#সন্ধ্যালয়ের_প্রণয়
#আফসানা_মিমি
|দ্বিতীয় পর্ব|
❌[কোনোভাবেই কপি করা যাবে না]❌
সরকার বাড়িতে হৈ হুল্লোর পরিবেশ। বংশের প্রথম নাতির সাফল্যতায় আরিফ সরকারের মন বেশ প্রফুল্ল। গত সপ্তাহে তিনি লন্ডন সফরে গিয়েছিলেন, ফিরেছেন সন্ধ্যায়। লন্ডনে বসেই টিভির পর্দায় নাতির সাফল্যতার সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে দেখেছেন। আজ সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরেছেন। এসেই ছোট বাচ্চাদের থেকে শুরু করে দারোয়ান সবাইকে দু’হাত ভরে টাকা দিচ্ছেন। এই অজুহাতে ঘরের রমণীরা ফায়দা লুফে নিচ্ছে।
ক্লান্ত শরীরে নিলয় বাড়ি ফিরে আসে। বর্তমানে দূর থেকে নিলয়কে যে কেউ দেখে বলবে সে খুবই ক্লান্ত। যেন কিয়ৎক্ষণ পূর্বেই কোনো ঝড় তুফানের সাথে মোকাবিলা করে এসেছে। সাদা শার্টের বুকপকেটের তিনটি বোতাম খোলা, হাতে কালো রঙের ব্লেজার, গলার লাল টাই ঢিলে হয়ে বুকের উপর ঝুলছে।
” এই তো আমার বংশের প্রদীপ চলে এসেছে!”
প্রিয় দাদাজানের কথার আওয়াজে শরীরের ক্লান্তিরা বিদায় জানায়। আরিফ সরকারের আকস্মাত আগমনে নিলয়ও চমকপ্রদ। সোফার উপর ব্লেজার রেখে দাদাকে জরিয়ে ধরে সে।
” কখন এসেছো! আমাকে জানাওনি কেন তোমরা আসবে, পিচ্ছু কোথায়?”
আরিফ সরকার নিলয়কে ছেড়ে দিয়ে সোফায় বসলেন। কাজের লোককে ইশারায় ঠান্ডা পানীয় আনতে পাঠিয়ে বলে, ” নীলিমা উপরে ঘুমাচ্ছে। আমি আরিফ সরকার, কখনো স্বর্ণ চিনতে ভুল করি না। আমার আসনে যে যোগ্য তাকেই বসিয়েছি। তোমার সাফল্যতা আমাকে খুশি করেছে। এভাবেই এগিয়ে যাও।”
নিলয় হাসছে। আরিফ সরকারের ভাবভঙ্গি কিছুটা রাজাদের মতো। রাজা যেমন সিংহাসনে বসে বুক ফুলিয়ে প্রজাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখে, আরিফ সরকারও ঠিক তেমন ভাবেই কথা বলে। এজন্যই হয়তো সন্ধ্যা দাদাকে রাজা দাদা বলে ডাকে।
নিলয় দাদার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ফ্রেস হওয়ার জন্য সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে নেয় তখনই কর্ণধারে সন্ধ্যাবতীর স্বর ভেসে আসে, ” আমাকে কী আপনার চাকর মনে হয়, মিস্টার অসভ্য দুর্লয়? এই ব্যাগও কী বহন করে আপনার ঘর পর্যন্ত দিয়ে আসতে হবে?”
নিলয় থেমে যায়। মুখে বাঁকা হাসির রেখা টেনে প্রত্যুত্তরে বলে, ” নিয়োগ যেহেতু নিয়েই ফেলেছো।তবে তাই হোক, মিস ঐরাবতী! অফিসে তুমি আমার কর্মচারী আর বাসায় চাকরানী।”
সন্ধ্যা কটমট চোখে নিলয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। হাতের ব্যাগ জমিনে সজোরে নি’ক্ষে’প করে।
” অফিসে কাজের বাহানায় অ’ত্যা’চা’র করুন সেটা চুপচাপ মেনে নেই বলে ভাববেন না, এই সন্ধ্যা কারোর গোলাম। সন্ধ্যা কখনো কারোর কথা মেনে চলেনি,আর চলবেও না।”
” এ কেমন বেয়াদবি, সন্ধ্যাবতী?”
