তমিস্র প্রভা পর্ব -১০

পর্ব–১০
#তমিস্র_প্রভা🍁
#লেখিকা-লামিয়া_রহমান_মেঘালা
(গল্পটা সম্পূর্ণ রূপে কাল্পনিক চরিত্র দ্বারা গঠিত এর মাঝে কোন বাস্তবতার ছোয়া নেই,
ইহয়াকে বাস্তব এর সাথে মিলাবেন না ধন্যবাদ)
অতিতে,
–অরূপ,
–বৃষ্টি তুমি যাও রেডি হও কিছুক্ষণ এর মাঝেই সবাই চলে আসবে,
আমাদের কে বেরোতে হবে,
নির্ঝর তার স্ত্রী কে আনতে চলে যায়,
শহরের সব থেকে ধুমধামে বিয়েটা হয়৷
ছেলেমেয়ে দুটো যখন তিন কলমা পরে একে অপরের সাথো আবদ্ধ হয়েছে বিয়ের মতো পবিত্র বন্ধনে তখনি চারিদিকে কালো মেঘ ঘনিয়ে এলো,
আশেপাশে কোথাও সূর্য দেখা যাচ্ছে না,
সবাই ভয় পেয়ে যায়,
এক অদ্ভুত কালো ছায়াতে পৃথিবী তলিয়ে গেল
বৃষ্টি অরূপের দিকে তাকায়,
তখনি একটা কালো ধোঁয়ার কুন্ডলী সভায় এসে উপস্থিত হয়,
সে বদলে যায় একটা মানুষে,
–বিয়েটা তাহলে হয়ে গেল অরূপ চৌধুরী,
কিন্তু শুভ পরিনতি কিভাবে হতে দি বলুন ত,
–তুই ঠেকাতেও পারবি না৷
কথাটা বলে অরূপ চৌধুরী নাদিয়ার পেটে চাকুর আঘাত করে,
–বাবা,
নাদিয়া নির্ঝর এর দিকে এক বার তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়,
অরূপ চৌধুরী সরে আসে।
নাদিয়ার রক্তাক্ত শরীর নির্ঝর এর বুকে ঢুলে পরে,
নির্ঝর পাথর হয়ে যায় এমন কাজে
–নাদিয়া আসবে বাবা তোর জীবনে
জীবনের বাকি কিছু দিন তোকে কষ্ট করতে হবে নির্ঝর,
হ্যাঁ বাবা কষ্ট করতে হবে আমি আর তোর মা আমরা কেউ থাকবো না৷
আমাদের তুই পাবি না আর না নাদিয়াকে পাবি,
তোকে এই বছর গুলো একা কাটাতে হবে
নাদিয়া আসবে তোর জীবনে৷
নতুন রূপে
ওকে সজিয়ে নিস,
নির্ঝর এর চোখের সামনে ওর ম বাবার মৃত্যু হয়,
সে দিন কেউ বেঁচে ছিল না শুধুমাত্র রবি বেঁচে ছিল
রবি হ্যাঁ এই সেই রবি৷
যে নির্ঝর এর সাথে সেদিন অভিশাপের শিকার হয়েছিল
ওদের রবিও নির্ঝর এর মতো জীবন যাপন করেছে,
নির্ঝর এর সাথেই,
(রবি মারা গেছিল তবে কিভাবে বেঁচে আসলো?
