হৃদয়াসিক্ত কাঠগোলাপ পর্ব -৩৯+৪০

#হৃদয়াসিক্ত_কাঠগোলাপ
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পর্বঃ৩৯
চিন্তিত আরাবী বসে আছে।নজর জায়ানের দিকে।এই লোকটা হুটহাট সময় অসময়ে যে কোথায় কোথায় চলে যায়,ভেবে পায় না আরাবী।এইযে এখন সেজে গুজে তৈরি হচ্ছে লোকটা।কোথায় যাবে বলেও না আরাবীকে।আরাবী তীক্ষ্ণ চোখে জায়ানকে পর্যবেক্ষন করে নিয়ে বলল, ‘ কি ব্যাপার বলুন তো।ইদানিং আপনি এমন সেজে গুজে হুট হাট কোথায় চলে যান?’

শরীরে পারফিউম দিচ্ছিল জায়ান।আরাবীর কথায় হালকা হাসল।একটু সময় নিয়ে আরাবীর কাছে গিয়ে বসল।বলল, ‘তুমি বুঝি আমায় সন্দেহ করছ?’

জায়ানের হঠাৎ এমন একটা কথায় থতমত খেয়ে যায় আরাবী।জায়ান কি তবে ওর কথায় কষ্ট পেয়েছে?যে ওকে এই কথাটা বলল।ওতো এরকম কিছু ভাবেইনি।ও তো খুব ভালোভাবেই জানে এই লোকটা ওকে ঠিক কতোটা ভালোবাসে।লোকটার চোখের দিক তাকালেই আরাবী নিজের জন্যে অসীম ভালোবাসা দেখতে পায়।সেখানে এসব তো ও স্বপ্নেও ভাবতে পারবে না।আরাবী ছোট্টো কণ্ঠে বলে, ‘ ছিঃ ছিঃ আপনি এসব কি বলছেন?আমি এমন কিছু ভাবব কেন?আমি মোটেও আপনাকে সন্দেহ করছি না।’

আরাবীর কথা শুনল জায়ান।তবে কিছু বলল নাহ।আরাবী চোখ তুলে তাকাল জায়ানের দিক।জায়ান এইবার কোমলভাবে স্পর্শ করল আরাবীর গাল।কেঁপে উঠল আরাবী। আজ ঠিক কতোদিন পর জায়ানের এই অন্যরকম শীহরণ জাগিয়ে তোলা স্পর্শ পেলো আরাবী।ওর এক্সি’ডেন্ট হওয়ার পর থেকে তো লোকটা ঠিকঠাকভাবে ওর কাছেও ঘেষে না।সে নাকি ভয় পায়।তার হাতপা লেগে যদি আরাবী ভয় পায়?কতো বলে কয়ে যে জায়ানের নিকট গিয়ে ঘুমোয় আরাবী।ওদিকে আরাবীকে দূরে রেখে যে লোকটা নিজেও ঘুমোয় নাহ।সারারাত ছটফট করে।তাই আরাবী জায়ানের কোন নিষেধাজ্ঞা মানে নাহ।নিশ্চুপভাবে জায়ানের বুকে লেপ্টে যায়।জায়ান নিজেও যে এতে শান্তি পায় আরাবী জানে।মুঁচকি হাসল আরাবী।ওকে হাসতে দেখে জায়ান প্রশ্ন করল,’ হাসছ যে?’

মাথা নিচু করে আরাবী বলে, ‘এমনি।’

জায়ান আরেকটু কাছ ঘেষে বসে আরাবীর।আরাবী কাঁপছে,সাথে কাঁপছে ওর হৃদয়।নিশ্বাস হয়েছে জোড়াল।বুকটা কেমন ধড়ফড় করছে।জায়ান আরাবী সেই তিরতির মরে কম্পয়মান ওষ্ঠজোড়া দেখে শুকনো ঢোক গিলল।আজ কতোদিন হলো ওই অধরজোড়ার সুধাপাণ করতে পারে না জায়ান।শতো ইচ্ছে থাকলেও নিজেকে সংযত করে রাখে।তবে আজ পারছে নাহ।জায়ান ধীর স্বরে বলে, ‘ আরাবী তোমায় আজ যদি একটুখানি ছুঁয়ে দেই।তুমি কি রাগ করবে?’

জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিলো আরাবী।মাথা নিচু করে লাজুক হাসল।আরাবী কাছে এগিয়ে এসে আরাবীর জায়ানের গলা জড়িয়ে ধরল।জায়ান আরাবীর সম্মতি পেয়ে মুঁচকি হাসল। আরাবীর মাথার পিছনে হাত গলিয়ে দিয়ে চুলগুলো মুঠিতে পুরে আরাবীর মাথাটা উপর দিকে উঠাল।আরাবী চোখ বন্ধ করে আছে।জায়ান আলতো করে চুমু খেল আরাবীর ঠোঁটজোড়ায়।দীর্ঘদিন পর স্বামির সোহাগটুকু পেয়ে সর্বাঙ্গ ঝংকার তুলে উঠল।জায়ান আরাবীর এই কম্পনে যেন পাগল হয়ে গেলো।পাগলের মতো হামলে পরল আরাবীর অধরজোড়ার উপর।এতোদিনের তৃষ্ণা মিটাতে লাগল প্রেয়সীর ঠোঁটের সুধাপাণ করে।আরাবীও স্বামির ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছে।আজ কতোদিন পর লোকটার উষ্ণ স্পর্শগুলো পাচ্ছে।দীর্ঘ চুম্বনের পর সরে আসে জায়ান।আরাবী চোখ বন্ধ করে জায়ানের বুকে মাথা ঠেকিয়ে রাখল। জায়ান নরম গলায় বলে, ‘ আ’ম সরি আরাবী।আসলে এতোদিন পর…..!’

‘ চুপ করুন।’ আরাবী ফিসফিস করে বলল।তারপর মাথা উঠিয়ে তাকাল জায়ানের দিকে।জায়ান স্পষ্ট আজ আরাবীর চোখে নেশা দেখতে পাচ্ছে।আরাবী যে আজ ওকে চাইছে তা জায়ান খুব ভালোভাবেই জানে।জায়ানের নিজেরও মন চাইছে আজ মেয়েটাকে খুব করে ভালোবাসতে।কিন্তু মেয়েটা অসুস্থ।হাতটা যাও ঠিক হয়েছে পা’টা এখনও ঠিক হয়নি।যদি ব্যাথা পায়।ভয় হয় জায়ানের।জায়ান মনকে শক্ত করে। সরে আসতে চায় আরাবীর কাছ থেকে।তবে যেতে পারে না। তবে যায় জায়ান।তাকিয়ে দেখে আরাবী ওর শার্টটা হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে রেখেছে।মাথা নিচু করে আছে আরাবী।জায়ান ঢোকের পর ঢোক গিলল।এই মেয়েটা কেন বুঝছে না।ও এমন করলে জায়ানও নিজেকে সামলাতে পারবে নাহ।জায়ান ধীরে বলে, ‘আরাবী তুমি….!’

জায়ানকে থামিয়ে দিলো আরাবী।হাশফাশ করছে মেয়েটা। ও তো মেয়ে কি করে মুখ ফুটে এই কথা বলবে।যে আজ ও চাইছে নিজের স্বামির ভালোবাসা।আরাবী লজ্জায় অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো।থেমে থেমে বলে, ‘ আ..আপনি।প্লিজ এভাবে…মানে আমি….!’

জায়ান হাত টেনে আরাবীকে বুকে টেনে নিলো।মেয়েটা যেহেতু আজ এতো করে ওকে চাইছে। তো ও নিজেও আর দূরে থাকবে না।জায়ান আরাবীর কানে ফিসফিস করে বলে, ‘ স্বামির সোহাগ এতো করে চাইছো।সেটা মুখ ফুটে বলতে এতো সমস্যা কিসের?’

লজ্জায় মুখ লাল হয়ে গেল আরাবীর।লোকটার এই লাগামছাড়া কথাবার্তা কোনদিনও বন্ধ হবে নাহ।জায়ান আরাবীকে বুক থেকে সরিয়ে দিলো।তারপর ধীরে আরাবীকে বিছানায় সুইয়ে দিলো।আরাবী নিভু নিভু চোখে তাকিয়ে জায়ানের দিকে।জায়ান নেশাক্ত চোখে আরাবীর সর্বদেহে চোখ বুলাচ্ছে।আরাবীর আকর্ষনীয় নারিদেহের বাঁক স্পষ্ট ফুটে উঠেছে শাড়ির প্রতিটি ভাঁজে ভাঁজে।জায়ান হাত রাখল শার্টের বোতামে আস্তে আস্তে খুলে শার্টটা ছুড়ে ফেলে দিলো।আরাবী জায়ানের উন্মুক্ত দেহ দেখে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো। লোকটার আকর্ষনীয় সুদর্শন শরীরটা ওকে ভীষনভাবে টানে।জায়ান আরাবীর দেহের উপর নিজের শরীরটা এলিয়ে দিলো।তবে পুরো ভাড় ছাড়ল নাহ।মেয়েটা যদি ব্যাথা পায়।মুখ নামিয়ে আনল আরাবীর কানের কাছে। নেশাক্ত গলায় বলে, ‘ তুমি জানো তুমি বৃষ্টিস্নাত কাঠ গোলাপের মতোই অনন্য অসাধারণ একজন।যাকে আমি আমার হৃদয়ের রানির আসনে বসিয়েছি।আমার রানি আজ আমার ভালোবাসায় সিক্ত হতে চেয়েছে।আমি কি করে তাকে ফিরিয়ে দেই?আজ আমি না হয় তোমাতেই বিলীন হয়ে যাই।’