রাগ,অহংকার একজন মানুষকে ধ্বং’সের দিকে ধাবিত করে। আক্রোশে বড়ো-ছোট কাউকে মানা দুষ্কর হয়ে যায়। সন্ধ্যা রাগের বশে হিতাহিত জ্ঞানবোধ শূন্য হয়ে গিয়েছে। পাশে আরিফ সরকার বসে আছেন সেদিকে ধ্যান নেই। আরিফ সরকারের কর্কশ আওয়াজ কর্ণধারে প্রবেশ করতেই সন্ধ্যা চুপ হয়ে যায়। সন্ধ্যার মৌনতা আরিফ সরকারের চোখে অপছন্দীয়। সাত বছর যাবত আদরের নাতনি মাথা উঁচু করে দাদাকে চেয়ে দেখেনি। মুখ খুলে কথা বলেনি। কীসের এতো রাগ? কীসের অহংকার? আরিফ সরকারের ছোট সন্তান এতটাই নিচে নেমেছে যে আদরের নাতনিকেও উনার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে? আরিফ সরকার কষ্ট আড়াল করে আবারো কর্কশ স্বরে সন্ধ্যাকে বললেন, ” উত্তর দাও সন্ধ্যাবতী?”
সন্ধ্যাবতী নিরুত্তর। এক পলক নিলয়ের দিকে তাকিয়ে নিজেদের বাড়ির দিকে চলে গেল।
আরিফ সরকার নিলয়ের দিকে দৃষ্টিপাত করে। উনার চোখ শক্ত, রাগে ঠোঁট কাঁপছে। নিলয় দাদার রাগ সম্পর্কে অবগত। চোখের ইশারায় বলল,” সব ঠিক হয়ে যাবে।”
সরকার বাড়ি। পূর্বে ইট পাটকেলের দেয়াল এবং উপরে টিনের ছাউনি দিয়ে বাঁধা ছিল বাড়িটি। সময়ের পরিবর্তনে, আভিজাত্যের ছাপ পড়ে সরকার বাড়ি বর্তমানে বিশাল বড়ো অট্টালিকায় রূপান্তরিত করা হয়েছে শুধু তফাত সম্পর্কের। পূর্বে টিনের ছাউনির নিচে সকলে একসাথে আনন্দে জীবনযাপন করত আর বর্তমানে বিশাল বড়ো অট্টালিকায় সকলে একছাদের নিচে বসবাস করলেও পরিবার দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। সরকার বাড়িটি তৈরিও করা হয়েছে সেভাবেই। গোলাকৃতির বাড়িটির একপাশে আরিফ সরকার ও দুই ছেলে পরিবার সহ থাকে আর অপর পাশে এক ছেলে বউ সন্তান নিয়ে থাকে।
——————
সন্ধ্যা খুবই ক্লান্ত নিজের ব্যস্ততা জীবন নিয়ে। ঘরে এসে হাত ব্যাগ টেবিলের উপর রেখে বাবার ঘরের দিকে এগিয়ে গেল।
সন্ধ্যার বাবা নীরব সরকার আরিফ সরকারের ছোট ছেলে। সন্ধ্যা বাবার ঘরের দরজায় করাঘাত করল। ভেতর থেকে আসো শুনতে পেয়ে প্রবেশ করল সে। ঘুটঘুটে অন্ধকারে নীরব সরকার বসে আছেন। সন্ধ্যা বাবার ঘরে প্রবেশ করে প্রথমেই ঘরে আলো জ্বালায়। নীরব সরকার তখন পর্দা ভেদ করে আসা দূরের দালানের টিমটিম করে জ্বলে থাকা রঙ বেরঙের আলোর ঝিলিক দেখছিল। মেয়েকে আসতে দেখে মুচকি হাসেন। হাতের ইশারায় কাছে ডাকেন।
” আজ অফিস কেমন ছিল?”
