#তুমি আসবে বলে
#অপেক্ষার প্রহর
#Sondha Halder
#বোনাস পাট
অন্তুর কথা শুনে অর্ণব স্তব্ধ। সে এখনো বিশ্বাস করতে পারছে না অন্তুর কথায়। অর্ণবের কাছে এটা নিছক স্বপ্ন মনে হচ্ছে। অর্ণবের চোখ থেকে একফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পরলে সে তাড়াতাড়ি করে মুছে ফেলে, ছেলেদের না কি কাঁদতে নেয়। অর্ণব কাপা কাপা গলায় বললো…
অর্ণবঃ অঅন্তু ততুমি এখনি যা ববলে সেটা সত্যি। আআমি সত্যি বাবা হবো?
অর্ণব অন্তুর দিকে জিজ্ঞেস দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। অন্তু মাথা নাড়িয়ে হ্যা বলে, যে সে যা বলছে সব সত্যি কথা। এটা শুনে অর্ণবের খুশির ঠিকানা নেই, অর্ণব অন্তুকে জড়িয়ে ধরে অজস্র চুমো একে দেয় তার মুখে। অর্ণব অন্তুকে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো…
অর্ণবঃ জান তুমি জানো না তুমি কি দিয়েছো আমাকে। আমি ভীষণ খুশি আই লাভ ইউ জান। আই লাভ ইউ। আমার আপন বলতে কাউকে পেয়েছি জান আপন বলতে কাউকে পেয়েছি। তুমি কি চাও আমাকে বলো আমি তাই দেবো। জান আমার জীবনে এটা দ্বিতীয় প্রাপ্তি জান। তোমাকে আমি কি বলে ধন্যবাদ দেবো জানি না।
অর্ণবের পাগলামি দেখে অন্তু স্তব্ধ সে জানতো অর্ণব জানতে পারলে খুশি হবে কিন্তু এতো খুশি হবে জানতো না। অর্ণব অন্তুকে ছাড়িয়ে অন্তুর পেটে হাত দিয়ে বলতে লাগলো….
অর্ণবঃ বেবি আমি তোমার পাপা। তোমাকে অনেক ভালোবাসবো আমি, বেবি তাড়াতাড়ি চলে আসো। আমার এক সাথে সব সময় থাকবো তোমার মাম্মাম কেউ তোমার ভাগ দেবো না। তুমি শুধু আমার কাছে থাকবে বুঝলে বেবি। পাপা লাভস ইউ সো মাচ বেবি।
অন্তু অর্ণবের পাগলামি দেখে বাকরুধ। বলার ভাষা পায় না একজন ছেলে বাবা হলে এভাবেই রিয়েক্ট করে হয় তো, কিন্তু অর্ণব তার থেকেও বেশি করছে। করবে না কেন তার অংশ আসবে তাকে পাপা পাপা বলে মাথা খাবে ভাবতেই অন্তুর মুচকি হসে। অর্ণবে শেষের কথা শুনে কপট রাগ দেখিয়ে বললো…
অন্তুঃ কি বলে তুমি আমার বেবিকে আমার থেকে দূরে রাখবে। ওকে আমি তোমাদের কাছে আর থাকবো না চলে যাবো।
অর্ণবঃ সরি জান আমি এমনটা বলি নি। বেবিতো আমাদের তাই না দুজনি আদর করবো ওকে।
অন্তু শুধু হাসলো। অর্ণব কিছু একটা মনে পরতেই সে বলো…
অর্ণবঃ অন্তু আমাদের কে এখনি এখান থেকে দূরে কোথাও চলে যেতে হবে। যেখানে আমাদের কেউ চিনবে না। আমরা আমাদের বেবি নিয়ে সুখে থাকবো। চলো আমাদের এখনি যেতে হবে।
অর্ণবকে ব্যস্ত হতে দেখে অন্তু তাকে শান্ত করে বলে…অর্ণব আমার এখান থেকে চলে যাবো কিন্তু তোমার এক্সাম শেষে।
অর্ণবঃ মানে
অন্তুঃ দেখো তোমার মাত্র একটা এক্সাম আছে এটা না দিলে তোমার পুরো বছর লস হবে। তাই তোমার এক্সামের শেষ দিনে আমি এক্সাম হলের বাইরে থাকবো সেখান থেকে আমারা চলে যাবো অনেক দূরে।
অর্ণবঃ কিন্তু
অন্তুঃ কোন কিন্তু না এখন আমাকে আর বেবিকে আদর করো।
অর্ণব হেসে অন্তুকে বুকে জড়িয়ে নেয়। তার ঠিক করে পরশু এক্সাম শেষে তারা এই শহর ছেরে চলে যাবে। অন্তুর প্রেগ্ন্যাসির কথা কাওকে বলবে না বলে ধার্য করে তারা….
____________________________________
এক্সামের দিন,,,
অন্তু তার দিদুন আর অরনিকে শুধু পালিয়ে যাবার কথা বলে তার প্রেগ্ন্যাসির কথা বলে না। অন্তুর কথা শুনে তার দিদুন অনেক কান্না করে কিন্তু তিনি চানা ওই আশিকের সাথে অন্তুর বিয়ে হক তাই সব মেনে নেয়। অরনি অন্তুকে বাড়ি থেকে বের করতে সাহায্য করে। আজ আয়ানের এক্সাম আছে তাই বাড়ি নেয় আর আজাদ মির্জা তার রুমে থাকে বেশির ভাগ সময়। দুপুর তিনটার পর অন্তু বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় এক্সাম হলের দিকে সিএনজি নিয়ে। অন্তুকে বেরতে দেখে কেও একজন কাওকে ফোন করে সেটা বলে আর ওখান থেকে চলে যায়।
দীর্ঘ ১ঘন্টা হলের সামনে দাড়িয়ে থাকে অন্তু অর্ণবের জন্য কিন্তু সে আসছে না। এক্সাম শেষ হতে ৩০মিনিট বাকি কিন্তু অর্ণব আগেই বের হয়। এসে দেখে অন্তু তার জন্য দাড়িয়ে আছে। অন্তু কপালে ঘাম মুছে সামনে তাকাতেয় অর্ণবকে দেখে মুচকি হসে। দৌড়ে তার কাছে গিয়ে জিড়িয়ে ধরে অর্ণব ও তাকে জড়িয়ে ধরে। কিছু সময় পর অর্ণব তাড়া দিয়ে বলে…
অর্ণবঃ আমাদের কে যেতে হবে দেড়ি হচ্ছে।
অন্তুঃ কোথায় যাবো আমরা?
অর্ণবঃ চট্টগ্রাম ওখানে ছোট একটা অঞ্চলে থাকবো আমরা। কেও খুজেও পাবে না আমাদের। চলো..
