#আধারের_মায়াবী_ডাক
#লেখক_তুষার_আহমেদ_কাব্য
#পর্ব_১৭( তার মৃত্যু)
কাব্য কে তামিম বিছানায় শুইয়ে দেয়
:কাব্য চোখ খোলো?(পরী)
তামিম কাব্যের গায়ে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে। তারপর চোখ খোলে…
:ওর শক্তি একদম কমে গেছে। (তামিম)
:কাব্য আমাদের সাথে যেতে পারবে না। তাহলে আমি তামিম মাইশা আর আয়েশা যাচ্ছি, তিথি,তানভীর পরী আপু আর তারিন তোমারা এখানেই থাকবে। আর নিলাদ্রি শহরে যাও, shadow skull কে( good villains গল্পের) ডেকে আনো(নাদিয়া)
সবাই প্রস্তুত।
পরেরদিন সকালে…
সবাই তৈরি। নাদিয়া কিছু বিড়বিড় করতেই একটা ডাইমেনশন গেট খুলে যায়। একে একে সবাই প্রবেশ করে।
:কাব্যের খেয়াক রেখো! (তামিম)
বলেই সেও চলে যায়।তখনই কথা আর তারিন ও ভেতরে চলে যায়…..পরী খেয়াল করে তামিমের লকেট টা এখানেই রেখে গেছে তাই লকেট না নিয়ে সে এগিয়ে যায়।।।
সন্ধ্যার পর।
তিথি খেয়াল করে চারদিক একদম নিস্তব্ধ হয়ে যায়। তানভীর ও ভয় পায়।কাব্যের এখনো জ্ঞান ফেরেনি।
হঠাৎ পরী চিৎকার দিয়ে বলে উঠে “ওই দেখো!!
সবাই তাকিয়ে দেখে সেই মুখ ছাড়া মানুষ এর দল এগিয়ে আসছে। সব ধ্বংস করতে করতে।
সবাই ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। পরীও ভেতরে এসে দরজা লাগিয়ে দেয়।
বাইরে সেসব দানব সব ভেঙে শেষ করতে করতে এগোয়।
হঠাৎ পরী দেখল একটা বাচ্চা এখনো বাইরে।পরী দ্রুত দরজা খুলে বেরিয়ে যায়। বাকিরা তাকে আটকাতেই চেয়েও পারেনা।
পরী বাচ্চাটাকে নিয়ে ফিরবে তখনই একটা দানব ঠিক তার সামমে চলে আসে। হাত উচু করে মারবে ঠিক তখনই সে মাঝখান থেকে দুভাগ হয়ে যায়। পরী দেখল কাব্য দাঁড়িয়ে আছে তলোয়ার হাতে নিয়ে।খুব অসুস্থ লাগছে তাকে।
কাব্য পরীকে আগলে দাঁড়ায়। ঠিক ভাবে দাড়াতে পারছে না কিন্তু পরীকে বাচাতে হবে।।কাব্য তলোয়ার উচু করে সেই দানবদের দিকে ছুটে যায়।
অন্যদিকে
তামিম আর বাকিরা একটা পাহাড়ি পথে এসে নামে।।।চারদিকে ঘন কুয়াশা। আঁকাবাঁকা রাস্তা।
:এবার কোথায় যাবো?(তামিম)
:সোজা গিয়ে বাম দিকে(নাদিয়া)
সবাই এগোতে থাকে।
আর কথা আর তারিন লুকিয়ে তাদের পিছু নেয়।
হঠাৎ একটা পাথর সামনে পড়ে।
:ধুর(আয়েশা)
:প্যারা নাই চিল!(তামিম)
তামিম সোজা হয়ে দাঁড়ায়। তামিমের দু পাশ থেকে বেরিয়ে আসে দুটো দাত। পিঠ থেকে বেরিয়ে যায় দুটো বাদুরে ডানা!৷
:কাব্য একমাত্র লোক না যার শক্তি আছে।(তামিম)
:কিন্তু???(মাইশা)
:যা জানার তুষার আহমেদ কাব্য এর পেজে গিয়ে জেনে নিস i am Tushar A. বাস এখন চুপ!(নাদিয়া)
:জ্বি জানি
তামিম পাথর টা এক হাতে তুলে ছুড়ে মারে। তারপর সবাই এগোতে থাকে।
অন্যদিকে….
