#শালিক_পাখির_অভিমান
#পর্ব_১০
#অধির_রায়
ইহান ভাইয়া পরম যত্নে আমার অবাধ্য কেশগুলো কানের কাছে গুছে দিলেন৷ প্রতিটি স্পর্শে ভালোবাসার ছোঁয়া নিহিত। ইহান ভাইয়ার ভালোবাসা আমার চোখে ধরা পড়ছে না৷ আমি নিজের মতো চোখের অশ্রু ফেলে যাচ্ছি৷ ইহান ভাইয়া আহত কন্ঠে বলল,
“শালিক কান্না থামাও৷ তোমাকে কান্না করতে দেখলে আমার ভীষণ কষ্ট হয়৷”
আমার কান্নায় ইহান ভাইয়ার কেন কষ্ট হবে? আমি অশ্রুসিক্ত চোখে ভাইয়ার দিকে তাকালাম। আমার চোখের জল মুছে দিলেন৷ মিষ্টি স্বরে বলল,
“এখন আর কান্না নয়৷ তোমার থেকেও অনেক খারাপ অতীতের সাথে কেউ না কেউ জড়িত৷ আমি বলব না তুমি অতীতের স্মৃতি ভুলে যাও৷ অতীতকে আগলে রেখে সামনের পথে এগিয়ে চল৷ তুমি চাইলে আমি তোমাকে তোমাদের বাড়িতে নিয়ে যাব৷”
ভাইয়ার কথা শুনে আমার মনের সূক্ষ্ম ব্যথা তীব্র ব্যথায় পরিণত হলো৷ যে বাড়ি থেকে রাতের আঁধারে চো*রের মতো বেরিয়ে আসছি সে বাড়িতে কিছুতেই যাব না৷ আমার জীবন চলে গেলেও আমি সে বাড়িতে যাব না৷ ভেজা গলায় বললাম,
“ভাইয়া আমার খারাপ লাগছে৷ আমি বাড়িতে যাব৷ আর হ্যাঁ আমি কোনদিন গ্রামের বাড়িতে যেতে পারব না৷ যে গ্রামে আমার কোন মর্যাদা নেই সে গ্রামে আমি যাব না৷ আমি সেদিনই ওই গ্রামে ফিরবো যেদিন সবাই আমার কদর বুঝতে পারবে৷”
সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে আসলাম। বাড়িতে মায়া ফুপি ছাড়া কেউ নেই৷ সমস্ত বাড়ি খাঁ খাঁ করছে৷ বাড়ির প্রাণ আফসানা চৌধুরী বাড়িতে নেই। যিনি সব সময় বাড়িতে নিজের আদেশ বজায় রাখেন৷ মায়া ফুপি রান্না বাদ দিয়ে সিরিয়াল দেখছে৷ আমি স্কুল ড্রেস পরিবর্তন করে সাধারণ পোশাক পড়লাম৷ ফুপির পাশে বসতে বসতে বললাম,
“ফুপি আপনার শরীর ঠিক আছে৷ ম্যাডাম বাড়িতে নেই৷ আপনি তো এমন সময় রান্না করেন৷”
ফুপি মুচকি হেঁসে বলল,
“আজ কোন রান্না করতেই হবে না৷ আফসানা চৌধুরী আমাদের জন্য শপিং করতে গেছেন৷ আমাকে রান্না করতে মানা করেছেন৷ আজ বাহির থেকে সকল খাবার নিয়ে আসবে৷”
আফসানা চৌধুরী বাহিরে পা রাখলেই রান্না করতে হয় না৷ সেদিন ফুপির ছুটি৷ তিনি বাহির থেকে সবার জন্য খাবার নিয়ে আসেন৷ কিছুটা চমকে বললাম,
“কিছুদিন আগে কুরবানির ঈদ গেল। তখনও তো আমাদের অনেক পোশাক কিনে দিয়েছেন৷ দুই ঈদে আমি যেগুলো থ্রি পিচ পেয়েছি তা দিয়ে অনায়াসে দুই বছর পার করে দিতে পারব৷”
আমার কথার কোন পাত্তা না দিয়ে ফুপি ফ্রীজ থেকে মিষ্টি এনে আমার মুখে ভ*র*তি দিলেন৷ মুখে মিষ্টি থাকার জন্য কথাও বলতে পারছি না৷ ফুপি বলল,
“ইহান বড় চাকরি পেয়েছে৷ ম্যাডাম ইহানকে একটা মটর বাইক কিনে দিয়েছেন৷ আজ তুই সবগুলো মিষ্টি খাবি৷ মিষ্টি খেতে কোন মানা নেই।
