দীর্ঘ নয় বছর পর প্রাণের শহর সিলেটে পা রাখলো আরিয়ান। এই শহরে মিশে আছে হাজারো সৃত্মি মধুর দিনে’র গল্প। বিমান বন্দরে তার জন্য অপেক্ষা করছে তার প্রাণ প্রিয় বন্ধু ইরফান। আরিয়ান প্লেন থেকে নেমে, খুঁজে তাঁর প্রাণ প্রিয় বন্ধু কে।
এদিকে সেদিক তাকিয়ে হাঁটছিল আরিয়ান। হঠাৎ কারো সাথে ধা’ক্কা খেয়ে পরে যেতে যেতে ও নিজেকে ঠিক করে নেয়। চোখ তুলে তাকালো সেই মানুষটার পানে। মুহুর্তেই মনে হলো তার সামনে কোনো গোলাপি পরি দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু তার চোখ ব্যতীত কিছুই দেখলো না আরিয়ান। মেয়েটাও তাঁর দিকে তাকিয়ে পরে মাওয়া হাত ব্যাগটা উঠিয়ে চলে গেলো সামনে থাকা আরো একজন মেয়ে এবং ছেলে’র কাছে। আরিয়ান শুধু মেয়েটার পেছন দিক এবং গায়ে জড়ানো চাদরটাই দেখলো ভালোভাবে।
তারপর আরিয়ান আরো একবার ওইদিকে তাকিয়ে চলে গেলো তার বন্ধু’র কাছে। আরিয়ানের এখানে আসা’র কারণ ইরফানের বোন ইরিনে’র বিয়ে। এই বিয়ে উপলক্ষে এই প্রাণে’র শহরে আসা এবং আরো একটা কারন আছে।
আরিয়ান ইরফান কে দেখে ওর সাথে করমর্দন করলো এবং ঘার মিলা’লো। ইরফান আরিয়ান কে গাড়িতে উঠে বসতে বললো।
আরিয়ান গাড়িতে উঠে বসলো। ইরফান কাউকে কল করলো,ফোনে বললো- আরাফ তোমরা কোথায়? আরিয়ান তো চলে এসেছে আমরা গাড়িতে বসে আছি।
ওইদিন থেকে উত্তর আসলো-ইরফান তুই চলে যা আরিয়ান কে নিয়ে। আমি তো বাসা চিনি যেতে পারবো আর আরিশা, আরিয়া কিছু কেনাকাটা করবে এখানে লে’ট হবে।
ইরফান: আরে ইয়ার ওরা তো কেনাকাটা পরে ও করতে পারবে। আচ্ছা আমি গাড়ি রেখে যাচ্ছি তোদের জন্য আর সাথে ড্রাইবার আঙ্কেল ও আছেন। যেখানে যেতে হয় যাস।
আরাফ বললো ঠিক আছে।
ইরফান আরিয়ান কে নিয়ে অন্য গাড়িতে উঠে বাঁড়া করে। আরাফের জন্য রেখে যায় তাদের গাড়ি।
আরিয়ান এবং ইরফান যাওয়া’র পনেরো মিনিট পর আসে আরাফ তার রেখে যাওয়া গাড়ি’র কাছে।
সে আরো অনেক বার এসেছে ইরফানের বাসায়,তাই ওর ইরফানের গাড়ি এবং ড্রাইবার আঙ্কেল কে চিনা। এবং ড্রাইবার আঙ্কেল ও চিনেন আরাফ কে। তাঁরা গাড়িতে উঠে বসে এবং ড্রাইবার আঙ্কেল কে বললো মার্কেটে’র দিকে যাওয়া’র জন্য।
এবার ওদের পরিচয় দেওয়া যাক-
আরিয়ান আহমেদ, মা বাবার একমাত্র ছেলে।এতো দিন লন্ডনে ছিল একমাস হবে এসেছে দেশে। ও লন্ডনে পড়ালেখা শেষ করে ওখানেই একটা জব করে। বাড়িতে মা, বাবা, চাচা, চাচি এবং একটা চাচাতো বোন আফরা এইবার ইন্টার প্রথম বর্ষের ছাত্রী সে। স্বপরিবারে এখন সবাই ঢাকায় থাকেন।