আরাবী এক ঝটকায় এসে জায়ানের গলা জড়িয়ে ধরে জায়ানকে কাছে টেনে আনল।তারপর মুখ গুজে দিলো জায়ানের কাধে।জায়ান আলত হাসল।মেয়েটা এতো লজ্জাবতী।জায়ান একটুখানি বেষামাল কথা বললেই লজ্জাবতী লতার ন্যায় গুটিয়ে যায়।জায়ান আরাবীর কানের পিঠে চুমু এঁকে দিলো।তারপর চুমু খেলো আরাবীর গালে।জায়ান কণ্ঠ খাদে নামিয়ে বলে,’ বৃষ্টি যেভাবে কাঠ গোলাপকে ছুয়ে দেয়। আমিও তোমাকে সেভাবেই কাছে টেনে নেব।’

আরাবীও লাজুক গলায় প্রতিত্তরে বলে, ‘ আপনার কাঠগোলাপ আপনার অপেক্ষায়।আপনার প্রেমের বৃষ্টিতে তাকে সিক্ত করে দিন।’

জায়ান আরাবীর গলার ভাজে মুখ গুজে দিলো।উষ্ণ চুমুর বর্ষনে সিক্ত করে তুলল আরাবীকে।জায়ানের ভালোবাসায় মাতাল আরাবী।খামছে ধরল জায়ানের পিঠ।এতে যেন জায়ানের ভালোবাসার তীব্রতা আরো বেড়ে গেলো।চুমুতে চুমুতে ভড়িয়ে তুলল আরাবীকে।আজ অনেকদিন পর প্রেমের বর্ষনে দুজন দুজনের সাথে সিক্ত হতে লাগল।ভালোবাসার নদীতে ভাসতে
লাগল দুজনেই।
______________
মিসেস হোসনে আরা রোজির সামনে বসে আছে জায়ান।হোসনে আরা রোজি হলেন একজন গাইনী বিষেষজ্ঞ ডক্টর।তিনিই হলেন ইফতির ফ্রেন্ডের মা।যে জায়ানের সাথে পার্সসোনালি দেখা কর‍তে চেয়েছেন।জায়ান গম্ভীর কণ্ঠে তাকে উদ্দেশ্য করে বলল, ‘ মিসেস হোসনে আরা রোজি আমি কি জানতে পারি ঠিক কি কারন যে আপনি আমায় এতো পার্সসোনালভাবে ডেকেছেন।’

