অন্তরালের কথা পর্ব ৪৩

#রিপোস্ট
#অন্তরালের_কথা
লেখা – জান্নাতুল ফেরদৌস মাটি
পর্ব – ৪৩
.
.
” দেখছিস বাবু, মা কীভাবে কাঁদছে বাবার জন্য। এবার বাবা আসলে আচ্ছা করে বকে দিস। যেন মা’কে ছেড়ে আর কোত্থাও না যায় কেমন? ”
একমনে কথা বলছিল তানহা তার অনাগত ভবিষ্যতের সাথে। তার মাঝে হঠাৎ ফোন বেজে উঠতে ভরকে যায় তানহা। ফোন রিসিভ করে অভিমানী স্বরে বলল,
” একা একা বেশ সুখে আছ। কেউ জ্বালানোর নেই, কারোর জন্য ঘুম নষ্ট করে রাত জেগে থাকতে হয় না, কাজ ফেলে কারো চিন্তায় বাড়ি দ্রুত ফিরতে হয় না। তাই না অতল? ”
” কি বলছ এসব বউ ! তুমি আমায় নিয়ে এরকমটা ভাবতে পারলে? ”
” না ভেবে কী করব? তুমি যেরকম কাজ করেছ ঘুরেফিরে তো এই ভাবনাটাই মাথায় খেলে। তুমি কী করে পারলে এই অবস্থায় আমায় একা ফেলে যেতে? ”
” কিন্তু আমিতো…. ”
অতলকে থামিয়ে দিয়ে তানহা বলল,
” আগে আমি বলি তারপর তুমি বলো। তুমি জানো এই অবস্থায় সব ব্যাপারে কত কষ্ট হয় তারপরও তুমি আমাকে একা ফেলে চলে গিয়েছ। একবার ভেবেছ, আমি একা একা কীভাবে সবকিছু করব? ভেবেছ, মাঝরাতে গলা শুকিয়ে গেলে সে শুকনো গলা ভেজাবো কি করে? হ্যাঁ, হয়তো পানি পাশের টেবিলেই থাকে তবে এ শরীর নিয়ে কি খুব সহজেই উঠা যায়?”
” না, উঠা যায় না। কিন্তু আমিতো তোমার ভালোর জন্যই সেখানে রেখে এসেছি। এখানে আসলে তোমার আরও বেশি কষ্ট হত। আমি থাকব ব্যবসার কাজে বাহিরে বাহিরে তুমি একা সারাদিন ঘরে কী করবে সেই কথা ভেবেই রেখে এসেছি। এখনতো ওখানে তুমি দিনের বেলা শুয়ে বসেই কাটাও, মা আর নিদ্রা সব সামলায়। কিন্তু এখানে এলে সব তো তোমাকেই করতে হত। তাই না? ”
” কিন্তু রাতটা তো নির্ভয়ে কাটাতাম সেটা বুঝো না? ”
” ও আচ্ছা, এই ব্যাপার! এবার বুঝেছি বউটার আসল অভিযোগ কী। ”
” ঘোড়ার ডিম বুঝেছ। ”
” ঠিকই বুঝেছি গো। হো..হো…”
” বুঝলে বুঝপাতা, না বুঝলে তেজপাতা হুহ। ” কিছুটা রেগে বলল তানহা।
তানহার রাগান্বিত স্বর শুনে অতল কিছুক্ষণ হাসল। কোনমতে হাসি থামিয়ে বলল,
” আচ্ছা শোনো। ”
” ফোন কানে ধরেই রেখেছি। যা বলার বলে ফেলো। ”
” রাতের খাবার খেয়েছ? ”
” না খেয়ে আজ অবধি ঘুমিয়েছি? ”
” আহা, বাঁকা বাঁকা উত্তর দিচ্ছ কেন? একটু ভালো করে কথা বলো না। সারাদিন কাজ করে রাতে যদি তোমার হাসির আওয়াজ না পাই মন কি শান্ত হয় বলো। ”
তানহা কান্নাভেজা কন্ঠে বলল,
” তুমি চলে এসো প্লিজ, নয়তো আমায় নিয়ে যাও। সেই তিন মাস আগে দেখেছিলাম তোমায়, ছুঁয়ে ছিলাম তোমায়। আমার আর এক মুহুর্তও ভালো লাগছে না তোমাকে ছাড়া। অনেক কষ্ট হচ্ছে। প্লিজ তুমি চলে এসো, প্লিজ। ”