৯০% দানবদের মেরে ফেলে কাব্য। এবার সে আর পারছে না লড়তে। আর কিছু দানব বাকি। পরীর দিকে তাকিয়ে দেখে সে ভয়ে আছে।
কাব্যের রাগ হয়। শেষ অব্দি শেষ শক্তি দিয়ে একটা বিশাল শক্তির বিষ্ফোরন ঘটায়। এতে সব দানব আর তার শক্তি দুটোই শেষ হয়ে যায়। এই বিষ্ফোরন এর ফলে একটা আভা ছড়ায় যা যে কাউকে জ্বালিয়ে ফেলবে।কাব্য দ্রুত গিয়ে পরীকে জড়িয়ে ধরে আগলে নেয়।
আভা কেটে আবার পর কাব্য ধপ করে হাটু গেড়ে বসে যায়। তার সব শক্তি শেষ।
পরী কেদে তাকে জড়িয়ে। কাব্য হেসে দেয়। শক্তি তো ফিরে আসবে বিশ্রাম নিলে। এই ভালোবাসা টাই প্রয়োজন ছিলো
প্রথমবার সে হাসলো।
কিন্তু তখনই…
খচ করে একটা শব্দ হয়৷। কাব্যের চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে। তাকিয়ে দেখে পরীর হাতে একটা চুরি যা তার পেটে ঢুকে গেছে।
পরী ছুরি টা বের করে আরো কয়েকবার পেটে মেরে দেয়। রক্ত পড়তে থাকে…।
কাব্য অশ্রুসিক্ত চোখে তাকিয়ে থাকে…।
সব শক্তি হারিয়ে কাব্য মাটিতে পড়ে যায়..
:কাব্য তুমি জানতে এই লড়াই এ তোমার কোনো পুরষ্কার নেই তাই কেন এই লড়াই এ এলে?(পরী)
কাব্য হেসে উত্তর দেয়” এই সমাজে ভালোবাসা আর সম্পর্কের মূল্য কমে গেছে, ঠিক তোমার মতো। মানুষ গুলো পশু হয়ে যাচ্ছে। দেহের কামনা মিটাতে কাউকে রেহাই দেয়না। আমি শুধু চেয়েছি ভালোবাসা টা আগের জায়গায় আসুক। আমার মতো হতভাগা যে কারো ভালোবাসা পায়নি তারাও চায় ভালোবাসা পেতে। কিন্তু……. এই দুনিয়া তা দেবে না…দেখলে তো?
:আফসোস তুমি পেলে না!(পরী)
:আমি ফিরবো, যদি কেউ আমাকে একটুও ভালোবাসে আমি ফিরবো,যদি আমি কারো মনে এই টুকু জায়গা অর্জন করে থাকি, কেউ আমাকে ভালোবাসবেই,,,,
বলতেই ঠিক বুকে ছুরি বসিয়ে দেয় পরী তারপর উঠে হেটে চলে যায়।
সে যেতেই কুয়াশার ভেতর থেকে সেই বিশাল বাঘ টা এগিয়ে আসে কাব্যের কাছে
:ওদের বলবি,,,,,আমার পেজের কভারে আছে সেই লকেটের ঠিকানা। দুটি চোখের মাঝে, আর আমার লকেট টা….
বলেই কাব্য লকেটা বাঘটার গলায় পড়িয়ে দেয়। তখনই বাঘ টা একটা বিড়াল হয়ে যায় নীল চোখ( যেমন টা গল্পের কভার ফটো তে আছে)
:এমন কাউকে দিবি যে আমাকে ভালোবাসে…তাহলে আমি ফিরব…
বলেই কাব্য চুপ করে। চোখের কোন বেয়ে পানি পড়ে যায়। কাব্য চোখ বন্ধ করে।বিড়াল চুপ করে তাকিয়ে থাকে। চারদিক থেকে মানুষ বেরিয়ে আসে। কাব্যকে মৃত দেখে সবার প্রচন্ড খারাপ লাগে… তখনই সবাই দেখল কাব্যের শরীর টা ছাই হয়ে উড়ে যায়…
বিড়াল টাও উধাও… ঘরে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে থাকা তিথি আর তানভীর এর জ্ঞান ফেরে।
যখন জানতে পারে কাব্য আর নেই দুজনের অনেক কান্না করে।কাব্যের তলোয়ার টা তুলে খাপে রাখে তানভীর।।। তাদের আর কিছু করার নেই….
