গল্প :- ক্রমশ
ব্যভিচারী..
পর্ব :- ০৭ এবং শেষ
Writer :- Kabbo Ahammad
.
.
.
-: “হ্যাঁ তো যেটা বলছিলাম। ধরুন গোটা কেসটার পিছনে কোনো তৃতীয় ব্যক্তি আছে যাকে আমরা ধরিইনি। সেই ধরুন সমস্ত ঘটনাটা ঘটিয়েছে। কোনো প্রফেশনাল দিয়ে প্রথমে কাব্য চৌধুরী কে খুন। তারপর তার বাড়ি থেকে দশভরি গয়না চুরি করে নিজের ঘরে বা কোথাও একটা লুকিয়ে রেখে দেয়। তারপর কিছুদিন যেতে না যেতেই অরূপকে ব্ল্যাকমেইল করে রিচার আর ওর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি দেখিয়ে ওর কাছ থেকে কোট আর গ্লাভস কোথাও একটা পৌঁছে দিতে বলে। সামান্য কোট আর গ্লাভস দিয়ে কি হবে! এটা ভেবে আর কাব্য চৌধুরীর মার্ডার কেসে নিজেকে আর রিচাকে জড়িয়ে ফেলার ভয়ে অরূপ সেটা যথাস্থানে রেখে আসে। আর সেই সুযোগে সেই লোকটি অরূপের বাড়ি পৌঁছে ওর বাড়ির বাগানের মাটিতে ওই দশভরি সোনা পুঁতে রেখে আসে, যা অরূপের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। তারপরের কাজটা সহজ। অরূপের জ্যাকেট আর গ্লাভস পরে রিচাকে খুন আর জ্যাকেট টা জানলা দিয়ে গলিয়ে পাশের ড্রেনে ফেলে দেওয়া। আর বাকি কাজটা আসিফের। সে হয়ত টাকার লোভে কিম্বা অন্যকোনো ভয়ে একটা অভিনয়ের পার্ট করে। পুরো ব্যাপারটাই জাস্ট পুলিশকে গুলিয়ে দেওয়ার জন্য। পুলিশ ওকে এসে ক্রাইম সিনে দেখলো। তারপর মার্ডার ওয়েপন পাবে, ব্যস আর কি! পুলিশ যখন কনফিউজড হয়ে যাবে তখন মোক্ষম সময়ে ডি.এন.এ টেস্টের মাধ্যমে ওকে ফাঁসানো। তার মধ্যে যে এই গেমটার মাস্টার মাইন্ড তার আর একটা কাজই পড়ে থাকছে। অরূপকে ভয় দেখিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা। যাতে সন্দেহ সম্পূর্ণ ভাবে ওর দিকেই চলে যায়। অরূপ একটা সাধারণ ছেলে তাকে যদি কেউ ফোন করে এটা বলে তার কোট আর গ্লাভস পড়ে কেউ তার প্রেমিকাকে খুন করেছে এবং পুলিশ তাকে খুঁজতে আসছে, আর পাঁচজন মানুষের মতো সে পালিয়ে যেতে চাইবে এটা সিম্পল সাইকোলজি।
–“হু তা অন্যকেউ খুন করলে মার্ডার ওয়েপনে বা কোটে তার ডি.এন.এ ও পাওয়া যাওয়া উচিৎ রাইট। (দেবোপম উৎসুক হয়ে প্রশ্ন করলেন)
–“হ্যাঁ স্যার এ জায়গাটা আমাকে খুব ভাবিয়েছিল।
ওই একটা জায়গায় এসে আমি প্রথমে কোনো ক্লু খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তারপর একদিন ছেলেকে টিউশন থেকে আনতে যাই তখন বৃষ্টি পড়ছিল। আর ছেলে রেইনকোট টা পরতে গিয়ে বলে, “বাবা পিঠের দিকটা ফেটে গেছে কাপড় টা। তখন আমি বলি ঠিক আছে ওর উপরে তুই আমার রেইনকোটটাও চাপিয়ে নে। আর ঠিক তখনি আমার মাথায় ব্যাপারটা স্ট্রাইক করে।
“ধরুন একজোড়া নতুন গ্লাভস পরে একটা সম্পূর্ণ নতুন কোট কিনে তার আউটার ফেসে টাচ না করলে সেখান থেকে কোনো ডি.এন.এ পাওয়া সম্ভব নয়। তারপর আর কোনো কাজবাকি থাকে না। ওই নতুন কোট আর গ্লাভস এর উপরে অরূপের কোট আর গ্লাভসটা পরে নেওয়া। খুন করার পর অরূপের কোট আর গ্লাভস টা খুলে রেখে নীচের কোট আর গ্লাভসটা পরে উধাও হয়ে যাওয়া। বাকি কাজ টা আসিফ সাহেব।তিনি অভিনয় করে সামলে দেবেন। ভেবে দেখুন পুরো কেসটা এভাবে সাজালে বেশ পাকাপোক্ত হচ্ছে আর মানেও করছে। তাই না বলুন?
