#তুমি_হাতটা_শুধু_ধরো_২
#পর্বঃ১১
#Jhorna_Islam
দেখতে দেখতে আরো কয়েকটা দিন কেটে গেলো।গ্রামের বাড়িতে দায়ান ও রুশদের দিন গুলো খুব ভালো ভাবে ম’জা, হাসি আনন্দে কেটে গেছে।
সোহা আর রুশ সারাক্ষণ নানান ধরনের খু’ন’সু’টিতে মেতে ছিলো।প্রতিদিন কিছু না কিছু নিয়ে দুইটায় দুইটার পিছনে লাগতো।আর বাড়ির সকলে রুশ আর সোহার কান্ড দেখে হেসে লুটোপুটি খেতো।
সোহা প্রায়ই দায়ান কে নিয়ে গ্রামে হাঁটতে বের হতো।এই কয়দিনে গ্রামের প্রকৃতি উপভোগ করতে পেরেছে দায়ান ভালোভাবে । এখন দায়ান প্রায় স্বাভাবিক হয়ে গেছে । আগের মতো হাসি খুশি থাকে সব সময়। তবে মনের মাঝে তিশার জন্য চাপা একটা কষ্ট অনুভব করে।নিজেই আবার নিজেকে সামলেও নেয়।
সোহা একদিন দায়ান কে বলে উঠে,,,,, আচ্ছা আমরা কি ফ্রেন্ড হতে পারি?
দায়ান সোহার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে উৎসাহিত নয়নে দায়ানের দিকে তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে অপেক্ষা করছে ফ্রেন্ড হওয়ার জন্য।
— তুমি কিসে যে নো পরো?
— কেন জানেন না? এইবার এইচএসসি দিয়েছি।
— আর আমি কি করি?
— ডাক্তার!
— তোমার আর আমার বয়সের পার্থক্য জানো? পিচ্চি একটা মেয়ে সে নাকি আমার সাথে বন্ধুত্ব করতে আসে।
— একদম আমায় পিচ্চি বলবেন না।আর বন্ধু হতে সমানে সমান বয়স লাগে নাকি? জানতাম না তো।
— পিচ্চি মেয়ে তো তাই জানো না।
ধ্যা’ত হবেন না এটা বললেই হয়।এতো বাহানা দেওয়ার তো কিছু দেখছিনা।বলেই সোহা মুখ ঝা’ম’টা মেরে ধুপাধুপ পা ফেলে চলে যায়।
দায়ান পিছন থেকে ডাকে,,,আরে সোহা শুনতো,,,,মজা করছিলাম আমি।আসো বন্ধু হবো আমরা। একটা পিচ্চি বন্ধু জীবনে থাকা খুব দরকার। আমিতো তোমায় বন্ধু হিসেবে পেয়ে আমাকে অনেক লা’কি মনে করবো।তুমিতো আমায় ঘুড়ে দাড়াতে সাহায্য করেছো।চিরদিন কৃ’ত’জ্ঞ থাকবো তোমার উপর।
কে শুনে কার কথা।সোহা কি দায়ানের কথা আর শোনার মতো মেয়ে? দায়ান তাকে এভাবে বলায় সে রে’গে চলে যায়।
তারপর দুয়েক দিন দায়ানের ধারে কাছে ও যায়নি।ভালো করে কথা বলাতো দূরে থাক। দায়ান কতো ভাবে বুঝিয়ে স’রি বলে তারপর আবার স্বাভাবিকের করেছে সোহাকে।
————————————–
আজ নোহা আর রুশের গায়ে হলুদ।বাড়িতে সোহাদের প্রায় অনেক আত্নীয় স্বজন উপস্থিত। দায়ানদের পক্ষ থেকেও অনেকে এসেছে।বাকি গুলো কাল আসবে।
বাড়িতে মানুষ দিয়ে ভর্তি।গায়ে হলুদের আয়োজন চলছে পুরো দমে। রুশ আর নোহার জন্য এক স্টেজেই পর্দা লাগিয়ে দুই জনের আলাদা আলাদা হলুদ লাগানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
