গ্যাংস্টার পর্ব ২

#গ্যাংস্টার
#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)
পর্ব : ২
..
নতুন স্যার ক্লাসে এসেছে সবাই খুশি মনে দাঁড়িয়ে তাকে সম্মান জানাল। সবাই কে বসতে বললেও মেয়ে রা তার দিকে হা করে আছে।

শুষ্কের নজর গেল একজনের উপর। চোখ আটকে যাওয়া সেই মেয়ের দিকে।

রানি কানে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে ঠোঁটের কোণায় হাসি টেনে আনে। স্যার যে ক্লাসে এসেছে তার সেদিকে বেমালুম খেয়ালই নেই। সে তার কল্পনার জগতে রাজ নামাক ব্যক্তি কে নিয়ে হামাগুড়ি দিচ্ছে।

শুষ্ক সবাই কে চোখ রাগিয়ে বসতে বলে। সব মেয়ে রা তাই করল।

সে এগিয়ে গেল রানির দিকে। তখনো রানি যেই কে সেই। শুষ্ক এগিয়ে তার সামনে দাঁড়াল। ২ মিনিট দাঁড়িয়ে রইল। সামিয়া নিচ দিয়ে রানি কে চোখ খুলতে বললেও কোনো কাজ হয়নি। অবশেষে শুষ্ক টেবিলে সজোরে এক থাপ্পড় দেয়। সাথে সাথে রানি সহ বাকিরা কেঁপে উঠে।

রানি ধরফড়িয়ে উঠে দাঁড়ায়। সামনে তাকিয়ে নতুন স্যার কে দেখে ঘাবড়ে যায়। শুষ্ক ঢুক গিলে রানি।

“এটা ক্লাস রুম তাই নয় কি? এটা তোমার ঘুমানোর জায়গা মনে হয়?”
“….
“ডেমেট আন্সার মি।”

শুষ্কের ধমকে রানি খুব ভয় পায়। মুখ তোতলাতে তোতলাতে জবাব দেয়,
“স সরি স্যার।”
“এত ভুল হয় কি করে? তখনো তো আমার পায়ে তুমি পা লাগিয়ে দিয়েছিলে। এখন এলাম না দাঁড়িয়েছো। আর না নিজের মাঝে আছো। মনে হয় ভাবনার রাজ্যে চলে গিয়েছিলে।”
“….
“কিছু বলছি।”
“স সরি স্যার।”
“হোয়াট দ্যা সরি?”
“স্যার সরি মানে আমায় মাফ করে দিন।”
“হোয়াট?”

শুষ্কের রাগি কন্ঠ শুনে রানি বুঝতে পাড়ে এই ভাবে হুটহাট যা তা বলা যায় না। নিজের বলা কথায় সে নিজেই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

“নেক্সট টাইম যেন না হয়।” এটা বলে শুষ্ক সামনে যায়।

ইকনোমিক্স নিয়ে পড়াবে শুষ্ক। রানির এই ক্লাস টায় বড্ড ঝুঁক থাকলেও ভালো লাগছে না। নতুন স্যার এসেই তার উপর ধমকানি শুরু করল। তাই রানির মন খারাপ।

শুধু মাত্র রাজের কারণে সে ইকোনোমিক্স নিয়ে অনার্স শেষ করবে। সবে অনার্স ১ম বর্ষে পড়ে। রাজের কথা ভেবে সে এই সিদ্ধান্ত নেয়।
যদি এর উছিল্লায় একবার রাজ কে দেখতে পায়। স্বপ্নের রাজপুত্র কে যদি একবার চোখে দেখার সুযোগ পায়।

শুষ্ক ক্লাস করাচ্ছে সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনছে। মেয়েরা শুনছে বললে দোষ হবে। একরকম তার দিকে তাকিয়ে আছে। আর সব কিছু গিলছে।

রানি মাথা নিচু হয়ে বিড়বিড় করে বলছে,
“সামিয়ার বাচ্চা তোকে এনাকন্ডার মতো চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে।”
“কি?”
“যা শুনেছিস ঠিক তাই।”