” আমি যদি এখন চলে আসি বেশিদিন থাকতে পারব না। বড়জোর চার কি পাঁচ দিন থাকতে পারব। বড় একটা ডিলের কাজ চলছে। যেখানে প্রতিমুহূর্ত আমাকে সটান দাঁড়িয়ে থেকে ডিরেকশন দিতে হচ্ছে। একটু হেলাফেলা করলেই লেভাররা কাম তামাম করে দিচ্ছে। তাই বলছি কি চার পাঁচ দিনের জন্য এসে কি করব একেবারে কাজটা শেষ করেই আসি। ”
” কতদিন লাগবে তোমার এই কাজ শেষ হতে? ”
” এই মাস দুয়েক। ”
” ওহ্! এতদিনে ডেলিভারির সময়ও প্রায় হয়ে আসবে। ”
” হুম। ”
” আচ্ছা, তুমি মনযোগ দিয়ে কাজটি শেষ করো। আমি নিজেকে সামলে রাখতে পারব ইনশাআল্লাহ। ”
” রাগ করো না বউ। আমার এই কষ্ট কার জন্য তোমাদের জন্যই তো, তাই না?”
” হুম। আচ্ছা ফোন রাখছি। বেশ রাত হয়েছে ঘুমাতে হবে। ”
অতল বেশ ভালো করেই জানে তানহা কথাগুলো অভিমান করে বলছে। কিন্তু এখানে অতলের করার যে কিছু নেই। আর এই মুহুর্তে অতল হাজার চেষ্টা করলেই তানহার অভিমান ভাঙাতে পারবে না, যতক্ষন অবধি না তানহা নিজে ভাঙাতে চাইবে। তাই অযথা বাক্য খরচ না করে মোবাইলের মাঝেই বড় করে একটা চুমু খেয়ে বলল,
” আচ্ছা বউ ঘুমাও। ”
” হুম। ”
বলেই অতলের মুখের উপর ফোনটি কেটে দিল তানহা। আর পাশ ফিরে অতলের মাথার বালিশটি বুকে জড়িয়ে তাতে চুমু খেয়ে চোখ বুজে নোনা জল ফেলতে লাগল।
.
” দৈনিক মাঝরাতে এভাবে মনমরা হয়ে বসে থেকে কী প্রমাণ করতে চাইছ তুমি? ”
নিস্তব্ধ মনে উচ্চস্বরে কারো আওয়াজ শুনতে পেয়ে ঘাড় কাত করে তাকাল নিদ্রা। তবে চমকাল না। আর চমকাবেই বা কেন! এ ঘরে যে তিহান ব্যতীত অন্যকেউ নেই। পুনঃরায় ঘাড় ফিরিয়ে মিটমিট করা তারাগুলোর অবস্থানের দিকে তাকালো।
পেছন থেকে তিহান বলল,
” কথা কি কানে যাচ্ছে না? ” নিদ্রা স্থির গলায় বলল,
” কান যেহেতু আছে অবশ্যই আপনার কথা যাচ্ছে। তবে সেই কথার যথাযথ উত্তর আমার কাছে নেই। তাই চুপ করে আছি। ”
” চুপ করে থাকাটাই কি সবকিছুর সমাধান? ”
” কখনোই না। ”
” তাহলে? ”
” জানি না। ”
তিহান দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
” এতকিছু সহ্য না করে চলে গেলেই পারো। এই নিয়ে কমবার তো বলিনি নিজেকে মুক্ত করে নিতে। কিন্তু তুমিতো আঠার মত লেগে বসে আছ। নিজের বয়সটা দেখেছ? কেন নিজের জীবনটা এভাবে নিঃশেষ করে দিচ্ছ? ”
” চলে গেলেই কি নতুনভাবে জীবন শুরু করব? ”
” না করার কারণ তো দেখছি না। ” ইজিচেয়ারে বসতে বসতে বলল তিহান।
” আপনার চোখে ধুলো জমে আছে তাই হয়তো দেখছেন না। ধুলো কেটে গেলেই সব দেখতে পাবেন। ”
” আমার বয়স কত জানো? ”
” জানার চেষ্টা করিনি। ”
” মনের মাঝে জানার ইচ্ছে পোষণ হয়নি? ”
” তাহলে এতদিন জেনে নিতাম। ”
” তোমার নিজের বয়স অবশ্যই জানো?”