হলুদ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের পুরাতন আধুনিক হলুদের গান বেজে চলেছে। গায়ে হলুদের একটা আলাদা আমেজ ই আছে। বিয়ে বাড়িতে অন্যদের জন্য মূল আনন্দ ও আকর্ষনই হলো গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। এখানে ছোট বড় সকলেই আনন্দে মেতে উঠে।
দায়ানের বাবা,মা আর রুশের বাবা মা সোহার বাবা মাকে বিভিন্ন কাজে সাহায্য করছে।যেহেতু সোহার বাবা একাই তার কোনো ভাই বোন নেই। সোহার মামা রা ও আবার একজন কাজের জন্য এখনো আসতে পারেন নি।আরেকজন আছে। বিয়ে বাড়িতে হাজার কাজ,,,একটার পর একটা লেগেই থাকে।
বিকেল বেলা গিয়ে বাড়ির মহিলা রা আর মেয়েরা গিয়ে মেহেদী তুলে এনেছে গাছ থেকে। টি’উ’ব মেহেদী ব্যবহার করলেও গাছের টা ও ব্যবহার করে গ্রামের সকলে।
মেহেদী এনে দেওয়ার সাথে সাথে পাড়ার মহিলারা মেহেদী,,হলুদ বাটা শুরু করে দেয়।আর বিভিন্ন ধরনের গীত(গান) গাইতে থাকে।
সকলেই নিজেদের সাজগোজ নিয়ে বি’জি। সোহা নোহাকে হলুদের সাজে সাজিয়ে দেয়।তারপর নিজেও গিয়ে হলুদের জন্য হলুদ একটা শাড়ি পরে সাথে হলুদের গহনা।
তমা সবার আগে সেজে উপস্থিত। মুখে মনে হয় পুরো ময়দার দোকান দিয়েছে।নিজের আসল চেহারাটাই ঢেকে দিয়েছে।
নানান লোক অবাক হয়ে তমার দিকে তাকাচ্ছে। আর ফিসফিস করে কিছু বলছে।তমাতো মহা খুশি সে ভাবছে তার বুঝি প্রশংসা করছে সকলে।করাটাই স্বাভাবিক যেই সাজ দিয়েছে।সকলের থেকে সুন্দর লাগবে বেশি।আরো ভেবে রেখেছে কাল আরো গর্জিয়াস করে সাজবে।সবাইকে তা’ক লাগিয়ে দিবে।বিয়ের কনেকে রেখে সকলে তখন তার দিকেই তাকিয়ে থাকবে।সাথে দায়ান ও তার দিকে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকবে।
দায়ান আজ কালো পাঞ্জাবি পরেছে।এখন চুল গুলো একটু ছোট করেছে।মুখে চা’প দা’ড়ি।
তমাতো দায়ানকে দেখে কয়েকবার টা’স’কি খেয়ে নিয়েছে।দায়ানের পিছু পিছু অনেক সময় ধরে ঘুর ঘুর করেছে।কিন্তু দায়ান পাত্তা দিবে দূরে থাক ঘুরেও তাকায় নি।
সেই দুঃখে সোহার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।আর মনে মনে কিছু একটা প্লেন করতে থাকে।
সোহা বোনের গায়ে গিয়ে হলুদ ছুঁইয়ে দেয়।নোহা মুচকি হেসে নিজেও কিছু টা হলুদ নিয়ে সোহার গালে লাগিয়ে দেয় আর বলে পরের বার তোর পালা।
হুহ বললেই হলো নাকি? আমি এতো সহজে এ বাড়ি থেকে যাচ্ছি না।তুমি তারাতাড়ি যাও তারপর সব আমার।আমি এই বাড়িতে একাই রাজত্ব করবো।
হ্যা করিস।দেখবোনে বা/দরামি করলে আব্বু যখন বাড়িতে থাকবে না। তখন কে তোকে বাঁচায়।
তখন আম্মু আমায় কিছুই করবে না কেন জানো?
কেন?
কারন তখন তুমি থাকবা দূরে। বাড়িতে শুধু আমি।আমাকে আদর করেই কূল পাবে না। আবার বকা বা মারবে কোন সময়?