নড়েচড়ে বসলেন মিসেস রোজি।চোখের চশমাটা ঠিক করে নিয়ে ধীর গলায় বলে, ‘ আমি যেটা বলব মন দিয়ে শুনবেন।আমি সব কিছু সোজাসাপটা বলব।কোন বাজে কথা বলে সময় নষ্ট করতে চাইছি না আপনার।’
‘জি বলুন।’
‘ ৫ জুন ২০০০ সাল রাত্রির দেঢ়টা বাজে একজন মহিলাকে আমার কাছে আনা হলো।তিনি তখন প্রসব বেদনায় ছটফট করছিলেন।আমি দ্রুত তাকে এডমিট করে নিলাম।যে লোকটা তাকে এনেছিল তাকে জিজ্ঞেস করলাম সে কি হয় পেসেন্টের।তিনি জানালেন তিনি নাকি পেসেন্টের বাড়িতে কাজ করেন।আমি আরও ফ্যামিলি মেম্বারদের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন পেসেন্টের হাজবেন্ড আসছে।আমি বেশি কিছু ভাবলাম নাহ দ্রুত পেসেন্টের কাছে গেলাম।কারন পেসেন্টের অবস্থা তখন ভীষণ খারাপ।আমি তার ডেলিভারি করালাম।ফুটফুটে একটা মেয়ে বাবুর জন্ম দিলো সে।কিন্তু আফসোস তাকে বাঁচাতে পারলাম নাহ আমি।নিজের বাচ্চাকে সহি সালামতে দুনিয়াতে আনতে পারলেও।তাকে চলে যেতে হলো দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে।আমি বাচ্চাটাকে নিয়ে বাহিরে আসতেই দেখলাম একজন পুরুষ দাঁড়িয়ে।বুঝলাম এটাই হয়তো মহিলাটির হাজবেন্ড।কিন্তু ব্যাক্তিটির কাছে গিয়ে দেখলাম এ আর কেউ না আমারই বন্ধু।ও বাংলাদেশ থেকে মাস্টার্স কমপ্লিট করে হায়ার এডুকেশনের জন্যে আমেরিকায় চলে গিয়েছিল।আমি অবাক হয়ে গেলাম।ও নিজেও আমায় দেখে বেশ অবাক হয়েছে।আমি জিজ্ঞেস করলাম সে এখানে কেন?ও নিজেও আমায় জানাল ওর স্ত্রীর নাকি এই হাসপাতালে ভর্তি।আমি বুঝলাম আমি যেই আন্দাজ করলাম তাই ঠিক।আমি ওর কোলে ওর মেয়েকে দিয়ে জানালাম যে এটাই ওর সন্তান। যে সদ্য জন্ম নিয়েছে।ওর চোখে মুখে আমি বাবা হবাএ সামান্যতম খুশি দেখলাম নাহ।আরও বেশি আশ্চর্য হলাম।যখন আমি হতাশ গলায় বললাম যে ওর স্ত্রী আর নেই।ও এতে কষ্ট পাবে তো দূর।ও চেহারা দেখে বুঝলাম ও এতে যেন খুশিই হয়েছে।হাসপাতাল তখন নিরিবিলি।এই নিরিবিলি হাসপাতালে ওই পাষাণ ব্যাক্তিটার কথায় যেন বজ্রপাত হলো।ও যা বলল তা আজ পর্যন্ত কোন সন্তানের বাবাকে আমি বলতে শুনলাম নাহ।ও আমার হাত ধরে বলে ওই বাচ্চাটাকে মেরে ফেলার জন্যে।এতে নাকি ও আমায় মোটা অংকের টাকা দিবে।আমি রাজি হলাম না।ও আমায় আমাদের বন্ধুত্বের দোহাই দিল।আমায় ও অনেক টাকার অফার দিল।আমি নিজেও অপরাধি তখন আমি টাকার নেশায় অন্ধ হয়ে গেলাম।লোভে পরে রাজি হয়ে গেলাম।একজন ছেলেকে টাকা দিয়ে ওই সদ্যজাত জন্মানো মেয়েটাকে কোন আর্বজনার স্তুপে ফেলে দিয়ে আসতে বললাম।কুকুর শিয়ালরা এসে মেরে ফেলবেই নেহ ওই বাচ্চাকে।আমার বন্ধু ওর স্ত্রীর মরা লা’শ নিয়ে চলে গেলো।সব ব্যবস্থা আমিই করে দিলাম।হাসপাতাল থেকে সকল ডিটেইলস সব মুছে দিলাম।তবে তার কিছু ঘন্টা পর আমি শান্তিতে থাকতে পারলাম নাহ।অনুশোচনায় আমার হৃদয় দগ্ধ হয়ে যাচ্ছিলো।কারন তখন আমিও যে দুমাসের গর্ভবতী ছিলাম।আমি কি করে পারলাম এমনটা করতে।আমি পাগলের মতো ছুটে গেলাম ওই ছেলের কাছে।যাকে ওই বাচ্চাটাকে দিয়েছিলাম যাতে ও ফেলে দিয়ে আসে।ওই ছেলে আমায় জানাল ওই বাচ্চাটাকে নাকি কোন ভদ্রলোক রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে চলে গিয়েছে।শুনে বেশ অবাক হলাম।সাথে খুশিও।যাক বাচ্চাটা তাহলে বেঁচে তো আছে।আমি পরেরদিনই আমার বন্ধুর কাছে গেলাম।ওকে সব টাকা ফিরিয়ে দিলাম।কিন্তু ওকে বললাম নাহ ওর মেয়ে বেঁচে আছে।কারন ও যদি এটা জানতে পারে তাহলে বাচ্চাটাকে ও আবার মারার চেষ্টা করবে।আমি আর ওর সাথে বেশি কথা বললাম নাহ।চলে আসলাম ওখান থেকে।কিন্তু তবুও আমার অপরাধবোধ যেন আমার প্রতিমুহূর্তে গিলেগিলে খাচ্ছিল।২৩ টা বছর, ২৩ টা বছর আমি যন্ত্রনায় ছটফট করেছি।তবে আমি জানতাম না উপরওয়ালা আমায় প্রয়েশ্চিত্ত করার জন্যে একটা সুযোগ দিবেন।ইফতি আমায় যখন এই বিষয়ে জানাল তখন আমি ওকে তারিখটা জিজ্ঞেস করতেই আমি পুরোপুরি সিউর হয়ে গেলাম।তাই তো তোমার সাথে দেখা করার জন্যে ছটফট করছিলাম।আজ তোমায় সব জানালাম আমার মনটা হালকা হলো।এখন শুধু একবার ওই বাচ্চা মেয়েটাকে আমি একটু দেখতে চাই।ওর কাছে ক্ষমা চাইবো আমি।’

সবটা মন দিয়ে শুনল জায়ান।তবে বেশি কিছু বলল নাহ।কিন্তু ওর মনের ভীতর কি চলছে তা কেউ বুঝবে না।জায়ান শুধু শান্ত কণ্ঠে বলল, ‘ আপনার বন্ধুর নামটা জানতে পারি?’