” এটাই কি স্বাভাবিক নয়? ”
” তাহলে তোমায় একটা অংক দি।তোমার বয়সের সাথে ২ গুন করে ৩ বিয়োগ করো, আমার বয়স পেয়ে যাবে। ”
” হুম। ”
” করেছ অংক? ”
” হুম। ”
” কত এসেছে উত্তর? ”
” ৩৩। ”
” কী দাঁড়ালো তাহলে? ”
” জানি না। ”
” বেশ, তবে আমিই বলে দিচ্ছি। আমার বয়স তোমার বয়সের দ্বিগুণের থেকেও বেশি। সর্বোচ্চ বাঁচলে আর ২০ বছরই বাঁঁচব। যেখানে তুমি কেবল ১৮ বছরের যুবতী । যদিও পুরোপুরি এখনো যুবতীর খাতায় নাম লিখোনি। কি লাভ আমার নাম ধরে থেকে? মুক্ত হয়ে দেখোই না অল্প বয়সের যুবকদের লাইন লেগে যাবে তোমার পিছনে। ”
হুট করেই দমকা হাওয়া বয়ে যেতে লাগলো বাহিরে। নিদ্রার হাত খোঁপা করা চুলগুলো পিঠময় ছেড়ে দিল উন্মুক্ত ভাবে উড়ে বেড়াবার জন্য। একদিকে ঘন চুলগুলো উড়ে উড়ে ধপাস করে পিঠে পড়ছে অন্যদিকে বেলকনির বাহিরে একহাত দিয়ে বাতাসকে ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা করতে করতে নিদ্রা বলল,
” আপনি কি চান টিকিট বিহীন যুবক ছেলেদের লাইন দেখতে? ”
” মানে? ”
” ওই যে বললেন অল্প বয়সের যুবকদের লাইন পড়বে সেটাই বললাম দেখতে চান কি-না সেই লাইন। ”
” তুমি খুশি খুশি দেখালে অবশ্যই আমি খুশি খুশি দেখব। ”
” হুমায়ুন আহমেদ একটি কথা বলেছিলেন, জানেন? তবে সেই কথাটি তার মত করে তো বলতে পারব না, তাই নিজ ব্যাখ্যাতেই বলছি। ”
কিছুটা সময় থেমে নিদ্রা বলল,
” একটা সময় আসে যখন মেয়েদের কনে সাজতে ইচ্ছে হয়। আর একটা সময় আসে যখন মেয়েদের মা হতে ইচ্ছে হয়। ”
বলেই খিলখিল করে হেসে তিহানের পাশ কাটিয়ে নিদ্রা ঘরে চলে গেল।
ফাইলপত্র সামনে নিয়ে অফিসের চেয়ারে বসে আছে তিহান। তবে কাজ কর্মে বিন্দুমাত্র মন নেই তার। মাথায় শুধু একটি জিনিসই ঘুরপাক খাচ্ছে। যেটা সে কাউকে বলতে পারছে না। অবশ্য এটা কাউকে বলার মত কথাও না। তাই চেপে রাখতে পারছে সে। একদৃষ্টিতে বাহিরের দিকে তাকিয়ে ডান হাতের মাঝের দু’আঙুলের ফাঁকে কলম রেখে তা নাচাতে নাচাতে মনে মনে ভাবল,
” শেষ কথাটি বলে কী বুঝাতে চেয়েছিল নিদ্রা তাকে! তার ওপর আবার হাসির খিলখিল শব্দ। এসবের মানে কী দাঁড়াচ্ছে! আচ্ছা, নিদ্রা কি নিজের প্রাপ্য অধিকারের কথা বুঝিয়েছে না-কি…. ধ্যাৎ! সে এসব কী ভাবছে। যেখানে নিদ্রার হাত অবধি সে ছুঁয়ে দেখেনি সেখানে মা হবার মত অবাস্তব কল্পনা ভাবাতো দূরে থাক মাথাতেও আনার মত মেয়ে না নিদ্রা। তাহলে সেই কথার মানে কী? উফফ, আর ভাবতে পারছে না সে।মাথা ধরে আসছে। সেই যে গতকাল রাত থেকে এই ভাবনায় ডুব দিয়েছে সে আরেক রাত হতে চলল এখনো ওই ভাবনাতেই মজে আছে। তাহলে মাথা ধরবে না-ই বা কেন! কিন্তু এর উত্তর খুঁজে পাওয়ার আগ পর্যন্ত যে তার মনের নিস্তার নেই। তাকে যে এই ছোট্ট কথার ব্যাপক উত্তর বের করতেই হবে। ”
কলমটি হাত থেকে রেখে কেবিনের ফাইলপত্র গুছিয়ে বসকে বলে ছুটি নিয়ে বেরিয়ে গেল তিহান বাসার উদ্দেশ্যে।
.
