গল্পের নামঃ-#তার_শহরের_প্রেম😍😍
লেখিকাঃ- #Konika_islam
part:-17
আয়াত শাওয়ার নিয়ে এসে রেডি হচ্ছে,,,, চুলগুলো এখনো হালকা হালকা ভিজা,,,,,পরনে একটা স্কাই ব্লু কালারের ড্রেস সাথে স্কাই ব্লু কালারের পাথর বসানো।আয়াত মেকাপ করছে,, আর আয়ান একমনে তাকিয়ে আয়নায় দেখছে তার আয়াতকে। আয়াত বলে
—-কি দেখেন? আয়ান দুষ্ট হাসি দিয়ে বলে
— দেখলাম,,, ভিভো থেকে আই ফোন কিভাবে হতে হয়। না ভাই মানে মেকাপ এমন একটা জিনিস,, যা,, কাককে বক আর বককে কাক করে দেয়। আয়াত রেগে চোখ গুলো বন্ধ করে চেচিয়ে বলে
—- আপনি বের হন,,, রুম থেকে,,, । আয়ান ভয় পেয়ে বলে
— আরে আরে আমিতো মজা করছিলাম,,, আয়াত আবারও একই রকম করে বলে
—- আমি বের হতে বলছি। আয়ান তাড়াতাড়ি করে বেড়িয়ে যায়।
________________
মেহমান আসা শুরু হয়েছে,,,, সাদী, আয়ান, আরিয়ান ও অপূর্ব সবাই তাদের ওয়েলকাম জানাচ্ছে। তখনই আলভিরা আসে সাদীর সামনে। সাদীতো আলভিরাকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। পরনে রেড কালারের লেহেঙ্গা হেভি মেকাপ। আলভিরা আয়ানকে বলে
—– ভাইয়া কয়েকটা পিক তুলে দিবা? তখনই আরিয়ান বলে
—– এমনই পেত্নীর মতো লাগছে নিজের ছবি নিজে দেখলে সেন্স হারাবি। আলভিরা নিজের চুলগুলো সরিয়ে ভাব নিয়ে বলে
—– দেখ আমি জানি আমাকে সুন্দর লাগছে ,,,, আর তাছাড়া আমি কোনো ছেলের পাশ দিয়ে গেলে,,,, সে এমনই সেন্স হারায়। আরিয়ান একটা চওড়া হাসি দিয়ে বলে
—– তো পারফিউম ব্যবহার করতে পারিস,,, তা তো করবি না। বুঝ তাহলে তোর ঘামের গন্ধে মানুষ সেন্স হারায়। আলভিরা এবার পারেতো কেঁদে দেয়,,,৷ আর সাদী তো ঠোঁট চেপে হাসছে। আয়ান আলভিরাকে হাগ করে বলে
—- এই কেউ আমার বুড়ি কে রাগাবি না। তখনই আসে ইরা ডার্ক গ্রিন কালারের ড্রেস সেম আয়াতের মতো। দুপাট্টা ঠিক করতে করতে আসছে। ইরাকে দেখে আরিয়ানের হার্ট জুড়ে জুড়ে বিট করতে লাগে। আরিয়ানের হাত আপনাআপনি বুকের বা পাশে চলে যায়। আর অন্য দিকে মুখ করে বলে
—- হায়। একটু হলেই এ্যাটাক করতাম। এতো সাজতে হয় নাকি!? সাজুক কিন্তু আমার কি?! ধূর কি হচ্ছে এইসব আমার সাথে। ইরা এসে তাড়াতাড়ি করে আয়ানের কানে কানে কিছু বলে। আর আয়ান অপূর্বকে বলে
—– অপূর্ব আমার সাথে আয় একটু। আয়ান অপূর্বকে নিয়ে চলে যায়,,,, আর সাদী আলভিরার হাত ধরে বলে
—- আমারও আসছি। সবাই চলে গিয়েছে শুধু দাড়িয়ে আছে ইরা আর আরিয়ান। ইরা হালকা কাশি দিয়ে বলে
—– এহেম,,, এহেম,,,,আমাকে কেমন লাগছে বললে না যে? আরিয়ান অন্য দিকে মুখ করে বলে
—-আমি কি বলবো। ইরা ভেংচি কেটে বলে
—- আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম,,, তুমি একটা আহাম্মক। আর চলে যায় ।
