তোমাকে খোঁজে পর্ব -০২

#তোমাকে_খোঁজে
#পর্বঃ০২
#Mst_Liza

আদিবা অনেক খোঁজার পর পাশ ঘুরে তাকিয়ে দেখে বিছানার উপরে চাবিটা পরে আছে।আর ওদিকে নেহাল চাবির কথা মনে পরতেই তোয়ালেটা কোনোরকমে কোমড়ে পেচিয়ে ধরফরিয়ে ওয়াশরুম ছেড়ে বেড়িয়ে আসে। আদিবা চাবিটায় হাত দিতেই নেহাল চাবিটা ধরে এক টান দেয়।আর হাতের টান লেগে আদিবা নিচে পরে যায়।

ছরি জান আমি বুঝতে পারি নি।বলে হাতটা বাড়িয়ে দেয় আদিবার দিকে নেহাল।

আদিবা নেহালের হাতটা না ধরেই উঠে দাড়ায়।তারপর নেহালের দিকে কিছুক্ষন অসহায়ের দৃস্টিতে তাকিয়ে থেকে হাটু নুইয়ে বসে পরে।

কেন এভাবে আমাকে আটকে রেখেছেন আপনি? প্লিজ যেতে দিন না আমায়।আজ আমার বিয়ে।ওদিকে আমি যদি ঠিক সময় মতো না পৌঁছাতে পারি তাহলে আমার বাবা-মায়ের সম্মাণ নস্ট হবে।ওরা আর এই সমাজে মুখ দেখাতে পারবে না।দুইহাত জোড় করে মিনতি করে যায় নেহালের কাছে আদিবা।

আদিবার কথা শুনে নেহাল রেগে যায়। আদিবার মাথার একমুষ্টি চুল নিজের হাতের মুঠোয় এনে আদিবাকে উঠিয়ে দাঁড় করাই।তারপর আদিবার মুখটা নিজের মুখের সামনে নিয়ে এসে রাগী দৃষ্টিতে তাকায় আদিবার দিকে।

বাবা-মায়ের মান সম্মাণের কথা ভাবছো? সমাজের কথা ভাবছো? আর আমার কথা,,,সেটা তো ভাবছো না তুমি? বাজি ধরে ভালোবাসো না তুমি? তোমার বাজির খেলায় চাও আমি একা জ্বলে পুরে শেষ হয়ে যায়? আর তুমি শান্তিতে অন্য কারও সাথে সংসার করবে? সেটাতো আমি কোনোদিনও হতে দেবো না।আমি যেটা চায় সেটা আর কারও হতে দিয় না।তুমি শুধুই আমার বুঝতে পেরেছো?

বলেই আদিবাকে ছুড়ে ফেলে দেয় নেহাল। আর পরে যেয়ে আদিবার কপালটা একটু কেটে যায়। নেহাল তাকিয়ে দেখে আদিবার কপাল থেকে রক্ত ঝরছে।যা দেখে নেহালের হুশ আসে।নেহালের রাগ এবার অনুশোচনায় পরিণত হয়।খুব যত্ন সহকারে নেহাল আস্তে করে আদিবাকে ধরে বিছানায় নিয়ে বসায়।তারপর আদিবার কাটা জায়গাটাই রুমাল দিয়ে রুক্ত মুছতে থাকে।আর বলতে থাকে,

খুব লেগেছে জান? ছরি জান! কেন এভাবে আমাকে রাগিয়ে দেও বলোতো? তুমি জানো না আমি তোমাকে কতোটা ভালোবাসি? আর তোমাকে হারিয়ে ফেলার ভয়টা আমি নিতে পারি না।তাইতো এমন পাগলামো করি!

এটাকে পাগলামো বলে? আমারতো মনে হয় উন্মাদ হয়ে গেছেন আপনি! আমাকে এভাবে আত্নহত্যার ভয় দেখিয়ে ডেকে এনেছেন। বন্দী করে রেখেছেন। ছিঃ এতোটা নিচ আপনি! আপনার জন্য আমার পরিবার না যানি কতোটা অপমান, অপদস্থ হচ্ছে। আমি কখনো আপনাকে ক্ষমা করবো না। কক্ষনো না! নেহালকে ঠেলে কিছুটা দূরে সরে এসে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলে আদিবা।

আমি তোমার ক্ষমা চায় না জান।আমি শুধু তোমাকে চায়। যদি দরকার পরে সারাটাজীবন তোমাকে এভাবে বন্দী করে রাখবো।আর তোমাকে দেখেই আমি আমার প্রত্যেকটা মুহূর্ত পার করবো।আমি তোমাকে এতোটা চায়।যে তুমি কল্পনাও করে পারবে না।এতে যদি তুমি আমায় উন্মাদ বলো, খারাপ ভাবো তাহলে আমি তাই।

চৌধুরী মহলে,,,,,

সায়ান বারবার মোবাইলের স্ক্রিনে আদিবার ছেলেবেলার ছবিগুলো টেনে টেনে দেখছে আর মনে মনে বলছে, কোথায় তুমি আদিবা? সেই ছেলেবেলা থেকে তোমাকে ভালোবেসে এসেছি।কখনো বলি নি।কারণ তোমার সাথে আমার বিয়েটা ঠিক হয়ে ছিলো।আমি জানতাম তুমি একদিন আমার হবে।কিন্তু ওই সৃষ্টিকর্তা হয়তো আমার ভাগ্যে তোমায় রাখে নি।জানো আদিবা, এতোগুলা বছরের সব আবেগ জমিয়ে রেখেছি শুধু এই দিনটার জন্য। ভেবেছিলাম আজ বিয়ে করে আমার বউটাকে মনের জমানো সব কথাগুলো বলবো। কিন্তু তুমি সেটা হতে দিলে না! তুমি তো অন্য কাউকে ভালোবেসো! আচ্ছা, একটাবার কি বন্ধু মনে করে বলতে পারতে না আমাকে?

পাশের চিৎকার চেচামেচির আওয়াজে সায়ানের ধ্যান ভাঙে।তাকিয়ে দেখে সায়ানের পরিবার অনেক কড়া কথা শুনিয়ে যাচ্ছে আদিবার পরিবারকে।আজ আদিবার কারণে দুই পরিবারের বন্ধুত্বের সম্পর্কটা নস্ট হয়ে গেল।তবে অদ্ভুত লাগছে এটা ভেবে যে আদিবার বাবা-মা কিছুই বলছে না।শুধু মাথাটা নিচু করে শুনে চলেছে।যেটা দেখে সায়ানের খারাপ লাগে।

চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here