তুমি ভালো করেই জানো সো’না এসব কিছুই হবে না।তোমার পিঠ বাঁকা করতে আম্মু একটুও পিছ পা হবেন না।
উফফ আপু এসব বাদ দেও।আমি তোমায় খুববববব মিসসসস করবো ঠোঁট উল্টে বলে সোহা।
নোহা সোহাকে বুকে জড়িয়ে বলে,,,আমিও তোকে খুব মিস করবো বোন।
দুই বোনের চোখের পানিই ছলছল করছে।দূর থেকে সোহার মা দুই বোনকে দেখে শাড়ির আঁচলে চোখের কোণ মুছে সরে যায়। এখন ওদের পাশে গেলে নিজেকে ঠিক রাখতে পারবে না।
তারপর সোহার পা’রা’প’র’শি এক কাকি পরিবেশ স্বাভাবিক করার জন্য বলে উঠে,, কিরে তোরা দুই বোনই হলুদ দেওয়া দেওয়ি করবি নাকি? আমাদের ও একটা সুযোগ দে। আর সোহা তুই গিয়ে তোর দুলাভাই কে হলুদ ছোয়া।
যাচ্ছি কাকি।বলেই সোহা রুশের পাশে চলে যায়। তমা ও সোহার পিছনে উঠে যায়।
সোহা রুশের পাশে গিয়ে বসে আবার ম’জা করতে শুরু করে দিয়েছে। ফল মিষ্টি নিয়ে রুশের মুখের সামনে নিয়ে যায় রুশ হা করলেই সেটা সোহা নিজের মুখে পুরে নেয় রুশ কে না দিয়ে।
তারপর দুই হাত ভর্তি হলুদ নিয়ে রুশের পুরো মুখ ভর্তি করে ফেলেছে। চোখ মুখ কিছু বাদ রাখেনি।
রুশ বলে,,,,শা’লিকা আমার মুখের ভিতর বাদ রাখলি কেনো? আমি হা করতেছি মুখের ভিতর ও দে কাঁচা হলুদের টেস্টি নেই। আর কানের ভিতর ও দে।
রুশের কথা শুনে সোহা সহ আশে পাশে বসে থাকা সকলে খিলখিলিয়ে হেসে উঠে।
এরমধ্যে তমা সোহার বা রুশের এসব খুনসুটির মধ্যে নেই।সে আছে তার ধা’ন’দা’তে। তমা সোহার পাশে দাড়িয়ে থাকলেও তার দুই চোখ খুঁজে চলেছে সেই সু’দ’র্শ’ন যুবক টা কে। কিন্তু কোথাও দেখতে পাচ্ছে না।
হঠাৎ করেই বাম দিকে চোখ যেতেই দেখতে পেলো কিছু টা দূরে একটা চেয়ারে দায়ান বসে আছে। ঐদিক টায় তেমন একটা মানুষ নেই। দায়ান বসে বসে মোবাইল টিপছে।
দায়ানকে দেখেই তমার মুখে হাসি ফোটে উঠে। স্টেজে রাখা হলুদের বাটির দিকে তাকায়। তারপর নিজের হাত বাড়িয়ে হাতে হলুদ নিয়ে ওড়নার আড়ালে হাত লোকায়।আশে পাশে আর সোহার দিকে তাকিয়ে আবার দেখে নেয় কেউ দেখেছে কি না।
তারপর ধীর পায় এগিয়ে যায় দায়ানের দিকে।
দায়ান ফোন টিপার মাঝেই হঠাৎ করে তার গালে ঠান্ডা কিছুর স্পর্শ পেয়ে চোখ মুখ কোচকে ফেলে। তারপর সামনের দিকে তাকিয়ে আবারো ব্রু কোচকে আসে দায়ানের ,,,,,,
#চলবে,,,,,,#তুমি_হাতটা_শুধু_ধরো_২
#পর্বঃ১২(বোনাস)
#Jhorna_Islam
দায়ানের গায়ে ঠান্ডা কিছুর অস্তিত্ব টে’র পেয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে সোহা তার দিকে হেঁসে তাকিয়ে আছে। হাতে তার হলুদ।
দায়ান গালে হাত দিয়ে তারপর হাতটা সামনে এনে দেখে তার গালে হলুদ।
এটা কি করলে সোহা?
হলুদ লাগালাম।
দায়ান ক’পট রা’গ দেখিয়ে বলে,,, কেনো লাগিয়েছো? লাগানোর আগে আমাকে একবার জিজ্ঞেস করে নিবা না?
সোহা দায়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,একটু হলুদ লাগিয়ে দেওয়ায় কি এমন হয়েছে?
আমি এসব লাইক করি না।দেখোনা দূরে বসে আছি? নয়তো রুশের সাথেই থাকতাম।রুশ কি এতক্ষন চুপচাপ বসে থাকতো? আমাকে হলুদ দিয়ে গোসল করাতো,সাথে আমিও।এসব উঠাতে আমার অসহ্য লাগে। কতো টাইম যায় জানো?