‘ জি অবশ্যই।ওর নাম হলো রাশেদ শেখ।’

#চলবে________

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।কেমন হয়েছে জানাবেন।যদি কোন জায়গায় ভুল কিছু লিখে থাকি তাহলে মাফ করবেন।কোন ভুল ইনফোরমেশন দিলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।#হৃদয়াসিক্ত_কাঠগোলাপ
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পর্বঃ৪০

‘জি অবশ্যই।ওর নাম হলো রাশেদ শেখ।’

জায়ানের মাঝে কোন ভাবান্তর দেখা গেলো নাহ।বেশ শান্ত দেখাচ্ছে ওকে।জায়ান শীতল গলায় বলল,’ উনার বাড়ির এড্রেসটা দিতে পারবেন?’

ডা.হোসনে আরা রোজি চিন্তিত গলায় বললেন,’ কিন্তু ও তো দেশে থাকে না।’

জায়ান গম্ভীর কণ্ঠে বলে, ‘সমস্যা নেই আপনি তার দেশের বাড়ির ঠিকানা দিলে-ই হবে।’

‘ আচ্ছা ঠিক আছে।একটু ওয়েট করো আমি লিখে দিচ্ছি।’

জায়ান মাথা দুলিয়ে হ্যা বোঝালো।ডা.রোজি ঠিকানাটা লিখে দিতেই।জায়ান সেটা হাতে নিয়ে বলে, ‘ ধন্যবাদ ডা….. ‘

জায়ানকে থামিয়ে দিয়ে ডা. রোজি বলেন, ‘ আন্টি বলতে পারো আমায় সমস্যা নেই।’

জায়ান হেসে বলে, ‘ ওকে আন্টি তাহলে আসি?আসলে আমার ওয়াইফ অসুস্থ।’

ডা.রোজি বলেন,’ ইয়াহ সিয়র।খেয়াল রাখবে ওর।’

‘ ধন্যবাদ আসি তাহলে। ‘

জায়ান উঠে যেতে নিতেই আবারও ডা.রোজির কথায় থেমে গেলো।তিনি বলেন,’ কিচ্ছু মনে করো না বাবা।যদি পারো তোমার ওয়াইফ কি যে নাম?’

‘ আরাবী!’
‘ হ্যা, আরাবীকে পারলে একটু আমার কাছে এনে।মেয়েটাকে দেখার খুব ইচ্ছা।ওর কাছে যে ক্ষমা চাওয়া আমার এখনও বাকি।খুব অন্যায় করেছি আমি ওর সাথে।’

ডা.রোজির চোখজোড়া ভড়ে উঠল। জায়ান নরম গলায় বলে, ‘ আর কষ্ট পাবেন না আন্টি।আপনি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন এটাই অনেক।আর আমার স্ত্রী অনেক নরম মনের।আমি জানি আপনার ব্যাপারে সব জানতে পারলে কখনই আপনার উপর রাগ করে থাকবে নাহ।’
‘ তাই যেন হয়। ‘
‘ এটাই হবে।তাহলে আসি আন্টি?দেরি হচ্ছে।’
‘ এসো বাবা।’

জায়ান হসপিটাল থেকে বেড়িয়ে গাড়িটে উঠে বসল।গাড়ির স্টেরিংয়ে মাথা ঠেকিয়ে অসহায় কণ্ঠে আওড়ালো,’ নিজের অস্তিত্বের সম্পর্কে জানার জন্যে যতোটা ছটফট করছিলে তুমি।এখন যদি সেটা জানতে পারো তাহলে তার থেকেও দ্বিগুন কষ্ট পাবে তুমি।বাবা মায়ের কথা জানতে পেরে যতোটা খুশি হবে তুমি।মায়ের মৃত্যুর কথা আর তার পিছনের রহস্য জানতে পারে এরথেকেও বেশি কষ্ট পাবে তুমি।পিতৃপরিচয়ের জন্য যতোটা কষ্ট পেয়েছে তার থেকেও বেশি ঘৃনা করবে তার সম্পর্কে জানলে।কি করব আমি আরাবী?কি করব?কি করলে তোমার কষ্ট পাবে না।কিভাবে এই সত্যি জানানোর পর আমার কাঠগোলাপকে আমি কষ্ট,যন্ত্রনা থেকে দূরে সরিয়ে রাখব।ওর চোখের একফোটা পানি যে আমার বুকে ম’রন যন্ত্র’না অনুভব হয়।বুক পু’ড়ে যায় আমার। কি করব আমি আরাবী।’