অফিসের কথা বলায় সন্ধ্যার নিলয়ের কথা স্বরণে আসে। সন্ধ্যার মুখের রং পরিবর্তন হয়ে যায়। চোখ মুখ শক্ত করে প্রত্যুত্তরে বলে, ” ভালো ছিল। তবে ঐ নিলয়কে যতবার এম ডির চেয়ারে বসতে দেখি ততবারই কিছু মানুষের পক্ষপাতিত্ব মনে পড়ে যায়।”
নীরব সরকারের মুখশ্রী শক্ত হয়ে আসে। হস্তদ্বয় মুষ্টিবদ্ধ করে চেয়ারের হাতলে আঘাত করে বসে।
“তোমাকে সহ্য করতে হবে। মানতে হবে এবং চেষ্টা করতে হবে ঐ স্থানে আসন গ্রহণ করার।”
সন্ধ্যা মনকে আরো শক্ত, স্থির করল। শুধু কাঙ্খিত সময়ের অপেক্ষা করছে সে। সন্ধ্যাবতীর মনে কয়েক বছর ধরে প্রশ্ন, কেন তার বাবা আপনজনের বিরুদ্ধে আর কেন-ই বা সন্ধ্যাকে নিজেদের অফিসে চাকরি করতে বলেছে আর কেন-ই বা এত বছর ঘর থেকে বের হোন না, আপনজনদের দেখতে চান না।
” বাবা, একটা প্রশ্ন ছিল।”
নীরব সরকার বুঝতে পেরেছেন। মেয়ের মনের বর্তমান অবস্থা। দৃষ্টি আবারো দূরে দালানের দিকে নিবদ্ধ করে প্রত্যুত্তরে বললেন, ” আমি জানি তুমি কী বলতে চাইছো। সময় হোক, তোমার প্রশ্ন করতে হবে না। উত্তর এমনিতেই পেয়ে যাবে।”
সন্ধ্যা আর কিছু বলল না। লম্বা নিশ্বাস ত্যাগ করে ঘর থেকে বের হয়ে আসলো।
——–
“তুমি এসেছিলে কোনো এক বসন্তে, চলে গেলে গত গ্রীষ্মে। ভেবেছ, আমি ভেঙে পড়েছি নাকি বিরহে আছি তোমার অনুপস্থিতিতে।”
ডায়েরিতে খচখচ শব্দে কয়েক বাক্য লিখে কলম থামায় নিলয়। চোখের সামনে অতীতের কিছু স্মৃতি চলাচল করছে। শান্তি দিচ্ছে না তাঁকে। এদিকে অফিসের সেই ঘটনা এখনো মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। কে ছিল,কি করতে এসেছিল, আর কোথায় চলে গিয়েছে? এমন তো নয় অফিসে নিলয়ের আড়ালে আবডালে অসৎ কোনো পরিকল্পনা করা হচ্ছে! নিলয় ভাবতে ভাবতে বারান্দায় চলে আসে। এত বছর অফিসের সকল দায়িত্ব পুরাতন ম্যানেজার পালন করতো। আরিফ সরকার শুধুমাত্র সপ্তাহে অফিসে বসতেন আর খোঁজ নিতেন। কোনো এক কারণে ম্যানেজারকে আরিফ সরকার অফিস থেকে বের করে দেন। নিলয়ের নিকটে পুরো অফিস এখনো ধোঁয়াশা। নিলয় মনে করে এই অফিসের আনাচে কানাচে এখনো অনেক রহস্য রয়েছে।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে নিলয় কথাগুলো ভাবছিল। দূরে বারান্দায় কারো ঝুলন্ত ওড়না দেখে ভ্রু যুগল কুঁচকে নেয়। নিলয় জানে এটা কার বারান্দা। এতরাতে ওড়না ঝুলছে মানে ঐরাবতী এখনো ঘুমায়নি। নিলয় নিজ বারান্দার দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যার ভাবগতি লক্ষ্য করতে চেষ্টা করছে। মুঠোফোনের আলোয় সন্ধ্যাবতীর হাস্যজ্বল চেহারা স্পষ্টত চিকচিক করছে। নিলয় নিজ ফোনে সময় দেখে নিল। সন্ধ্যাবতীর সন্ধ্যা নগ্ন শুরু হয়েছে মাত্র? নিলয় কি আর সন্ধ্যার সন্ধ্যালয় রঙিন হতে দিবে? কখনোই না। কল লিস্ট খুঁজে ঐরাবতী নাম বের করে কল করলো সে। রিং বাজছে,দূর থেকে নিলয় স্পষ্টত সন্ধ্যার বিরক্তি মুখশ্রী দেখতে পাচ্ছে। সময় নিয়ে সন্ধ্যা ফোন রিসিভ করে।
” আপনার পেত্নি গার্লেফ্রন্ড কী রাগ করে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে যে এত রাতে আমাকে বিরক্ত করছেন?”
” মুখে লাগাম দাও মিস ঐরাবতী। আজকাল তোমার মুখ একটু না অনেক বেশিই চলে। ভুলে যেও না, তুমি কার সাথে কথা বলছো।”
” অহ শিট! আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম, আমি বর্তমানে একজন অভদ্র দুর্লয়ের সাথে কথা বলছি।”
” সন্ধ্যাবতী?”