আমি মানা করতে পারলাম না। বরাবর মিষ্টি আমার ভীষণ প্রিয়৷ আমি প্রায় রেগুলার চু*রি করে মিষ্টি খাই৷ নাম হয় স্যারের। কেননা স্যারও চু*রি করে মাঝে মাঝে মিষ্টি খান৷ উনার ডায়বেটিস আছে তিনি ভুলে যান৷ মিষ্টি উনার প্রাণপ্রিয় খাবার৷ উনাকে প্রতি সপ্তাহে একবার হলেও মিষ্টি খেতে হবে৷
দু*ষ্টু মিষ্টি সম্পর্কগুলো ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে৷ কেটে গেল আরও কয়েকটি দিন৷ ইহান ভাইয়া অফিস থেকে ফিরেন সন্ধ্যায়৷ কোন ক্লান্তি উনাকে গ্রাস করতে পারেনি অফিস থেকে ফিরতে রাত হলেও আমি জেগে থাকি৷ আমার জেগে থাকা বাধ্যতামূলক৷ উনি অফিস থেকে এসে আগে আমাকে পড়া ধরবেন৷ ম্যাথ বুঝিয়ে দিবেন৷ গ্রামারের বিভিন্ন নিয়ম আমাকে রেগুলার রিভিশন দেওয়াবেন। আমি রেগুলার পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে গেছি৷ কিন্তু ইহান ভাইয়ার মাঝে কোন ক্লান্ত নেই৷ তিনি দিব্যি সব কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
আমার বিপরীতে কেউ ক্যাপ্টেন দাঁড়ানোর সাহস দেখাল না৷ আমি এককভাবে নির্বাচিত হতে চাইনা৷ স্যারের কথামতো নিহাও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করল৷ একপ্রকার একক ভোটে আমি জয়ী লাভ করি৷ ক্ষমতার অপব্যবহার করে ক্লাস ক্যাপ্টেন ছিনিয়ে আনা৷ ইমন ভাইয়ার নাম না বললে কেউ আমাকে ভোট দিত না৷ সবাই ভোট দিত নিহাকে৷ দেখতে কেটে গেল আরও কয়েকটি মাস৷ নিহার মাঝে এখন কোন অহংকার নেই৷ ক্লাসের কারোর মাঝে তেমন কোন অহংকার নেই৷ সবাই আমার সাথে কথা বলে। কেউ আমাকে ভয় করে না৷ সবার মন জয় করেছি ভালোবাসা দিয়ে৷ কারো কোন কিছু হলে ঝাপিয়ে পড়তাম৷ সকলের বিপদে পাশে থেকেছি৷ কাউকে ছোট বললে তার হয়ে প্রতিবাদ করতাম৷ বর্তমানে স্কুলে প্রতিবাদী শালিক নামে পরিচিত। আমি নিজের দিকে নিজেই তাকাতে পারিনা। আমি ছিলাম গ্রামের অতি সাধারণ একজন মেয়ে৷ আজ নিজেকে দেখে মনে হচ্ছে আমি একজন অসাধারণ মেয়ে৷ সকল গরিব দুঃখীদের বন্ধু। অ’ত্য’চা’রী’দের শ*ত্রু। দেখতে দেখতে আমার পরীক্ষা চলে আসল৷ প্রতিটি পরীক্ষার দিন ভাইয়া বাইকে করে আমাকে পরীক্ষার কেন্দ্রে নামিয়ে দেন৷ পরীক্ষার শেষে বন্ধুদের সাথে চলে আসি৷ দেখতে দেখতে পরীক্ষা শেষ৷ আল্লার রহমতে ভালো পরীক্ষা দিয়েছি৷ ফুপিকে কোন কাজই করতে দেয়না৷ এখন আমিই সব কাজ করি৷ সবাইকে ভালো করতে পারলেও ইমন ভাইয়া আর শ্রুতি ভাবীর স্বভার পরিবর্তন করতে পারলাম না৷ দুপুরে শ্রুতি ভাবী আমাকে ডাক দিল৷ এক প্রকার দৌড়ে উনার রুমে গেলাম৷ উনি বিছানায় বসতে বসতে গম্ভীর কন্ঠে বলল,
“আমাকে দেখে চিড়িয়াখানার জ*ন্তু মনে হয়৷ আমার রুমের দিকে তোর নজর থাকে না৷”
আমি আমতা আমতা করে বললাম,
“ভাবী আমি একটু আগেই আপনার ঘুর পরিষ্কার করেছি৷ ময়লা হলো কিভাবে জানি না?”