(এটুক বলে পরিতোষ থামল। এবং জুড়িয়ে আসা কফির কাপে চুমুক দিল)
দেবোপমের চোখেমুখে অদ্ভুত তৃপ্তি। আজ বক্তা আর শ্রোতার আসন বদল হয়েছে। আগে যিনি বক্তা ছিলেন তিনিই আজ মুগ্ধ শ্রোতার ভূমিকায় অবতীর্ণ। অন্যদিকে মুগ্ধ শ্রোতা আজ বক্তা। দেবোপম মুখে হাসি অবিকল টিকিয়ে রেখে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন, তারপর বললেন।
–“এতোদূর কষ্ট করে যখন বলেই ফেলেছো। বাকিটাও বলো শুনি।
পরিতোষ তখন দৃষ্টি বিনিময় করল। আজ সে ভীতু নয়।তার মধ্যে জড়তা নেই। গুরুর কাছ থেকে যথাসম্ভব শিক্ষা গ্রহণ করে পরিপুষ্ট হয়েছে সে। এখন বৃদ্ধ গুরু তার কাছে করুণার পাত্র। স্নেহসুলভ ছেলের মতোই।দুবার ঘনঘন চুমুক দিয়ে পরিতোষ বাকিটা বলে ফেলল।
–“আসিফকে আমার প্রথম থেকেই সন্দেহ হয়।
ও যে একটা রোল প্লে করেছে এবং খুনীর বা খুনীর পিছনের মানুষটির ইচ্ছেতেই সেটা বলা বাকি থাকেনা।আমি মাসখানেক আগে থেকে ওকে ফলো করা শুরু করি। একদিন দেখি ও কাজের জায়গাতে না গিয়ে সম্পূর্ণ অন্যদিকে হাঁটা লাগাচ্ছে। আমি ফলো করি। দেখি পুরোনো লঞ্চঘাটে সে একজন লোকের সাথে দেখা করছে। সে লোকটির হাতে একটা খাম তুলে দেয়। লোকটি তার হাতে একটা ব্যাগ তুলে দেয়। তারপর কিছু বলে চলে যায়। লোকটি যতই সানগ্লাস, ওভারকোটের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করুক না কেন, আমার তাকে চিনতে অসুবিধা হয়নি।এতদিন ধরে আপনার সাথে কাজ করছি। আপনাকে না চিনতে পারলে কিছু বলার থাকতোনা,স্যার।
পরিতোষ তখন ব্যঙ্গের হাসি হাসলো। দেবোপম ও সেই হাসিতে যোগ দিলেন। একটা কথা ও বললেন না।তারপর পরিতোষ ই আবার বলল।
–“আসিফের সাথে আপনার দেখা করার কারণ টা বুঝতে পারলাম না, তাই মনে একটা খটকা লেগেই ছিল। এবং আমি আবার আসিফকে ফলো করি। দেখি ও ওখান থেকে বেরিয়ে পাশের একটা পোড়ো বাড়তি এসে ব্যাগটা খোলে। হয়ত চেক করার জন্য। আমি দূর থেকেই দেখলাম। ব্যাগ ভর্তি টাকা। তার কয়েকটা নোট উল্টেপাল্টে দেখে নিল আসিফ। তারপর খুশি মনে বাড়ির দিকে ফিরে চলল। কিন্তু স্যার আপনি আসিফকে টাকা দিয়েছেন দেখে, আমার তখন টনক নড়ল। ছবি গুলো পরিষ্কার হল। পুরো গল্পটা যদি আপনার সাজানো হয় তাহলে সবকটা পিস নিজের জায়গায় বসে যায়। আপনি এতদিন পুলিশে কাজ করছেন। একজন সুপারি কিলার জোগাড় করা আপনার পক্ষে বিশেষ দুঃসাধ্য কিছু নয়। বাকিটা যেমন গল্প বলেছিলাম। দেখলাম মিলে যাচ্ছে।
আর গেম-মাস্টার আপনি হলে তো কথাই নেই।
সমস্ত কেস ইনভেস্টিগেশন আপনার তদারকি তে মিটেছে। কোনো ফাঁকফোকর থাকলে আপনার পক্ষে ম্যানেজ দেওয়া সম্ভব ছিল। তার উপরে ফোনের গল্প, আসিফ, অরূপ পুরো গল্পটা আপনি আমাদের যেমন বলেছেন আমরা তেমন ভাবেই বুঝেছি। আপনি এমন ভাবে কনফিউজড করেছেন, যে অন্যকোনোদিকে আর কারোর চিন্তাভাবনাও যায়নি। সব মিলে যাচ্ছিল কিন্তু তখনও একটা জিনিস আমার কাছে ক্লিয়ার হচ্ছিল না।