অন্যদিকে
সেই পাহাড়ের চুড়ার গুহায় এসে পৌছায়…একটা বিশাল গেট। তামিম ধাক্কা দিয়ে খুলতে পারছে না। তখনই নাদিয়া কিছু বিড়বিড় করতেই গেট খুলে যায়
কিন্তু সবাই অবাক হয় যে ভেতরে কিছুই নেই
তাহলে blue blood কোথায়?।
তামিম ঘুরে তাকাতেই দেখল একটা বিড়াল। করুন ভাবে তাকিয়ে আছে। তামিম দেখেই চিনে যায় এটা তো কাব্যের সাথে থাকতো।
তামিম বিড়াল টার সামনে যেতেই বিড়াল টা বাঘে রুপ নিয়ে তামিমের কপালে হাত রাখে।
তামিম ধপ করে বসে পড়ে। চোখ ছলছল করতে থাকে
:নাদিয়া আমরা ফিরে যাবো,ডাইমেনশন গেট খোলো(তামিম)
নাদিয়া কিছু না বুঝতে পেরেই গেট খোলে। একে একে সবাই গেট দিয়ে গ্রামে ফিরে যায়। কিন্তু ওই ডাইমেনশনে থেকে যায় তারিন আর কথা…
গ্রামে ঢুকেই দেখে অনেক মানুষ ভীড় করে আছে।
কেউ কিছু বুঝতে না পারলেও তামিম এগিয়ে যায়। এদের দেখে গ্রামবাসী সরে যায়।
তামিম নাদিয়া আয়েশা আর মাইশা স্তব্ধ হয়ে যায়, সামনের কাব্যের লাশ।
কেদে উঠে নাদিয়া আর আয়েশা।
তামিম পাথরের মতো দাঁড়িয়ে থাকে। গ্রামবাসী সব খুলে বলে কি হয়েছিলো।
।
।
রাত পেরিয়ে সকাল হয়ে যায়। আকাশ অদ্ভুত ভাবেই কালো হয়ে আছে।টিপটিপ ফোটা পড়ছে।
খাটিয়ায় কাব্যকে তোলা হয়েছে। তানভীর আর তামিম একদিক ধরে। গ্রামবাসী বাকি ৩দিক।হঠাৎ ডাইমেনশন গেট খুলে বেরিয়ে আসে শেন আর শেরন। এই দুই ভাই জ্বিন কাব্যের বেশ ভালো শত্রু।
:কোথায় কাব্য! আজ দেখিয়ে দেবো(শেন)
:হ্যাঁ আজ ও হারবে(শেরন)
নাদিয়ার দিকে তাকাতেই নাদিয়া লাশের দিকে ইশারা করে।
সাথে সাথে দুজনের হাত থেকে তলোয়ার পড়ে যায়।
চোখ কেমন স্তব্ধ হয়ে যায়। দুজনই সবাই কে অবাক করে কেদে দেয়।
তারপর নিজেরাই এসে খাটিয়ার এক কোণা ধরে।
তারপর লাশ কে শেষ বিদায় দিয়ে দাফন করা হয়।
।
সন্ধ্যায়..
তামিম সহ সবাই বসে আছে…
তখনই বিড়াল টা এসে কাব্যের লকেট টা দিয়ে বলে উঠে…
:যদি ও তাকে পায় তাহলে ও ফিরে আসবে,(বিড়াল টা) আর লকেটের ঠিকানা ওর পেজে পাবে। আমার কাজ শেষ।
বলেই বিড়াল টা উধাও হয়ে যায়।
নাদিয়া ফেসবুক চালু করে কিন্তু i am Tushar A নামের কোনো পেজ পায়না
:পাচ্ছি না(নাদিয়া)
:পাবে কিভাবে? গল্পটা এতো কপি করা হয়েছে যে আসল পেজ পাওয়া টাই মুশকিল। অন্যের জ্ঞান কে নিজের টাইমলাইন এ নিয়ে মেয়েদের মন জয় করা ষ্টুপিড দিয়ে ভরা এই ফেসবুক।, যাই হোক পাঠক রা কাব্যের নাম বা তুষার আহমেদ দিলেই পেয়ে যাবে।(আয়েশা)
হঠাৎ দেখতে পায় সেই পেজ টাই কিন্তু অন্য নামে
নাম টা অলিখিত কাব্য – তুষার আহমেদ কাব্য দেয়া
তামিম ঝট করে উঠে দাঁড়ায়
:মানে লকেট টা মাউন্টেন ব্লু মুন এ আছে(তামিম)
:মানে?(নাদিয়া)
:অলিখিত কাব্য আমাদের এরকমই একটা সিরিজ, সেখানে একটা রহস্যময় পাহাড় এর নাম মাউন্টেন ব্লু মুন। কাব্য এই ইশারাই দিয়ে গেছে
:তাহলে এখনই চলো((মাইশা)
:নাহ,কাল। জায়গা অনেক ভয়ানক। (তামিম)
:আমরাও তোমদের সাহায্য করবো(শেন আর শেরন)
:হুম আমি,নাদিয়া,মাইশা, শেন শেরন আর তানভীর যাবো(তামিম)
সবাই চুপ হয়ে বসে বাইরের দিকে তাকায়
দূরে কাব্যের কবর টা দেখা যাচ্ছে…
সবার মন আবারো খারাপ হয়ে যায়
তামিম এর মনে পড়ে একটা কথা!
একদিন” : আচ্ছা কাব্য তোকে মারতে হলে কি করতে হবে?(তামিম)
:কাউকে মারতে অস্ত্র দিয়ে শত আঘাত করতে হয়না
তার ভালোবাসা আর বিশ্বাসে এক ফোটা বিষ ঢেলে দে। জীবন্ত লাশ হয়ে যাবে(কাব্য)
:তুই কাউকে ভালোবাসিস না আর কেউ তোকে ভালোবাসে না। তাই নিশ্চিন্ত তাই না”
কাব্য সেদিন চুপ ছিলো
তামিম কাব্যের তলোয়ার টা হাতে নেয়।।।
আর কখনো কি কাব্য এটা চেপে ধরে লড়তে যাবে?
চলবে……