তার_শহরের_প্রেম পর্ব ১৩+১৪

গল্পের নামঃ- #তার_শহরের_প্রেম😍😍

লেখিকাঃ- konika Islam sanju

part:13

আয়ান রুমে আসতেই আয়াত আয়ানকে ইচ্ছে মতো মারতে লাগে৷ আয়াতকে এমন ক্ষেপে থাকতে দেখে আয়ান মনে মনে বলে

—– আল্লাহগো এই যাত্রা বউয়ের হাত থেকে শহীদ হওয়ার আগে বাচায় নাও জীবেন আর করতাম কি না এমন পরে ভাববো,,, কারণ ওকে জ্বালায়তে সেই ভালো লাগে। আয়াত খেয়াল করে দেখে আয়ান আলাদা জগৎই হয়তো কিছু ভাবছে!! আয়াত আয়ানের চোখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বলে

— এই যে,,মি. লম্বু কি ভাবছেন?? একা একা ঝগড়া করে কি মজা আছে?? আয়ান বলে

—- ভালো করে ঝগড়া করবি?? তাহলে আগে আমি তোকে ইচ্ছে মতো মেরে নেই তারপর!! আয়াত ভাব নিয়ে বলে

—- আমি আপনাকে পিটাবো,, কারণ আপনি আমাকে চিমটি কেটেছেন। আয়ান হালকা রেগে বলে

—- তুই অপূর্বের সাথে জায়গা বদলি করেছিস তাই। আয়াত কমড়ে হাত দিয়ে এক ভ্রু উচু করে বলে

—- এর আগে কি আমার হাতে কাঁকড়া কামড়াচ্ছিল? আয়ান একটা ডেবিল হাসি দিয়ে বলে

— হ্যা আবার কামড়াবে,, বলেই আয়াতকে চিমটি কাটে আয়াত রুমের এইদিক সেইদিক দৌড়াতে লাগে,, আয়ানও। একটা সময় দু’জন হাপিয়ে গেলে আয়ান বলে

—– ওয়েট একটু রেস্ট নিয়েনেই,,, যা আমার জন্য কফি নিয়ে আয়। আয়াত বলে

—- আমি কেন কফি বানাবো?? সামনেই তো ক্যাফে আছে!! সেখান থেকে খেয়ে আসুন আর আমাকেও খাওয়ান!! আয়ান ভেবে বলে

—- ওকে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়েনে,,,, আমি নিচে গিয়ে সবাইকে বলছি,, আর ডিনার করে ফিরব। আয়ান চলে যায় আর আয়াত তৈরি হতে লাগে,,,,,,,, বেইবি পিংক কালারের শাড়ি,, গলায় একটা চেন,,, কানে সাদা পাথরের ঝুমকা,,, চোখে কাজল,, আর ঠোঁটে পিং লিপস্টিক,,,,হাইলাইট করা কমড় অব্দি চলুগুলো খোলা,,,, সব মিলিয়ে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।

_________

আয়াত শাড়ির কুঁচি ঠিক করতে করতে নিচে নামছে,,আরেক হাতে ফোন, আর আয়াতকে দেখে একই সাথে একই সময় দুজনের চোখ আটকে যায়,,,, আয়ান কি মনে করে আয়াতের হাত ধরে সোজা রুমে নিয়ে আসে,,, আয়াত বলে

—- কি হচ্ছে!? আরে বাবা হলো টাকি!! নিচে সবাই একসাথে ওদের অপেক্ষা করছে। আয়ান আয়াত কে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসিয়ে দেয় আর একটা টিসু নিয়ে, আয়াতের ঠোঁটের লিপস্টিক মুছে দেয়,,, চোখের কাজলটাও হালকা করে দেয় আর চোখ মুখ শক্ত করে বলে

—- এভাবে এতো সাজার কি আছে? আমি ছাড়া কারো সামনে এভাবে যাবি না। কারণ তুই আমার স্ত্রী অন্য কারো না৷ আয়াতের চোখ দিয়ে পানি পরছে এটা দুঃখের না সুখের কারণ আয়াতের মতে আয়ান এই প্রথম তার উপর জোর খাটিয়েছে,, আয়াতকে কান্না করতে দেখে আয়ান বলে