কর্কশ আওয়াজ ফোন ভেদ করে কর্ণধারের পর্দায় বাড়ি খেলো। সন্ধ্যা তা দেখে হেসে ফেলল। নিলয়কে রাগাতে সন্ধ্যার বেশ লাগে। নিলয়ের কপট রাগ পুরোই আরিফ সরকারের ন্যায়।
” আপনার ধমকে পিঁপড়েও নড়বে না আর আমি তো মানুষ।”
” পিঁপড়ে হও বা মানুষ হও। ভয় তো তোমাকে পেতেই হবে মিস ঐরাবতী। আগামীকাল সকাল ছয়টায় সাতটা ফাইল আমার টেবিলের উপর চাই। রাত জেগে প্রেমালাপ করো বা বাচ্চা পালো তাতে আমার যায় আসে না। তবে সঠিক সময়ে ফাইল না পেলে! শুভ রাত্রি মিস ঐরাবতী।”
ফোন কে’টে গেলো। সন্ধ্যার জীবন তেজপাতার চেয়েও পাতলা। সন্ধ্যার শক্তি থাকলে এই অসভ্য দুর্লয়কে বস্তায় ভরে দূর দেশে পাঠিয়ে দিত।
মুঠোফোনে টুং টাং বার্তা আসলো। সন্ধ্যাবতী হাসিমুখে শুভরাত্রি জানিয়ে বিদায় নিলো।
————–
পুরো পৃথিবীর মানুষদের সকাল যেখানে শুরু হয় সকাল সাতটায় সেখানে সন্ধ্যার সকাল শুরু হয়েছে আজ আটটায়। সন্ধ্যার মা নিজের বাবার বাসায় গিয়েছে যার ফলে নাশতাটাও করা হয়নি। কাজের দুজন লোক আছে যারা সন্ধ্যার জন্য নাশতা তৈরি করেছেন কিন্তু সন্ধ্যার সেসব খাবার পছন্দ হয়নি। তাড়াহুড়ো করে সন্ধ্যা তৈরি হয়ে নিচে নেমে আসে। বাড়ির বাহিরে বাগানটায় তখন আরিফ সরকার বসে নাশতা করছিলেন। সন্ধ্যা দৌড়ে বের হয়ে যাচ্ছিল তখনই আরিফ সরকারের কথা সন্ধ্যার কানে আসে।
” সন্ধ্যাবতী, নাশতা করে যাও।”
দাদার সাথে কথা না বললেও সন্ধ্যা দাদাকে খুবই শ্রদ্ধা করে। আড়ালে যত যাই বলুক না কেনো মানুষটাকে সত্যিই সকলে ভয় পায়। সন্ধ্যা উপরে একবার বাবার ঘরের জানালার দিকে তাকিয়ে আরিফ সরকারের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। কাজের লোককে তিনি ইশারায় নাশতা নিয়ে আসতে বলেন।
আজ সন্ধ্যার প্রিয় নাশতা তৈরি করা হয়েছে। পরোটা এবং গরুর গোস্তের কালো ভুনা। সন্ধ্যা আরিফ সরকারের সামনের চেয়ারে বসে আছে মাথা নত করে। কাজের লোক খাবার পরিবেশন করে। সন্ধ্যা কোনো কথা না বলে খাওয়া শুরু করে।
সরকার বাড়ির একটা নিয়ম আছে। বাড়ির বউরা বাহিরে বের হতে পারে না। নিলয়ের মায়ের হাতের কালো ভুনা খুবই মজাদার। সন্ধ্যা খুবই পছন্দ করে
একসময় সন্ধ্যা নিলয়ের মায়ের গলায় ঝুলতো কালো ভুনা খাওয়ার বাহানায়। আজ অনেক বছর পর সে তৃপ্তি ভরে খেয়ে নিল। এদিকে আরিফ সরকার সন্ধ্যাবতীর খাবার খাওয়া দেখে মুচকি হাসেন বিড়বিড় করে বলেন,
” নীরব তুই তোর সন্তানকে যতই অমানুষ বানাতে চেষ্টা করিস না কেনো। তোর সন্তান একদম পবিত্র। মনের ভিতরে খারাপ কিছুই ঢুকতে পারবে না। কেননা তার শরীরে আমার বংশের র’ক্ত ব’য়ে চলছে।”
সন্ধ্যা চলে গেছে আরিফ সরকার এবার তৃপ্তি হেসে ডুব দেন খবরের কাগজে।
——————
অফিসের সকল কর্মচারীরা কাজে মগ্ন। সকাল সকাল কাজের চাপের সাথে কাজের অনেক জোশ। দিনশেষে অচল মস্তিষ্ক সারারাত ঘুমিয়ে একদম সচল হয়ে আছে। সন্ধ্যাকে অফিসে ঢুকতে দেখে কয়েকজন হেসে ফেলেন। সন্ধ্যার রোজকার রুটিন। কিছুক্ষণ পর বস সন্ধ্যাকে বকবে আর শা’স্তি দিবে। কয়েকজন দুষ্টুমির ছলে বলেন,
