#স্বামী(সিজন-২)❤️
#পর্ব -১৫
#সেলিনা_আক্তার_শাহারা
_________________________
“- হয়তো সেতুকে চির তরে ভুলতে পারবো না,তবে কথায় আছে সময় নাকি সব জখমের মলম।হয়তো সময়ের সাথে সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে।
তিতিলকে ভালোবাসি বা বাসবো কবে জানিনা।তবে স্ত্রী সে এখন। ওর উপর যা দায়িত্ব্য আছে সব পালন করব,আদর্শ স্বামীর মতই।
সেতু আধুনিকতার ছোয়ায় লালিত হয়েছে।চেহারায়/ পেশায় কোন অংশে কম নয়।আমার চাইছে বেষ্ট থেকে বেষ্ট স্বামী সে নিসন্দেহে পেয়ে যাবে।
সেতু কে সব বলে ক্ষমা চেয়ে নেবো।
আমি তো তিতিলের সাথে কালেমা পরে ওর বাধনে আটকা।আর সেই আটকা ভাবেই থাকতে চাই।মুক্ত হয়ে সেতুকে নিয়ে ঘর আমার দ্বারা হবে না।
( সেতুর কাছে জেতে জেতে ভাবছে রিদয়।কোথা থেকে কথা শুরু করব..কি বলে বুঝাবো এই সব।)
“- তিতিলকে তার স্ত্রীর মর্জাদা দিয়ে আমার ঘরে তুলবো।
এটাই সঠিক পথ সবাই সুখে থাকার। আর তিতিলের মত বৌ পাওয়া ভাগ্যের কথা।কত শান্ত আর আজ্ঞাকারি সুশিল মেয়ে..ওর মত মেয়ে কে কাঁদিয়ে আমি কোন দিন সুখি হব না তা গ্যারান্টি।
“- চুপি চুপি তিতিলের একটা ছবি রিদয় তুলেছে। হা করে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলো ওর । রিদয় দেখে হেসে হেসে একাকার।তখনই তুলা।কত মাসুম লাগছিলো।
সেই ছবিটা বের করে রিদয় দেখে নিলে হালকা হাসি সহ। বেশ জেদি মেয়েটা।
—- ভাবনার পালা শেষ করে এবার, করে দেখানোর পালা।সেতুর ফ্ল্যাটের সামনে রিদয়।
দির্ঘশ্বাস নিয়ে উতলা মন কে শান্ত করে সেতুর দরজায় কড়া নেড়েছে।
” ওমা দরজা তো খুলা..
সেকি? সেতুতো জীবনেও দরজা লক ছারা রাখেনা।
কেন দরজা খুলা? আমি আসব বলে? এসে তো ওকে ডাকই দিতাম। এত রাতে দরজা খুলা রাখার কি আছে।কান্ড জ্ঞান এত লোভ পেয়েছে!!!
-দরজা ধাক্কা দিতেই রিদয়ের চোখ কপালে উঠেগেছে..
এসবকি দেখছি আমি……৷৷
————–
“তরা স্বামী স্ত্রী মিলে কত মিথ্যা আমায় বলবি বলতো… আর কত রকমের নাটক দেখাবি।
— আরিফ রহমানের পা টিপছে আর তার শাষন শুনছে তিতিল।
বাবা কি মিথ্যা বললাম।আর নাটকই বা কখন দেখলেন।
” এই যে সব ঠিক কিছু হয়নি এমন ভাবে চলছিস।
তিতিল ওর শশুরের কথার জবাব কি দিবে?
বাবা আসলে..
-চুপ কর আসলে মানে মানে করিস না।তুই সারা দিন রান্না ঘরে নয়তো জুই ফুলের পিছু।
একটি বার স্বামী কখন এলো গেলো খুজ রাখছিস??
এই যে এত রাত হল সে বললো দেরি হবে বাস তুই শব্দহীন হয়ে ফোনটা রেখে দিলি।
একটিবার ইচ্ছা হচ্ছে না জিজ্ঞাসা করি ঠিক কখন ফিরবে? বা কিছু খেয়েছে কিনা??
