটি আমার হাতে দেখলে কাকিমা কি বল…..।
কথাটা শেষ করার আগেই ফাহাদ জ্বলন্ত চুলাটা নিভিয়ে চুলোর উপরে থাকা ফ্রাইপ্যান টা দূরে ছূরে মারল।ফাহাদ এর কাজে রাই ভয়ে কেপে উঠল।কিছু বোঝার আগেই রাই এর আংটি পড়ানো আঙুলটা চুলোর আগুনে জ্বলজ্বল করতে থাকা স্টেনের মধ্যে লাগিয়ে দিল।সাথে সাথেই রাই গগন ফাটানো চিৎকার দিয়ে উঠল।ফাহাদ অপর হাত দিয়ে রাই এর মুখ চেপে ধরে ফিসফিস করে বলল,
—হুস!ডোন্ট সাউন্ড।এটা হলো আমার ভালোবাসা চিহ্ন ছুড়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করার শাস্তি।এবার তো শুধু আঙুল পুড়ে দিয়েছি।দ্বিতীয় বার আংটি খোলার সাহস দেখালে না থাকবে আংটি আর না থাকবে আংটি পরার আঙুল।
বর্তমান……..
পুরোনো কথা মনে পরতে রাই এর চোখ জলে পরিপূর্ণ হয়ে উঠল।নিজের হাতে থাকা আংটিটার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলতে লাগল,
—কি আজব তাই না?দু’জন মানুষ দু’জনই অধিকার দেখিয়ে বিনা অনুমতিতেই হাতে আংটি পরিয়ে দিলো।কিন্তু দুজনের অধিকার ফলানোর ধরন আলাদা।একজনের অধিকার ফলানো আংটি না চাইতেও ভয়ে ভয়ে নিজের কাছে রাখতে হয়েছে।আর আরেক জনের……।
পুরো কথা শেষ না করে রাই চাপা নিশ্বাস ফেলল।
________
রাই ড্রায়িং রুম গুছাচ্ছে।কলিং বেলের শব্দ পেয়ে রাই হাতের কাজ রেখে দরজা খুলতেই হুরহুর করে কয়েক জন লোক ভিতরে প্রবেশ করল।তাদের কাজে রাই কিছুটা ঘাবড়ে গেল।মনের মধ্যে সাহস সঞ্চয় করে রাগি গলায় বলল,
—কারা আপনারা?আজব তো?বলা নেই কয়া নেই বাসার ভিতরে ঢুকে পরলেন?বের হন বাসা থেকে।
রাই এর কথা যেন লোকগুলো শুনেও শুনলো না।তারা সেই আগের মত একি ভাবে রাইকে ঘিড়ে দাড়িয়ে রইল।রাই পূনরায় ঝাঝালো গলায় বলল,
—কি হল কথা কানে যাচ্ছে না।বের হন ব…..।
রাই পুরো কথা শেষ করার আগেই একটা শীতল কন্ঠে ভেসে এল,
—আমার ভালোবাসায় কি কো কমতি ছিলো রাই পাখি?আমি তো তোমায় পাগলের মতই ভালোবেসে ছিলাম।তাহলে কেন আমায় ছেড়ে চলে আসলে?
কন্ঠটা চিনতে রাই এর একটুও ভুল হল না।ফাহাদের শীতল কন্ঠটা যেন রাই এর শরীর কাটা দিয়ে উঠছে।রাই ঘুড়ে ফাহাদ এর দিকে তাকিয়ে কাপাকাপা গলায় বলল,
—আ-আপনি?
ফাহাদ বাকা হেসে রাই এর দিকে রক্ত চক্ষু করে তাকিয়ে বলল,
—কি ভেবেছিলে আমার হাত থেকে পালিয়ে বাচতে পারবে?পালিয়ে আর কয়দিন বাচবে পারলে পাখি?দেখলে তো তিনদিনের দিনের মাথায় তোমায় কেমন খুজে বের করে ফেললাম।
ফাহাদ এর কথা শুনে রাই ভয়ে ঠকঠক করে কাপতে লাগলো।ফাহাদ রাই এর অবস্থা দেখে বাকা হেসে বলল,
—আমার এন্ট্রিতেই এমন করছো পুরো পিকচার দেখলে কি করবে পাখি?