সেটা মোটিফ টা। কি এমন মোটিভ থাকতে পারে যে দুজন অপরিচিত নিরীহ মানুষকে খুন করতে হলো আপনার। কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। বিশ্বাস করুন স্যার মনকে বোঝাতে পারছিলাম না। আপনি আমার আইডল। আমার যখনই মনে হয়েছে এই চাকরী তে কি পড়ে আছে, আমি আপনাকে দেখেছি। আপনার দক্ষতার সাথে একের পর এক কেস সলভ করে যাওয়া। আপনি আমাকে এই প্রফেশন টাকে ভালো বাসতে শিখিয়েছিলেন স্যার। সেই আপনি ই… যাইহোক আমার সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেলাম আসিফের বাড়িতে। ওর অ্যাক্সিডেন্টে ডেথ হয়ে যাওয়ার পর আমি ওর বাড়িতে যাই। নিজে ইনভেস্টিগেশন করি। ওর পার্সোনাল লকার থেকে একটা পেন ড্রাইভ পাই। মানুষ পার্সোনাল লকারে পেনড্রাইভ রাখলে সেটা নিশ্চয় কোনো ইম্পর্ট্যান্ট কিছুর। আমি সেটাকে নিয়ে চলে আসি। বাড়ি এসে পেনড্রাইভটা ওপেন করতেই আমার কাছে প্রায় সবকিছুই জলের মতো পরিষ্কার হয়ে গেল। শেফালি। শেফালির কথা আমি ভুলেই গেছিলাম। এবং কাব্য চৌধুরীর চরিত্র সম্বন্ধেও অনেক কিছু জানলাম। এবং আসিফ আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করছিল বলুন?
.
.
.
দেবোপম মুগ্ধ হয়ে বসেছিলেন। পরিতোষ প্রশ্ন দিয়ে কথা শেষ করলে দেবোপম বাবু দীর্ঘশ্বাস ফেলে উত্তর দেন।
–“হ্যাঁ। ওই স্কাউন্ড্রেলটা বলেছিল সবকাজ মিটে গেলে টাকা পেলে ও সরে যাবে। কোনোদিনও ঘেঁসবেও না এদিকে। কিন্তু কয়েক মাস আগে ওই ছবি গুলোর কথা তুলে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করা শুরু করে। আমারও হাত পা বাঁধা ছিল। তাই… ওকেও সরিয়ে দিতে বাধ্য হলাম। ভেবেছিলাম। ব্যাস সব মিটে গেল। এই কেসের আর কোনো সাক্ষী থাকল না। কিন্তু এই লাইনে এতদিন থাকার পরে কি করে ভুলে গিয়েছিলাম ক্রাইম করলে কোনো না কোনো ফাঁক থেকেই যায়। আর আমি তো প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভাবে তিন তিনটে খুনের জন্য দায়ী।
–“কিন্তু একটা প্রশ্ন ছিল স্যার। কাব্য চৌধুরীকে মারার কারণ টা বুঝলাম, কিন্তু রিচাকে? রিচা তো আপনার বা শেফালির কোনো ক্ষতি করেনি। আপনি,জানতেন রিচা গর্ভবতী। তারপরেও আপনি এটা কি করে পারলেন স্যার। আমি মেনে নিতে পারছিনা কোনোভাবেই।
(পরিতোষ মরিয়া হয়ে উঠেছে।)
দেবোপম তখন আরও একবার দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন।
–“তুমি একটা এক্সপ্লেনেশন ডিজার্ভ করো পরিতোষ। তোমার মতো চমৎকার একটা ছেলে করে। সবটাই বলছি। গোঁড়া থেকে তাহলে আশা করি সবকিছু তোমার কাছে ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
আসিফের বহুদিন ধরেই নজর ছিল রিচার উপর। কারন রিচা ছিল অসম্ভব সুন্দরী। তার উপরে অনেক সময় একা থাকতো। তাই আসিফ বহু প্রচেষ্টা করে ওর কাছে যাওয়ার। কিন্তু কাব্য চৌধুরীর কথা দিয়ে রিচা প্রতিবার কথা ঘুরিয়ে দেয়। তখন আসিফের মনে একটা ঈর্ষা তৈরি হয় কাব্য চৌধুরীর প্রতি। তারপর থেকে সে কাব্য চৌধুরী আর রিচা দুজনকেই ফলো করে। দুজনের উপরেই নজর রাখে। তখন কাব্য চৌধুরী কে ফলো করতে গিয়ে সে শেফালি আর সুজানের সাথে কাব্য চৌধুরীর সম্পর্কের কথা জানতে পারে, এবং ওদের গোপন মুহূর্তের ছবি তুলে রাখে।
এদিকে ঠিক তখন কথা শেষ করার আগেই পরিতোষ জিজ্ঞেস করে।
–এই সুজান টা কে?