“তিতিল চুপ করে বসে আরিফ রহমানের পা টিপাতেই ব্যাস্ত।
-ছার ছার আমার পা টিপতে হবে না।পারলে গলাটা টিপে দে।একেবারে মরে যাই তখন তর যা খুশি তাই করতে পারবি।না দেখার বা বলার রবে কে!
“-বাবা আমি কি করতে পারি।উনার যেভাবে ভালো লাগে সেই ভাবেই চলুক না।
— কপাল মন্দ আমার তর শশুর হয়েছি বলে পারছিনা।তবে তর শাশুরি থাকলে ঠিকই সব বুঝিয়ে বলতো।
যা যা তর ঘরে যা। দরকার নেই তর সেবার।
” তিতিল বুঝতে পারছে বাবা রেগে কথা বললেও তার ভালোর জন্যেই বলছে।
বিকেল অবদি তো দিন ভালোই ছিলো, হঠাৎ করেই আকাশে বিদুৎ চমৎকানো শুরু হয়েছে।
ঝড় আসতে চলছে একটা বিশাল বড় ঝর।
——–
“- এসব কি??
সেতু আজ সেজেছে ঠিক যেমন রিদয় পছন্দ করে।
শাড়ি পরেছে কপালে কালো টিপ।চুল গুলো ছেরে এসেছে।
বাহ বেশ লাগছে।হয়তো রিদয় নিজেকে সেতুর কাছে হারিয়ে নিতো।তবে এখন তা সম্ভব নয়।কারন সে বিবাহিত।আর আবেকে সে ভাসতে চায় না।
ঘার টা ঘুরিয়ে চারিপাশটা দেখে নিয়েছে রিদয়।লাইট অফ মোমবাতিতে ঘর আলোকিত করেছে।
বেশ রোমান্টিক ভাবেই বিছানা থেকে শুরু করে টেবিলে রাখা খাবার!!
সেতু রিদয়ের সাথে ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের ব্যাবস্থা করেছে।
– সেতু এ সব এর মানে কি??
” কেন রিদয় মানে বুঝোনা তুমি!! তোমার সাথে স্পেশাল টাইম কাটাবো তাই।
– কি যা তা বকছ?আমি তো এসব সময় কাটাতে আসিনি।
–সেতু দৌড়ে এসে রিদয়ের পা জরিয়ে ধরেছে।রিদয় আমায় ক্ষমা করে দাও আসলে তোমার ঘরনি হব বলে এতটা মাথায় ভর করেছে যে সব গুলিয়ে ফেলেছিলাম।
আমায় মাফ করে দাও রিদয় মাফ করে দাও।
“- আহা সেতু পা ছারো।
-না আগে বলো মাফ করেছো!!
” হ্যা মাফ করেছি। আর ঐ বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই না।তোমায় আমি কিছু বলতে চাই প্লিজ উঠো।
—সোফায় দুজনেই পাশাপাশি বসেছে।
রিদয় আমায় কেমন লাগছে বললে না তো? আর আজ এত সাজলাম কেন জানতেও চাইলে না?
“সত্যি রিদয়ের এসব জানার আগ্রহ করছে না।অন্য কথায় আসল কথাটা না গুলিয়ে যায়।
–হ্যা সেতু বেশ ভালো লাগছে। আমার কথাটা শুনো না আগে। আমাদের জীবনের জন্যে বেশ দরকারি।
বেশ বিরক্ত ভাবে সেতুকে ট্রিট করছে রিদয়।
” আমি জানতাম রিদয় তুমি ভুলে গেছো। রিদয় যতই তিক্ত গলা, সেতুর ততোই আবেগি স্বর। আজকের দিনটা অন্তত মনে রাখতে!
—-আজ কি সেতু??
