#তুমি_নামক_অক্সিজেন
#পর্ব_২
Tahrim Muntahana
Wow The great business man Ridan Chowdhury. আমার স্বপ্নের পুরুষ -সিমি
ইশশ কি দেখতে ছেলেটা। এটিটিউট দেখে আমি ফিদা হয়ে গেছি। কি বডি দেখছিস? জগিং এর সময় মার্সেল গুলো ফুলে উঠে কি হট লাগে -এরিন
শুধু তোর না সব মেয়েরই স্বপ্নের পুরুষ। ইশশ এর যে বউ হবে তার ভাগ্য যে কত ভালো -সিমি
আমি যদি হতে পারতাম -এরিন
উমম কতশত মেয়ে শুধু উনার বেড পার্টনার হওয়ার জন্য বসে থাকে আর উনি পাত্তা দেই না আর এরিন তুই হবি তার বউ। লুচ্চি ছেমড়িচুপ যা -সিমি
হায় মে মারজাবা। আজকে থেকে আমার ঘুম কেড়ে নিয়েছে এই ছেলে -এরিন
ওই চুপ করত আয় একটা সেলফি তুলি। রিকুয়েস্ট করলে যদি রাখে আমি তো ধন্য হয়ে যাবো -আইরিন
এই একদম না উনার ধারে কাছেও যাস না। ওইযে গার্ড দেখছিস একদম গুলি করে দিবে -ইমা
হ্যাঁ উনি প্রত্যেকদিন সকালে এখানে জগিং করতে আসে তাই তো আমি বসে থাকি দেখার জন্য -এরিন
হায় সুইটিরা
কে আপনি -আইরিন
আপনারা যার কথা এতক্ষন ধরে আলোচনা করছেন তার বেস্ট ফ্রেন্ডস। একটা ইনফরমেশন দিতে আসলাম তাতে আপনাদের আলোচনা করতে সুবিধা হবে
কি বলুন বলুন -এরিন
আস্তে আস্তে যা বলল তা শুনে এরিন তো ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিয়েছে। তার স্বপ্নের পুরুষ তার হবে না। আর বসে না থেকে চলে গেল মেয়েগুলো। এখানে প্রত্যেকদিন এসে বসে থাকে হৃদান চৌধুরী কে একনজর দেখার জন্য। বিজনেস টাইকুন হৃদান চৌধুরী দেখতে মাশাআল্লাহ। যেমন হাইট তেমনি ধবধবে ফর্সা। ছোট থেকে লন্ডন থাকে তাই বিদেশিদের মতো দেখতে লাগে প্রায়। যে ছেলেটা মেয়েগুলোর সাথে কথা বলল সে হলো হৃদানের বেস্ট ফ্রেন্ডস পিয়াস। হৃদানের সাথে সবসময় থাকে। হৃদান অনেকক্ষন জগিং করে বাসায় গেল। ব্রেকফাস্ট করতে করতে পিয়াসের সাথে কথা বলছে
পিয়াস টিকিট বুক করেছিস তো
হুমম কমপ্লিট এখন শুধু প্যাকিং টা বাকি। আজকের মধ্যে সব করতে হবে কালকে রাত ৮ টাই ফ্লাইট
ok. তাহলে আজকে আর বের হবো না। অফিসের সব দায়িত্ব তো ম্যানেজার কে দেওয়ায় আছে। আমি ফুটেজ গুলোও চেক করে নিয়েছি। সব ঠিক আছে এখন শুধু আজকের দিনটা
খুব মিস করছিস তাইনা
ভুললে তো মিস করবো
তোর কি মনে হয় হৃদান তোর হৃদপরী তোর কথা মনে আছে
মনে না থাকলো। তখন ও খুব ছোট ছিল না মনে থাকারই কথা। সমস্যা নেই নতুন করে অনুভূতি কিভাবে সৃষ্টি করতে হয় তা এই হৃদান চৌধুরী খুব ভালো করেই জানে
কিয়া বাত হে মেরি বন্ধু সুপার
হইছে হইছে ওদের কে প্যাকিং করে রাখতে বল
