অ্যাটলাস শৃঙ্গে লেখনীতে : নাফিসা তাবাসসুম খান ৩০.

অ্যাটলাস শৃঙ্গে
লেখনীতে : নাফিসা তাবাসসুম খান
৩০.

ইসামের বলা কথা শুনে ল্যায়লা অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়। মনে মনে ভাবে যোহরা কে? মনের কৌতূহল দমিয়ে রাখতে না পেরে সে প্রশ্ন করে,

” যোহরা কে? ”

” আমার ছোট বোন। ”

ল্যায়লা অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়। ইসামের বোনের জন্য ফাতিহ কেন অ্যাটলাস শৃঙ্গে যাবে? আর তাছাড়া ইসাম তো কখনো বলে নি যে তার এই নামের একটা বোনও আছে। ল্যায়লার প্রশ্নবোধক দৃষ্টি দেখে ইসাম নিজেই বলে উঠে,

” ফাতিহ আর আমি ছোট বেলা থেকেই ভালো বন্ধু। আমাদের জীবনের লক্ষ্যও এক হওয়ায় কখনো একে অপরকে ছাড়া তেমন একটা থাকা হয় নি। ইউ ক্যান সে দ্যাট হি ইজ ব্রাদার ফ্রম এনাদার মাদার। ছোট বেলায় প্রায়ই আমরা একে অপরের বাসায় আসা যাওয়া করতাম। আর সেই আসা যাওয়ার মাঝেই যোহরার সাথে পরিচয় হয় ওর। যোহরা প্রায় আমাদের কাছাকাছি বয়সেরই ছিলো। তাই আমার আর ফাতিহর পিছনে পিছনেই ঘুরতো ও সবসময়। কিন্তু কিছু বছরের মধ্যে আমি উপলব্ধি করি ফাতিহ ধীরে ধীরে যোহরার প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছে। হি লাভস হার। ”

এইটুকু কথা শুনেই ল্যায়লার মনে অগ্নিশিখার দাবানল প্রবাহ শুরু হয়। ফাতিহ অন্য কাউকে ভালোবাসে? কই ফাতিহ তো কখনো এই মেয়ের নাম নেয় নি তার সামনে! তাহলে কি সে ল্যায়লাকে এই সম্পর্কে জানানোর প্রয়োজন মনে করে নি কখনো? ল্যায়লা এতটাই অপ্রয়োজনীয়?

অভিমানে আর হৃদয় ভাঙনে ল্যায়লার ঠোঁট উল্টে আসে। সে বহু কষ্টে নিজের কান্না দমিয়ে রেখেছে। এসব কিছুই ইসামের দৃষ্টিগোচর হয় না। সে খুব নিপুণভাবে এই দৃশ্য দেখে মৃদু হাসে। সে হাসিতে বেদনার ছাপও ছিলো। এতদিন পর অতীতের বই খুলে বসেছে সেখান থেকে একটু বেদনা অনুভব করবে না, তা কি সম্ভব? সে আপনমনে বলতে থাকে,

” সময় যত গড়াতে লাগলো আমি বুঝতে পারি আমার বোনও ফাতিহকে মনে মনে পছন্দ করে। কিন্তু এদের দুজনের একজনও নিজেদের মধ্যে তা স্বীকার করছিলো না। উল্টো সবসময় একে অপরের থেকে পালিয়ে বেড়াতো। দুজনেই বড্ড লাজুক স্বভাবের ছিলো কিনা! একদিন আমি সুযোগ করে ফাতিহকে ধরে জিজ্ঞেস করি যোহরার ব্যাপারে। প্রথমে ও স্বীকার না করলেও পরে আমার জোরাজুরিতে বাধ্য হয়ে আমার কাছে কনফেস করে। আমি ওকে অনেকবার বলেছিলাম অন্তত যোহরার কাছে নিজের অনুভূতি কনফেস করুক। কিন্তু ও জানায় ওর প্রেম করার ইনটেনশন নেই। ক্যারিয়ার আরেকটু স্যাটেল করে ডিরেক্ট বিয়ের প্রস্তাব দিবে। যোহরাকে নিয়ে ফাতিহর ফিউচার প্ল্যান শুনে আমি খুশিই হয়েছিলাম। ওকে এই বিষয়ে আর প্রেশার দেই নি আমি। ”