সারাদিন অযথা শুয়ে বসে থেকে বিরক্ত হয়ে গিয়েছে তানহা। তারপরও মা আর নিদ্রা তাকে কিছুই করতে দেয় না। তাই ক্ষানিকটা রাগারাগি করে ঘরে ফিরে এসে নবীদের জীবনী নিয়ে বসেছে। তার যে এসব ধরনের বই পড়তে ভীষণ ভালো লাগে। বইয়ের পাতা একটি উল্টোতেই নিদ্রা ঘরের দরজার ওপারে হাজির হলো। বলল,
” আপু আসব? ”
তানহা বই থেকে চোখ ফিরিয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে বলল,
” না, চলে যা। ”
তানহার মুখ থেকে না শুনেও মুচকি হাসি দিয়ে ঘরের ভেতর চলে এলো নিদ্রা। তানহার পায়ের কাছে বিছানায় বসতে নিলে তানহা বলল,
” তোকে না চলে যেতে বললাম? ”
” হুম, তো? ”
” তো কী? চলে না গিয়ে এখানে এলি কেন? ”
” ইচ্ছা হয়েছে তাই। ”
” তোর তো প্রতিদিনই ইচ্ছে হয় তাহলে ঢং করে জিজ্ঞেস করিস কেন? সোজা চলে এলেই পারিস। ”
” আরে ওই যে ভদ্রতা আছে না, সেই ভদ্রতার খাতিরে জিজ্ঞেস করি। মন থেকে নয়। ”
” এতো ভদ্রতা রাখিস কোথায়? ”
” কোথায় আবার মস্তিষ্কের ভেতর। নাহলে তো সবই ভুলে বসব। হি হি ”
” আর দাঁত কেলিয়ে হাসতে হবে না। কি বলতে এসেছিস বল। ”
” কিছু বলতে আসিনি তো। ভালো লাগছিল না, তাই এমনি এসেছি। যদি গল্প করে মন ফ্রেশ করা যায় সেজন্য। ”
” খুব ভালো করেছিস। আমারও মনটা ভালো লাগছিল না। তবে তুই এখন এসেছিস, আমি শিউর আমাদের দুজনের মন ই সেই লেভেলের ভালো হয়ে যাবে। ”
” হি হি… ”
” নিদ্রা তোকে একটা প্রশ্ন করি? ”
” একটা কেন একশটা করো। তোমার কি প্রশ্ন করতে বাঁধা আছে? ”
” তা নেই। তবে…এটা তোর পার্সোনাল বিষয়। তাই জিজ্ঞেস করে নেয়াই ভালো। ”
” কী এমন পার্সোনাল যার জন্য তোমার অনুমতি নিতে হচ্ছে? ”
তানহা কিছুটা সময় থেমে বলল,
” ভালো আছিস তুই? ”
” হঠাৎ এরকম প্রশ্ন করলে যে? ”
” ইচ্ছে হলো জানতে। ”
” হুম। ”
” তুই কি জানিস ‘ তুই ‘ শব্দটি কেন ব্যবহৃত হয়? কেবল কিছু গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জন্য। যে সম্পর্ক খুব কম সময়েই তোর আর আমার মাঝে গড়ে উঠেছে। ”
নিদ্রা ছোট্ট করে এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,
” তুমি আমার জা হলেও বড় বোনের মত ভালবাসি, সম্মান করি। তাই বলছি কী আপু এই বিষয়টা এখানে ক্লোজ করে দেয়া হোক। কিছু কিছু কথা প্রকাশ করার চেয়ে অপ্রকাশিত থাকাই ভালো। এতে সবার মঙ্গল।”
