#আগাছা
#Khadija_Akter
#পর্ব_১২
তরীর কন্ঠ শুনে চকিতে ওর দিকে ফিরে তাকালাম,দেখি আধ-শোয়া হয়ে তরী আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।
আমি চেচিয়ে ডাকতে লাগলাম,
–অনিক!অনিক!অনিক, দেখে যাও।
অনিকের কানে পৌঁছালো মেহেরের ডাক কিন্তু সে আমলে না নিয়ে বেডে এসে শুয়ে পড়লো।
অনিক না আসাতে আমি নিজেই দ্রুত বের হয়ে গেলাম তরীর রুম থেকে।তরীকে আমার এখন খুব ভয় লাগে।দেখলেই বুকটা চিরিক দিয়ে উঠে!এই বুঝি আমার সংসারটা ছারখার করে দিল সে!
এদিকে অনিকের কাছেও আমি মিথ্যাবাদী প্রমাণিত হলাম।ও আমায় হয়তো পাগলই ভাবছে!
দুঃখে কষ্টে,গ্লানিতে আমার চিৎকার করে কান্না আসতে লাগলো।আমি শাশুড়ীর রুমে গিয়ে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করে দিলাম।
তরী মুচকি মুচকি হাসছে!
আরেকটু হলে তো সে ধরাই পড়ে যাচ্ছিল।যাক বাবাহ্ খুব বাঁচা বেঁচে গেছি।
রাতে ঘুম ভেঙে যখন সে দেখে মেহেরীমা পাশে নেই।
তারপর সে অনিকের রুমের সামনে গিয়ে দেখে দরজা বন্ধ!
তখনি বুঝে গেছিল,মেহেরীমা আর অনিক তাহলে তাকে ফাঁকি দিয়ে এক হয়ে গেছে!
রাগে সে ফেটে পড়ে,সেই রাগই আবার একটু পর কান্নায় পরিনত হয়।
তার কাছে লুকায়িত থাকা অনিকের সাদা শার্ট বের করে তখন সে শার্টটাকে ইচ্ছে মতো আদর করতে থাকে!শার্টের কাছ থেকে আদর নিতে থাকে।
শার্টটা থেকে অনিকের গায়ের গন্ধ পায় সে,যেটা তাকে মাতাল করে তুলে।
বাকীরাত দরজার সামনে এভাবেই কাটিয়ে দেয় তরী।
সকালের দিকে চোখ লেগে আসে তার।
মেহেরীমা যখন অনিককে ডাকছিল,তখনই ঘুম ভেঙে যায় আর দ্রুত সটকে পড়ে সেখান থেকে।
আড়াল থেকে অনিক আর মেহেরীমার সব কথাই শুনছিল তরী।যখন শুনলো তারা তার রুমের দিকে আসার কথা ভাবছে।অমনি তাড়াতাড়ি করে রুমে এসে শার্টটা লুকিয়ে গভীর ঘুমের ভাণ করে পড়ে থাকে।
হাহাহাহা!আমাকে ধরাতে গিয়ে মেহেরীমা নিজেই হেনস্থা হয়ে গেল অনিকের কাছে!হাহাহাহা।
রহিমা বেগমের ঘুম ভাঙলো কারো কান্নার শব্দে।
তিনি হুড়মুড় করে উঠে দেখলেন তার বউমা অঝর নয়নে কাঁদছে।সাথে সাথে তিনি অস্থির হয়ে গেলেন।
–কি হইছে বউমা?কাঁদছো কেন?
অনিক কিছু বলেছে তোমায়?
আমি কাঁদতেই কাঁদতেই আম্মাকে সব খুলে বললাম রাত থেকে এখন অব্দি ঘটে যাওয়া সব ঘটনা।
আর অনিক যে আমাকে অবিশ্বাস করছে আর বিরক্তও হয়েছে সেটাও বললাম।
–শুনো বউমা,তুমি কান্না থামাও।তোমার কান্না আমি সহ্য করতে পারি না।
তুমি তো বলেছিলে তোমার চাচা-চাচী চলে গেছে কানাডায় গত পরশুদিন?