কথাগুলো বলেই নিজেকে শান্ত করার জন্য জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিলো জায়ান।অতঃপর নিজেকে সামলে গাড়ি স্টার্ট দিল।আরাবীকে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে এসেছে জায়ান।মেয়েটা এতোক্ষনে জেগে গিয়ে হয়তো ওকে খুজছে।
—–
ঘুমের ঘোরে পাশ হাতরাচ্ছে আরাবী।কিন্তু কাংখিত মানুষটার অস্তিত্ব নিজের অস্তিত্বটুকু অনুভব কর‍তে না পেরে ভ্রু-কুচকে আসে আরাবীর। বিরক্তি নিয়ে পিটপিট করে চোখজোড়া খুলল আরাবী।ধীরে ধীরে উঠে বসল।বিছানার পাশে তাকিয়ে দেখে পাশটা খালি পরে আছে।লোকটা গেলো কোথায়?এভাবে হুটহাট কোথায় যায় লোকটা কে জানে?মাথাটায় চিনচিনে ব্যাথা করছে।ফ্রেস হওয়া দরকার। অতোশতো না ভেবে আরাবী উঠে দাঁড়ালো।পা’টা এখনও ঠিকঠাক রিক-ওভার করেনি।তাই এখনও ঠিকভাবে হাটতে পারেনা মেয়েটা।খুরিয়ে খুরিয়ে হেটে ওয়াশরুমে গেলো আরাবী। ঝর্ণা ছেড়ে ফ্রেস হতে নিতেই।শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হালকা জ্বলে উঠল। আরাবী ব্যাথা অনুভব করল নাহ একটুও।বরংচ শান্তি অনুভব করল।ওয়াশরুমের আয়নায় নিজেকে দেখছে আরাবী।ঘারে, গলায় স্বামি সোহাগের চিহ্ন ভেসে উঠেছে।লাজুক হাসল আরাবী।লোকটার ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছে আজ আরাবী।মুহূর্তগুলোতে কেমন অস্থির হয়ে পরেছিলো লোকটা।আসলে এতোদিন পর প্রিয়তমাকে কাছে পেয়ে নিজেকে নিয়ন্ত্রনে রাখা বড্ড কষ্ট হয়ে পরছিলো জায়ানের জন্যে।তবুও যথাসম্ভব আরাবীর কাছে নম্রভাবটা ধরে রেখেছে।জায়ানের এতো ভালোবাসা পেয়ে আরাবী সত্যি নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করে।নাহলে ওর মতো অস্তিত্বহীন একজনকে কেউ কি করে কেউ এতোটা ভালোবাসতে পারে?সত্যি বলতে আরাবীর এখন আর কষ্ট লাগানা।এতো সুন্দর পরিবার যার আছে সে কি কষ্ট পেতে পারে?সবচেয়ে বড় কথা জায়ানের মতো এতো ভালোবাসার একজন স্বামি আছে।আরাবী তো সুখি একজন মানুষ।যার কাছে এতোসব কিছু আছে সে কি কখনও কষ্ট পেতে পারে?উহু পারে।আরাবীও আর কষ্ট পায় না।শুধু মনে একটু আফসোস রয়ে গেছে আরাবী।সেটা চাইলেও শেষ করতে পারবে নাহ আরাবী।দীর্ঘশ্বাস ফেলল আরাবী।দ্রুত ফ্রেস হয়ে নিলো। কিন্তু বিপত্ত ঘটলো ও তো জামা-কাপড়ই আনেনি।নিজেকে নিজেই বকলো আরাবী।আসলে এতোদিন জায়ানই ওর সকল কাজ করে দিয়েছে।এইজন্যেই এমনটা হলো।লোকটার উপর পুরো নির্ভরযোগ্য হয়ে পরেছে ও।মুচঁকি হাসল আরাবী।তারপর শরীরে তোয়ালে পেঁচিয়ে নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসল। আরাবী আশেপাশে না তাকিয়ে সোজা আলমারির সামনে চলে গেলো।জামা-কাপড় নিয়ে আলমারি বন্ধ করে সামনের দিকে ফিরতেই। থমকে যায় আরাবী।চোখজোড়া বড়বড় হয়ে আসে ওর।মস্তিষ্ক ফাঁকা হয়ে পরেছে আরাবীর।সামনে জায়ান দাঁড়িয়ে।জায়ানের অদ্ভুত চাহনী দেখে কেঁপে উঠল আরাবী।শরীরের পশম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে আরাবীর ওই চাহনী দেখে। লজ্জায় হতভম্ব হয়ে পরেছে আরাবী।কি করবে দিশা পাচ্ছে না। লজ্জায় আরাবী শেষমেষ বিছানার উলটো দিকে দৌড়ে চলে যেতে চাইল।কিন্তু পায়ে ব্যাথা থাকার কারনে পারে না মেয়েটা।পরে যেতে নিতেই জায়ান মৃদ্যু চিৎকার করে আরাবীকে বাহুডোরে আগলে নেয়।আরাবী ভয়ে চোখ বন্ধ করে জায়ানের শার্ট খামছে ধরে।যখন বুঝল ও জায়ানের বাহুতে ভয়টা কাটল আরাবীর।আস্তে আস্তে চোখজোড়া খুলে তাকাতেই জায়ানের লাল চোখ দুটো দেখে ভয়ে ঢোক গিললো আরাবী। আরাবীকে সোজা করে দাড় করাল জায়ান।পরমুহূর্তেই জোড়েসোড়ে ধমকে উঠে জায়ান, ‘পাগল হয়ে গেছো তুমি?কি করতে যাচ্ছিলে?এখনও পুরোপুরি সুস্থ হওনি তুমি।আর এভাবে ছোটাছুটি করার মানে কি আরাবী?আমি কি পরপুরুষ কেউ?যে আমাকে দেখে এইভাবে দৌড়ে পালাতে হবে?’