বলে তাকে ধরে একটা সিএনজি থামিয়ে উঠে বাসস্ট্যান্ডে যায় তারা। বাস চলছে আপন গতিতে। বাস ছেড়েছে কিছুখন আগে অন্তু জানলার দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে এই শহরে তার কতো স্মৃতি আছে কিন্তু কিছু পাবার জন্য কিছু ছাড়তে হয়। তার পালানোর কথা তার দাদাভাই কি ভাবে নেবে ভাবতেই বুক কেপে ওঠে, দিদুন অরনি বোধ্যয় কান্না করছে তার জন্য। অর্ণবের স্পর্শে তার সস্মতি ফেরে অর্ণব তাকে বুকের মাঝে নিয়ে মাথায় হাত বুলাতে লাগলো। অর্ণব জানে অন্তুর মন খারাপ তাই কিছু বললো না। হঠাৎ ব্রেক মারলে অন্তু ঝুকে যায় কিন্তু অর্ণব ধরে রাখায় ব্যথা পায় না। বাসের কেও বুঝলো না কি হচ্ছে, কিছু ছেলে বাসে উঠে কাওকে খুজতে লাগলো। ছেলে গুলোর ভিরে আয়ানকে দেখে অন্তু ভয় পেয়ে যায়, সে অর্ণবকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে অর্ণব অন্তুকে ভয় পেতে দেখে সামনে তাকাতেয় আয়ানকে দেখে। আয়ান অন্তুকে দেখে তার দিকে এসে অর্ণবকে অন্তুর কাছে থেকে ছাড়িয়ে নেয়। অন্তু কান্না করতে করতে বললো..
অন্তুঃ ভাইয়ু প্লিজ আমাদেরকে ছেড়ে দে। আমি অর্ণবকে ছাড়া থাকতে পারবো না প্লিজ ভাইয়ু।
অর্ণবঃ আয়ান আমাদের কথা প্লিজ একটা বার শোনো। আমার একে ওপরকে ভালোবাসি। এক সাথে থাকতে চায় প্লিজ আয়ান বোঝো কথাটা
আয়ান রেগে গিয়ে বলো…তোদের আজ মেরেই ফেলবো। তোদের সাহস কি করে হয় বাড়ি থেকে পালানোর। আর অন্তু তোকে বলি নিই আশিকের সাথে তোর বিয়ে তাইলে কেমন করে চলে আসলে এর সাথে?
অন্তুঃ আমি মরে যাবো কিন্তু ওই আশিকে বিয়ে করবো না। তুই আমাদের মারবি মার কিন্তু আমি বাড়ি যাবো না।
আয়ান তার দলবল নিয়ে অন্তু আর অর্ণবকে গাড়িতে তুলে একটা পাহাড়ের পাড় নিয়ে তাদের গাড়ি থেকে নিচে নামায়। অন্তু অর্ণবের কাছে যেতে চাইলে আয়ান তার হাত ধরে ফলে আর তার দলকে ইশারায় অর্ণবকে মারতে বলে। অর্ণবকে মারতে দেখে অন্তু আয়ানের হাত থেকে নিজেকে ছাড়াতে লাগলো আর বললো..
অন্তুঃ ছোট ভাইয়া প্লিজ অর্ণবকে কিছু করো না। তোমার দু’টো পায়ে ধরি। ওদের কে প্লিজ বলো অর্ণবকে যেনো না মারে। প্লিজ ছোট ভাইয়া..
এর পর যা কিছু হয় প্রথম পর্বে দেওয়া আছে। ওই দিনে একটা ভালোবাসার মৃত্যু হয় না-কি নতুন কোনো গল্পের শুরু হয়…. সেটা কেও জানে না….
_________________________________
সকালে হতে না হতেই সবাই কাজে ব্যস্ত হয়ে যায়। অন্তু ঘুম থেকে উঠে গিটারটা রেখে ফ্রেশ হতে যায়। অন্তু মনে মনে ঠিক করেছে আজ রোদের সাথে কাথা বলতে হবে, তাকে বলতে হবে আমার থেকে দূরে থাকার কথা। আমি অর্ণব ছাড়া কাওকে আমার জীবনে রাখতে চাই না। আনভির থেকেও দূরে থাকতে হবে, আর মায়া বাড়ানো যাবে না, না হলে পরে মায়া ছাড়াতে কষ্ট হবে। অন্তু ফ্রেশ হয়ে নিচে যায় ব্রেকফাস্ট করতে সবার সাথে। সবার সাথে সময় কাটাতে লাগলো আর বিকেলের হবার জন্য ওয়েট করতে লাগলো…
_______________________________
বিকেলে,,,
আনভি মামুনি তোমার পাপা কখন আসবে তুমি জানো।
আর্ট ক্লাসে বসে আছে আনভি আর অন্তু। তখন এই কথা বলে অন্তু। আনভি অন্তুর দিকে তাকিয়ে রং লাগা হাত নাচিয়ে বললো…
আনভিঃ না ভালো আন্টি।
বলে আনভি ছবি আঁকতে লাগলো। অন্তু বসে বসে আনভির ছবি আঁকতে দেখছে আর ভাবছে রোদ কখন আসবে আর তার সাথে কথা বলবে। ক্লাস শেষ হবার পর অন্তু আনভিকে হাত ধুয়িয়ে দিয়ে বাইরে নিয়ে এসে দেখে রোদের গাড়ি দাড়িয়ে আছে। অন্তু আনভিকে নিয়ে সে দিকে গেলে দেখে গাড়িতে ড্রাইভার বসে আছে রোদ না। অন্তু ড্রাইভারকে বলে…
অন্তুঃ ভাইয়া রোদ আসেনি?
ড্রাইভারঃ মেম স্যার আজ আসতে পারেনি কাজের জন্য কিন্তু আপনাকে আপনার বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে আসতে বলছে।
অন্তু কিছুটা ক্ষিপ্ত হলো রোদের ওপর প্রতিদিন আসে কিন্ত আজ আসলো না সে। কিন্তু না আজ তার সাথে কথা বলেই ছাড়বে সে তাই ড্রাইভারকে রোদের অফিসে যেতে বলে তারা গাড়িতে ওঠে। ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে অফিসের দিকে যায় আর এদিকে আনভি খুশি হলো তার ভালো আন্টি আজ তাদের অফিসে যাবে ভেবে। কিছুখনের মধ্যে তার অফিসে আসে অন্তু আনভিকে কোলে নিয়ে অফিসের ভেতরে যায়। অফিসের স্টাফ অন্তুকে দেখে অবাক হয়ে তাই তার দিকে চেয়ে থাকে এতে অন্তু কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পরে। অন্তু যে আদির বোন সেটা সবাই যানে তাই কেউ কিছু বললো না। আনভি অন্তুর কোল থেকে নেমে দৌড়ে রোদের কেবিনে চলে যায় এদিকে অন্তু ভেবে পাছে না রোদের কেবিন কোথায়, সে দাড়িয়ে পরে একজন স্টাফ কে বলে সে রোদে কেবিন দেখিয়ে দেয় সে সেদিকে যায়। এদিকে আনভি কেবিনে গিয়ে রোদকে জোরে ডাক দেয় রোদ ডাক শুনে তার দিকে তাকিয়ে বিস্ময় নিয়ে বললো..
রোদঃ আম্মু তুমি এখানে কেন? বাড়ি যাও নি?