–হ্যাঁ আম্মা।
–তাহলে এবার ঐ কালনাগিনীটার একটা ব্যবস্থা করার সময় এসেছে।এতোদিন শুধু অপেক্ষা করেছি।এখন পদক্ষেপ নেওয়ার পালা।
তুমি আমার উপর ভরসা রাখো মা।আর আল্লাহর কাছে দোয়া করো যেনো তিনি তোমার সংসার বাঁচায়।
শাশুড়ী আমায় মাথায় হাত বুলিয়ে শান্তনা দিতে লাগলেন।আর আমি আম্মার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে রইলাম চুপচাপ।
সকাল-১১টা
একটানা অনেক্ষন ঘুমিয়ে অনিকের ঘুম ভাঙলো।
শরীরটা এখন বেশ ঝরঝরে লাগছে তার।আড়মোড়া ভেঙে পাশ ফিরতেই চোখ পড়ে মেহেরের দিকে।
জানার গ্রিল ধরে আনমনে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে মেহের।
কি বিষন্ন লাগছে মেয়েটাকে!মনে হচ্ছে ভিতর দিয়ে বিশাল কোনো ঝড় বয়ে যাচ্ছে!
অনিকের মনে পড়ে যায় ভোর সকালের কথা।সে ভাবতে থাকে,
“আমি মনে হয় একটু বেশিই রুড বিহেভ করে ফেলেছি মেয়েটার সাথে।
হতেই পারে ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে এরকম আচরণ করছে।অদ্ভুত অদ্ভুত কথা বলছে।আমার তো উচিত ওর মন বুঝে ঠান্ডা মাথায় ওকে হ্যান্ডেল করা।
তা না করে কিনা উল্টো আরও রাগ দেখাই!ধ্যাৎ!”
আসলে অনিকেরও দোষ দেওয়া যায় না,অত সকাল সকাল ঘুম ভাঙাতে মেজাজটা একটু বিগড়ে গিয়েছিল।
অনিক আস্তে করে উঠে গিয়ে মেহেরকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।
মেহের কোনো সাড়া দিল না!নিশ্চুপ হয়ে আগের মতোই দাঁড়িয়ে রইলো।মেয়েটাকে হয়তো খুব বেশিই আঘাত করে ফেলেছি আমি।
অপরাধীর মতো মুখ করে অনিক বলতে থাকে,
–স্যরি মেহের!আমি তখন মেজাজ দেখিয়েছি তোমার উপর।আমার উচিত হয়নি ঐরকম করা।আসলে হইছিল কি…
আমি ঘুরে দাঁড়িয়ে অনিকের হাতটা ধরলাম।ওকে খাটে এনে বসালাম।তারপর চোখে চোখ রেখে বললাম,
–তুমি আমার উপর রাগ দেখিয়েছো,এতে আমার কোনো কষ্ট নেই।
আমার কষ্ট হচ্ছে এটা ভেবে যে একটা সত্য ঘটনাকে আমি সত্য হিসেবে তুলে ধরতে পারলাম না তোমার কাছে বরং মিথ্যাবাদী প্রমাণিত হয়ে গেলাম তোমার কাছে।
–না,না লক্ষ্মীটি এরকম করে বলো না।
তোমার তো ভুল হতেই পারে।এটা স্বাভাবিক।ভুল তো আমারও হয়।এখন তুমি কিছু একটা হয়তো ভুল দেখেছ আর সেটা আমার কাছে শেয়ার করেছো।
পরে আমরা বুঝতে পারি যে এটা একটা ভ্রম ছিল,ঘুমের ঘোরে হয়তো কিছু একটা কল্পনা করে নিয়েছো।এখানে আমি তোমাকে কেনো অবিশ্বাস করবো বলো?
তুমি তো আর ইচ্ছে করে তরীকে ফাঁসাতে চাইছো না।আমার চোখে তরীকে ইচ্ছে করে খারাপ করতে চাইছো না,তাইনা?
–তরীকে তুমি অনেক বিশ্বাস করো,তাইনা?
–হ্যাঁ, বললাম না যে তরীকে আমি আমার বোন আনিকার জায়গাটা দিয়ে দিয়েছি!একবার হারিয়েছি বোনকে,দ্বিতীয়বার আর হারাতে চাই না।
–তোমার বোন আনিকার মতো যদি তরী সৎ না হয়?যদি আনিকার মতো সরল না হয়?