____________
আয়াত নিচে নামছে,,, কানে দুল পরতে পরতে আর আয়ানও পানি খেয়ে কিচেন থেকে আসছে,, আর আয়াতকে দেখে আয়ান দাড়িয়ে যায়।।।।। আয়াত আয়ানকে দেখেও না দেখার মতো করে গার্ডেনে চলে যায়। আয়ান বলে
—- আয়ানরে তোর বউ রাগ করছে রাগ ভাঙা নয়তো রাতে বিছানা তো দূরে থাক রুমে অব্দি যেতে দিবে না। বউগো কই তুমি। এই বলে আয়ানও আয়াতের পিছু পিছু দৌড় আসে।।।। আর আরিয়ান,, সাদীকে বলে কিছু একটা। হঠাৎই গানের সুরে পিছনে তাকায় আয়াত,,,। এমা সে কাকে দেখছে তার গুনধর স্বামী,,, ভাই সবাই একসাথে,,,, হঠাৎ আয়ান গেয়ে উঠে
—-
এই মন টাকে লিখে দিলাম,,, তোরি নামেতে,,,
তুই কি আসবি বলনারে,, প্রেমের টানে।
( আয়াত হা হয়ে আছে সাথে এখন যোগ হয়েছে ইরা, আলভিরা। আর এইসব উপর থেকে দেখছে আরিফা। সত্যি আরিফা অনেক বড় ভুল করেছে আয়ানকে ছেড়ে। আয়ান আয়াতের হাত ধরে চুমু খেয়ে গানের সাথে তালমিলায়
ভালোবাসার মাতাল হাওয়া।
বইছে যে আমার প্রাণে।
তোর ছোঁয়া তে যেন যাই,,
সবকিছু আমি ভুলে… ( আলভিরার লজ্জা লাগছে)
ইরা আরিয়ানের সাথে ডান্স করছে।।।
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
(সাদী আলভিরার কাঁধে নিজের কাঁধ দিয়ে ধাক্কা দেয় বেচারি লজ্জা পাচ্ছে)
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
ও ও তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।।।।।
তখনই এন্ট্রি হয় আরবির,,,, সবাই থেমে যায়। ইয়েলো কালারের লেহেঙ্গা হেভি মেকাপ আর জুয়েলারি,,,, আজ অনেকদিন পর নিজের বোনকে সাজতে দেখেছে আয়ান,, সবাই অনেক খুশি। তখনই অপূর্ব সবার সামনে হাটু গেড়ে বসে পরে আরবির সামনে,,, এটা একটা প্লানিং ছিল,, সবাই জানতো,, আয়ানও জানতো। নিজের বোনের জীবনটা কে নতুন করে সাজিয়ে দিতে। অপূর্ব
——
ও,,পৃথিবীর সবটুকু সুখ, দেবো যে আমি তোকে।
সব বাধা পেরিয়ে, যদি তুই আছিস ছুটে।
ও,ও, বড় নাজেহাল এই দিল।
তোর ভালোবাসাতে,,
বাঁচি কি করে বলনা তোকে ছাড়া,,,,
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
ও ও তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
(বাকিটা নিজ দায়িত্বে শুনে নিয়) আরবি অবাক সবাই চুপ মিউজিক ওফ হয়ে যায়। সবাই বলে
—- আরবি হ্যা করে দাও। আরবি আয়ানের দিকে তাকালে আয়ান চোখ দিয়ে বলে হ্যা করে দিতে
—– আরবিও হ্যা করে দেয়। সবাই করা তালি দেয় আর শুরু হয় পার্টি। আয়ান চোখের পানি মুছে তখনই আয়াত আয়ানের কাঁধে হাত রেখে বলে
—- কি হয়েছে কান্না করছেন কেন? আয়ান আয়াতকে হাগ করে বলে
—- আমার লাইফের বেস্ট গিফট হিসেবে আমি তোকে পেয়েছি আয়াত। জানিনা কি এমন কাজ করেছিলাম। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ তুই আমার লাইফে আসার পর সব কেমন মেজিকের মতো লাগছে। আর ধন্যবাদ তোকে অপূর্বের ব্যাপারটা আমাকে বুঝানোর জন্য,, আমি তোকে পেয়ে সত্যি হ্যাপি। আয়াত বলে