“আজ তোমার খবর আছে রে, সন্ধ্যাবতী।”
সন্ধ্যা চুপি চুপি নিজে ডেক্সে এসে বসলো। এমন সময় কোথায় থেকে আকাশ দৌড়ে এসে সন্ধ্যাকে টেনে অফিসের এক কোনায় নিয়ে গেল।
” পাগল হয়েছিস আক্কাইস্সা। এভাবে টেনে নিয়ে আসলি কেনো? অসভ্য দুর্লয় যদি একবার দেখতে পারে তাহলে তোকে তো ছেড়ে দেবে কিন্তু আমাকে একদম আস্তো গি’লে খাবে।”
” আরে থাম বইন। আর ভয় দেখাস না। গতকাল বাঘের মুখ থেকে যে কীভাবে ছাড়া পেয়েছিলাম তা আমি জানি।”
” হ্যাঁ! নিজে তো ছাড়া পেয়েছিলি কিন্তু আমাকে তো ফাঁ’সি’য়ে গেলি। তোর জন্য, শুধুমাত্র তোর জন্য আমি সব সময় ফেঁসে যাই। এখন থেকে তোর সাথে কথা বন্ধ। ভুলেও তুই আমার আশেপাশে ঘেঁষার চেষ্টা করবি না।”
আকাশ কষ্ট পায়। সন্ধ্যার মতো ভালো বন্ধুকে হারাতে চায় না। তাই সন্ধ্যার উদ্দেশ্যে বলে,
” বন্ধুরে এভাবে বলিস না, কলিজায় লাগে।”
” তোর কলিজা বের করে ওটাকে কুঁচি কুঁচি করে কে’টে নদীতে ভাসিয়ে দিব। দূর হো ছাগল কোথাকার।”
আকাশ ছলছল চোখে তাকিয়ে রয়। সন্ধ্যা রেগে আছে। রাগ ভাঙাতে আকাশকে এখন কত কী করতে হবে!
ডেক্সের উপরে রাখা টেলিফোন বেজে চলছে।টেলিফোন বাজাতে সন্ধ্যা ভয় পেয়ে যায়। বুকে তিনবার থুথু দিয়ে কাঁপা হাতে ফোন কানে নেয়।
” এক্ষুনি আমার কেবিনে আসুন, মিস ঐরাবতী। আর হ্যাঁ! সাথে সাতটা ফাইলো নিয়ে আসবেন।”
সন্ধ্যা শুকনো ঢোক গিলে। গতকাল পাঁচটা ফাইল দেখা হয়েছে। বাকি দুইটা গতকাল রাতে নিলয়ের জন্যই দেখতে পারেনি সে।
গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গেল সন্ধ্যাবতী নিলয়ের কেবিনের সামনে। অভ্যাস মোতাবেক চেয়েছিল ধুরুম করে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করতে। কিন্তু পরক্ষণে মনে হল আজ প্রথমত সন্ধ্যা দেরি করে অফিসের ঢুকেছে তার উপর কাজ কমপ্লিট হয়নি। এখন যদি তিন নাম্বার ভুল কাজটা করে ফেলে তাহলে অসভ্য দুর্লয় হয়তো তাকে কান ধরে তিন ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখবে। সন্ধ্যা দাঁড়িয়ে মিষ্টি কন্ঠে অনুমতি চাইল ভেতরে ঢোকার জন্য।
” আসতে পারি স্যার?”
” আসুন।”
সন্ধ্যা ঘরে প্রবেশ করলো। নিলয় পায়ের উপর পা তুলে সন্ধ্যার দিকে তাকিয়ে আছে। সন্ধ্যার মুখে মিষ্টি হাসি যা দেখে নিলয়ের ভ্রু কুঁচকে আসে। সন্ধ্যায় এমন একজন মেয়ে যার মুখে কখনো মিষ্টি হাসি দেখতে পায়নি নিলয়। সবসময় নিলয়েরর সাথে কর্কশ ভাষায় এবং ত্যাড়া কথা শুনতে পেয়েছে সে। আজ হঠাৎ মিষ্টি হাসি দেখে নিলয়ের হজম হচ্ছে না।
” ফাইলগুলো দিন মিস ঐরাবতী। আমি ভাবছি আজকের কাজ ঠিক হলে আপনাকে প্রমোশন দিয়ে দেব। আপনি এত কষ্ট করে দিন রাত এক করে অফিসের জন্য কাজ করছেন আপনার তো এতোটুকু পাও নাই আছে, তাই না!”
