সেদিন_মুষুলধারে_বৃষ্টি_ছিল পর্ব ৬+৭

#সেদিন_মুষুলধারে_বৃষ্টি_ছিল
part–6
Arishan_Nur (ছদ্মনাম)

সেজুতি কানে ফোন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার মাথা ভোভো করছে। চারিপাশে অন্ধকার দেখছে সে। তার পা অসার হয়ে আসছে। সে আপ্রাণ চেষ্টায় আছে ছুটে বের হতে কিন্তু পারছে না। গা কাপুনি দিয়ে উঠছে তার । মাথা কাজ করছে না।

সে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছে। বড্ড পিপাসা পেয়েছে তার৷ এক গ্লাস পানি খেতে পারলে স্বস্তি পেত সে৷

সে পুনরায় ওই নাম্বারর কল দিতেই ফোন রিসিভ করল সেই ব্যক্তি ।

সেজুতি বলে উঠে, তোমার স্যার এখন কোথায়?

লোকটা একটা ঠিকানা দিলো। সেজুতি ফোন রেখে বের হলো। মুহিবের বাসায় দুইটা গাড়ি আছে। ড্রাইভার নিচেই থাকে।

সে নিচে এসে ড্রাইভারকে ডাক দিলো। মিনিট পাঁচেক পর রওনা দিলো। এর আগে কোন দিন এতো রাতে বাসা থেকে বের হয় নি। সত্যি বিয়ের পর মেয়েরা বড় হয়ে যায় এই কথা ভুল নয়!

বিয়ের আগে মেয়েরা যতো-বড়ই হোক কেন সে ছোট থাকবে আর বিয়ের হয়ে গেলে কমবয়সী হলেও বয়সে বড় হয়ে যায়। কেমন অদ্ভুত নিয়ম!

সেজুতি দম ফেলে স্বচ্ছ কাচের দিকে তাকিয়ে ফুপিয়ে কাদছে৷ মুহিবের ম্যানেজার বা এসিস্ট্যান্ট কেউ একজন কল করেছিলো।উনি ঠিকমতো নিজের পরিচয় দেয়নি। উনি জানালেন মুহিব নাকি ড্রিংক করেছে। এখন নিজের সেন্সে নেই। এইসব কথা শুনে তার হাত-পা কাপছে।তাদের বাসায় আজ পর্যন্ত কেউ মদ খাওয়া তো দূর মদের বোতল চোখে দেখেছে কিনা সন্দেহ। অথচ মুহিব নাকি মদ খেয়ে সেন্সলেস হয়ে আছে! সেজুতির ঘটনাটা হজম করতে কষ্ট হচ্ছে। চোখের পানি গাল বেয়ে পড়ছে। বিয়ের পরের দিন কোন ভদ্র পরিবারের ছেলে এমন কাজ করতে পারে? বিয়ের পরের দিন কেন যেকোন দিনেই এসব বেহায়াপনা সহ্য সীমার বাইরে৷

সে বড় বড় করে শ্বাস ফেলছে।

ড্রাইভার কে ঠিকানা বলতেই সে এই জায়গা চিনে ফেলেছে তার মানে কি এখানে আগেও মুহিব আসত? আর ড্রিংক করত?

সেজুতি আতকে উঠে।

ঠিকানা অনুয়ায়ী তারা একটা বিল্ডিংয়ের সামনে এলো। ড্রাইভার বের হয়ে তার জন্য গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে বলে, ভাবী লিফটের চারে যাবেন৷

সেজুতি ভ্রু কুচকে বলে, আপনি কিভাবে জানলেন?।

ড্রাইভার উত্তর দিলো না। সে আর জোড়াজুড়ি করল না। ভেতরে ঢুকে যায়। বিল্ডিংয়ের ভেতরে ঢুকতেই তার গা ছমছমে করতে লাগে। চারিদিকে অন্ধকার। কেবল একটা চল্লিশ ওয়াটের হলুদ লাইট জ্বলছে। সেই হলদে নীলাভ আলোটাই পরিবেশটাকে কেমন যেন বানিয়ে ফেলেছে।

গ্যারেজের ভেতর থেকে সেজুতি বাইরে তাকালো। কিছুই দেখা যাচ্ছে না।

আচমকা কেউ একজন তার দিকে এসে তাকে সালাম দিয়ে বলে উঠে, ভাবী লিফট কল করেছি। আসুন।

সেজুতি বড় বড় পা ফেলে লিফটের দিকে গেল।তার কাছে পরিবেশটা ভালো ঠেকছে না। লিফট বন্ধ হতেই তার মনে ভয় হতে লাগলো। আচ্ছা কেউ কি তার ক্ষতি করার জন্য এইখানে ডেকে এনেছে কৌশলে? দেখা গেল চারতলায় মুহিব নেই তার বদলে তিন-চার দীর্ঘদেহী পুরুষ,,,,,,

সেজুতির গলা শুকিয়ে এলো। সে লিফটের বাটন চাপতে লাগে। লাভ হলো না। লিফট দোতলা থেকে তিনতলা এবং চারতলায় এসে গেট খুলে গেল।