—- বারে আরবি আপু বুঝি আমার কিছু লাগে না?।। আয়ান কিছু বলে না শুধু আয়াতকে হাগ করে রাখে।
__________
সাদী আলভিরার কানে কানে বলে
—- তোকেও কিছু দিন পর প্রপোজ করব। আলভিরা বলে
—- করলেও কাজ হবে না। যত দিন না অব্দি ইরা আপু আর আরিয়ান ভাইয়ার বিয়ে হয়। সাদী বলে
—– বিয়ে আজকেই হবে। আলভিরা বলে
—- মানে!? সাদী বলে
—- ইরা সেই ব্যবস্থা করে রেখেছে। হঠাৎ করেই ইরা গিয়ে আরিয়ানের বাবাকে বলে
—– আঙ্কেল তোমার ছেলে আমাকে পাত্তাই দেয় না। আরিয়ানের মা আরিয়ানের কান ধরে বলে
—– কেন রে মেয়েটা তোকে এত লাইক করে আর তুই? আরিয়ান কান ছাড়িয়ে বলে
—– তো আমি কি করব!? ইরা একটা হাসি দিয়ে বলে
—- বিয়ে,, মানে আমাকে বিয়ে করবা। আরিয়ান বলে
—- এ্যা!!! সবাই একসাথে বলে
—- এ্যা না হ্যা। আরিয়ান পিছাতে পিছাতে একদম স্টেজের শেষে চলে এসেছে,, যেই না নিচে পরে যাবে। ওমনি ইরা গিয়ে আরিয়ানের হাত ধরে ফেলে। আরিয়ান বলে
—- আমি বিয়ে করবো না। ইরা মাথা দোলাতে দোলাতে বলে
—- বিয়ে করতে হবে,, কাল করলেও করবা তা আজকেই কর।
_____________
ইরা আর আরিয়ানের কথাটাও সবাই জানতো শুধু আরিয়ান জানতো না। কাজী সাহেব আরিয়ানকে কবুল বলতে বলে। আরিয়ান সামনে তাকিয়ে দেখে ইরা একটা লম্বা হাসি দিয়ে বসে আছে। তা দেখে আরিয়ান বলে
—- এই ঐ হাসছে কেন আমি কবুল বলবো না। আয়াত ইরাকে ধমক দিয়ে বলে
—- এই ইরা চুপ। আয়ান আরিয়ানের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে
—- এইবার কবুল বল। আরিয়ান আয়ানকে ধরে বলে
—- বিগ বি আমি এই বিয়ে করবো না। আয়ান আরিয়ানের পিঠে হাত বুলিয়ে বলে
—- কিচ্ছু হবে না। ডারকে আগে জিত হে মেরে ভাই। আরিয়ান ইরার দিকে তাকিয়ে বলে
—- আর এই কবুল বলার পর জেলে কারা বন্দি। অনেক কষ্টে আরিয়ান আর ইরার বিয়ে হয়।এই নিয়ে অবশ্য হাসাহাসি কম হয়নি।
————–
কিন্তু এখন ঘটছে বিপত্তি আরিয়ান ড্রয়িং রুমে বসে বসে ভিডিও গেম খেলছে। আর ইরা উপরে রুম দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে। আয়াত আয়ানকে বলে
—– আরিয়ানকে রুমে যেত বল। আয়ান গিয়ে আরিয়ানকে বলে
—- কিরে রুমে যাবি না। আরিয়ান গেম খেলতে খেলতে বলে
—- এখন ঐটা আমার না ইরা শাঁকচুন্নির রুম। আয়ান বলে
—- ভালো কথায় কাজ হবে না। সাদী,, বাবা,চা্চ্চু, অপূর্ব সবাই আসো। সবাই মিলে আরিয়ানকে জোর করে উপরে তুলছে,,, আরিয়ান বলেছে
—- আমি যামু নারে।। যামু না।।।।।। আয়াত, আলভিরা,, আরবি সবাই হাসছে।।
আরবি বলে
—- ইতিহাসের পাতায় সুনালী অক্ষরে লেখা থাকবে,,, ইরা আর আরিয়ানের বিয়ের কাহিনী।
চলবেগল্পের নামঃ-#তার_শহরের_প্রেম😍😍
লেখিকাঃ- #Konika_islam
part:-18 Last part
