একটি নির্জন প্রহর চাই পর্ব -৪১+৪২

#একটি_নির্জন_প্রহর_চাই
৪১
#WriterঃMousumi_Akter
পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙতেই ওনার শক্ত বাঁধনে নিজেকে আবিষ্কার করলাম।ওনার বুকের সাথে মিশে আছি।ওনি আমাকে শক্তকরে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন।কাল রাতের কথা মনে পড়তেই ভীষণ লজ্জা পেলাম।কী থেকে কী হয়ে গেল!লজ্জায় কেমন একটা লাগছে!আস্তে করে ওনার থেকে নিজেকে ছড়ানোর চেষ্টা করলাম।ওনি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আছেন।সাত- সকালে ওনার মুখে যেন একরাশ মুগ্ধতা খুঁজে পেলাম।মানুষটার মুখের দিকে তাকালেই অজানা সুখে ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি চলে আসে,তার ছোঁয়ায় সব এলোমেলো হয়ে যায়,তার ঘামের গন্ধও যেন অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।

আস্তে করে বিছানা ছেড়ে উঠে ওয়াশ রুমে প্রবেশ করলাম।গোসল সেরে লাল টকটকে একটা শাড়ি পরে নিলাম।শাড়িটা সুতি স্টাইপ করা, তবে এক রঙা।শাড়ি পরে মাথায় টাওয়াল পেঁচিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম।বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে।নামাজও পড়ে নিলাম।ওনি বোধহয় আজানের আগেই উঠেছিলেন আর নামাজ পড়েই ঘুমোচ্ছেন আবার।কেননা ওয়াশরুমে ভেজা কাপড়।ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে হাতে-পায়ে লোশন লাগাতে লাগাতে আয়নায় ওনার দিকে তাকিয়ে আছি।ঠোঁটে লজ্জামিশ্রিত হাসি নিয়ে ওনাকে দেখছি।
ঠোঁট থেকে হাসি বিলিন হচ্ছে না।মাথার টাওয়াল সরিয়ে চুলে চিরুনি করে টাওয়ালসহ ওয়াশরুমে রাখা আমার ভেজা কাপড়, ওনার ভেজা কাপড়সহ কাল রাতে খুলে রাখা গেঞ্জি প্যান্ট ধুয়ে বালতিতে রাখলাম।এগুলো মেলতে হবে শুকানোর জন্য।বালতি ওয়াশ রুমে রেখেই ঘরের দরজা খুলে বাইরে বেরোলাম।কেউ ঘুম থেকে উঠেনি মনে হচ্ছে।ওশান তো উঠেই না কখনো।জুম্মার নামাজও পড়ে কি-না সন্দেহ।শাশুড়িও ঠিকমতো নামাজ পড়েন না।সারাক্ষণ স্টার জলসা আর জি-বাংলা দেখেন।শ্বশুর খুব ভাল মানুষ। কখনো নামাজ কাযা করেন না।এ বাড়িতে কী হতে চলেছে জানি না।শ্বশুরের কাছেই জিজ্ঞেস করতে হবে;দেখি ওনি কিছু জানেন কি না।তার আগে একটু হাঁটাহাঁটি করে আসি।