” যাক জিজ্ঞাসা তো করলে, আজকে আমাদের সম্পর্কের ৪ বছর পূর্ন হল। আর তা সেলিব্রেট করার জন্যেই তোমায় ডেকেছি।সব বাদে নতুন শুরুর আশায়।
–কিহ!! ও হো। রিদয় মাথা ধরে বসে পরেছে।কি করে এই সরল মনে আঘাত দিই।সেতুর কি দুষ।আমিই তো ওর ভালোবাসার মূল্য দিতে পারলাম না।
সেতু আসলে…
যাই একটু সাহস করে রিদয় কথা বলতে চাইছে তবুও সেতু নানান কথায় রিদয়কে আটকে দিচ্ছে.।
” প্লিজ রিদয় তোমায় ফোন দিয়ে পাইনা , থানায় গিয়ে পাইনা।বাড়িতে বার বার যাওয়া যায় না।
আমায় কেন এত দূরে রাখো।
আজকে আধা ঘন্টা আমার সাথে বসো না।
ঐ দেখো তোমার জন্যে আমি নিজ হাতে রান্না করেছি।এসো এসো না আজ দুজনে বসে খাবো।
রিদয়ের হাত ধরে সেতু ডায়নিং টেবিলের সামনে এনেছে।
সেতু আজ কেমন পাগল পাগল ভাব করছে।
কেন এমন করছে।কেন আমার জন্যে আরো মুসকিল করছে সত্যিটা বলা।
সেতু সেতু শুনো আজ না,আজকে আমি তোমায় কিছু বলতে চাই।
—হুসসসসস…
প্লিজ রিদয় আজকে না,এসো আগে ডিনার করেনিই তার পর না হয় সব শুনবো।প্লিজ রিদয় প্লিজ না করো না।
“রিদয় আর পারল না সেতুকে বারন করতে।কি করে বারন করবে,এতো তার ভালোবাসাই।সব জানার পর তো কষ্ট পাবেই।তখন তো আমায় কোন আবদার করবে না।এই টা না হয় শেষ আবদার হিসাবে পালন করলাম।খাবারই তো খেতে বলছে।বিয়ে করতে তো নয়।
— রিদয় হালকা হাসি দিয়ে সেতুর মন রাখতে খেতে বসতে রাজি হয়েছে।
চেয়ার টা ধরে টান দিতেই সেতু বাধা দিলো।আরেহ কি করছ??
-ওমা তুমিই না বললে খেতে??
” হ্যা তবে হাত তো ধুয়ে এসো।
-ওহহো হ্যা হ্যা।ওয়াস রুমে গিয়ে হাত মুখ ধোয়ায় ব্যাস্ত হয়ে পরেছে রিদয়।
আর এই সোজগ কাজে লাগিয়ে সেতু তার রুমে লাগানো গোপন ক্যামেরাটা আবার চেক করে নিলো। খাবারে তো একবার মেডিসিন মিশিয়েছে।তবে আরেকটু মিশিয়ে দিই ভেবে আরেকটু মাত্রাটা বাড়িয়ে দিলো।
ভাবছেন কিসের মেডিসিন?? ( নেশা +*উক্তেজনা বারানোর * নেশায় সব হুস যাতে না থাকে সেই কারনে এটা মিক্স করেছে।আর উক্তেজনার জন্যে তো দিলোই।
পানি থেকে শুরু করে প্রতিটা খাবারে সেতু আর তার পার্টনার রা এই মেডিসিন দিয়েছে। কারন জানা নেই কোনটা রিদয় খাবে কোনটা না।
আর খাবার না খেলেও আপত্তি নেই। পানিটা তো খাবেই।বাস তাতেই চলবে…
– হাত মুখ টা মুছতে মুছতে চেয়ারে বসেছে রিদয়।
সে তো সেতুর এই চাল থেকে অজানাই রইল।এখান থেকে যাই সে মুখে তুলবে সেটাই জীবনের বিষ হবে শ্রেষ্ট বিষ। তার গলা দিয়ে নামলেই হল।
সেতু চাইছে রিদয়কে বস করে নিজের মায়ার জালে ফাসাতে।রিদয়কে একবার কাছে পেয়ে গেলে ওর কাছে কোন রাস্তাই খুলা থাকবে না বিয়ে ছারা।
আর না করলে ওর জীবন ধ্বংস করার মত প্রমান তো আছেই।
প্রথম তো তিতিল সব জেনে ওকে ছেরে চলে যাবে তার পর রিদয়কে নরক দর্শন করাতে সময় লাগবে না।
এদিকে শত চিন্তা রিদয়ের মাথায়, খাবার তো মুখে তুলেছে ঠিক গিলতে কষ্ট হচ্ছে।একটু পর সেতু সব জানলে কি হবে।কি করে শান্ত করবে, কোন কথায় মন ভুলাবে তার।
“- কি হল রিদয় খাচ্ছোনা কেন?
