তুমি নামক অক্সিজেন পর্ব -০৩

#তুমি_নামক_অক্সিজেন
#পর্ব_৩
Tahrim Muntahana

কথায় আছে না দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর কাঙ্খিত জিনিসটা হাতে পেলে আর তর সইনা। হৃদানেরও হয়েছে তেমন। হৃদপরীকে দেখার খুশিতে এতই খুশি ছিলো যে রাতে শুধু এদিকওদিক করেছে ঘুমোতে পারেনি। সকাল সকাল উঠে নামাজ পরেই জগিং এ বেরিয়েছে রিফ্রেশমেন্টের জন্য। ওইখান থেকে আসার পর ব্রেকফাস্ট করেই হৃদান বাসায় ফোন দিল

মম
বাচ্চা কেমন আছো
I am fine mom.How are you

I am well বাচ্চা আসছো কবে। তোমার বোনের বিয়ের সব দায়িত্ব কিন্তু তোমাকে নিতে হবে

মম আমার আজকে রাতে ফ্লাইট। কিন্তু তুমি কাউকে বলো না। সারপ্রাইজ দিবো সবাইকে। আর আমি গোপন ভাবে আসছি। জানাজানি হয়ে গেলে প্রেস মিডিয়া ব্যাপার টা ভালো লাগে না

আচ্ছা বাচ্চা সাবধানে এসো

মম আমার সাথে কিন্তু আমার ফ্রেন্ডস আসবে। তিনজন মেয়ে তিনজন ছেলে। সবকিছু রেডি করে রেখো

আচ্ছা আমি সবকিছু রেডিই রাখবো তুমি চিন্তা করো না। আর আমার মেয়েকে কিন্তু এবার আমি দূরে রাখবো না। এবার খুব তাড়াতাড়ি তোদের চার হাত এক করে দিবো

মম আমি আসি আগে তারপর এখন রাখছি

হৃদান কল রেখেই বন্ধুদের সাথে কথা বলে নিলো। বন্ধুরা হলো পিয়াস সাগর সোহান পিয়ানি অরনী সোহা। ওরাও বিয়ে উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ যাচ্ছে। ওদের ও বাংলাদেশে নিজস্ব বাসা আছে কিন্তু বিদেশেই স্যাটেল বলে আসা হয় না। রাত প্রায় ৭ টার দিকে সবাই একসাথে হলো আধা ঘন্টা লাগবে ইয়ারপোর্ট যেতে। ঠিকঠাক মতো চ্যাকিং হয়ে গেলে সবাই যে যার সিটে বসে পড়লো। পিয়াস আর হৃদান একসাথে বসেছে। পিয়ানির খুব ইচ্ছে ছিলো হৃদানের সাথে বসার কিন্তু হৃদান পাত্তা দেইনি। ওরা প্রাইভেট ব্লগ নিয়েছে তাই ঝামেলা নাই বেশি। হৃদান কানে হেড ফোন দিয়ে গান শুনছে আর মিটিমিটি হাসছে। এমন সময় পিয়াস একজনকে ফোন দিল

আমরা এখন প্লেনে বসে আছি। ঠিকঠাক ভাবেই এসেছি

———-

না কোনো সমস্যা হয়নি

————

আরে না পেত্নী দূরেই আছে। তোর জিনিস তোরি আছে। কাছেও ঘেসতে পারে না চিন্তা করিস না

————-

আরে যাওয়ার পর যা ব্যবস্থা করার করিস এমন টাইট দিবি সব ভুলে যাবে। এখন রাখছি এনাউন্সমেন্ট হচ্ছে। বাই

অপরপাশের কথা শুনা গেল না। কথা বলা শেষ হলেই হৃদানের দিকে ঘুরে পিয়াস চমকে উঠল। হৃদান ওর দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। পিয়াস কি বলবে বুঝতে পারছে না। তাই একটা মেকি হাসি দিয়ে সিটে হেলান দিয়ে চোখ বন্দ করে নিল। হৃদানও আর কিছু বলল না। ম্যাগাজিন পড়তে শুরু করল। ওকেই নিয়ে লেখা। ২৪ ঘন্টা পর ফ্লাইট ল্যান্ড করল। ওরা অনেক আগেই উঠে গেছে। ব্রেকফাস্ট করে রেডি হয়ে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। বাইরে এসে দেখে তিনটা গাড়ি দাড়িয়ে আছে। দুটো গাড়িতে ওরা উঠে পড়লো আরেকটিতে গার্ড। হৃদান আগেই সব ব্যবস্থা করে রেখেছিল। হৃদান গাড়িতে বসে বাইরে তাকাতেই দেখলে ঝোপের পাশ থেকে একটি মানুষ সরে গেল। কতক্ষন তীক্ষ্ম ভাবে চেয়ে থেকে কিছু খুঁজে পেলো তাই ওইদিকে আর মাথা ঘামালো না। এখন ওর গন্তব্যে পৌঁছনোর আশায় বসে আছে। কখন তার হৃদপরীকে দেখতে পাবে। তার অক্সিজেন কে সামনে রেখে প্রাণভরে একটু শ্বাস নিবে।