“আমি আবার কি করলাম? তুই তো তোর রাজ কে নিয়ে স্বপ্নে চলে গিয়েছিলি। আমি তো তোকে ডেকেও ছিলাম। তুই তো শুনিস নি। তাই স্যারের কাছে বকা খেয়েছিস। আমার কি দোষ?”
“যা দোষ সব তোরই। বান্দরনী কে বলেছিল তখন বলতে ইসস আজ শুরু তে যদি নতুন স্যার আসত। তোর অপয়া মুখের কথাই সত্যি হলো। কি হতো তখন এটা না বললে? তুই বলেছিলি বলেই তো স্যার এলো আর আমি বকা খেলাম। এখন দেখ দোষ কার তোর না অন্যকারো কুত্তি কোথাকার।”

রানির কথা শুনে সামিয়া তার দিকে তাকায়। অবাক হয় না। কারণ সে জানে রানি কি কি বলতে পাড়ে আর কতটা উদ্ভট।

“যা এতে আমার দোষ কোথায়?”
“তোরই দোষ সব দোষ তোর। ওই রাক্ষস টা চোখ রাঙ্গিয়ে আমায় কত ধমক দিয়ে গেল। তুই কিছুই বললি না। বান্ধবী নামে তুই কলঙ্ক। আর ওই রাক্ষস টা স্যার নামে। প্রথম দিন এসেই কেউ এসব করে? কই অন্য কেউ তো…”

শুষ্ক প্যান্টের প্যাকেট দুই হাত দিয়ে বলল,
“অন্য কেউ তো কি?”
“অন্য কেউ ওই রাক্ষসের মতো প্রথম দিন এসেই এমন করেনি। বরং সুন্দর…”

রানি থেমে গিয়ে বলে,
“সামু তোর গলা টা এমন বেটা বেটা লাগে কেন? আমার বকা খেয় কি তোর গলার আওয়াজ মোটা হয়ে গেল নাকি?”

সামিয়া বেচারা ভয়ে চুপ করে আছে।

শুষ্ক বলল,
“লিসেন এই দিকে তাকাও। ওদিকে নয়।”

কথা অনুযায়ী রানি মাথা উঁচু করে সামনে তাকাতেই দেখে শুষ্ক প্যান্টের মাঝে হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে।

রানি সাথে সাথে উঠে দাঁড়ায়। সাথে ঢুক গিলে।

“আমি ক্লাস করাতে আসছিলাম। তোমার ননস্টপ বকবক শুনতে নয়। নিজের কারণে বকা শুনবে আবার দোষ দিবে অন্য কাউকে?”
“….
“সেই কখন থেকে দেখছি মাথা নিচে করে রেখেছো। এখানে না আসলে তো জানতামি না তুমি কি কি বলছিলে। বের হও।”

শুষ্কের কথায় রানি মাথা তুলে তার দিকে তাকায়।

“কি হলো? বললাম না বের হও।”
“স সরি স্যার।”
“শাট আপ। বের হও এখনি।”

শুষ্কের ধমক শুনে রানি তাড়াতাড়ি করে বের হয়ে পড়ে।

“ক্লাস থেকে বের হও।”
“কি?”
“বললাম ক্লাস থেকে বের হও। বারান্দায় চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকো এটাই তোমার পানিশমেন্ট।”
“স্যার আর হবে…”

শুষ্ক কিছু না বলে রানির হাত ধরে টেনে দরজার কাছে নিয়ে যায়।
“এখানে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকবে।”
“….