— ভাবনা থেকে বাহির হয়ে রিদয় চিকেন ফ্রাইয়ের একটা পিস খেয়ে নিলো।।
পানি টুকু খেয়েই তার খাওয়া শেষ করেছে।
সেতুর এই বিষয় নিয়ে মুটেও চিন্তা নেই সে খেলো নাকি না খেয়ে মরলো।তবে কাজটা যা করার জন্য জোর দিয়েছে তা হলেই হল।
— রিদয় চেয়ার ছারতেই, সেতু তার হাত ধরে নিয়েছে আরে আরে উঠছো কেন??
এত কষ্ট করে পায়েস টা করলাম একটিবার মুখে দিয়ে বলোনা কেমন হয়েছে।
-না সেতু আর কিছুই খাবোনা প্লিজ জোর করোনা।
” না বললেই হবে না রিদয় একটু তো মুখে দিতেই হবে।
সেতু পায়েসটা নিয়ে রিদয়ের কোলে বসে পরেছে।নাও হা করো হা হা…
মুখের সামনে এনে ঠোটে তো ভরিয়েই দিয়েছে।না মুখে তুললে ছারবে না। একটু মুখ দিয়ে রিদয় সেতুকে নামতে বলছে।
আরেহ এমন ছট ছট করছ কেন? পাগল হয়ে গেলে নাকি।
“- দেখো সেতু আমার ভালো লাগছে না।মাথাটা কেমন ভার ভার লাগছে।
আহারে বেচারা লাগবেই তো নেশা ধরাতেই তো এত তুর জোর দিয়ে তোমায় আনলাম।
সেতু উঠতেই রিদয় কেমন দোলছে।ঠিক মত দাড়াতে পারছে না। চোখে সব ঝাপসা দেখছে।
সেতু বুঝতে পারছে রিদয়কে এত মাত্রাধিক নেশা করিয়েছে,কাজ না করে উপায় আছে নাকি???
“- মাথায় হাত দিয়ে চারিদিকে দেখছে রিদয় কিসব ঘুরছে? নাকি মাথা ঘুরছে।
আর দাড়াতে পারছে না রিদয়। এবার লুটিয়ে পরবে হয়তো।
রিদয়ের হাল বুঝতে পেরে সেতু তাকে ধরে বিছানায় নিয়ে শুইয়ে দিয়েছে।
” আর রিদয় বির বির করেই চলছে ছারো সেতু আমি বাড়ি যাবো, আমায় জেতে দাও।
আধা হুস তো সে আগেই হারিয়ে ফেলেছে।এখন পুরো পুরি সেতুর দখলে রিদয়।
যা খুশি তাই করতে পারবে ভাবতেই সেতুর মুখ উজ্জল হাসিতে ফুটে উঠেছে।
—কি হয়েছে রিদয়।মাথা কেমন করছে?? কথা বলতে বলতে সেতু রিদয়ের পাশেই আধ শোয়া হয়ে বসেছে।
রিদয়ের শার্টের বোতাম গুলো ধিরে ধিরে খুলার চেষ্টা করছে।
এতটা হুস হারায়নি যে বুঝবে না কি হচ্ছে।
সেতুর হাত যতবার ওর শার্টের বোতামে যাচ্ছে ততোবারই রিদয় সেতুর হাত ছিটকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।
—–আরেহ বাহ এত তেজ??
কত ক্ষন এই তেজ থাকে তা তো দেখি মি.রিদয়।আজ তো ধরা দিতেই হবে।
সেতু রিদয়কে জরিয়ে ধরে নিজের দিকে আকর্ষণ করার চেষ্টায়.. আর রিদয়ের মুখে একটাই কথা– মাতালের মত করছে আর বলছে–
আমি বাড়ি যাবো, আমায় জেতে দাও সেতু।
– কি হবে এখন???