আনভি রোদের কোলে গিয়ে বসে বললো… না আমার সাথে ভালো আন্টি ও এসেছে। মিষ্টি খালামুনি কেমন আছে।
এতখন রোদ আর আদিবা কাজের কথা বলছিলো আনভিকে দেখে আদিবা খুশি হয়। সে হাসি মুখে বললো…
আদিবাঃ ভালো আনভি সোনা তুমি
আনভিঃ ভালো
রোদঃ তোমার ভালো আন্টি ও এসেছে তোমার সাথে
আনভি মাথা নাড়ায় রোদ বুঝতে পারলো অন্তু কেন এসেছে এখানে। কালকের বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চায় সে। তাদের কথার মাঝে অন্তু কেবিনে নক না করে এসে জোর গলায় বলে…
অন্তুঃ রোদ আপনার সাথে আমার কিছু কথা ছিলো ইট’স আর্জেন্ট।
অন্তুর কথা শুনে সবাই তার দিকে তাকায়। রোদ অন্তুর দিকে তাকালে অন্তুর চোখাচোখি হয়ে যায় অন্তু চোখ নামিয়ে নিতে গেলে আদিবাকে দেখে হতবিহ্বল হয়ে যায়। সে বিশ্বাস করতে পারছে না আদিবাকে এখানে দেখা হবে তার সাথে। অন্তু এখন বুঝতে পারে সেদিনে আদি এতো রেগে বাড়ির গিয়েছিলো কেন নিশ্চয় আদিবার সাথে দেখা হয়েছে। অন্তু মূহুর্তে মধ্যে রাগ মাথা চারা দিলো। এদিকে অন্তুকে দেখে আদিবাও অবাক হয়ে এত বছর পর তার বেস্টু কে দেখে আবেগি হয়ে যায় ছলছল চোখে তাকায় সেদিকে। কিন্তু অন্তুকে রাগতে দেখে সে বুঝতে পারে তার ওপর অন্তু রাগ হচ্ছে কোন কিছু না বলে গায়েব হওয়ার জন্য এমন করছে। আদিবা কাপা কাপা গলায় কিছু বলতে যাবে তার আগে অন্তু ঝড়ের বেগে এসে আদিবাকে ঠাস করে চর মারে। আকস্মিক চরে আদিবা হতবুদ্ধি হয়ে পরে সে বিশ্বাসি করতে পারে না অন্তু তাকে চর মারবে। এদিকে এমন ঘটনা দেখে রোদ হতভম্ব হয়ে যায়। এটা কি হলো বুঝতে একটু সময় লাগলো। এদিকে অন্তু রাগে গজগজ করতে লাগলো মনে হচ্ছে আর একটা দিলে ভালো হতো কিন্তু সে আদিবাকে আর আঘাত করতে চায় না। অন্তু রাগে গজগজ করতে করতে বললো…
অন্তুঃ এই মেয়ে তোর সাহস কি করে হয় আমার দাদাভাইকে কষ্ট দেওয়া। তোর জন্য শুধু তোর জন্য আজ আমার দাদাভাই কষ্টে আছে। তোকে তো আমার মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে।
আদিবা নিঃশব্দে কাঁদছে এদিকে রোদ কিছু বুঝছে না। সে শুধু বুঝলো অন্তু আর আদিবা পূর্বপরিচিত আর আদিকে নিয়ে কিছু একটা হয়েছে। কিন্তু আদি তো আদিবাকে দেখে নরমালি ছিলো এমন কি হয়েছে তাদের। আনভি অন্তুকে এমন দেখে ভয়ে রোদের বুকের সাথে লেপ্টে থাকে রোদ তাকে জড়িয়ে নেয় নিজের সাথে। আদিবা কাঁদো কাঁদো গলায় বললো…
আদিবাঃ দোস্ত আমার কথাটা একবার শোন..
আর বলতে পারে না তার আগে আবার একটা চর পরে তার গালে। আদিবা গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে অন্তুকে দেখতে লাগলো আর অন্তু রাগে, দুঃখের চোখ থেকে একফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পরে…..
#তুমি আসবে বলে
#অপেক্ষার প্রহর
#Sondha Halder
#পর্ব-২৭
কেবিনে চারিপাশে নিরবতা। রোদ এখনও অন্তু রাগীত মুখে চেয়ে আছে। আদিবা গালে হাত নিয়ে অন্তুর দিকে চেয়ে আছে। অন্তু কান্না করতে করতে আদিবার বাহু ঝাকিয়ে বলতে লাগলো…
অন্তুঃ আদিবা তোকে তো আমার বেস্টফ্রেন্ড ভাবতাম কেন তুই এমন করলি বল। জানিস যে দাদাভাইকে আমি জ্ঞান হবার পর থেকে কাদতে দেখিনি সেই দাদাভাই আমাকে ফোন করে কান্না করছে। কেন কেদেছে জানিস তুই তাকে ঠকিয়েছিস বলে। কোন কিছু না বলে গায়েব হয়ে গেছিস। আমার দাদাভাই ৪টা বছর তোর কারনে জ্বলেছে শুধু তোর কারনে…
বলে হু হু করে কান্না করতে লাগলো। রোদ অন্তুকে কাদতে দেখে চোখ বন্ধ করে নেয়। তার রাগ হচ্ছে এখন নিজের ওপর অনেক রাগ হচ্ছে। আদিবা অন্তুর সব কথা মনের গহীনে গিয়ে ছুরির মত গাথছে। আদিবা জানে তার করা একটা ভুল ডিসিশন আজ সবার জীবন তছনছ করে দেয়েছে। কিন্তু তার কি করার ছিলো, তার কাছে দ্বিতীয় কোনো অপশন ছিলো না সে আদিকে ঠকাতে বা কষ্ট দিতে চায় নি। অন্তু চোখের জল মুছে গমগম কন্ঠে বললো…
অন্তুঃ কেন করলি এমন বল আমাকে। কি দোষ ছিলো আমার দাদাভাই বল? কি দোষ ছিলো? তোকে ভালোবাসে তার জীবন করেছে সেটাই কি ভুল ছিলো বল। আমার দাদাভাইকে কখনো স্মোক করতে দেখিনি শুধু তোর দেওয়া আঘাতের কারনে আমার দাদাভাই স্মোক করে। এর কি উত্তর দিবি বল?
আদিবার আজ সত্যি কোন কিছু বলার ভাষা নাই। আজ অন্তুর করা কোন প্রশ্নের উত্তর নেয় তার কাছে। আদিবা কাপা কাপা গলায় বললো…
আদিবাঃ অঅন্তু আআমার কাছে দ্বিতীয় কোন অঅপশন ছিলো না সত্যি..