সেজুতি অবাক হয়ে গেল। নিচের পরিবেশ আর চারতলার পরিবেশে আকাশ-পাতাল ফারাক। চোখ ধাধানো লাইটিং। যার জন্য কিঞ্চিৎ চোখ কুচকে যায় সেজুতির। লিফট থেকে বের হয়ে সে চমকে উঠে। দিনাজপুরের মতো ছোট শহরে এতো চাকচিক্য বাসা! দেখে মনে হচ্ছে ঢাকার গুলশানের কোন ফ্লাটের সামনে দাড়িয়ে আছে সে৷ মেইন গেটের সামনে পেইন্টিং। আয়না, সু রেক,ফুলদানি৷ পাপসের উপরের মুহিবের সু ফেলে রাখা সঙ্গে দুইদিকে দুইটা কালো মুজা। মানে ভেতরে মুহিব আছে।

সেজুতি মনে সাহস সঞ্চার করে ভেতরে ঢুকে পড়ে। মেইন গেট খোলাই ছিলো। ধাক্কা দিতে গেট খুলে যায়। সে ভেতরে প্রবেশ করল।

বাসার ভেতরে ঢুকে হতাশ হলো সেজুতি।বাহিরটা যতো সুন্দর ভেতরটা তার এক অংশ ও না। কেমন ঘুপচি। ঠাসা ঠাসা মালামাল। সোফায় কাটুন রাখা কয়েক গাদা। বোঝাই যাচ্ছে অফিসের কাজের জন্য এই বাসা ভাড়া নেওয়া।

সেজুতি মুহিব বলে ডাক দিলো। পাশের রুম মুহিবের কন্ঠে শব্দ এলো, কে?

তখনি ফোন বেজে উঠল। আগের আননোন নাম্বার থেকে কল এসেছে৷ সে রিসিভ করতেই লোকটা বলে, ম্যাডাম আপনি কি চারতলায় যেতে পেরেছেন?

সেজুতি ছোট্ট করে হু বলে ফোন কেটে পাশের রুমে যেতেই আতকে উঠে ।

মুহিব একটা অপরিষ্কার নোংরা বিছানায় কাত হয়ে শুয়ে আছে। খালি গা। চুল গুলো এলোমেলো। হাতে হুইস্কির একটা বোতল।

সেজুতি তার সামনে গিয়ে দাড়াতেই মুহিব অদ্ভুত ভাবে তার দিকে তাকালো। মনে হয় চিনতে পারছে না।

মুহিব হুইস্কিত বোতলে মুখ দিয়ে এক চুমুক খেয়ে নিয়ে বলে উঠে, কি? নতুন নাকি? এইসব ব্যবসায় নতুনত্ব মুখ দরকার! ভালো! ভালো!

সেজুতি মুহিবকে স্পর্শ করতেই মুহিব ছিটকে বিছানার অন্য প্রান্তে চলে গিয়ে হুংকার দিয়ে বলে উঠে, আমার থেকে দূরে থাক।
তোর সাহস কিভাবে হয় আমাকে স্পর্শ করার?

সেজুতি ভ্রু কুচকে হালকা গলায় বলে, মুহিব? এইসব কি? তোমার হয়েছেটা কি? এমন গোঙাচ্ছো কেন? আর তুই তুরাকি কেন করছো?

মুহিব ঝাঝালো কন্ঠে উত্তর দেয়, আমার নাম মুখে নিবি না। তোদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক মালিক-চাকরের আর টাকার!

সেজুতি হতভম্ব হয়ে বলে, মুহিব? আমি তোমার স্ত্রী!

এরপর কাদো কাদো হয়ে বলে, তুমি ঠিক আছো?

মুহিব বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে দুই চুমুক হুইস্কি খেয়ে চোখ বুজলো।তার চোখের কোনে পানি। নড়াচড়া করছে না বললেই চলে৷

সেজুতি বিছানায় উঠে বসে মুহিবের কাছে গিয়ে চুপচাপ বসে রইল। তার মুখ দিয়ে কোন কথাই বের হচ্ছে না। নির্বাক সে। চুপচাপ চোখের জলে গাল ভাসাচ্ছে৷

মুহিব বোধহয় ঘুমিয়ে পড়েছে। ঘন নিশ্বাসের শব্দ পড়ছে। রাত বাড়তে লাগে। চারপাশ অতিমাত্রায় নিশ্চুপ।

সেজুতির কেমন অস্থির লাগছে৷ মনে হচ্ছে এই চার দেয়ালে কারা যেন বন্দী! কেউ বোধহয় সুখে নয়। কোথা হতে বন্দীনী নর্তকীর চাপা আর্তনাদ ভেসে আসছে যেন!

মুহিবের বলা কোন কথাই তার বোধগম্য হয়নি। মুহিব কি কষ্টে আছে? কিসের কষ্ট তার?