পূর্বআকাশে রক্তিম আভা ছড়িয়ে পড়েছে।সূর্যদয়ের পূর্বক্ষণ পূর্বাকাশের এই অপরুপ সৌন্দর্য আগে দেখিনি আমি।গাছের পাতায় পাতায় দূর্বাঘাসে শিশির জমেছে।প্রকৃতির নিয়ম বড়োই সুন্দর। নিয়মমাফিক সূর্য উঠে আবার নিয়মমাফিক অস্ত যায়।এই নিয়মের কোনো হেরফের আজও হয়নি।মানুষ কী তা গভীর ভাবে দেখেছে উত্তম পরিচালনাকারী আমাদের মাথার উপর রয়েছে!সকালের নির্মল বাতাস কিছুক্ষণ গায়ে মেখে রান্নাঘরে প্রবেশ করলাম চা বানাতে।এরই মাঝে বাবা গুনগুন করে জিকির করতে করতে বাড়ির উঠানে প্রবেশ করলেন।পানি গরম করতে দিয়ে মাথায় ঘোমটা টেনে বাবার সামনে গিয়ে বললাম, ‘বাবা,চা খাবেন?’
বাবা অমায়িক হাসি দিয়ে বললেন, ‘মেয়ের হাতের চা বাবা খাবে না তাই কি হয়?যাও মা চা নিয়ে এসো।’
‘আচ্ছা বাবা।’
‘মা শোনো…!’
‘জি বাবা বলুন।’
‘বলছি রোশানকে বোলো আলাদা একটা বাসা নিতে।আমাকে নিয়ে চলো তোমাদের সাথে।’
‘মাকে রেখে আপনি যাবেন বাবা?’
‘হ্যা ‘
‘না বাবা এভাবে যাওয়া ঠিক হবে না।মা ঠিকই তার ভুল বুঝবে একদিন আপনি দেখেন।সব ঠিক হয়ে যাবে বাবা।’
‘আর কী ঠিক হবে!আজ তো তরী আর ওশানের ডিভোর্সের ডেইট।জানো তুমি?’
‘না-তো বাবা।’
বাবা একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, ‘এখন আর খারাপ লাগে না মা।আমার তরীর ভালো হবে।খারাপ হবে না।আমার যা সম্পত্তি ছিল ভুল করেছি অনেকখানি তোমার মায়ের নামে লিখে দিয়ে।এই ভুলের সংশোধন নেই মা।তবে যা বাকি আছে রোহান আর তরীর নামে অর্ধেক দিব আর তোমার আর রোশানের নামে দিব।’
‘বাবা উত্তম পরিকল্পনা।তবে আমি বা আপনার ছেলেকে কিছুই দিতে হবে না।আমি সম্পত্তি দিয়ে কী করব?রোহানের নামে দিন।বাচ্চাটার জন্য খুব খারাপ লাগে।ওর বাবা আবার বিয়ে করলে আদৌ ওকে দেখবে কী-না তার কোনো ঠিক নেই।’
‘রোহান কে বলব ওই কুলাঙ্গারকে যেন বাবা না ডাকে।’
‘বাবা চায়ের পানি গরম হয়ে গিয়েছে আমি চা নিয়ে আসছি।’

এই মাসের ওদের ডিভোর্সের কথা ছিল।আজ তাহলে ওদের ডিভোর্সের ডেইট পড়েছে!তরীকে আর আমার জা হিসাবে পাব না।এ বাড়ি থেকে তরীর অস্তিত্ব চিরতরে মুছে যাবে।রোহান আর মা-বাবাকে একসাথে পাবে না।একটা সন্তানের জন্য মা এবং বাবা উভয়কেই প্রয়োজন।কী হবে রোহানের!কথাটা ভেবেই বুকটা কেমন হু হু করে উঠল।
বাবার হাতে চা দিয়ে নিজের রুমে গেলাম।বালতির কাপড় বেলকনিতে মেলে দিলাম।

ওনি উপুড় হয়ে ঘুমোচ্ছেন।ওনি অধিকাংশ সময়ই উপুড় হয়ে ঘুমোন।ঘড়িতে সকাল আটটা বাজে।ওনি সকালে চা বিস্কুট ছাড়া খান না।চা বিস্কুট এনে রুমে রাখলাম।কিন্তু উঠছেন না কেন!ওনাকে তো কলেজেও যেতে হবে।আজ কি ছুটি নিয়েছেন!ডাকব না-কি ডাকব না!অনেক ভেবে চিন্তে ওনার কাছে গিয়ে গায়ে হাত দিয়ে বললাম, ‘শুনছেন? কলেজ যাবেন না?’
কয়েকবার ডাকাডাকির পর আমার হাত টেনে ওনার বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে আবার ঘুমোনোর চেষ্টা করলেন।কী করা যায় এই মানুষটাকে নিয়ে!সে-তো উঠছেই না।আমি অন্য হাত দিয়ে ধাক্কা দিয়ে ডাকলাম। ওনি এবার আমার অন্য হাত ধরে সম্পূর্ণ নিজের কাছে টেনে নিলেন।এত জোরে টান দিলেন একদম ওনার কাছে চলে গেলাম।এবার ওনার দুই হাতের বাঁধনে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
”আহা!ঘুমোতে দাও।”
আমি আস্তে করে বললাম,
”দেখুন দরজা খোলা কিন্তু।”
ওনি ঘুম ঘুম কন্ঠে বললেন,
”রুমে বর থাকলে দরজা খোলা রাখতে নেই জানো না?”
‘সারাক্ষণ কী দরজা লাগিয়ে রাখব?’
‘হুম রাখবে।যতক্ষণ আমি বাসায় থাকব। ‘
‘উফফ! ছাড়ুন তো।সত্যি কেউ চলে আসবে কিন্ত।’
‘সমস্ত বউদের কমন ডায়লগ কেউ চলে আসবে।কেউ চলে আসার আগে সবাইকে ডেকে এক জায়গা করে বউকে জড়িয়ে ধরব ভাবছি।’
‘ছিঃ!কী সব কথা।আজ কলেজ যেতে দেরি হলে বুঝবেন!’
‘জব-টব সব ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করছে।জব ছেড়ে-ছুঁড়ে বউ নিয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে।’
‘তাহলে জব ছেড়ে দিন। দেখি কেমন পারেন।’
‘পারব না জানি।জব না থাকলে বউ-এর লিপিস্টিক কিনব কীভাবে?লিপিস্টিক কেনার জন্য হলেও জবটা করতে হবে।’
‘আপনি কবে আমার জন্য লিপিস্টিক কিনলেন?’
‘জানতাম প্রশ্নটা করবে তুমি।’
‘জেনেও এমন বোকার মতো প্রশ্ন করার মানে কী?’
‘মানে হলো। আলমারি খোলো,যাও।’
‘কী আছে আলমারি তে?’
‘তার জন্য আগে আলমারি খুলতে হবে আলমারির ড্রয়ার খোলো যাও।’
‘আমাকে না ছাড়লে যাব কীভাবে?’
‘আচ্ছা যাও।’
আলমারি খুলে, আলমারির ড্রয়ার খুলে দেখলাম একটা রঙিন কাগজে লেখা “বউ আমার, আলমারির এই ড্রয়ারটা আমি ফাঁকা রাখি।এই ড্রায়ারে শুধু তোমাকে মাঝেমধ্যে খুশি করতে গিফট রাখার জন্য বরাদ্দ।”

