#গল্পের_নাম_আমার_শহরে_তুমি
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্বঃ১০
,,,,
,,,,,,
ভিতরে ডুকে আমি আরো বেশি খুশি হয়ে গেলাম কারণ বড় খালামনি সোফায় বসে আছে আমি তাকে দেখেই বললাম,
~খালামনি তুমি কবে এসেছো?আর কেমন আছো?বাসায় সবাই কেমন আছে?
খালামনি হেসে বললেন,
~এতো প্রশ্ন একসাথে কীভাবো জবাব দিবো
খালামনির কথা শুনে বললাম,
~আরে খালামনি এতোদিন পর তোমায় দেখেছি তাই একটু এক্সাইটেড হয়ে গেছি।
আমার কথায় খালামনি বললো,
~হুম বুঝতে পেরেছি।সব ঠিক আছে, আমিও ভালো আছি আর গতকাল বিকেলে এসেছি আজ চলে যাবো।
আমি মলিন মুখে বললাম,
~আজই চলে যাবে।
খালামনি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
~হ্যাঁ মা ডাক্তার দেখাতে এসেছিলাম।আজকে ডাক্তার দেখিয়ে চলে যাবো বুঝিসই তো বয়স হয়েছে আর বাড়ি থেকে দূরে থাকতে মন চায় না।
আমি মৃদু হাসলাম খালামনি অবাক চোখে আমার পিছনে তাকিয়ে বললো,
~জামাই বাবাজি দাড়িয়ে আছো কেন?আসো বসো।
আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি রক্তিম হ্যাবলার মতো দাড়িয়ে আছে।খালমনির কথায় তার ধ্যান ভাঙ্গে আর বলে,
~অসুবিধা নেই।আসলে আপনারা কথা বলছিলেন তাই আর কী?
খালামনি হেসে বললেন,
~বসো বাবা।তুমি কেমন আছো?
রক্তিম সোফায় বসে বললো,
~ভালো। আপনি কেমন আছেন?
খালামনি মলিন হেসে জবাব দিলো,
~ভালো আছি।বুড়ো বয়সে আর যতোটুকু ভালে রেখেছে আল্লাহ পাক এটাই যথেষ্ট।
খালামনির কথায় রক্তিম কিছু না বলে শুধু মুচকি হাসি দিলো।মা এসে খালামনির উদ্দেশ্যে বললো,
~আপা চলে রুমে যাই কতক্ষন ধরে বসে আছো।
খালামনি কিছু না বলে ধীর পায়ে হেঁটে মায়ের সাথে রুমে চলে গেলেন।মা খালামনিকে রুমে দিয়ে এসে আমার কাছে এসে বললেন,
~রক্তিমকে নিয়ে তোর রুমে যা।এখানে কতোক্ষন বসে থাকবে।
মায়ের কথায় রক্তিমের কাছে গিয়ে বললাম,
~চলেন আমার রুমে গিয়ে বসেন।
রক্তিম শয়তানি হাসি দিয়ে উঠে দাড়ালো তারপর আমার কানের কাছে ফিসফিস করে বললো,
~রুমে গিয়ে একটু রোমান্স হয়ে যাক।
রক্তিমের কথায় তার দিকে একটি হাসি দিয়ে বললাম,
~রোমান্স করতে মন চায় তাহলে একটা কাজ করেন আরেকটা বিয়ে করেন।সেই বউয়ের সাথে রোমান্স করেন কী বলেন?
রক্তিম আমার কথায় বললেন,
~এক বউই সামলাতে জান যায় আর আসে আবার আরেক বউ না বাবা না।
রক্তিমের কথায় রাগী কন্ঠে বললাম,
~এখানে কিছু বলবো না রুমে চলেন তারপর বুঝাবো।
রক্তিম বললো,
~আরে রাগ করছো কেন?আমি তো এভাবেই বললাম
তার কথায় আমি কপট রাগ দেখিয়ে বললাম,
~আপনার কী আমাকে জ্বালাতে অনেক ভালো লাগে?