প্রতুত্তরে সন্ধ্যা শুধু হাসছে আর মনে মনে গালি দিচ্ছে।
” অসভ্য দুর্লয়, আজ আপনি আমাকে কেমন প্রমোশন দিবেন তা ঠিকই বুঝতে পারছি। আজ একবার বেঁচে যাই, আপনার মরা পেত্নি গার্লেফ্রন্ডকে ধরে বেঁধে নিয়ে আসবো। তারপর বিয়ে করিয়ে দিব। হে আল্লাহ বাঁচাও আমাকে এ রা’ক্ষ’সে’র হাত থেকে।”
একটার পর একটা ফাইল দেখে যাচ্ছে নিলয়। কিছু ফাইলে লাল কালি দিয়ে গোল মার্ক করে রাখছে তো কিছু ফাইল দেখে প্রশান্তির হাসি হাসছে। শেষ ফাইল দুটোতে চোখ দিতে নিলয়ের চোখ বড়ো বড়ো হয়ে যায়। সন্ধ্যা বুঝে গেছে এখন তার শাস্তি পেতে হবে। তাই পা টিপে টিপে ঘর থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য উদ্যোগ নিল। কিন্তু তা আর হলো কই! নিলয়ের তীর্যক দৃষ্টি পড়ে সন্ধ্যাবতীর উপর। কর্কশ আওয়াজ ভেসে আসে তখনই। টেবিলে হাত দ্বারা আঘাত করে সন্ধ্যাবতীর উদ্দেশ্য বলে,
” কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকুন, মিস ইরাবতী। যতক্ষণ না আমি বলব ততক্ষণ কান ছাড়তে পারবেন না।”
চলবে……….#সন্ধ্যালয়ের_প্রণয়
#আফসানা_মিমি
|তৃতীয় পর্ব |
❌[কোনোভাবেই কপি করা যাবে না]❌
” ইরাবতী কে? আপনার ঐ পেত্নি গার্লেফ্রন্ড নাকি? কিন্তু তার নামের সাথে আরো একটা নামের মিল আমি কেন পাচ্ছি?”
” বাজে কথা বন্ধ করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকো।”
কয়েকমাসে সন্ধ্যা খেয়াল করেছে নিলয় সন্ধ্যার সাথে কথা,কাজে না পারলে এড়িয়ে চলে যায়। আজও তাই। সন্ধ্যা নিলয়কে শায়েস্তা করার মোক্ষম সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইল না। সন্ধ্যা কানে ধরে রেখেছে ঠিকই কিন্তু তার পায়ের চলাচল বন্ধ করেনি।
নিলয়ের কাছে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বলে,
” কী ব্যাপার, বললেন না? ঐরাবতী, ইরাবতী এরা কে?”
নিলয় কী উত্তর দিবে ভেবে পাচ্ছে না। সন্ধ্যা নাছোড়বান্দা নিলয়ের পিছু ছাড়বে না। গোয়েন্দাদের কাজ অপরধীদের চোখে চোখে রাখা সন্ধ্যা ঠিক তেমন। নিলয়ের দুর্বল দিক খুঁজে পেয়েছে এজন্য অতিরিক্ত সাহস বেড়েছে তার। নিলয়ের চেয়ার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে উচ্ছুক দৃষ্টিতে নিলয়ের উওরের আশায়।
” এক না। তবে ভিন্ন যে, সেটাও বলব না।”
” বলতে হবে। নয়তো রাজা দাদাকে বলে দিব।”
নিলয় আকস্মাত দাঁড়িয়ে গেল। দুষ্টুমির ছলে সন্ধ্যা কানে ধরে কিছুটা নিলয়ের দিকে ঝুঁকে দাঁড়িয়ে ছিল। নিলয়ের দাঁড়িয়ে যাওয়ায় তার মাথা সন্ধ্যার থুতনিতে লাগল। সন্ধ্যা “ও মা গো” বলে আর্তনাদ করে নিচে বসে পড়ে। নিলয় হতভম্ব, এমন ঘটনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না। এদিকে সন্ধ্যা ছোট বাচ্চাদের মতো মরা কান্না শুরু করেছে। মরা কান্না বলার কারণ হচ্ছে, নিলয়ের নিকট সন্ধ্যার কান্না আসল কান্নার চেয়ে নকলই বেশি মনে হচ্ছে। যে কেউ দেখলে বলবে, সন্ধ্যা ইচ্ছে করেই চিৎকার করছে। নিলয়ের কেবিন সাউন্ড প্রুফ থাকায় সন্ধ্যার চিৎকার বাহিরে শোনা যাচ্ছে না। সত্যি কান্না হোক বা মিথ্যা, নিলয়ের কাছে সন্ধ্যার কান্না সহ্য হচ্ছে না। নিলয় নিঃশব্দে সন্ধ্যার পাশে বসে যায়। সন্ধ্যা চোখ বন্ধ করে থুতনিতে হাত রেখে কান্না করছে। চোখ বারবার পিটপিট করাতে এক ফোঁটা জল চোখের পাশে ছড়িয়ে পড়েছে। নিলয় তা দেখে হাসে। সন্ধ্যাবতীর পাগলামি মাঝে মাঝে সে খুব উপভোগ করে কিন্তু প্রকাশ করে না। নরম স্বরে সন্ধ্যাকে ডাক দিল সে।
” সন্ধ্যাবতী?”
