হৃদমাঝারে তুমি পর্ব -০৭+৮

#হৃদ_মাঝারে_তুমি
#পর্ব_০৭+৮
#Written_by_Mehebin_Nira (ছদ্মনামী)

নিরার অশ্রুসিক্ত নয়নে ধরা গলায় বলা কথাটা তীরের মতো বিঁধছে আদ্রাজের বুকে! যার দরুন সে থমকে যেতে বাধ্য হয়েছে!

রাতুলের ফোনে টুং করে শব্দ হয়। পকেট থেকে ফোন টা বের করে দেখলো আদ্রাজের মেসেজ। মেসেজ টা চোখের পলকে ঝটপট পড়ে নেয়। তার মানে তার ধারণা একদম ঠিক ছিলো! নিরা আদ্রাজের সাথেই আছে। যাক বাঁচা গেলো! এখন এবার আশা কে এই কথা টা জানিয়ে দিতে পারলেই হয়! ঘটা করে কয়েক টা কথা ও শুনিয়ে দিতে হবে। বলতে হবে, ‘আমার কথায় ভরসা করতে শেখো। বলেছিলাম না নিরা তোমার গুনধর ভাইয়ের সাথেই আছে! বিশ্বাস করলে না তো দেখো তবে এই মেসেজ টা! এই রাতুল ইনডিরেক্টলি আন্দাজ করে যা বলে তাই ঠিক হয় বুঝলে?’

আশা হাঁটতে হাঁটতে ক্রমশ ছাঁদ থেকে নিচের দিকে নামার জন্য ক্রমাগত অগ্রসর হচ্ছে। এমন সময়ে নিচ থেকে কেউ তড়িৎ গতিতে এগিয়ে আসলো তার দিকে। কিছু বুঝে উঠার আগেই জোড়েসোড়ে এক ধাক্কা খাওয়ার ফলে নিচে পড়ে যায় আশা। আরেক জন পড়তে গিয়েও সামলে নেয় নিজেকে! সিঁড়িতে আচমকা পড়ে যাওয়ায় কোমড়ে ভালোই ব্যথা পেয়েছে আশা। ফলস্বরূপ সে ব্যথায় কুঁকড়ে ওঠে। ঘুমে ঢুলুঢুলু চোখ নিয়ে আস্তে আস্তে নিচে নামছিলো হঠাৎ করে কেউ চলে আসা টা খেয়াল করতে পারে নি আশা। এক রকম চটে যায় সে। চটে গিয়ে চেঁচিয়ে বলল,

‘চোখে দেখতে পান না নাকি অন্ধের মতো হাঁটাচলা করতে বেশি সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন কোনটা?’

যার সাথে আশার ধাক্কা লাগলো সে আর কেউ নয় যাইফ। সে ফোনের দিকে তাকিয়ে এক প্রকার দৌড়ে ছাঁদে উঠছিলো অপ্রত্যাশিত ভাবে কারো সাথে ধাক্কা লাগায় সে নিজেও টাল সামলাতে পারলো না। আশার কথা শুনে বলল,

‘এক্সুলি আ’ম সো সরি! খেয়াল করি নি আমি আপনাকে তাই..!’

‘খেয়াল করবেন কি করে চোখ তো আর সাথে নিয়ে হাঁটেন না! চোখ তো সাজিয়ে রেখে এসেছেন বাসার আলমারি তে! তা নাহলে তো জলজ্যান্ত একটা মানুষ কে অবশ্যই দেখার কথা তাই না?’ [রাগি কন্ঠস্বর]

যাইফ কথাটা শুনে বিন্দুমাত্র অপমান বোধ করলো। মুখ টা মলিন আকার ধারণ করে বলল,

‘আই এম এক্সট্রিমলি ভেরি সরি!’

বার বার সরি বলায় মেজাজ আরো বিগড়ে যায় আশার।
‘আপনার সরি শরবতের সাথে গুলে নিজেই খেয়ে নিন। যত্তসব!’

‘রাগ করছেন কেন? বললাম তো সরি!’

‘এগেইন সরি?’

‘আ-আপনার কি কোথাও লেগেছে?’

‘লাগলেই বা কি করবেন?’

‘দেখি কিছু তো একটা করতে পারবো!’