#স্বামী(সিজন-২)❤️
#পর্ব-১৬
#সেলিনা_আক্তার_শাহারা
__________________________
“- বড্ড মন দিয়ে তিতিল রিদয়ের রুমটা গুছিয়েছে
খাট থেকে শুরু করে ঘরের প্রতিটা জিনিসের জায়গা উথাল পুথাল করেছে। তবে তার জানা নেই রিদয় রাগ করবে নাকি খুশি হবে।
– তিতিল তো জানেই না ঘর সাজানোর আগে তার স্বামীর ভালোবাসায় নিজেকে সাজানো প্রয়োজন।
তিতিলের হাল ছেরে দেয়াই না ওর কাল হয়।
———
“-সেতু রিদয়ের শার্ট টা খুলে নিয়েছে। রিদয় সেতুর সাথে জুরে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। হাত পা কেমন জেনো অকেজো হয়ে পরেছে সবই ঐ মেডিসিনের ধামাল হবে। রিদয় আরো পুরো হুস হারিয়ে ফেলেছে আর তার দ্বারা সম্ভব না সেতুর প্লেন ধেস্তে দেয়ার।
রিদয়কে ছেরে উঠে সেতু তার শাড়ির আঁচলটা ধরে নিজেই খুলে নিয়েছে। এবার রিদয় বাবু কোথায় তোমার তেজ।আজ তোমায় কেউ সেতুর চাল থেকে বের করতে পারবে না।
—*- সেতু দরজা খুল…ঠক ঠক করে বেডরুমের দরজায় আওয়াজ করছে সেতুর এক রুম পার্টনার। সেতু জলদি বাহিরে আয় সর্বাশ হয়ে গেলো তর।
” সেতুর তো ইচ্ছা করছে এই মেয়েটার গলা টিপে দেই, সব জেনেও এই মূহুর্ত্বে ডাকাটা দরকার?
—–শাড়িটা পেচিয়ে বাহিরে এসে মেজাজ দেখানোর আগেই মেজাজ ঠান্ডা।
কারন কথাই এমন শুনেছে।
“- কয়েকদিন আগে আমরা যে মন্ত্রীর গোপনে তার অকর্মের ভিডিও নিয়েছিলাম,সেই ফুটেজটা আজ টেলিকাস্ট করার কথা।তবে ফুটেজ টা কারো ডাটাই নেই।
—কথাটা শুনে সেতু হতভাগ।হায়রে তাহলে সেটা কোথায়??
আমিতো জিএম স্যারের কাছে পুরো ভিডিওটা পাঠিয়েছিলাম।উনি দেখেও ছিলেন।
“- না সেতু জিএম স্যার বড় খেপে আছে।কথা মত আজ এটা টেলিকাস্ট না হলে বিশাল গন্ডগল হবে।তুই জলদি চল স্যার বড় হাইপায় হয়ে রয়েছে।
-সেতু এবার রাগ না দেখিয়ে পারল না।সামান্য একটা ফুটেজের জন্য এত কিছু!! আমার পেন্ড্রাইভে সেটার একটা কপি আছে তুই ওটা নিয়ে দিয়ে দে।
জানিস তো আজ আমি এর চাইতে স্পেশাল কাজে ব্যাস্ত। রিদয়কে ইশারায় দেখিয়ে বুঝালো।
রিদয় এখনও শুয়ে রয়েছে একা উঠার তেমন শক্তি সন্চয় করতে পারছে না।
“- না রে এটা তো ঘরের মুরগী আজ না হয় কাল হালাল হবেই।তবে জিএম স্যারের সাথে আজ তুই দেখা না করলে তর ক্যারিয়ার থাকবে না সিউর।তোকে চাকরি থেকে হাত ধুতে হবে।
— মানে কি সামান্য একটা ভিডিওর জন্যে!!