ল্যায়লা অনুভূতিশূন্য গলায় বলে,

” তারপর? ”

” আজ থেকে পাঁচ বছর আগের ফেব্রুয়ারি মাস চলে তখন। আমি এবং ফাতিহ টিমের সাথে ক্রোয়েশিয়া ভ্রমণ করি একটা ক্যাম্পেইনের জন্য। সারাদিন শেষে সন্ধ্যায় যখন আমরা নিজেদের হোটেল রুমে ফিরি তখন বাবার কল আসে। যোহরাকে নাকি কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সেদিন রাতেই ফ্লাইটে করে আমরা দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। দেশে পৌঁছাতে পৌঁছাতে আমাদের পরেরদিন বিকেল হয়ে যায়। এই পুরোটা সময় আমি আর ফাতিহ কিভাবে পার করেছি তার একমাত্র সাক্ষী আল্লাহ। আমরা দেশে ফিরে খবর পাই যোহরা নাকি হসপিটালাইজড। তখনও ডিটেইলে আমাদের কিছু জানানো হয় নি। সেদিন হসপিটালে পৌঁছে আমি আমার লাইফের সবথেকে খারাপ সংবাদ শুনতে পাই। মাই সিস্টার ওয়াজ রেপড। ”

এসি রুমে বসে থেকেও ল্যায়লা তিরতির করে ঘামছে। সদা হাস্যজ্বল ইসামের মুখেও নেমেছে একরাশ আধার। এই মুহুর্তে ল্যায়লার আর কিছু শুনতে ইচ্ছে হচ্ছে না। একটাই তো জীবন। এতো বিষাদময় হতে হবে কেন? ইসাম নিজেই বলতে শুরু করে,

” যোহরা ওর ফ্রেন্ডদের সাথে আগাদির শহর ভ্রমণ করতে গিয়েছিলো। আগাদিরের প্রাণকেন্দ্র অ্যাটলাস পর্বতের প্রতি ফাতিহর ভালোবাসা সম্পর্কে সে অবগত ছিলো। তাই নিজ চোখে একবার ফাতিহর প্রিয় জায়গা দেখার লোভেই সে ওই ট্রিপে গিয়েছিলো। কিন্তু অ্যাটলাসের অধিবাসী কিছু কুলষিত বারবারদের নজরে পরে যায় আমার বোন। সুযোগ বুঝে ওরা যোহরাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যায়। তারপর দিন অ্যাটলাস পর্বতের একগুচ্ছ বরফের আড়াল হতে আমার বোনের দেহ পাওয়া যায়। তখনও সে বেঁচে ছিলো। সাথে সাথে ওকে হসপিটালাইজড করা হয়। ”

ল্যায়লা দূর্বল গলায় প্রশ্ন করে,

” এখন যোহরা কোথায় আছে? ”

ইসাম নির্বিকার ভঙ্গিতে জবাব দেয়,

” নেই। ”

ল্যায়লা সাথে সাথে চোখ বুজে ফেলে। তার আর সহ্য হচ্ছে না কিছু। ইসাম নরম গলায় বলে উঠে,

” আমরা হসপিটালে পৌঁছানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই যোহরার জ্ঞান ফিরেছিলো। নার্স আমাদের ইনফর্ম করার জন্য বাহিরে আসতেই ও সেই সুযোগে নিজের হাতের শিরা কেটে সুইসাইড এটেম্পট করে। নিজের স্ব ইচ্ছায় ও নিজের জীবন দেয়। সেইদিন আমি নিজেই নিজের মাঝে ছিলাম না। আমার চারপাশে কি চলছিলো তা-ও আমার খেয়াল নেই। কিন্তু ধীরে ধীরে যখন নিজেকে সামলে নেই তখন উপলব্ধি করতে পারি যোহরার মৃত্যুর পর আমাদের সামলানোর জন্য সবাই থাকলেও ফাতিহকে সামলানোর জন্য কেউ ছিলো না। কারণ ওর মনের কথা আমি ছাড়া কেউ জানতোই না। ফাতিহ ততদিনে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলো। এই বিষয়ে সে আমার সাথেও কখনো কথা বলতো না। কিন্তু আমি ওর মাঝে স্পষ্ট অনুশোচনা দেখতে পারতাম। যোহরাকে কখনো নিজের মনের কথা না জানানোর আফসোস আজও ওকে কুঁড়ে খাচ্ছে। ১২ ই ফেব্রুয়ারী যোহরার মৃত্যুবার্ষীকি। ”

