#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_০৫
#জান্নাতুল_বিথী
অয়নের ল্যাবটপে বড় বড় করে লেখা “Adi Khan”s information ” আর তার নিচেই আদির একটা ছবি। এটা দেখে আমি চোখ বড় বড় করে অয়নের দিকে তাকাই। আমাকে এভাবে তাকাতে দেখে অয়ন নিজেও ওই দিকে তাকায়।উনাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে উনি বেশ ঘাবড়ে গেছে।…
“আদির information দিয়ে আপনি কি করবেন।…???”(আমি)
“আ-ম আসলে দেখছিলাম কেমন ছেলের সাথে তোমার বিয়ে হচ্ছে।”(অয়ন)
“সেটা দেখার জন্য তো আমার বাবা মা আছে।তাহলে আপনি দেখছেন কেনো..???”(ভ্রু কুচকে)
“দেখো তোমাকে আমি সব প্রশ্নের উত্তর দিকে বাধ্য নয়।আর এতো প্রশ্ন করা আমি পছন্দ করি না।(অয়ন)
বলেই আমার পাশ দিয়ে গটগট করে নিচে চলে যায়। কি ছেলেরে বাবা। হঠাৎ আমার মনে হলো একবার ভেতরে গিয়ে দেখলে কেমন হয়।অয়ন যেহেতু এখানে নেই।তাহলে আমি বরং একবার গিয়ে দেখে আসি অয়ন আদির ব্যাপারে কি জানতে চায়। যে ভাবা সেই কাজ।আমি অয়নের রুমে যাবো এমন সময় সিমি আমাকে ডাক দেয়। তারপর ওই দিকে না গিয়ে সোজা নিচে যেতে শুরু করি। মাঝে মাঝে এটা মনে হয় যে ওরা পুরো ফ্যামিলি আমার পেছনে পড়ে আছে।উফফফ ভাবতেই বিরক্তি লাগছে। কিন্তু অয়নের মা বাবা সিমি ওরা পুরোই অয়নের চাইতেও ভিন্ন। অয়ন তো পুরোই ঘোমড়া মুখো। কারো সাথে একটু সুন্দর করে কথাও বলে না। অবশ্যই সেটা মনে হয় শুধু আমার বেলায়। আর নয়তো সবার সাথেই সুন্দর করে কথা বলে।
___________________________
“সামান্য একটা মেয়ে কে তোমরা খুজে পাচ্ছো না আজ ৩ দিন ধরে।ভাবা যায় এসব গর্দভের দল। তোমাদের এতো টাকা করে কেনো দেই আমি।…???”(……..)
“স্যার আমরা অনেক খুজেছি কিন্তু মেম কে কোথাও পাই নাই। এখন কমন জায়গার মধ্যে শুধু অয়ন চৌধুরি দের বাড়ি বাকী আছে।”.(অপর পাশে)
” ওদের বাড়িতে খোজার দরকার নেই।অয়ন চৌধুরি নিজের বাবাকে যথেষ্ট পরিমানে ভয় পায়।আর এভাবে একটা মেয়েকে লুকিয়ে বিয়ে করে কখনোই নিজের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার মতো বোকামি ওই ছেলে করবে না।”(……….)
“ওকে স্যার আমরা উনাকে খুজে বের করার চেষ্টা করবো।..”(অপরপাশে)
“দিয়া হলো আমার সোনার ডিম।ওকে কখনোই হাত ছাড়া করা যাবে না।ওর যতো বিয়েই হোক না কেনো আমার ওকে চাই ই চাই।…”(……….)
বলেই ফোনটা কেটে দেয়। আর সাথে সাথে ফোনটা চুড়ে ফেলে দেয় মেঝেতে। অন্ধকার রুমে জোরে জোরে পায়চারী করতে থাকে। হঠাৎ কারো স্পর্শে চমকে উঠে ওই দিকে তাকায়।…
“কি হইছে তোমার ভাইয়া….????”(……)
“আমার কিচ্ছু ভালো লাগছে না।দিয়াকে এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায় নাই। আমি…..”(…..)
“কুল ভাইয়া এমন করছো কেনো। ওর খবর তো আমি পেয়ে গেলাম…(…..)
“সত্যি…???কোথায় ও…???”(…..)
“রিল্যাক্স ভাইয়া। দিয়া এখনও অয়ন চৌধুরির সাথেই আছে।কিন্তু কোথায় আছে সেটা এখনও জানতে পারি নাই।”.(…….)
“কিভাবে জানলে তুমি এসব…..???”(….)