রাতে আয়ান রুমে আসে দেখে আয়াত জুয়েলারি খুলছে তা দেখে আয়ান নিজে গিয়ে আয়াতের জুয়েলারি খুলে দেয়,,, আর আয়াত একমনে তাকিয়ে দেখছে আয়ানকে। এটা কি স্বপ্ন? যদি স্বপ্ন হয়তো তাহলে যেন কখনো আমার এই নিদ্রা না ভাঙে। এইসব আয়াত ভাবছিল কিন্তু আয়াতের ভাবনা জগৎে ছেদ ঘটে তখন যখন আয়ান আয়াতের গলায় একটা চেন পরিয়ে দেয় আর কানে কানে বলে
—– বিয়ের দিন রাতে কিছু না কিছু দিতে হয় নিজের বউকে তখন দেয়নি তো কি হয়েছে,,, এখন দিয়ে দিলাম। আয়াতও আয়ানের দিকে ঘুরে ফিরে বলে
—- আপনার জন্যও একটা কিছু আছে,,, বলেই আয়ানকে সাইড করে কাবার্ড থেকে একটা ঘড়ির বক্স নিয়ে আসে,,, আর সেটা থেকে ঘড়ি বের করে আয়ানের হাতে পরিয়ে দেয় আয়ান আয়াতকে হাগ করে বলে
—– ভালোবাসি তোকে প্রয়িতমা,,,, #তোর_শহরের_প্রেম কে ভালোবাসি জানানি কত দিন বাচঁবো কিন্তু তোকে নিয়ে বাঁচার ইচ্ছাটা প্রবল।
_________
অপর দিকে রুমে ঢুকে দাড়িয়ে আছে আরিয়ান আর ইরা কমড়ে হাত দিয়ে বলে
—- সমস্যা কি তোমার? আরিয়ান চোখ গুলো ছোট করে বলে
—- তুমি আমাকে বিয়ে কেন করলে? ইরা একটা হাসি দিয়ে বলে
—- ভালোবাসি তাই,,, আর এটা তোমার মেনে নিতে হবে আমি তোমার বিয়ে করা বউ। আরিয়ান,,, পান্ঞ্জাবির বোতাম খুলতে খুলতে বলে
— বললেই হলো? ইরা পাশে তাকিয়ে দেখে ফল কাটার ঝুড়িতে একটা ছুড়ি সেটা নিয়ে আরিয়ানের দিকে তেরে আসলে আরিয়ান দেয় এক দৌড়,, আর বলে
—– ইরাবতী,,,, ডলফিনের রাণী,, কুটনি বুড়ি তোমায় আমি ভালোবাসি,,, ছুড়িটা ফালাও,,,,। ইরা বলে
—– আমি কুটনি,,? ডলফিনের রাণী!? আরিয়ান বলে
—– বিগ বি গো তুমি আমাকে এই কষাইয়ের কাছে কেন পাঠাইলা,,,,, ।
_________
অন্য দিকে আরবি দাড়িয়ে আছে ছাঁদের এক কোণে। পাশেই অপূর্ব। অপূর্বকে আরবি বলে
—- এতো মেয়ে থাকতে আমাকে কেন বিয়ে করতে চাইছো,, আমার থেকে অনেক ভালো মেয়ে তুমি পেতে। অপূর্ব আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে
—- আমি তো তোর চেয়ে ভালো কাউকে চাইনি,, আমি তো তোকে চেয়েছি। আর আলহামদুলিল্লাহ পেয়েও গিয়েছি। ওয়াদা করলাম তোকে কখনো কাদঁতে দিব না।
___________
সকাল সকাল আফিয়া বেরিয়ে পরে সুইজারল্যান্ডের জন্য ,,, এইসবের মাঝে তাকে মানায় না। এতে অবশ্য কারো মাথা ব্যাথা আছে বলে মনে হয় না।
সময় খুব অদ্ভুত জিনিস। কখনো খুব দ্রুত চলে যায় আবার কখনো যেনো কাটতেও চায় না। এটা নির্ভর করে মানুষ সময়কে কীভাবে চায় তার ওপর। সে বড়ই অবাধ্য। মানুষের মন মস্তিষ্ক নিয়ে খেলে খুব মজা পায় সে। যদি কেউ চায় সময় ধীরে চলুক তাহলে সময় যেনো খুব বেশিই দ্রুত চলে যায়। আবার যদি কেউ চায় সময় তাড়াতাড়ি পার হয়ে যাক তাহলে সময় যেনো আর কাটতেই চায় না। দোষটা আসলে কার? মানুষের মনের নাকি সময়ের সেটাও এক বিশাল প্রশ্ন। দেখতে দেখতে কেটে গেছে ২ বছর এর মধ্যে। সময়টা একটু বেশিই দ্রুত চলে গেলো এরকমটাই মনে হচ্ছে আমার কাছে। কিন্তু কী আর করার?