অন্তু আদিবার কথা না বলতে দিয়ে তাচ্ছিল্য করে বললো…অপশন ছিলো না তোর কাছে সত্যি? আমার দাদাভাই তোর কাছে অপশন শুধু। এই তোর ভালোবাসা। একটা বার যদি তোর প্রবলেম দাদাভাইকে বলতি তাইলে আমার দাদাভাই সব কাজ ফেলে তোর কাছে চলে আসতো। কিন্তু তুই কি করলি চুপচাপ কাওকে না বলে চোরের মতো চলে গেলি।
অন্তু কান্না করতে করতে ফ্লোরে বসে পরে। রোদ অন্তুকে এই অবস্থা দেখে আনভিকে চেয়ারে বসিয়ে তাড়াতাড়ি করে অন্তুকে গিয়ে ধরে। অন্তু রোদকে ধরে তার বুকে মাথা ঠেকিয়ে কান্না করতে লাগলো। এদিকে অন্তুর প্রতিটা অশ্রু তার বুকের ভেতর তোলপাড় করছে নিজেকে সামলাতে পারছে না কিছুতেই। আদিবা অন্তুকে ধরতে গেলে অন্তু চিতকার করে বললো…
অন্তুঃ আমার চোখের সামনে থেকে সর প্লিজ। তোকে আমার সহ্য হচ্ছে না আদিবা যা। রোদ প্লিজ ওকে যেতে বলেন।
আদিবাঃ অর্.. রোদ ভাইয়া প্লিজ আপনি বোঝা না ওকে।
রোদ ইশারায় কিছু বলে আদিবা তার ব্যাগ নিয়ে সোজা অফিস থেকে বেরিয়ে যায়। অন্তু এখনো রোদের বুকে মাথা রেখে কান্না করতে লাগলো। আনভি গুটিগুটি পায়ে এসে অন্তুকে জড়িয়ে ধরলে অন্তু তাকে তার বুকে নিয়ে নেয়। রোদ তাদেরকে জড়িয়ে ধরে ভালো করে। কিছু সময় পর অন্তুর কান্না থামিয়ে বোঝে সে রোদের বাহু ডোরে আবদ্ধ। অন্তু কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পরলো। রোদ অন্তুর অস্থিরতা বুঝতে পেরে অন্তুকে ছেড়ে দেয় অন্তু ছাড়া পেতেই আনভিকে কোলে করে দাড়ায় সাথে রোদ ও। রোদ আনভিকে অন্তু কোল থেকে নিয়ে বললো..
রোদঃ অন্তু তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো আমি তোমাকে বাড়ি দিয়ে আসি।
অন্তু মাথা নেড়ে চুপচাপ কেবিনের ওয়াশরুমে চলে যায়। এদিকে রোদ অন্তুর যাওয়ার প্রাণে তাকিয়ে থেকে দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে। অন্তু চোখে মুখে পানি দিয়ে মুখ মুছতে লাগলো হঠাৎ বেসিংর ওপর চোখের লেন্সর বক্স দেখে ভ্রু কুচকে। সে বক্সটা হাতে নিয়ে দেখে এতে একজোরা লেন্স আছে কালো কালারে। অন্তু বুঝতে পারছে না এখানে লেন্স কেন আর কে লেন্স পরে অন্তুর মনে কেমন খচখচ করতে লাগলো কিন্তু কিসের জন্য যানে না তাই কিছু না বলে বাক্স রেখে বাইরে এসে রোদকে দেখে আনভি কে কোলে নিয়ে এদিকে ওদিক ঘুড়ে বেড়াচ্ছে হয়তো আনভিকে ঘুমানোর জন্য। রোদ অন্তুকে দেখে মুচকি হাসি উপহার দিলে অন্তু মলিন হাসে। রোদ অন্তুকে নিয়ে মির্জা বাড়ির দিকে বেড়িয়ে যায়….
___________________________________
আদিবা সারা রাস্তা কান্না করতে করতে এসেছে। বার বার নিজেকে দোষ দিচ্ছে তার কারনে এটা হয়েছে, তার একটা ভুল ডিসিশনের কারনে আদির জীবন নষ্ট হয়েছে সাথে সবার জীবন লন্ড ভন্ড হয়ে গেছে। আদিবা নিজের বাড়িতে গিয়ে যা দেখলো তাতে সে চমকালো ভীষণ ভাবে হতবিহবল হলো। সে দেখে আদি মজা করে মিষ্টি খাচ্ছে আর তার মার সাথে কথা বলছে অন্য দিকে নুপুর কেমন গুম হয়ে দাড়িয়ে আছে। আদিবা বুঝতে বাকি নেয় এখানে কি হয়েছে কাল আদি বলেছে তাকে উচিৎ শিক্ষা দেবে তার মানে আদি সব বলে দিয়েছে কি তার মা কে। আদিবা ভয় পাচ্ছে এখন যদি তার মা জেনে যায় সব তাইলে কি হবে ভাবতেই হাত-পা কাপছে। আদি আদিবাকে দেখে বাঁকা হেসে বললো…
আদিঃ এই তো আদু চলে এসেছে। আসো এখনে এসে বসো আদু।
সালেহা আদিবাকে দেখে হেসে বলো..আদু দেখ আদি এসেছে। ও না-কি আমাদের অনেক খুজেছে তোকে কতো বার বলাম আদিকে বল তুই বলি না দেখ আদি সব জেনে তোকে বিয়ে করবে বলে আমার সাথে কথা বলতে এসেছে।
আদিবা তার মার কথা শুনে অবাক হয় সাথে ভয় পায় আদি কি সব জেনে গেছে অতীতে কি হয়েছে। কিন্তু তার মা এটা বলো কেন আদি বিয়ের কথা বলতে এসেছে তার মানে আদি সত্যি বলে নিই তার মায়ের কাছে। সালেহা উঠে চলে যায় নুপুর তার রুমে চলে যায় আদিবা নুপুরে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। তার কাছে নুপুরকে স্বাভাবিক লাগছে না কেমন যেন করছে তার মা কি আদিকে কিছু বলছে কি না তাকে জানতে হবে বলে সামনে দিকে যাবে কিন্তু তার আগে আদি তাকে আটকা হাত ধরে। আদিবা আদিকে দেখে কিছু বলতে যাবে আদি ভ্রু কুচকে বললো…
আদিঃ তোমার গালে কি হয়েছে লাল হয়ে আছে কেন? মনে হচ্ছে কেও থাপ্পড় মেরেছে।
আদিবা মিনমিন করে বলতে লাগলো…কে আবার মারবে আমার একমাত্র রায়বাঘিনী ননদিনী। তার দাদাভাই কষ্ট পেয়েছে তাই সেই রাগ আমার ওপর দিয়ে দিয়েছে ইস গাল লাল হয়ে গেছে ব্যাথাও করছে।
আদিবার মিনমিন করা কথা আদি কিছু কিছু বুঝতে পেরে বাঁকা হেসে বললো… ওও তাইলে এই কথা।
আদিবা আদির কথায় চমকে যায়। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে আদির দিকে আদি তা দেখে মুচকি হেসে বলো…
আদিঃ আজ তাইকে ননদিনীর সাথে দেখা হয়েছে বুঝি। আর সেই বুঝি তোমাকে এই উপহার দিয়েছে। ইস কি জোরে না মেরেছে অন্তুপাখি আসো একটু আদর করে দেয়।
আদি আদিবার কাছে যেতে নিলে আদিবা সরে যায়। আর বলে… আামার কাছেও আসবেন না। আর কিসের আদর হে আমি কোনো আদর ফাদর নেবো না। দূরে জান।
আদিঃ কি বলছো বউ আদর নেবে না তো কি নেবে তুমি। তাইলে বলো কি নেবে আমি তাই দেবো…
বলে ঠোঁট চেপে হাসতে লাগলো। এদিকে আদির মুখে বউ শুনে বুকে কেমন করে উঠলো। আদিবা কথা ঘুড়াতে বললো…
আদিবাঃ আপনি আমার বাড়িতে কেন আর মা কে কি বলেছে আপনি।
আদিঃ আমি কিছু বলি নি এখনো কিন্তু তুমি বেশি এরি তেরি করলে সত্যি করে বলে দেবো যে ৫ বছর আগে আমি তোমাকে বিয়ে করেছি। তুমি আমার বিবাহিত স্ত্রী। তোমার ওপর আমার অধিকার সবচেয়ে বেশি বুঝতে পারলে। আর একটা কথা বেশি বার বারলে উঠিয়ে নিয়ে যেতে ১ মিনিট ও লাগবে না। আজ আসি শাশুড়ী মাকে বলো পরে আবার আসবো।
বলে বাকা হেসে আদি চলে যায়। এদিকে আদি কথা শুনে আদিবা স্তব্ধ হয়ে যায়। হ্যা এটা সত্যি আদি ৫ বছর আগে তাকে বিয়ে করেছে কিন্তু সে কাওকে বলতে মানা করেছে। সে বিদেশে থেকে এসে ধুমধামে করে বিয়ে করবে বলেছিলো। আদি এমন কঠিন কথা শুনে আদিবা বুঝে গেছে সে যদি ভুল কিছু করে তাইলে আদি সবাইকে বলে দেবে তাদের বিয়ের কথা আর তাকে তুলে নিতেও একবার ভাবে না। আদির কথা শুনে এটা বুঝতে পেরেছে যে আদি কাওকে কিছু বলে নি আর না অতীতের কোন কথা সে জানে। সে যদি যানতো তাইলে এতখন হুলুস্থুল অবস্থা করতো। আদিবা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে এটা ভেবেই আদি কিছু জানে না….