শুষ্ক ক্লাসে ঢুকে গেলে রানি মুখ ভেংচি কাটে।

“উমমম ঢং। ঢং দেখলে গায়ে আগুন জ্বলে। আরে যা যা তোর মতো কত ছেলে আমার কাছে আসল আর গেল। আর উনি আসছে কোন ঢং। উনি ভাবে না জানি আমি কি। আরে তুমি একটা ঢং। ঘোড়ার আন্ডা। স্যার কে এই সব বলা ঠিক হচ্ছে? আরে দূর দূরে স্যার এমন করলে স্টুডেন্ট রা এমন বলবেই।”

রানি বিড়বিড় করে চুপ হয়ে গেল। শুষ্ক ভেতরে ক্লাস করাচ্ছে।

রানি আবার বকবক করা শুরু করল।
“হায় রাজ চৌধুরী। কবে আমি আপনাকে দেখব? আর কত দিন ১ বছরের উপর তো হলো অপেক্ষা করছি। আর কবে দেখা দিবেন আপনার রানি কে? আপনাকে দেখার জন্যে তো আমি উদ্বিগ্ন হয়ে আছে। হায় মাবুদ উনাকে আমার সামনে আনো। আল্লাহ প্লিজ প্লিজ প্লিজজ।”

রানি দরজার পাশে দেওয়ালে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে আল্লাহর কাছে তার মনের কথা জানাচ্ছিল।

শুষ্ক রানির কাছে গিয়ে আস্তে আস্তে বলল,
“কার জন্যে এত অপেক্ষার প্রহর গুনা? কার জন্যে এত উদ্বিগ্নতা? কার জন্যেই বা এভাবে সময়ে অসময়ে আল্লাহর কাছে এত দোয়া চাওয়া?”

ফিসফিসানি কথা কানের কাছে শুনে রানির অন্তর কেঁপে উঠে। সারা শরীর কাটা দিয়ে উঠে। থতবত খেয়ে চোখ খুলে শুষ্ক কে দেখে ঢুক গিলে।

চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে থাকে রানি শুষ্কের দিকে।
“চলো।”
“ক কোথায়?”
“আমাকে ফারদার প্রশ্ন করবে না। আই ডোন্ট লাইক ইট।”

শুষ্ক টানতে টানতে রানি কে মাঠ দিয়ে নিয়ে গেল। আর সবাই হা করে তাকিয়ে আছে।

শুষ্কের জন্যে বরাদ্দ করা রুমে রানি কে নিয়ে যায়। চেয়ার টেনে বলে,
“বসো।”
“ম মানে?”
“সিট ডাউন।”
“কে কেন?”

শুষ্ক চোখ গরম করলে রানি তাড়াতাড়ি করে বসে। শুষ্ক নিজের চেয়ারে বসে।

রানি অনেক অস্বস্তি ফিল করছে। শুষ্ক তার দিকে তাকিয়ে আছে। সে মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিচ্ছে। যার ফলে বাতাসে সামনের চুল গুলি তার মুখ ঢেকে দিচ্ছে। রানি বারবার সরাচ্ছে। ফ্যানের বাতাসে আবার এলোমেলো করে দিচ্ছে। শুষ্ক মুচকি হেসে উঠে দাঁড়িয়ে রানির দিকে হাত বাড়িয়ে দিলে রানি একটু পিছনে হেলে পড়ে।

শুষ্ক তার চুলের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে ঠিক করার বদলে এলোমেলো করে দেয় আরো।

রানি চুল ঠিক করে মুখ ভেংচি কাটে। শুষ্ক জোরে হেসে উঠে।

রানি ভাবতে থাকে,
“আজব উনি আমাকে এখানে সঙ এর মতো বসিয়ে কেন রেখেছে? আর কি অদ্ভুত আচারন। কোনো স্যার স্টুডেন্টের চুল এমন করে? এ তো আমার থেকেও অদ্ভুত। যাই হোক ভালোই হলো সবাই আমাকে অদ্ভুত অদ্ভুত বলে। এখন না হয় তাকে দেখিয়ে বলবো উনি আমার থেকেও অদ্ভুত।”