রক্তিন বেবি ফেস করে বললো,
~জ্বী অনেক ভালো লাগে।
রক্তিমের এমন ফেস দেখে আমার অনেক হাসি পাচ্ছে কিন্তু নিজেকে কন্ট্রোল করে বললাম,
~এখন রুমে চলেন।
বলেই আমি হাঁটা ধরলাম রক্তিম আমার পিছে পিছে রুমে চলে আসলেন।রুমের চারপাশে চোখ বুলিয়ে নিলাম মনে হচ্ছে অনেকদিন ধরে দেখিনা রুমটা একদম গোছানো হয়তো মা গুছিয়ে রাখে।এই কয়দিন অনেক মিস করেছি মাকে।শুধু মাকে না সবাইকেই অনেক মিস করেছি এসব ভাবছি তখনই রক্তিমের কথায় আমার ধ্যান ভাঙ্গলো,
~অধরা,তোমার বই গুলো আজ মনে করে গুছিয়ে রেখো সব নিয়ে যেতে হবে। যখন থেকে বিয়ে হয়েছে তুমি বই তো ধরেই দেখো না।এগুলো চলবে না পড়াশোনা করতে হবে এখন থেকে রোজ আমার কাছে পড়তে বসবে।
আমি ভেংচি কেটে বললাম,
~হহু আপনার কাছে কে পড়তে বসবে।আপনি শুধু বকা দেন আমি আপনাকে ভালো মতো জানি পড়ার সময় রাক্ষস হয়ে যান।
রক্তিম চোখ বড় বড় করে বললেন,
~আমি রাক্ষস হয়ে যাই দাড়াও তোমাকে বুঝাচ্ছি এই রাক্ষস কী কী করতে পারে।
কথা শেষ করেই যেই না সে আমাকে ধরতে যাবে আমি দৌড়ে তার থেকে সরে যাই।রক্তিম আমাকে ধরতে না পেরে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
~এখন কেন পালাচ্ছো?
আমি বললাম,
~কে পালাচ্ছে?আমি তো শুধু জায়গা চেঞ্জ করেছি একজন শিক্ষক হয়ে মিথ্যা বলেন লজ্জা করে না।
রক্তিম এবার রেগে গিয়ে একটু এগিয়ে এসে খপ করে আমার হাত ধরে নিজের কাছে টেনে নিয়ে বললেন,
~কী যেন বলছিলে?
আমি ভয়ে ঢোক গিলে বললাম,
~যা বলেছি আপনি শুনতে পাননি।
রক্তিম আমার কোমড় জড়িয়ে ধরে নিজের আরো কাছে টেনে নিয়ে বললেন,
~হুম শুনেছি কিন্তু দূর থেকে এখন কাছের থেকে শুনতে চাই।
আমি নিচের দিকে তাকিয়ে বললাম,
~যা বলার বলে ফেলেছি আর বলতে পারবো না।
রক্তিম অধরার এ অবস্থা দেখে মিটমিট কর হাসছে আজ তার বউকে জব্দ করা যাচ্ছে তাই অধরার কানের সামনে গিয়ে ফিসফিস করে বললো,
~তুমি মাথা নিচু করে আছো কেন?
,,,,,,,,
,,,,,,,,
রক্তিমের এমন কথা শুনে আমার কান আরো গরম হয়ে গেলো।রক্তিম কী বুঝতে পারছে না আমার লজ্জা করছে।তাও সে এমন করছে অসভ্য মানুষ আমি মাথা উচু করে তার দিকে তাকাতেই আমার লজ্জাবোধ আরো বেড়ে গেলো আজব তো এতো লজ্জা কেন পাচ্ছি আমি।রক্তিম আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো আমার মাথা তার বুকের সাথে লেপ্টে আছে।আমি রক্তিমে হার্টবিট শুনতে পাচ্ছি এই শব্দগুলো আমার কাছে খুব ভালো লাগছে কেন জানি মনে হচ্ছে প্রতিটি হার্টবিটের শব্দে আমার নাম লিখা।আমি পরম আবেশে চোখ বন্ধ করে নিলাম আমার মনে হচ্ছে আমি আজীবন এ শব্দ গুলো শুনে কাটিয়ে দিতে পারবো।
রক্তিমের অনেক ভালো লাগছে অধরাকে এভাবে বুকে জড়িয়ে রাখতে।তার এতে অনেক সুখ সুখ লাগছে সে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করছে কারণ তার ভালোবাসা আজ তার বুকে আছে।মনের ভিতর উথাল-পাতাল ঢেউ বয়ে যাচ্ছে অধরা কী এই আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে হয়তো হ্যাঁ কারণ অধরা তার বুকে পরম আবেশে মাথা রেখে আছে।হয়তো এখানেই অধরা তার শান্তি খুজে পাচ্ছে দুজনই একটা ঘোরের মধ্যে আছে হঠাৎ কেউ বলে উঠলো,
~আমি কিছু দেখিনি।
কারো কন্ঠ শুনে আমার ধ্যান ভাঙ্গলো আর সাথে সাথে আমি রক্তিমের বুক থেকে মাথা উঠিয়ে তাকে মৃদ্যু ধাক্কা দিতেই সে আমাকে ছেড়ে দিলো। আমি দরজার দিকে চোখ পরতেই দেখি আরিফ দাড়িয়ে আছে তাকে দেখেই আমি মুখে হাসির রেখা টেনে বললাম,
~ভাই ভিতরে আয়। কেমন আছিস?আর জারিফ কোথায়?