—- এই কান্না করবি না,,, এখন চল। সবাই একসাথে রেস্টুরেন্টে চলে আসে।। কিন্তু আসার সময় আরিয়ান আর ইরা, আলভিরা, সাদী বাইকে করে আসে। আরিয়ান ইরাকে বলে

—- ধরে বসো নয়তে পরে যাবে। ইরা অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বলেছিল।

—- সেটাই ভালো। আরিয়ান হঠাৎ করে ইরার এমন পরিবর্তনের কারণ খুজতে লাগে,, আর তারা রেস্টুরেন্টে পৌঁছে যায়। সাদী আর আলভিরাও বাইকে এসেছে ,,, আর হঠাৎ করে বৃষ্টি হওয়াতে আলভিরা খানিকটা ভিজে যায়। আয়ান সামনের ক্যাফেটাতে না গিয়ে বেস দূরে একটা রেস্টুরেন্টে আসে। সাদী বলে

—- এইরে আলভিরা তোর তো আটা ময়দা সব ধুয়ে মুছে গিয়েছে!! আলভিরা রেগে নিজের পার্স দিয়ে সাদীকে মেরে বলে

—- মূর্খ বালক,,, কুদ্দুস আলী এটকে আটা ময়দা না মেকাপ বলে মেকাপ,,,, আর এটা ওয়াটার প্রুফ। সাদী উপরে উঠতে উঠতে বললো

—- মেকাপ মাইখা যদি এত সুন্দর হয়ে গেলি,, তাহলে একটু খেতেও তো পারিস!! তাহলে তোর কালো মন, দিল, প্রাণটা সাদা হবে। আলভিরা বলে

—- তোমার মতো,,, উল্লুকের মতো ভাল্লুকের থেকে এরে চেয়ে বেশি আশা করা,, বৃথা। তখনই ইরা আলভিরাকে ডাকে। তাড়াতাড়ি করে উপরে উঠতে যায়। আরিয়ান সেদিকে এক পলক তাকিয়ে সেও নিজের মতো ফোন বের করে উপরে উঠতে লাগে আর বলে

—সাদী একটু ওয়েট কর।সাদী বলে

–আরিয়ান একটা জিনিস খেয়াল করেছিস এবার কিন্তু ইরা অনেকটা বদলে গেছে তোর সাথে তেমন কথা বলে না ইভেন তোকে এভয়েড করে চলে । আরিয়ান বলে

—ওকে আমি খুব ভাল করেই চিনি দুইদিন যেতে দে দেখিস আবার আগের রুপে ফিরে আসবে এখন হয়তো এভাবেই একটু এটিটিউড দেখাচ্ছে ব্যাপার না বাদ দে ওর কথা। সাদীও আর তেমন কথা বারায় না সোজা ওপরে চলে যায় যে দেখে সবাই ছবি তুলতে ব্যস্ত। কিন্তু সবার মাঝে এক কোণে বসে আছে অপূর্ব আর ফোনের ভিতরে কি যেন করছে তার এই সবে কোন ইন্টারেস্ট নেই গিয়ে বসে পড়ে অপূর্বর পাশে।। সাদী বলে
.

— আজকাল খেয়াল করলে দেখি এসে আরিয়ান কিন্তু আয়াতের উপরে বেশ সেনসিটিভ হয়ে যাচ্ছে ।স্বাদের কথা শুনে আরিয়ান মুচকি হাসে আর অপূর্ব আর আয়াতের দিকে এক পলক তাকিয়ে দেখে দুজন ছবি তুলতে ব্যস্ত আয়াত কি যেন বলছে আয়ানকে আর মুচকি মুচকি হাসছে । আয়াত বলছে

—- আপনার পিক গুলো সেম মুফিজ মুফিজ লাগছে। আয়ান চোখ গুলো ছোট ছোট করে বলে

—– তোকে কিসের মতো লাগছে রাক্ষস রাণী কটকটি। তখনই আরবি বলে

—- এখানে এসেও ঝগড়া করবি?? আর একবার যদি ঝগড়া করেছিস তাহলে আমি বেরিয়ে যাবো। আয়াত আয়ানের হাত ধরে বলে