রানি আরো বেশ কিছু সময় বসে ছিল। পুরো টা সময় শুষ্ক রানির দিকেই পলকহীন তাকিয়ে ছিল।
বেশ কিছু সময় দুজনে এভাবেই বসেছিল। শুষ্কের চোখে ছিল রানির মুগ্ধতা আর রানির শুধু ছিল বিরক্তি।

তারপর শুষ্ক রানি কে জোর করে কিছু বিষয় বুঝিয়ে দিল। তারপর রানি কে ছুটি দিয়ে দিল। যাওয়ার আগে রানি কে বলে দিল,
“এমন ভুল যেন আর না হয়। এবং কারো জন্যে এত অপেক্ষার পাহাড় পাড়ি না দিয়ে নিজেকে নিয়ে ভাবো।”

শুষ্কের কথায় রানি কোনো পাত্তা দিল না তা সে বেশ বুঝেছে।

রানি একটু নাক ফুলিয়ে চলে গেল।
যেতে যেতে বলতে লাগল,
“লোকটা যেমনি হোক মন্দ পড়ায় না। দূর রানি তুই এত ভাবছিস কেন? তাড়াতাড়ি বাসায় গিয়ে ঘুম দে। রাজ কে নিয়ে কল্পনা করলেও তোর মন মাথা দুটোই ঠিক থাকবে।”

রানি তাড়াতাড়ি করে বাসায় চলে যায়। আজ একটু শান্তি তেই আসতে পেরেছে বখাটে ছেলে টাকে আজ আর দেখা যায়নি।

রানি বাসায় এসেই শাওয়ার নিতে চলে যায়।

তার মা সিনথিয়া এসে খাওয়ার জন্যে অনেক ডেকে গেছে কিন্তু সে মানা করে দিয়েছে। যখন তার সময় হবে তখন সে খেয়ে নিবে।

শাওয়ার নিয়ে ভিজে চুল গুলি ছেড়ে সে ব্যালকুনিতে চলে যায়।

মুক্ত বাতাসে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে।
নিচ থেকে তার দিকে দুটি চোখ নজর দিচ্ছে। এক জোড়া চোখ লুকিয়ে থেকে তার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে।

তারপর রানি নিজের রুমে চলে যায়। গিয়ে এক ঘুম দেয়। রাজ কে সে কল্পায় আঁকে।
ড্রিম বয় তার স্বপ্নেই থেকে গেল কবে যে সে সামনে আসবে তা রানির জানা নেই। কিন্তু তবুও কল্পনা জল্পনা করতে সে পিছু হাটে না।

রাজ চৌধুরী বিখ্যাত বিজনেসম্যান। শুধু যে দেশ জুরে তার নাম তা নয়। বিদেশেও তার নাম ডাক প্রচুর। ইভেন বিশ্বের সেরা বিজনেসম্যানেও সে দ্বিতীয় স্থান কেড়ে নিয়েছে। বয়স তেমন নয় ২৮ বছর বয়সী এই ছেলে বিশ্বের মাঝে নামডাক তৈরি করে নিয়েছে। উদ্দাম সাহস চেষ্টা আর স্বপ্ন তাকে সেখানে নিয়ে পৌঁছেছে। এত নামডাক হলেও তাকে চেনার মতো মানুষের বড্ড অভাব। সে নিজের প্রাইভেসি নিয়ে চলে। মিডিয়ার সামনেও আসে না। কখনো কোনো ক্যামেরায় তাকে আজ পর্যন্ত দেখা যায়নি। সে কখন কোথায় কোন দেশে থাকে তা তার গার্ডরা ছাড়া কেউ জানে না। কানাঘুষা শুনা গেছে তাকে দেখতে কোনো প্রিন্সের চেয়ে কম নয়। এত বড় একজন ব্যক্তিত্ব সম্পূর্ণ মানুষ হয়েও সে সবার অগোচরে। তার নাম সবার মুখে তবে চোখে দেখা নয়।