যদি বিশ্বাস উঠে যায় তরীর উপর থেকে?যদি দেখো তোমার ভ্রাতৃস্নেহের ফায়দা উঠাচ্ছে তরী।তাহলে কি করবে তুমি অনিক?
–না,না,না।এমন কিছু হবে না…
দুই হাতে নিজের মাথা চেপে ধরে অনিক।ওর মাথায় যন্ত্রণা হচ্ছে খুব।ওর চোখমুখ লাল হয়ে যাচ্ছে।
আনিকার কথা উঠলেই যে অনিক আ্যবনরমাল হয়ে যায় সেটা আমি ভুলেই গেছিলাম।অনিকের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে দেখে আমি ভয় পেয়ে গেলাম।
তাড়াতাড়ি করে টপিক চেঞ্জ করলাম।
অনিককে অনেক কষ্ট করে শান্ত করলাম।কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে ও ওয়াশরুমে চলে গেল ফ্রেশ হতে।
এদিকে আমি নিচে পা ঝুলিয়ে দুইহাত দুদিকে দিকে বিছানায় শুয়ে আছি আর ভাবছি তরীকে ঠিক কি করা যায়!কীভাবে বিদায় করা যায়!
এমন সময় “টিং টিং” করে অনিকের ফোনে একটা মেসেজ আসলো।
আমি একবার ওয়াশরুমের দিকে তাকিয়ে তারপর ফোনটা হাতে নিয়ে মেসেজটা ওপেন করলাম।
“প্রোমোশনকে উপলক্ষ্য করে আগামীকাল একটা সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে অনিকের জন্য অফিসের তরফ থেকে।”
এই তথ্যটাই ইংরেজিতে লিখা আছে মেসেজে।
দুপুরে অনিক ড্রয়িং রুমে বসে আছে।
ল্যাপটপে অফিসের কিছু কাজ করছে সে।
তরী তার রুমের অপ্রয়োজনীয় কিছু জিনিস একটা খালি বাক্সে ভরে স্টোরে রুমে রাখতে যাচ্ছিল।যাওয়ার পথেই সে দেখলো,অনিক ড্রয়িং রুমে আছে।
জলদি করে বাতিল জিনিসগুলো সে স্টোরে রুমে রেখে এসে মুখ হাত ধুয়ে নেয়।তারপর কিছুটা সাজগোজ করে,হাতে একটা বই নিয়ে সেও ড্রয়িং রুমে এসে বসে।
টুকটাক কথা হতে থাকে অনিক আর তরীর মধ্যে।
অনিক কি একটা ভেবে হুট করেই তরীকে প্রশ্ন করে বসে,
–আচ্ছা তরী,সকালে তুমি কখন উঠেছ?না মানে সকালের দিকে কি তুমি আমাদের রুমের সামনে গিয়েছিলে?
তরী অবুঝের মতো মুখ করে বলে,
–নাহ্ তো জিজু।আমি তো এই একটু আগে উঠলাম।আর উঠেই রুমটা ক্লিন করে ফ্রেশ হয়ে এখানে বসলাম।
–ওহ্ আচ্ছা আচ্ছা!
–কেন জিজু?কিছু হয়েছে?
–না,না। এমনি বললাম আর কি।
অনিক আবার নিজের কাজে মন দেয়।অনিক নিশ্চিত ছিল,মেহের হয়তো ভুলটুল কিছু দেখেছে।
তবুও তার মনের মধ্যে কিছুটা সন্দেহ ছিল!হয়তো মেহের সত্যিই দেখেছে!
কিন্তু তরী তো বলছে,ও একটু আগেই মাত্র ঘুম থেকে উঠেছে!আর সকালে যখন ওর রুমে যাই তখনও তো দেখলাম ও গভীর ঘুমেই ছিল।
নাহ্, তরী কেন আমার শার্ট নিয়ে দরজার সামনে বসে থাকতে যাবে।মেহের নিশ্চয়ই ভুল কিছুই দেখেছে।
বিকালে আম্মার সাথে গল্প করতে করতে একসময় আম্মাকে জানালাম,”কাল অনিককে অফিসে যেতে হবে।অনিকের অফিসে ওর জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আছে।”
আম্মা শুনে বললো,
–তাই নাকি?কই জানালো না তো অনিক।
–আমাকেও বলেনি কিছু।হয়তো বলতে ভুলে গেছে নয়তো মেসেজই পড়েনি।আমি তো ওর ফোনের মেসেজ পড়ে জেনেছি।
রহিমা বেগম একমনে কিছু একটা চিন্তা করলেন।তারপর বললেন,
–আচ্ছা বউমা,তাহলে তো কাল অনিককে অবশ্যই অফিসে যেতে হবে তাইনা?