আসলে তোকে দুই দিন ধরে ডেকে পাচ্ছে না।আজকেও তোকে আরেক ফিল্ডে জেতে ডেকেছে যাস নি সব মিলিয়ে তর নাম ডুবলো বলে…
“- এই মেয়ের কাছে সব শুনে সেতু বেশ চিন্তিত। রিদয়ের চক্করে ওর সপ্ন তার লক্ষ থেকে ধেস্তে গেলে হবে না।
কি করবে এখন।
সেতু তার বসকে ফোন দিয়েই চলছে।বস এতটা রেগে তার ফোন তো ধরলই না উল্টো কেটে দিলো।এটাতেই সেতু বুঝে গেলো অবস্থ্যা খারাপ।
দুদিন ধরে আমার পাত্তা নেই।আমায় তো আর মুখ দেখার জন্য বেতন দেয় না।
–আরে শুননা স্যার তো বেশ রাগে আছেন।এখন কি করব.?
” কিচ্ছুই করার নেই যদি রিদয় চাস তাহলে থাক আর যদি তর সপ্নে এগুতে চাস তাহলে রিদয়কে ছার আর জলদি চল নিচে ট্যাক্সি দার করিয়ে এসেছি।
সেতু রিদয়ের দিকে তাকিয়ে উওর দিলো ও হল আমার সপ্ন পূরনের সিরি।তবে সপ্ন না থাকলে সিরি দিয়ে কি করব।
একটু দারা আমি চেন্জ করে আসছি।
“সেতুর পার্টনার সেতুকে থামিয়ে দিয়ে বলে উঠলো তুই চলে গেলে এই আধা পাগলের কি হবে??শেষেনা একটা কেলেংক্কারি করে বসে।
— যা হবার হবে i don’t Care.. কিছু দূর নিয়ে রাস্তায় নামিয়ে দিবো।
” না সেতু এত মতলবি হলে হবে না।রিদয় যদি একা একা পথ চলে আর ওর কোন এক্সিডেন্ট হয়ে যায়!!
– দেখ তুই আমার ফ্রেন্ড না ওর! যা হবার হক ওকে রাস্তায় দার করিয়ে আমরা চলে যাবো।পরের কথা ভাবার সময় নেই এখন চল চল।
– নাহ সেতুর দয়া না হলেও এই মেয়েটার হচ্ছে।মেয়েটা রুহি এসেছিলো বড় সপ্ন নিয়েই।বেশ ভালোই মেয়েটা। তবে বলে না সংগ দুষে লোহা ভাসে।সেতুর সাথে জবে থেকে জুরেছে তবে থেকেই ওর মতই সার্থপরী মেয়ে হয়ে উঠেছে। তবে মায়া নামক বস্তুুটা সেতুর মত হারায়নি।এত টা মনষত্ব্যহীন হয়ে উঠেনি। যাই করছিলো সেতুর জন্যে।তবে এভাবে তার জীবন বিপদে ফেলতে নয়।
“-সেতু রেডি হতে চলে গেছে।এই সোজগ কাজে লাগিয়ে রুহি রিদয়ের থানার এক কন্ট্রেবলকে ফোন দিলো।
নাম সালাউদ্দীন- চাকরির শেষ প্রান্তে চলে এসেছে।এসময় আর কাউকে ডাকা যাবেনা।উনিই বিশস্ত্য রিদয়ের। রিদয়কে বেশ স্নেহ করেন। এখন বাড়িতে জানালে বহু কান্ড হবে।তাই এটাই বেষ্ট উপায়।
সেতুকে বলার পর সেও তেমন রিয়েক্ট করল না।
তাতে ভালোই হল রুহির।
-সালাউদ্দিনকে সত্যিটা বলা হল না,বললেতো সর্বনাশই হবে।শুধু বলা হয়েছে সেতুর ফ্ল্যাটে রিদয় এসেছিলো আর সে অসুস্থতা বুধ করছে ওকে ওর বাড়ি পৌছে দিন।
————–
“-
ঘন্টার আগেই সালাউদ্দিন হাজির । ফ্ল্যাট খালি তা জানে তিনি।ঐ মেয়েটা বলেছে ওরা বাহিরে আছে আমি জেনো রিদয়কে বাড়ি পৌছে দিই।
তবে স্যার তো বেশ ভালো সুস্থ শরিল নিয়ে থানা থেকে বার হয়েছিলো।এখানেই বা এত রাতে কেন এলো।তাও খালি ফ্ল্যাটে আর এসেই অসুস্থ হয়ে পরলো.।
সালাউদ্দিন কথা মতই রিদয়কে বাড়িতে পৌছে দেয়ার ব্যাবস্থা করছে।তবে ওর সাথে একটা বাজে গন্ধ বের হচ্ছে।মদ??
