হাইওয়ের পাশে কান ধরে দাঁড়িয়ে একনাগাড়ে বলে যাচ্ছি, “এই দূরপাল্লার বাসের মতো রাস্তার মাঝে কোথাও থামব না, ছেলেদের সাথে কথা বলব না।”
এই নিয়ে ২১০ বারের মতো বলে ডান পাশে তাকালাম। বাইকে হেলান দিয়ে কালো শার্ট পরিহিত এই লোকটা ভাবলেশহীন ভাবে ফোন চেপে যাচ্ছেন। রোদের তাপে কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা হয়েছে। ফরসা মুখশ্রী রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে। মায়া হলো না। মনে মনে হাজার খানেক গালি দিয়ে ফেললাম। সামনে দেওয়ার ইচ্ছে কিংবা সাহস– কোনোটাই নেই। আমার ঘাড়ে বাবা একটাই মাথা!
আমাকে চুপ থাকতে দেখে উনি ভ্রু কুঁচকে ফেললেন। চোখ তুলে আমার দিকে তাকালেন। দৃষ্টি বড্ড প্রগাঢ়। আমি ফুঁসতে আরম্ভ করলাম। সামনে দিয়ে যত গাড়ি যাচ্ছে; সবাই জানালা দিয়ে আমার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে। যেন পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য দেখছে। রাগে আমার গা জ্বলে যাচ্ছে। কিছু বলতেও পারছি না, সইতেও পারছি না।
“কী রে! থেমে গেলি কেন? এই ভিডিয়ো ফুপিকে দেব?”
পাশের এই লোকটার কথায় আমার রাগ নেমে গেল। ওঁর হাতের ফোনে রয়েছে আমার ভিডিয়ো। কলেজের একটা ছেলে ফ্রেন্ড, রাফির সাথে কথা বলার ভিডিয়ো। ছেলেটা নিজে থেকে কথা বলতে এসেছিল। আমি এড়িয়েও যেতে পারিনি। আর এটা কোনোভাবে ওঁর চোখেই পড়েছে। এর জন্যই মূলত পানিশমেন্ট।
আমি পানিশমেন্ট নিতে চাইনি বলে উনি এই ভিডিয়ো দেখিয়ে বললেন, “নয়তো ফুপিকে বলব, তার মেয়ে কলেজে যায় ছেলেদের সাথে প্রেম করার জন্য।”
আমি চটে উঠে বলেছিলাম, “এ্যাই! আপনি মিথ্যে বলবেন কেন?”
উনি বাঁকা হেসেছিলেন। পরপর চোয়াল শক্ত করে বলেছিলেন, “তোকে বলেছিলাম না? বলেছিলাম না, বাইরের ছেলেদের সাথে কথা না বলতে?”
আমি অবাক চোখে তাকিয়ে বলেছি, “তাতে আপনার কী?”
উনি তখন রংচঙ মেরে বলেছিলেন, “তুই কলেজে প্রেম করে বেড়ালে তোর টিচাররা বাড়িতে জানাবে। ফুপি সেজন্য তোকে মারবে। মার খেয়ে চিল্লিয়ে পুরো এলাকা জানাবি তুই। এরপর তোর এলাকায় জানাজানি হয়ে যাবে ‘নবনীর অনেক সো কল্ড ছেলে বন্ধু ওরফে বফ আছে’। তোর আর বিয়ে হবে না। পাত্র আসবে, দেখবে, চলে যাবে। কেননা বিয়ে ভাঙার জন্য পাশের বাড়ির আন্টি আছেই। শেষে গিয়ে তোর বাপ আমাকে বলবে, ‘বাবা কুঞ্জ! আমার মেয়েটাকে বিয়ে করে নাও’। তাই আমার ভবিষ্যৎ বউয়ের বর্তমান সুরক্ষা করা ইজ ইক্যুয়াল টু আমার ভবিষ্যৎ সুরক্ষা করা। আফটার অল, আমি সাফার করতে পারব না।”
আমি শুধু এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম। বুঝে উঠতে পারছিলাম না, মানুষটা ঠিক কোন লেভেলের খারাপ! এমন ভয়ঙ্কর সুন্দর মুখশ্রীর আড়ালে এই রূপটা কীভাবে বাকিদের থেকে লুকিয়ে রাখে? আমি হতাশ!