‘নো নিড। জাস্ট নেক্সট টাইম প্লিজ সামনের দিকে তাকিয়ে হাঁটবেন। নয়তো আমার পরিবর্তে অন্য কেউ হলে চোখ খুলে হাতে ধরিয়ে দিবে ইডিয়েট!’

‘আরে….

আশা কথা টা বলে দ্রুত উঠতে নিবে আবার পুনরায় পড়ে যেতে নেয়।যাইফ গিয়ে তাকে ধরে ফেলে। যাইফ কে দেখে আশা ছিটকে দূরে সরে যায়। রাতুল কথাটা আশা কে জানানোর জন্য নিচে আসতে নিবে কয়েক টা সিঁড়ি অতিক্রম করতেই দেখলো নিচে আশা আর অন্য একটা ছেলে। আশা বসা অবস্থায় আর ছেলেটা দাঁড়ানো। হঠাৎ ই এই দৃশ্য দেখে রাতুলের অদ্ভুত এক অনুভূতি খেলে যায় নিজের মধ্যে! চোখ দুটো অপলক দৃষ্টিতে তাদের দেখছে! আশা এই ছেলেটার সাথে কি করছে এখানে? পা যেনো থমকে গেছে। সামনে আর পা বাড়াতে সে পারছে না। কাঁপা কাঁপা পায়ে জোড় করে আসতে থাকে তাদের দিকে। আশা কারো পায়ের শব্দে ঝট করে দৃষ্টি উপরের দিকে তুলে ধরে। রাতুল কে দেখে এক নিরন্তর স্বস্তি পেলো সে।

রাতুল থমথমে গলায় বলল,
‘কি হচ্ছে এখানে?’

অচেনা অপরিচিতের ন্যায় রাতুলের গলার স্বর শুনে আশা নিজেই অবাক। এটা কি রাতুল? নাকি অন্য কেউ?

যাইফ রাতুল কে বলে,
‘দেখো না ব্রো আমি উনাকে সরি বলছি তাও উনি কিনা আমায় ইডিয়েট বললো?’

‘মানে?’

যাইফ ঘটনা টা সংক্ষিপ্ত আকারে বলায় রাতুল স্বাভাবিক করতে পারে নিজেকে। সে আরো কি না কি ভাবছিলো! ধুর! আশা বলল,

‘আপনাকে ইডিয়েট বলেছি বেশ করেছি! আরো কিছু বলা উচিত ছিলো আমার!’

‘আর কি বলতে বাকি রেখেছেন?’

‘আপনি যে রাত কানা রোগে আক্রান্ত সেটাই বলতে ভুলে গেছি! ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে আমার কোমড় ভেঙ্গে দিয়ে এখন বলছে সরি! নিকুচি করেছে আপনার সরি!’

যাইফ ও পাল্টা উত্তর দিতে নেয় রাতুল পরিস্থিতি সামলাতে যাইফ কে বলল,
‘ওকে ওকে কুল! ওর হয়ে আমি তোমার কাছে সরি বলছি তুমি যাও!’

‘উনি তো হাঁটতে পারছে না। তাই উনি যদি মনে করে আমার কাজ টা বড় ভুল হয়েছে তাহলে উনাকে আমি হাঁটতে হেল্প করতে পারি! যদি ক্ষমা পাই আর কি!’

‘তার প্রয়োজন নেই ব্রো। আমি ওকে হেল্প করছি!’

এই কথাটা বলে রাতুল আশা কে যাইফের সামনে দিয়ে কোলে তুলে নেয়। যাইফ থ হয়ে সেদিকে তাকিয়ে রইল। আশা ক্ষিপ্ত হয়ে গজগজ করছে এখনো। রাতুল আশার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসি হেসে বলল,

‘থ্যাঙ্কস এ লট ব্রো!’

যাইফ ও অবাক! সঙ্গে আশাও! দুজনের একজন ও বুঝলো না এই থ্যাঙ্কস টা ঠিক কি কারণে দেওয়া হয়েছে! যাইফ কারণ টা জিঙ্গেস করার সময় পেলো না। রাতুল ই তাকে সময় দেয় নি আর কিছু বলার! আশা ব্যথায় সোজা হয়ে হাঁটতে পারছে না তাই বাধ্য হয়ে রাতুলের কোলে চুপটি করে থাকতে হলো। যাইফ আবার পুনরায় কানে ইয়ারফোন গুঁজে দিতে দিতে বলল,

‘এই মেয়ে গুলো খুব অদ্ভুত! ওকে কেউ এসে টেনে নিয়ে যায় তো একে কেউ এসে কোলে করে নিয়ে যায়। স্ট্রেঞ্জ!’