ওরা খুব এক্সাইটেড। বাংলাদেশে যাবে বিশেষ করে পিয়ানি। তোর সাথে সাথে থাকবে
চুপ করতো ওইসব আমাকে শুনাতে আসবি না। ওকে সহ্য করি পাপার বন্ধুর মেয়ে বলে না হলে ওর মতো মেয়েকে এই হৃদান চৌধুরী কখনো প্রশ্রয় দেয় না
আচ্ছা আচ্ছা চল প্যাকিং শুরু করি। তুই যা যা শপিং করছিস ব্যাগ বহন করতেই তিনজন লাগবে
তোরা আছিস কি করতে। চল
___________________________
তুমি ভেবে বলছো তো হৃদিতা মামুনি
প্রিন্সিপাল স্যার আপনি জানেন যে আমি না ভেবে কোনো কাজ করি না
এই তিন মাসে তুমি কিভাবে কোর্স কমপ্লিট করবে
সেটা আমার উপর ছেড়ে দিন স্যার
তুমি বাস্কেটবল আগে তো খেলো নি এই তিন মাসে আমার মনে হয় না কভার করতে পারবে
আপনি ভালো করেই জানেন যে হৃদিতা চৌধুরী অলওয়েজ ফার্স্ট। আর আমার রেকর্ড ভাঙবে এমন কেউ এখনো আসেনি
তোমার উপর খুব প্রেশার পড়বে মামুনি তাই বলছি। দৌড় প্রতিযোগীতায় তো আমাদের ভার্সিটি সবসময় ন্যাশনাল এওয়ার্ড জিতে তোমার জন্য। বাস্কেটবল না হয় নাই জিতল
না আমি বাস্কেটবল ও ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হবো। ইটস মাই চ্যালেন্জ। ওরা আমার বোনের সাথে যে ভুলটা করেছে তার যোগ্য জবাব হয়তো আমি মৃত্য দিতে পারতাম কিন্তু আমার বোনের স্বপ্ন পূরণ হতো না। আর এইবার আমি আমার বোনের মুখে হাসি ফুটাবো বাস্কেটবল ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হয়ে
আচ্ছা তোমার উপর আমার বিশ্বাস আছে। তাই এই রিস্কটা নিচ্ছি। পরের সপ্তাহ থেকে ট্রেনিং শুরু হবে। কিন্তু ভালো ট্রেইনার পাওয়া খুব কঠিন
এইবারো ট্রেইনার আমার নাশিন ভাইয়ায় হবে। সামনে আসছে
তাহলে তো আমি এইবারো চোখ বন্দ করে বিশ্বাস করতে পারি যে জিত আমাদেরই হবে
আচ্ছা স্যার আমি এখন আসি
হৃদিতা ভার্সিটি থেকে তার মামুনির বাসায় গেল আজকে না গেলে ওর গর্দান নিবে।
গিয়েই দেখল আলো তার হবু বরের সাথে প্রেমআলাপে ব্যস্ত। প্রেমের বিয়ে। ছেলে ভালো বারার ব্যবসা দেখে তাই না করেনি কেউ।
কি বিয়ের কনে সারাদিনই বরের সাথে কিটিস কিটিস করো
হৃদু তুই? কখন এসেছিস
এসেছি তো অনেকক্ষন তুমি বরের সাথে কিটিস কিটিসে এত বিভোর ছিলে যে আমাকে চোখেই পড়ে নি
ওরে আমার হৃদুরানী চল তোর কুলকুলিকে আজ ভয় দেখাবো দুজন মিলে
সুপার চলো
আনহা কলেজ থেকে এসে লাঞ্চ করে কেবল ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তখনি পিছন থেকে আলো আর হৃদিতা ভাউউউউ বলে চিল্লিয়ে উঠে আনহা ভয়ে উঠতে গিয়ে বিছানা থেকে নিচে পড়ে যায় তা দেখে আলো আর হৃদিতা হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা। এত হাসাহাসির শব্দ শুনে রিদিমা চৌধুরী নিজের ঘরে শুয়ে থাকতে পারল না। সে বুঝতে পেরেছে কে এসেছে।
