#শুধু তুই
#পর্বঃ১১
#Tanisha Sultana (Writer)
মাঝ রাতে তুলির ঘুম ভেঙে যায়। ঘড়ির কাঁটায় দুইটা ছুঁই ছুঁই। তুলি সোফায় ঘুমায়। বিছানার দিকে চোখ পরতেই দেখে সায়ান নেই। তুলি উঠে বসে
“যাহহ বাবা উনি আবার কই গেলো? জুঁইয়ের কাছে চলে যায় নাই তো। গেলে যাক আমার কি? ভাববো না আর ওনার কথা।
হঠাৎ গিটারের সুর ভেসে আসে। সাথে গান
” এতো রোদ্দুর তুই এনে দিলি তাই তোর বৃষ্টি আমি একটু পেতে চায়
মেঘলা হয়ে যাক আরও পাঁচটা বারো মাস কোনো বিকেল বেলাতে তুই আমার হয়ে যাস
#শুধু তুই শুধু তুই আর চাইছি না কিছুই
তুলি গানের সুর অনুসরণ করে বাগানে চলে যায়। সায়ান গিটার বাজাচ্ছে আর গান গাইছে। তুলি সায়ানের পাশে বসে। সায়ান গান গাওয়ায় এতোই মগ্ন ছিলো যে তুলি ওর পাশে বসে আছে তা খেয়াল ই করে নি।
গান শেষে পাশে তাকিয়ে দেখে তুলি
“একি আপনি এখানে?
” গান শুনতে এলাম
“গান তো শেষ এবার যান
” হা করে ইলি বলেন তো
“হোয়াট
” হা করে ইলি বলতে বলছি
“এটা কখনো পসিবল না
” আপনাকে ছাড়াও পসিবল না
“কি বলছেন পাগলের মতো
” বুঝবেন না। তবে গানটা দারুণ গান
“জানি
” আর কি কি জানেন
“ইডিয়েট
” আচ্ছা সব সময় আমার সাথে এভাবে কথা বলেন কেনো? মানছি আপনার ইচ্ছের বিরুদ্ধে আমাদের বিয়েটা হয়েছে তাই বলে এভাবে কথা বলার কি আছে? আমি তো বলেছি চলে যাবো। যে কটা দিন আছি একটু ভালো করে কথা বলুন না
তুলির কথায় সায়ান চুপ হয়ে যায়।
“আপনি যত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন ততই আপনার ভালো।
শক্ত কন্ঠে বলে সায়ান।
” আমি চলে গেলে আপনি বেঁচে যান তাই না
সায়ান এক পলক তুলির দিকে তাকায়।
“হয়ত
” আচ্ছা আমরা তো ফ্রেন্ড হতেই পারি তাই না? করবেন আমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ
তুলি সায়ানের দিকে হাত এগিয়ে দেয়। সায়ান তুলির হাতের দিকে তাকিয়ে আছে
“আমার মতো খারাপ মানুষের সাথে ফ্রেন্ডশিপ করা যায় না
তুলি হাতটা নামিয়ে নেয়।
” আপনি খাবাপ? হুম আপনি একটু লুচু টাইপের লোক বউ থাকতেও একটা মহিলার পেছনে ঘুরেন বাট আমার তো আপনাকে খারাপ মনে হয় না
“মাঝে মাঝে আমরা চোখের সামনে যা দেখি সেটা ভুল হয়।
” কিন্তু
“আমি রুমে যাচ্ছি।
সায়ান উঠে চলে যায়।
” কি বোঝাতে চাইছে সায়ান? অনেক বড় একটা রহস্য আছে যেটা আমাকে খুঁজে বের করতেই হবে।
তুলিও রুমে চলে আসে। সায়ান লম্বা হয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। তুলি আস্তে করে দরজা চাপিয়ে দিয়ে সোফায় শুতে যায়।
“আপনি চাইলে বিছানায় শুতে পারেন।
সায়ান চোখ বন্ধ রেখেই বলে। সোফায় শুয়ে তুলির ঘাড় ব্যথা হয়ে গেছে। তাই সায়ান একবার বলাতেই বিছানায় শুয়ে পরে। মাঝখানে কোলবালিশ রেখে।
” আপনার মনে অনেক প্রশ্ন। আমি কেনো জুজুকে নিজের সন্তানের মতো আগলে রাখি। কেনো জুজুর মায়ের খেয়াল রাখি। কেনো গোমড়ামুখো হয়ে থাকি।
তুলি মাথা উঁচু করে সায়ানের দিকে তাকিয়ে বলে
“আপনি জানলেন কি করে?
