-‘ ১৫ বছর বয়সে কারো বিয়ে হয় স্যার, শুনেছেন কখনো? আমার হয়েছে! তাও তার সাথে যাকে আমি ছোটবেলা থেকে নিজের মামাতো ভাই হিসেবে জানতাম। আমার কাজিনের সাথে বিয়ে হয়েছে। বংশের নিয়ম বলে, নানু আমায় জোর করে বিয়ে দিয়েছে গত পরশু! ‘
কাতর কন্ঠে নতজানু হয়ে কথাগুলো বলল আয়ন্তিকা। মাহিন স্যার হতভম্ব। এই বাচ্চা মেয়েটার বিয়ে হয়ে গেছে? এইতো সেদিন ক্লাসে পড়া না পারার জন্য তিনি আয়ন্তিকা কে কানে ধরে উঠবস করালেন আজ নাকি সেই কিশোরী মেয়ে বিবাহিত!
মাহিন স্যার আহত হয়ে বললেন,
-‘ স্কুলে আসিসনা এজন্য আয়ন্তি?’
-‘ জি স্যার। ‘
-‘ পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়েছে তোর নানু?’
-‘ নাহ্! নানু বলেছে অহর্নিশ ভাই পড়াশোনা করার অনুমতি দিলে তার কোনো আপত্তি বা নিষেধাজ্ঞা নেই আমার পড়াশোনায়। ‘
মাহিন স্যার চোখের চশমাটা টেনে ওপরে তুলে বললেন,
-‘ অহর্নিশ কে?তোর মামাতো ভাই?যার সাথে তোর বিয়ে হয়েছে, ‘
আয়ন্তিকা নাক টেনে বলল,
-‘ জি স্যার। স্যার আপনি চলে যান এখন। নানু আপনাকে দেখলে আমায় বকাঝকা করবে! ‘
মাহিন স্যার মাথা নাড়ে। সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বেড়িয়ে চলে যায় আহমেদ ভিলা থেকে। তার মনে কষ্ট জমেছে! আয়ন্তিকার জন্য কষ্ট লাগছে খুব। এত অল্প বয়সে বিয়ে দেয়ার কি দরকার? এত বড়লোক আয়ন্তিকার পরিবার। এমন তো না যে অভাবের কারণে মেয়ের ভরণপোষণ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। যদিও বা তিনি অবগত জমিদার বাড়ির নিয়ম কানুন সম্পর্কে। তবুও আয়ন্তিকার জন্য তার খারাপ লাগছে বড্ড!
.
আয়ন্তিকা বিষন্ন চাহনিতে বিশাল বড় বাড়িটার সামনে থাকা পুকুর ধারে বসে আছে! তার সবকিছু তিক্ত লাগছে। এমনকি নিজেকেও। কেনো এমন হলো তার সাথে?এতো অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দিলো। বোঝা হয়ে উঠেছিলো কি আয়ন্তি পরিবারের? তবে, বিয়ে দিলো তো দিলো তা অহর্নিশ ভাইয়ের কাছেই কেনো?
-‘ আয়ন্তি, অহর্নিশ রুমে বসে তোর জন্য অপেক্ষা করছে আর তুই পুকুর পাড়ে বসে কি করছিস?’
স্ব- চকিত দৃষ্টিপান নিয়ে আয়ন্তিকা পিছন তাকায়। তার মা ক্লান্ত মুখ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অহর্নিশ তার জন্য অপেক্ষা করছে কথাটা শুনতেই ধ্বক করে উঠলো যেনো আয়ন্তিকার বুক! মনে মনে সে নিজেকে প্রশ্ন করলো, ‘এতো তাড়াতাড়ি অহর্নিশ ভাই ঢাকা থেকে চলে এসেছে?’