—- কি যে বলো না আপু,, এগুলো তো খুনশুটি,, ভালোবাসার খুনশুটি। শাকিল বলে

—- আগেও আমারও মনে হতো,, কিন্তু খুনশুটি থেকে যে কখন খুনাখুনি হবে বুঝতেও পারবে না। জেইনাব চোখ রাঙিয়ে বলে।

—- আজকে আর বেড রুমে জায়গা হবে না। ফাহাদ বলে

—- তোমাদের তো খুনাখুনি, আর খুনশুটি আর আমাকে তো শুটকি মাছের মতো রোদে শুকায়৷ ফহাদের কথা শুনে ফারিন বলে

—- আজকে তোমারও জায়গা হবে না। সাদী দূর থেকে বলে

—- আলহামদুলিল্লাহ আমার কোনো শাকচুন্নি নেই। আলভিরা বলে

—- তোমার কপালে রাক্ষসী আছে। সাদী বাকা হাসি দিয়ে বলে

— না সে আমার রূপকথা গল্পের রাজকুমারী। আলভিরা ভেংচি কেটে ছবি তোলায় মনোযোগ দেয়।

_______________

চারদিকে পিন পিন নিরবতা,,,, চেয়ারে বসে পাশে থাকা টেবিলে লাইট টা একবার ওন করছে আরেকবার ওফ করছে সেই অজানা ব্যক্তি। তখনই তার ফোনে একটা আনানোন নাম্বার থেকে মেসেজ আসে মেসেজে খুব সুন্দর করে সাজিয়ে লেখা আছে

—– আয়াত আর আয়ানের মাঝ থেকে সরে যাও,, নয়তো আমার আসল রূপ দেখবে তুমি,,,, আয়ানকে আয়াতকে নিয়ে সুখে থাকতে দাও,, নয়তো তোমার জীবনে আমি চলে আসলে তোমার সব ফ্রিডম শেষ। তখন না এই কুল থাকবে না ঐকুল,,, ।। মেসেজটা দেখা মাত্র সেই অজানা ব্যাক্তিটার ঘাম ঝরতে লাগে,,, তাড়াতাড়ি করে পানি খেয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে কিন্তু সে ব্যার্থ,, শেষ না পেরে পানির গ্লাসটা জোরে চাপ দিয়ে ভেঙে ফেলে হাত দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে,,, কিভাবে জানলো??? না আয়াত আমার।

________

সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেতে খাবার টেবিলে বসে আয়াত অবাক, কারণ আরিয়ান আর সাদীর হাতে বেন্ডেজ করা,,, অপূর্বের হাতেও। আয়াত আরিয়ানকে বলে

—- হাতে কি হয়েছে??ইরাও আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে,, অসহায় দৃষ্টিতে,,, কারণ সে যতযাই করুক তাকে লাভ তো করে আরিয়ানের কষ্টতে তারও কষ্ট হচ্ছে। আরিয়ান ইরার দিকে তাকিয়ে বলে

—- কিছু না ব্যাথা পেয়েছি,, বাইক রেস করতে গিয়ে।

সাদী কিছু না বলেই খাবারের টেবিল ছেড়ে উঠে যায়। অপূর্ব চুপচাপ খাচ্ছে,,, আয়াত বলে

—- অপূর্ব ভাইয়া তুমি?? অপূর্ব বলে

—- জানিনা সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুমে যাওয়ার সময় পিছলে পড়ে গিয়েছিলাম আর থামাতে বেলেন্স করতে গিয়ে এমন হয়েছে আর আরবি তো হাতের বেন্ডেজ করে দিয়েছে। আরবি খাওয়া ছেড়ে একবার আয়ানের দিকে তাকায় আরেকবার অপূর্বের দিকে,, অপূর্ব ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে খাচ্ছে আর আয়াত রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অপূর্বের দিকে