যেটা থেকে দূরে থাকার জন্য এখানে এসে বসে আছি তুমি সেটাই করলে।।
সোহা ঠোঁট উল্টায় বলে,,,,স’রি! আমি জানতাম না আপনি পছন্দ করেন না এসব। আমিতো ম’জা ভেবে করেছি।আপনি খুব রা’গ করেছেন আমার উপর তাই না?
সত্যি বলতে এতক্ষন প্রচুর রা’গ লেগেছিল। বাট তোমার এরকম বাচ্চা ফেস করে স’রি বলায় সব রা’গ উড়ে হাওয়া হয়ে গেছে। তোমার ফেস দেখে এখন হাসি পাচ্ছে।
হাসি পাচ্ছে মানে আপনি আর রা’গ করে নেই। হাসুন তবে।
দায়ান সত্যি সত্যি এবার হেসে দেয়।
সোহা ও দায়ানের হাসি দেখে হাসে।তারপর আড় চোখে কিছু দূরে দাড়িয়ে থাকা তমার দিকে একবার তাকায়। তারপর তমার হাতে থাকা হলুদের দিকে।
খুব সখ না উনাকে হলুদ লাগানোর? সকলের চোখে ফাঁকি দিয়ে তুই হলুদ নিবি আর ভেবেছিস আমি দেখবো না? হুহ তোর হাবভাব দেখে আমারই কেমন সন্দেহ হচ্ছিল।
এদিক ওদিক তাকিয়ে যখন কাউকে খুঁজতে ছিলি তখনই বুঝে গিয়েছিলাম তুই উনাকেই খুঁজতেছিস।
কতো বড় সাহস আবার লুকিয়ে হলুদ নিয়ে আসে উনাকে লাগানোর জন্য। আমি থাকতে এটা হতে দিব নাকি? কখনো না। তাইতো আমই এসে হলুদ লাগিয়ে দিলাম। কথাগুলো মনে মনে বলতে থাকে সোহা আড় চোখে তমার দিকে তাকিয়ে।
হঠাৎ করে কারো ডাকে সোহা ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে। দায়ানের মা দায়ান কে ডাকছে।
আসছি মা বলেই দায়ান তার মায়ের কাছে চলে যায়।
সোহা ও তার বোনের কাছে আবার গিয়ে বসে পরে।
এদিকে তমা তার হাতে থাকা হলুদ গুলো ছুড়ে ফেলে দেয়। রা’গে হাত মু’ষ্টি করে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে।এই সোহাটার জন্য সব গ’র’র্ব’র হয়ে যাচ্ছে। কিছুতেই দায়ানের কাছে এগুতে পারছে না।
ভেবেছিলো দায়ানকে তার রূপের জ্বালে ফাঁসাবে। নিজের হাতের মুঠোয় আনবে।আজকের বাজারে এমন হ/ট সু’দ’র্শ’ন পুরুষ পাওয়া চারটি খানি কথা না।তারউপর ওয়েল সে’টে’ল্ড। সব দিক দিয়ে পার্ফেকট।দায়ান একবার প’টে গেলে লাইফটা বদলে যাবে তমার।উফফ শহরে বসে বসে ছ’ড়ি ঘুরাবে। রানীর মতো থাকতে পারবে। এসব ভাবতেই তো কেমন সুখ সুখ লাগছে। আর যখন সব কিছু চোখের সামনে থাকবে তখন তো তমাকে আর পায় কে?