আরিফ আমতা আমতা করে বললো,
~আপু আমি না কিছু দেখি নি। তুমি কিছু মনে করো না।
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগে রক্তিম বললেন,
~আরে শালা সাহেব এতে এতো লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই।একদিন আপনারও বিয়ে হবে।
রক্তিমের কথায় আরিফ মাথা নিচু করে মুচকি হেসে রুমের ভিতরে ঢুকে বললেন,
~দুলাভাই বিয়ের কথা বলবেন না লজ্জা লাগে।
রক্তিম হো হো করে হেসে বললেন,
~লজ্জাবোধ টা বোনের কাছ থেকে পেয়েছো।
রক্তিমে কথায় আমি তার দিকে রাগী চোখে তাকালাম রক্তিম আমার তাকানো দেখে মিটমিট করে হেসে বললেন,
~তো আরিফ আমার আরেকটা শালা বাবু কই?
আরিফ বললো,
~আপনার জন্য উপহার আনতে গেছে।একটু পর চলে আসবে।
আমি রক্তিম আর আরিফকে রুমে রেখেই মায়ের কাছে চলে আসলাম। মা রান্নাঘরে কাজ করছে আমি মাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম মা বললো,
~সব ঠিক আছে তো মা?ওই বাসার কেউ তোকে কিছু বলেনি তো?
মায়ের যে চিন্তা হচ্ছে তা আমি ভালোমতো জানি তাই মাকে বললাম,
~কেউ কিছু বলে না রক্তিম আমাকে সব সময় আগলে রাখে তাই কেউ কিছু বলতে পারেনা।
মা আমার কথা শুনে অনেকটাই নিশ্চিন্ত হয়ে বললেন,
~আমি তো জানতাম রক্তিম অনেক ভালো ছেলে।তুই কী আবার রক্তিমকে জ্বালাস নাকি?একদম কোনো জ্বালাতন করবিনা ছেলেটাকে।
মায়ের কথায় রাগ উঠে গেলো কিন্তু মাকে তো কিছু বলতে পারবো না শুধু মনে মনে বললাম,
~আমি কী জ্বালাবো সেই তো আমাকে জ্বালিয়ে ছাড়খার করে দেয়।
মা আমাকে চুপ দেখে বললেন,
~কীরে কী ভাবিস?
আমি বললাম,
~কিছু না।আমি একটু রুম থেকে আসছি
মা বললো,
~ঠিক আছে।
আমি রুমে চলে গেলাম সেখানে গিয়ে দেখি আরিফ আর রক্তিম কথায় মসগুল আমি বারান্দায় গিয়ে দাড়ালাম কতোদিন এখানে দাড়িয়ে দূর আকাশ দেখা হয় না আজকের আকাশটা দেখতে অনেক সুন্দর। ভাবছি আগামীকালকে সারা আর রাতের বিয়ের তারিখ ঠিক করা হবে কিন্তু সাহারা রায়জাদা ভয় পাচ্ছে আমাকে নিয়ে যাক ভয় পাওয়া ভালো।
রক্তিমের আড্ডা শেষ হলো আরিফের সাথে।আরিফ রুম থেকে বের হতেই রক্তিমের ফোনটা বেজে উঠলো সে ফোনের দিকে তাকাতেই দেখলো তার বাবা ফোন করেছেন। রক্তিম একটু অবাক হলো সে ফোন রিসিভ করতেই অপরপাশ থেকে তার বাবা বলে উঠলো,
~তুমি এখন কোথায়?