আমাকে ভাবতে দেখে উনি হোয়াটসঅ্যাপে ঢুকে বললেন, “এখনই ফুপিকে এই ভিডিয়োটা সেন্ড করে দিচ্ছি।”
আমি তৎক্ষনাৎ বললাম, “এই, এই, এই! না!”
উনি ফোন পকেটে ঢুকিয়ে বললেন, “আর একশবার বলবি। স্টার্ট কর।”
আমি আবারও কানে রাখা হাতটা শক্ত করে ধরে বলা শুরু করলাম, “এই দূরপাল্লার বাসের মতো রাস্তার মাঝে কোথায় থামব না। ছেলেদের সাথে কথা বলব না।”
কিছুক্ষণ বাদে কুঞ্জ ভাই বললেন, “হয়েছে। এবার বাসায় ফিরতে হবে। বাইকে ওঠ।”
আমি রাগ দেখাতে গিয়েও পারলাম না। বাইকে উঠে পড়লাম। এখান থেকে বাসা অনেকটা দূরে। কলেজ থেকে বেরোনোর সময় এক প্রকার জোর করেই কুঞ্জ ভাই আমাকে এখানে এনেছেন। উফ! উফ! উফ! ভাল্লাগে না!
_________________
বাসায় ফিরে গটগট করে নিজের রুমের উদ্দেশ্যে এগোলাম। এখন এই বজ্জাত লোকটার সামনে থাকা মানে, কুমির ভর্তি খালের মাঝে দাঁড়িয়ে কুমিরগুলোর মধ্যাহ্নভোজ রূপে নিজেকে প্রস্তুত করা। আমি তা পারব না; আমার আবার নিজের জানের মায়া আছে।
নিজের রুমের দিকে এগোনোর সময় একবার পিছু ফিরে দেখলাম, কুঞ্জ ভাই নির্বিকার হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন; যেন তিনি একাই এসেছেন। ওঁর দু’ইঞ্চির এতটুকু হৃদয় বাজখাই আওয়াজে বলে যাচ্ছে, ‘হু ইজ নবনী? আই ডোন্ট নো হার!’
এদিকে আমার আম্মু! যেন আমি তার মেয়ে না, আমি তার কেউই না। সব খাতির, আহ্লাদ কুঞ্জ ভাইকে নিয়েই। অসহায় চোখে এগুলো দেখে রুমের ভেতরে প্রবেশ করলাম।
কাঁধের ব্যাগটা বিছানার উপর ফেলতেই কারো চিৎকারের আওয়াজ কর্ণকুহরে ভেসে এলো, “নবুউউ!”
তৎক্ষণাৎ বিছানার উপর চোখ গেল। রজনী আপি উবু হয়ে শুয়ে ফোন ঘাটছিল। আর আমার মাত্রই ফেলা ব্যাগটা আপির পিঠের উপর পড়েছিল বিধায়ই ওমন চিৎকার করে উঠল। আপি রাগে ফুঁসছে।
আমি মেকি হেসে বললাম, “ভার্সিটিতে যাওনি, আপি?”
আপি আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল, “মাথার ঘিলুর সাথে সাথে কি চোখ দুটোও গোরুর পায়ের নিচে পিষে এসেছিস?”