ল্যায়লা মাথানত করে চুপচাপ বসে আছে। ইসাম এবার সরাসরি ল্যায়লার দিকে তাকিয়ে বলে,

” তোমাকে এসবকিছু বলার পিছনে একটাই কারণ ল্যায়লা। কারণ তুমি চাপা স্বভাবের মেয়ে। যোহরার মতো। কিন্তু এতটাও চাপা স্বভাবের হয়ো না যে আজীবন রিগ্রেট করে কাটাতে হয়। সেদিন ফাতিহ যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলো, আজ তুমি সেখানে দাঁড়িয়ে আছো। ফাতিহর কন্ডিশন ইজ সিরিয়াস স্টিল। ভেবে দেখো, আল্লাহ না করুক আজকে ফাতিহর কিছু হয়ে গেলে তুমি এই রিগ্রেট নিয়ে কিভাবে বাঁচবে? ”

কথাটুকু বলেই ইসাম কিংকর্তব্যবিমুঢ় ল্যায়লাকে পিছনে ফেলে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। সে জানে তার বলা শেষ কথাগুলো বেশ কঠিন ছিলো। কিন্তু এটুকু কঠিন কথা ল্যায়লাকে হজম করতেই হবে। নাহয় আজীবন এদের লুকোচুরি চলতেই থাকবে। এত বছর পর ফাতিহ কাউকে পেয়েও যদি একই কারণে আবার হারিয়ে ফেলে তা ইসাম সহ্য করতে পারবে না।

__________

ল্যায়লা আর কতো যন্ত্রণা সহ্য করবে? জীবনে কি তার কম যন্ত্রণা ছিলো যে এই অনুশোচনাও এখন তার সাথে যোগ হলো? কিন্তু তার অনুশোচনা দিয়ে কি আসে যায়? ফাতিহ তো আর তাকে ভালোবাসে না। ফাতিহ এখনো যোহরাকেই ভালোবাসে।

ল্যায়লা বেডে বসে মাটিতে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে রেখেছে। এতোটা অসহায় কখনো বোধ করে নি সে। কি করবে? তার হাতে এমন কোনো ক্ষমতা নেই কেনো যার দ্বারা সে ফাতিহকে ঠিক করে তুলতে পারবে? এতদূর এসে ফাতিহকে পেয়েও হারাতে রাজি নয় সে।

কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই ল্যায়লা একটা সিদ্ধান্ত নেয়। তার হাতে এখনো একটা উপায় বাকি আছে।

__________

নাহালের মুখে ল্যায়লার হসপিটালে থাকার খবর শুনতেই ফারাহ দেখা করার জন্য ছুটে আসে। ইসামের কাছে সে ল্যায়লার কথা শুনেছিলো বেশ কয়েকবার। তখন সে এতো সিরিয়াস ভাবে নি বিষয়টা। কিন্তু বর্তমানের ঘটনা শুনে সে আর কৌতূহল দমিয়ে রাখতে পারলো না। একটা ভীনদেশী মেয়ে কিনা তার ভাইয়ের জন্য এতো দূর চলে আসলো? মেয়েটা আসলেই তার ভাইকে ভালোবাসে তো?