সে ফোনের স্ক্রিনে বারবার ঘড়ি দেখছে। রাত গভীর হতেই মুহিব নড়াচড়া শুরু করল।

সেজুতি জেগেই ছিলো৷ মুহিবকে অস্থিরতা করতে দেখে তার কাছে গেলেই বুঝতে পারল সে ঘুমের মধ্যে কাদছে৷

সেজুতি চমকে উঠে। মুহিব কাদছে? এই প্রথম সে কোন পুরুষ কে কাদতে দেখছে৷ একটা পুরুষ অনেক বেশী অসহায় না হয়ে পড়লে কাদে না!

মুহিব বিড়বিড়িয়ে বলে উঠে, জুই আমাকে ক্ষমা করে দিও! তোমার সাথে যা করেছি অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি।

সেজুতি মুহিবের অস্পষ্ট কথা বুঝতে পারলো না। কিন্তু জুই আর অন্যায় শব্দটা কানে গিয়ে ঠেকেছে।

হুটহাট মুহিব উঠে বসে চোখ খুলে মুখ ভর্তি করে বিছানা এবং গা ভাসিয়ে অদ্ভুত ভাবে সেজুতির দিকে তাকালো হয়তো বা বমি করার জন্য তার মদের বুদ নেশা কেটে যাচ্ছে৷চোখ লাল হয়ে আছে তার। মুহিবিকে দেখেই মায়া হতে লাগে তার৷ কি হয়েছে ওর? অফিসে কোন ঝামেলা হয়েছে কি?

সেজুতি চুপচাপ অসহায় ভরা চোখে মুহিবের দিকে তাকিয়ে আছে।

মুহিব করুণ গলায় বলে উঠে, সেজুতি তুমি? এখানে কিভাবে এলে?

— এখন কেমন লাগছে আপনার?( নরম সুরে

মুহিব উত্তর দিলো না৷ অবিশ্বাস্য চোখে খানিকক্ষন তাকিয়ে থেকে সেজুতি কে খুব শক্ত করে চেপে ধরে।

সেজুতি মূর্তির মতো বসে থাকে। মুহিব আরো শক্ত করে চেপে ধরে তাকে।

মুহিবের বমির গন্ধে গা এলিয়ে যায় তার। মুহিব তার কানের কাছে ফিসফিস করে বলে উঠে, ভালোবাসি সেজুতি!

এরপর এলোপাতাড়ি ভাবে সেজুতির গালে।চুমু দিতে লাগে। সেজুতি সরে এসে বসল।

ভালোবাসি শব্দটা প্রতিটা মানুষের মনে আনন্দের অনুভূতি দোলা দেয়৷ কিন্তু সেজুতি আনন্দিত হতে পারলো না। ভালোবাসি বলা কথাটা এবং মুহিবের স্পর্শ কাটার মতো বিধতে লাগে সেজুতির মনে।
#সেদিন_মুষুলধারে_বৃষ্টি_ছিল
part–7
Arishan_Nur (ছদ্মনাম)

ভাঙা মন নিয়ে বিছানায় শুয়ে আছে সেজুতি।রুমটা প্রচুন্ড অন্ধকার। বাতি নেভানো আছে এজন্য হয়তো রুমে আলো নেই বললেই চলে৷ অন্ধকারে সেজুতির গা ছমছমে করছে। সে বালিশে মুখ গুজে ফোপাচ্ছে৷ তার গায়ের উপর মুহিব নিজের একটা হাত তুলে রেখে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। সেজুতির চোখে জল। সে বেশ জোড়ে করেই মুহিবের হাতটা সরিয়ে রাখলো। এরপর কাত হয়ে অন্যদিকে মুখ ঘুরালো। রুমের সঙ্গে এডজাস্ট বারান্দা আর বাথরুম। কাত হতেই বারান্দা নজরে এল। সারা শহর জুড়ে অন্ধকার নেমে এসেছে সেই সাথে তার মনেও নেমেছে ঘোর অন্ধকার! আশেপাশের বাড়িতে ও বাতি নেভানো। তারপর ও কোথা থেকে যেন বারান্দায় এক চিলকে কৃত্রিম আলো এসে বারান্দায় রাখা চেয়ারটার ছায়া মেঝতে ফেলছে। সেদিকে দৃষ্টি তার। অসহ্য যন্ত্রণা বুকে পুষে শুয়ে আছে সে। মন ও শরীর ব্যথায় কাতরাচ্ছে।