আমি অপমানিতবোধ করলাম। এভাবে বলার কী আছে? আজকের দিনটাই কুফা! কার মুখ দেখে যে উঠেছিলাম! হঠাৎ মনে এলো, আজ ঘুম ভাঙতেই অভ্যেসবশত ফেসবুকে গিয়েছিলাম, আর তখনই কুঞ্জ ভাইয়ের ছবি নিউজফিডে এসেছিল! তাঁর অ্যাকাউন্টকে ফ্যাভারিট করে রেখেছিলাম বলেই শুরুতেই তাঁর পোস্ট।
এতক্ষণ কুঞ্জ ভাইকে যেসব গালি দিচ্ছিলাম, নিমিষেই তা নিজের উপর ট্রান্সফার করে নিলাম। আমার ভেতরের এক সত্তা আমাকে বলে উঠল, ‘বেছে বেছে এই লোকটাকে নিয়েই সব ভাবনা তোর! তুই একটা গাঁধি, নবনী, উচ্চমানের গাঁধি।’
আমাকে চুপ থাকতে দেখে আপি বলল, “কী রে? ওভাবে দাঁড়িয়ে কী ভাবছিস? ওয়েট অ্যা মিনিট! প্রেম-ট্রেম করছিস না তো? দ্যাখ! এরকম করলে কিন্তু মার খাবি। তোর বর রেডি আছে।”
আমি ভড়কালাম না। ছোটো থেকেই ‘তোর বর রেডি আছে’–বাক্যটি শুনতে শুনতে আমি বিরক্ত। চরম স্তরের বিরক্ত। অথচ কেউ বলেই না, এই বরটা কে।
বরাবরের মতোই চোখ ছোটো ছোটো করে জিজ্ঞেস করলাম, “তা আমার বর কে?”
উত্তর আমার জানা আছে। হ্যাঁ, আপি বলবে, ‘দ্যা বর অব্ নবনী!’
আমার ধারণাকে সত্যিতে রূপান্তর করে আপি বলল, “হিজ নেইম ইজ দ্যা বর অব্ নবনী।”
আমি তপ্ত শ্বাস ফেলে বিছানায় বসলাম। আপি ব্যাগ ফেলা টপিকে ঝগড়ার কথা ভুলে গিয়ে বিছানা থেকে উঠে রেডি হয়ে নিল।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, “কোথাও যাবে?”
আমার প্রশ্ন করার সঙ্গে সঙ্গে আপির গালদুটোতে রক্তিম আভা ছেয়ে গেল। বুঝলাম ব্যাপারটা। রজনী আপি আমার একমাত্র বোন। আমার চেয়ে চার বছরের বড়ো। আপি এবার অনার্স থার্ড ইয়ারে আর আমি একাদশে। একমাত্র আদুরে বোন হওয়ায় আপির প্রায় সব সিক্রেট আমার নখদর্পণে। ভার্সিটির এক সিনিয়র ভাইয়ের সাথে আপি তিন বছর ধরে চুটিয়ে প্রেম করছে।
আপিকে গুনগুনিয়ে গান গাইতে দেখে আমি বিড়বিড় করে বললাম, “নিজের বেলায় ষোলো আনা। আমার বেলায় চার আনাও না।”
হঠাৎ দরজায় করাঘাতের শব্দে আমি হকচকিয়ে সেদিকে তাকালাম। মুহূর্তেই আমার কপাল কুঁচকে গেল। আপি সেদিকে না তাকিয়েই জিজ্ঞেস করল, “কে?”
এরপর হালকা পায়ে পিছু মুড়ল। দরজা খোলাই ছিল। সামনে কুঞ্জ ভাই আপিকে দেখে হেসে বলল, “ক’দিনেই ভুলে গেছ। বিয়ের পর তো…”
আপি কথা শেষ করতে দিল না। বড্ড বিস্মিত কন্ঠে বলল, “ভাইয়া! তুমি?”
“ইয়াপ! আই অ্যাম!”
“তুমি সত্যিই এসেছ?”
“হ্যাঁ। আসা বরণ নাকি?”
“যা-তা বলবে না একদম। তোমার সাথে কথা নেই। ইদেও আসোনি। থাকো তো এই শহরেই। মাঝে মাঝেই রাস্তায় দেখি। বাসায় আসো না কেন?”
“ব্যস্ত ছিলাম, আপি। ভার্সিটির কিছু ঝামেলার জন্য ওখান থেকে সরতে পারিনি; এজন্য মাও অনেক বকেছে।”
আপি সরু চোখে তাকিয়ে বলল, “তা না হয় বুঝলাম। কিন্তু আমি আবার কবে থেকে তোমার ‘আপি’ হলাম?”