সন্ধ্যা নিরুত্তর। নিলয় আয়েশ করে সন্ধ্যার পাশে বসে নরম স্বরে ছোটবেলার একটা ঘটনা বলে।
” সন্ধ্যা তোমার মনে আছে! ছোট বেলায় তুমি হুটহাট আমাকে উদ্ভট বাংলা শব্দের ইংরেজি অনুবাদ জিজ্ঞেস করতে?”
সন্ধ্যা চোখ খুলে তাকায়। হারিয়ে যায় ছেলেবেলায়।
ছেলেবেলা,
সন্ধ্যা তখন দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে আর নিলয় ষষ্ঠ শ্রেণীতে। তখন সকলে একই ছাদের নিচে বসবাস করতো। সন্ধ্যা লগ্নে সন্ধ্যা চুপি চুপি নিলয়ের ঘরে প্রবেশ করে। হাতে বাংলা বই। কিছু বাচ্চা আছে বই পেলে পুরো বইয়ের রং বেরঙের ছবি দেখে,আবার কেউ গল্প বা কবিতা বানান করে পড়ে, আবার কিছু দুষ্টু বাচ্চা আছে যারা সুযোগ পেলেই বইয়ের আঁকিবুকি করে। সন্ধ্যা ছিল ঠিক তেমন। পৃথিবীর উদ্ভট সকল চিন্তা ভাবনা ছিল তার মাথায়। নতুন বই আঁকিবুকি করতো আর সেসব আঁকিবুকিকে বিভিন্ন বস্তুর নাম দিতো। আজও তাই করেছে। নতুন বইয়ে কিছু একটা এঁকে নিলয়ের ঘড়ে এসে উপস্থিত হয় সে মূলত নিলয়ের কাছে সেই সকল বস্তুর ইংরেজি নাম জানতে আসে যেগুলো সে কিছুক্ষণ আগেই এঁকেছে।
” নিলয় ভাইয়া আমি একটা জিনিস এঁকেছি দেখবে?”
নিলয় জোরে জোরে ইংরেজি কবিতা পড়ছিল। সন্ধ্যার উপস্থিতিতে সে নড়েচড়ে বসে। কেননা সন্ধ্যা সবসময় কিছু একটা এঁকে নিয়ে আসে। আর নিলয়কে উদ্ভট জিনিসের নামের ইংরেজি শব্দ জিজ্ঞেস করে আর নিলয় বেচারার যদি বলতে দেরি হয় তো পুচকোটা হেসে লজ্জা দিয়ে বলে, ” তুমি এত বড়ো হয়েও এটার ইংরেজি শব্দ জানো না?”
নিলয় এবার ডিকশনারির অনেক শব্দ আয়ত্তে এনেছে যেন সন্ধ্যার সামনে লজ্জায় পড়তে না হয়।
” আপনি কী এঁকেছেন, দেখি?”
সন্ধ্যা হাসিমুখে বই নিলয়ের দিকে এগিয়ে দেয়। কালো কলম দিয়ে চার থেকে পাঁচটা দাগ এঁকেছে সন্ধ্যা। নিচ থেকে উপরের দিকে টেনে গোল করে রেখেছে। নিলয় বইটা হাতে নিয়ে উপর নিচ করে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কয়েকবার দেখেও বুঝতে পারল না। পরিশেষে সন্ধ্যাকেই জিজ্ঞেস করল, ” এটা কী এঁকেছো? তোমার বাড়ির কোন সীমানার অংশ শুনি?”
” আহ নিলয় ভাইয়া, তুমি কিছু বুঝোই না। এটা কোনো সীমানার চিত্র না। এটা হচ্ছে বাতাস। আমি বাতাস এঁকেছি। আচ্ছা ভাইয়া বাতাসের ইংরেজি কী?”
” এয়ার।”
” উঁহু তুমি পারো না। বাতাসের ইংরেজি হলো ফোঁস।”
নিলয়ের চোখ জোড়া বড়ো হয়ে আসে। সন্ধ্যার দ্বারা তে এমন উদ্ভট শব্দার্থ বলা সম্ভব তা যেন সে ভুলে গিয়েছিল। নিলয় চিন্তার ভাব ধরে বলে, ” কীভাবে হলো? ”
” তুমি মুখ দিয়ে ফোঁস বলো। দেখবে ফোঁস বলার সাথে সাথে মুখ দিয়ে বাতাস বের হচ্ছে।”
” তাই বলে তুমি বাতাসের ইংরেজি ফোঁস বলবে?”