চলবে৷ গল্পের নামঃ- #তার_শহরের_প্রেম😍😍

লেখিকাঃ- konika Islam sanju

part:14

আয়াত অপূর্বের দিকে রাগী লুকে তাকিয়ে আছে,,,, অপূর্ব আয়াতকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে,,

—- এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন? আয়াত রেগে বলে

—- তোমরা তিনটায় কোনো খিচুড়ি পাকাচ্ছ,, নয়তো একসাথে তিনজনের হাত কি করে কাটে?? আরিয়ান বলে

—- আমি বাইকে থেকে পরে গিয়েছিলাম। সাদী কিছু না বলে খাবার ছেড়ে চলে যায়। আর আলভিরা তাকিয়ে আছে সাদীর যাওয়ার দিকে। খেতে খেতে আয়ান বলে

— তা আরবি তুই অপূর্বের রুমে কি করছিলি? আরবি থতমত খেয়ে বলে

—- না তেমন কিছু না ,, আমি পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম আর তখনই। আয়ান আয়াতকে উদ্দেশ্য করে বলে

—- আমার লেট হচ্ছে আমি বের হচ্ছি। একটু রুমে আসো। আয়াতও আয়ানের সাথে রুমে চলে আসে। আয়ান আয়াতের কোপালে একটা চুমু দিয়ে বলে

—- জানটা আমার সাবধানে থাকিস ,,, আর বিকেলে অফিস থেকে ফিরে তোকে নিয়ে বের হবো। আয়াত তো অবাক, আয়ান তা দেখে মুচকি হাসি দিয়ে চলে যায়। আয়ানকে আসতে দেখেই সেখান থেকে একটা ছায়া সরে যায়।
________

সাদী রুমে হঠাৎ করে ঢুকে যায় আলভিরা। আলভিরাকে দেখে বেস অবাক হয় সাদী। আলভিরা গিয়ে সরাসরি জড়িয়ে ধরে সাদীকে,, সাদী আলভিরাকে নিজের থেকে আলাদা করে বলে

— কি হয়েছে? এখানে কি চাই? আলভিরা সাদীর গালে হাত রেখে বলে

—- তোমাকে চাই… সাদী আলভিরার হাত সরিয়ে বলে

—- কালকে তো আমিও বলেছিলাম,, তখনতো আমাকে ফিরিয়ে দিতে ২বার ভাবিস নি? উল্টো ইগো দেখিয়ে ইগনোর করে ছাঁদ থেকে নিজের রুমে চলে গিয়েছিলি।

কালকের কথা রাতে রেস্টুরেন্টে থেকে আসার পর,, আলভিরা ছাঁদে চলে আসে ঘুম আসছিলো না,, আর তখনই সাদী ছাঁদে আসে,,,, আলভিরা সাদীকে দেখে জিজ্ঞেস করে

—- এতো রাতে?? জিএফ এর সাথে কথা বলতে আসছেন। সাদী আলভিরার পাশে রেলিঙে চড়ে বসে বলে

—- না জিএফ নেই কিন্তু একজন আছে যাকে অনেক ভালোবাসি। আলভিরা সাদীর দিকে তাকিয়ে অসহায় দৃষ্টিতে বলে

— কে?? সাদী আলভিরার হাত ধরে চুমু দিয়ে বলে

— তুই,, #তোর_শহরের_প্রেম তোর হাসি সব। আলভিরা যেন আকাশ থেকে পরে, সেও যে সাদীকে ভালোবাসে,, খুশিতে চোখ বেয়ে পানি চলে আসে,, আর নিজেও জানে না কি মনে করে ছুটে নিজের রুমে চলে আসে। আর আলভিরার এমন কাজে রেগে ইচ্ছেমতো দেওয়ালে পান্ঞ্চ মারে সাদী, ফলে হাত ছিলে রক্ত বের হয়। আলভিরা বলে

—- আমি কি হ্যা না কিছু বলেছিলাম,, খুশিতে আত্মহারা হয়েছিলাম তাই দৌড়ে পালিয়ে ছিলাম। আর হাতের কি অবস্থা করেছেন। সাদী আলভিরাকে হাগ করে বলে