না স্যার মদ খাবেতো দূর গন্ধটাও শুকতে পারে না।
মদ না খেলে এমন নেশাখুর দের মত করছেই বা কেন?
(উনিতো জানেই না রিদয় কিছুই খায়নি-রিদয়তো শুধু খাবার খেয়েছে’ আর খাবারে নেশার ট্যাবলেট তো মিশিয়েছে অন্যকেউ।
থানার কাউকে জানতে দেয়া চলবে না।স্যারের উপর আঙুল উঠতে পারে।তাই ব্যাপারটা চেপে গিয়ে বাড়ি পৌছে দেয়াই উওম কাজ।
আর স্যারকে কোথা থেকে আনলাম তাও জানাবো না বাড়িতে।কারন সেতু স্যারের কে সালাউদ্দিন জানে।
আর স্যার বিয়ে করেছে এটাও জানে। সমস্যা হতে পারে।স্যারই সুস্থ হয়ে সব সামলে নেবে।
—-”
-” আরিফ রহমান বেশ গভির একটা ঘুম দিয়েছে।ঘুমের ঔষধ না খেলে উনার ঘুমই হয় না।
তাই তা খেয়েই শুয়েছে।
তিতিল এখনও জেগে রিদয়ের অপেক্ষা করছে রাত তো বেশ হল।এখনও ফিরল না। আর তিতিল নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পরলে গেটটা খুলে দেবে কে? আজ বাবাও ঘুমিয়ে গেছেন।
তাই জেগে জেগে রিদয়ের রুমের সামনে গালে হাত দিয়ে বসে পরেছে।আর নানান চিন্তায় হারিয়ে গেছে।
“-কিছু শব্দ পাচ্ছে সে বাহিরে।উঠে দাড়াতেই তিতিল রিদয়কে দেখতে পেলো।বারান্দার গ্রিল দিয়ে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে রিদয় কেমন দুলছে নিজের ভরটা আরেকটা মানুষের উপর ছেরে হাটছে।
উনার কি হয়েছে? ভেবেই তিতিল শিউরে উঠলো।
দৌড়ে এসে গেটটা খুলে দিলো।
উনি এমন করছে কেন? কি হয়েছে উনার??
– সালাউদ্দিন রিদয়কে সামাল দিতে দিতে জানালো রিদয়ের হাল। স্যার হয়তো নেশা করেছে,কখনো স্যারকে নেশা করতে দেখিনি। উনাকে আনতে আমার জান শেষ।সামাল তে পারছিনা একটু ধরুন ম্যাডাম।
তিতিলও গিয়ে সালাউদ্দিনের সাথে সাথে রিদয়কে ধরে তার ঘরটায় নিয়ে এসেছে।
” সালাউদ্দিন রিদয়ের খেয়াল রাখতে বলে বিদায় জানিয়েছে।
এই মূহুর্ত্বে বাবাকে ডাকা যাবেনা উনাকে এই অবস্থায় দেখলে হয়তো উনার শরিল আরো খারাপ হতে পারে।
এত ভালো মানুষ উনি নেশা করার তো প্রশ্নই উঠেনা।
কেন করল এমনটা?? আমার জন্যে? আমার কাছে বার বার ছোট হয় বলে মনে কষ্ট পেয়েছে? নাকি উনি সেতুকে হারানোর ভয়ে খেয়েছে।সেতু সব জানলে না উনাকে ছেরে চলে যায় সেই ভয়!!!