রানিও তাকে দেখেনি। যা শুধু নাম ডাকই শুনেছে।

“মানুষের নিষিদ্ধ আর অদৃশ্য বিষয়ে প্রবল ঝুঁক বিদ্যমান।” রানিরও হয়েছে তাই। না দেখেই সে রাজে মশগুল। রাজ অন্তঃ প্রাণ তার। চোখে দেখেনি তবুও মারাত্মক এক ইচ্ছে মনে পোষন করে রেখেছে।

দেশের নাম করা এমন এক মানুষের সাথে সবারই তো দেখা করতে ইচ্ছে হয়। রানিও খুব করে হয়।
সবাই নায়ক, খেলোয়াড় বা বিশিষ্ট কোনো ব্যক্তি কে পছন্দ করে। মনে মনে কত আশা করে। রানিও করে রাজ কে নিয়ে সেরা বিজনেসম্যান কে নিয়ে তারও অনেক স্বপ্ন কল্পনা জল্পনা আছে। রানি তো অনেক ছেলেকে রিজেক্ট করেছে। তারা দেখতেও যেমন ছিল প্রভাবশালীও ছিল। দেখতে তো সে রূপে কোনো অংশে কম নয়। যে কোনো ছেলের নজর কাড়া সৌন্দর্য তার। তবুও রানি তাদের সবাই কে মানা করে দিয়েছে।

রানি তো মনে মনে ঠিকও করে নিয়েছে সে রাজ কে ছাড়া বিয়েই করবে না। দরকার হলে চিরকুমারী থাকবে। বিয়ের নামটাও শুনতে চায় না সে।

বাবা বা মা কেউ বিয়ের কথা তুললে সে চিল্লায়ে বাসা মাথায় তুলে নেয়। যা মুখে আসে অদ্ভুত সব কথা বলে। নিজেকে রুমে আটকে রাখে। পরিস্থিতি ঠিক হলে আবার বদ্ধ ঘর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়।

বিকেলে ঘুম থেকে উঠলে তার মা তাকে খায়িয়ে দেয়।

রাতে পড়া, ফেসবুকিং করে রানি ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে তার মা ঘুম থেকে ডেকে দিলে ফ্রেশ হয়ে কলেজে চলে যায়।

রাস্তায় সামিয়া কে কল দেয়। রানির দেরি হয়ে যাওয়াতে সামিয়া কলেজের সামনে তার জন্যে অপেক্ষা করছে।

রানি রিকশা ভাড়াটা দিয়ে নামতে নামতে বলল,
“তালগাছের মতো এখানে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিস কেন? গেইট টা পাড় করলেই পারতি। ভাব দেখাচ্ছি যে তুই আমার জন্যে দাঁড়িয়ে আছিস।”
“আমি কি করব? তুই তো দেরি করে ঘুম থেকে উঠিস তাই..”
“থাক আর টেঙ্গরামাছের মতো ভাব দেখাতে হবে না। আমার ঘুম নিয়ে এত মরিস কেন বুঝি না। দেখিস তুই ঘুম গাধা এক জামাই পাবি।”
“কি?”
“তোর মাথা তাড়াতাড়ি চল।”

সামিয়া আর কথা না বাড়িয়ে দুজনে কলেজের ভেতর ঢুকে গেল।

শুষ্ক ক্লাসে আসতেই রানি না পেড়ে সবার সাথে উঠে দাঁড়ায়।

শুষ্ক সবাই কে কিছু ইমপটেন্ট বিষয় বুঝিয়ে দেয়। বিদেশ থেকে কোর্স শেষ করে এসেছে কি এমনি এমনি?