ইরফান রহমান,একটা বোন আছে। ইশরিতা রহমান ইরিন যার বিয়ে হতে যাচ্ছে। ইরফান একবছর হলো একটা চাকরীতে জয়েন করেছে। পাশাপাশি বাবা’র বিজনেস ও দেখাশোনা করে। ইরিন অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
আরাফ চৌধুরী, ইরফানের আরো একটা বন্ধু।তবে আরিয়ান আরাফ কে তেমন দেখেনি শুধু কথা বলেছে এই যা”।
আরিয়ান দেশে’র বাহিরে যাওয়া’র পরই আরাফ এবং ইরফানের বন্ধুত্ব হয় কলেজে।
আরাফের এক বোন আরিশা আহনাফ চৌধুরী এবং চাচাতো বোন আরিয়া আহনাফ চৌধুরী। তাদের মূল বাড়ি সিলেটে হলেও এখন সবাই ঢাকায়। ওখানে আরাফের বাবা এবং চাচা’র বিজনেস আছে। সাথে নিজস্ব বাসা বাড়ি তাই স্বপরিবারে সবাই এখন ঢাকায়।
আরিশা এবং আরিয়া ইরিনে’র ছোটবেলা’র বান্ধবী। একসাথে না থাকলেও তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব এখনো বিদ্যমান। তাইতো বান্ধবী’র বিয়ে’র কথা শুনে চলে আসলো দু’জন। অবশ্য এতে ইরিন যা নাছোড়বান্দা যখন বলেছে ওদের কে আসতে হবে মানে আসতেই হবে। তাইতো আসতেই হলো বিয়ে’র দু’দিন আগে।
এইদিকে ইরফানে’র একমাত্র বোনে’র বিয়ে তার বন্ধু’রা আসবে না তা’তো হয় না, আসতেই হলো সবাইকে।
আরিয়ান গাড়িতে বসে মাথা হলিয়ে দিল সিটে চোখ বন্ধ করে। চোখটা বন্ধ করতেই কিছু মুহূর্ত আগে’র সেই অ’দ্ভু’ত সুন্দর চোখ গুলো ভেসে উঠলো চোখে’র সামনে।
সে এই চোখ গুলো’র সাথে আরো দুটো চোখে’র মিল করতে চাইলো। নাহ এই চোখ দু’টো সে কিছুক্ষণ আগে দেখেছে তবুও মনে হচ্ছে মানুষটা ওর খুব প্রিয় কেউ। আর ওই চোখ দু’টো সে আজ সাত-আট বছর থেকে দেখছে তবে তা কখনো ফ্রেমে বন্দি ,কখনো ফোনের স্ক্রিনে বন্দি। আরিয়ান আর ভাবতে পারলো না। সে কিছুক্ষণের জন্য চলে গেলো তার কৈশোর জীবনে।
তখন আরিয়ান ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। একজায়গায় বসে বইয়ে মুখ গু’জে রেখেছিল আরিয়ান। তখন কোথা থেকে একটা পিচ্চি মেয়ে এসে ওর পাশে দাঁড়ায়। ঠোঁটের কোণে লেগেছিল চকলেট, অ’দ্ভু’দ সুন্দর ছিল মেয়েটা’র চোখ। হাতে আরো দু’টো চকলেট ছিল ওর।
আরিয়ানের দিকে এগিয়ে দেয় একটা চকলেট। আরিয়ান মুচকি হেঁসে চকলেট টা হাতে তুলে নেয়। এবং বলে উঠে এটা দিয়ে আমি কী করবো পিচ্চি?”
মেয়েটা মিষ্টি গলায় থে’মে থে’মে বললো খাও!”