আমার কথা শুনে আমার দিকে টেডিবিয়ার ছু*ড়ে মা*রেন৷ অগ্নি দৃষ্টিতপ আমার দিকে তাকিয়ে আছেন৷ চোখের আগুনে আমাকে পুড়িয়ে মা*র*তে চান৷ আমি উনার এমন দৃষ্টি দেখে অনেক ভয় পাই৷ উনাকে ভয় পাই না৷ উনার বাজে চিন্তা ধারণাকে ভয় পাই৷ ঘৃণামিশ্রিত ক্ষোভ নিয়ে বলল,
“আমাকে দেখে মনে হয় এসব কাজ আমি করেছি৷ নবাবজা’দীর মতো দাড়িয়ে না থেকে ফ্লোর থেকে এগুলো পরিষ্কার কর৷”
শ্রুতি ভাবী সমস্ত ফ্লোরে বালি ছিটিয়ে রাখছে৷ কিন্তু কিছুই করার নেই৷ শ্রুতি ভাবী আামকে সহ্য করতে পারেন না আমি জানি৷ দাঁড়িয়ে বুঝার চেষ্টা করছি এমন কাজ কে করতে পারে৷ মুখের উপর ছুঁ*ড়ে বলল,
“আমার কথা কানে যাচ্ছে না৷ আমি তোকে ফ্লোর পরিষ্কার করতে বলছি৷ এখন তোকে দেখে মনে হয় তুই এই বাড়ির মালকিন আমরা কাজের লোক৷ ম্যাডাম আমিই করে দিব৷”
শ্রুতি ভাবীর কথা সব সময় তীরের মতো লাগে৷ মু্খে কখনও মিষ্টি কথা শুনতে পারলাম না৷ আমি বালতি নিয়ে ফ্লোরে স্লিপ খেয়ে পড়ে গেলাম৷ চিৎকার করতেই ফুপি, আফসানা চৌধুরী দৌড়ে আসেন৷ মায়া ফুপি আমার কাছে এসে উত্তেজিত কন্ঠে বলল,
“তোর কি হয়েছে? এভাবে পড়ে গেলি কিভাবে? কোথাও লাগেনি তো।”
আমি কোমরে হাত দিয়ে উঠার চেষ্টা করলাম৷ কিন্তু উঠতে ব্যর্থ হলাম৷ আবারও পড়ে গেলাম৷ ফ্লোরে তেল ফেলে রেখেছে ভাবী৷ ভাবীর মুখে শয়তানি হাসি৷ আমি ফুপিকে বললাম,
“ফুপি পা স্লিপ করে পড়ে গেছি৷ কিভাবে পড়ে গেলাম জানি না? আমি ফ্লোর পরিষ্কার করতে আসছিলাম৷”
শ্রুতি ভাবী ন্যাকামি করে বলল,
“শালিক ব্যথা পাওনি তো বেশি৷ আমার সবচেয়ে বড় ভুল হয়েছে৷ আমি কেন যে বলছিলাম ফ্লোর মুছতে? শালিক বোন আমাকে ক্ষমা করে দাও৷”
শ্রুতি ভাবী উপর থেকে অনেক ভালো৷ মুখে মধু অন্তরে বি*ষ। শ্রুতি ভাবীকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না৷ আমি মিথ্যা হাসি দিয়ে বললাম,
“না না ভাবী৷ আমি খেয়াল করে হাঁটলে এমন হতো না৷ আপনার কোন দোষ নেই৷ আমি একটু ধরে তুলেন৷”
আফসানা চৌধুরী গম্ভীর গলায় বলল,
“শালিক তোমাকে আমি অনেক দিন বলেছি বেখেয়ালি ভাবে কোন কাজ করবে না৷ সব দিকে খেয়াল রাখতে হয়৷ আজ যদি বড় কিছু হয়ে যেত৷”