সেজুতি বারান্দায় পড়া ছায়াটার দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগে, এমন বিষাদময় কেন হলো তার জীবনটা? তার কি সুখ কাম্য ছিলো না? সে কি আশা রাখেনি এমন একজনকে পাবে যে কিনা তার প্রতিটা দিনের ভালো-মন্দের খবর রাখবে। বিকেলে হলে তার জন্য তার প্রিয় খাবার মোগলাই কিনে এনে নিজ হাতে পরম যত্নে খাওয়াবে। রাত হলে রুমে মৃদ্যু আলো কিংবা মোমবাতি জ্বালিয়ে গল্প করবে। সেজুতির কাছে খালি গলায় গান গাওয়ার আবদার করবে। সকালে চুপিচুপি ঘুমন্ত সেজুতির গালে ভালোবাসা একে দিবে! মাথায় হাত বুলিয়ে দিবে! নিজ হাত আদর করে খাইয়ে দিবে! ভালোবেসে আগলে রাখবে। এমনই কাউকে তো সে চায়! কিন্তু মুহিব কেন তাকে বুঝলো না? নাকি সবাই-ই মুহিবের মতো! সব স্বামীই কি মুহিবের মতো? তার উত্তর জানা নেই। এইসব কথা কাউকে না বলা যায়, না প্রশ্ন করা যায়৷ কিছু কিছু কথা থাকে যেগুলো কাউকে মুখ খুলে বলা যায় না। চাইলেও মুখ দিয়ে বলা যায় না।

সেজুতি উঠে বসলো। মুহিবের দিকে তাকালো সে। দেখে মনে হচ্ছে, বেশ আরাম করে ঘুমাচ্ছে মুহিব। সেজুতির ঘৃণা হতে লাগে তার প্রতি৷

“ঘৃণা এমন এক অনুভূতি যা মনের অন্তরালে বসবাস করে! ঘৃণা অনুভূতিটি মানুষের সবচেয়ে আপন হয় কেননা এই অনুভূতিটি কেবল এক সময়কার আপনজনের প্রতিই জন্মায়। ঘৃণা বানানে যুক্তবর্ণ এসে যেমন উচ্চারণে জটিল করে দিয়েছে তেমনি ঘৃণাও কারো জীবনে চলে এলে তার জীবনটা জটিল করে তুলে।”

ফোস করে দম ফেলে ঠোঁটে ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকানোর চেষ্টা করছে সে। আজকে তার বিয়ের দ্বিতীয় দিন। এমন সুন্দর এক স্মৃতি তৈরির দিনে এমন বাজে, অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ মুহিবের কাছ থেকে সে আশা করেনি৷ সেজুতি এবারে শব্দ করে কেদে ফেলে৷

কান্নার আওয়াযে মুহিব ঘুমের মধ্যেই বিরক্ত হয়ে ওপাশ ঘুরতে ঘুরতে বলে উঠে, আহা ডিস্টার্ব করিও না তো!

সেজুতি চুপ হয়ে গেল। চোখ বেয়ে পানি পড়ছে তার। রাতের শেষ অংশ কেটে গিয়ে হালকা সূর্যের কিরণ দেখা দিচ্ছে। ফযরের আযান ও হয়ে গেছে। সেজুতি সবটা সময় বসেই কাটিয়ে দিলো।
আযান শেষ হতেই সে ওযু করতে গেল। এই বাসায় কি জায়নামাজ আছে? কে জানে? খুজে দেখতে হবে। মনে হয় না থাকবে।

সে বাথরুমে গিয়ে বেশ খানিকটা অবাক হলো। বাসার ড্রয়িং রুমটা দেখে মনে হয়েছিলো এখানে কেউ থাকে না। অফিসের মালামাল রাখা হয়৷ কিন্তু বাথরুমে ঢুকে এই ধারণা বদলে যাবে যে কারো বাথরুমে কেউ একজন সানসিল্ক শ্যাম্পু কিনে এনে রেখেছে৷ সঙ্গে ম্যাচিং সানসিল্ক কন্ডিশনার৷ সাবান অর্ধ ব্যবহৃত। একটা ফেস ওয়াশ ও আছে। ব্যাপার টা অদ্ভুত লাগলো তার। এইসব জিনিস কোন বাড়ির বাথরুমে থাকবে৷ এমন অফিস স্টোর রুমে কেন এগুলো সাজানো? ব্যাপার টা মাথায় ঢুকলো না সেজুতির। সে সাবান ব্যবহার করলো না। গোসল সেরে পরনের সালোয়ার কামিজ টাই পড়ে বের হলো।

কারো ব্যবহৃত জিনিস ইউস করতে পছন্দ করে না সে। ওযু করে বের হতেই মুহিব কাত হয়ে তাকে দেখে নিলো।

মুহিবের ঘুম খুবই পাতলা তা সেজুতি এই দুই রাত তার সঙ্গে থেকেই বুঝে গেছে। সামান্য বাতাস বয়ে যাওয়ার শব্দেও মুহিব জেগে উঠে।

মুহিব তাকে প্রশ্ন করে, এতো সকালে উঠেছো কেন?

— নামাজ পড়ব৷ এই বাসায় কোন জায়নামাজ আছে?