সে দিন রবি মরে নি নির্ঝর শুধুমাত্র তার কিছু শত্রুকে ভয় দেবার জন্য রবিকে মারার নাটক করেছিল নির্ঝর এর জীবনে প্রথম এবং শেষ বন্ধু রবি যে তার সাথে সাফার করেছে পুরো পথ)
নির্ঝর বদলে গেল এক মানুষ রূপি রক্ষসে,
রক্ত হলো তার প্রধান খাদ্য,
মায়া মহব্বত সব শেষ হয়ে গেল
নির্ঝর এর বয়স থেমে গেল
নির্ঝর বর বড়ো হলো না এবং পরেও নির্ঝর এমনি থাকবে
ধিরে ধিরে অরূপ চৌধুরীকে পৃথিবী ভুলতে থাকে,
আর নির্ঝর তার নিজের স্থান বানিয়ে নেয় এই বিরাট জঙ্গলে,
পৃথিবীতে প্রভাব শালী হতে পেরেছো নির্ঝর৷
কিন্তু ওর ভেতরের মানুষ টা মারা গেছে
নির্ঝর এমন এক জন মানুষ ছিল যার গাছের পাতা ছিঁড়তে তাই কষ্ট হতো,
কোন গাছের পাতা শুকিয়ে পরে গেলে তার বুকে ব্যাথা হতো৷
আজ সে কতোগুলো বছর এক থেকে এমন হয়ে গেছে৷
পৃথিবীটা বড়োই আজব,
বর্তমান,
সে দিন সেই অভিশাপ কারির মৃত্যু হয়,
তবো মৃত্যুর আগে সে বলে গেছিল
যদি নাদিয়া নির্ঝর কে আবার আগের মতো ভালোবাসতে পারে তবেই নির্ঝর আবার আগের মতো হবে,
সাধারণ মানুষ এর মতো জীবন কাটাতে পারবে,
আমার নির্ঝর এমন না ছায়া,
ও এমন হয়ে গেছে,
তোমার কাছো সব রূপকথার গল্প মনে হতে পারে কিন্তু আমি জানি না তোমায় কিভাবে বিশ্বাস করাবো।
–অবিশ্বাসের কিছু নেই
ও এতো কিছু সহ্য করেছে!
ওর ত কোন দোষ ও ছিল না৷
–,বলতে পারো এক দম সত্যি কথাটা বলেছো তুমি,
বাচ্চা টার কোন দোষ ছিল না,
না ছিল কোন আকাঙ্খা,
ও ত শুধু একটা ভালো জীবন চেয়েছিল৷
কিন্তু,
ওকে সেই জীবন ত দেওয়া হলো না উল্টে ওকে তচনচ করে নেওয়া হলো,
ছায়া ছবি গুলোর দিকে তাকিয়ে আছে এই সেই ছবিগুলো যা চিত্রকর দিয়ে আঁকানো হয়েছিল,
–আমি আসছি ছায়া নির্ঝর হয়ত খাবারের সন্ধানে গেছে৷
রবি চলে যায়,
–কেন এমন হয়,
আমি জানি না৷
তোমার প্রতিটা কাজে আমি ঘৃণা পেতাম৷
তোমার ছোঁয়া গুলো আমার কাছো বিষের চেয়ে বিষাক্ত লাগত,
কিন্তু এখন যে ভালোবাসা দিতে মন চাইবে
তুমি সত্যি অনেক সাহসী,
তুমি এতো কিছু সহ্য করেছো
আমি ত তোমার পাশে থাকতেই পারলাম না,
চিন্তা করো না নির্ঝর ছায়া তোমার পাশেই থাকবে,
তোমায় আবার আগের মতো করে তুলবে,
তুমি আবার একটা কোমল হৃদয় নিয়ে বাস করবে এই পৃথিবীতে,
ছায় বেরিয়ে আসে,
রাত প্রায় ১ টা,
নির্ঝর আজ এখনে বাড়িতে আসে নি
আসলে সে কোথাও তার খাবার পায় নি প্রতি ৩ মাস পরপর তাকে মানুষের রক্ত পান করতে হয় না হলে নির্ঝর এর মৃত্যু নিশ্চিত কিন্তু আজ সেই দিন কোথাও সে কোন মানুষের সন্ধান পায় নি,
মির্ঝর কখনোই ভালো মানুষ কে হার্ট করে না,