কাগজটা তুলে দেখি একটা লিপিস্টিকের বক্স।বক্সের ভেতরে দুই ব্রান্ডের দুই ডজন লিপিস্টিক।সেখানেও একটা রঙিন কাগজে চিঠি।

”আমার আদুরে চঞ্চল বউটা। তোমার শ্যামসুন্দর বরের ভালবাসা নিয়ো।জানি আমি ২১-২২ বছরের ছেলেদের মতো রোমান্টিক নই।হুটহাট ভালবাসাও প্রকাশ করতে পারি না।আমার সবটাই অপ্রাকশিত তোমার কাছে।তবে আমার অপ্রকাশিত ভালবাসাটাই ভীষণ গাঢ় আর তীব্র।যা হয়ত মুখে বলে প্রকাশ করা যাবে না।মানুষ সাধারণত গিফট করে বিশেষ দিনে,বিশেষ মুহূর্তে।আজ না কোনো জন্মদিন,না ম্যারেজ ডে,না ভ্যালেন্টাইন্স ডে।এটা জাস্ট একটা সাধারণ ডে।আর এই সাধারণ ডে-কে তোমার জন্য অসাধারণ আর মেমোরেবেল করতে এই চিঠি তোমার জন্য।এমনি ইচ্ছা হলো হুট করে তোমাকে কিছু একটা লিখতে।তোমাকে ভালবাসি বলতেই এই চিঠি লেখা।ভালবাসি প্রিয় বউ,আমার অর্ধাঙ্গী,আমার বামপাজরের হাড়ের অস্তিত্ব।বহুদিন ধরে খেয়াল করে এসছি তোমার লিপিস্টিক পরতে খুব ভালো লাগে।তাই এই লিপিস্টিক তোমার জন্য আনা।রোজ পরার সময় ভাববে তোমার শ্যামসুন্দর পুরুষের দেওয়া লিপিস্টিক।জানি এক মুহূর্তের জন্য হলেও তোমার ওই ঠোঁট তখন আমায় ভেবে হাসবে।ভালবাসি বউ।”

চিঠিটা পড়ে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে মৃদু হাসছি।সত্যি ভালো লাগছে আমার। ভীষণ ভালো লাগছে।এরই মাঝে আড়ষ্ট দুটো হাত আমার কোমর স্পর্শ করল।কোমর জড়িয়ে ধরে কাঁধে থুতনি ঠেকিয়ে উত্তপ্ত নিঃশ্বাস ছাড়ল।ওষ্ঠ ডুবে গেল ঘাড়ে।মুহূর্তের মাঝে অদ্ভুত এক কম্পন হলো শরীরজুড়ে।মাথা হালকা কাত করে ওনার দিকে তাকিয়ে ওনার চুলের মধ্য হাত চালিয়ে ফিসফিস করে বললাম, ”থ্যাংক ইউ শ্যামসুন্দর মানব।”
এরই মধ্য আমার ফোন বেজে উঠল।ফোন বেজে উঠতেই ওনি আমাকে ছেড়ে দিলেন।কলটা বাবার ছিল। বাবার সাথে কথা শেষ করে এসে দেখি ওনি রেডি হয়ে গিয়েছেন।আমি ফ্ল্যাক্স থেকে চা ঢেলে ওনার হাতে দিয়ে বললাম, ”আজ ওদের ডিভোর্সের ডেইট পড়েছে।’
ওনি চায়ে চুমুক দিয়ে বললেন, ”আমি যেতে পারব না।তুমি যেয়ো।কিছু ডিভোর্স অত্যান্ত হৃদয়বিদারক হয়।আর কিছু ডিভোর্স আনন্দের হয়।আমি মনে করছি এটা আনন্দের।তাই তরীর জন্য শুভকামনা।আর কয়েকদিন পরেই ওর ভর্তি, সব কিছু ভালো হবে।বুঝেছ?”
ওনার চা খাওয়া শেষ হলে বলালাম, ”আরেকটু দেব?”
ওনি মৃদু হেসে বললেন, ”না এত নিয়ে পারব না।’
‘নিয়ে পারবেন না মানে?’
‘কাল রাতে অনেক চা খেয়েছি।’
বলেই দুষ্টু হাসি দিয়ে বেরিয়ে গেলেন।কী দুষ্টু এই লোকটা!আবার নিজেকে আনরোমান্টিক ভাবে।আজ রাতে ওনার সাথে একটু দুষ্টুমি না করলেই নয়।অনেক দিন ওনার অদ্ভত চাহনি দেখিনি।