–“সুজান হচ্ছে একজন কলগার্ল। তার সাথেও কাব্য চৌধুরীর সম্পর্ক ছিল। অন্যদিকে রিচার আর অরূপের সম্পর্কের কথাও আসিফ জানতে পারে এবং তাদের ও গোপনীয় মুহূর্তের ছবি তুলে রাখে। এবার শেফালির খোঁজ করতে করতে ও একদিন আমার কাছে এসে পৌঁছোয়। আমাকে মোটামুটি সবিস্তারে সবটা জানায়। আমার মেয়ে আমার জীবন পরিতোষ। আমার মেয়ে যদি এমন কাউকে ভালোবাসতো, যাকে সমাজ ও মেনে নিত না। আমি তাও মেনে নিতাম, কিন্তু জেনেশুনে ওর এই ক্ষতি কি করে হতে দিতে পারতাম। বাবা তো? আমার মাথায় আগুন চড়ে যায়। আমি তখন আসিফকে দিয়ে কাব্য চৌধুরী কে মার্ডার করার প্ল্যান করি। ওকে আশ্বাস দিই। ওর কিছু হতে দেবোনা।বিনিময়ে ও কাউকে কোনোদিন কিছু বলবেনা আর আমার মেয়ের ছবি গুলো,আমাকে দিয়ে দেবে।
তারপর কাব্য চৌধুরীর মার্ডার টা রবারি কেস দিয়েই সাজিয়ে দিতাম। এরকম সময় আসিফ আর একদিন আমার কাছে আসে। ও আমাকে বলে ও অরূপ কে ব্ল্যাকমেইল করছে। আর অরূপ কে খুন করতে চায়, যাতে ওর রাস্তা পরিষ্কার হয়ে যায়। আমি বারণ করলে ও আমাকে ভয় দেখায়, সবকিছু বলে দেওয়ার।
আর ওই সময় ওকে মেরে ফেলা আমামার পক্ষে সম্ভব হতোনা। কেসটা অন্যদিকে ঘুরে যেতো। হয়ত আমিও ফেঁসে যেতাম। তাই আমি ওকে বারণ করি। কিন্তু আসিফ ,একটা ধূর্ত ক্ষুধার্ত শেয়াল। ওকে চিনতে আমার একটু দেরীই হয়েছিল। তবে পরে চিনতে পেরেছিলাম। একদিন ওই জানোয়ারটা রিচাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। রিচা কোনোরকমে ওর কাছ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে আমার কাছে আসে। এবং সবটা বলে। আর বলে আসিফের সাথে এগেন্সইটে ও কমপ্লেইন করতে চায়। সেটা কি করে হতে দিতে পারতাম বলো! আসিফ ফেঁসে গেলে আমিও ফেঁসে যেতাম। আমি ওকে শান্ত করে কোনোরকমে বাড়িতে পাঠাই আর আসিফকে ডাকি। এবং বোঝানোর চেষ্টা করি। রিচাকে ভুলে যেতে। কারণ রিচা চাইলেই ওকে ফাঁসাতে পারে। আর ও ফাঁসলে আমরা দুজনেই ফেঁসে যাবো। ও জেদ ধরে বসে থাকে, রিচাকে ও কারোর হতে দেবেনা। রিচা কেবল ওর। আসিফ আমার গলার কাঁটা হয়ে উঠেছিল তখন। না পারছিলাম গিলতে না উগরাতে। তারপর অনেক ভেবে ওকে বলি রিচাকে পাওয়া ওর পক্ষে সম্ভব নয় কোনোভাবেই। ও বলে রিচা, যদি ওর না হয় আর কারোর হতে দেবেনা। ও রিচাকে মেরে ফেলবে। সামলানোর দায়িত্ব আমার। কি করতাম বলো আমি? আমার আর কি করার উপায় ছিল। তারপর কেসটা সাজালাম যেমন ভাবে তুমি বলেছো ঠিক সেই ভাবেই। রিচার খুনটাও আসিফ করেছিল। খুন করার পর আমাকে ফোন করেছিল।