আজ অপূর্ব আর আরবির বিয়ে। বড়ির মেয়ে+ বউ হওয়াতে আয়াতের যেন কাজের আর শেষ নেই। খাওয়া-দাওয়া না করেই কাজে লেগে আছে। আয়ানও কমনা দেখে মনে হবে না যে সে এতোকাজ করতে পারে। আরিয়ান আর সাদীও লেগে পরেছে কাজে,, সাদীর আর আলভিরার এনগেজমেন্ট হয়েছে মাসখানিক হবে। সব কেমন দ্রুত হয়ে যাচ্ছে তা বলা বড় দায়।
উপরে উঠছি,,, কাজ আছে। কিন্তু মাথাটা ঝিম ঝিম করছে,, সকাল থেকেই কেমন লাগছে মাথা। মাথা ঘুরে উঠছে মাঝেমাঝে। কিছু খেতেও ইচ্ছে করছেনা।কাউকে বলিনি কারণ বিয়ে বাড়িতে সবাই এখন আবার আমায় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরবে। আম্মু আমায় ফলের ঝুড়িটা আনতে বলল। আমিও ফলের ঝুড়ি নিয়ে বেড়িয়ে এসে আরেকটু এগোতেই মাথাটা ভীষণ জোরে ঘুরে উঠল। সবটা অন্ধকার হয়ে আসছে। ঝুড়িটা আর ধরে রাখতে পারলাম না, পরে গেল হাত থেকে, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কী হল জানিনা আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না লুটিয়ে পরলাম মাটিতে। চোখ খুলে দেখি সবাই মিষ্টি খাচ্ছে আর আয়ান আমার হাত ধরে পাশে বসে আছে। আলভিরা দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে
—- আপ্পি আমি ফুপি হবো আর তুমি মাম্মা। সাদী আলভিরারকে বলে
—- তুমি মামি হবে আর আমি মামা। আলভিরা ভাব নিয়ে বলে
—- তুমিই ফুপা হবা মানে আঙ্কেল,,, ইরা আরিয়ানকে বলে
—– ওয়াও,,,, কি মজা ছোট একটা বেবি আসবে। আরিয়ান ইরার মুখে মিষ্টি ভরে দিয়ে বলে
— এক বেইবি বলে আরেক বেইবির কথা। ইরা মিষ্টি টা শেষ করে বলে।
—- তুমি আমাকে ইনডিরেক্টলি অপমান করছ? আরিয়ান বলে
— না ডিরেক্ট। তখনই আয়ানের মা বলে
—- আয়ান তুই আয়াতের সাথে থাক আর আমরা বাকিটা দেখে নিচ্ছি। সবাই যেতেই আয়ান আয়াতকে হাগ করে বলে।
—- আই এম সো হ্যাপি আয়াত,,,, তোই আমাকে কতটা হ্যাপি করেছিস বলে বুঝতে পারবো না। আয়াতও অনেক হ্যাপি,, আয়াত আয়ানকে হাগ দিয়ে বলে
—- আমিও অনেক হ্যাপি।।
চারদিকে হৈচৈ,,, সবাই কত এনজয় করছে আর আয়াত এক কোনে বসে আছে। এটা আয়ানের সাফ কথা আয়াত কোনো কাজ করতে পারবেনা। আয়াতের কি বসে বসে আইসক্রিম খাচ্ছে আর চাতক পাখির মতো এইদিক সেইদিক তাকাচ্ছে আর আয়ানকে খুজছে। কিছু সময়ের মধ্যেই আরবি আর অপূর্বের বিয়ে কম্পিলট হয়ে যায়। দেখতে দেখতে কেটে যায় আরো আটটা মাস আয়াতের মেজাজ এখন খারাপ থাকে খিটখিটে হয়ে গিয়েছে,,, আয়ানকে ঝাড়ির উপর রাখে। আর আয়ানও মুখ বুজে সব সহ্য করে,,,, কখনো রাত ২ বাজে বলে সে আইসক্রিম খাবে কখনো বা রাতে তার ঘুম আসে না। এখনো সেম আয়াত আয়ানকে ডাকছে