________________________________
ক্লান্ত শরীল নিয়ে বাড়ি ফিরলো আদি। আজ অনেক খাটুনি খাটতে হয়েছে তাকে, ফ্রেশ না হয়ে বেডে শুয়ে ভাবতে লাগলো আজকের সব ঘটনা। আজ আদিবার মার সাথে কথা বলে মনে হলো তিনি জানে না আদিবা হঠাৎ কাওকে না বলে চলে যাবার ডিসিশন কেন নিলো। কিন্তু তিনি যা যা বলো তাতে আদির মনে সন্দেহ সৃষ্টি করছে কেউ ইচ্ছে করে এটা করেছে। কিন্তু কে করবে? আর কেন করবে? কার লাভ এসব করে আদির মাথায় ঢুকছে না। আর তার থেকেও বড় কথা যে নুপুর আদিকে দেখে খুশিতে আত্মাহারা হতো আজ সেই নুপুরের চোখে তার জন্য রাগ দেখেছে। কেন নুপুরের চোখে তার জন্য এতো রাগ কি এমন কি হয়েছে নুপুরের আর আদিবা কেন বলছে না সত্যি। কেন ভয় পাচ্ছে সে, কি এমন সত্যি আছে যা সে জানলে ক্ষতি হবে। সে আর ভাবতে পারে না মাথাটা ব্যাথা করছে চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকে সে। হঠাৎ বুকের ওপর ভারি কিছু অনুভব করলে আদি চোখ খুলে দেখে অন্তু তার বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে। আদি মুচকি হাসি দিয়ে তার মাথা বুলাতে বুলাতে বললো…
আদিঃ মন খারাপ আমার অন্তুপাখির?
অন্তু মৃদু স্বরে বলে…হুম। আদি হাসলো সে জানে আজ অন্তু আদিবার সাথে যা করেছে তাতে তার মন খারাপ। আদি এটা ভেবেই খুশি যে তার অন্তুপাখি তাকে এতো ভালোবাসে যে নিজের বেস্টু কেউ থাপ্পড় মারতে পিছ পা হয় নি। তার যে কষ্ট দিয়েছে অন্তু তাকে কখনো ক্ষমা করবে না তার বোন তাকে সত্যি ভীষণ ভালোবাসে। আদি শান্ত কন্ঠে বললো…
আদিঃ অন্তুপাখি তোমার আদিবাকে থাপ্পড় মারা ঠিক হয় নি।
আদির কথা শুনে অন্তু তার বুকের থেকে মাথা তুলে চোখ ছোট ছোট করে তাকা। সে বুঝতে চাচ্ছে আদি কি করে তার আর আদিবা কথা জানলো তার থেকে বড় কথা আমি যে আদিবাকে থাপ্পড় মেরেছি সেটা তার দাদাভাই কেমন করে জানলো। অন্তু বললো… তুমি কেমন করে জানলে আমি আদিবাকে মেরেছি। তুমি কি আদিবার সাথে যোগাযোগ করো।
আদি অন্তুর কথা শুনে হাসলো। অন্তু সরু চোখে আদির দিকে তাকিয়ে আছে উত্তরের আশায়। আদি বললো… আমি আজ আদিবার বাড়ি গিয়েছিলাম আন্টির সাথে কথা বলতে। জানতে গিয়েছিলম কি এমন হয়ে ছিলো যে তারা এমন ভাবে গায়েব হয়ে গিয়েছিলো। তখনি আদিবার সাথে কথা বলতে গিয়ে দেখি তার গাল লাল। যখন জিজ্ঞেস করলাম তখন জানতে পারি আজ তোমার সাথে তার দেখা হয়েছে আর তার গালের যে অবস্থা তা তুমি করেছো তাই।
বলে হাসতে লাগলো আদি। অন্তু মুখ ফুলিয়ে বলো.. কি করবো আদিবাকে দেখে রাগ উঠেছিলো তাই পর পর ২টা দিয়ে দিয়েছি। এতে আমার দোষ নেই সত্যি দাদাভাই ও কেন এমন করলো তোমার সাথে ও।
আদিঃ আমি বুঝেছি তোর কষ্ট লাগছে তাই এমন করেছিস। কিন্তু আদিবাকে এমন করে মারাটা ঠিক হয় নি আর এমন করবে না বুঝলে।
অন্তু মাথা নাড়িয়ে হ্যা বলে অথাৎ সে আর এমন করবে না। অন্তু কিছু একটা ভেবে বললো… দাদাভাই আন্টি কি বলো। কেন এমন করলো সে তুমি কিছু জানতে পেরেছো কিছু।
আদি উঠে বসে বললো…হ্যাঁ কিছু কিছু বুঝতে পেরেছি। আন্টি বললো ৪ বছর আগে হঠাৎ করে আঙ্কলের পেনশন বন্ধ হয়ে যায় আন্টি অনেক চেষ্টা করেও কিছু করতে পারে না আর আদিবা তখন থেকেই না-কি কেমন গুমটি মেরে থাকে কি নিয়ে যেন টেনশনে থাকতো। আন্টি জিজ্ঞেস করলে বলতো পেনশনের টাকা নিয়ে টেনশনে আছে। তারপর থেকে এক এক করে বাড়ি পানি, গ্যাস, বিদুৎ সব বন্ধ হতে লাগলো তার ওপর বাড়ির মালিক তাদের বাড়ি ছাড়ার প্রেসার দিতে লাগলো। আদিবা এই ঘটনা গুলো নিয়ে বলে অনেক টেনশন করতো কিন্তু কিছু বুঝতো না আন্টি কেন হচ্ছে আর কে করছে।
অন্তুঃ দাদাভাই এসব শুনে তো মনে হচ্ছে কেউ ইচ্ছে করে করছে কিন্তু কেন করবে এসব। কার লাভ এসব করা
আদিঃ হ্যাঁ সেটাই তো আমি বুঝছি না। তার থেকেও বড় একটা জিনিস খটকা লাগছে আমরা নুপুরকে নিয়ে। যে নুপুর আমাকে দেখলে আমাকে ভাইয়া ভাইয়া বলে মাথা খেতো সেই নুপুর আজ আমাকে দেখে মুখ ঘুড়িয়ে নিয়েছে তার চোখে আমার জন্য রাগ দেখেছি আমি। কেন এমন করলো বুঝতে পারি নিই। আর আন্টি বললো এসব ঘটনা না-কি ১ মাস ধরে চলছে কিন্তু হঠাৎ করে একদিন নুপুরকে স্কুল থেকে পাওয়া যায় না। আন্টি আদিবা কে বলে আদিবা না-কি কাওকে কিছু না বলে কোথাও চলে যায় আর নুপুর কে নিয়ে সন্ধ্যা বাড়ি আসলে নুপুর না-কি এক বারে চুপ হয়ে যায় ওই ঘটনার পরে আন্টি অনেক বার আদিবাকে জিজ্ঞেস করলে সে কিছু বলে না নুপুরকে নিয়ে আদিবা রুম বন্ধ করে কি যেনো করে। তারপরে দিন থেকে সব আগের মতো হয়ে গিয়েছিলো পেনশনের টাকা আর বাকি সমস্যা গুলো ঠিক হলোও কিন্তু আদিবা তাদেরকে নিয়ে রাজশাহী চলে যায়। আর নুপুর অসুস্থ হয়ে যায় বলে তারপর তাকে চিকিৎসা করানো হয়৷ এটুকু বলে আন্টি।