জায়ানের বকা খেয়ে মুখটা ছোটো হয়ে আসল আরাবীর।আবার প্রচুর লজ্জাও লাগছে জায়ানের সামনে এভাবে থাকতে।লজ্জা থেকে বাঁচতে আরাবী জায়ানের বুকেই মিশে গেলো।ঝাপ্টে ধরলো জায়ানকে।মিইয়ে গেলো জায়ানের বুকের মাঝে।প্রথমে একটু চমকালেও পরক্ষনে বিষয়টা বুঝতে পেরেই হেসে দিলো জায়ান।মেয়েটা লজ্জার হাত থেকে বাঁচার জন্যে এমনটা করেছে জায়ানের বুঝতে বাকি নেই।জায়ান নিজেও জড়িয়ে ধরলো আরাবীকে। একহাত আরাবীর পিঠে রেখে আরেকহাত আরাবীর মাথায় রেখে হাত বোলাতে বোলাতে ধীর স্বরে বলে,’ আমাকে দেখে লজ্জার হাত থেকে বাঁচার জন্যে সেই ঘুরে ফিরে আমার কাছে এসেছ লজ্জা লুকোতে।’

জায়ানের কথায় হাসল আরাবী।লাজুক কণ্ঠে বলল,’আপনিই আমায় লজ্জা দেবেন।আবার আপনিই আমায় লজ্জা লুকোতে আপনার বুক পেতে দিবেন।’

‘ আমার বুকখানা তো আপনার জন্যে সবসময়ের জন্যেই খালি আছে ম্যাডাম।যখন মন চায় ঝটপট এসে লুকিয়ে পরবেন এখানে।’ বলেই আরাবীর চুলের ভাঁজে চুমু খেলো আরাবী।খানিকটা সময় এইভাবেই অতিবাহিত হলো।একে-অপরকে অনুভব করে কেটে গেলো অনেকটা সময়।হুশ ফিরতেই আরাবী ছোটো কণ্ঠে বলে,’এইভাবেই থাকব আমি?’

চোখ বন্ধ করে জায়ান ধীর আওয়াজে বলে, ‘হুম! এইভাবেই থাকো নাহ।ভালো লাগছে তো।’

আরাবী জানে এতো সহজে জায়ান আরাবীকে ছাড়বে নাহ।তাই ও একটা ট্রিকস কাজে লাগাল।মিছে মিছে হাঁচি দেওয়ার অভিনয় করল।আরাবীকে হাঁচি দিতে দেখে জায়ান চমকে গেলো।আরাবীকে ছেড়ে ওর দিকে ভালোভাবে তাকিয়ে অস্থির হয়ে বলল, ‘ ইস, দেখলে তো ঠান্ডা লেগে গিয়েছে।ইস,আমিও নাহ।ভুলটা আমারই।চুলগুলোও ভেজা।দেখি এদিকে আসো।হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুলগুলো শুকিয়ে দেই।’

জায়ান আরাবীকে ধরে নিয়ে ড্রেসিংটেবিলের সামনে বসালো।তারপর হেয়ার ড্র‍য়ার দিয়ে আরাবীর চুলগুলো শুকিয়ে দিতে লাগল।আরাবী জায়ানকে দেখে মুঁচকি মুঁচকি হাসছে।জায়ান সেটা লক্ষ্য করল।ভ্রু-কুচকে জিজ্ঞেস করে,’ হাসছ যে?’