-‘ কিরে? এখনো বসে আছিস কেনো। তোর রুমে যা।ওখানেই অহর্নিশ! কিছু কথা বলবে তোর সাথে।’
-‘ যাচ্ছি তো! ‘
পুকুর পাড় থেকে উঠে দাঁড়ায় আয়ন্তিকা। প্রথম বার শাড়ী পড়েছে। গ্রামে বড় হলেও সে কখনো শাড়ী পড়েনি। এতো প্যাচ ওয়ালা ত্যানাকাপড় তার পছন্দ না একটুও! আয়ন্তিকার গ্রামটা এখন গ্রাম না বলে শহর বললে ভুল হবেনা। তাই তার মাঝে গ্রাম্য মেয়ের আভাসটা তেমন দেখা যায় না। জমিদার বাড়ির মেয়ে হওয়াতে আলিশান এক আভাস ফুটফুটে অবস্থায় ফুটে থাকে।
আয়ন্তিকা কাঁপতে কাঁপতে নিজের রুমের সামনে এসে দাঁড়ায়। অহর্নিশ কে সে কখনো দেখেনি। কারণ এই লোক ঢাকায় থাকতো! আর তারা গ্রামে।বড় মামারা গ্রামে আসলেও অহর্নিশ কখনো তাদের সাথে আসতো না। শেষ কবে তাকে দেখা হয়েছে আয়ন্তিকা জানেনা! তবে শেষ দেখাটা মোটেও ভালো ছিলোনা। শেষ দেখার সময় এক বিশেষ ঘটনার জন্য আয়ন্তি অহর্নিশ কে ভয় পায়! ঘৃণা করে!
বিয়ের সময়ও অহর্নিশ কে দেখা হয়নি। বিয়ের পরই জরুরি কাজে অহর্নিশ ঢাকায় চলে গিয়েছিলো বলে।
শাড়ীর কুঁচিটা মুঠো করে ধরে নিয়ে জড়তাপূর্ণ পা যুগল আয়ন্তিকা সামনে টানে। গ্রাম্য মেয়ের পরিপূর্ণ আভাস না থাকলেও তার মাঝে লজ্জা, সংকোচ টুইটুম্বুর! সাথে অহর্নিশের প্রতি আলাদা করে ঘৃণা, ভয় তো এক্সট্রা করে আছেই।
দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকাকালীন রুমের মধ্য হতে গম্ভীর কন্ঠফালি ভেসে আসে। বাতাসের মাধ্যমে তা আয়ন্তিকার কানে এসে প্রতিফলিত হয়!
-‘ বাহিরে দাঁড়িয়ে না থেকে ভেতরে আসো আয়ন্তিকা। ‘
অহর্নিশের কন্ঠস্বর! একটু শিউরে উঠলো যেনো আয়ন্তিকা। কন্ঠস্বরটা একটু অন্যরকম। গম্ভীর হলেও এক ধরনের মাধুর্যপূর্ণ ভাব জরীয়ে আছে এতে।
আয়ন্তিকা তার শুকনো গলাটাকে ভেজানোর উদ্দেশ্যে ঢোক গিলে। সামনে পা বাড়ায়! রুমে প্রবেশ করার পর তার চোখদুটো সর্বপ্রথম যায় নিজের রুমে থাকা সোফার দিকে! সেখানটায় অহর্নিশ বসে, পায়ের ওপর পা তুলে! অহর্নিশের দৃষ্টিপান তার দিকেই নিবদ্ধ।
আয়ন্তিকার চোখদুটো কিছু মূর্হতের জন্য বেহায়া রূপে রূপান্তর হলো। আঁটকে রইলো চাহনি অহর্নিশ এর মাঝে। লম্বা, চওড়া সুর্দশন যুবকটির মাঝে! গোলাপি ফর্সা মুখে হালকা হালকা দাঁড়ির আবির্ভাব পুরো গোলাপি ঠোঁটদুটো হালকা করে কেমন কাঁপছে!