আমি মাথা নিচু করে রইলাম৷ কোন কথা বললাম না৷ ফুপির কাঁধে হাত রেখে নিচে চলে আসলাম৷ ফুপি পায়ে তেল মালিশ করছেন আর চোখের জল ফেলে যাচ্ছেন৷ পা ম-চ’কে যাওয়া ফুলে গেছে৷ ব্যথার পা নাড়াতে পারছি না৷ আমি গম্ভীর গলায় বললাম,
“ফুপি চোখের জল মুছেন৷ আপনি কান্না করলে আমার ভালো লাগে না৷ আপনি ভুলে যান কেন, কান্না করলে আপনার প্রেশার কমে যাবে?”
রাগী চোখে আমার দিকে তাকালেন৷ ফুপি অগ্নির ন্যায় ধারণ করে বসে আছেন৷ আহত রাগী গলায় বলল,
“পা ভেঙে রাস্তায় বসিয়ে দেয় ভিক্ষা করতে পারবি৷ এই বাড়িতে কাজ করতে হবে না। তুই ভিক্ষা করবি আমি বাসায় থাকব৷ আমাদের দিন ভালোই চলে যাবে৷”
আমি শুয়ে ছিলাম। ফুপি কথা শুনে শুয়ে থাকা হলো না৷ কষ্ট করে উঠে বললাম৷ আফসোসের সাথে বললাম,
“এই যে কান ধরছি৷ এমন আর হবে না৷ আমি সব সময় দেখে শুনে কাজ করব৷”
“মনে থাকবে তো৷ তুই ছাড়া আমার কেউ নেই৷”
ফুপি রাতের রান্না করতে চলে যান৷ শ্রুতি ভাবী আমাদের রুমে আসেন। দুই বছরের বেশি হলো আমি এই বাড়িতে থাকি৷ শ্রুতি ভাবী ভুলেও আমাদের রুমে আসেন নি৷ নাক ছিটকে বলল,
“শালিক বোন আমার, বেশি ব্যথা পাওনি তো৷ আমি তো ভেবেছিলাম তোমার কোমর ভেঙে যাবে৷ কিন্তু পা ম’চ’কা’বে ভাবতেই পারিনি। পা ভাঙলে ভালো হতো৷”
“ভাবী আমি জানতাম আপনি এসব কাজ করেছেন৷ আপনার মাথায় এ ধরনের শয়তানি বুদ্ধি ঘুরে৷ ভাববেন না আপনি মুক্তি পাবেন৷ আপনাকে শাস্তি আল্লাহ দিবে৷ এমন অত্যচার আল্লাহ সইবে না৷”
শ্রুতি ভাবী আমার কথায় আরও রেগে যান৷ আমার মুখ চেপে ধরে বলল,
“চাকর চাকরের মতো থাকবি৷ মুখ বন্ধ রাখবি৷ কিছু দেখলেও বলতে পারবি না৷ মা তোকে ভালোবাসে বলে তুই এ বাড়িতে টিকে আছিস৷ না হলে তোকে অনেক আগেই আমি বাড়ি থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতাম৷”
ভাবী এতো জোরে চেপে ধরায় চোখের কোণে পানি জমতে থাকে৷ মাথায় রক্ত উঠলেও নিজেকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসলাম৷ আহত কন্ঠে,
“আমার খুব কষ্ট হচ্ছে ভাবী৷ আমাকে ছেঁড়ে দেন৷ আমি আপনার নামে ম্যাডানকে কিছুই বলিনি৷”
“মা কিভাবে জানল আমি কাশবনে ঘুরতে গেছিলাম? আমি মেহেদীর সাথে আরও অনেক জায়গায় ঘুরতে যাই। তোর কারণে মা আমার হাত থেকে ফোন কেঁড়ে নিতে চেয়েছে৷ মেহেদীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিছেন।”
