“শালিকা_যখন_বউ part_19+20

0
417

শালিকা_যখন_বউ
#part_19+20
#Written_by_Adnan_Sami_Raj

অফিস পৌছে অবাক না হয়ে পারলাম না। কারন আমাদের অফিস এর বস হলো নীলা। সে আমাকে দেখা মাত্র আমায় এসে জড়িয়ে ধরে। আর বলে।

নীলাঃ আরে রাজ কেমন আছো তুমি।

আমিঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালোই আছি,, তুমি কেমন আছো।

নীলাঃ ভালো ছিলাম না কিন্তু এখন থাকবো।

আমিঃ মানে তুমি কি বললে বুঝতে পারলাম না।

নীলাঃ আমি বললাল যে আমিও ভালো আছি। তা আঙ্কেল আন্টি কেমন আছে।

আমিঃ তারাও ভালোই আছে ( যদিও আমি জানিনা যে তারা কেমন আছে)

নীলাঃ তা কি মনে করে তোমাদের কম্পানি ছেড়ে এখানে জয়েন করলে।

আমিঃ এমনি গো,,তেমন কিছু না।

নীলাঃ ওকে রাজ তোমার সাথে পড়ে কথা হবে এখন একটা মিটিং আছে তাই যেতে হবে বাই।(তারপর নীলা চলে গেল)


এখন আপনারা হইতো ভাবছেন নীলা কে আর আমিই বা নীলা কে কেমন করে চিনি তাইতো। তাহলে শুনুন। নীলা আমি আর ইব্রাহীম একি সাথে পড়তাম তাই আমি আর ওকে চিনি। আর আমি নীলা কে সবসময় নিজের বন্ধুই ভাবতাম কিন্তু একদিন নীলা আমাকে এসে প্রপোজ করে। কিন্তু আমি এসব পছন্দ করতাম না তাই আমি ওকে নিষেধ করে দিই। কিন্তু নীলা আমায় প্রতিদিন প্রপোজ করতে থাকে তাই আমি তাকে বলে নেক্সট টাইম যদি সে আমায় প্রপোজ করে তা হলে আমি ওর সাথে আর বন্ধুত্ত রাখতে পারবো না। তাই সেদিন এর পর থেকে নীলা আমায় আর প্রপোজ করে নাই। এর মধ্যে আমার লেখাপড়া শেষ হয়ে যাই তারপর আমি দেশে ফিরে আসি আর বাকি টুকু তো আপনারা জানেন।


নীলা যাওয়ার পরে আমি ইব্রাহীম কে বলি।

আমিঃ কিরে এটা তো তোর কম্পানী তাহলে নীলা এখান কার বস কি ভাবে।

ইব্রাহীমঃ হুম এটা আমার কম্পানী কিন্তু এর মালিক আমরা দুজন আমি আর নীলা।

আমিঃ তো তুই আমাকে আগে বলতে পারলি না যে এখানে নীলাও আছে, তাহলে আমি…

ইব্রাহীমঃ তাহলে আসতি না তাই তো। এর জন্যই তো নীলার কথা আমি তোকে আগে বলি নাই।

আমিঃ হুম বেশ করেছিস। এখন এখান থেকে দূর হো আমার কাজ আছে।

তারপর আমি কাজ করতে শুরু করলাম।


বিকাল এর আগেই আমার সব কাজ শেষ হয়ে যাই তাই আমি একটু অফিস এর চারপাশ টা ভালো করে ঘুরে দেখেছিলাম তখন পেছন থেকে কেউ আমার কাধে হাত রাখে আমি তখন পেছনে ফিরে দেখি নীলা দাঁড়িয়ে আছে।

নীলাঃ এখানে দাঁড়িয়ে কি করছো রাজ।

আমিঃ কিছু না শুধু চারপাশের প্রকৃতি দেখছিলাম।

নীলাঃ ওহহ,,,চল আজ আমি আর তুমি একসাথে ডিনার করবো।

আমিঃ তা কি করে হয় বলো।

নীলাঃ সব হয় (বলে এক প্রকার জোর করেই গাড়িতে বসিয়ে দেয়)

কিছুক্ষন পরে নীলা গাড়ি একটা রেস্টুরেন্ট এর সামনে দার করাই আর আমরা সেখানে ডিনার শেষ করি। ডিনার করার সময় আমাদের অনেক কথাই হয়। তারপর নীলাই আমাকে বাড়িতে পৌছে দেয়।


বাড়িতে আসার পরে আমি সোজা ওয়াশ রুমে চলে যাই আর কিছুক্ষন পরে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসি। আর তখুনি আমার রবির কথা মনে হয়। আজ সারাদিন ওকে একবারও ফোন দেওয়া হয়নি তাই আমি দেরি না করেই ওকে ফোন দিই।

কিন্তু ফোন দেওয়ার পর রবি যা বলে তা শোনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না……

চলবে…..!