ক্লাস শেষের এক পর্যায় শুষ্ক রানির সামনে যায়।
“অফিস রুমে এসো দরকার আছে।”
এটা বলেই চলে যায়। আর সবাই হা করে তাকিয়ে থাকে রানি দিকে।

রানি এত না ভেবে শুষ্কের কথায় তার কাছে যায়।
“আসব?”
“হুম।”
“আপনি প্লিজ আমাকে আর ক্লাসের সবার সামনে এমন করে অফিস আসতে বলবে না।”
“কেন?”
“এমনি।।”
“কেন কেউ কিছু বলেছে?”
“কেউ না বললেও ভাবে।”

শুষ্ক নিজের ফোন রেখে উঠে দাঁড়ায়। তার কাছে গিয়ে বলে,
“কি ভাবে?”
“…..
“কি হলো বলো।”
“জা জানি না।”
“তাহলে আমি যখন বলব তখন আসবে তুমি।”
“পারব না।”

বলে রানি চলে যেতে নিলে শুষ্ক তার হাত ধরে থামায়। হেঁচকা টানে নিজের কাছে আনে।
“আমি কোনো রকম না শুনতে অভ্যস্ত নই। আমার ডিকশনারি তে ‘না’ নেই। সো..”
“সো কি?”
“প্রশ্ন করছো আমায়?”
“আপনাকে আমি প্রশ্ন করতে যাবো কেন? ছাড়ুন।”

রানি একটু ঝাড়ি দিয়ে শুষ্কের হাতের আবদ্ধ থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নেয়।

শুষ্ক এবার রেগে রানির বাহু টেনে দেওয়ালের সাথে চেঁপে ধরে। দাঁত কটমট করে বলে,
“না আমি প্রশ্ন শুনতে চাই। আর না আমার কথা না শুনা মানতে চাই। আমার রাগ উঠিও না। তাহলে তোমারই ক্ষতি হবে।”

শুষ্কের চোখ আর এমন ব্যবহারে রানি খুব ভয় পায়। গলা শুকিয়ে আসছে তার। ভয়ে বুক কাঁপছে। মুখ দিয়ে কথাও বলতে পারছে না।

শুষ্ক তাকে ছেড়ে দিয়ে নিজের জায়গায় চলে যায়।
“বসো।”
“….
রানি তখনো ওখানেই চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল।
“ডেমেট হোয়াট ডিড আই টেল ইউ?
“…

শুষ্কের ধমকে রানি তাড়াতাড়ি করে চেয়ারে বসে।

শুষ্ক টেবিলের উপর থেকে পানির গ্লাস টা তার দিকে এগিয়ে দেয়। রানি টগটগ করে সব টা পানি খেয়ে ফেলে।

“ভেতর শুকিয়ে গিয়েছিল?”
“….
“আমার রাগ উঠিও না। আগুনের চেয়েও আমি কম নই। রাগ চলে আসলে ভেতরে আগুন জ্বলে। ফলে অপর মানুষ টা কে আমি সেই আগুনে নিক্ষেপ করি।”

শুষ্কের ধারালো অস্ত্রে মতো কথায় রানি কেঁপে কেঁপে উঠছে। ভেতর আত্মা শুকিয়ে আসছে তার।

শুষ্ক বেশ কিছু সময় রানির দিকে তাকিয়ে ছিল। আর রানি মাথা নিচু করে বসে ছিল।

“শুনেছি ইকনোমিকসে তোমার বেশ ঝুঁক আছে। তুমি নাকি খুব পাঁকা। সব সময় ইকনোমিকসে টপ রেজাল্ট করো।”
“জ্বি।”
“বই বের করো।”
“হ্যাঁ।”
“বই বের করতে বললাম।”

শুষ্ক আরো কিছুক্ষণ রানি কে একা পড়ায়। তারপর যেতে বলে।

রানি গুটিগুটি পায়ে রুম থেকে বের হতে থাকে। শুষ্ক আবার তাকে পেছন থেকে ডাকে। রানি সেখানে দাঁড়িয়েই ঘাড় ঘুরিয়ে শুষ্কের দিকে তাকায়।

“তোমার ফোন নাম্বার টা দাও তো।”

রানি আর দেরি না করে শুষ্কের এমন কথা শুনে এক দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়। এক দৌড়ে মাঠে চলে আসে।

শুষ্ক সেখানে বসেই বলতে থাকে,
“ডেমেট হোয়াট হ্যাপেন? ওহ শীট।”

চলবে….

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here