বাংলাদেশে স্বাগত হৃদরাজ। হৃদপরীর শহরে স্বাগত। এখন শুধু তোমাকে নিজের করে পাওয়া বাকি। সবার প্রথমে আমি আমার হৃদরাজকে দেখতে চেয়েছি তাই হয়েছে। দেখেছি আমার হৃদরাজকে। কতবছর পর সামনাসামনি দেখেছি। কিন্তু তুমি তো দেখতেই দিলে না ঝোপের আড়ালে থেকে ধরা খেয়ে যেতাম না সরলে। উফফ কি যে হতো

হৃদিতা গাড়ি ড্রাইভ করছে আর বিড়বিড় করছে। হৃদিতাই গিয়েছিলে এয়ারপোর্ট এ হৃদানকে দেখতে। এখন ও ভার্সিটিতে যাবে। বাস্কেটবল খেলার পারমিশন চেয়ে আবেদন করেছিল সেটি গ্রান্টেড হয়েছে কিনা তাই জানতে যাচ্ছে আজকে ক্লাস করার কোনো ইচ্ছে নেই। এখন প্রায় ১০:৩০ বাজে। প্রায় ১ ঘন্টা পর হৃদিতা ভার্সিটিতে পৌঁছালো। গিয়ে দেখলো ওর জন্য বন্ধুরা অপেক্ষা করছে। ওরাও বাস্কেট বল টিমের সদস্য।

কি দেখা হলো নিজের হৃদরাজকে -রাহি

খুব খুশি খুশি মনে হচ্ছে আমার ননদিকে -রাইসা

আমাকে পঁচাতে আসিছ না ভালো হবে না -হৃদিতা

আরে থামতো তোরা এখন চল প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে দেখি কি হয় -আধির

আচ্ছা চল -সাহিল

আসবো স্যার -রোহানি

এসো -প্রিন্সিপাল

স্যার গ্রান্টেট হয়েছে -রাহি

প্রিন্সিপাল স্যার চুপ করে আছে। তা দেখে হৃদিতার ভালো লাগল না

স্যার কি হয়েছে চুপ করে আছেন কেন -হৃদিতা

মামুনি কেন্সেল করে দিয়েছে। ওই ঘটনা ঘটার জন্য আর আমাদের ভার্সিটিতে বাস্কেটবল টিম নেওয়া হবে না -প্রিন্সিপাল

এইসব লেইম এক্সকিউজ দিয়ে আর যাই হোক হৃদিতা চৌধুরীকে থামানো যাবে না। আমিও দেখবো কিভাবে কেন্সেল করে কে কেন্সেল করলো

কি করতে চাইছিস তুই -রাইসা

আমার কি টাকা কম আছে। আমার ভাইয়ু কে বললে যেই কালপ্রিট টাকার জন্য এই কাজ করেছে তাকে মাটিতে পুতে দিবে। সেটাই করবো -হৃদিতা

বলেই চলে গেল হৃদিতা তার দেখাদেখি সবাই প্রিন্সিপালের থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেল। হৃদিতা খুব রেগে আছে। রেগে গেলে ওর মাথা ঠিক থাকে না আর মুখটা লাল টকটকে হয়ে যায়। এখনও এমন হয়েছে তাই ওরা আর থামালো না ওরাও যে যার গাড়ি নিয়ে হৃদিতার পিছনে আসছে। হৃদিতা বাড়িতে গিয়ে দেখলো অনেকগুলো গাড়ি দাঁড় করানো। রেগে না থাকলে হয়তো বুঝতে পারতো ব্যাপারটা কিন্তু রেগে থাকলে ওর হুশ থাকেনা। গাড়ি থেকে নেমে দপাদপ পা ফেলে বাসায় হাটা দিল। গেইট খোলা দেখে তাড়াতাড়ি ভেতরে নিজের ঘরের দিকে যাবে তখনি পরশ ওকে ডাক দেই। ও রেগে তাকালেই পরশ বুঝতে পারে যে বড় কিছু একটা হয়েছে। না হলে ছোট ছোট কারণে তার কলিজাটা এত রাগ করে না। কিছু বললো না হৃদিতা নিজের ঘরে গিয়ে দরজা আটকে দিলো। ড্রয়িং রুমে যে আরো কয়েকজন মানুষ ওর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলো খেয়াল ই করে নি। হ্যাঁ হৃদান ওরা এসেছে। হৃদান তো এতক্ষন ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে ছিলো। পিয়াস বাদে ব্যাপারটা কেউ বুঝতে পারছে না যে কই এসেছে ওরা। ঘুরে ঘুরে একটু আগে এসেছে। পরশকে ফোন দিয়ে আসতে বলেছিল হৃদান। পরশ তো সেই সারপ্রাইজ হয়েছে। কথা বলা শুরু করবে তখনি হৃদিতা ওইরকম ভাবে আসে। পরশ চিন্তায় কি হয়েছে জানার জন্য যখনি রাইসাকে ফোন দিবে তখনি হন্তদন্ত হয়ে ওরা প্রবেশ করে হাঁপাচ্ছে।