—+ আমার মায়া জ্বালে আটকালে তুমি আর বের হতে পারবে না,,, পাখি। আলভিরা মুচকি হাসি দিয়ে বলে

—- আচ্ছা এখন ছাড়ো,, আমাকে যেতে হবে,,নাশতা শেষ করবে নিচে আসো

________
বিকেল হয়ে গেছে,,, আয়াত ঘুম থেকে উঠে দেখে আরবি, আলভিরা আর ইরা কমড়ে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে। আরবি বলে

—- উঠলি তবে,, কখন থেকে ডেকে চলছি। আলভিরা বলে

—- সে সব কথা পরে হবে,,, আগে রেডিতো কর। দুজন মিলে আমাকে রেডি করিয়ে দেয়। রেড গাউন চুলগুলো বান করা,,, মুখে মেকাপ আর জুয়েলারি। ফোনে মেসেজ আসতেই,, আমি নিচে নামতে লাগলাম ওদের বিদায় দিয়ে।। জনাব গাড়িতে হেলান দিয়ে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে।। তাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে,, আমার অনেকটা আন ইজি লাগছে,, তাই কিছু না বলেই গাড়িতে বসে পরলাম। উনিও গাড়িতে বসে আমার সিটবেল্ট বেধে দিয়ে গাড়ি স্টার্ট করলেন। কিছুক্ষণ দুজনেই চুপ ছিলাম। কিছুক্ষণ পর আমি বললাম,

— ” কোথায় যাচ্ছি আমরা?”

আয়ান ড্রাইভ করতে করতে বললো

— ” গেলেই দেখতে পাবে।”

আমি বিরক্ত হয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম,

— ” এমন কেনো আপনি? সবসময় থ্রিল থ্রিল ভাব রাখেন । সবসময় মনের মধ্যে চলতে থাকে এরপর কী হবে? এরপর কী হবে?”

আমার কথায় উনি শব্দ করে হেসে দেয়,

আমি মুখ ভেংচি কেটে বাইরে তাকিয়ে রইলাম। প্রায় ঘন্টারও বেশি সময় ধরে গাড়ি চলল। আমি ওনাকে আর কিছু জিজ্ঞেস করিনি কারণ জানি কিছুই বলবেন না। হঠাৎ একটা জায়গায় গাড়ি এসে থামলো। আমি দেখলাম একটা বাড়ির সামনেই গেইটেই গাড়িটা থেমেছে হয়তো ফার্মহাউজ। আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ওনার দিকে তাকাতেই উনি পকেট থেকে একটা রুমাল বার করে আমার চোখ বেধে দিলেন। আমি অবাক হয়ে বললাম,

— ” ক্ কী করছেন কী? এমন একটা জায়গায় নিয়ে এসছেন। মেরে গুম করে দেবেন নাকি? যাতে নতুন বউ আনতে সুবিধা হয়? ”

আয়ান আমাকে কোলে তুলে নিয়ে বললেন,

— “মাথায় সব উল্টা পাল্টা চিন্তা,, কিন্তু আইডিয়াটা কিন্তু মন্দ না।”

আমি হাসলাম না দেখেই বুঝতে পারলাম উনিও হাসছেন। অনেকক্ষণ কেটে যাওয়ার পরেও উনি হেটেই যাচ্ছেন। আমি বিরক্ত। তাই বললাম

— কোথায় যাচ্ছেন বলবেন? হাটছেন তো হাটছেনই কষ্ট হচ্ছে না।” আয়ান বলে

— ” আসলে পেছনে একটা নদী আছে। মেরে সেখানেই ফেলবো তোকে,, তাই একটু কষ্ট করাই যায়,, তোর মতো আপদকে বিদায় করতে।”

আমি একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বললাম,

— ” ওহ আচ্ছা।”

কিছুক্ষণ মধ্যেই উনি আমায় একটা জায়গায় দাঁড় করালেন। আমার দুইকাধে হাত রেখে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললেন,

— ” আর ইউ রেডি টু ডাই?”