আম্মুউউউউউউউউউউউউউউ এএএএএএএএএএএএএএএএএএ
কি হয়ে আনহু এইভাবে নিচে শুয়ে কান্না করছিস কেন
আম্মু তোমার গুনধর মেয়েগুলো আমাকে ফেলে দিছে এএএএএএএ আমার আর বিয়ে হবে না। তোমার বড় মেয়ের তো হিল্লে হয়েই গেল এখন ছোট মেয়েকে আর বাড়ি থেকে তাড়াতে পারবে না আম্মুউউ। তোমাদের সবাই কত কথা শুনাবে গো আম্মু আমি তা মানতে পারবো না গো আম্মুউউউ
চুপ। কিসব ফালতু বকছিস। বিছানা থেকে পড়ার সাথে তোর বিয়ের কি সম্পর্ক। আর তোর বিয়ের বয়স হয়ছে নাকি পাকা পাকা কথা বলা শিখছো
আনহার কথা শুনে হৃদিতা আর আলো হাসতে হাসতে আনহার সাথেই শুয়ে পড়েছে তা দেখে ওরা তিনজনই আবার আরেকদফা হেসে নিল। আর রিদিমা চৌধুরী তার মেয়েগুলোকে দেখছে। হৃদিতা আসলেই বাড়িতে উৎসব উৎসব ব্যাপার হয়ে যায়। তিনি তাড়াতাড়ি করে রান্নাঘরে চলে গেলেন। হৃদিতার পছন্দের ডিস রান্না করবে। কতদিন পর মেয়েটা বাড়ি আসলো। আহনাফ চৌধুরী এখন ঢাকার বাইরে আছে বিজনেসের কাজে গিয়েছে। হৃদিতাও এখন আলো আর আনহার সাথে গল্পে মেতে উঠেছে। ডিনার করে চলে যাবে। আজকে রিদিমা চৌধুরী হৃদিতাকে খাইয়ে দিচ্ছে।
মামুনি বিয়ের তো বেশী দেরী নেই বাবাই কবে আসবে
তোর বাবাই পরশু চলে আসবে তার পরদিন থেকেই কাজ শুরু করতে হবে
তোমার ছেলে আসবে না মামুনি। বোনের বিয়ে একমাত্র ভাই না আসলে হয়। কত দায়িত্ব তার
ভাইয়া আসবে হৃদুরানি আমার বিয়ে আর ভাইয়া আসবে না
হৃদুআপু ভাইয়া কিন্তু এইবার আসবে আর যাবে না। আমার যে কি মজা হচ্ছে
ভালো কিন্ত আমাকে তোমরা উনার একটা ছবিও দেখাও নাই। আমি তো চিনিই না
চিনিস কিন্তু মনে নেই। এখন কথা বাদ খাওয়া শেষ করো
হৃদিতা ডিনারের পর কিছুক্ষন গল্প করে বাসায় চলে গেল। অন্যদিকে হৃদান ও ডিনার করে শুয়ে আছে।
হৃদপরী আর যে অপেক্ষা করতে পারছি না। ১২ টা বছর তো কম হলো না। কতদিন তোমাকে সামনাসামনি দেখি না। কিন্তু তুমি আমি নামক মানুষটাকেই তো চিনো না। আগের সেই হাসিখুশির দিনগুলো তোমার মনে নেই। আমার একটা ভুলের জন্য আমাদেরজীবনটা কেমন হয়ে গেল। কতই বা বয়স ছিল তোমার ৮ বছর ক্লাস থ্রি তে পড়ো তখন। আর আমি এসএসসি পরিক্ষা দিয়েছি। বয়সের ডিহটেন্স তো কম না তবুও তোমার আর আমার বন্ডিং টা কত ভালো ছিল। আমি আসছি হৃদপরী। তোমার হৃদরাজ তোমার কাছে ফিরে আসছে। তুমি নামক অক্সিজেন ছাড়া আর বাঁচা সম্ভব না।
চলবে…..?
(কেমন হয় একটু জানাবেন দয়াকরে। ভালো না লাগলে তাড়াতাড়ি শেষ করে দিবো)