সকাল গড়িয়ে দুপুর হলো।কোর্টে তরী আর মৃন্ময় উপস্থিত।ডিভোর্সের মুহূর্তটা কী বাজে!তরী একটা কথাও বলছে না।ওশানের দিকে ভুলেও তাকাচ্ছে না।মানুষ বেশি আঘাতের পরে একটা সময় সত্যিই পাথর হয়ে যায়।তরীও তাই হয়েছে।তরী কোনো কথা না বলে গম্ভীর ভাবে সাইনটা করে দিল।সাইন করে ধপ করে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
”আমার কি এখানে আর কোনো কাজ আছে?”
বেশ অস্থির দেখাচ্ছে ও-কে।ওশান খুব অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তরীর দিকে।আমি বললাম, ”না তরী আর কোনো কাজ নেই।”
তরী হনহন করে বেরিয়ে এলো।বেরিয়ে আসার সময় চোখ পানিতে টইটুম্বর।তবে ওশানের সামনে বুঝতে দিল না।তরী বাইরে এসে ঘনঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে।আর তখনই ফোন এলো তরীর নাম্বারে;গহনা সব বিক্রি হয়ে গিয়েছে।তরী চোখের পানি মুছে সাথে সাথে হেসে দিয়ে আমাকে বলল, ”সব গহনা বিক্রি হয়ে গিয়েছে।”
আমি তরীকে জড়িয়ে ধরে বললাম, ”কংগ্রাচুলেশন্স বেবি।এভাবেই এগিয়ে যাও।”
মনের মাঝে কেমন খটকা লাগছে।কে তরীর সব গহনা কিনে নিল!এটা তো আর সিনেমা না যে জসিমের মতো এক রাতে লটারি জেতা যাবে, বা শাবানার মতো একটা সেলাই মেশিন দিয়ে গার্মেন্টস বানানো যাবে।কিন্তু কী হলো এটা!হাউ ইজ ইট পসিবল?৪০সেট গহনা শেষ।কাল রাতে যশোরে এত মানুষের বিয়ে হয়েছে!কে কিনল!