আশা রাতুল কে থ্যাঙ্কস দেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করতে নিবে হঠাৎ তার মনে হলো রাতুলের কোলে তাকে এই অবস্থায় কেউ দেখলে কটু কথা শোনাবে তাকে। ভালো ভাবে নিবে না কেউ বিষয় টাকে! তাই সে বলল,

‘স্টপ স্টপ স্টপ!’

রাতুলের অস্থির পা জোড়া আশার কথা শুনে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। সামনে আর এক পা ও দেওয়া বারণ!

‘কি হলো? কোমড়ের সাথে সাথে মাথা টাও কি গেছে?’

‘মানে?’

‘বলছি যে, মাথায় ও কি বাড়ি লেগেছিলো? যার ফলে স্মৃতি শক্তি মুছে যায়। আর তাই তুমি এখন নিজেকে ট্রাফিক পুলিশের নজরে দেখছো। গাড়ি আসতে না দেওয়ার পর ও চলে আসছে দেখে ট্রাফিক পুলিশের মতো বাঁশি তে ফুঁ দিয়ে হাত নেড়ে স্টপ স্টপ করছো!’

রাতুলের পুরো কথাটা বুঝার পর আশা রাগি চোখে তাকিয়ে বলল,
‘আমার কাছে বাঁশি কোথা থেকে আসলো?’

‘বাঁশি নেই তো কি হয়েছে হাত তো আছে! হতে পারে তুমি বাঁশি তে ফুঁ দিতে ভুলে গেছো!’

‘আপনার মাথা!’

‘আমার মাথা তো একদম ঠিকঠাক আছে! তোমার মাথায় ই তো সমস্যা দেখা দিয়েছে দেখছি!’

‘আপনার সাথে না ঝগড়া করার কোনো ইচ্ছে নাই আমার। নামান আমাকে!’

‘কেন?’

‘নামাতে বলেছি তাই!’

‘সরি ম্যাম আমি কারো ইচ্ছেতে তাকে কোলে নিই নি সো নামানো টাও কারো ইচ্ছেতে হচ্ছে না!’

‘কিহহহ..!’

রাতুল ভ্রুঁ নাচিয়ে বলল,
‘জ্বি!’

আশা এবার কন্ঠ ছোট করে নতজানু হয়ে বলল,
‘প্লিজ আমাকে নামিয়ে দিন। আমি কষ্ট করে হলেও হাঁটতে পারবো! কিন্তু আপনাকে আর আমাকে এই ভাবে কেউ দেখলে খারাপ ভাববে! পরে কাহিনী তিল থেকে তাল হয়ে যাবে!’

রাতুল এতোক্ষণ পর বুঝলো আসল কাহিনী। বড় একটা নিশ্বাস ফেলে বলল,
‘ডোন্ট ওয়ারি ম্যাম কেউ কিচ্ছু টি ভাববে না!’

‘প্লিজ!’

‘শিসস কোনো কথা নয়! চুপটি করে থাকো! এমনিতেও আমি নামিয়ে দিলে তুমি হাঁটতে পারবে না। সো কারো ভাবনায় কিছু আসে যায় না। কেউ দেখার কথা ও না। এতোক্ষণে নিশ্চয়ই সবাই নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে!’

রাতুল হাঁটতে শুরু করে। রাতুল ঠিক ই বলেছে সত্যি ই সে মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে হাটতে পারবে না। দমে যায় সে। রাতুল এখনো সেই এক ভাবেই তাকে কোলে নিয়ে দিব্যি হাঁটছে। তার মধ্যে কোনো টু শব্দ নেই যে নিতে পারছি না তোমাকে! এতো ভারি কেন তুমি? এই টাইপের কোনো কথা নেই তার মুখে!

‘আচ্ছা আপনার কষ্ট হচ্ছে না?’

‘কেন কষ্ট হবে কেন?’

‘এই যে আমাকে তখন থেকে কোলে নিয়ে সিঁড়ি থেকে নামছেন!’

‘হাহাহা..!’.

রাতুল এক গাল হাসলো। আশা নাক ফুলিয়ে বলল,
‘আমি কিন্তু মোটেও হাসার মতো কিছু বলিনি!’