মুহিব সেজুতির কথা শুনে অবাক হলো না কিন্তু মনে মনে বলে উঠে, নরকে কেউ ইবাদত করে না।

উত্তরে বলে উঠে, পাশের রুমে বড় বড় কাগজ আছে। ওগুলোর মধ্যে একটা নিয়ে কাজে লাগাতে পারো৷

সেজুতি হাটা ধরলো। মুহিব আগে পিছু ডাকলো।কিন্তু সে সায় দিলো না৷

এতে কিছুটা হতাশ হয় মুহিব। ঘুম ভেঙে যাওয়ায় সে আর ঘুমানোর চেষ্টা করলো। উঠে বসে সে। এরপর সিগারেট ধরায়। প্রচুন্ড মাথা ব্যথা করছে সে৷ এক কাপ কড়া করে চা খেলে ভালো হত। রান্নাঘরে কি চা-পাতা আছে কি?থাকলে সেজুতি কে এক কাপ চা বানাতে বলা যায়।

সে সিগারেট শেষ করে আবারো শুয়ে পড়ে। সেজুতি আসে না কেন? এতোক্ষনে তো নামাজ শেষ হওয়ার কথা!!

মুহিব আরো দশ মিনিট অপেক্ষা করে নিজেই উঠে পাশের রুমে গেল।

পাশের রুমের সুন্দর করে বেডরুম সাজানো। দামী বিছানা, দামী বেডশীট। এটাচ বারান্দা ও বাথরুম৷

সেজুতি বারান্দার রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে হীম শিতল হাওয়া বয়ে যায় মুহিবের গা বেয়ে৷

সে দ্রুত বারান্দায় গিয়ে খুকখুক করে কেশে নিজের উপস্থিতি জানান দিলো। কিন্তু সেজুতির ভাবান্তর হলো না। সে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷

মুহিব বেশ অবাক হলো। সেজুতি চঞ্চল টাইপের মেয়ে। এক জায়গায় বেশীক্ষন থাকে না। আজ কি হলো তার?
সে পেছন থেকে সেজুতির চুল গুলো আস্তে আস্তে সরিয়ে ডান কাধে রাখতে ব্যস্ত হয়ে রিনরিনে আওয়াজে তাকে ডেকে উঠে, সেজুতি?

সেজুতি কেপে উঠে মুহিবের স্পর্শ পেয়ে।

— কি হয়েছে তোমার?

সেজুতি নিশ্চুপ রইল। মুহিব পেছনে থেকে জড়িয়ে ধরে আদুরে গলায় বলে, মন খারাপ?

সে কাঠ গলায় উত্তর দেয়, নাহ।

— তাহলে কি হয়েছে? বল আমাকে!

সেজুতি তার দিকে ঘুরে দাঁড়ায়। এতে তাদের মধ্যবর্তী দূরত্ব কমে আসে।

সেজুতি বলে উঠে, ভালোবাসা শব্দটার মধ্যে কি আলো প্রভাব ফেলে? যেমনটা গাছের জন্য আলো প্রভাব ফেলে?

মুহিব তার কথার আগা-মাথা বুঝতে না পেরে বলে উঠে, বুঝলাম না?

সেজুতি কিছুটা দূরে সরে গিয়ে বলে উঠে, না বোঝার মতোন কিছুই বলি নি তো। আমার মনে হয় ভালোবাসা শব্দের মধ্যে আলো প্রভাব ফেলে। দিনের আলোতে ভালোবাসি বলতে মনের বল দরকার এবং দিনের আলোতে এই শব্দটা অত্যন্ত পবিত্র হয় কিন্তু রাতের আধারে ভালোবাসি শব্দটা বোধহয় সবচেয়ে কুৎসিত।

এরপর সরাসরি মুহিবের দিকে তাকিয়ে বলে, এবং যে কাউকে এই কথাটা রাতে বাতি নিভিয়ে বলা যায় তাই না?

মুহিব সেজুতির কথায় ঘাবড়ে যায়। কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না৷

সেজুতির চোখে অশ্রু টলমল করছে সে।

সে ক্লান্ত গলায় বলে উঠে, জুই কে হয় তোমার?

জুইয়ের নাম সেজুতির মুখে শুনে ভুত দেখার মতো চমকালো মুহিব। হুট কিরে গা ঠান্ডা হতে লাগলো। হাত বরফের মতো জমে গেল।

— জুইয়ের সঙ্গে কি অন্যায় করেছো?

মুহিব শুকনা ঢোক গিলে বলে, অন্যায়? কি অন্যায় করব? আর জুই! ওর কথা কিভাবে জানলে তুমি?

— কালকে রাত্ব তুমিই ওনার প্রসঙ্গে কথা বলেছো। কে হয় জুই তোমার? গার্লফ্রেন্ড?

মুহিব শুকনো হেসে বলে, ক্লাস মেট। আমার কাছে সেমিস্টার ফি ধার চেয়েছিলো। আমি দেইনি। ভেবেছিলাম এমনি ধার চাচ্ছে। পরে জানতে পারি মেয়েটা আসলেই অভাবী। আমি টাকা না দেওয়ায় ও ভার্সিটি থেকে ড্রপ আউট করেছে৷ এজন্য আই ফিল গিল্ড।

— তুমি বুঝি চ্যারেটি খুলে রেখেছো? সবার পড়ার খরচ বুঝি তোমার মাথার চিন্তা?