সব ঝামেলা শেষ করে বাসায় ফিরলাম।আগামীকাল পরীক্ষা।অথচ আমার পড়াতেই মন নেই।আগামীকাল পরীক্ষাটা হয়ে গেলেই বাঁচি।কেউ যদি একটু তাবিজ করেও আমাকে পড়তে বসাতে পারত,ভাল্লাগতো!মানুষ পরীক্ষার আগে রিভিশন দেয় আর আমি নতুন বই খুলে দেখি।পরীক্ষার আগের দিন পড়ব ভেবে সব রেখে দিয়েছি। পরীক্ষার আগের দিন সকালে না দুপুরে, দুপুরে না রাতে।রাতে না পরীক্ষার দিন সকালে এইভাবেই পরীক্ষার টাইম চলে আসে।আর আমি ভীষণ সিরিয়াস ছাত্রীর মতো পরীক্ষার হল পর্যন্ত বই ক্যারি করে নিয়ে যায়।মানুষ ভাবে,কী পড়ুয়া মেয়ে!
ওইদিকে রোশান স্যার ওয়ার্নিং দিয়েছেন। ওনি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন ল্যাপটপে।একদম কথা বলা যাবে না।আর আমিও যেন চুপচাপ বই পড়ি।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে,যখনই কেউ আমাকে কথা বলতে নিষেধ করবে ঠিক তখনই আমার হাসতে হাসতে ম**রে যেতে ইচ্ছা করবে।একবারেই হুদাই হাসি হাসবে।আজকেও সেই সমস্যা।অকারণ হাসি পাচ্ছে।এখন আমার হাসতে হাসতে ম*রে যে*তে ইচ্ছা করছে।হাসিতে পেট ফেটে যাচ্ছে।এই হাসি চেপে রাখা আমার পক্ষে সম্ভবপর নয়।হাসি চেপে রাখতে রাখতে ফিক করে শব্দ হয়ে উঠল।আমি সাথে সাথে নিজেকে সামলে নিলাম।ওনি হাসির শব্দে আচমকা আমার দিকে তাকালেন।উনার তাকানো দেখে আমি জগ উঁচু করে ঢকঢক করে পানি গিললাম।কিন্তু ওনার চাহনি এখনও আমার দিকে।ওনাকে ওইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে হাসি আর আটকানো গেলে না।হাসি পেট ফেটে বেরিয়ে এলো।মুখের সমস্ত পানি ওনার মুখে গিয়ে লাগল।আমি খিলখিল করে হাসতে হাসতে রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম।কিছুক্ষণ পর দেখলাম ওনিও রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন।ওনাকে বেরোতে দেখে আমি আবার রুমে প্রবেশ করলাম।ওয়াশ রুমে দেখি বালতিতে টাওয়াল ভেজানো।টাওয়াল চিপে হাত-মুখ ধুয়ে,টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছে ভেজা চিপচিপে টাওয়াল বেখেয়ালি ভাবে বিছানায় রাখলাম।টাওয়াল রাখার মিনিট দশেক পরে মনে হলো ভেজা টাওয়াল বিছানায় রেখেছি।দ্রুত উঠাতে উঠাতে দেখি ভিজে গিয়েছে বিছানা।টাওয়াল চেয়ারের সাথে মেলে দিলাম।ওনি এরই মাঝে বাইরে থেকে এসে আবার বিছানায় বসে ল্যাপটপে কাজ করছেন।দু’মিনিট বসার পর আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,”এখানে ভেজা-ভেজা লাগছে কেন?”
‘ভেজা লাগবে কেন?’
‘ভেজাই তো মনে হচ্ছে’
‘দেখি উঠুন তো।’
ওনি বিছানা ছেড়ে নিচে নামলেন।আমি ভেজা জায়গা দেখে বললাম,
‘এম্মা ছিঃ!আপনি বিছানা ভিজিয়ে দিয়েছেন?’
‘হোয়াট?’
‘এই বয়সে এই কাজ কীভাবে বিছানায়!ছিঃ!ছিঃ’!
ওনি সাথে সাথে চোখ নামালেন ওনার প্যান্টের দিকে।ওনি কি এক মুহূর্তের জন্য আমার কথা বিলিভ করে নিলেন!আমি মুখে হাত দিয়ে হেসে যাচ্ছি।ওনি ঘটনা বুঝে উঠতে পারছেন না।এইদিকে বিছানা ভেজা।
আমি হাসতে হাসতে বললাম, ‘এটা কী করলেন আপনি?’

ওনি অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।কী অদ্ভুত সে চাহনি!জীবনে এমন সিচুয়েশনে বোধহয় ওনি আগে পড়েননি।
#একটি_নির্জন_প্রহর_চাই।
৪২
#WriterঃMousumi_Akter.

রুম জুড়ে হাসির খিল খিল শব্দ।হাসি ছড়িয়ে পড়েছে রুমের প্রতিটা কোনায় কোনায়।আমি হেসেই যাচ্ছি।কিছুতেই এ হাসি থামছে না।ওনি কপাল টান টান করে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।আমার এই অকারণ হাসি দেখে হতবিহ্বল হয়ে গিয়েছে মানুষটা।প্যান্টের প্যাকেটে হাত গুঁজে এবার সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে গুরুগম্ভীর ভাবে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।এইদিকে হাসতে হাসতে আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না।ওনি গম্ভীর চাহনি নিক্ষেপ করে তাকিয়েই আছেন আমার দিকে।ওনার ওই চাহনি দেখে আরও বেশি হাসি পাচ্ছে আমার।ওনি কি রে’ গে যাচ্ছেন!প্রবল হাসির মধ্য দিয়েও বলার চেষ্টা করছি স্যরি;কিন্তু সরি বলে উঠতেই পারছি না শুধু ‘স’বের হচ্ছে মুখ দিয়ে।ওনি আমাকে এত হাসতে দেখে এবার বেশ বিরক্ত হয়ে বললেন, “আশ্চর্য!”
আমি তবুও হেসেই চলেছি।হাসতে হাসতে হাঁপিয়ে গিয়েছি।হাঁপাতে হাঁপাতে চেয়ারে বসলাম।ওনার দৃষ্টি একভাবে আমার দিকেই রয়েছে।চোখ দু’টো রা’ গ আর বিরক্তিতে ছেয়ে আছে।অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে স্বাভাবিক হলাম।ওনি বেশ কিছুক্ষণ গুরুগম্ভীর ভাবে তাকিয়ে থেকে ভ্রু কুঁচকে বললেন, “এসব কীভাবে হল?বিছানায় পানি এলো কীভাবে?”
‘আপনি বসে ছিলেন আপনি জানেন,আমি কীভাবে জানব?’
ওনি দু’পা এগিয়ে এসে চোয়াল শক্ত করে বললেন,
‘‘আমার দোষ তাই না?এসব অদ্ভুত কাজ তোমার দ্বারাই সম্ভব!’’
‘আমার? মাথা খারাপ আপনার?নিজের দো’ষ আমার উপর চাপাইদিচ্ছেন কিন্তু!’
‘সিরিয়াসলি?আমি দোষ চাপাচ্ছি?তুমি হলে এসব কাজে এক্সপার্ট।সত্যি করে বলো পানি পড়ল কীভাবে?বিছানায় কীভাবে পানি এলো?’
‘আমি কীভাবে জানব?’
‘ওহ রিয়েলি! তুমি জানো না?’
‘নাহ।’
‘ওকে ফাইন। ‘