এই কি হয়েছে তোদের এরকম করছিস কেন -পরশ

আগে একটু হাফ ছাড়তে দাও তারপর বলছি -রোহানি

হৃদি কই ভাইয়া -আধির

সেটা তো আমি বলব হৃদিপাখি এত রেগে আছে কেন -পরশ

ভাইয়া হৃদি যে বাস্কেটবল খেলায় নাম দিয়েছে জানো -রাহি

কিহ, নাতো -পরশ

রিয়ুআপুর সাথে যা হয়েছে সেটা তো জানোই তার জন্যই হৃদির বাস্কেটবল খেলার জন্য আমাদের ভার্সিটি থেকে প্রিন্সিপাল স্যার আবেদন করেছিল। কিন্তু সিএম কেন্সেল করে দিয়েছে -সাহিল

কেন্সেল কেন করেছে -পরশ

রিয়ু আপু যে ফাইনালের দিন খেলতে পারেনি তাই তারা বলেছে আমাদের ভার্সিটিতে খেলার বিষয়ে কোনো গুরুত্ব নেই। ঠিক এই কারণেই কেন্সেল করেছে -রাহি

শুনুন না। আমি বলছি কি রিয়ুআপুর সাথে যারা ওমন করেছিল আমার মনে হয় সিএম কে তারাই ঘুস দিয়ে আমাদের আবেদন কেন্সেল করেছে -রাইসা

তাই নাকি পরশ চৌধুরীকে এখনো দেখছি চিনে না সিএম কে তাহলে চিনাতে হবে -পরশ

শুনুন হৃদিকে ডাকুন একা একা আবার কান্না করবে। বেশি কাঁদলে ওর মাথা ব্যাথাটা বেশি হয় কিন্তু -রাইসা

হৃদিপাখি হৃদিপাখি প্লিজ কাম ভাইয়ু ডাকছে তো আসবে না। ভাইয়ু এখনো খাইনি । না খেয়েই চলে যাবো? কিন্তু আমার তো খুব ক্ষুদা লেগেছে। আমার কলিজাটাকে না খাইয়ে দিলে তো আমি খেতে পারি না। আসো হৃদিপাখি -পরশ

হৃদিতার কোনো সাড়াশব্দ নেই। এতক্ষন একজায়গায় বসেছিল শক্ত হয়ে। এক ফোটা জল ও পড়েনি চোখ দিয়ে যখনি ভাইয়ুর আবেগি কথা শুনে তখন আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারে নি। ঝরঝর করে কেঁদে দিয়েছে। পরশী চৌধুরী এতক্ষন রান্নাঘরে ছিল। কত বছর পর ছেলেটা আসল কিছু না খাইয়েই তো যেতে দিতে পারে না। কিন্তু ওদের কথা শুনে রান্নাঘর থেকে আসলো। আর হৃদান রা নিরব দর্শক। শুধু দেখে চলছে কি হচ্ছে। হৃদান ছাড়া কেউ বুঝেনি কি কথা হচ্ছে। যখন পরশ দেখলো কাজ হচ্ছে না তখন টেকনিক কাজে লাগালো

আচ্ছা কেউ যেহেতু শুনেবেই না আমি আর কি করবো মম আমি খাবো না চলে গেলাম

বলে দরজার দিকে ঘুরার আগেই হৃদিতা দৌড়ে ভাইয়ুর বুকে ঝাপিয়ে পড়ে। হঠাৎ ই এমন হওয়ায় সবাই অবাক হয়ে চোখ বড় বড় করে চেয়ে আছে। পরশ তাল সামলাতে না পেরে দুয়েকপা পিছিয়ে গিয়ে নিজেকে সামলে নেয়। হৃদিতা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে। পরশের বুকে গিয়ে বিধলো। বোনের একটু কষ্টও সহ্য করতে পারে না। পরশী চৌধুরী তো রিতিমতো কান্না করে দেওয়ার মতো অবস্থা হৃদয় চৌধুরীকেউ জানিয়েছে সে তে পারে না উড়ে আসবে।