“যবে থেকে তোমার ওয়ান অ্যান্ড ওনলি ছোটো বোনটা আমার বউ হলো।”
কথাটা বলেই কুঞ্জ ভাই আপির আড়ালে আমায় চোখ মারলেন! আমি বড়ো বড়ো চোখে তাকিয়ে রইলাম। কী মিথ্যুক রে, বাবা! আমি আবার কবে তাকে বিয়ে করলাম? তার উপর আবার চোখ মারল! লোকটা এত খারাপ কেন? ইশ! কুঞ্জ ভাই, ইশ! আপনাকে আমি ভালো ভেবেছিলাম। নাহ্! এখানে আর থাকব না।
আমি আপি ও কুঞ্জ ভাইকে সুন্দর মতো ইগনোর করে পরনের এক সেট কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলাম। এখন শাওয়ার নেওয়াটা জরুরি।
কুঞ্জ ভাই! আমার বড়ো মামার একমাত্র ধুতরা ফুল। ধুতরা ফুল বললাম কেন! কারণ উনি দেখতে যতটা সুন্দর; আমার সাথে ওঁর ব্যবহার ঠিক ততটাই কুৎসিত। সব সময় আজে-বাজে কথা-বার্তা আর অকারণেই শাস্তি বিষয়ক কাহিনিগুলোই মূলত আমার মনে ওঁর জন্য এমন বাজে অনুভূতি তৈরি করেছে। অনুভূতিগুলো নিয়ে বেশি ভাবতে চাই না। কারণ এগুলো আমার কাছে পরিষ্কার না। উনি কাছে এলে, দূরে সরিয়ে দিতে ইচ্ছে হয়; আবার দূরে দূরে থাকলে সান্নিধ্য লাভের জন্য মনটা আকুপাকু করতে থাকে। এটা নিশ্চয়ই বাজে একটা অনুভূতি!
উনি অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ছেন। ভার্সিটির হলেই থাকেন। বছর দুয়েক আগে কোনো এক কারণে মামার সাথে কুঞ্জ ভাইয়ের বেশ বড়ো-সড়ো ঝগড়া লেগে যায়। মামার সাথে তর্কের কারণে মণি প্রথম বার কুঞ্জ ভাইয়ের গায়ে হাত তোলে। এটা ওঁর আত্মসম্মানে বেঁধেছিল। আর তৎক্ষণাৎ বাসা ছেড়েছিলেন। ঝামেলা মিটেছে, তবে মামার সাথে ওঁর সম্পর্ক আগের মতো হয়নি। এজন্য আর পার্মানেন্টলি বাড়ি ফেরেননি। ঝগড়ার কারণটা আজও আমার কাছে অজানা। আর হ্যাঁ, আমাদের বাসার পাশের গলিতেই মামাদের বাসা; হেঁটে যেতে তিন মিনিট লাগে।
শাওয়ার নিয়ে বেরোলাম। এতক্ষণে নিশ্চয়ই আমার জমের বিদেয় হয়েছে! বুক ভরা দুটো শান্তির শ্বাস নিয়ে বেরোতেই আমার চোখ গেল খাটে দিকে। বড়ো বড়ো চোখে তাকালাম। সঙ্গে সঙ্গে পুরো রুমটায় চোখ বুলিয়ে নিলাম, দৃষ্টি আমার বিক্ষিপ্ত। আপি নেই রুমে। কুঞ্জ ভাই খাটে হেলান দিয়ে শুয়ে শুয়ে ফোন ঘাটছেন। এদিক-সেদিক তাকিয়ে আপিকে খুঁজতে লাগলাম।
“ফুপি আমাদের বাসায় গেছে। ফুপা অফিসে। রজনীর কল আসায় সে চলে গেছে। যাওয়ার আগে আমাকে তোর খেয়াল রাখার জন্য থাকতে বলে গেছে।”
কথাটা বলে কুঞ্জ ভাই হাই তুললেন। আমি হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। মানে কী? খালি বাসায় আমাকে এই বজ্জতের হাতে তুলে দিয়ে আমার বোন ডেইটে আর আম্মু ভাইয়ের বাসায় গেছে! আল্লাহ! তুমি এই নিষ্ঠুরতা কীভাবে সহ্য করছ? তোমার কাছে এর বিচার দিলাম আমি।
মনে মনে বিলাপ পেরে আবারও ওয়াশরুমের ভেতরে যাওয়ার সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম। যতক্ষণ না কেউ আসবে, আমি বেরোব না। একদম না। নিজের বুদ্ধির প্রশংসা না করে পারলাম না। বাহঃ! নবনী! বাহঃ! তোর মাথাটা বাঁধিয়ে রাখার মতো!