ফাহাদ একটা রহস্যময়ী হাসি দিয়ে শিস বাজাতেই দু’জন লোক সেন্সহীন,রক্তাত্ব একজন কে টানতে টানতে বাসার ভিতরে প্রবেশ করল।লোকটার রক্তাত্ব চেহারা দেখে রাই শকড হয়ে দাড়িয়ে রইল।রাই এর চোখ দিয়ে আপনা আপনি জল গড়িয়ে পরল।অস্ফুট সুরে বলে উঠল,
—ত-তীব্র!
#মেঘের_ভেলায়_চড়ে
#Part_09
#Ariyana_Nur
ফাহাদ একটা রহস্যময়ী হাসি দিয়ে শিস বাজাতেই দু’জন লোক সেন্সহীন,রক্তাত্ব একজন কে টানতে টানতে বাসার ভিতরে প্রবেশ করল।লোকটার রক্তাত্ব চেহারা দেখে রাই শকড হয়ে দাড়িয়ে রইল।রাই এর চোখ দিয়ে আপনা আপনি জল গড়িয়ে পরল।অস্ফুট সুরে বলে উঠল,
—ত-তীব্র!
রাই,তীব্রর দিকে পা বাড়াতে নিলেই ফাহাদ এসে রাই এর পথ আটকে দাড়ায়।কিছুক্ষন রাই এর দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে রাই এর গাল চেপে ধরে চেচিয়ে বলল,
—বলেছিলাম না তোর মুখে যেন কোন ছেলের নাম না শুনি।কোন সাহসে তুই অন্য ছেলের নাম নিচ্ছিস?
ফাহাদ এর কাজে রাই ছটফট করতে লাগলো।রাই,ফাহাদ এর হাত থেকে ছাড়া পাবার চেষ্টা করতেই ফাহাদ আরো জোরে রাই এর গাল চেপে ধরে ফিসফিস করে বলল,
—ফরফর করছো?যত খুশি করে নাও।একটু পর ফরফর তো দূর সোজা হয়ে দাড়ানোর ও শক্তি পাবে না।
ফাহাদ কথাগুলো বলে তীব্রর দিকে এক পলক তাকিয়ে বাকা হেসে রাই এর গাল ছেড়ে দিল।ফাহাদ এর হাত থেকে ছাড়া পেতেই রাই,ফাহাদ এর সামনে হাত জোড় করে বলল,
—প্লিজ ওনাকে ছেড়ে দিন।আপনি যা বলবেন আমি তাই শুনবো।যেখানে যেতে বলবেন সেখানেই যাব।যেভাবে চলতে বলবেন সেভাবেই চলবো একটুও টু-শব্দ করবো না।তার পরেও অনার কোন ক্ষতি করবেন না।প্লিজ ওনাকে ছেড়ে দিন।
রাই কে অন্য ছেলের জন্য কান্না করতে দেখে ফাহাদ এর মাথায় রক্ত উঠে গেলো।কিছুক্ষন দু’হাতে নিজের চুল টেনে সাইকোদের মত করে ঘাড় এদিক সেদিক ঘুড়িয়ে ঘাড় বাকা করে রাই এর দিকে তাকিয়ে দাতে দাত চেপে বলল,
—ছেলেটা কে তোর?যার জন্য এতো মায়া হচ্ছে?তোর চোখে আমি ছেলেটার জন্য মায়া,ভালোবাসা সব দেখতে পাচ্ছি।তোর সব অন্যায় সহ্য করলেও এই অন্যায়টা আমি সহ্য করতে পারছি না।তুই শুধু আমার।তোর চোখে আমার জন্য ডর,ভয়,মায়া, ভালোবাসা সব থাকবে।অন্য ছেলের জন্য থাকবে কেন?
শেষের কথাটা ফাহাদ চেচিয়ে বলেই দেয়ালে স্বজোরে ঘুষি মারল।ফাহাদ এর কাজে রাই সব বাকি সবাই কেপে উঠল।ফাহাদ সাপের মত ফোস ফোস করতে করতে নিজের কাছে থাকা রিভলবারটা বের করে তীব্রর দিকে তাক করে বলল,
—না থাকবে এই লোক আর না থাকবে এই লোকের জন্য আমার পাখির চোখে কোন মায়া,ভালোবাসা।
কথাটা বলে এক মুহূর্ত দেড়ি না করে ফাহাদ,তীব্রর বুক বরারব সুট করলো।
ফাহাদ এর কাজে রাই স্টেচু হয়ে গেলো।পলকহীন তাকিয়ে রইল তীব্রর বুকের কাছে রক্তে ভিজে যাওয়া শার্ট এর দিকে।ফাহাদ দ্বিতীয় বার সুট করতেই রাই গগন ফাটানো চিৎকার দিয়ে বলে উঠল,
—তীব্র!