এটুকু বলেই ওনি বিছানা থেকে বালিশ নিয়ে আমার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে বললেন, “গুড নাইট।”
বলেই পশ্চিম দিকে মুখ করে ফ্লোরে শুয়ে পড়লেন ।
হায়!হায়! ওনি কি আসলেই রেগে গেলেন!দেখে তো তাই মনে হচ্ছে।কিছুক্ষণ পর আমিও একটা বালিশ নিয়ে পূর্বদিকে মুখ করে শুয়ে পড়লাম।কীভাবে ওনার রা’ গ ভাঙানো যায় সেটা ভাবছি।ওনি ইউটিউবে সময় টিভির নিউজ দেখছেন।আমি ওনার মেসেঞ্জারে মেসেজ করলাম,

“রোশান স্যার?”
সাথে সাথেই রিপ্লাই করলেন,
“কে?”
‘আমি সারাহ!’
‘কোন সারাহ?’
‘আপনার বউ সারাহ!’
‘পাশে শুয়ে মেসেজ করার কারণ কী?’
‘উল্টো দিকে শুয়ে আছেন কেন?’
‘কোনো সমস্যা?’
‘শুনুন না……।’
‘??’
‘আমার দিকে ঘুরুন’
‘কেন?’
‘বুঝছেন না?’
‘কী বুঝব?’
‘আপনার বউ কেন মাঝ রাতে তার দিকে ঘুরে শুতে বলছে বুঝছেন না?এইটুকু কমনসেন্স নেই আপনার?’
‘না নেই।’
‘আমার ইয়ে পেয়েছে।’
‘ওয়াশরুমের দরজা তো খোলায় আছে।’
‘আরে ওসব ইয়ে নয়।’
‘অদ্ভুত!কোন সব ইয়ে?’
‘প্রেম।’
‘ডোন্ট ডিস্টার্ব মি!ঘুম পাচ্ছে।গুড নাইট।’

এটুকু লিখেই ওনি ফোন অফ করে দিলেন।কীভাবে রা’গ ভাঙাতে হয় সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি।ওনার দিকে ঘুরে ওনাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম।ওনার কাঁধে মুখ গুঁজে ওনার পেটের উপর দিয়ে হাত দিয়ে গেঞ্জি সরিয়ে পেটে সুরসুড়ি দিচ্ছি আর নিঃশব্দে মৃদু হাসছি।ঘাড়ে নাক-মুখ ঘষে যাচ্ছি ক্রামগত। কী ধৈর্যশীল মানুষ! এখনও নড়ছেন না।আমিও হেরে যাওয়ার পাত্রী নই।আমি আমার মতো করে চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছি।বেশ কিছুক্ষণ এরকম করার পর ওনি ওনার পেটের সাথেই আমার হাত চেপে ধরলেন।নিমিষেই আঙুলের ভাঁজে আঙুল রেখে আমার দিকে ঘুরলেন।ডিম লাইটের কৃত্তিম মৃদু আলোয় ওনার মুখটা ভীষণ সুন্দর দেখাচ্ছে।এই যে মধ্য রাতে এই শ্যামসুন্দর পুরুষের মুখের অদলে তাকিয়ে মুগ্ধ হলাম আমি।ইদানিং ওনাকে দেখেই ঘন ঘন মুগ্ধ হচ্ছি।কী অদ্ভুত না ব্যাপারটা?মানুষটার এই চাহনি আমাকে পা**গ**ল করে তোলে।আমার চোখে-মুখে,ঠোঁটে মৃদু হাসি।ওনি ঘুরে আমার দিকে তাকাতেই আমি কেমন লজ্জা অনুভব করলাম।ভীষণ লজ্জা!ইচ্ছে করছে রুম ছেড়ে পালাই।ওনারও চোখে-মুখে অদ্ভুত এক পরিবর্তন।ভীষণ স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে!ওনি আস্তে করে মুখ এগিয়ে এনে আমার কানে ঠোঁট ছুঁইয়ে নেশাক্ত কন্ঠে বললেন, ”কী হয়েছে? এমন দুষ্টুমি করছ কেন হুম?”