—- এই এই শুনো। আয়ান ধরপাকড় খেয়ে উঠে বসে আর বলে
—- কি হয়েছে? পেন হচ্ছে ডক্টর ডাকবো?? দাঁড়াও আমি কার বের করছি। আয়াত ভ্রু কুচকে বলে
— কিছু হয়নি,,, আমার ঘুম আসছিল না। আয়ান বলে
—- কি!? তুই জানিস কতটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আয়াত বলে
—- মাঝে মাঝে ভয় পাওয়া ভালো,,, ভয় পেলে ভালোবাসা বারে,, আচ্ছা বায় এখন আমি ঘুমাবো। আয়ান মাথায় হাত দিয়ে বলে
—- আল্লাহ আর যে কত কি সহ্য করতে হবে। আয়ান গিয়ে আয়তের পাশে শুয়ে পরে। কিন্তু অন্য দিকে মুখ করে,, আয়াত তা দেখে আয়ানকে পিঠে হালকা করে মেরে বলে
—- এইদিকে ঘুরে ঘুমান। আয়ান এবার আয়াতকে নিজের হাতে নিয়ে আসে আর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে
—– ঘুমিয়ে পর সোনাপাখি। আয়াতেও ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে পরে।
তারপরের দিন সকালে আয়াতকে নাশতা করিয়ে আয়ান অফিসে যায়,,,,, দুপুরের দিকে আয়াতের পানি তেষ্টা লাগে কিন্তু আয়াত দেখে রুমে পানি নেই তাই সে উঠে দাড়ায় পেটে হালকা হালকা ব্যাথা করছে,,,, আরিয়ান আর ইরা আয়াতের বেইবির জন্য সপিং করে বাসায় ফিরছে,, ড্রয়িং রুমে বসে সবাই একসাথে গল্প করছিল৷,, হঠাৎ করে আয়াত ব্যাথায় চিৎকার দিয়ে উঠে,, তা দেখে দৌড়ে গিয়ে আয়াতকে ধরে আরিয়ান আর৷ ইরা।। সবাই হসপিটালের বাইরে অপেক্ষা করছে তখনই পাগলের মতো ছুটে আসে আয়ান,,,আরবি অপূর্ব সাদী সবাই হাজির। তখনই একটা নার্স বের হয় কোলে ফুটফুটে একটা বাচ্চা মেয়ে। নার্স এসে বাচ্চাটা আয়ানের কোলে দেয়। আয়ান তার মেয়েকে পেয়ে অনেক খুশি চুমুয় ভরিয়ে দেয় তার মুখ। সবাই মেতে উঠে বাচ্চা নিয়ে,, আয়ান জিজ্ঞেস করে
—- আমার আয়াত? তখনই নার্সটা বলে
—- সবাই ঠিক আছে,,একটু পর তাকে বেডে দেওয়া হবে।
চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে আয়াত কিছু সময় আগেই তাকে বেডে দেওয়া হয়েছে। একে একে সবাই এসে দেখা করে যাচ্ছে কিন্তু আয়ান আর বেইবি আসছে না। সব শেষে আয়ান আসে কোলে তার বেইবি। আয়াত তার বেইবিকে দেখে খুশিতে কেঁদে দেয় আর হাতটা বারিয়ে দেয় আয়ান আয়াতের কাছেকোলে বেইবিটা দিয়ে আয়াতের মাথায় চুমু দিয়ে বলে
—- ভালোবাসি,,, আয়াত উপরের দিকে তাকিয়ে বলে
—- আমিও। আর বাইরে থেকে সবাই দেখছে আয়ান আর আয়াতকে।
ভালো থাকুক সুখে থাকুক আয়াত আর আয়ান। সবাই ভালো আছে। শুধু এত কিছুর পরেও সুখে নেই আফিয়া। হয়তো এটাই তার প্রাপ্য।
সমাপ্ত