— তুমি কি আমার কথা বিশ্বাস করছো না? (মুহিব)

— করেছি।

আচমকা মুহিব বলে উঠে, সেজুতি! দিন হোক রাত হোক অমাবস্যা হোক, পূর্নিমা হোক বা যেটাই হোক না কেন! ভালোবাসায় কোন কিছুর প্রভাব পড়ে না। ভালোবাসা নদী না যেন শুষ্কতার জন্য শুকিয়ে যাবে। ভালোবাসা হলো মহাসমুদ্র! চিরকাল ধরে রয়ে যায়! নিঃশেষ হয় না।

ভাঙা মন নিয়ে বিছানায় শুয়ে আছে সেজুতি।রুমটা প্রচুন্ড অন্ধকার। বাতি নেভানো আছে এজন্য হয়তো রুমে আলো নেই বললেই চলে৷ অন্ধকারে সেজুতির গা ছমছমে করছে। সে বালিশে মুখ গুজে ফোপাচ্ছে৷ তার গায়ের উপর মুহিব নিজের একটা হাত তুলে রেখে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। সেজুতির চোখে জল। সে বেশ জোড়ে করেই মুহিবের হাতটা সরিয়ে রাখলো। এরপর কাত হয়ে অন্যদিকে মুখ ঘুরালো। রুমের সঙ্গে এডজাস্ট বারান্দা আর বাথরুম। কাত হতেই বারান্দা নজরে এল। সারা শহর জুড়ে অন্ধকার নেমে এসেছে সেই সাথে তার মনেও নেমেছে ঘোর অন্ধকার! আশেপাশের বাড়িতে ও বাতি নেভানো। তারপর ও কোথা থেকে যেন বারান্দায় এক চিলকে কৃত্রিম আলো এসে বারান্দায় রাখা চেয়ারটার ছায়া মেঝতে ফেলছে। সেদিকে দৃষ্টি তার। অসহ্য যন্ত্রণা বুকে পুষে শুয়ে আছে সে। মন ও শরীর ব্যথায় কাতরাচ্ছে।

সেজুতি বারান্দায় পড়া ছায়াটার দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগে, এমন বিষাদময় কেন হলো তার জীবনটা? তার কি সুখ কাম্য ছিলো না? সে কি আশা রাখেনি এমন একজনকে পাবে যে কিনা তার প্রতিটা দিনের ভালো-মন্দের খবর রাখবে। বিকেলে হলে তার জন্য তার প্রিয় খাবার মোগলাই কিনে এনে নিজ হাতে পরম যত্নে খাওয়াবে। রাত হলে রুমে মৃদ্যু আলো কিংবা মোমবাতি জ্বালিয়ে গল্প করবে। সেজুতির কাছে খালি গলায় গান গাওয়ার আবদার করবে। সকালে চুপিচুপি ঘুমন্ত সেজুতির গালে ভালোবাসা একে দিবে! মাথায় হাত বুলিয়ে দিবে! নিজ হাত আদর করে খাইয়ে দিবে! ভালোবেসে আগলে রাখবে। এমনই কাউকে তো সে চায়! কিন্তু মুহিব কেন তাকে বুঝলো না? নাকি সবাই-ই মুহিবের মতো! সব স্বামীই কি মুহিবের মতো? তার উত্তর জানা নেই। এইসব কথা কাউকে না বলা যায়, না প্রশ্ন করা যায়৷ কিছু কিছু কথা থাকে যেগুলো কাউকে মুখ খুলে বলা যায় না। চাইলেও মুখ দিয়ে বলা যায় না।

সেজুতি উঠে বসলো। মুহিবের দিকে তাকালো সে। দেখে মনে হচ্ছে, বেশ আরাম করে ঘুমাচ্ছে মুহিব। সেজুতির ঘৃণা হতে লাগে তার প্রতি৷

“ঘৃণা এমন এক অনুভূতি যা মনের অন্তরালে বসবাস করে! ঘৃণা অনুভূতিটি মানুষের সবচেয়ে আপন হয় কেননা এই অনুভূতিটি কেবল এক সময়কার আপনজনের প্রতিই জন্মায়। ঘৃণা বানানে যুক্তবর্ণ এসে যেমন উচ্চারণে জটিল করে দিয়েছে তেমনি ঘৃণাও কারো জীবনে চলে এলে তার জীবনটা জটিল করে তুলে।”

ফোস করে দম ফেলে ঠোঁটে ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকানোর চেষ্টা করছে সে। আজকে তার বিয়ের দ্বিতীয় দিন। এমন সুন্দর এক স্মৃতি তৈরির দিনে এমন বাজে, অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ মুহিবের কাছ থেকে সে আশা করেনি৷ সেজুতি এবারে শব্দ করে কেদে ফেলে৷

কান্নার আওয়াযে মুহিব ঘুমের মধ্যেই বিরক্ত হয়ে ওপাশ ঘুরতে ঘুরতে বলে উঠে, আহা ডিস্টার্ব করিও না তো!