শ্রুতির ভাবী কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়লাম৷ শ্রুতি ভাবী উনার বন্ধুর সাথে কাশবনে ঘুরতে গেছেন আমি কিছুই জানি না৷ আমি সেদিন নিহা আর আশার সাথে কাশবনে গেছিলাম৷ আমি গেছিলাম এটা কেউ জানে না৷ ফুপিকে বলছি শুধু৷ সেদিনই কি ভাবী কাশবনে ঘুরতে গেছিল? নাকি ইহান ভাইয়ার সাথে দেখেছে৷ ইহান ভাইয়ার সাথে দেখেনি। ইহানে ভাইয়ের সাথে ঘুরতে গেছি জানে কিনা৷ অবাক চোখে তাকিয়ে বললাম,
“ভাবী আমি এসব কিছুই জানি না৷ আমি তো কাশবনে কোনদিন ঘুরতে যায়নি৷ আপনাকে কিভাবে আমি কাশবনে দেখব?”
চোখ পাকিয়ে বলল,
“তুই তোর বান্ধবীদের সাথে দিয়া বাড়ি কাশবনে ঘুরতে যাসনি৷ তুই সবার চোখ ফাঁকি দিতে পারলেও আমার চোখ ফাঁকি দিতে পারবি না৷ তুই আমার নামে আর কি কি বলছিস?”
চোখ বন্ধ করে নিজেকে শান্ত করলাম৷ ইহান ভাইয়ার সাথে আমাকে দেখলে খু*ন করেই ফেলত৷ আমি যেতে চাইনি।ইহান ভাইয়া জোর করে কাশবনে নিয়ে গেছেন। সেদিন বিকেলে ইহান ভাইয়া অফিস থেকে তাড়াতাড়ি ফিরে আসেন৷ ফুপি বাজার করতে গেছেন৷ ইহান ভাইয়া আমার রুমে আসেন৷ হাতে একটা ব্যাগ দিয়ে বলল,
“এখানে সাদা রঙের শাড়ি আছে৷ পড়ে আসো৷ তোমাকে এক জায়গায় নিয়ে যাব৷”
আমি ভয়ে ভয়ে বললাম,
“ভাইয়া আমি কোথাও যেতে পারব না৷ বাড়িতে অনেক কাজ পড়ে আছে৷”
আমার কথায় ভাইয়া রেগে যান৷ অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল,
“আমি এক কথা দুইবার বলতে পছন্দ করিনা৷ দুই মিনিট সময় দিলাম, এগুলো পড়ে গেইটের বাহিরে আসো৷”
লক্ষী মেয়ের মতো সাদা শাড়ি, কাঁচের সাদা চুড়ি, কপালে ছোট টিপ পড়ে চলে গেলাম গেইটের বাইরে৷ ভাইয়ার আমার দিকে আপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন৷ আমি ভাইয়াকে ডাক দিলে ভাইয়ার ধ্যান ভাঙে৷ আমতা আমতা করে বললাম,
“আমি নিহা আর আশার সাথে দিয়া বাড়িতে গেছিলাম৷ কিন্তু আপনাকে দেখতে পাইনি৷ ভাবী আমাকে বিশ্বাস করেন। আমি ম্যাডামকে কিছুই বলিনি৷ ম্যাডাম কিভাবে জানতে পেরেছেন আমি জানি না?”
আমার কথা শ্রুতি ভাবীর বিশ্বাস হলো না৷ তিনি রেগে আমার পা উপরে তুলে বিছানায় ছেড়ে দিলেন৷ কেউ কিছু দেখার আগে তড়িঘড়ি করে ঘুর থেকে চলে যান৷ পা বিছানায় পড়তেই যেন জীবন বেরিয়ে আসল৷
চলবে….