তখনই আরো একটা মেয়ে এসে ওখানে উপস্থিত হয়। এবং বলে আরু আমার চকলেট দে, বড় আম্মু তোকে দুইটা আমাকে দুইটা চকলেট দিয়েছিলো।তাহলে তুই আমার চকলেট নি’চ্ছি’স কেন?আমার আরো একটা চকলেট দে”।
আরু নামক মেয়েটা ওই মেয়ে’র উদ্দেশ্যে বলে উঠে- রিয়া তোর চকলেট টা না এই ভাইয়া খেয়ে নিয়েছে। বাড়িতে গিয়ে আম্মুকে বলবো তোকে আরো একটা চকলেট দিতে।
মেয়েটা’র কথা শুনে আরিয়ান হ’ত’ভ’ম্ব হয়ে যায়। মানে!সে কখনো চাইলো মেয়েটা’র কাছে চকলেট। সে নিজেই তো এসে দিয়েছিলো।
রিয়া নামের মেয়েটা আরিয়ান কে বললো ভাইয়া তুমি আর চকলেট খাবে”, আমাদের বাড়িতে এত্বো গুলো চকলেট আছে।
আরিয়ান মুচকি হেঁসে তার হাতে থাকা চকলেট টা রিয়া কে দিয়ে বললো না পিচ্চি আমি চকলেট খাইনা তোমরা খাও”।
আরিয়ান রিয়া কে চকলেট দিতেই আরু ওর দিকে কেমন করে তাকায়। আরিয়ান বুঝতে পারলো আরু রিয়া’র থেকে বেশি চকলেট আছে বোঝাতে চায়। ওর চকলেটে’র সংখ্যা বেশি বোঝাতেই রিয়া’র চকলেট ওকে দিয়েছিল। রিয়া তার চকলেট পেয়ে খুশি হয়ে আরু কে নিয়ে ওখান থেকে চলে যায়।
শুধু আরু একবার পিছনে ফিরে আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে ছিল। আরিয়ান ভাবে এই পিচ্চি মেয়ের ও কী বুদ্ধি। হবে হয়তো দু’জনের বয়স ছয় কিংবা সাত। সেও মুচকি হাঁসে।
হঠাৎ গাড়ি ব্রকে ক’ষা’র ফলে ভাবনা থেকে বেড়িয়ে আসে আরিয়ান। দেখলো ইরফান গাড়ি থেকে নামছে সে জিজ্ঞেস করলো- কী রে কোথায় যাচ্ছিস এখানে তো তোর বাসা না!”
ইরফান বললো রাজমহলে যাচ্ছি’রে!
ইরিন বলে দিয়েছিল ফেরা’র পথে যেন আইসক্রিম নিয়ে যাই।বাসা’র আইসক্রিম শেষ। আর এখন ইরিনের বান্ধবী আরিশা, আরিয়া আসছে,ওরাও খুব আইসক্রিম খায়। তাই নিয়ে যেতে বললো। আরিয়ান বললো তাহলে চল আমিও তোর সাথে যাবো।
ইরফান বললো আচ্ছা আয়”।
দু’জন রাজমহলের ভেতরে চলে যায়।
এইদিকে আরাফ আরিশা আরিয়া’র জন্য প্রায় বিরক্ত। কতোক্ষণ থেকে এভাবে ঘুরাঘুরি করছে,কেনা কাটা শেষ তবুও আর কী খুঁজছে ওরা কে যানে।” পুরো শপিংমল হেঁটে হেঁটে দেখছে আর কী যেনো খুঁজছে দু’জন ওকেও কিছু বলছে না।
এইবার আরাফ দুজনকে ধ’ম’কে’র সুরে বললো- এই আজ কী তোদের শেষ হবে না। আর কতোক্ষণ এভাবে ঘুরবো তোদের পেছন পেছন। আরিশা এবং আরিয়া দু’জন বললো এইতো ভাইয়া পেয়ে গেছি শেষ। বলে একই রকম তিনটা হাত ঘড়ি কিনলো। তিনটা ঘড়ি’র দাম একত্রে পনেরো’শ টাকা। আরাফ বললো তোমরা গাড়িতে গিয়ে বসো আমি টাকা দিয়ে আসছি।
আরিশা, আরিয়া গাড়িতে এসে বসলো। হাতে দু’টো আইসক্রিম বেশ গরম লাগছে এইভাবে হাঁটা হাঁটি করে। আবার এসিও ছাড়তে পারছেনা আরিয়া’র ঠান্ডা লেগে যাবে। বে’হা’ল দশা আইসক্রিম খেয়েই গরম নিবারণের প্রয়াস।
আরাফ এসে ড্রাইবার আঙ্কেল কে বললো…..
চলবে!#অপেক্ষার_শেষে
#পর্ব_২
#লেখিকা_কে_এ_শিমলা
আরাফ গাড়িতে উঠে ড্রাইবার আঙ্কেল কে বললো গাড়ি স্টা’র্ট দিতে।আরিশা, আরিয়া খাওয়া শে’ষ করে মুখে নিকাব বেঁধে নিলো।
গাড়ি’র জানালা দিয়ে বাতাস ঢু’ক’ছে ভেতরে,আরিশা চোখ বন্ধ করে নিলো। হঠাৎ ভেসে উঠলো একটি ছেলে’র মুখশ্রী।এটাতো সেই ছেলে যার সাথে আরিশা’র ….