সেজুতি চুপ হয়ে গেল। চোখ বেয়ে পানি পড়ছে তার। রাতের শেষ অংশ কেটে গিয়ে হালকা সূর্যের কিরণ দেখা দিচ্ছে। ফযরের আযান ও হয়ে গেছে। সেজুতি সবটা সময় বসেই কাটিয়ে দিলো।
আযান শেষ হতেই সে ওযু করতে গেল। এই বাসায় কি জায়নামাজ আছে? কে জানে? খুজে দেখতে হবে। মনে হয় না থাকবে।

সে বাথরুমে গিয়ে বেশ খানিকটা অবাক হলো। বাসার ড্রয়িং রুমটা দেখে মনে হয়েছিলো এখানে কেউ থাকে না। অফিসের মালামাল রাখা হয়৷ কিন্তু বাথরুমে ঢুকে এই ধারণা বদলে যাবে যে কারো।

বাথরুমে কেউ একজন সানসিল্ক শ্যাম্পু কিনে এনে রেখেছে৷ সঙ্গে ম্যাচিং সানসিল্ক কন্ডিশনার৷ সাবান অর্ধ ব্যবহৃত। একটা ফেস ওয়াশ ও আছে। ব্যাপার টা অদ্ভুত লাগলো তার। এইসব জিনিস কোন বাড়ির বাথরুমে থাকবে৷ এমন অফিস স্টোর রুমে কেন এগুলো সাজানো? ব্যাপার টা মাথায় ঢুকলো না সেজুতির। সে সাবান ব্যবহার করলো না। গোসল সেরে পরনের সালোয়ার কামিজ টাই পড়ে বের হলো।

কারো ব্যবহৃত জিনিস ইউস করতে পছন্দ করে না সে। ওযু করে বের হতেই মুহিব কাত হয়ে তাকে দেখে নিলো।

মুহিবের ঘুম খুবই পাতলা তা সেজুতি এই দুই রাত তার সঙ্গে থেকেই বুঝে গেছে। সামান্য বাতাস বয়ে যাওয়ার শব্দেও মুহিব জেগে উঠে।

মুহিব তাকে প্রশ্ন করে, এতো সকালে উঠেছো কেন?

— নামাজ পড়ব৷ এই বাসায় কোন জায়নামাজ আছে?

মুহিব সেজুতির কথা শুনে অবাক হলো না কিন্তু মনে মনে বলে উঠে, নরকে কেউ ইবাদত করে না।

উত্তরে বলে উঠে, পাশের রুমে বড় বড় কাগজ আছে। ওগুলোর মধ্যে একটা নিয়ে কাজে লাগাতে পারো৷

সেজুতি হাটা ধরলো। মুহিব পিছু ডাকলো।কিন্তু সে সায় দিলো না৷

এতে কিছুটা হতাশ হয় মুহিব। ঘুম ভেঙে যাওয়ায় সে আর ঘুমানোর চেষ্টা করলোনা। উঠে বসে সে। এরপর সিগারেট ধরায়। প্রচুন্ড মাথা ব্যথা করছে তার৷ এক কাপ কড়া করে চা খেলে ভালো হত। রান্নাঘরে চা-পাতা আছে কি?থাকলে সেজুতি কে এক কাপ চা বানাতে বলা যায়।

সে সিগারেট শেষ করে আবারো শুয়ে পড়ে। সেজুতি আসে না কেন? এতোক্ষনে তো নামাজ শেষ হওয়ার কথা!!

মুহিব আরো দশ মিনিট অপেক্ষা করে নিজেই উঠে পাশের রুমে গেল।

পাশের রুমেও সুন্দর করে বেডরুম সাজানো। দামী বিছানা, দামী বেডশীট। এটাচ বারান্দা ও বাথরুম৷

সেজুতি বারান্দার রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে হীম শিতল হাওয়া বয়ে যায় মুহিবের গা বেয়ে৷

সে দ্রুত বারান্দায় গিয়ে খুকখুক করে কেশে নিজের উপস্থিতি জানান দিলো। কিন্তু সেজুতির ভাবান্তর হলো না। সে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷

মুহিব বেশ অবাক হলো। সেজুতি চঞ্চল টাইপের মেয়ে। এক জায়গায় বেশীক্ষন থাকে না। আজ কি হলো তার?
সে পেছন থেকে সেজুতির চুল গুলো আস্তে আস্তে সরিয়ে ডান কাধে রাখতে ব্যস্ত হয়ে রিনরিনে আওয়াজে তাকে ডেকে উঠে, সেজুতি?

সেজুতি কেপে উঠে মুহিবের স্পর্শ পেয়ে।

— কি হয়েছে তোমার?

সেজুতি নিশ্চুপ রইল। মুহিব পেছনে থেকে জড়িয়ে ধরে আদুরে গলায় বলে, মন খারাপ?

সে কাঠ গলায় উত্তর দেয়, নাহ।

— তাহলে কি হয়েছে? বল আমাকে!

সেজুতি তার দিকে ঘুরে দাঁড়ায়। এতে তাদের মধ্যবর্তী দূরত্ব কমে আসে।

সেজুতি বলে উঠে, ভালোবাসা শব্দটার মধ্যে কি আলো প্রভাব ফেলে? যেমনটা গাছের জন্য আলো প্রভাব ফেলে?

