আমার একলা আকাশ পর্ব-০২

0
657

#আমার_একলা_আকাশ🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(Writer)
#২য়_পর্ব
,
হেই তুমি মেহরাব রাইট?? (মেঘ)

কারো ডাকে পিছনে ফিরে তাকালাম দেখলাম সাদা এপ্রোন পড়া একটা ছেলে আমার পিছনে দাড়িয়ে আছে,,

হ্যাঁ আমি মেহরাব কিন্তু আপনি?(মেহরাব)

আরে আপনি বলছো কেনো আমরা তো সেম বয়সেও আবার কাজের ক্ষেএেও(মেঘ)

তা ঠিক আছে কিন্তু তুমি আমায় চিনলে কীভাবে??(মেহরাব)

কাল দেখলাম তোমাকে কালই অবশ্য পরিচিত হতাম কিন্তু অনেক ব্যাস্ত ছিলাম তো তাই আর কথা বলতে পারিনি,, তুমি আর আমি কিন্তু একি কক্ষে বুঝেছো,, আজ থেকে আমরা বন্ধু ওকে আর আমি কিন্তু তোমাকে বেশিক্ষণ তুমি টুমি বলতে পারবো না ওকে যেহেতু বন্ধু সেহেতু তুই করেই বলবো ওকে(মেঘ)

আচ্ছা ঠিক আছে,,, তা এখন যাওয়া যাক??(মেহরাব)

হুম অবশ্যই,,, (মেঘ)

অন্যদিকে,,,,,

ছাড়ো আমায় আমি কোনো ইনজেকশন নিবো না, তোমরা কেনো বোঝো না আমি পাগল নয় কেনো আমাকে পাগল বানাচ্ছো জোর করে,, ছাড়ো আমাকে,,, আর আমাকে বাইরে যেতে দাও আমি এই বদ্ধ ঘরে থাকতে চাই না (জোরে চেঁচিয়ে বলল মাহি)

এই ওকে শক্ত করে ধরো তো (নার্স)

তারপর দুজন নার্স মাহিকে শক্ত করে ধরল আর নার্সটা মাহিকে ইনজেকশন দিয়ে দিলো,, ইনজেকশন দেওয়ার পরপরই মাহি নেতিয়ে পড়ল।।

ওকে এখানেই শুয়েই দিয়ে তোমরা বাইরে যাও।

এই পুরো কাহিনীটা দরজার বাইরে দাড়িয়ে মেঘ আর মেহরাব দেখল,,,

আচ্ছা মেঘ এই মেয়েটা কে?? ওকে দেখে তো মনে হয় না ও অসুস্থ কিন্তু তবুও ওকে এভাবে এখানে রাখা হয়েছে কেনো??(মেহরাব)

হুম ও পাগল নয়,, কিন্তু এ কথাটা কেউ বিশ্বাসই করবে না,, এই যে ওকে এখন যেমন চুপচাপ দেখছিস ও কিন্তু মোটেও এমন নয় ও অনেক চটপটে আর অনেক দুষ্ট,, আমি এখানে জয়েন করার একদিন পর ওকে এখানে আনা হয়েছিলো,,, তারপর আমার সাথে ওর পরিচয় আমাকে ভাইয়া বলতো এখানে সবার সাথে কত হাসি খুশি থাকতো তার কয়একদিন পর একটা ছেলে আসলো ছেলেটা নাকি ওর পরিচিত কি হয় তা জানি না,, ওই ছেলেটা এসে ডাক্তার আজিজকে কি যে বলল জানি না তারপর ওকে আর বেশি বাইরে আসতে দেওয়া হয় না,, প্রায় সময়ই রুমে রাখা হয়,,, আমি সব কিছু দেখলেও কিছু বলতে পারি না কেননা আমি এখানকার সামান্য একজন ডাক্তার আমার কি ক্ষমতা??কিছু বললে চাকরিটা হারাবো,, আচ্ছা বাদ দে ওসব নিয়ে আমাদের ভেবে কি লাভ তা তুই কোথায় উঠোছিস??(মেঘ)

আমি?? আমি আর কোথায় উঠবো এই শহরে তো আমার তেমন কোনো আত্মীয় নেই যে তার বাসায় উঠবো তাই আর কি ওই একটা ছোট্ট ফ্ল্যাট এ দু রুম নিয়ে থাকি,, তুই কোথায়?? (মেহরাব)

আমি আমার বাড়িতেই,, আমার বাড়িতো ঢাকাতেই তাই,, (মেঘ)

ওহ তাহলে তো ভালোই,, তা তোর বাড়িতে কে কে আছে??(মেহরাব)

ওই বাবা আর মা,, বাবা একটা স্কুলে জব করতো এখন রিটায়ার্ড করে বাড়িতেই থাকে,, একটা বড় বোন ছিলো ওর বিয়ে হয়ে গেছে আর আমি,, তা তোর বাড়িতে কে কে আছে?? (মেঘ)

আমার মা আর ছোট বোন৷ বাবা অনেক আগে মারা গেছে,, ছোট বোন ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে (মেহরাব)

ওহ তাহলে তো ভালো,, আচ্ছা চল ওদিকে যায়।

বিকেলে,,,,

দেখেছো বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে চলো ভিজি??(মাহি)

ভিজবো?? কিন্তু যদি আমার জামা আর না শুকাই তাহলে(পাশের বেডের একটা মেয়ে)

আরে পাগল শুকাবে চলো যাই,,, (মাহি)

কিন্তু যদি কেউ বকা দেয় তাহলে??