সায়ান চোখ খুলে তুলির দিকে তাকায়
” জুজু আর জুঁই আমার দায়িত্ব। আর দায়িত্বের কাছে ভালোবাসার কোনো মূল্য নেই।
“কিছুই বুঝলাম না
” গুড নাইট
সায়ান আবার চোখ বন্ধ করে ফেলে। তুলি কিছু বলতে গিয়েও বলে না।
তুলির ঘুম ভাঙতে অনেকটাই দেরি হয়ে যায়।
“ও মাই আল্লাহ এখন তো করলা শাশুড়ী আমাকে করলা খাইয়ে ছাড়বে।
তুলি তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে যায়। সবাই খাচ্ছে। তুলির শাশুড়ী আর কাকিমনি খাবার সার্ভ করছে। তুলি কাচুমাচু হয়ে ওদের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়।
“বাড়ির বউ দুপুরে ঘুম থেকে উঠছে চমৎকার।
” সরি আন্টি আসলে
তুলির শাশুড়ী তুলিকে থামিয়ে বলে
“এক্সকিউজ দিতে হবে না। তুমি যে গুড ফর নাথিং সেটা আমি আগেই জানতাম তাই তো আমার সায়ানের গলায় তোমাকে ঝুলাতে চায় নি কিন্তু কপালে দোষ
তুলির কান্না পাচ্ছে। তুলি অনেক কষ্টে কান্না থামায়।
জিসান বলে
” মা তোমার পবলেম কি বলো তো? সব সময় তুলির সাথে এমন বিহের করো কেনো?
“ও কে আমার জাস্ট সয্য হয় না বুঝলি তুই
শাশুড়ী রেগে মেগে চলে যায়। তুলিও দৌড়ে রুমে চলে যায়। বেলকনিতে বসে কান্না করছে তুলি। কেনো জানি খুব কান্না পাচ্ছে। তুলির বাবা ফোন দেয়। তুলি ফোনটা রিসিভ করে কানে নেয়
” কেমন আছে আমার মামনিটা
তুলি এবার শব্দ করে কেঁদে ওঠে
“কি হয়েছে কান্না করছিস কেনো?
” আমাকে নিয়ে যাও না বাবা প্লিজ
“তুলি
” বাবা এখানে কেউ আমাকে চায় না। এখানে আমার কোনো সম্মান নেই।
“ঠিক আছে কাল নিয়ে আসবো তোমাকে
তুলি ফোনটা রেখে দেয়।
” শুনুন
পেছনে তাকিয়ে দেখে সায়ান খাবার প্লেট হাতে দাঁড়িয়ে আছে। তুলি চোখের পানি মুছে ফেলে। সায়ান তুলির পাশে বসে।
“চলে যাবেন?
” হুম
“আর কিছু দিন থেকে যান
তুলি সায়ানের দিকে তাকায়
” না মানে আমাদের ডিভোর্স হয়ে যাক তারপর যাইয়েন। এখন আপনি বাড়ি গেলে অনেকে অনেক কথা বলবে। অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। তাই বলছিলাম আর কি। বাকিটা আপনার ইচ্ছা।
“আমি চলে গেলে আপনি আমাকে মিছ করবেন?
তুলি হাসি মুখে জিজ্ঞেস করে
” এই তো কাঁদছিলেন
“আমি বেশিখন কাঁদতে পারি না। সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট না হেসে থাকতে পারি না
“খেয়ে নিন
” আপনি আমার জন্য খাবার এনেছেন😱😱 সামথিং সামথিং
“ইডিয়েট
সায়ান চলে যায়। তুলি খাওয়া শুরু করে
চলবে