–হ্যাঁ আম্মা।ওর জন্যই তো মূলতঃ এই অনুষ্ঠান।
–শুনো,আমরা কিন্তু চাইলেই পারি তরীকে এখন জোর করে এই বাসা থেকে বের করে দিতে।
কিন্তু অনিক তাহলে এটাতে খুব কষ্ট পাবে।আমাদের উপর হয়তো ভুল বুঝে রাগ করে থাকবে।তোমার সাথে মনমালিন্য হবে,এতে সংসারে অশান্তি আরও বাড়বে।
কারণ অনিক তরীকে একদম আনিকার মতো করেই ভালোবাসে।তরীকে বিদায় করে দিলে অনিক সেটা হয়তো সহ্য করতে পারবে না।
–হুম ঠিকই বলছেন আম্মা।
–শুনো,আমাদের এমন কিছু করতে হবে যে,তরীর প্রতি অনিকের ধারণাটাই চেঞ্জ হয়ে যায়।ওর প্রতি স্নেহ চলে গিয়ে যেনো ঘৃণার জন্ম নেয়।অনিক তাহলে নিজেই এই বাসা থেকে বের করে দিবে তরীকে।
–হ্যাঁ আম্মা।আমিও এটাই ভেবেছি।
যে করেই হোক অনিকের সামনে তরীর মুখোশটা খুলতে হবে।
–আমার মাথায় একটা প্ল্যান আছে বউমা।প্ল্যান মোতাবেক কাজ হলে আমি নিশ্চিত কালকের দিনটাই হবে এই বাসায় ঐ বজ্জাত মেয়েটার শেষ দিন।
–আপনি সত্যি বলছেন আম্মা?
কি প্ল্যান সেটা খুলে বলুন?
রহিমা বেগম সবকিছু বুঝিয়ে বললেন বউমাকে।
শুনে মেহেরীমাও খুশি হয়ে উঠলো।
———————
রাতে খাওয়ার টেবিলে বসে অনিককে উদ্দেশ্য করে বললাম,
–কাল আমাদের একটা দাওয়াত আছে অনিক।ঐ যে আমার বান্ধবী আরশী আছে না?ওর ছেলের জন্মদিন।বাসার সবাইকেই যেতে বলেছে।
বিকালে কিন্তু তুমি কোনো কাজ রেখো না আবার।
–কাল?
–হ্যাঁ,আগামীকালই।
–ওহ্ নো!
–কি হলো আবার!
–আমি তো যেতে পারবো না।তোমাদের বলা হয়নি,কাল আমার জন্য একটা ইম্পোর্ট্যান্ট দিন অফিসে।নতুন দায়িত্ব নিয়ে নতুন চেয়ারে বসবো কাল।
–আহ্! এটা কি হলো!আগে বলবা তো?আমি তো আরশীকে কথাও দিয়ে ফেলছি যে আমরা যাচ্ছি ওর বাসায় কাল।এখন কোন মুখে ওকে আবার না করে দেই বলো তো।
–না,না।না করবে কেন?এটা তো খারাপ দেখায়।আমি না যেতে পারলাম তাতে কি?তোমারা ৩ জন তো যেতে পারো।
–তোমাকে ছাড়া কিভাবে যাই?তুমি নাহয় একটু আগে আগে অফিস থেকে চলে এসো।তারপর সবাই একসাথে যাব?
–কালকে প্রোগাম আছে অফিসে।বুঝোই তো একদম হিসাব করে টাইম টু টাইম তো আর আসা যাবে না।আসতে আসতে তো আমার অনেক রাতও হতে পারে।এতক্ষণ অপেক্ষা করবা নাকি!আজব!