নির্ঝর এর শরীর ভালো লাগছে না,
সে রুমে এসে শুয়ে পরে,
ছায়া ওয়াসরুম ছেরে বেরিয়েছে মাত্র,
নির্ঝর এর অপেক্ষা করতে করতে রাতে সজাক ছিল,
হটাৎ নির্ঝর এর এভবে আসতে দেখে ছায়া বেশ অবাক হলো,
নির্ঝর ছায়ার দিকে পিট করে শুয়ে আছে মনো হচ্ছে নির্ঝর কষ্টে ঘন নিশ্বাস নিচ্ছে,
ছায়া দৌড়ে নির্ঝর এর কাছে যায়,
–নির্ঝর নির্ঝর কি হয়েছে আপনার,
–ছায়া সরে যাও আমার থেকে,
আমি তোমায় হার্ট করতে চাই না,
–মানে কি নির্ঝর কি হয়েছে বলুন প্লিজ আপনি ত নীল হয়ে যাচ্ছেন
–এটাই ভালো আমি মরে গেলে তুমি শান্তি পাবে মুক্তি পাবে প্লিজ সরে যাও৷
( কষ্ট হচ্ছে কথা বলতে)
–নির্ঝর প্লিজ,
এভাবে বলবেন না,
–প্রিন্সেস প্লিজ স্টে এওয়ে ফ্রম মি,
এরি মাঝে রবি আসে,
–ছায়া ওর রক্ত প্রয়োজন তুমি ওকে হেল্প করতে পারো শুধুমাত্র তুমিই৷
এ বাড়িতে আর কোন সার্ভেন্ট নির্ঝর কে সাহায্য করতে পারে না,
–রবি আমি তোকে বলছি চলে যা এখান থেকে,
–কিন্তু নির্ঝর
–এটা আমার আদেশ,
রবি আদেশের কথা শুনে চলে যায়,
ছায়া নির্ঝর এর কাছে এগিয়ে যায়,
–,আমার রক্ত নেও,
–নো প্রিন্সেস,
–হুস প্লিজ যতোটুকু লাগবে আমার থেকে নেও,
–,কিন্তু আমি তোমায় মেরেও দিতে পারি৷
–যদি এবার তোমার থেকে আমি আলাদা হয়ে যাই তবে বুঝবে আমাদের ভেতর কখনো ভালোবাসাই ছিল না,
ছায় চোখ বন্ধ করে নেয়,
–প্লিজ নির্ঝর বাইট মি তোমার অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে,
নির্ঝর ততক্ষণে পাগল হয়ে গেছে প্রায় সে ছায়াকে পাশে ফেলে নিজে উপরে উঠে বসে,
ছায়ার চুল সরিয়ে ছায়ার ঘাড়ে দাঁত বসায়,
ছায়া ব্যাথায় চোখ বন্ধ করে নেয়,
ছায়ার রক্ত নির্ঝর এর ঠোঁট লাগতে সে উন্মাদ হয়ে যায়,
ছায়া যন্ত্রণায় চাদর আঁকড়ে ধরে,
বেশ কিছু সময় পর নির্ঝর শান্ত হয়ে যায়,
মুখ তুলে ছায়ার দিকে তাকায়,
ছায়া চোখ বন্ধ করে আছে,
নির্ঝর এর শরীর রং সাভাবিক হয়ে গেছে,
–ছায়া,
–হুম
–তুমি এটা কেন করলে আমায় মরতে দিলে হয়ত ভালো হতো,
ছায়া নির্ঝর এর মুখ চেপে ধরে,
–উহু এমন বলবেন না,
আপনি ছাড়া এখানে আমার কেউ নেই
–ছায়া,
–ভালোবাসতে শিখিয়ে তাকে দুরে ঠেলে দিতে নেই,
–তুমি ত বালো এটা ভালোবাসা না,
–আপনি যাই করেন না কেন তাই ভালোবাসা, নির্ঝর বাকরুদ্ধ হয়ে যায় নির্ঝর এর কথায়,
–সত্যি বলছো!
–সত্যি বলছি,
(ভালোবাসি নির্ঝর আপনাকেই ভালোবাসি আপনাকেও ভালোবাসতে হবে আগের মতো করে কথা দিচ্ছি এই মৃত বাড়িটাকে জীবিত করে তুলব)
চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here