‘তাও ঠিক! বাট আমার হাসি পেলো! তোমার মতো আরো দুইটা কে কোলে নিলেও আনার কষ্ট হবে না। যেই শুটকির শুটকি! হাহা!’

‘কি বললেন?'[রেগে]

‘শুনতে পাও নি? ওকে আবার বলছি নিরা আদ্রাজের সাথেই আছে! ওরা আসছে! এই কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে! দুজন কোথায় গিয়েছিলো সেটাই এখন ভাবছি আমি!’

__________________

আদ্রাজ আবার ড্রাইভ শুরু করে। নিরার কথা গুলো খুব গায়ে লেগেছে তার। কঠিন বাক্য গুলোর অর্থ মন কে ভীষণ ভাবে নিংড়ে দিয়েছে। মন কে বিষণ্ণতায় ভরিয়ে দিয়েছে! সুক্ষ্ম এক সুঁই ফুটে গিয়ে বাজে ধরনের ব্যথা অনুভব হচ্ছে! চোখ জোড়া লাল বর্ণ ধারণ করেছে। নিরা এখনো আরেক দিকে তাকিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। পথে আর কোনো কথা হলো না। নিরবতায় কেটে গেছে পুরোটা সময়। আধঘন্টা পর বাসায় এসে পৌঁছায় তারা। এখনো দুজনার মধ্যে নিরবতা বিরাজমান। নিরবতা ভেঙ্গে ফেলতে দুজন ই নারাজ! আদ্রাজ কথা বলতে বাধ্য হলো।

‘এসে গেছি!’

আদ্রাজের কথা শুনে নিরা গাড়ির দরজা খুলতে চেষ্টা করে কিন্তু পেরে উঠছে না। এটা দেখে আদ্রাজ বুঝতে পারে সে তো দরজা লক করে রেখেছে নিরা খুলতে পারবে কি করে? দ্রুত আনলক করে নিজে এগিয়ে যায় নিরার দিকে। আদ্রাজ তার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে নিরা ভয়ে একটা ঢোক গিলে! কি হলো আদ্রাজের? সে কি তার কথা গুলো শুনে রেগে গিয়ে এখন তার সাথে…! না না এ কি করে হয়! ভয়ে নিরা চোখ খিঁচে বন্ধ করে নেয়! আদ্রাজ সোজা নিরা কে ক্রস করে দরজা টা খুলে দেয়। নিরার দিকে ফিরে তাকাতেই নিরার গরম নিশ্বাস তার চোখে মুখে আঁছড়ে পড়ে। আদ্রাজ দ্রুত নিজেকে সংযত করে নিজের সিটে বসে। দরজা টা খট করে খুলে বের হয়ে যায় আদ্রাজ। শব্দ কানে আসতেই চোখ খুলে ফেলে নিরা। কি হয়েছিলো বুঝতে পেরে লজ্জা পেয়ে যায়। নিজেকেই গালি দিয়ে মনে মনে বলল,

‘সব সময় এক চামচ বেশি ভাবা তোর বাজে স্বভাব নিরা! যত দ্রুত সম্ভব এটি পরিহার কর! স্টুপিড!’

নিরা আদ্রাজের দিকে তাকাতে লজ্জা পাচ্ছে। কারণ টা হলো আদ্রাজ কি ভেবেছেন তাকে? দরজা টা ঠেলে নিচে নেমে আসে নিরা। ইচ্ছে তো করছে এক দৌড়ে ভেতরে চলে যেতে। যাতে আদ্রাজের সামনে তাকে আর পড়তে না হয়! চোখে চোখ যেনো পড়তে না পারে সেই চেষ্টা করতে থাকে। মনে মনে অলরেডি প্ল্যান করতে শুরু করে কোন দিক দিয়ে দৌড় দিলে আদ্রাজ কে পিছনে ফেলে চলে যাওয়া যাবে!

প্ল্যান মোতাবেক দৌড় দেওয়ার জন্য মনস্থির করতেই আদ্রাজের ডাক পড়ে।

‘নিরা…!’

বিষন্নতায় ভরা মন নিয়ে কাতর কন্ঠে এই ডাক টি পেছন ফিরতে বাধ্য করে নিরা কে! এই ডাক শুনে কেন সে পেছন ফিরলো নিজেও জানে না! হয়তো এই ডাক টায় কোনো এক মোহ ভর্তি ছিলো! যাকে আফিমের থেকেও বড্ড বেশি নেশালো বললে ভুল হবে না!