আরাবী হাসি মাখা ঠোঁটেই বলে,’ এমনিই।কেন আমি কি হাসতে পারি নাহ?’
‘হ্যা পারো।’
‘ তবে সমস্যা কোথায়?’
‘ সমস্যা কোথায় শুনবে?আবার লজ্জা পাবে না তো?’

আরাবী আনমনেই বলে, ‘ বারে আমি লজ্জা পাবো কেন?’

জায়ান আরাবী দুকাধে হাত রেখে আরাবীর কানের কাছে মুখ এগিয়ে নিলো।হুশ ফিরতেই চমকে উঠল আরাবী। দুরুদুরু বুক নিয়ে আয়নায় জায়ানের অবয়বের দিকে তাকিয়ে আরাবী।জায়ান ফিসফিস করে বলে, ‘ তোমার ওই হাসিমাখা মুখটা দেখতে আমার ভীষণ ভালোলাগে।তখন ওই হাসি লেপ্টে থাকা ঠোঁট দুটো আমায় ভীষণভাবে টানে।একটা ডিপ কিস করতে ইচ্ছে করে।সমস্যা তো এখানেই।আমি আমার মনের ইচ্ছা পূরন করলে তো।আবার তুমি আমায় অস’ভ্য উপাধি দিবে।’

লজ্জায় লালাভ আভা ছড়িয়ে পরলো আরাবীর মুখশ্রী জুড়ে।লোকটার লাগামহীন কথাবার্তায় আরাবী ভীষণভাবে লজ্জা পায়।লজ্জা পাওয়া আরাবীকে দেখছে জায়ান।মেয়েটাকে দেখলে শুধু দেখতেই ইচ্ছে করে।ওই মায়াবী মুখশ্রীটা নজরে আটকে যায়।ইচ্ছে করে মেয়েটাকে আদরে আদরে ভড়িয়ে দিতে।জায়ান আলতো হাতে আরাবীর চুলগুলো একপাশে সরিয়ে আনে।তখনই স্পষ্ট ওর নজরে আসে আরাবীর দেহে ওর দেওয়া ভালোবাসার চিহ্নগুলো।জায়ান সেখানে নরমভাবে হাত বোলালো।কাঁপছে আরাবী।লোকটার স্পর্শে বুকের ভীতর তোলপাড় হচ্ছে আরাবীর।জায়ান গভীর কণ্ঠে বলে, ‘ ভীষণ ব্যাথা লেগেছে তাই নাহ?’

আরাবী মাথা নিচু না বোধক নাড়ালো।জায়ান গভীরভাবে ঠোঁটের স্পর্শ দিলো আরাবীর ঘারে।চোখ বন্ধ করে নিলো আরাবী।শ্বাস-প্রশ্বাস ভারি হয়ে আসল আরাবীর।থেমে নেই জায়ান।অধরের স্পর্শে ভড়িয়ে দিচ্ছে আরাবীকে।আরাবী হাত উঠিয়ে জায়ানের চুল খামছে ধরল।লোকটার স্পর্শগুলো পাগল করে তোলে ওকে।শিহরণ বয়ে যায় দেহের প্রতিটা অঙ্গে।ঘার থেকে সরে আসল জায়ান।আরাবীর কোমড় পেচিয়ে ধরে আরাবীকে ঘুরিয়ে নিজের দিকে ফিরিয়ে নেয়।কাল বিলম্ব না করে চোখ বন্ধ করে থাকা আরাবীর কাঁপতে থাকা অধরে অধর মিলিয়ে দিলো।কেঁপে উঠে আরাবী।দুহাতে খামছে ধরে জায়ানের পিঠ। ঠোঁট ছেড়ে এইবার গলায় নেমে আসল জায়ান।জায়ানের ঠোঁটজোড়া আস্তে আস্তে আরাবীর পুরো শরীরে বিচড়ন করতে লাগল।একপর্যায়ে আরাবীর গায়ে পেঁচিয়ে থাকা তোয়ালেটাও খসে পরলো।ভালোবাসায় উন্মাদ জায়ান দুহাতে কোলে তুলে নিলো আরাবীকে।আরাবীকে বিছিনায় সুইয়ে দিয়ে আবারও আরাবীর মাঝে ডুব দিলো জায়ান।আবারও একে-অপরের মাঝে হারিয়ে গেলো দুজন ভালোবাসার মানুষ।

#চলবে_____________

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।কেমন হয়েছে জানাবেন।গল্পটা প্রায় শেষ পর্যায়ে।এইতো আর কিছু পর্ব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here