ইশ!কী লজ্জা!কিছুক্ষণ আগে কী লজ্জাকর কাজ করছিলাম!আসলেই ওমন করছিলাম কেন আমি!লজ্জায় দ্রুত ওড়না টেনে মুখ ঢাকলাম।ওনি হালকা একটু উঠে আমার দিকে ঝুঁকে,মুখ থেকে ওড়না সরিয়ে বললেন, ”এই মেয়েটা কখনোই আমাকে তার থেকে দূরে সরে থাকতে দিবে না।এমনি গতকাল যেভাবে মেসেজ করেছিলে!আমি ওখানেই শে” ষ হয়ে গিয়েছি।কিছুক্ষণ আগে খিলখিল করে হেসে আমাকে খু ”ন ক’ রে’ ছ।আর এখন যা করলে পুরো আমাকে এলোমেলো করে দিলে।মায়াবীনী তুমি।”

আমি লজ্জামিশ্রিত মুখে বললাম,
”আপনি রা”গ করেছেন কেন?আপনি রা”গ করলে আমার ভালো লাগে না।’
ওনি এবার পাশে শুয়ে পড়লেন।দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস নিলেন।আমাকে টেনে নিয়ে ওনার বুকে আমার মাথা রেখে চুলে হাত বুলোতে বুলোতে বললেন, ”জীবনে কোনো মেয়েকেই এত সহ্য করিনি আমি।ফ্রেন্ডরা বলত, আমি রোমান্টিক পার্সন না;তাই আমার বউ টিকবে না।সেই আমি নিজেই এলোমেলো হয়ে গিয়েছি।আসলে এমনই হয়।কেউ যখন কাউকে সবটা উজাড় করে ভালবাসে তখন আপনা-আপনি পরিবর্তন চলে আসে।এখন কী হয় জানো?, ‘আমার দুপুর নামে তোমার নামে, সন্ধ্যা নামে তোমার নামে,তুমি ছাড়া নিশীও অপূর্ণ।এই জীবনের সব পূর্ণতা তোমায় ঘিরে।তুমি আমার নেশা,প্রিয় নেশা।মাদকতার নেশা ছেড়ে দেওয়া সম্ভব কিন্তু তুমি নামক নেশা কখনোই ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয়।’

ওনার বুকে মাথা গুঁজে আদুরে আলাপ শুনতে শুনতে মনে হল বিবাহিত জীবনের মতো সুন্দর জীবন নেই।জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ চ্যাপ্টার হলো বিয়ে।জীবনের সব চেয়ে সুখময় চ্যাপ্টার হলো নিজের স্বামীর বুকে মাথা গুঁজে ঘুমোনো।স্বামীর শুদ্ধতম ভালোবাসা জীবনের সব ডিপ্রেশন-মানসিক অশান্তি থেকে মুক্তি দিতে পারে।তাই সবারই বিয়ে করা উত্তম।পারফেক্ট মানুষ না খুঁজে পার্মানেন্ট একটা মানুষ খোঁজা উচিত। যার কাছে সারাজীবন মানসিক শান্তি পাওয়া যাবে।
এভাবেই ঘুমিয়ে গেলাম।
__________________________
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠলাম।আজ লাস্ট এক্সাম।কেমন যেন ইদ-ইদ লাগছে।খুশিতে মনের মধ্যে দারুণ অনুভূতি হচ্ছে ।তাছাড়াও আজ একটা বিশেষ দিন।তন্ময় আর ছোঁয়া বিয়ে করবে বলেছে।আমি আর মৃন্ময় সাক্ষী হব।জীবনে প্রথম কারো বিয়ের সাক্ষী হব।ভাবতেই ভালো লাগছে।ছোঁয়ার ফ্যামিলি থেকে তন্ময়ের মতো বেকারের সাথে এই মুহূর্তে বিয়ে দিতে রাজি নয়।ছোঁয়ার বাবা অনেক ধনী ব্যক্তি। ওনার ইচ্ছা ওনাদের মতোই কোনো ধনী ফ্যামিলিতে মেয়ে বিয়ে দিবে।তন্ময় আর ছোঁয়ার ইচ্ছা এখন বিয়ে করে রেখে তন্ময়ের জব হলে ফ্যামিলিতে জানাবে।তন্ময় যেমন স্টুডেন্ট নিশ্চয়ই ভালো কিছু হবে। আর তখন মেনে না নিয়ে পারবে না।তবুও তন্ময় একটা বাসা নিয়েছে যেন ছোঁয়া মাঝেমধ্যে এসে তার কাছে থাকতে পারে।বাসাটা ইটের তবে উপরে টিনসেট।একরুমের একটি বাসা।তন্ময় লাস্ট ২ মাসে টিউশনির টাকা জমিয়েছে।বেশ কিছু টাকা জমিয়ে ফেলছে।আগের কিছু টাকাও ছিল ওর কাছে।পাতলা একটা গোল্ড-এর রিং বানিয়েছে ৬ হাজার টাকা দিয়ে।এক আনা মতো সোনা হবে।আমাকে নিয়েই রিংটা বানিয়েছে।দুইটা শাড়ি কিনেছে,দুইটা থ্রী পিছ।কিছু কসমেটিক্সও।আসলে তন্ময়ের মন আছে।প্রিয়জনকে খুশি করতে নিজের সবটুকু চেষ্টা তন্ময় করেছে।ছাত্র জীবনে তন্ময়ের মতো হত দরিদ্র ফ্যামিলির ছেলের কাছে প্রেম-ভালবাসা,বিয়ে বিলাসিতার মতো।নিজের লেখাপড়ার খরচ নিজে চালানো,মায়ের চিকিৎসা সব মিলিয়ে জীবনটা দুর্বিষহ।অথচ একই বয়সে অন্যরা রেগুলার ফোন-বাইক চেঞ্জ করছে। মাসে মাসে শার্ট চেঞ্জ করছে।সেখানে তন্ময়ের জীবন কত কষ্টের!এত কিছুর মাঝেও নিজের ভালবাসাকে বাঁচিয়ে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে।

