চুক্তির বিয়ে পর্ব ১

###__চুক্তি_বিয়ে__###”
পর্ব -১

সোহা প্লেন থেকে নামার পর সেই ২ ঘন্টা থেকে এয়ারপোর্ট এ বসে আছে। সবাই তার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। আর তাকাবে না কেন এয়ারপোর্ট এ বউ এর সাজ সেজে একটা মেয়ে বসে আছে, তাও একলা!!
কিন্তু এতক্ষন হয়ে গেলো কেউ আসছেনা কেন?
সে এই লন্ডনের মাটিতে কাউকে চিনেও না কিছু জানেও না।
“ইশ! বাড়ির ঠিকানা টা জানা উচিৎ ছিলো।”
সে বসে বসে যখন এসব ভাবছিলো তখনই কেউ একজন এসে জিজ্ঞেস করলো, “আপনি কি সোহা ম্যাডাম?”
– জ্বি, আপনি কে?
– আমি ড্রাইভার, সাহেব পাঠাইছেন। উনি একটা কাজে সকালে চলে গেছেন দেশের বাহিরে।
আশ্চর্য! আমি আসলাম আর কেউ নিতে আসলো না।
অবশ্য সোহা জানে কেউ আসবে না। কি আর করা, ড্রাইভারের সাথে চলে আসলো বাড়িতে। যখন গাড়ি ঢুকছে সোহা তো অবাক! এত্ত সুন্দর বাড়ি..! বিরাট বড় লন, নানাধরনের ফুলের গাছ, সুইমিং পুল। এত্ত সুন্দর বাড়ি সোহা কখনো দেখেনি। অবশ্য ওর এসবে কিছু যায় আসেনা, সে তো কিছুদিনের বউ হয়ে এসেছে এ বাড়িতে।
গাড়ি থেকে নামার পর এলিসা নামের এক কাজের মেয়ে এসে ওকে ড্রইংরুমে নিয়ে গেল। মেয়েটিকে কাজের মেয়ে নয় দেখে মেমসাহেব লাগে। আরও একজন আসলো ট্রে ভর্তি নাস্তা নিয়ে। সবাই একি ধরণের পোশাক পরেছে। ও মনে মনে ভাবছে যাদের বাড়িতে আসলাম তাদের কেউ এখন ও সামনে আসলো না। একটু পরে রুম এ একজন মধ্যবয়সী সুন্দরী মহিলা ঢুকলেন চোখ মুছে মুছে। মনে হয় এতক্ষন থেকে কাঁদছিলেন।
– তুমি এসেছো মা?
– জ্বি, আপনি নিশ্চয় এ বাড়ির মালিক?
– মালিক নয় , মা বলে ডাকতে পারো। আমি তোমার শাশুড়ি মা।
সোহা মনে মনে ভাবছে “যার বউ হয়ে আসলাম, এখনও তার দেখা পেলাম না। অহ্ উনি তো আবার অসুস্থ”।
এমন সময় দুতলার একটা রুম থেকে ভয়ংকর রকম আওয়াজ আর চিৎকার আসতে লাগলো। মহিলাটি চমকে উঠে দৌড় দিলেন। কিছু না বুঝে সোহা ও উনার পিছু পিছু আসলো। এলিসা পেছন থেকে বারবার ডাকছিল ম্যাডাম আপনি ওদিকে যাবেন না। আপনি নেমে আসেন। কিন্তু সোহা তখন কারও কথা শোনার মোড এ ছিলো না।
ও রুমে এসে যা দেখলো তাতে ওর রক্ত হিম হয়ে গেলো। একজন সুদর্শন পুরুষ মানুষ নিজের হাত কাটছেন ছুরি দিয়ে, পাশে একজন পুরুষ নার্স অজ্ঞান হয়ে আছেন। ঘরের সবকিছু লন্ডবন্ড করা। মহিলাটি জোরে চিৎকার করে এসে ছেলেটিকে ধরলেন। সাথে সাথে বাথরুম থেকে আরও দুজন পুরুষ বেরিয়ে এলো, দেখে মনে হলো ডাক্তার।
ওরা বললো, “ম্যাম আপনি ছিলেন না হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে পাগলামি শুরু করলেন, আমরা আটকাতে গেছি উনি বাড়ি মেরে জনকে ফেলে দিছেন। তাই আমরা ভয়ে বাথরুমে গিয়ে ঢুুকেছি। ”
মহিলা ধমক দিয়ে বললেন, এখন ওকে শান্ত করো, রক্ত বন্ধ করো। ছেলেটি কেমন যেন মায়ের বুকে মাথা লুকিয়ে শান্ত হয়ে গেলো। ডাক্তার ওকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে ব্যান্ডেজ করতে বসলেন। আর অন্য ডাক্তার নার্সকে জ্ঞান ফেরালেন।
সোহা জিজ্ঞেস করলো, মা উনি কে?
– ও আমার ছেলে তন্ময়, যার বউ হয়ে এসেছো। মা ও এখন একটু অসুস্থ।
সোহা মাথায় হাত দিয়ে সেইখানে ফ্লোর এ বসে গেলো। অসুস্থ কি ও তো বদ্ধ উন্মাদ…!

চলবে…

– মেহজাবিন মুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here