“হ্যাঁ।”
” কিন্তু ফোঁস তো বাংলা শব্দ। এর অর্থও ভিন্ন।”
সন্ধ্যা এবার উঠে দাঁড়ায়। একে ছোট মানুষ তার উপর নিলয়ের সাথে কথায় পারবে না তাই সে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মনে মনে নিলয়ের কথার উত্তর খুঁজে।
নিলয় সন্ধ্যা ভাবগতি বুঝে প্রশ্ন করে, ” কোথায় যাচ্ছো?”
” তোমার সাথে কথা নাই নিলয় ভাইয়া। তুমি অন্যরকম, খুবই অন্যরকম। কিন্তু আমার খুব পছন্দের । তবে আমার কথাই সঠিক, বাতাসের ইংরেজি হচ্ছে ফোঁস।”
বর্তমান,
নিলয় সেকালের ঘটনা মনে করে হাসছে। সন্ধ্যার কান্না থামলেও রাগ বেড়ে গিয়েছে। সন্ধ্যার ইচ্ছে করছে নিলয়ের মাথায় নিজ মাথা দ্বারা জোরে আঘাত করতে। কিন্তু সন্ধ্যার সেই সাধ্য নেই।
” হাসি থামান অসভ্য দুর্লয়। আপনাকে দেখতে পুরাই ভূতের নানার মতো লাগছে।”
নিলয় হাসি থামায়। প্রথমে নিজে উঠে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যাকে ধরে উঠায়। কিছু একটা ভেবে বলে,
” নিজের ডেক্সে যান মিস ঐরাবতী। আপনার শাস্তি আজকের জন্য মওকুফ করা হলো। পরবর্তীতে উলটা পালটা কাজ করলে,,,,
নিলয় কথা শেষ করতে পারলো না এর আগেই সন্ধ্যা বলে, ” জানি জানি এরপর কী বলবেন। বলবেন যে পরবর্তীতে উলটা পালটা কাজ করলে রিজাইন লেটার লিখতে হবে তাইতো?”
” হ্যাঁ।”
সন্ধ্যা রাশভারী স্বরে বলল, ” সেই সুযোগ কখনো পাবেন না মিস্টার অসভ্য দুর্লয়। আমি আমার লক্ষ্য থেকে কখনো পিছপা হবো না।”
সন্ধ্যা ক্ষণিক সময়ও দেরী করেনি। নিলয়ের কেবিন থেকে বের হয়ে গেল। সন্ধ্যা চলে যেতেই নিলয় বিরক্ত হয়ে বিড়বিড় করে বলল, ” মিস ঐরাবতী মেয়ে মানুষ নাকি গিরগিটি যে, ক্ষণে ক্ষণে এর মন পরিবর্তন হয়?”
————–
কোনো এক গুপ্তঘরে কারোর আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে। কেউ একজন চিৎকার করে বলছে, ” বেইমানরা কখনোই সফল হতে পারে না। যদিও সে ক্ষণিকের জন্য ভাবে সফল হয়েছে। বস্তুত সে নিজেও জানে না সে সর্বদিক থেকে ঠকে গেছে এবং কাজেও অসফল হয়েছে। কেননা, একজন আছেন। যিনি সৎ এবং অসৎদের সুযোগ দেন।”
” অসৎ কাজ করেই এজীবন সফল হয়েছি। তোর কথা শোনার আমার কোন ইচ্ছে নেই। তুই বেইমান, তোর শাস্তি একমাত্র মৃত্যু।”
” উপর ওয়ালা সব দেখছেন। খুব শীঘ্রই তোদের বিনাশ হবে।”
অপর লোকটি ভয়ংকর হাসলেন। হাতের সাইলেন্সার লাগানো গা’ন’টা আর্তনাদ করা লোকটির দিকে তাক করিয়ে বলে, ” আমার পরিচয় কেউ পেলে তো বিনাশ করবে। আরিফ সরকারের পরিবার অতি শীঘ্রই মাটির নিচে থাকবে। আমি নিজের হাতে এদের করব খুঁড়বো।”
নিঃশব্দে একটি তরতাজা প্রাণ জমিনে লুটিয়ে পড়লো। লোকটি কয়েকজন ছেলেদেরকে ইশারায় লা’টির ব্যবস্থা করতে বলে নিজ মনে বিড়বিড় করে বলল, ছক তো আভি সেই কবেই কষে নিয়েছি। এখন শুধু গুটি ফেলার পালা। আরিফ সরকারের তেজ খুব শীঘ্রই ভেঙে যাবে।”
চলবে……
[ছোট পর্বের জন্য দুঃখিত। হাসপাতালে ছিলাম তাই লিখতে দেরী হলো।]