সাথে সাথেই চমকে উঠল রাই।ঘুম ছুটে যেতেই রাই ধরফর করে উঠে বসল।রাই ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে গেছে।বুকের ভিতর কেমন ধরফর করছে।মনে হচ্ছে এখনি হৃদপিণ্ড টা বাহিরে বের হয়ে আসবে।তীব্র কে নিয়ে এমন একটা ভয়ংকর স্বপ্ন দেখে ভয়ে রাই এর গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।রাই সাইড টেবিলের উপর থেকে পানির গ্লাস হাতে নিয়ে ঢকঢক করে পানি পান করে গলা ভিজিয়ে নিল।রাই নিজেকে কিছুটা শান্ত করে রুমের চারোপাশে চোখ বুলিয়ে তীব্রকে খুজতে লাগলো।রুমের কোথায় তীব্র নেই।তীব্রকে এক পলক দেখার জন্য রাই এর মনটা ছটফট করে উঠল।কেন সেটা সে নিজেও জানে না।রাই তড়িঘড়ি বেড থেকে নেমে দরজার দিকে পা বাড়াতেই নিলেই তীব্র তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে ওয়াসরুম থেকে বের হল।রাইকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে তীব্র,রাই এর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বলল,
—গুড মর্নিং।
রাই বড় বড় কদম ফেলে তীব্রর দিকে এগিয়ে গিয়ে ভীত কন্ঠে বলল,
—আপনি ঠিক আছেন?
রাই এর কাজে তীব্রর কপালে ভাজ পরে গেলো।রাই এর দিকে তাকিয়ে অবাক কন্ঠে বলল,
—আমার আবার কি হবে?আমাকে দেখে কি তোমার অসুস্থ মনে হচ্ছে?
তীব্রর বাকা কথা শুনে রাই মাথা নিচু করে ফোস করে নিশ্বাস ফেলল।তীব্র কে নিয়ে অমন একটা বাজে স্বপ্ন দেখের কারনেই যে তীব্রকে দেখতে রাই আনমনে এমন এক প্রশ্ন করে বসেছে সেটা কিভাবে বলবে সে?
—তুমি ঠিক আছো?
তীব্রর কথা শুনে রাই মুখ তুলে তীব্রর দিকে তাকালো।রাই এর শুকনো ভীতু চেহারাটা দেখে আস্তে আস্তে তীব্রর কপাল এর ভাজ চলে গেলো।হাতে থাকা তোয়ালেটা গলায় ঝুলিয়ে রাই এর কপালে, গলায় হাত ছুইয়ে চিন্তিত সুরে বলল,
—কি হয়েছে তোমার?মুখটা এমন শুকনো দেখা যাচ্ছে কেন?জ্বর আসছে?শরীর খারাপ লাগছে?
রাই নিজের জন্য তীব্রকে এমন ব্যাস্ত হতে দেখে তার চোখ ভিজে উঠল।তার বাবা-মা মারা যাবার পর একমাএ ফাইজা তার কিছু হলে ব্যাস্ত হয়ে পরত।রাই কাপাকাপা গলায় বলল,
—আমি ঠিক আছি।
রাই এর কথা শুনে তীব্র ধমক দিয়ে বলল,
—বললেই হল ঠিক আছো?চেহারা দেখেই বুঝা যাচ্ছে তুমি ঠিক নেই।আবার বড় বড় কথা, আমি ঠিক আছি।
শেষের কথাটা তীব্র রাইকে ব্যাঙ্গ করে বলল।তীব্রর কাজে রাই এর ঠোটের কোনে হাসির রেখা ফুটে উঠল।ওড়নার কোনা দিয়ে চোখের জলটা গড়িয়ে পরার আগেই মুছে নিয়ে বলল,
—একটা প্রশ্ন করবো?
তীব্র কপালে ভাজ ফেলে রাই এর মুখের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বলল,
—করো।
—কাউকে বাচাতে যদি কেউ কারো মনে কষ্ট দেয় তাহলে কি খুব বেশি ক্ষতি হয়?