কিন্তু এই সোহা হচ্ছে যতো নষ্টের মূল।কিছুতেই তমা দায়ানের ধারে কাছেও যেতে পারছে না তমা এই সোহার জন্য। প্রতিটা প্ল্যা’ন ভেস্তে যাচ্ছে।
তুই কি ভেবেছিলি সোহা তোর চোখের ভাষা আমি বুঝবোনা? তুই যে উনার উপর দূর্বল তা আমি ভালো করেই জানি।এজন্য তুই ইচ্ছে করে আমার কাজে ব্যা’ঘা’ত ঘটাচ্ছিস।
বুঝে গেছি এখন এসব পটানোর কাজ করলে হবে না। ডাইরেক্ট এ’ক’শান এ যেতে হবে। এমন কিছু করতে হবে যেন সা’প ও না মরে লাঠি ও না ভাঙে।
হাতে সময় বেশি নেই যা করার কালকের মাঝেই করতে হবে।”আমার রাজত্ব ও চাই,রাজপুত্র ও চাই।”
ভাবতে ভাবতেই হাতে ফোন নিয়ে কাউকে ক’ল লাগায়।অপর পাশ থেকে ক’ল রিসিভ করতেই তমা বলে উঠে,,, তোমাকে একটা কাজ করে দিতে হবে কাল।আমার সাথে এখনি একবার দেখা করো।
বলেই অন্য দিকে চলে যায় তমা।
————————————-
কালকের তুলনায় আজ বাড়িতে আত্নীয় স্বজনের সংখ্যা অনেক পরিমাণ বেশি।সকাল থেকেই অনেকে আসা শুরু করেছে।
সকলেই বিভিন্ন কাজে বি’জি। বাবুর্চি রা বিয়ের রান্না সকাল থেকেই করছে।সেখানে সোহা ও দায়ানের বাবা উপস্থিত।
দায়ান রুশকে সুন্দর করে তৈরি করে দিচ্ছে।
ভাই আমার না প্রচুর ভ’য় লাগছে।দেখ আমার হাত গুলো কেমন কাঁপছে!
— আশ্চর্য তুই কি চুরি করতে যাচ্ছিস? বিয়ে করবি এতে ভয়ের কি আছে?
— না মানে আমিও বুঝতে পারছি না।
— মুখে হাসি ফোটা।মানুষের হাসির পাত্র হতে ইচ্ছে না করলে।মেয়েদের মতো শুরু করে দিয়েছে।
— ম’জা নিচ্ছিস?
— হুম!কে না নিবে এসব হাস্যকর কথা শুনলে? আমিতো তাও কিছুই বলছি না রে।তুই শুধু একবার ভা’ব তোর শা/লিকা একবার এই তোর ভ’য় পাওয়া আর হাঁটু কাঁপা কাঁপির কথা শুনলে কি করতো?
রুশ এবার বলে আমার মান সম্মানের কি’মা বানিয়ে খেতো।কি ডে’ঞ্জে’রা’স! দেখ ওর কথা শুনেই আমার সব ভ’য় না’র্ভা’স’নে’স কেটে গেছে।
রুশের কথা শুনে দায়ান না হেসে থাকতে পারে না। শা/লি কে বেচারা ভ’য় পায়।
—————————————–
সোহা নোহার সাথেই আছে।আজ নোহাকে সাজানোর জন্য পার্লার থেকে লোক এসেছে। সোহা বোনের সাজানো দু চোখ ভরে দেখছে।কি সুন্দর লাগছে তার বোনকে।মনে হচ্ছে একটা পুতুল।
কিছু সময় পরই বোনটা এই বাড়ি ছেড়ে তাকে ছেড়ে চলে যাবে ভাবতেই কান্না রা এসে ভি’র করে।চোখ ঘুরিয়ে পানি লোকানোর চেষ্টা করে। এখন একদম কাঁদলে চলবে না।নোহা যদি সোহার চোখে পানি দেখে তাহলে সাজ রেখে নিজেও কাঁদতে বসবে।
তাই নিজেকে সামলে নিয়ে আবার বোনের সাজ দেখতে মন দেয়। তারপর নোহার সাজ শেষ হলে নিজেও সেজে নেয়।
—————————————-
সোহা আর তার অন্যান্য কাজিন গো’ষ্ঠী বিয়ের গেট ধরা থেকে শুরু করে হাত ধোয়ানো,জোতা চু’রি কিছুই বাদ রাখেনি।রুশ বলে কয়েও একটা থেকেও বাঁচতে পারে নি।যা যা দা’বি করেছে সব দিতেই হয়েছে।
রুশকে একেবারে খালি হাতে ছেড়েছে।দায়ান চুপচাপ দাড়িয়ে দাড়িয়ে সকলের কান্ড দেখে হেসেছে কিছুই বলেনি।রুশ তখন বলে উঠে তোকে আমি আমার পাশে কি জন্য রেখেছি? কোথায় তুই আমায় এই রা/ক্ষসী দের হাত থেকে রক্ষা করবি তা না তুই হাসছিস? ম’জা নিতেছিস?
আমার কি করার আছে? তুই ওদের একমাত্র দুলাভাই। তোরে না’কা’নি’চু’বা’নি খাওয়াবে না তো কাকে খাওয়াবে?