রক্তিম বললো,
~আমি তে অধরাকে নিয়ে তার বাসায় এসেছি।
রক্তিমের বাবা বললো,
~এখনই ****** হাসপাতালে পৌছাও।আর শোনো অধরাকে কিছু বলার প্রয়োজন নেই।
রক্তিম একটু ভয় পেয়ে বললো,
~বাবা,হাসপাতালে কেন? দাদীমা ঠিক আছে।
রক্তিমের বাবা বললো,
~মা ঠিক আছেন।তুমি তাড়াতাড়ি এসো।
বলেই ফোন কেটে গেলো অজানা ভয়ে রক্তিমের গলা শুকিয়ে আসছে। রক্তিম বসা থেকে উঠে দাড়ালো তারপর অধরাকে নাম ধরে ডাক দিলো,
~অধরা,অধরা।
রক্তিমের ডাক শুনে আমি বারান্দা থেকে রুমে চলে গেলাম। রক্তিম আমাকে দেখে বললো,
~অধরা অনেক জরুরি কাজ পরেছে তাই একটু বাহিরে যাচ্ছি।চলে আসবো
আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সে রুম থেকে বের হয়ে আসেন আমি তার পিছে পিছে বাহিরে গেলাম রক্তিম দরজার সামনে গিয়ে আবার আমার দিকে ফিরে আমার কপালে ঠোঁট ছুয়িয়ে বের হয়ে গেলেন।
,,,,,,,
,,,,,,,,,
রক্তিম চলে গেছে অনেকক্ষন হলো মা আমাকে জিজ্ঞেস করেছে কেন রক্তিম চলে গেলো।আমি মাকে বুঝিয়ে দিয়েছি দুপুরের খাবারের সময়ও হয়ে গেলো কিন্তু রক্তিম আসলো না আমি অনেকবার ফোন ট্রাই করলাম সে রিসিভ করলোনা।দুপুরের খাবারের পর আবার ফোন ট্রাই করলাম এবার সে রিসিভ করলো আর রক্তিম বলে উঠলো,
~অধরা,আমি চলে আসবো।আর আমি ঠিক আছি।
আমি বললাম,
~আপনি কোথায় আছেন?আমার অনেক টেনশন হচ্ছে
রক্তিম ভেজা ভেজা গলায় বললো,
~এসে পরবো।
এতটুকু বলে ফোন কেটে দিলো।আমার মনটা অনেক কু ডাকছে কোন অঘটন ঘটেনি তো।
রক্তিম ফোন রেখে ভাবলেশহীন ভাবে হাসপাতালের করিডোরে দাড়িয়ে আছে। রক্তিম ভাবছে এই কয়েকঘন্টায় কী হয়ে গেলো সে অধরাকে কীভাবে মুখ দেখাবে সেও তো রাতের মতোই কাজ করছে।
কিছুক্ষন আগে যখন সে হাসপাতালে আসে আর দেখে তাদের ড্রাইভার দাড়িয়ে আছে। রক্তিম দৌড়ে ড্রাইভারের কাছে গেতেই ড্রাইভার বললো,
~স্যার,বস আপনারে ভিতরে যাইতে কইছে। বস ৩য় তালায় আছে।
রক্তিম আর অপেক্ষা করলো না সে অনেক দ্রুত হাঁটতে লাগলো।লিফটের অপেক্ষা না করে সে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠলো ৩য় তলায় উঠে রক্তিম দেখতে পেলো তার বাবা আইসিইউয়ের সামনে দাড়িয়ে আছে। তার চোখে মুখে কান্না ছাপ বাবার এ অবস্থা দেখে রক্তিম বাবার কাছে চলে গেলো।রাহাত রায়জাদা রক্তিমকে দেখে বললো,
~রক্তিম তুই এসেছিস।দেখ তোর রায়হান চাচ্চুর অবস্থা অনেক খারাপ।
বাবার কথায় রক্তিম আইসিইউয়ের দিকে তাকালো।রায়হান তার বাবার অনেক কাছের বন্ধু এক হিসেবে তার ভাই। রক্তিম বাবাকে শান্তনা দিয়ে বললো,
~বাবা,তুমি চিন্তা করো না সব ঠিক হয়ে যাবে।
ছেলের শান্তনায় রাহাত রায়জাদার মন হালকা হলো না।ছেলের হাত ধরে বললো,
~রক্তিম তোকে একটা কথা বলার ছিলো।
রক্তিম বললো,
~বলো বাবা।
রাহাত রায়জাদা একটা ঢোক গিলে বললো,
~তোর আমেরিকা যাওয়ার পর আমি তোর বিয়ে রায়হানের মেয়ে রাহির সাথে ঠিক করে রেখেছিলাম।আমরা ভেবেছিলাম তুই আসার পর বিয়ে পরিয়ে দিবো কিন্তু তুই অধরাকে বিয়ে করে ফেললি তাই আমি ভাবলাম এই কথাটা রায়হানকে জানিয়ে দেই।আজ যখন আমি তাকে এই খবরটা জানাতে যাবো তার আগেই খবর আসলো রায়হানের হার্টে ব্লক ধরা পরেছে সে হাসপাতালে ভর্তি।