অন্তুঃ এতো কিছু হয়ে গেলো আদিবা কিছু বলো না আমাদেরকে।
আদিঃ না বলে নি কিন্তু ৪ বছর আগে লাস্ট যেদিন ওর সাথে কথা হয়ে সেদিন ও অনেক কান্না করে বললে…
আদিবাঃ সরি আদি আমি কিছু ধরে রাখতে পারি নাই। সরি আজ আমি যা করবো এতে আপনি অনেক কষ্ট পাবেন কিন্তু আমার হাতে কিছু নেই। আপনি আমাকে ক্ষমা করবেন আর পারলে নতুন জীবন শুরু করবেন।
আদি আদিবার কথা শুনে অস্থির হয়ে বলে… কি যা তা বলছো তুমি। কি হয়েছে তোমার আমাকে বলো আমি এখনি চলে আসছি দেশে। তুমি বলো কি হয়েছে আদু বলো..
আদিবাঃ সরি আমার কিছু হয় নি আমি তো আপনাকে চেক করছি আপনি এখনো আমাকে ভালোবাসেন কি না তাই। সরি হি হি
আদিঃ তোমাকে জানে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে। জানো আমার কি হচ্ছিল তোমার কথা শুনে আর কখনো এমন করবে না বুঝলে। আই লাভ ইউ
আদিবাঃ আই লাভ ইউ আদি
আদিঃ অন্তু আমি বুঝতে পরছি না আদিবার সেদিনের কথা গুলো সত্যি ছিলো। সেদিনের পর থেকে আর ওর সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি। এখন বুঝছি আদিবার সাথে কিছু নিশ্চিত হয়েছিলো।
অন্তুঃ আমারও তাই মনে হচ্ছে। তুমি আদিবার পিছে লেগে থাকো যতখন না সত্যি বলছি ততখন লেগে থাকবে।
আদি শুধু হলো সে মনে মনে ঠিক করে রেখেছে আদিবার মুখ থেকে সব সত্যি বের করে ছাড়বে। যেই এর পিছনে থাকুক না কেন তাকে কঠিন শাস্তি পেতে হবে। ভেবতেই আদির চোখ লাল হতে লাগলো রাগে….
#তুমি আসবে বলে
#অপেক্ষার প্রহর
#Sondha Halder
#পর্ব-২৮
সেদিনের ঘটনার পর অন্তুর সাথে আদিবার দেখা হয় না আর। কিন্তু আদি আদিবাকে অনেক জ্বালিয়েছে তার বিয়ে নিয়ে অনেক কথা বলে এমনকি অতীতে কি হয়েছিলো তা জানতে চাইলে আদিবা সেটা নিয়ে কথা বলে না প্রতিবার আদি নিরাশ হয়ে যায় আদিবার ব্যবহারে। এদিকে অন্তু ও রোদের সাথে সেদিনের ফুচকা খাওয়ার ওখানে ঝামেলা নিয়ে কথা বলে রোদকে প্রশ্ন করে তাকে কেন স্ত্রী বলে তখন রোদ ঘাবড়ে যায় কিন্তু শান্ত স্বরে বলে…
রোদঃ তখন আমার মাথাটা গরম ছিলো তোমাকে নিয়ে ওরা বাজে মন্তব্য করাতে। তাই রাগের মাথায় সেটা বলি আমি কিছু মিন করে বলি নি বা তোমাকে হাট করতে চাই নি যদি আমার কথায় তুমি কষ্ট পাও তাইলে আ’ম সরি।
অন্তু তখন আর এই বিষয় নিয়ে আর কথা বলে না আর রোদ ও হাফ ছেড়ে বাঁচে। কিন্তু অন্তুর মনে এখনো লেন্স নিয়ে খটকা আছে তার। কেন রোদ লেন্স পরে তার চোখের রং তো কাল তার ওপর কেন লেন্স পরে কি লুকাতে চায় সে। কিন্তু সে রোদকে কিছু বলে না এসব নিয়ে। অন্তুর সাথে আনভি এখন আরো বেশি করে সময় কাটায়।
_______________________________
প্রাপ্য তোমার মতলব কি বলবে আমাকে কথাটা একটু রেগে বলো অরনি ফোনে। অরনির কথা শুনে প্রাপ্যর হাতের থাকা ফাইল পেরে যায়। প্রাপ্য হাবুলের মতো বললো…
প্রাপ্যঃ কেন আমি আবার কি করলাম অরুসোনা?
প্রাপ্যর হাবুল মার্কা কথা শুনে অরনি রাগ আবার বেরে গেলো। এই ছেলে বুঝে কথা বলে না-কি না বুঝে কথা বলে ভাবতেই অরনি রেগে বলে..
অরনিঃ কি করনি তুমি বলো। আজ কতো দিন হলো তুমি আমার সাথে কথা বলো না ঠিক মতো না দেখা করছো। কি পেয়েছো কি আমাকে তুমি বজ্জাত ছেলে কোথা কার।
প্রাপ্য বুঝতে পারে কেন অরনি রাগ করছে। সেই বা কি করবে অফিসের কাজে এতো ব্যস্ত ছিলো যে খাওয়ার সময় পায় না সেখনে কি করে অরনিকে সময় দেবে। প্রাপ্য নরম কন্ঠে বললো….
প্রাপ্যঃ অরুসোনা দেখো অফিসে অনেক ব্যস্ত তাই এমন হচ্ছে। আচ্ছা কাল তোমার সাথে দেখা করছি।
অরনিঃ সত্যি তো না-কি ঢোপ মারছো?
প্রাপ্যঃ সত্যি বাবা কাল দেখা করবো। এখন রাখি কাজ করছি তো বঝো প্লিজ। আই লাভ ইউ অরুসোনা
অরনিঃ ওকে রাখো। আই লাভ ইউ টু
বলে ফোন রেখে দেয় অরনি এদিকে প্রাপ্য হাফ ছেড়ে বাঁচে। কাল যে করেই হোক তাকে অরনির সাথে দেখা করতে হবে তা না হলে কাল কি হবে আল্লাহ মাসুদ যানে বলে কাজ করতে লাগে…
_______________________________
অন্তু একটা কথা বলি যদি কিছু না মনে করো??