#শালিকা_যখন_বউ
#part_20
#Written_by_Adnan_Sami_Raj

বাসায় গিয়ে আমি রবিকে ফোন দিই আর ফোন ধরার পর রবি বলে।

রবিঃ কেমন আছিস ভাই।

আমিঃ এই তো ভালোই আছি তুই কেমন আছিস।

রবিঃ হুম আমিও ভালোই আছি।

আমিঃ আমার বাড়ির সবাই কেমন আছে ।

রবিঃ কেউ ভালো নেই তুই যাওয়ার পরে সবাই কেমন যেন হয়েগেছে। আর আন্টি তোর জন্য প্রায় পাগল হয়েগেছে। তুই ফিরে আই ভাই।

আমিঃ হুম সময় হলেই আমি ফিরে আসবো। আর নিশি আর আমার বাবু কেমন আছে রে।

রবিঃ নিশিতো…..(রবি নিশির ব্যাপারে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আমি বলি)

আমিঃ বাদ নিশির কথা। তুই ভালোথাকিস আর আমার পরিবার কেউ দেখে রাখিস।

এইকথা গুলো বলেই আমি ফোন কেটে দিই। সে রাতে আমার আর ঘুম আসলো না।


পরের দিন থেকে আমি আবার নতুন জীবন শুরু করার ব্যার্থ চেষ্টা করি। সকালে ফ্রেস হয়ে ইব্রাহীম এর সাথে অফিস এ চলে যাই। আর অফিস এ পৌছে নীলা বলে।

নীলাঃ রাজ কেমন আছো।

আমিঃ এইতো ভালো তুমি কেমন আছো নীলা।

নীলাঃ হুম আমিও ভালো আছি। কাজের চাপ বেশি দেইনি তো তোমায়।

আমিঃ আরে না এতটুকু কাজ করার অভ্যাস আমার আছে।

নীলাঃ ওওও,,,,আচ্ছা তোমার কাজ শেষ হলে আমি আর তুমি এক জায়গায় যাবো কেমন।

আমিঃ সেটা না হয় যাবো। কিন্তু যাবে টা কোথায়।

নীলাঃ সেটা গেলেই দেখতে পারবে।( বলেই নীলা চলে গেল)

আমিও আর বেশি না ভেবে কাজে মন দিলাম। আর কাজ করতে করতে কখন বিকেল হয়ে গেছে জানতেই পারি নাই। তখন হঠাৎ নীলা এসে বলল.।

নীলাঃ কি গো তোমার হলো।

আমিঃ আর একটু আছে। তুমি দাড়াও।

নীলাঃ আমি আর দাড়াতে পারছি না তুমি আমার সাথে চল আমি এই কাজ টা অন্য কাউকে দিচ্ছি ( বলে নীলা আমার কাজ টা একজন কে দিয়ে আমাকে জোর করে বাইরে নিয়ে আসে।)

আমাকে বাইরে নিয়ে আসার পর নীলা বলে।

নীলাঃ তুমি গাড়িতে বসো আমি আসছি।

তারপর নীলা আবার অফিস এর মধ্যে চলে যাই।আর আমি গাড়িতে উঠে বসি কিছুক্ষন পরে নীলা বের হয়ে আসে আর গাড়িতে উঠে গাড়ি ড্রাইভ করে। কিছুক্ষন ড্রাইভ করার পরে আমরা একটা বড় বাড়ির সামনে এসে দাড়াই আর নীলা বলে।

নীলাঃ রাজ চল।

আমিঃ এটা আমায় কোথায় নিয়ে এলে।

নীলাঃ ভেতরে গেলেই দেখতে পারবে।

তারপর আমি নীলার পিছু পিছু ভেতরে যাই। আর ভেতরে গিয়ে আমি অবাক হয়ে যাই কারন ভেতরে নীলার বাবা-মা বসা ছিলো। তারমানে এটা নীলাদের বাড়ি। তখন আমি বললাম।

আমিঃ কেমন আছেন আঙ্কেল কেমন আছেন আন্টি।

নীলার বাবা-মাঃ ভালো বাবা। তুমি কেমন আছো।

আমিঃ জ্বী আন্টি আমিও ভালো আছি।

তারপর আরো অনেক কথা বললাম আর খাওয়া দাওয়াও ওখানেই করলাম। নীলা রাতে আমাকে ইব্রাহীম এর বাসাই থুয়ে যাই। তাই আমিও ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।।


এভাবেই পাঁচ টা বছর পার হয়ে যাই। আর এই পাঁচ বছরে নিশির জন্য আমার ভালোবাসাই এতটুকুও কমে নাই বরং বেরেছে। তো প্রতিদিন এর মতো আজও অফিস এ গেলাম। আর অফিস এ পৌছানোর পর নীলা আমার কাছে এসে বলল।

নীলাঃ শুনো রাজ আমরা আগামীকাল বাংলাদেশে যাবো সেখানে একটা মিটিং আছে। আর আমার সাথে তুমিও যাবে তাই তোমার যা যা প্রয়োজন তুমি আজ বাসায় গিয়ে প্যাকিং করে নাও। আর কাল সকালে আমাদের প্লাইট।

আমিঃ ওকে ঠিক আছে( কেন যানি আমিও ওকে মানা করতে পারলাম না হইতো অনেক দিন পরে দেশে ফিরবো এর জন্যই)

সেদিন কার মতো অফিস করে বাসায় চলে আসলাম তারপর আমি আমার কিছু জিনিস প্যাকিং করে রাখলাম। পরের দিন সকালেই আমি আর নীলা বাংলাদেশ এ চলে আসলাম। আর আমি ওখান কার যে কম্পানির সাথে মিটিং হবে সেখানে গেলাম।

আর সেখানে যাওয়ার পরে আমি অনেক বেশি অবাক হয়ে যাই কারন……

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here