স্বভাবতই আদ্রাজের সাথে পরিচয়ের সেই শুভ ক্ষণ থেকে আজ পর্যন্ত আদ্রাজ একবার ও তার নাম ভুলে ও মুখে আনে নি। সব সময় ‘ঐ মেয়ে! এই মেয়ে’ বলেই সম্বোধন করতো! তবে আজ তার পুরো ব্যতিক্রম! কিন্তু কেন?

প্রশ্নবোধক দৃষ্টিপাত আদ্রাজের দিকে। আদ্রাজ মৃদু কন্ঠে বলল,
‘আই এম রিয়েলি ভেরি সরি নিরা! তখন তোমাকে ওভাবে বলা আমার একদমি ঠিক হয় নি! এন্ড নাউ আমার মনে হচ্ছে আমার তোমাকে সরি বলা খুব দরকার!’

নিরা হা হয়ে আদ্রাজের দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষ টা বলছে কি আজ? এটা কি সত্যি নাকি অবাস্তব!

আদ্রাজ নিরার অনাড়ম্বর দৃষ্টি দেখে পেছনের দিকে ফিরে বলল,
‘আমি কি করবো বলো তো? তোমাকে তখন ঐ ছেলেটার সাথে ওভাবে দেখা টা আমার চোখে ভালো লাগে নি! তার উপর ঐ ছেলে তোমার মুখে হলুদ ও লাগিয়েছে দেখে কেন জানিনা খুব রাগ হয়েছে আমার! যা কন্ট্রোল করা আমার পক্ষে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে! আর তাই তখন আমি রাগের মাথায় তোমাকে যাতা বলে বসি! কিন্তু বিশ্বাস কর নিরা…

বলে আরো কিছু বলতেই আদ্রাজ আবার নিরার দিকে ফিরে তাকাতে নিলে দেখে জায়গা টা শূন্য। নিরা কোথাও নেই! তাহলে গেলো কোথায়?

চোখ এদিক ওদিক তাকাতেই দেখলো নিরা দৌড়ে বাসার ভেতরে চলে যাচ্ছে! এই দৃশ্য দেখে মাথায় হ্যাংক করলো আদ্রাজের!

‘কি দরকার ছিলো ওকে সব সত্যি বলে দেওয়ার? এ্যাঁহ আসছে একদম মহাদরদি একটা! দেখলি তো এখন মেয়েটা কেমন করে তোর কথা কে উপেক্ষা করে দৌড় মারল? ভালো হয়েছে না এখন?’

হুট করেই আবার মনোভাব চেঞ্জ হয়ে যায় আদ্রাজের! ভেবে পায় না এই তো একটু আগে নিরা সেন্সলেস ছিলো আর এখন দৌড় দেওয়ার মতো ওতো শক্তি পেলো কোথায়?

নিরা প্রস্থান করায় আদ্রাজের এতো রাগ লাগছে কেন নিজেও ভেবে পাচ্ছে না! তবে কি সে চেয়েছিলো নিরা তার সম্পূর্ণ অব্যক্ত কথা গুলো শুনুক? তার সরি এক্সেপ্ট করুক! তাকে বলুক,
‘আর যেনো ভবিষ্যতে এমন কিছু না করেন মনে থাকবে তো?’

‘ইয়েস ম্যাম! পাক্কা মনে থাকবে!’

এখন তো নিজের মনের উপর ই রাগ হচ্ছে। আদ্রাজ রেগে মনে মনে নিজেকেই গালি দিতে দিতে বলল,

‘তুই শালা, আমার মন! আমার কথা ভাববি! আমর নিজস্ব এটিটিউড নিয়ে থাকবি! তুই কেন ঐ মেয়েটাকে সরি বলতে বলবি? তোকে শালা গাছের সাথে বেঁধে ইচ্ছে মতো রাম ধোলাই দিতে ইচ্ছে করছে! ইস্টুপিড মার্কা মন একটা! তুই শালা ডিটারজেন্ট খা! নয়তো প্লে স্টোরে ঢুকে আপডেট হ! দিন দিন তোর এতো অবনতি আর মানা যাচ্ছে না!’

চলবে———————

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here