ফারাহ আর নাহাল ল্যায়লার কেবিনের দরজা খুলে প্রবেশ করতেই অবাক হয়ে যায়। ল্যায়লা দরজার বিপরীত দিকে মুখ করে জায়নামাজে বসে নামাজ আদায় করছে। ফারাহ বিস্ময় নিয়ে দেখতে থাকে স্নিগ্ধ মুখশ্রীর মেয়েটাকে। তারা যেখানে ফাতিহর অবস্থা দেখে ভেঙে পড়ে আহাজারিতে ব্যস্ত সেখানে এই মেয়েটা কি সুন্দর সৃষ্টিকর্তার কাছে সাহায্য চাইতে ব্যস্ত। এর থেকে উত্তম ভালোবাসার প্রমাণ আর কি-ই বা হতে পারে? ডাক্তার, মেডিসিন এসবকিছু তো কেবল উছিলা মাত্র। প্রকৃত সাহায্যকারী তো শুধুমাত্র আল্লাহ। উনার কাছে সাহায্য চাওয়া ব্যতীত আর কোনো পথ খোলা নেই।

ফারাহ নাহালকে ধীর স্বরে বলে উঠে,

” এখন বিরক্ত না করি ওকে। পরে দেখা করবো। ”

নাহালও সম্মতি জানায়। সে বেরিয়ে যায় ফারাহর সাথে।

__________

ছোটবেলায় মিথিলা আন্টির কাছ থেকে হাজতের নামাজ আদায় করা শিখেছিলো ল্যায়লা। তাই এখন সেই নামাজই আদায় করছে। যদিও পায়ের ব্যাথার কারণে তার বারবার উঠাবসা করে নামাজ পড়তে অসুবিধা হচ্ছিলো। তাই সে বসেই সম্পূর্ণ বিধি অনুসরণ করে নামাজ আদায় করে। নামাজ শেষে মোনাজাতে দু’হাত তুলে মনে মনে বলে,

” যতবারই তোমার কাছে এসেছি আমি শুধু নিজের জন্যই চেয়েছি। প্রথমবারের মতো অন্যকারো জীবনের শেফা চাচ্ছি তোমার কাছে। ফিরিয়ে দিও না। আমার জীবন বাঁচানোর উছিলা হিসেবে যেভাবে ফাতিহকে পাঠিয়েছিলে তুমি, একইভাবে ওর জীবনও ফিরিয়ে দাও ওকে। আমার দোয়া কবুল করে নাও। ”

নামাজ শেষে ল্যায়লা উঠে দাঁড়ায়। মাথা থেকে স্কার্ফ খুলে তা গলায় পেচিয়ে নেয়। তারপরই পা টিপেটিপে রুম থেকে বের হয়। ইয়াসির এখনো ফিরে নি। ফাতিহর কেবিনের কাছাকাছি যেতেও দেখে সেখানে আপাতত নাহাল ব্যতীত কেউ নেই। ল্যায়লা নাহালের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করে,

” সবাই কোথায়? ”

” আন্টি, আংকেলকে জোর করে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি। উনাদের ডায়াবেটিস আছে। এতো রাত ধরে হসপিটালে বসে থাকলে শরীর খারাপ করতো। আর ফারাহ আপু, উনার হাজবেন্ড এবং ইসাম নিচে ক্যানটিনে গিয়েছে। ”

ল্যায়লা কিছুক্ষণ রয়েসয়ে প্রশ্ন করে,

” ফাতিহর জ্ঞান ফিরেছে? ”

” উহু। এখনো এরকম কোনো খবর দেয় নি। কাল সকালে ওর সার্জারি হবে। তার আগে চাইলে একবার দেখে আসতে পারো ওকে। আংকেল, আন্টি উনারা সবাই দেখা করে এসেছে। ”

ল্যায়লা সন্দিহান গলায় প্রশ্ন করে,

” কিসের সার্জারি? ”

নাহাল সাথে সাথে জিভ কাটে। সে ভুলেই গিয়েছিলো যে ল্যায়লাকে ফাতিহর কন্ডিশন সম্পর্কে জানানো হয় নি এখনো। ল্যায়লা আবার প্রশ্ন করে,

” কি লুকাচ্ছো নাহাল? ”

