যাকে আমি ভালোবাসতাম তার সাথে আমার বিয়ে হলো ঠিকিই কিন্তু আমার জানা মতে তার আমি ২য় বউ….পরিবারের মান সম্মান বাঁচানোর জন্য বিয়েটা করা হলো,,, কিন্তু তাকে যে পরিমাণ ভালোবাসতাম সেটা যেন অত্যাচারের সাথে ধুয়ে মুছে যাচ্ছে।
এক কাপ চা নিয়ে এই রোবোটের ভিরে বেলকুনিতে বসে কাজী নজরুলের লেখা বিদ্রোহী কবিতাটা পড়ছিলাম।সাহিত্যের বই পড়তে আমি খুব ভালোবাসি আগে এই আগ্রহটা ছিলো নাহ।কিন্তু এখন এগুলো ছাড়া আমার কোন সঙ্গি নেই।বাড়িতে যারা আছে তারা মানুষ কিন্তু কেমন জানি রোবোটের ন্যায় আচরণ করে,,, হঠাৎ চলে আসলাম ভাবনার জগতে,,,
সেদিন ছিলো শুক্রবার,,,
স্কুল ছুটি তাই বাসায় বসে টিভির রিমোট নিয়ে আমি আর আমার ভাই আবির মারামারি করছি।হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠলো,,,
আবিরঃ এই যা গিয়ে দরজা খুলে দিয়ে আই
তানিশাঃ লে হালুয়া আমি যাব কেন
আবিরঃ লেডিস ফাস্ট তাই তুই যাবি
তানিশাঃ টিভির রিমোট নেওয়ার সময় তো বলো না লেডিস ফাস্ট,, আমি যাব না(ভেংচি কেটে)
আম্মু চিল্লিয়ে বললো কিরে আর কতোক্ষণ বাজবে কলিংবেলটা তানিশা গিয়ে খুলে দে,,
আবিরঃ যা আম্মু তোর নাম বলেছে
তানিশাঃ আম্মুকে পরে দেখে নিবো(রাগে ফুসতে ফুসতে)
আমি উড়নাটা ঠিক করে দরজাটা খুলে দিলাম দেখলাম,,একটা ছেলে নীল কালারের পাঞ্জাবি পরে আছে,,
কাব্যঃ আচ্ছা আবির আছে বাসায়??
ছেলেটাকে দেখে কেমন জানি ফিল হচ্ছে,,ফাস্ট অফ অল ছেলেটা পাঞ্জাবি পরেছে আর সেকেন্ড আমার পছন্দের কালারের বেশ মানিয়েছে
কাব্যঃ কি হলো বলুন আবির বাড়িতে আছে(একটু জরে বললো)
তানিশাঃ জ্বী আছে,, আপনি ভেতরে আসুন
ছেলেটা সেন্ডেল খুলতে খুলতে জিজ্ঞেস করলো,,, আপনি কি হন আবিরের
তানিশাঃ আমি ওর বোন হয়
এই বলে আমি ভিতরে চলে আসলাম নিজের রুমে,,,আবিরের পাশে কাব্য ভাইয়া বসে গল্প করতে লাগলো,,,আম্মুও নাস্তা দিচ্ছে এমন সময় আমার ডাক পরলো,,,
আম্মুঃ তানিশা,,এই তানিশা তোর বান্ধবী লতা এসেছে
তানিশাঃ আসছি
আমি বাইরে গিয়ে দেখি লতা এসেছে আমাকে দেখে কাব্য ভাইয়া কি জেনো বললো ভাইয়াকে আমি লতাকে নিয়ে ভেতরে চলে আসলাম।।।
ভাইয়া প্রায়ই আসতো আমাদের বাড়িতে আর আমি তাকে একপলক দেখার বাহানা করতাম।এইভাবে টেন থেকে A+ নিয়ে ভাইয়াদের কলেজে ভর্তি হলাম।।
যেদিন আমি কলেজে প্রথম আসলাম ভাইয়ার খুব জ্বর ছিলো তাই কাব্য ভাইয়ার উপর আমার দায়িত্ব দিলো।।।
কলেজে এসে বুঝতে পারলাম শুধু আমি না আরও অনেক মেয়েই ভাইয়ার জন্য পাগল,,আমার পাশে ভাইয়াকে দেখে সব মেয়েরা কেমন অবাক হয়ে রইলো।।
সব ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখাতে ছিলো হঠাৎ তাদের বন্ধুদের সাথে দেখা হয়ে গেলো,,,
নাতাশাঃ কাব্য এই মেয়েটা কে??