কিছুটা ইতস্তত নিয়ে কথাটা বলো রোদ। রোদে কথা শুনে অন্তু রোদের দিকে একবার তাকিয়ে আবার আনভিকে নিয়ে ব্যস্ত হয় খেলায় আর বললে….
অন্তুঃ বলুন কি বলবেন এতো ইতস্ততা করতে হবে না।
অন্তুর কথা শুনে রোদ সাহস পেলো একটু। সে ড্রাইভ করতে করতে বলো…আসলে তোমার সাথে কি আদিবা আগে থেকে চেনা জাননা আছে। তোমার বলতে ইচ্ছা হলে বলো আমি জাস্ট জিজ্ঞেস করলাম।
অন্তু আবার রোদকে দেখে সামনে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বললো….. হ্যা আমার সাথে আদিবার চেনা জানা আছে। ও আমার বেস্টফ্রেন্ড ছিলো সাথে আমার দাদাভাই তাকে নিজের জীবনের থেকেও বেশি ভালোবেসে ছিলো। কিন্তু আদিবা সবাইকে কিছু না বলে কোথাও হারিয়ে যায় একদিন তাই সেদিন ওকে দেখে রাগ হয় তাই নিজের মধ্যে ছিলাম না।
বলে চুপ হয়ে গেলো অন্তু। রোদ অন্তুকে পর্যবেক্ষণ করে চুপচাপ ড্রাইভ করতে লাগলো সে এখন বুঝতে পেরেছে অন্তুর মন খারাপ হয়ে গেছে তাই আর কথা বলো না। আনভি অন্তুর সারা মুখে হাত বুলিয়ে বলো….
আনভিঃ ভালো আন্টি তোমার ঠোঁটে নিচে যেখানে তিল আছে দেখো আমার ও ঠোঁটের নিচেও তিল আছে। কি মজা তাই না দেখো।
অন্তু আনভির কথা শুনে তার মুখে দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যি তার যেখানে তিল আনভির ও সেখানে তিল আছে। রোদ আনভির কথা শুনে মুচকি মুচকি হাসছে। আনভি আবার বললো….
আনভিঃ জানো ভালো আন্টি পাপা আমাকে বলেছে আমার মাম্মার ও আমার মতো ঠোঁটের নিচে তিল আছে যেমন তোমার আছে।
আনভির কথা শুনে অন্তু হতবাক হয়ে যায়। এদিকে আনভির কথা শুনে রোদ বিষম খায় রোদ কাশতে লাগে অন্তু রোদের কাশতে দেখে পানি এগিয়ে দেয়। রোদ পানি খেয়ে নিজেকে ঠিক করে মনে মনে বলে…
রোদঃ এই মেয়েকে কি বললো বুঝিনা। কোথায় কোন কথা বলতে হয় এখনো বোঝে না। ওকে কি বলবো ও তো ছোট না বুঝে বলছে না জানি অন্তু এখন কি প্রশ্ন করবে আর আমি কি উত্তর দেবো..
অন্তু তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে রোদের দিকে প্রশ্ন ছুরে দেয়… রোদ আনভির মাকে তো দেখলাম না এখনো পর্যন্ত। সে কি থাকে না আপনার সাথে।
রোদ অন্তুর কথা শুনে দেখে অন্তু তার দিকে তাকিয়ে আছে। রোদ একবার আনভির দিকে তাকায় দেখে আনভি অন্তুর চুল নিয়ে খেলছে একবার মুচ বানাছে আবার চুল টানছে কিন্তু অন্তু একটা বার ও বিরক্তবোধ করছে না। রোদ সামনে তাকিয়ে বলো…
রোদঃ আনভির মা আছে কিন্তু আমাদের সাথে থাকে না। আর সঠিক সময় হলে সে আমাদের সাথে থাকবে আশা করি। এর বেশি আমি কিছু বলতে চায় না
অন্তু আর কথা বাড়ায় না যেখানে রোদ নিজে এই বিষয়ে কথা বলতে ইচ্ছুক না সেখানে সে আর কথা বাড়াতে চায় না। কিন্তু তার মনে অনেক প্রশ্ন জমতে থাকে… কেন রোদের স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তার সাথে থাকে না?? কেন তার স্ত্রীর ছবি তার রুমে দেখলাম না? আনভি তার আম্মু কথা বেশি জানে না? আর রোদ সবার কাছ থেকে কিছু তো লুকাছে কেন করছে এমন সে জানতে চায় না। রোদ অন্তুর দিকে তাকায় অন্তুর ভাবনা কৃত মুখ দেখে মুচকি হাসে সে জানে অন্তুর মনে অনেক প্রশ্ন আছে। রোদ মনে মনে বললো… তোমার মনে অনেক প্রশ্ন আছে জানি কিন্তু এখন কিছু বলবো না তোমার সব প্রশ্নের উত্তর এক দিন পাবে সেদিন তোমার জীবনের সবচেয়ে বড় খুশি দিন হবে। বলে আবার মন দিলো ড্রাইভ করতে লাগলো অন্তু ও চুপচাপ থাকলো আনভিকে নিয়ে..
________________________________
অন্তু বাড়িতে ঢুকতেই দেখে আয়ান রেগে বাইরে যাচ্ছে তার পিছু পিছু আয়রা আসছে আর কি যেন বলছে কিন্তু আয়ান আয়রাকে উপেক্ষা করে বাড়ি থেকে বাইয়ে চলে যায়। অন্তু আয়ানের কাজে হতভম্ব কেন না আয়ান আয়রাকে কখনো এমন করে না তাও আবার এই অবস্থাতে করবে সে কখনো ভাবতেও পারে না। অন্তু দেখে আয়রা কান্না করছে অন্তু গিয়ে আয়রাকে সোফাতে বসিয়ে বললে….