নাহাল একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে,

” ফাতিহর পায়ের উপর ভারী কিছুর চাপ পড়েছিলো। ওর দুই পা অনেক ইঞ্জুরড হয়েছে। সেজন্য কাল সার্জারি করতে হবে। ”

ল্যায়লা ধপ করে সিটে বসে পড়ে। অশ্রুসিক্ত গলায় প্রশ্ন করে,

” একবার সার্জারি হয়ে গেলে ও আবার খেলতে পারবে তো? ”

” গ্যারান্টি নেই। ”

ল্যায়লা দু’হাতের উপর মাথা ঠেক দিয়ে বসে রয়। এসব কি হচ্ছে? কেন হচ্ছে? নাহাল ল্যায়লার কাধে হাত রেখে আলতো স্বরে প্রশ্ন করে,

” দেখতে চাও ওকে? ”

ল্যায়লা চোখ তুলে তাকায়। মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়। নাহাল ল্যায়লাকে ফাতিহর কেবিনের দরজার সামনে নিয়ে বলে,

” ভিতরেই আছে। তুমি যাও। আমি এখানে আছি। ”

ল্যায়লা ভিতরে প্রবেশের আগে কৃতজ্ঞতা সরূপ নাহালকে একবার জড়িয়ে ধরে। কেবিনের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করতেই ল্যায়লার বুক ধুক করে কেঁপে উঠে। হসপিটাল বেডে শুয়ে থাকা এই মানুষটাকে দেখতে বেশ অচেনা লাগছে। ফাতিহর শরীরের বেশ অনেকটাই অংশ সাদা ব্যান্ডেজ দ্বারা আবৃত। চেহারাও কেমন ফ্যাকাশে হয়ে আছে। এই ঠান্ডার মাঝে নিখোঁজ অবস্থায় মানুষটা কতো কষ্ট পেয়েছে ভাবতেই ল্যায়লার বুক ভেঙে কান্না আসে।

সে ধীর পায়ে ফাতিহর পাশে এসে বসে। তারপর কোমল স্বরে ডাকে,

” ফাতিহ। ”

ফাতিহ নিরুত্তর। ল্যায়লা ঠোঁট উল্টে কান্নাটুকু গিলে নিয়ে বলে,

” ঠিক হয়ে যাবে তুমি। আবার খেলবে তুমি। আই বিলিভ। অনেক কিছু জেতা বাকি এখনো তোমার। তোমার ক্যারিয়ারের প্রাপ্তির খাতায় সব তোলা শেষে আমাকে অটোগ্রাফও দেওয়া বাকি তোমার। ”

ফাতিহ চোখ বুজে নির্বিকার ভঙ্গিতে শুয়ে আছে। ল্যায়লা এবার সাহস করে নিজ থেকে হাত বাড়িয়ে ফাতিহর তর্জনী আঙুল ছুঁয়ে দেয় নিজের তর্জনী আঙুল দ্বারা। পরপরই সে মলিন হেসে বলে,

” প্রমিজ নিয়ে নিলাম। ইউ হ্যাভ টু গেট ওয়েল নাও। ”

কথাটুকু বলেই ল্যায়লা এবার ফাতিহর সম্পূর্ণ হাতটাই নিজের নরম কোমল হাতের বন্ধনে নিয়ে বুকের তোলপাড় প্রকাশ করে বলে উঠে,

” আমি তোমার মতো হতে চাই না ফাতিহ। অনুশোচনা নিয়ে বাঁচার মতো সাহস আমার নেই। তাই এই মুহুর্তে নিজেকে অনুশোচনামুক্ত করার স্বীকারোক্তি হিসেবে তোমাকে বলছি যে আমি তোমাকে ভালোবাসি। যতদূরেই থাকি না কেনো সবসময় ভালোবাসবো। আই উইল অলওয়েজ লাভ ইউ মাই স্যাভিওর। ”

ল্যায়লা বেরিয়ে যাওয়ার আগে আরেকবার ফিরে তাকায় ফাতিহর দিকে। অত:পর একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বেরিয়ে যায় সে।

চলবে…

[ কপি করা কঠিনভাবে নিষিদ্ধ ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here