কাব্যঃ ওও আবিরের বোন,,নতুন ভর্তি হয়েছে,, আজ আবিরের জ্বর ও চেনেনা তাই আমার উপর দায়িত্ব দিছে
নাতাশাঃ ওহহ,,আবির এখন কেমন আছে
কাব্যঃ ভালোই আছে জ্বর কমেছে এখন
নাতাশাঃ আচ্ছা যাই হোক বিকেলে আমাদের সাথে ঘুরতে যাবেতো( নেকামি ভাবে)
কাব্যঃ আচ্ছা এখন যায়,,চলো তানিশা
মেয়েটার কথা ধরণ শুনে যা বুঝলাম কাব্য ভাইয়ার সাথে ভালোই সম্পর্ক আছে উফফ মনে হচ্ছে নিজের চুল নিজে ছিড়ি
তানিশাঃ ভাইয়া আমি এখন সম্পূর্ণ চিনে গেছি আপনি যেতে পারেন
কাব্যঃ নাহহ,, যতক্ষণ কলেজ শেষ না হচ্ছে ততক্ষণ তুমি আমার দায়িত্বে আছো।
কলেজ টাইম শেষ হলো,,,
ভাইয়া আমাকে বাইকে নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দিলো।এখন বাড়ি যেতে অনেক দেরি,,হঠাৎ ভাইয়ার ফোন বেজে উঠলো,,
কাব্যঃ আমার ফোন তুলে কানে ধরো
তানিশাঃ মানে
কাব্যঃ আরে বাবা,, পকেট থেকে ফোনটা আমার কানে ধরো
আমিও সেই কাজ গুলোই করলাম ফোন রাখার পর বাইক বিপরীত রাস্তায় নিয়ে যেতে লাগলো।।
তানিশাঃ এদিকে কেন যাচ্ছি আমরা
কাব্যঃ একটা ইম্পটেন্ট কাজ চলে এসেছে প্লিজ একটু পরেই বাড়ি পৌছে দিবো,,অপেক্ষা কর
আমি বললাম ওকে,,,যত সময় থাকবো ততোই তো ভালো আমার তো সারাজীবন এইভাবেই ওনার সাথে থাকতে মন বলছে।।
একটা বড় কোম্পানি সামনে থামলো বাইকটা,,,আমাকে নিয়ে ভেতরে গেলো এটা কাপড়ের কোম্পানি,, বড় ব্রন্ড কোম্পানি,, কাপড়গুলো সেই।।।
আমাকে একটা রুমে বসিয়ে দিলো অনেক সুন্দর সুন্দর ড্রেস আছে তৈরি হচ্ছে।।
কাব্যঃ তানিশা তুমি বসো আমি কিছুক্ষণ পরই চলে আসবো,,,আব্বু ডাকছে
তিনি গেলেন দেখলাম তাকে অনেকেই সম্মান করছেন মানে বুঝলাম তিনি এই প্রতিষ্ঠাতার ছেলে অনেক বড়লোক।।।
আসছে তো আসছেই আমি ঘুরে ঘুরে দেখলাম,,,,দুপুর থেকে বিকেল গড়িয়ে গেলো তখন তিনি আসলেন,,
কাব্যঃ চলো
আমি তার দিকে তাকিয়েই রইলাম বুঝতে পারলো আমি বিরক্ত হয়ে গেছি
কাব্যঃ খিদে লেগেছে
তার কথা শুনে আমি একটা ভেংচি দিলাম তিনি হাসলেন,,, ওওও বলতেই ভুলে গেছি আমি অনেক চঞ্চল মেয়ে😅
তিনি আমাকে একটা রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেলেন ওখানেই দুপুরের খাবার বিকালে খেলাম।।তারপর বাইকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিলাম কিন্তু প্রকৃতি চাইছে না আমরা আলাদা হয় হুট করেই বৃষ্টি নামলো।।
কাব্য তারাতারি গাড়ি রেখে একটা অর্ধ- তৈরি বাড়িতে আশ্রয় নিলো আমাকে নিয়ে।।আমি তো পুরোপুরি ভিজে গেছে ব্যাগটা অল্প ভিজেছে তার সাথে কাব্য ভাইয়াও
সাদা শার্ট পড়া ছিলো ভাইয়ার পানির কারণে গায়ের সাথে লেপ্টে শরীর বোঝা যাচ্ছে আমি তারাতারি চোখ নামিয়ে নিলাম
তানিশাঃ তুমিও চাও আল্লাহ আমরা এক হয়ে যায়(মুচকি হাসি দিয়ে)
অল্প ডিসটেন্সে দাড়িয়ে আছি আমরা হঠাৎ খুব জোড়ে বাজ পড়লো আর আমি কাব্য ভাইয়ার বুকে,,, স্পষ্ট হার্টবিট শোনা যাচ্ছে কিন্তু খুব দ্রুত বিট হচ্ছে কেন
কিছুক্ষণ পর,,
বুঝতে পেরে আমি তারাতারি ছেড়ে একটু দূরে যাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করলাম লজ্জায় আমি শেষ,,, কেউ মাটি খুড়ে দে আমি ঢুকে যায়😐😐
তানিশাঃ আসলে আমি বিদ্যুৎ চমকালে অনেক ভয় পায় ইভেন
কাব্যঃ ইটস ওকে
বৃষ্টি থামার পর বাসায় আসি তার উপর।।।।
দুর্বলতা দিন দিন যেন বেড়েই চলেছে,, তাকে একপলক দেখা আমার কাছে মনে হয় বিশ্বজয়ের মতো বর কাজ।আর যেদিন দেখা হতো না,, তার ফেসবুক আইডি নিয়েই দিন কাটিয়ে দিতাম
”
”
”
”
”
”
#যদি_দেখা_না_হতো
#পর্ব_০১
#Tanisha_Esu