“রিদয় বির বির করে কিছু বলছে।কথা স্পষ্ট নয়।তবে কিছু একটা বলছে তা বুঝতে তিতিল রিদয়ের মুখের সামনে কানটা নিয়ে এলো।
– রিদয় এখনও বলে যাচ্ছে আমি বাড়ি যাবো আমায় বাড়ি জেতে দাও।
“বাড়ি এসেও কোন বাড়ি জেতে চাইছে? মদ গিলেছে এখন ভুলভাল বকা স্বাভাবিক
তিতিলের বাবাও তো মদ খেয়ে কত রং এর কথাই বলে।
“-রিদয় পাগলের মত কত কথাই বলছে।পায়ের জুতো জামা সবই পাল্টানো দরকার।এই বেল্ট পরে ঘুমাতে পারবে না জুতো আর বেল্টা তো খুলেই দিতে পারি।তবে জামা পাল্টানো অসম্ভব।
জুতো বেল্ট খুলে তিতিল রিদয়কে আরেকটা বালিশ মাথার নিচে দিয়ে নিজের রুমে জেতে চাইলো।
“- রিদয় এদিকে তিতিলের শাড়ির আঁচল টা শক্ত করে ধরেছে।তিতিল বেশ ভয় পেয়েছিলো পিছন টান অনুভব করে।
ভয় ভয় নিয়ে -শাড়ির আচল টা ছুটাতে গিয়ে রিদয়ের বাহুডুরে
আটকা পরেছে তিতিল।
” ভয় ভয় কন্ঠস্বর ঘেমে একাকার তিতিল।কোন পুরুষের এতটা কাছে তার আসা হয়নি।এ এক অন্য রকম অনুভুতি।তবে সমালতে হবে।উনিতো মাতাল তাই।তবে আমিতো হুসে আছি।উনি আমায় ভালোবাসে না। তাই এত আশা বাধা ঠিক নয়।অন্যের ভালোবাসার বুকে আমার ঠাই চাই না।
ছা ছারুন না, কি করছেন???
ছারার কথায় রিদয় আরো তিতিলকে শক্ত করে চেপে ধরেছে।
নিজের শ্বাস এখন তিতিলের গায়ে পরছে।তিতিল ছট ফট করছে পিন্জিরায় থাকা পাখির মত।তবে এই খাঁচাটা বড্ড শক্ত এখান থেকে ফুরুত হওয়া বেশ মুসকিল কাজ।
—- প্লিজ ছারুন আমায় কি অসভ্যতামি হচ্ছে।এতটা নিচু হবেন না প্লিজ।
এবার শাষনি গলায় রিদয়ের তেজ বেরে গেলো। তিতিলের কোমর জরিয়ে ধরে পুরো পুরি নিজের উপরে নিয়ে এলো রিদয়।মাতাল মাতাল চোখে তিতিলকে বেশ কাছ থেকে দেখছে
ঠোটে মিষ্টি হাসি টেনে তিতিলের কপালে চুমু একেছে রিদয়।
তিতিল চোখ বন্ধ করে নিয়েছে।এই বুঝি স্বামীর ভালেবাসার ছোয়া।কি জানি কপালে তো জুটলো না। তাই সেই অনুভূতিটা জানা নেই।
তিতিলের চোখ বন্ধ ওর লজ্জা মাখা মুখের দিকে রিদয় কেমন তাকিয়েই রয়েছে।নিভু নিভু চোখে কেমন দেখেই যাচ্ছে।মনে বেশ অন্য রকম ইচ্ছা জাগছে।তবে এটা ভুল না ঠিক জানা নেই।
“-কোন কথা না বলে তিতিলকে উপর থেকে এনে পাশে শুইয়ে দিয়েছে। নিজের দুইহাত দিয়ে তিতিলের দুই হাত চেপে ধরে ওর বুকের উপরে বাসা বেঁধেছে রিদয় ।
দুইহাতে আটক করে রেখেছে যাতে পালাতে না পারে।
— জেতে দিন প্লিজ আপনি হুসে নেই…
তবে তিতিলকে ছেরে দিবেকি রিদয়??? সে তো তিতিলের এই ঠোটের দিকে মাতাল হয়ে চেয়ে রয়েছে।ওর গরম শ্বাসে আরো মাতাল করে তুলছে রিদয়কে।
“-(