সহ্য করে নে ভাই।আর আমি ওদের এসব কথা কি করে বলি বলতো? আমি তোর বড় ভাই হই না?
বড় না ছা’ই।শুধু এক বছরের বড়, এসব কেউ গো’না’য় ধরে না বুঝলি।
বড় মানে বড়। সে এক বছরেরই হোক বা এক ঘন্টার ই হোক।
ওকে বুঝে গেছি আমি। নে তুইও ম’জা নিতে থাক।আমার ও সময় আসবে তখন দেখিস আমি কি করি।
দেখবনে।আমিতো বিয়েই করবোনা।আর যদিও কখনো করা লাগে শা/লি ছাড়া করবো বুঝলি? একটু ভাব নিয়ে বলে দায়ান।
—————————-
তমা আজ গতকালের তুলনায় দ্বিগুণ বেশি সাজ করেছে। আলাদা একটা ভাবের মধ্যে আছে সে। হাই হি’ল পরে ঢেং ঢেং করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোনো ছেলে সামনে এলে বা পাশ দিয়ে গেলে কোমড় টাকে দুলিয়ে একটা ভাব নিয়ে চলে।আজ সে পুরাই মেকাপ সুন্দরী। নোহার থেকেও বেশি গর্জিয়াস ভাবে সেজেছে।
সে তার লক্ষ পূরনের চেষ্টায় আছে। দায়ানের সব গতি বিধির উপর ন’জর রাখছে।কোথায় যাচ্ছে কি করছে। সঠিক সময় ও সুযোগের অপেক্ষায় আছে।সময় বুঝে নিজের করা প্ল্যা’ন কার্যকর করবে।
চারিদিকে যখন অন্ধকার হয়ে এসেছে। সকলে বর কনে কে নিয়ে ব্যস্ত।তখনই তমা তার সুযোগ টা পেয়ে যায়।
দায়ানের ফোনে হঠাৎ করেই একটা কল আসে।সে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলতে থাকে।
তমা বুদ্ধি করে সোহাদের বাড়িতে যে ছেলে টা টুকটাক কাজ করে তাকে বলে যে দায়ান কে সোহা উত্তর দিকে ডাকছে।তারাতাড়ি যেনো যায়।অপেক্ষা করছে সোহা সেখানে।ছোটো ছেলেটা ভেবেছে সত্যি ই বুঝি সোহা ই তমা কে বলেছে দায়ানকে ডাকতে।
ছেলেটা গিয়ে দায়ানকে বলে সোহা তাকে উত্তরের দিকে ডাকছে।
দায়ান কিছু সময় ছেলেটার দিকে তাকিয়ে থেকে কিছু একটা ভেবে বলে ঠিক আছে আমি যাচ্ছি কথাটা শেষ করেই।ছেলেটা দায়ানের কথায় মাথা নাড়িয়ে চলে যায়।
তমা তারাতাড়ি উত্তর দিকে গিয়ে দেখে নেয় সব ঠিক আছে কি না।তারপর কাউকে ফোন করে বলে,,,, সব ঠিক হচ্ছে। কিছু সময়ের মাঝেই সব কার্যকর হয়ে যাবে। তুমি কিন্তু তোমার কাজটা ভালো মতো করবা।ঠিক টাইমে এখানে এসে উপস্থিত হবে। না হলে যদি তোমার জন্য কিছু উলট পালট হয় তাহলে এক টা টাকা ও দিবো না।এখন রাখো।
দায়ান তার ফোনে কথা বলা শেষ করে।।। ছেলেটার কথা মতো উত্তর দিকে এগিয়ে যায়। ভেবে পায় না এই মেয়েটা ওকে ঐদিকে কেনো দেখা করতে বলল। দেখা যাক কি এমন দরকারী কথা বলে। ভাবতে ভাবতেই এগিয়ে যায়।
দায়ান যদি জানতো তার সাথে কি হতে চলেছে,,তাহলে ঐদিকে কল্পনায় ও যাওয়ার কথা ভাবতো না। আর সোহা ও কিছু টে’র ই পেলো না তার নাম করে কি কি হতে চলেছে।
বড় কোনো ঝড় ধেয়ে আসছে,,,,,,,,,,
#চলবে,,,,,,
বিঃদ্রঃ দায়ানের সাথে তমাকে মিলিয়ে দিবো ভাবছি।বে’চারি দায়ান কে অনেককক লাভ করে।আপনারা কি বলেন??