হৃদিপাখি আমার কলিজাটা প্লিজ কান্না করে না। আমার খুব কষ্ট হয় পাখি। জানো তো তোমার ভাইয়ু তোমাকে কত ভালোবাসে প্লিজ স্টপ দি ক্রায়িং কলিজা -পরশ

ভাইয়ু আমি আমার রিয়ুর স্বপ্নটা পূরণ করতে চাই। এক বছর ধরে যে কষ্টটা আমার রিয়ু সহ্য করেছে ওদের কেউ সেই কষ্ট টা উপলব্ধি করাতে চাই। ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হয়ে রিয়ুর স্বপ্ন পূরণ করতে চাই ভাইয়ু -হৃদিতা

কে না করেছে তোমাকে হৃদিপাখি করবে তো। রিয়ুপাখির স্বপ্ন পূরণ তুমিই করবে। কেউ বাঁধা দিবে না। তোমার ভাইয়ু আছে না -পরশ

সত্যি বলছ তো -হৃদিতা

আমি আমার কলিজার কাছে কখনো মিথ্যে বলতে পারি -পরশ

আবেদন যে কেন্সেল করে দিয়েছে -হৃদিতা

সেটার ব্যবস্থা আমি করছি। যে আমার হৃদিপাখিকে কান্না করিয়েছে তাকে তো এমনি এমনি ছেড়ে দিবো না। এখন চলো খাবে -পরশ

না আগে তুমি ওই টাকলু সিএম চামচাকে উচিত শিক্ষা দিবে তারপর খাবো নাহলে খাবো না -হৃদিতা

বলেই অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে রাখলো। পরশ জানে এখন বলেও কোনো লাভ নেই। তাই যখনি ফোন দিতে যাবে তখনি হৃদয় চৌধুরী হন্তদন্ত হয়ে রুমে প্রবেশ করল। পরশী চৌধুরী ফোন দেওয়ার সাথে সাথে রওনা দিয়েছিল। ঘরে যে এতগুলো মানুষ আর হৃদান এসেছে তার কোনো খেয়াল ই নেই মেয়ের কি হয়েছে সেটা নিয়েই চিন্তিত।

পরশী আমার মায়ের কি হয়েছে। কে কি বলেছে আমার আম্মুকে -হৃদয়

কিছু হয়নি পাপা আমি হ্যান্ডেল করছি একটু দাড়াও কথা বলো না -পরশ

পরশ হৃদিতাকে বুকে জড়িয়েই কাকে যেন ফোন দিল

এক ঘন্টা সময় দিলাম। বাস্কেটবলের সিএম কে ধরে নিয়াসবি। সোজা আমার বাড়িতে। নো মোর ওয়ার্ডস

বলেই কেটে দিলো। সবাই এতক্ষন খেয়াল করল যে নতুন মুখ এসেছে। সবাই ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। হৃদয় চৌধুরী তো অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলো যখনি হুশ হলো তখনি হৃদান কে জড়িয়ে ধরল।

বাবুই কেমন আছিস তুই -হৃদান

আমি ভালো আছি বাবাই। তুমি কেমন আছো -হৃদান

আমি খুব ভালো আছি এখন। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এসেছি আর কি চাই। তা না বলে এলি কেন -হৃদয়

সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম বাবাই। কিন্তু আমরাই যে সারপ্রাইজ হয়ে যাবো ভাবিই নি -হৃদান

ওদের কথা বলতে বলতেই দেখা গেল কয়েকজন গার্ড একজন ধরে নিয়ে আসছেতে। ড্রয়িং রুমের মাঝখানে বসালো। তা দেখে পরশ উনাকে সোফায় বসতে বলল। আর হৃদানদের বসতে বলল।

কত টাকা নিয়েছেন -পরশ

মানে -সিএম

আপনি ভালো করেই জানেন আমি কিসের কথা বলছি তাই সোজাসোজি বলে দিলেই খুশি হবো -পরশ

এই তুই আমার রিয়ুকে নিয়ে বাজে কথা বলেছিলি না কুটুক্তি করেছিলি না? আর সেই আজকেই তুই হৃদিতা চৌধুরীর কাজে বাঁধা দিস তাও কয়েকটা টাকার জন্য। আজকে তোর এই হাত আমি ভেঙেই দিবো -হৃদিতা