রাহাত এতটুকু বলে ছেলের দিকে তাকালো রক্তিম তার বাবার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে।রাহাত আবার বলা শুরু করলো,
~ডক্টর বলেছে ওকে কোনো প্রেসার দেওয়া যাবে না।আর একটু আগে রায়হানের জ্ঞান ফিরেছে সে চা এখনই রাহির সাথে তার আকদটা হয়ে যাক।
তাই আমি চাই তুই একটা অভিনয় করবি যে তুই রাহিকে বিয়ে করতে প্রস্তুত আর এখানেই তুই ওর হাতে আংটি পরিয়ে দিবি।আর শুধু বিয়ের ব্যাপার না এখানে আমার নতুন একটা ব্যবসা শুরু করেছি সেটার অর্ধেক টাকা রায়হান দিয়েছে এখন যদি তুই এই অভিনয় না করিস আমার পথে বসতে হবে।
রক্তিম অবাক হয়ে বাবার দিকে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষন পর রক্তিম বললো,
~বাবা,তুমি কী বলছো?এটাতে ধোঁকা আর আমি অধরার সাথে প্রতারণা করতে পারবো না।আর তুমি রায়হান চাচ্চুকে সব বুঝিয়ে বলো তাহলেই হবে
রাহাত বললো,
~কোনো প্রতারণা হবে না তুই তো আর সত্যি সত্যি বিয়ে করবি না।আর রায়হানের বাসায় সবাই জানে যে তোর বিয়ে হয়েগেছে শুধু রায়হান ছাড়া।আর তোর চাচ্চুকে কিছু বুঝাতে পারবো না প্লিজ বাবা আমার সাহায্য কর।
রক্তিম বললো,
~আজ না জানুক কাল তো জেনে যাবে।তখন কী করবে?
রাহাত ছেলের কথায় বললো,
~তোকে আমার কসম তুই এই অভিনয় করবি।আর শোন তোর বিয়ের খবর তো আর কেউই জানে না কোনো সমস্যা হবে না।
রক্তিম বাবাকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করলো কিন্তু তার বাবা বুঝার চেষ্টা করলো না পরিশেষে বাবার কাছে হার মেনে রক্তিম রায়হানের জ্ঞান ফিরে আসার পর রাহির হাতে আংটি পরিয়ে দিলো।আর সামিল হয়ে গেলো এই প্রতারণার খেলায়
,,,,
,,,,,
বর্তমানে রক্তিম বসে আছে রিক্সায় তার নিজেকে ছন্নছাড়া মনে হচ্ছে।বাবার কথায় সে এতো বড় ভুল করে ফেললো।বুক চিরে কান্না আসছে অধরাকে হারানোর ভয় হচ্ছে কোনো ক্রমেই সে অধরাকে হারাতে পারবে না।রক্তিম ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো রাত ১১টা।সে ডাইরেক্ট চলে গেলো অধরার বাসায় কলিংবেল বাজাতেই আরিফ দরজা খুললো রক্তিমকে দেখে বললো,
~দুলাভাই কোথায় ছিলেন?আপু আপনার অপেক্ষা করছিল একটু আগে রুমে চলে গেলো।
রক্তিম মৃদ্যু হেসে বললো,
~একটু কাজ ছিলো।
আরিফ বললো,
~খাবার খাবেন না?
রক্তিম বললো,
~খেয়ে এসেছি।
বলেই আর অপেক্ষা না করে সে চলে গেলো রুমে।তার এখন অধরাকে প্রয়োজন সোজা রুমে এসে দরজা লাগিয়ে বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখলো অধরা ঘুমিয়ে আছে সে পা টিপে টিপে অধরার কাছে গেলো।
তারপর অধরার চুল গুলো সরিয়ে ঘাড়ে মুখ গুজে তার পুরো শরীরের ভার অধরার উপর ছেড়ে দিলো।
রক্তিমের জন্য অপেক্ষা করতে করতে আমার ঘুম চলে এসেছিল হঠাৎ আমার ঘাড়ে কারো ছোয়া পেয়ে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো শরীরের উপর ভারী কিছু অনুভব হতেই আমি চোখ পিটপিট করে খুললাম আর দেখলাম রক্তিম আমার ঘাড়ে মুখ গুজে আমাকে চেপে রেখেছেন।তাকে দেখে আমি বললাম,
~আপনি কখন আসলেন?