হঠাৎ ফোনে’র টো’ন বেজে উঠায় আরিশা চোখ মেলে তাকায়। ফোন হাতে তুলে নেয় ও।ইরিন মেসেজ করেছে অকে। আরিশা মুচকি হেঁসে মেসেজে’র রিপ্লাই দিলো- চলে এসেছি জা’নু আর কিছু সময়। ওপাশ থেকে ইরিন ব্যা’ক দিলো- ওহ্ আচ্ছা আসো। ভাইয়া আর আরিয়ান ভাইয়া চলে এসেছেন,বললেন তোমরা কেনা’কা’টা করছো তাই লে’ট হবে বলে আরাফ ভাইয়া বললেন অপেক্ষা না করতে। ঠিক আছে তোমরা আসো আল্লাহ হাফেজ।
বাসায় এসে ইরফান আরিয়ান কে ওর জন্য বরা’দ্দকৃত রুমটা দেখিয়ে দিয়ে বললো ফ্রেশ হয়ে নে।আরিয়ান ওর রুমে এবং ইরফান তাঁর রুমে চলে গেল।আরিয়ান ওর রুমে ঢু’কে পুরো রুমে চোখ বুলায়।অনেক সুন্দর রুমটা বেশ পছন্দ হয়েছে ওর। সে নিজের ট্রলিটা একপাশে রেখে টাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে ঢু’কে যায়।
গাড়ি এসে থা’মে ইরিনে’র বাসার গেইটে’র সামনে। গাড়ি’র হ’র্ন শুনে একজন গার্ড এসে গেইট খুলে দেয়,ভেতরে ঢু’কে আরাফ’দের গাড়ি। ইরিন ওর বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিল,গাড়ি দেখে ওর বুঝতে বাকি রইলো না কে এসেছে।দ্রুত পায়ে সে নিচে চলে আসে।
পুরো দেড় বছর পর আরিশা এবং আরিয়া এলো প্রিয় বান্ধবী’র বাড়ি।
আরিশা এবং আরিয়া গাড়ি থেকে নে’মে দাঁড়াতেই দেখলো ইরিন ছু’টে আসছে ওদের কাছে।ইরিন এসেই ওদের কে জড়িয়ে ধ’রে।ইরিনে’র আম্মু ঈশিকা খানমও বেড়িয়ে আসলেন ইরিনে’র আসা দেখে। আরিশা এবং আরিয়া উনাকে সালাম দেয়।উনি সালামে’র জবাব দিয়ে হাঁসি মুখে জড়িয়ে ধরেন ওদেরকে।ওরা ভেতরে চলে যায়, ঈশিকা খানম আরাফ কে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন।
উপর থেকে আরিয়ান দেখলো ইরফানে’র আম্মু একটা ছেলেকে নিয়ে বাসা’র ভেতর প্রবেশ করছেন।তবে ও আরিশা এবং আরিয়া কে দেখতে পায়নি।
সে এসবে আর মাথা ঘা’মা’য় না। বেলকনিতে রাখা চেয়ারে বসে সে ভাবতে থাকে তার “মায়াপরি’র”কথা।বহু অপেক্ষার-শেষে সে দেখতে পারবে তার “মায়াপ’রি কে!”
আরিয়ান ডু’ব দেয় আবার তার ছোটবেলা’র স্কুল জীবনে।আরিয়ান এক জায়গায় বসে একটা মেয়ে’র সাথে কথা বলছিল। মেয়েটা ওর ক্লাসে’র ,কিছু একটা’র নোট খুঁজছিল আরিয়ানে’র কাছে। আরিয়ান মেয়েটা কে নোট দেয় সে চলে যায় তাকে ধন্যবাদ দিয়ে।
আরিয়ান পাশে থাকাতেই দেখতে পেলো তার পাশে আরু বসে আছে। হুম! সেই চকলেট পা’গ’লী আরু, পিচ্চি টা এখন আর সেই পিচ্চি নেই। অনেকটাই বড় হয়ে গিয়েছে ষষ্ঠ শ্রেণী’র ছাত্রী সে। আরু আরিয়নে’র দিকে তাকানো অবস্থাতেই থ’ম’থ’মে গলায় বললো- আরিয়ান ভাই এই মেয়েটা কে?”আরিয়ান হেঁসে বলল আমার ক্লাসমেট নিতু। আরু বললো ও তোমার সাথে কথা বললো কেন”!