আরে কেউ দেখলে তো আমরা তো লুকিয়ে যাবো আর ভিজে লুকিয়ে লুকিয়ে চলে আসবো,, এখন চলো চলো।

তারপর দুজন চুপি চুপি লুকিয়ে বাইরে চলে গেলো,,, মাহিকে ইনজেকশন দেওয়ার পর ওর ঘুমিয়ে গিছিলো তারপর বিকেলের দিকে ঘুম ভাঙার পর দেখল আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে তারপর ঝিরিঝিরি বৃষ্টির শব্দ বুঝঝুম বৃষ্টি হচ্ছে আর বৃষ্টি হলেই মাহি নিজেকে আটকে রাখতে পারে না পুরাই বাচ্চা হয়ে যায়,, ময়ূরী যেমন বৃষ্টি পেলে নিজের পালক মেলে দেয় তেমনি মাহিও নিজের হাত দুদিকে ছড়িয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে বৃষ্টির ফোঁটা গুলো নিজের গায়ে মাখছে।

মেহরাব হাতে ফাইল নিয়ে ডাক্তার আজিজ এর কেবিনের দিকে যাচ্ছিলো তখনি বাইরে মাঠের দিকে তাকিয়ে দেখলো মাহি ছোট্ট বাচ্চাদের মতো করে লাফাচ্ছে আর বৃষ্টি তে ভিজছে। মেহরাব ওখানে দাঁড়িয়ে মাহিকে পাহাড়া দিচ্ছে যাতে কেউ না চলে আসে,, তখন মেঘের থেকে মাহির বেপারে কথাগুলো শুনার পর অনেক খারাপ লেগেছে তাই এখন এটা করছে যাতে মেয়েটা একটু মন খুলে হাসতে পারে।

কিরে মেহরাব তুই এখানে দাড়িয়ে আছিস কেনো?? তোর না ফাইলটা নিয়ে ডাক্তার আজিজ এর কেবিনে যাওয়ার কথা তা না গিয়ে এখানে দাড়িয়ে আছিস যে বৃষ্টি বিলাস করছিস নাকি??(পিছন থেকে মেঘ কথাগুলো বলতে বলতে মেহরাব এর কাছে আসল)

ইশশশ চুপ কথা বলিস না,, ওই সামনে দাখ (মেহরাব মাহির দিকে হাত দিয়ে দেখালো)

আরে ও এখানে কেউ দাখিনী তো?? বিসেস করে ওই বজ্জাত নার্সটা (মেঘ)

আরে নাহ,, যাতে না দাখে সেই জন্যই তো এখানে দাড়িয়ে আছি(মেহরাব)

সত্যি কতদিন পর মেয়েটা এমন করে হাসছে,, তা তুই হঠাৎ করে ওকে পাহাড়া দিচ্ছিস যে কি বেপার হুম সামথিং সামথিং হুম হুম, তাহলে তো পাগলের ডাক্তার এর সাথে পাগলীর প্রেম কাহিনী লেখা হবে আহ(মজা করে বলল মেঘ)

সেটাপ মেঘ তুই বড্ড বেশি কথা বলিস চুপ থাক নয়ত আমার হাতে মার খাবি (রেগে বলল মেহরাব)

ওকে ওকে এতো রাগছিস কেনো ইয়ার আমি তো মজা করছিলাম,,, এই বলে মেঘ সামনে তাকিয়ে বলল।

মাম্মি বাঁচাও (মেঘ)

কিরে কি হলো ওমন করছিস কেনো??(মেহরাব)

সামনে তাকিয়ে দাখ তোর নানি আসছে (মেঘ)

মেঘের কথা শুনে মেহরাব সামনে তাকিয়ে দেখলো সেই নার্সটা এদিকেই আসছে।

আরেরে ওই নার্সটা তো দেখছি এদিকেই আসছে (মেহরাব)

হুম ওই বজ্জাত মহিলাটা আসার আর সময় পেলো না,, দাড়া আমি দেখছি,৷
এই বলে মেঘ অনেক ভাব নিয়ে নার্সটার সামনে গেলো।

আসোলে মেঘ ওই নার্সটা কে একটু ভয় পাই কেননা নার্সটার সাথে ডাক্তার আজিজ এর অনেক ভালো সম্পর্ক আছে মানে হলো লতুপতু সম্পর্ক তাই মেঘ যদি কিছু করে আর নার্সটা যদি আজিজ এর কানে কুমন্ত্রণা দেয় তাহলে মেঘের চাকরি চান্দের দেশে চলে যাবে তাই কি। মেঘ নার্সটার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।

কি হলো আপনি এভাবে সামনে আসলেন কেনো (নার্স)

চলবে,,,,,,,??

(নাম চেঞ্জ করে দিলাম,, সবাই মেহরাব আর মাহি দিতে বলল তাই বদলে দিলাম।।স্পন্দন হলো মেহরাব আর দিয়া হলো মাহি,, আশা করি বুঝতে পারছেন সবাই,,,, )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here