আমি ঠোঁটে হাসি রেখেই বললাম,

— ” কমপ্লিটলি।”

উনি আলতো করে আমার চোখের বাঁধন খুলে দিলেন। আমি সামনে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। আবছা লালচে অন্ধকারে সামনে বয়ে চলা নদীটা খুব বেশি সুন্দর লাগছে। চারপাশটা এতোটা সুন্দর করে সাজানো যে চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে আমার। আমার সরাসরি সামনে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। কারণ সামনে একটা বড় বোর্ডে গোলাপ ফুল দিয়ে মোটা করে ইংলিশে লেখা আই লাভ ইউ। আমি সাথেসাথেই শক্ত হয়ে গেলাম। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিনা। সবকিছু স্বপ্ন মনে হচ্ছে। উনি আমার দুই বাহু ধরে নিজের ধারে ঘুরিয়ে নিলেন। আমি স্হির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম ওনার দিকে। উনি মুখে মুচকি হাসি ঝুলিয়ে বললেন,

— ” ইয়েস আই লাভ ইউ।কখন থেকে ভালোবাসি আমি জানি না। নিজের সবটা দিয়ে ভালোবাসি। আমি নিজেও জানিনা কেনো, কীভাবে ভালোবেসেছি তোকে। শুধু এটুকু জানি যে ভালোবাসি। তোর হাসি, রাগ, কেদে দেওয়া, মুখ ফুলিয়ে তাকিয়ে থাকা, ভ্রু কুচকানো এইসবকিছু আমার নেশা হয়েগেছে। অন্যদের মতো উইল ইউ ম্যারি মি বলতে পারবোনা কারণ বিয়ে হয়ে গেছে। আর আই এম সরি জান আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি তোকে,, কিন্তু আজকের পর আর তোর চোখের কোনে পানি আসতে দিব না।
#তোর_শহরের_প্রেম,, আমাকে প্রেমে পরতে বাধ্য করেছে।

আয়াত যেন বিশ্বাস করতে পারছেনা,,, আয়ান এইসব বলছে,, এটা কি সে আয়ান যে আয়াতকে দেখতে পারতো না?? আয়াত বলে

—- আপনি মজা করছেন?? আয়ান রেগে বলে

— তোকে সত্যি এখন মেরে নদীতে ফেলে দিব। যা বলছি তার উত্তর দে। আয়াত রেগে ভেংচি কেটে বলে

—- সুন্দর করে বলেন,, নয়তো হ্যা বলবো না৷ আয়ান দাড়িয়ে বলে

—- তোর হ্যা বা নাতে আমার কিছু যায় আসে না। এখন আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে, তাই আর আশিক ওয়ারার মতো ঘুরতে হবে না। আয়াত রেগে বলে

—- হিটলার একটা।আর দৌড়। আয়ান বলে

—- তবে রে দাড়া তোকে দেখাচ্ছি মজা। আয়াত দৌড়াতে দৌড়াতে ফার্মহাউসের ভিতরে চলে যায়। আয়ান নিজের কোট টা সোফায় ছুড়ে মারে আর টাইটা খুলে হাতা ঘুটিয়ে আয়াতকে খুজতে লাগে। আয়াতকে পায় আয়ান একটা রুমে,, আয়াত আয়ানের কাছে এসে গালে আলতো করে হাত রেখে বলে

—– ভাবতেও পারেনি আপনার থেকে এমন কিছু পাবো,,, আই লাভ ইউ। আয়ানও আয়াতকে নিজের কাছে নিয়ে আসে আর কপালে একটা চুমু দিয়ে বলে

—- আই লাভ ইউ টু ( এবার ওরা ওদের মতো থাকুক,, কালকে আবার দেখা হবে )

________

চলবে

#তার_শহরের_প্রেম গল্পটা খুব জলদি তোমাদের থেকে বিদায় নিবে। আর হয়তো ৫/৬ পর্ব। সবার থেকে গঠন মূলক কমেন্টর আশা রাখলাম। ধন্যবাদ সবাইকে 🥰

ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে,, আজকে অনেক বিজি।৷ রিচেক করতে পারিনি। 🥰🥰

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here