মুহিব তার কথার আগা-মাথা বুঝতে না পেরে বলে উঠে, বুঝলাম না?

সেজুতি কিছুটা দূরে সরে গিয়ে বলে উঠে, না বোঝার মতোন কিছুই বলি নি তো। আমার মনে হয় ভালোবাসা শব্দের মধ্যে আলো প্রভাব ফেলে। দিনের আলোতে ভালোবাসি বলতে মনের বল দরকার এবং দিনের আলোতে এই শব্দটা অত্যন্ত পবিত্র হয় কিন্তু রাতের আধারে ভালোবাসি শব্দটা বোধহয় সবচেয়ে কুৎসিত।

এরপর সরাসরি মুহিবের দিকে তাকিয়ে বলে, এবং যে কাউকে এই কথাটা রাতে বাতি নিভিয়ে বলা যায় তাই না?

মুহিব সেজুতির কথায় ঘাবড়ে যায়। কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না৷

সেজুতির চোখে অশ্রু টলমল করছে সে।

সে ক্লান্ত গলায় বলে উঠে, জুই কে হয় তোমার?

জুইয়ের নাম সেজুতির মুখে শুনে ভুত দেখার মতো চমকালো মুহিব। হুট করে গা ঠান্ডা হতে লাগলো। হাত বরফের মতো জমে গেল।

— জুইয়ের সঙ্গে কি অন্যায় করেছো?

মুহিব শুকনা ঢোক গিলে বলে, অন্যায়? কি অন্যায় করব? আর জুই! ওর কথা কিভাবে জানলে তুমি?

— কালকে রাতে তুমিই ওনার প্রসঙ্গে কথা বলেছো। কে হয় জুই তোমার? গার্লফ্রেন্ড?

মুহিব শুকনো হেসে বলে, ক্লাস মেট। আমার কাছে সেমিস্টার ফি ধার চেয়েছিলো। আমি দেইনি। ভেবেছিলাম এমনি ধার চাচ্ছে। পরে জানতে পারি মেয়েটা আসলেই অভাবী। আমি টাকা না দেওয়ায় ও ভার্সিটি থেকে ড্রপ আউট করেছে৷ এজন্য আই ফিল গিল্ড।

— তুমি বুঝি চ্যারেটি খুলে রেখেছো? সবার পড়ার খরচ বুঝি তোমার মাথার চিন্তা?

— তুমি কি আমার কথা বিশ্বাস করছো না? (মুহিব)

— করেছি।

আচমকা মুহিব বলে উঠে, সেজুতি! দিন হোক রাত হোক অমাবস্যা হোক, পূর্নিমা হোক বা যেটাই হোক না কেন! ভালোবাসায় কোন কিছুর প্রভাব পড়ে না। ভালোবাসা নদী না যেন শুষ্কতার জন্য শুকিয়ে যাবে। ভালোবাসা হলো মহাসমুদ্র! চিরকাল ধরে রয়ে যায়! নিঃশেষ হয় না।

সেজুতি বলে উঠে, আমি বাসায় যাব।

— হ্যা। চল।

— তুমি বুঝনি আমি কি বলেছি। আমি আমার বাসায় চলে যাব৷

মুহিব আকাশ থেকে পড়লো যেন। সে বলে উঠে, এইসব কি বলছো? চলে যাবে মানে কি?

— তোমার সাথে সংসার করা আমার পক্ষে সম্ভব না মুহিব। তুমি নিম্ন মানের মানসিকতার পুরুষ। কালকে রাতে আমি বারং করা সত্ত্বেও তুমি আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমার কাছে এসেছিলে। এমন কা পুরুষের সঙ্গে আমি এক ঘরে থাকতে পারব না৷

সেজুতি শীতল কন্ঠে কথা গুলো বলল যার ফলে মুহিবের গায়ের রক্তও ঠান্ডা হয়ে এলো।

সেজুতি বলে উঠে, আমি তোমাকে ডিভোর্স দিব।

কথাটা বলা মাত্র মুহিব তার গালে সজোরে চড় বসালো। সঙ্গে সঙ্গে সেজুতি ছিটকে পড়ে গেল এবং রেলিঙে তার ঠোঁটের কোণা লেগে, ঠোঁট কেটে রক্ত বের হলো।

সে ঘৃণা ভরা চোখে মুহিবকে দেখতে লাগে।মুহিব রাগে ফুসছে৷

চলবে।

(প্রচুর ক্লান্ত ছিলাম আজকে এজন্য পর্বটা সুন্দর হয় নি। রিচেক করিনি ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।)
চলবে।

[ আসসালামু আলাইকুম। গল্পটা বেশী পর্বের হবে না। কাজেই ঝটপট করে বলুন তো কেমন লাগছে গল্পটা? খুব একটা ভালো না লাগলে অতি দ্রুত শেষ করে দিব। ধন্যবাদ। শুভকামনা ও দোয়া রইল সবার জন্য । ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here