মামুনি রিলেক্স উনি তোমার বাবার বয়সী। ভালো ভাবে কথা বলো আম্মু -হৃদয় চৌধুরী

বাবা ! উনি বাবা! উনি কারো বাবা হওয়ারই যোগ্যই না। যে ব্যক্তি নিজের মেয়ের বয়সী একজনকে অশ্লীল কথা বলতে পারে খারাপ অফার করতে পারে সে বাবা হবে কেমন করে পাপা -হৃদিতা

হৃদিতার কথা শুনে সবাই চুপ হয়ে গেল। কেন একথা বলছে সবাই বুঝতে পারছে ঠিক কিন্তু কার সাথে এরকম করেছে সেটা বুঝতে পারছে না। সিএম ও মাথা নিচু করে বসে আছে। মাথা তোলার সাহস টুকু পাচ্ছে না। এমনি মার খেয়েছে কিছুটা তার উপর এতগুলো মানুষের সামনে অপমান।

কার সাথে এমন করেছে -পরশ

ও আমার রিয়ুপাখি কে এসব বলেছে। একবছর আগে যখন রিয়ু বাস্কেটবল ন্যাশনালে সিলেক্ট হয় তখন ওই বাজে লোকটা রিয়ুকে এসব বলেছে। যখন ও অপমান করে তখন লোকটা অনেক খারাপ খারাপ কথা শুনায় রিয়ুকে। আমাকে বললে আমি এই লোকটাকে ভালোভাবে বুঝাতে গিয়েছিলাম কিন্তু না এই লোকটা আমাকেও খারাপ কথা বলেছে। সেদিন রিয়ু ছিলো বলে ও বেঁচে গিয়েছিল। আর যখন রিয়ু অসুস্থ ছিলো তখন এই লোক মানুষকে ওর নামে মিথ্যে রটিয়েছে যে টাকা দিয়ে সিলেক্ট হয়েছিল রিয়ু তাইতো ওর শাস্তি পেয়েছে। আমি ওকে ছাড়বো না খুন করে ফেলবো ওকে আমি -হৃদিতা

রোহানি ওরা এইসব সব জানে তাই ওরা চুপ আছে হৃদানের মাথায় রক্ত উঠে গেছে। ওর হৃদপরীকে যে একটু কষ্ট দিবে তার জান নিতেও ভাবে না অথচ এই লোকটা কত কষ্ট দিয়েছে তার অক্সিজেন কে কিন্তু এখনো দিব্বি আছে। আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না। গিয়েই লোকটার কলার ধরে এলোপাথাড়ি মারতে লাগলো।

আমার হৃদপরী কে কষ্ট দিয়েছিস তুই। যে অক্সিজেন ছাড়া আমার নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয় যাকে একটু কষ্ট পেতে দেখলে নিজে তিলে তিলে শেষ হয়ে যাই। তাকে তুই এতবড় কষ্ট দিয়েছিস যে একবছর ধরে নিজের মধ্যে চেপে রেখেছে। যার গায়ে একটা টুকা লাগতে দিই না তাকে তুই কষ্ট দিয়েছিস। তোর জন্য আমার হৃদপরী এতটা হাইপার হয়েছে। তোকে তো আমি ছাড়বো না। গার্ড গার্ড

বলেই চিল্লিয়ে গার্ডকে ডাকতে লাগলো। ঘরের প্রত্যেকটা মানুষ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে শুধু পরশী চৌধুরী হৃদয় চৌধুরী আর পরশ বাদে। হৃদিতাও রিতিমতো শকড় ও ভাবতেই পারেনি তার হৃদরাজ তাকে মনে রেখেছে তাকে এত ভালোবাসে। ভাবতেই ঠোটের কোণে তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠল। পরক্ষনেই কথা খেলাপের কথা মনে হতেই রাগ উঠে গেল। পিয়ানি তো হৃদানের কথা শুনে রাগে ফেটে পড়ছে। হৃদান অন্য কাউকে ভালোবাসে সেটা ভাবতেই ওর সবকিছু ধ্বংস করে দিতে ইচ্ছে করছে। হৃদিতার দিকে কটমট চোখে তাকিয়ে। হৃদিতা সব খেয়াল করেছে মনে মনে শয়তানি হাসি দিচ্ছে। উপরে অবাক হওয়ার ভান করছে। তা দেখে ওর বন্ধুরা অবাকের সপ্তম পর্যায়ে। গার্ড আসার পর যখন সিএম কে নিয়ে যাবে তখনি হৃদিতার কি যেন মনে করে থামায়

চলবে…..?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here