–কিন্তু একটা কথা আছে তাহলে। তুমি যদি না যাও আমরা কিন্তু আরশীদের বাসায় রাতটা থেকে আসবো কাল।অত রাতে একা আমাদের ছাড়বেও না আরশী।আর অনেকদিন পর ওর বাসায় যাচ্ছি,আমিও চাই একরাত থাকতে।
তুমি রাজী আছো তো?
–আবার রাতে থাকার ঝামেলা করতে যাবা কেন?আমি নাহয় অফিস থেকে এসে তোমাদের পিক করতে যাব।
–না,না প্লিজ অনিক।অনেকদিন পর যাচ্ছি ওদের বাসায়।একটা রাত থাকতে চাই।অনেক দিন হলো দুই বান্ধুবী মিলে গল্প করি না।
কষ্ট করে একটা রাত তোমায় একাই থাকতে হবে বাসায় অনিক।
আমার শাশুড়ী আর তরী চুপচাপ খাচ্ছিল আর আমাদের কথা শুনছিল।
কথার মাঝখানে শাশুড়ী বললেন,
–আহা,অনিক এমন করছিস কেন?মেয়েটা একরাত ওর বান্ধুবীর বাসায় থাকতে চাইছে,তো থাকুক না।
–আম্মা বুঝতেছো না কেন?ওর শরীরটা ঠিক নেই এখন।এই অবস্থায় আমি একটা রাতও ওকে একা ছাড়তে পারবো না।
–একা কই রে?আমি আর তরীও তো থাকবো ওর সাথে।ওর ভালো মন্দের খেয়াল কি রাখবো না নাকি আমরা?
একসময় অনিক রাজী হলো।এবার বাঁধ সাজলো তরী!এতক্ষণ সে চুপ ছিল। এখন বললো,
–আপু আমিও যেতে পারছি না তোমাদের সাথে,স্যরি!
আমি অবাক হওয়ার ভাণ করে বললাম,
–কিন্তু কেন?
–বিকালে আমার একটা ফ্রেন্ডের বাসায় যেতে হবে।নোটস নিতে হবে ওর কাছ থেকে।ইম্পোর্ট্যান্ট নোটস আর কালই নিতে হবে।
সো প্লিজ তুমি আর আন্টি চলে যাও।আমি যেতে পারবো না।
আমি আর বেশি জোর করলাম না তরীকে।বললাম,
–ঠিক আছে।কি আর করার আমি আর আম্মাই চলে যাব নে।
সবাই খেয়েদেয়ে যার যার রুমে চলে গেল।
আমি অনিককে শুইয়ে দিয়ে,একটা বাহানায় আম্মার রুমে চলে আসলাম।
দুজনে মিলে হাই ফাইভ দিলাম।
ইয়েস!আমাদের প্ল্যানের প্রাথমিক অংশ সাকসেসফুল হয়েছে।
আমরা তো এটাই চেয়েছিলাম!
আমরা জানতাম কাল কিছুতেই অনিক যেতে পারবে না আমাদের সাথে।
আর অনিক বাসায় একা থাকবে!আমি আর আম্মা রাতে থাকবো না;অনিকের সাথে একা বাসায় থাকার এই সুযোগ তো কিছুতেই মিস করতে চাইবে না তরী এটাও নিশ্চিত ছিলাম।
বাস্তবিকে হলোও তাই।
আসলে আমরা ভেবে দেখেছি।আমরা তরীকে সেইভাবে সুযোগই দেইনি অনিকের কাছে আসার বা অনিকের কাছে মনের ভাব প্রকাশ করার!সবসময় চোখে চোখে রেখেছি বিধায় তরী ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনিকের কাছে মনের কথা খুলে বলতে পারেনি।
বুদ্ধিমানের কাজ হবে তরীকে সুযোগ করে দেওয়া।যাতে ও অনিকের সামনে ওর মনের কথা খুলে বলতে পারে। আর অনিকেরও ভুল ভাঙে।অনিক বুঝতে পারবে যাকে সে বোন হিসেবে দেখে,আদর করে সেই বোন তাকে কি হিসেবে দেখে!
————–
সকাল ১০:০৫
অনিক অফিসে যাওয়ার জন্য রেডী হচ্ছে।আজকের এমন একটা দিনেও তার লেইট হয়ে যাচ্ছে।
#চলবে