অন্তুঃ ভাবি তুমি কান্না করছো কেন আর ভাইয়া এই ভাবে রেগে চলে গেলো কেন। তেমাদের মধ্যে কি কিছু হয়েছে।
অন্তুর কথা শুনে আয়রা নড়েচড়ে বসে নিচু কন্ঠে বলে…এমন কিছু না অন্তু আসলে আমি ভুল করেছি তাই তোমার ভাইয়া রাগ করেছে। একটু পর দেখবে সব ছেড়ে আবার আগের মতো হয়ে যাবে। তুমি রুমে যাও ফ্রেশ হয়ে নাও
অন্তু আয়রা উত্তরে খুশি না তার মনে হচ্ছে আয়রা কিছু লুকাছে কিন্তু কি। সে আর কথা না বাড়িয়ে আয়রাকে রেখে রুমে চলে যায়। অন্তু চলে যেতেই আয়রা হু হু করে কান্না করতে লাগলো সে জানে আয়ানের রাগ না কমলে সে আসবে না। আয়রা বুঝতে পারে না তার সাথে কিছু হলে আয়ান কি করে বুঝে যায় কে বলে তাকে এসব কথা। আজ ও নিহিতা মির্জা আয়রাকে যা না তাই কথা বলেছে সেটা আয়রা আয়ানকে বলে না কিন্তু আয়ান বাইরে থেকে এসে আয়রাকে নিহিতা মির্জা সব বলা কথা আবার বলে রাগ করলে আয়রা কিছু বলতে পারে না। আয়রাকে চুপ থাকতে দেখে আয়ানের রাগ বেড়ে যায় আর রাগ করে চলে যায় বাড়ি থেকে আর আয়রা তার পিছু পিছু আসে তখন অন্তু দেখে ফেলে। আয়রা উঠে ধিরে ধিরে নিজের রুমে চলে যায়…
__________________________________
আদিঃ আদুমনি তাইলে কি ডিসিশন নিলে বেবি নেবে না-কি আবার বিয়ে করবে।
আদির কথা শুনে আদিবার গলায় পানি ঠেকে যায়। আদি তাড়াতাড়ি করে আদিবার মাথা থাপড়াতে থাকে। আদিবা বড় বড় চোখ করে আদির দিকে তাকিয়ে আছে আর আদি মিচকে শয়তানের মতো হাসতে লাগলো। আদির হাসি দেখে আদিবা গা জ্বলে যায়। সে ভেবে পায় না আদি এতো ঠোঁট কাটা কবে থেকে হয়েছে আগে তো এমন করে কথা বলে না নির্ঘাত বিদেশ গিয়ে এমন হয়েছে। একটু আগে অফিস থেকে বের হতেই আদি আদিবাকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে এসেছে কিছু বলবে বলে প্রথমে আদিবা যেতে চায় না কিন্তু আদি সবাইকে বিয়ের বিষয় বলে দেবে বলে ব্ল্যাকমেল করে এখানে নিয়ে এসেছে। কিন্তু আদির এই লাগাম ছাড়া কথা শুনে আদিবা কান গরম হতে লাগলো আদিবা কপট রাগ দেখিয়ে বললো…
আদিবাঃ হায় আল্লাহ আমায় উঠিয়ে নাও না হলে মেরে ফেলো। এই আপনার কি লজ্জা বলতে কিছু নেয় সব কি বিদেশে গিয়ে পানি দিয়ে গিলে খাইচ্ছেন। এটা কোন ধরনের কথা আগে তো এমন ঠোঁট কাটা ছিলেন না আপনি।
আদিঃ আগে ছিলাম না এখন হয়েছি আর হবো না কেন আমি কি অন্য কাউকে বলছি আমি আমার বিয়ে করা বউ কে বলছি। তাইলে বলো বেবি কবে নেবে বয়স তো কম হলো না বাবা শোনার জন্য কানটা টনটন করছে।
আদিবা আদির কথা শুনে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। সে আদিকে কি বলে বুঝাবে সে যানে নে। আদি আদিবাকে দেখে ভীষণ হাসি পাছে কিন্তু সে হাসি দাবিয়ে দেখে আদিবার হাত ধরে নিজের হাতে বন্দী করে। আদিবা নিজের হাতে আদির হাত পেতেই আদির দিকে তাকালে আদি বললো…
আদিঃ আদু প্লিজ সব ভুলে নতুন করে সব শুরু কি না চলো। আমি তোমাকে আর কখনো প্রশ্ন করবো না অতীত নিয়ে কিন্তু তোমাকে সব ভুলে আমার সাথে নতুন করে পথ চলতে হবে। তুমি আমাকে নিজের প্রায়োরিটি করতে হবে আমাকে আর কষ্ট দেবে না বলতে হব। আমার জীবনে একটা বার তুমি আসলে আমি তোমাকে কখনো কষ্ট পেতে দেবো না আই প্রমিস।
আদির কথা শুনে আদিবা চোখ ছলছল করে উঠো। সে বুঝতে পারে না এই ছেলেকে সে ৪ টা বছর কষ্ট দিয়েছে তারপর ও কেন বার বার তার কাছে ফিরে আসে কেন? সে তো আদির যোগ্য না কেন সে বোঝে না। আদি আদিবার চোখ মুছে আদিবার হাতে চুমু দিয়ে বললো..
আদিঃ আদুমনি আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি প্লিজ একটা বার আমার কথাটা ভাবো। আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না প্লিজ। ৪ টা বছর তোমাকে পাগলের মতো খুজেছি লোক দিয়ে আমি দেশে এসেও খুজেছি কিন্তু পায় নি। যখন পেলে তখন এমন একটা সিচুয়েশনে ছিলো যে তুমি বুঝতে চাইছো না আমি কিন্তু এখন আর না প্লিজ আদুমনি একটা বার ভেবে চিন্তে বলো তুমি কি করবে।
আদিবাঃ আদি আমি বাড়ি যাবো।
বলে চুপ হয়ে যায়। আদিবার কথা শুনে আদি হতাশ হয় দীর্ঘ শ্বাস ফেলে আদিবার হাত ছাড়িয়ে বিল মিটিয়ে আদিবাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে থেকে বেড়িয়ে যায়। আদিবাকে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি স্টার্ট দেয়। আদিবা বাইরে দিকে তাকিয়ে রাতের শহর দেখতে লাগলো আর ভাবতে লাগলো কি করবে সে আদিকে সত্যি বলে দেবে না-কি আদিকে মেনে নেবে। এসব ভাবতে ভাবতে তার বাড়ি চলে আসে আদিবা গাড়ি থেকে নামতে নিলে আদি তার হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে। আকাম্মিক এমন হওয়ায় আদিবা হচকে যায় আদিবা আদির দিকে তাকালে আদি কোন কিছু না বলে আদিবার অধরে নিজের অধরদ্বয় ছোঁয়া। আদিবা আদির ঠোঁটের স্পর্শ পেতেই চোখ বন্ধ করে নেয় আদি একবার আদিবাকে দেখে আদিবার কোমর জড়িয়ে আরেকটু কাছে নিয়ে আসে। আদি আদিবার অধর নিজের ভালোবাসার স্পর্শ উজার করতে লাগলো। আজ কতো বছর পর আদির স্পর্শ পেতেই নেতিয়ে পরে আদিবা আদিকে নিজের থেকে সরাতে পারে না, না সে চায় সরাতে এই স্পর্শ শুলি অনেক দিন পরলো। কিছু সময় পর আদি আদিবাকে ছেড়ে দিলে আদিবা আদিকে জড়িয়ে ধরে আদিবার কাজে আদি স্তব্ধ কিছু না বলে আদিবাকে জড়িয়ে ধরে থাকে। আদিবা নিজেকে শান্ত করে আদিকে কিছু না বলে তাকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে গাড়ি থেকে নেমে চলে যায় আদি আদিবার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। আদি কিছু একটা ভেবে মুচকি হেসে বললো…
আদিঃ জানি তোমার মন নরম হচ্ছে আশা করি কিছু দিনের মধ্যে তুমি নিজেই আমার কাছে ধরা দেবে। আমি ওয়েট করবো সেই দিনটার জন্য।
বলে গাড়ি নিয়ে চলে যায় নিজের বাড়ির দিকে। কিছু নিরবতার মাঝে অনেক ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে। মনের গহীন দিয়ে সব ভালোবাসার পর্যবেক্ষণ করে থাকে। ভালোবাসার কষ্ট কেউ বোঝে আবার কেউ অবুঝের মতো থাকে…….
চলবে…