” তারমানে তুই ভালো নেই। তাই তো? ”
” বললাম তো আপু, বাদ দাও না। এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে ভালো লাগে না। আর জীবনতো কোথাও পালিয়ে যাচ্ছে না, কিংবা ফুরিয়ে যাচ্ছে না যে, এখনই ভালো থাকতে হবে। আমার বিশ্বাস একদিন না একদিন ঠিকই আমি ভালো থাকব আর খুব ভালো ভাবেই ভালো থাকব ইনশাআল্লাহ। ”
তানহা কিছু বলতে নিলেই দরজার অপর পাশ থেকে তিহান বলে উঠলো,
” নিদ্রা! ঘরে এসো কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজে পাচ্ছি না। ”
বলেই তিহান হনহন করে চলে গেল।
.
নিদ্রা ঘরে ঢুকতেই তিহান একগাদা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল তার দিকে। বলল,
” এতো পিরীতের কী আছে ওদের সাথে? সারাদিন শুধু অন্যদের ঘরেই পড়ে থাকো। কি সুখ-দুঃখের আলাপ করে সবাইকে জানান দিচ্ছ যে, আমি কতটা খারাপ! লজ্জা করে না, মানুষের সাথে এসব নোংরা বিষয় নিয়ে কথা বলতে? আর এতোই যখন সুখে থাকার ইচ্ছে ছিল তোমার থেকে দ্বিগুণ বয়সের লোককে বিয়ে করতে রাজী হয়েছিলে কেন? কচি দেখে ছেলে নিতে পারোনি? শারীরিক, মানসিক সবদিক থেকেই সুখে থাকতে। ”
” কি বলছেন এসব আপনি? আপনার মুখে কি কিছুই আটকায় না? ”
” না, আটকায় না। কী বলছিলে তোমার আপুকে? ”
” কি বলেছি? ”
” কিছু বলোনি? সুখ-দুঃখ নিয়ে কোনো কথা বলোনি? ”
নিদ্রা কিছুটা শক্ত গলায় বলল,
” হ্যাঁ বলেছি। তবে আপনি যে টোনে কথা বলছেন সেরকম কোনো কথা আমাদের মাঝে হয়নি। ”
” ও রিয়েলি! ”
” জ্বি। ”
” তাহলে এ কথাটি কে বলেছিল, ‘ একদিন না একদিন ঠিকই আমি ভালো থাকব আর খুব ভালো ভাবেই ভালো থাকব ইনশাআল্লাহ। ‘ বলো কে বলেছিল? ”
” এ কথা বলায় কি খুব দোষ হয়ে গিয়েছে? আর বললেও আমিতো সত্যি বলেছি মিথ্যে নয়। তাহলে গায়ে এতো ফসকা পড়ছে কেন? ”
” ফসকা পড়ার মত কথা কি বলোনি তুমি? ঘরের কথা রাস্তায় গিয়ে জনে জনে বলে বেড়াবে আর জিজ্ঞেস করলেই দোষ? ”
” প্রথমত, আপনার নিজের পরিবারের মানুষ যে আপনার কাছে রাস্তাঘাটের মানুষ তা আমার জানা ছিল না। দ্বিতীয়তো, আমি কি আদৌ সুখে আছি? আপনিও জানেন আমিও জানি,আমরা কেউই সুখী নই। তাহলে সুখ-দুঃখের কথা বললে দোষ কোথায়? আর এমনতো না যে, ভেতরকার সব কথা বলে দিয়েছি। এতে এতটা রিয়েকশন দেখানোর কী আছে? ”
.
.
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here