-‘ আমাকে দেখার অঢেল সময় পাবে। কিন্তু এখন আমার পাশে এসো বসো! আমার কিছু কথা আছে।’
লাজুকলতা রূপ ধারণ করে নিয়ে আয়ন্তিকা নতজানু হয়। মনে মনে নিজেকে শ’খানেক গালি দেয় সে। অতঃপর ক্ষ্যান্ত হয়! পা বাড়ায় সোফার উদ্দেশ্যে। তবে মাঝপথে ঘটে বিপত্তি। উপন্যাসের মতো করে মাঝপথে যেতেই অসাবধান বশত পায়ে লেগে শাড়ীর কুঁচিগুলো খুলে মাটিতে পড়ে যায়। তার পেট উন্মুক্ত! থরথর করে কাঁপুনি দিয়ে সে ক্রন্দনরত চোখে অহর্নিশের দিকে তাকায়। লজ্জা, ভয় সবকিছু একসাথে তাকে আক্রমণ করায় নিম্নকন্ঠে হু হু করে কেঁদে দেয় আয়ন্তিকা।
অহর্নিশের অদ্ভুত দৃষ্টি ছিলো আয়ন্তিকার দিকে। ও কাঁদতেই ভ্রু যুগল কিঞ্চিত কুঁচকায়। দাঁড়িয়ে পড়ে ছিলো সে তখনি, যখন মাঝপথে আয়ন্তিকার শাড়ী খুলে যায়। ভুলবশত অসর্তকবান দৃষ্টি অহর্নিশের তখন আয়ন্তিকার উন্মুক্ত পেটের দিকে চলে গিয়েছিলো।
অহর্নিশ আগায় সামনে! পা যুগল এর পদচারণ বন্ধ করে ঠিক আয়ন্তিকার সামনে আসার পর। ব্যাতিব্যাস্ত হয়ে অহর্নিশ বলল,
-‘ কাঁদছো কেনো অদ্ভুত? কান্না থামাও! ‘
আয়ন্তিকা কান্না থামায় না। লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়ে ধীরে ধীরে নিজের কান্নার আওয়াজ টা বাড়াতে থাকে।হুটহাট বিপাকে পড়া অহর্নিশ তখন ব্যাকুল হয়ে যায়। এই মেয়ের কান্নার আওয়াজ বাহিরে গেলে সবাই কি ভাববে? তা ভেবেই অহর্নিশের গলা শুকিয়ে আসছে!
অহর্নিশ নিজেকে ধাতস্থ করে স্বাভাবিক সুরে বলল,
-‘ আমি অন্যদিকে তাকিয়ে আছি আয়ন্তিকা। কান্না থামিয়ে শাড়ী ঠিক করে নাও! ‘
আয়ন্তিকা ক্রন্দনরত কন্ঠে বলল,
-‘ আমি শাড়ী পড়তে পারিনা। কুঁচি কিভাবে ঠিক করে তা জানা নেই আমার! ‘
বিরক্ত হয় অহর্নিশ। বিরক্তিতে ঠোঁট যুগল ‘চ’ শব্দটা উচ্চারিত করতে গিয়ে থেমে যায়। ঠোঁট যুগল জিহ্বা দ্বারা ভিজিয়ে নিয়ে কপালে দু আঙ্গুল রেখে বলল,
-‘ আমি বেড়িয়ে যাচ্ছি রুম থেকে! কাওকে ডেকে পাঠাচ্ছি। ‘
বলে এক সেকেন্ড ও ব্যায় করেনা অহর্নিশ। সঙ্গে সঙ্গে বেড়িয়ে যায়। তার বিরক্তির সাথে চরম ভাবে রাগ লাগছে! শব্দ করে দরজা চাপিয়ে চলে যায়।
আয়ন্তিকা কান্না থামিয়েছে মাত্রই। তখনি অহর্নিশ রুমে আসে। তার মুখটা একটুখানি হয়ে আছে। জরো সরো হয়ে থাকা আয়ন্তিকা নিম্ন কন্ঠে বলল,
-‘ কাওকে পাননি?’
-‘ নাহ! ‘
ছোট্ট করে জবাব দিয়ে চুপ হয়ে যায় অহর্নিশ। কিছু ভেবে সামনে আগায়।
আয়ন্তিকা ভীতি নিয়ে পিছে চলে যায় দু’কদম! ভীতিগ্রস্ত কন্ঠে সে বলল,
-‘ কি ব্যাপার?’