রক্তিম কোনো কথা না বলে আমার ঘাড়ে একের পর এক ছোয়া দিতে ব্যস্ত রক্তিম আমার ঘাড় ছেড়ে সারা মুখে ঠোঁট ছুয়িয়ে দিতে লাগলো আমি তাকে সরানোর চেষ্টা করলাম এতে সে আরো গভীর ভাবে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।আমার এখন কান্না আসছে রক্তিম এমন করছে কেন? উম্মাদের মতো ব্যবহার কেন করছেন?
আমি কেঁদে দিলাম আমার কান্নার আওয়াজ তার কানে পৌছাতেই রক্তিম মুখ উঠিয়ে বললো,
~অধরা তোমাকে আমার প্রয়োজন।অনেক ভালোবাসি তোমায় কোনোদিন ছেড়ে যেও না আমাকে মরে যাবো।
কথা শেষ করেই সে আমাকে ছেড়ে দিলো আমি ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করছি রক্তিম আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরলো আর বললো,
~আমি তোমার বর তোমাকে ছোয়ার অধিকার আছে।তাই কান্না করে লাভ নাই আমার ছোয়া সহ্য না হলেও সহ্য করতে হবে।
বলেই চুলে বিলি কেটে দিতে লাগলো আর আমি ভাবতে লাগলাম রক্তিম এমন করছে কেন সে তো এমন মানুষ না এসব ভাবতে ভাবতে আমার চোখে ঘুম এসে পরলো।
সকালে ঘুম ভাঙ্গে মোবাইলের আওয়াজে আমি চোখ খুলে দেখি রক্তিমের বাহুডরে আমি বন্ধি।কিছুক্ষন রক্তিমের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম আমার ধ্যান ভাঙ্গলো ফোনের রিংটনে বিছানার কর্নারে চোখ পরতেই দেখি রক্তিমের ফোন বাজছে।নিজেকে রক্তিম থেকে ছাড়িয়ে ফোনটা হাতে নিলাম আননোন নাম্বার থেকে ফোন এসেছে।আমি ভাবছি রিসিভ করাটা কি ঠিক হবে হঠাৎ আমার হাতে টান পরলো যার ফলে রক্তিমের বুকে আমার স্থান হলো।রক্তিম আমার কোমড় জড়িয়ে বললো,
~কার পারমিশনে তুমি আমার বুক থেকে উঠেছো?
রক্তিমের করা প্রশ্নের জবাব যেই না আমি দিতে যাবো আবারো ফোন বেজে উঠলো।আমার হাতে রক্তিম ফোন দেখে বললো,
~কে ফোন দিয়েছে?
আমি নিচুস্বরে বললাম,
~আননোন নাম্বার থেকে ফোন এসেছে।
রক্তিম আমার হাত থেকে ফোন নিয়ে একহাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে রেখে সেই নাম্বারে ফোন করলো।
ফোন রিসিভ হতেই রক্তিম বললেন,
~হ্যালো,কে বলছেন?
অপরপাশ থেকে কী কথা বললো তা জানি না কিন্তু রক্তিমের মুখ গম্ভীর হয়ে আসছে সে শুধু এতটুকু বললো,
~আজ বাসায় ফাংশন আছে আমার ছোট ভাইয়ের বিয়ের তারিখ ঠিক হবে।আজ আসতে পারবো না।
এতটুকু বলেই ফোন কেটে দিয়ে জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস ছেড়ে আমাকে বললেন,
~অধরা,ব্রেকফাস্ট করেই বাসায় যেতে হবে।
আমি শুধু মাথা উপর নিচ করলাম
চলবে।।।
(বিদ্রঃকেমন হয়েছে জানাবেন?ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ রইলো🥰🥰।Happy Reading 🤗🤗)
(যারা আমার ভুলগুলো ধরিয়ে দিচ্ছেন তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ কারণ এতে আমার লেখনীর ভুলগুলো শুধরাতে পারছি।ধন্যবাদ ধন্যবাদ ধন্যবাদ)