রাই এর কথা শুনে তীব্র,রাই এর দিকে কোমল দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল,
—সেটা নির্ভর করে সামনের মানুষটার উপর।সামনের মানুষটা যদি নিজের জীবন উপেক্ষা করে তোমায় আগলে রাখতে চায় তাহলে আমি বলবো তাকে কষ্ট না দেওয়াই ভালো।কেননা হতে পারে তোমার দেওয়া আঘাত নিয়ে সে জিন্দা লাশ হয়ে বেচে রয়েছে।
কথাটা বলে তীব্র চলে যেতে নিয়ে পিছন দিকে ঘুরে তাকিয়ে বলল,
—একটা কথা মনে রাখবে,বাচা মরা আল্লাহর হাতে।যার যেভাবে মৃত্যু আছে সেভাবেই হবে।কাউকে বাচিয়ে রাখতে গিয়ে তাকে মৃত্যু যন্ত্রণা না দেওয়াই ভালো।
________
—ফাইজা!ফাইজা!কোথায় তুমি? তাড়াতাড়ি রুমে এসো।আমার ফাইলটা খুজে পাচ্ছি না।প্লিজ একটু খুজে দিয়ে যাও।
সকাল বেলা মুনিয়া বেগম আর ফাইজা মিলে কিচেনে সবার জন্য নাস্তা বানাচ্ছে।তিহান এর গলা ফাটানো আওয়াজের কথা শুনে ফাইজা কাদো কাদো ফেস করে মুনিয়া বেগম এর দিকে তাকালো।মুনিয়া বেগম মিষ্টি হেসে ফাইজার মাথার হাত বুলিয়ে বলল,
—যা মা আমার ছোট ছেলেটাকে একটু সব গুছিয়ে দিয়ে আয়।বুঝিস তো ছোট মানুষ নিজের কাজ নিজে করতে পারে না।
মুনিয়া বেগম এর কথা শুনে ফাইজার মুখটা ছোট হয়ে গেলো।সুযোগ পেলে তার শাশুড়ি মাও তাকে লজ্জা দেওয়া থেকে বিরত থাকে না।ফাইজা কিচেন থেকে ধুপধাপ পা ফেলে নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালো।মনে মনে তিহান কে ডিটারজেন ছাড়া ধুয়ে দেবার প্রতিজ্ঞা করল।
—র্নিলজ্জ,বেহায়া,বেশরম তোর লজ্জা করে না বাপ,মায়ের সামনে সকাল সকাল এভাবে আমায় ডাকতে?কত বার বলেছি সবার সামনে এভাবে আমায় ডাকবি না।আমায় কথা কি কানে যায় না?তোর সব দরকারি জিনিস তো আমি প্রতিদিন তোর চোখের সামনেই রেখে যাই।তার পরেও কেন প্রতিদিন এভাবে ডাকিস তুই?তোর এই ষাড়ের মত ডাকাতে তারা আমার সম্পর্কে কি ভাববে একবার ভেবে দেখেছিস?তোর লাজ-লজ্জা তো সব বেচে দিয়েছিস।তাই বলে কি আমারটাও বেচে দিয়েছি?নেক্সট টাইম যদি এভাবে চেচিয়ে আমায় ডাকিস তাহলে তোর একদিন আর আমার যেই কদিন লাগে।
ফাইজার ঝাঝালো গলার কথা শুনে তিহান অসহায় ফেস করে ফাইজার দিকে তাকিয়ে বলল,
—তুমি আমায় এভাবে বলতে পারলে?
ফাইজা তিহানের দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে তিহানের কাপড়,চোপড় এর নিচ থেকে ফাইলটা বের করে দিয়ে দাতে দাত চেপে বলল,
—আরেক বার যদি কিছুর জন্য আমায় ডেকেছিস তাহলে তোর চোখ কানা বানিয়ে দিয়ে নিজ হাতে তোকে আমি রেডি করিয়ে দিব।
কথাটা বলেই ফাইজা গটগট করে হেটে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।তিহান ফাইজার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢোক গিলে মাথা চুলকে বিরবির করে বলল,
—আজ কি একটু বেশিই জ্বালিয়ে ফেললাম নাকি মিটার আগের থেকেই হট ছিলো।
#চলবে,
(