আরিয়ান অবাক হলো না কারণ এই দু’বছর থেকে খেয়াল করছে আরু এভাবে জিজ্ঞেস করে।আরিয়ান বলল-ও আমার কাছে নোট চেয়েছিল আরু।আরু আর কিছু বললো না, হঠাৎ আরু আবার নিত্যদিনে’র মতো বলে উঠলো- আরিয়ান ভাই তোমাকে আমার খুব ভালো লাগে!”বলে একটা মিষ্টি হাঁসি দেয়। ইশ্ কী মিষ্টি হাঁসি”।
আরিয়ান মুচকি হেঁসে বলল-তোমাকেও আমার ভালো লাগে পিচ্চি।আরু পিচ্চি শুনতেই গাল ফো’লা’য়।
তাদের মধ্যে উপস্থিত হয় রিয়া এবং ইরু,এসেই ওরা আরু কে বললো ওই তুই এখানে বসে আছিস,ওইদিকে আমাদের খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে জলদি আয়।”
আরু একবার আরিয়ানে’র দিকে তাকিয়ে ওদের সাথে চলে যায়।
এভাবেই কথা বলা,আসা-যাওয়া তে দেন যায়। দেখতে দেখতে আরু সপ্তম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়।তখন অবশ্য আরিয়ান স্কুল থেকে বের হয়ে গিয়েছে।ওদের স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব ছিল ওখানে যেতো আরিয়ান। মূলত আরু কে দেখা’র জন্যই যেতো,আর কম্পিউটার চালানো ও শিখতো। এসবের মধ্যে হঠাৎ একদিন…..
দরজায় ক’রা’ঘা’তে’র ফলে ভাবনা থেকে বের হয় আরিয়ান।ইরফানে’র গলার স্ব’র শুনে আরিয়ান বললো- দরজা খোলা আছে ইরফান ভেতরে আয় অনুমতি নেওয়া’র কী আছে!”
ইরফান ভেতরে এসে বললো আরিয়ান নিচে চল আরাফ এসেছে ওর সাথে দেখা করবি।আরাফ এসে পরেছে শুনে আরিয়ানে’র চোখ চক’চক করে উঠলো।সে যেন বহু প্রতীক্ষার পর কিছু একটা পেতে যাচ্ছে।ইরফানে’র সাথে নিচে আসলো আরিয়ান।”
আরাফ ইমরান রহমান অর্থাৎ ইরফানে’র আব্বু’র সাথে কথা বলছিল।ইমরান রহমান আরাফ কে জিজ্ঞেস করলেন-তা বাবা আরাফ আব্বু,চাচ্চু’রা সবাই আসবেন তো?”দেখো বাবা আমার একটা মাত্র মেয়ে আমি চাই সবাই এই বিয়েতে উপস্থিত হোক।
আরাফ বললো- জ্বী আঙ্কেল উনারা তো বলেছেন বিয়ে’র দিন আসবেন। বলে একটা হাঁসি দেয়,বিনিময়ে ইমরান রহমান ও হেঁসে বলে উঠলেন আসলেই ভালো বাবা।তারপর তিনি উঠে বাহিরে চলে গেলেন কল আসায়।তখন সেখানে উপস্থিত হয় আরিয়ান এবং ইরফান। আরাফ কে দেখে আরিয়ান ওর সাথে ক’র’ম’র্দ’ন করলো এবং ঘা’র মিলা’লো। এই প্রথম আরিয়ান স্বচক্ষে আরাফ কে দেখলো আর আরাফ আরিয়ান কে। কয়েকবার ফোনে কথা বলেছে আর দু’তিনটা ফটো দেখেছিল।ফটো আর স্বচক্ষে দেখা কী এক!”