“উফফ ভাইয়া সব কাজ কি তুমি একাই করবে নাকি।আমাকেও একটু করতে দাও। “(শয়তানি হাসি দিয়ে)
_________________________
বিকেল বেলা……
অয়ন আমার হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। আর আমিও বাধ্য মেয়ের মতো উনার পেছনে পেছনে হাটতেছি। কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে নিজেও জানিনা। গাড়ি থেকে নামার পর প্রায় ১০ মিনিট ধরে হাটতেছি।এখনও পর্যন্ত থামার কোনো নাম গন্ধও নেই। আমার পা আর চলে না।তাই দাড়িয়ে পড়লাম। আমাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে অয়ন পেছনে ফিরে ভ্রু কুচকে তাকায়….
“কি হলো…???”(অয়ন)
“আমি আর হাটতে পারছি না।কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে……”(হাপাতে হাপাতে)
আমাকে এভাবে হাপাতে দেখে অয়ন হেসে দেয়। উনাকে এভাবে হাসতে দেখে আমি উনার দিকে তাকিয়ে থাকি।আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে অয়ন ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে কি….???
” কিছু না… “(আমি)
“ওহহহহ ঠিক আছে চলো এখন। আর অল্প একটু আছে।.
বলেই আবার হাটতে শুরু করে।..
“কোথায় যাচ্ছি আমরা..????(আমি)
“গেলেই দেখতে পাবে…”
“দেখেন ভালো হচ্ছে না কিন্তু।একে তো আমাকে জোর করে এখানে আনলেন তার উপর এখন কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন তা বলছেন না।…”
“কি প্রমান আছে যে আমি তোমাকে জোর করে এনেছি…????”
“কিহহহহহ এখন আপনাকে প্রমান দিতে হবে..????”
“হুমমমম কেনো নয়। ”
“অবশ্যই আপনি তো আইনের লোক আপনারা প্রমান ছাড়া কিছুই বুজেন না।হলেও হতে পারে।”(বিরবির করে)
“কিছু বলছো……”
উনার কথা শুনে হঠাৎ আমি থমকে যাই। এতক্ষন অয়নের সাথে কথা বলতে বলতে আসার কারনে আমি চারদিকে খেয়াল করি নাই। কিন্তু এখন আমি কথা বলার ভাষাই হারিয়ে ফেলেছি। একটা নদীর ধারে আমরা দাড়িয়ে। নীল আকাশের ফানে চারদিকে সবুজ গাছপালা। আর আমরা কাশফুলের মাঝখানে দাড়িয়ে আছি। বাতাশের কারনে কাশফুলের ক্ষুদ্র কনা গুলো উড়ে যাচ্ছে। আর একদিক থেকে অন্য দিকে হেলে পড়ছে।যা প্রকৃতির দৃশ্যকে আরও মনোরম করে তুলছে।আমি শুধু মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছি। আমার ঠোটের কোনে হাসি ফুটে উঠে। আমি দৌড় দিয়ে আরও মাঝখানে চলে যাই। বাতাশের কারনে আমার অবাধ্য চুল গুলো বারবার মুখের উপর আছড়ে পড়ছে। কিন্তু সেদিকে আমার কোনো খেয়াল নেই। আমি দুহাত মেলে শ্বাস নেই।আমার সাথে যে আরও কেউ আছে তা যেনো আমি ভুলেই গেছি। অনেক্ষন মন খুলে হাসি আমি। নিমিষেই চারপাশের সব কথা ভুলে যাই আমি।
অন্যদিকে….
অয়ন…..
আমি মুগ্ধ নয়নে দিয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।সত্যিই ওকে হাসলে এতটা মায়াবি লাগে যে ওর দিক থেকে চোখ সরানো যায় না। কেনো যে এই মেয়েটা হাসে না আল্লাহই জানে।সামান্য ওর মুখে হাসি ফোটানোর জন্যই তো এতোকিছু। আমার সব কিছু সার্থক হলো এবার। আমি আস্তে আস্তে দিয়ার দিকে এগিয়ে যাই।ওকে এই মুহূর্তে কেউ দেখলেই বলবে এতো ফুলের মাঝে একটা নীল পরী দাড়িয়ে।…
“তোমার মুখের এই হাসিটার মাঝেই যে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। কিন্তু তুমি তো কখনোই হাসতে জানো না।এবার থেকে সব সময় নিজের মুখে এই হাসি টা যত্ন করে লাগিয়ে রাখবে…..”(আলতো হাতে মুখের উপর থেকে চুল গুলো সরিয়ে)
চলবে……..
[ আমি অনেক অসুস্থ তাই গল্প লিখতে পারি নাই।কালকে আমাদের এইদিকে electricity ছিলো না। তাই গল্প দিতে পারি নাই।এখন আসতেই দিয়ে দিলাম।আর দিন দিন রেসপন্স এতো বেগে যাচ্ছে যে গল্প দিতেই ইচ্ছে করে না😒]