_______________
রোশান স্যার রেডি হয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে হাতার বোতাম লাগাতে লাগাতে বললেন,

”ভাংতি টাকা আছে তোমার কাছে?আমাকে ১০ টাকা দাও তো।”

‘আছে,কী করবেন?’

‘আমার কাছে এক টাকাও ভাংতি নেই।৫-১০ টাকা থাকলে দাও তো।’

‘ওহ! তো ধার চাইছেন?’

‘বউ-এর টাকা ধার কীসের?তোমার টাকা মানে আমার টাকা,আমার টাকা মানে তোমার টাকা।ইট’স রুলস।’

‘নো স্যার!নো নেভার!ইট’স নট রুলস।মাই মানি ইজ মাই মানি নট ইওর মানি।বাট ইওর মানি ইজ মাই মানি।’

‘ওহ আচ্ছা!নাইস ইওর রুলস।দারুণ! ভালো লাগল খুব।রেডি তুমি?’

‘হ্যাঁ।’

‘খেয়েছ?’

‘হু।’

‘কী খেয়েছ?’

‘কী যেন খেলাম!’

‘ডিম তো খাওনি?’

‘না,আমি ডিম খাব না।ডিম খেলে আন্ডা পাব পরীক্ষায়।’

ওনি বেশ অবাক হয়ে ঘুরে তাকালেন আমার দিকে।বেশ অবাক হয়েই বললেন, ‘সিরিয়াসলি?এসব বিলিভ করো তুমি?’

‘করি,সব করি বুঝেছেন?চলুন দেরি হয়ে যাচ্ছে।’

ওনি আমাকে পরীক্ষার হলের সামনে নামিয়ে দিয়ে নিজের কলেজে চলে গেলেন।তন্ময়, মৃন্ময় আর দ্বীপ দাঁড়িয়ে আছে।এদিক-সেদিক কোথাও ছোঁয়াকে দেখা যাচ্ছে না।ছোঁয়ার ফোনও অফ।সাড়ে আটটা বাজে,পরীক্ষার হলে ঢুকতে হবে।আমরা চারজন অপেক্ষা করতে করতে ৮;৫০-এ ভেতরে প্রবেশ করলাম।খাতা দিয়ে দিয়েছে অথচ ছোঁয়া আসেনি।তন্ময় তিনতলায় গ্রিল ধরে চাতক পাখির ন্যায় তাকিয়ে আছে।তন্ময়কে বললাম, ”ভেতরে চল।ও এসে যাবে।’

তন্ময় মলিন কন্ঠে বলল, ”ওর মুখ না দেখলে আমি পরীক্ষায় কিছু লিখতে পারব না।”

মানুষ এতটাও ভালবাসতে পারে!

চলবে?..
চলবে?

(বিয়ের পর জামাই এর সাথে সারাহ’র মতো করব।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here