তিনজন মিলে কথা বলতে লাগলো,দেখা মনে হচ্ছে তিনজনই ছোটবেলা থেকে একসাথে আছে।
ইরিনে’র রুমে বসে আছে আরিশা আরিয়া সাথে তো আছে তাদের কথা’র ঝু’লি। পুরো দেড় বছর পর এক জন আরেকজন কে দেখছে। যদিও কল,বিডিও কলে কথা হতো তবুও সামনে সাম’নি হওয়া তো ভিন্ন। ওদের কথা চলছে পাশে বসে আছে ইরিনে’র খালাতো বোন দিশা, ফুফাতো বোন হৃদি।
আরিয়া ফ্রেশ হওয়া’র জন্য আগে ওয়াশরুমে ঢু’কে।ওর সবকিছুই তাড়াতাড়ি হয় কিন্তু আরিশা’র উল্টো’টা হয়। এখন যদি আরিশা প্রথমে ফ্রেশ হওয়া’র জন্য ওয়াশরুমে ঢু’কে তাহলে আরিয়া কে অন্য ওয়াশরুমে যেতে হবে। আরিয়া হয়তো অন্যটা থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে যাবে তখন দেখা যাবে আরিশা এখনো ওয়াশরুমে। জানেনা ও এতো সময় ওয়াশরুমে কী করে।তাই আরিয়া প্রথমে ফ্রেশ হতে যায়।
আরিয়ান, আরাফ,ইরফান তিন বন্ধু কথা বলছে তো বলছেই তবে আরিয়ানে’র দু’চোখ অন্য এক জনকে খুঁজছে, তাঁর “মায়াপ’রি কে।”
কিন্তু এই মহারানী কে তো দূর তাঁর ছায়াকেও দেখা যাচ্ছে না আশেপাশে।বাসায় প্রচুর মানুষে’র আ’নাগো’না
থাকলেও তাঁর “মায়াপ’রি কোথাও নাই।”
আরিয়ান অবশ্য বুঝতে পারছে জার্নি করে এসেছে রুমে রেস্ট নিচ্ছে হয়তো। আরিয়ান ভাবে আচ্ছা ও কী সত্যিই আগের মতো ছ’ট’ফ’টে নেই। ও যে জানতো পারলো এখন কেমন নিরবতায় সময় কাটায় তাঁর “মায়াপ’রি।
এসব ভাবনা’র মধ্যেই আরাফ এবং ইরফান উঠে দাঁড়ায়। ওরা নিজেদের রুমে চলে যায়। আরিয়ানে’র পাশে একটা মেয়ে এসে দাঁড়ায়। হবে হয়তো আট-নয় বছর, ভা’রি মিষ্টি দেখতে।”
আরিয়ান কে বললো- ভাইয়া তুমি খুব সুন্দর!”মেয়েটা’র কথা শুনে আরিয়ান ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসলো। মুচকি হেঁসে বলল-আচ্ছা! তুমিও খুব কিউট পিচ্চি।”
এভাবে মেয়েটা’র সাথে কথা বলতে বলতে সারা বাসা ঘুরে ঘুরে দেখে আরিয়ান। মেয়েটা দেখতে যেমন কিউট তেমন সুন্দর তাঁর কথাবার্তা।ছোট হলেও সুন্দর গুছিয়ে কথা বলে!”আরিয়ানে’র বেশ ভালো লাগলো মেয়েটাকে। ওর সাথে ছোট ছোট বাচ্চা’রা এক মুহুর্তেই ভাব জমিয়ে ফেলে। মেয়েটা’র নাম জানতে পারে আরিয়ান। মেয়েটা’র নাম রাত্রি তবে সবাই রাত বলেই ডাকে,রাত ইরফানে’র এক চাচা’র মেয়ে।
রাতে’র সাথে কথা বলতে বলতে হঠাৎ আরিয়ানে’র চোখ যায় ইরিনে’র বেলকনিতে। বেলকনিতে সেই বোরকা আর পাশে সেই চাদরটা দেখে সাথে আরো একটা কালো বোরকা,চাদর।
তারমানে!” আরিয়ানে’র ভেতর টা নে’চে উঠে অজানা অনুভুতিতে।তাহলে কী ওই অ’দ্ভু’দ চোখ জোড়া তাঁর “মায়াপ’রি’র।”
আরিয়ান সেদিকে আরো একবার তাকালো ইরিন ফোনে কথা বলছে।তখন রুম থেকে কেউ বেরিয়ে আসে। একটা মেয়ে,মেয়েটাকে আরিয়ান….
চলবে!
#গল্পের_নাম_অপেক্ষার_শেষে
#সূচনা_পর্ব
#লেখিকা_কে_এ_শিমলা
(