-‘ আমি শাড়ী ঠিক করে দিচ্ছি। ‘
-‘ না… ‘
কিছুটা উচ্চস্বরে বলল আয়ন্তিকা।
অহর্নিশ তা শুনে চোখমুখে ফের একবার বিরক্তি ভাবটা টেনে আনে। কন্ঠনালি শক্ত করে কঠিন গলায় বলল,
-‘ দেখো আয়ন্তিকা, আমার টাইম ওয়েস্ট করবে না।আমায় আজই ঢাকায় ফিরতে হবে! এখন কাওকে খুঁজতে গেলে নিচে যেতে হবে যা আপাতত আমি চাচ্ছি না। ‘
অহর্নিশ কথাগুলো বলে এগোয় আয়ন্তিকার দিকে।দিক – বেদিক না দেখে মাটি থেকে কুঁচি গুলো তুলে পরিপাটি মতোন গুছিয়ে নিতে থাকে। এরই মাঝে ওতপ্রোতভাবে ভাবে অবলোকন দৃষ্টি আয়ন্তিকার উন্মুক্ত পেটের দিকে চলে যায়। একটুখানি উন্মুক্ত অংশ দেখা যাচ্ছে। বাকিটা আঁচল দিয়ে ঢেকে নিয়েছে আয়ন্তিকা সন্তপর্ণে! অহর্নিশ দৃষ্টিপান ঘোরায়। নিজেকে তটস্থ করে, সেদিকে তাকানো যাবেনা। বিনা স্পর্শে কুঁচি ঠিক করে দিয়ে হাতের গুলো গুঁজে দিতে গিয়ে থেমে যায়। মাথা তুলে পূর্ণ দৃষ্টিপান নিক্ষেপ করে সে আয়ন্তির দিকে! থরথর করে কাঁপছে আয়ন্তিকা।
অহর্নিশ উঠে দাঁড়ায়। হাতে থাকা কুঁচিগুলো আয়ন্তিকার হাত টেনে ধরে হাতে রেখে দেয়! সেই মূর্হতটায় চমকে যায় সে। এতো কোমল হাত! তুলো দিয়ে তৈরি নাকি? একটু জোরে ধরলেই তো মনে হচ্ছে ভেঙ্গে যাবে হাড়গোড়। অহর্নিশ ফের গম্ভীর কন্ঠে বলল,
-‘ এগুলো ঠিক করে নাও। ‘
আয়ন্তিকা কুচিগুলো ঠিক করে নিয়ে পরিপাটি হয়। সামনে তাকাতে তার দৃশ্যমান হয় অহর্নিশ কে। সোজা হেঁটে গিয়ে সেই মানব সোফায় ঠিক একি কায়দায় বসলো। পায়ের ওপর পা তুলে। পরিশেষে বাঁকা দৃষ্টিপান আয়ন্তিকার দিকে দিয়ে খানিকটা জোরলো কন্ঠে সে বলল,
-‘ কাছে আসো এবার! ‘
আয়ন্তিকা হতভম্ব হয়ে যায়। ছোট ছোট চোখ করে অহর্নিশের দিকে তাকায়। তার মাথায় এখন খারাপ চিন্তা ভাবনা এসে ভর করেছে! অতীত মনে পড়লো, তৎক্ষণাৎ সে কুঁকড়ে যায়। ঘৃণা জেকে বসে মনে।
আয়ন্তিকা কে পুনরায় মাঝপথে থামতে দেখে তরতর করে অহর্নিশের রাগ বাড়ে! চিবিয়ে সে বলল,
-‘ পাশে এসো বসো আয়ন্তিকা। তোমার সাথে কথা আছে বলছিনা বারবার? ‘
আয়ন্তিকা ব্যাবধান বজায় রেখে অহর্নিশের পাশে গিয়ে বসে। বক্ষ পিঞ্জরের হৃদ স্পন্দনের আওয়াজ যেনো বাহির থেকে নিজেই শুনতে পাচ্ছে আয়ন্তি।অস্বস্তি, ঘৃণা নিয়ে দলা মোচড়া হয়ে বসে সে।
অহর্নিশ নিজেকে শান্ত করে বলল,
-‘ আজকেই আমি ঢাকা ফিরে যাচ্ছি। অফিসে সমস্যা হয়েছে। এখানে থাকতে পারবো না। তাই আমার সাথে তুমিও আজই ঢাকায় যাচ্ছো! সবকিছু গুছিয়ে নাও। পরবর্তীতে কবে এখানে আসতে পারবো জানা নেই। তাই গুরুত্বপূর্ণ কিছু ফেলে যেয়ো না। গট ইট?’
আয়ন্তিকা মাথা নাড়ে! অশ্রুসিক্ত দৃষ্টিপাত ফ্লোরে নিবদ্ধ। বাবা, মা, পরিবারকে ছেড়ে যেতে হবে ভাবতেই শ্বাস রুখে আসছে! নিজেকে আস্বস্ত করে সে বলল,
-‘ আমাকে পড়াশোনা করতে দিবেন?’
অহর্নিশ কিছুক্ষণ আয়ন্তিকার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,
-‘ অবশ্যই! আরনাফ আহমেদ অহর্নিশের বউ অশিক্ষিত থাকবে এটা কি করে পসিবল? অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছে তোমার। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দুজনেই ভুক্তভোগী। তবে এই বিয়ের কারণে তোমার জীবন নষ্ট হতে দিবোনা। কিন্তু… ‘
-‘ কিন্তু কি?’