জলদি পিছু মুড়তে নিলাম, ওমনিই কুঞ্জ ভাই গম্ভীর গলায় বলে উঠলেন, “ডোন্ট মুভ!”
অসহায় আমার দু’চোখে লেপ্টে, অনিমেষ তাকিয়ে রইলাম। আবার কী চাই ওঁর?
কুঞ্জ ভাই ভ্রু কুঁচকে বললেন, “ছিঃ! নবু, ছিঃ! শ্যেইম অন ইউ।”
মুহূর্তেই যেন আমার চোয়াল খুলে গেল। আবার কী করেছি? জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে ওঁর জবাবের অপেক্ষায় রইলাম। আমি ২০০% শ্যিউর, উনি এখনই কোনো আজগুবি কাহিনি বানাবেন।
আমাকে আর অপেক্ষা না করিয়ে কুঞ্জ ভাই বুকে হাত গুঁজে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, “আগে আমার কুয়েশ্চনের এন্সার দে।”
আমিও একই ভঙ্গিতে দু’হাত বুকে গুঁজে নিলাম। মাথাটা হালকা কাৎ করে বললাম, “কী কুয়েশ্চন?”
“এতক্ষণ ধরে ওভাবে দাঁড়িয়ে থেকে কী ভেবেছিস?”
মনে মনে বললাম, ‘আপনার থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়।’ কিন্তু মুখে বললাম না। শুধু হাসলাম। জোরপূর্বক সেই হাসি।
কুঞ্জ ভাই বললেন, “আমিই বলছি। এতক্ষণ ওভাবে দাঁড়িয়ে থেকে নিশ্চয়ই ভেবেছিস, আমি গিয়ে তোকে কোলে তুলে আনব! কিন্তু আমি ভীষণ ভদ্র স্বভাবের ছেলে কি না! এজন্য তা করিনি। তাই আবার ওয়াশরুমে ফিরে যাচ্ছিলি, না? আমার মতো সিঙ্গেল ছেলেকে নিয়ে এসব কী ভাবনা, নবু? আর কী কী ভাবিস? ওহ্ নো!”
কথাটুকু শেষ করেই আতঙ্কিত ভঙ্গিমায় আবারও বললেন, “আজই তিন রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে ছয়শ’ ছাব্বিশবার ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ পড়বি।”
আমার হতবিহ্বল নেত্রে প্রশ্নের ছড়াছড়ি। এই লোকটা এতটা ধুরন্ধর কী করে হতে পারে? পাগল! পাগল! পাগল! এর বংশের সবকটা পাগল! আমার আম্মু এক পাগল। ইনি আরেক পাগল। আপাদমস্তক পাগল। জলদি পাবনায় সিট বুকিং দিতে হবে।
আমাকে আবারও স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কুঞ্জ ভাই বাঁকা হেসে বললেন, “কোলে নেব?”
চলবে….
#কল্পকুঞ্জে_কঙ্কাবতী
লেখনীতে: নবনীতা শেখ
|সূচনা পর্ব|
[অন্তত দুই পর্ব পড়ার অনুরোধ রইল। সবাই রেসপন্স করবেন। ভালোবাসা অবিরাম🌼]