ওর কোট আর গ্লাভস গুলো ওপরে জলের ট্যাঙ্কের ভিতর রেখে এসে ক্রাইম সিনে অপেক্ষা করছিল…ব্যাস বাকিটা তোমার জানা। আর নাইম আমার কথা মতো কাজ করেছে। ও ওর ভাগের টাকা পেয়েছে। সবাই তোমার মতো সৎ হয়না পরিতোষ।
কথাগুলো শুনে পরিতোষ উঠে পড়ল। দেবোপম তখন করুন মুখে জিজ্ঞেস করলেন।
–“কি করবে? জানাবে এখন আমার সম্বন্ধে সবাইকে?
পরিতোষ তখন হেসে উত্তর দিল।
–“না স্যার। প্রথমত আমার কথা কেউ বিশ্বাস করবেনা।কারণ প্রমাণ নেই। আযিফ, যে একমাত্র প্রমাণ ছিল সে এখন নেই। আর নাইম আগেও যখন মুখ খোলেনি এখনো খুলবেনা। তাছাড়া থাক স্যার। ইচ্ছেও করছেনা।আমার বিশ্বাসের জায়গাটাই নষ্ট হয়ে গেল। আপনি চাইলে আমাকেও মার্ডার করার ব্যবস্থা করতে পারেন।
দেবোপম তখন হাসলেন।
–“আমিও তাহলে করুণার পাত্র হয়ে উঠলাম। তুমি নির্ভয়ে যাও। কিন্তু শেফালির ছবিগুলো…….
পরিতোষ তখন ঠোঁট টিপে হাসলো।
–“পুড়িয়ে দেবো স্যার। চিন্তা করবেন না। ভরসা করতে পারেন।
দেবোপম তখন বললেন।
–“বেশ নিশ্চিত হলাম।
.
.
.
.
এক সপ্তাহ পরে…………..
দেবোপমের সার্ভিস রিভলভার টা শেষবারের মতো গর্জে উঠল। তার নিথর দেহের পাশে একটা চিঠি পাওয়া গেল। যেখানে ঘটনার সবিস্তার বিবরণ তিনি লিখে চলে গেলেন।
একটি চিঠি পরিতোষ ও পেয়েছিল। দেবোপমের কাছ থেকে। তাতে লেখা ছিল দুটো বাক্য। যোগ্য উত্তরসূরি পেয়ে নিশ্চিন্ত হলাম। এরকমই থেকো……..
পরিতোষ চিঠি টা পুড়িয়ে দিলো। হাওয়ায় উড়তে থাকা ছাই গুলোর দিকে তাকিয়ে হাসলো। অদ্ভুত লাগছে। এখন ওর চিন্তার কিছু নেই। নানারকম রহস্যের কথা ভাবতে ভাবতে ওর ফোনটা বেজে উঠল…ফোনটা ধরতে ওপাশ থেকে শেফালির গলা শোনা গেলো।
–“পরিতোষ দা ছবি গুলো!
পরিতোষ তখন শান্ত ভাবে উত্তর দিল।
–“চিন্তা করছো কেন! ও অন্যহাত হবেনা। আজ আসছো তো তবে! সিসিডি তে ঠিক পাঁচটার সময়।
ওপাশ থেকে মৃদু কন্ঠে উত্তর এলো।
–“হুম……….
পরিতোষ তখন ফোনটা রেখে নিজের মনেই বলল,
–“চেক অ্যান্ড মেট……….
.
সমাপ্ত………………..
.
গল্প সম্পর্কে আমি আর কিছুই লিখলাম না, মূল্যবান মতামত আপনাদের উপর। কেমন হয়েছে অবশ্যই জানাবেন।
#ধন্যবাদ________