-‘ আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা কখনো মাথায় আনতে পারবে না তুমি! ‘
কথ্য সম্পূর্ণ করে গাম্ভীর্যপূর্ণ ভাবটা চেহারার টেনে নেয় অহর্নিশ। আয়ন্তিকা হতবাক! হতবুদ্ধিহীন হয়ে তাকিয়ে আছে। অহর্নিশ এই কথাটা কেনো বলল বোধগম্য হচ্ছে না। কিছু বলতে নিবে তখনই তার দৃষ্টি যায় অহর্নিশের ঘাড়ে। আঁতকে উঠে মূর্হতে! কাটা দাগ এবং সেলাই করা সেখানটায়। মেরুন রঙের শার্টের কলারটা একটু সরে ছিলো তাই কাটা জায়গাটা দেখা যাচ্ছে একটুখানি।
হুট করে ফোন আসায় অহর্নিশ উঠে দাঁড়ায়। আয়ন্তিকা কিন্তু জিজ্ঞেস করতে নিয়েছিলো। বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে অহর্নিশ কথা বলার মূর্হতে দমকা বাতাসে তার শার্টের পেছনের অংশটা একটু নড়েচড়ে ওঠে আর এতেই আয়ন্তি দেখতে পায় পিঠের দিকটায় গুঁজে রাখা রিভলবার। মুখ দিয়ে অস্ফুটস্বরে আওয়াজ তুললো সে! ভীত দৃষ্টি! অহর্নিশ কি কোনো গুন্ডা, মাস্তান?হতে পারে! অতীত অনুসারে অহর্নিশ খুব বেশি খারাপ লোক হতে পারে।
মৃগী রোগীদের মতো কাঁপুনি শুরু করে আয়ন্তিকা। অহর্নিশ পিছন ফিরে সেই দৃশ্য দেখে ভ্রু যুগল কুঁচকে নেয়। এগিয়ে আসতে নিবে তৎক্ষনাৎ আয়ন্তিকা উঠে দাড়ায়। রুম থেকে বের হতে নিলে পিছন টান অনুভব করে। আয়না দিয়ে লক্ষ্যমান হয় অহর্নিশ তার শাড়ীর আঁচল টেনে ধরে আছে!
আয়ন্তিকা অস্ফুটস্বরে বলল,
-‘ ছা..ছাড়ুন! ‘
অহর্নিশ ছাড়লো না। বরং টান দিয়ে একদম নিজের সাথে মিশিয়ে নেয় আয়ন্তিকা কে। আয়ন্তির মনে হলো সে এবার মারা যাবে! দম আটকে! ছটফট শুরু করলে অহর্নিশ মৃদু কন্ঠে বলল,
-‘ থামো আয়ন্তিকা! এমন করছো কেনো?’
থামেনা আয়ন্তি। এক পর্যায়ে অহর্নিশ শাড়ী ভেদ করে আয়ন্তিকার মসৃণ উন্মুক্ত পেটে হাত রাখে। সঙ্গে সঙ্গে স্তব্ধ হয়ে যায় আয়ন্তি! নড়াচড়া তার অটোমেটিকলি বন্ধ। দম আঁটকে চুপসে দাঁড়িয়ে আছে সে। অহর্নিশের শক্তপোক্ত হাত একদম স্থির হয়ে তার পেটের মাঝখানটায় অবস্থান করছে। আয়ন্তিকা বিড়বিড় করে বলল,
-‘ দোহাই লাগে ছাড়ুন, আমায় মারবেন না! আমি কাওকে কিছু বলবো না। উজমা আপুর সাথে যা করেছেন তাও বলবো না। ‘
অহর্নিশ ভ্রু কুঁচকায় ফের,এই উজমা কে ? কি বলছে এসব এই মেয়ে?
চলবে…
#অন্তর্লীন_প্রণয়
#সাদিয়া_মেহরুজ_দোলা
|সূচনা পর্ব |
[আশানুরূপ রেসপন্স পেলে কন্টিনিউ করা হবে। নতুবা পরবর্তী পর্বতেই গল্প শেষ। তাই যারা যারা পড়ছেন তারা সকলে রেসপন্স করার চেষ্টা করবেন।ভালোবাসা রইল। ❤️]